বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বুদ্ধিজীবী হত্যা ছিল জাতিকে বিকলাঙ্গ করার ষড়যন্ত্র

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তানের জন্মের পরপরই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব বুঝতে পারেন–পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানকে তাদের শোষণের চারণক্ষেত্র বানাতে চাইছে। ১৯৪৭ সালে করাচিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিক্ষা সম্মেলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাপত্রে উর্দুকে পাকিস্তানের ‘একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’ হিসেবে ব্যবহারের সুপারিশসহ প্রচারমাধ্যম ও বিদ্যালয়ে কেবলমাত্র উর্দু ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ওই প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানানো হয়।

১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের জাতির পিতা কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেন–উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, দ্বিতীয় কোনো ভাষা নয়। অথচ জনসংখ্যার ভিত্তিতে সমগ্র পাকিস্তানের অধিকাংশ মানুষের মাতৃভাষা ছিল বাংলা। যদিও পাকিস্তান সরকার, প্রশাসন এবং সামরিক বাহিনীতে পশ্চিম পাকিস্তানিরাই ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফলশ্রুতিতে পাকিস্তানের জন্মের পরপরই পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সাথে বাংলাভাষী অধ্যুষিত পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে এবং বাঙালি জাতি মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়। ৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে।

সেই থেকে সুদীর্ঘ তেইশ বছরের ধারাবাহিক রাজনৈতিক আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ। যে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনন্যসাধারণ নেতৃত্বে বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি জাতিরাষ্ট্র জন্ম লাভ করে। বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্ন’র যুক্তফ্রন্টের অবিস্মরণীয় বিজয়, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের মধ্যে ক্রমান্বয়ে একটি শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ঘটতে থাকে। ছেষট্টিতে ছয় দফা উত্থাপন এবং ছয় দফার পক্ষে এ দেশের মানুষের ব্যাপক জনসমর্থন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বকে অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করে। সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক বিজয় বঙ্গবন্ধুকে একক নেতৃত্ব হিসেবে আসীন করে। নির্বাচনের ওই ম্যান্ডেট বহির্বিশ্বের কাছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে বৈধতা প্রদান করে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্ববাসীর সমর্থন আদায়ের পথকে সুগম করে। এই দীর্ঘ ধারাবাহিক লড়াইয়ের প্রতিটি পর্বে দেশের সৃজনশীল বুদ্ধিজীবীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

পাকিস্তানি দুঃশাসনের দিনগুলোতে আমাদের লেখক, সাংবাদিক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীরা বিবেকের কণ্ঠস্বর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। নিজেদের জ্ঞান-মনীষা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে জাতিকে পথ দেখিয়েছেন, আলোকিত করেছেন। এসব কারণেই তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের জিঘাংসার শিকার হয়েছেন। এত কম সময়ে এত বেশিসংখ্যক বুদ্ধিজীবী নিধনের উদাহরণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছাড়া আর কখনো ঘটেনি।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষদিকে দেশের শিক্ষক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও নানা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পেশাজীবীদের টার্গেট করে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা। যদিও মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টা জু্ড়েই তারা সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বুদ্ধিজীবীদেরও হত্যা করেছে। তবে ডিসেম্বরের শুরুতে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে তারা আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের তালিকা করে নির্মূল করার ঘৃণ্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং সে অনুযায়ী আলবদর ও আলশামস বাহিনীকে লেলিয়ে দেয়। নিশ্চিত পরাজয়ের আগমুহূর্তে চূড়ান্ত আঘাত হানে অদূর ভবিষ্যতের স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার অভিপ্রায়ে–আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে নিঃস্ব করার উদ্দেশ্য থেকে। তারা চেয়েছিল, স্বাধীনতা পেলেও এ জাতি যেন কোনোভাবেই মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে।

দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় সহযোগী রাজাকার আলবদর, আলশামস মিলিতভাবে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঠিক দুইদিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গৌরবময় অভ্যুদয় ঘটে।

একাত্তরে ত্রিশ লাখ শহিদের মধ্যে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যার ঘটনা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী তাদের পরাজয় আসন্ন জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে বুদ্ধিজীবী নিধনের এই পরিকল্পনা করেছিল। যখন তারা বুঝতে পারে, তাদের চরম বিপর্যয় আসন্ন, পরাজয় একেবারেই সন্নিকটে, তখনই তারা সেই পরিকল্পনা কার্যকর করে। তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় এবং বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। তাঁদের প্রায় সবারই চোখ তুলে ফেলা হয়েছিল। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে এভাবেই অন্ধকার করার পাঁয়তারা করেছিল।

তবে অপারেশন সার্চলাইটের নামে একাত্তরের ২৫ মার্চ যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি নিধনে নামে, তখনই দেশে এবং দেশের বাইরে একটি উদ্বেগের বিষয় ছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের এভাবে হত্যা করা হতে পারে। পাকিস্তানের এ দেশীয় দোসর আলবদরের সাহায্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, সংস্কৃতি কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার বরেণ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করা হয়। পরে নিদারুণ যন্ত্রণা দিয়ে রায়েরবাজার ও মিরপুরে তাদের হত্যা করা হয়। এ দুটি স্থান এখন বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত। মুক্তিযুদ্ধের শেষলগ্নে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আলবদর বাহিনী আরও অনেক বুদ্ধিজীবীকে মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে স্থাপিত আলবদর ঘাঁটিতে নির্যাতনের পর রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর কবরস্থানে নিয়ে হত্যা করে। শহিদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন–সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, অধ্যাপক জিসি দেব, অধ্যাপক মুনির চৌধুরী, ডা. আলীম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বী, শহীদুল্লাহ কায়সার, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক খন্দকার আবু তাহের, নিজামউদ্দিন আহমেদ, এস এ মান্নান (লাডু ভাই), এ এন এম গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, সাংবাদিক সেলিনা পারভিনসহ আরও অনেকে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছর পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার মধ্য দিয়ে দেশকে আবার পাকিস্তানি ভাবাদর্শে নিয়ে যাওয়ার আয়োজন করা হয়। ৩ নভেম্বর কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। একাত্তরের রাজাকার, আলবদর ও স্বাধীনতাবিরোধীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুনর্বাসিত করা হয়। পবিত্র সংবিধানের পাতা থেকে মূলস্তম্ভগুলো কেটে ছেঁটে ফেলা হয়। এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী নিধনের একটি গভীর যোগসূত্র রয়েছে।

স্বাধীনতার পর থেকে তাদের স্মরণে প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। দিবস থাকলেও বাংলাদেশে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের রাষ্ট্রীয় কোনো তালিকা ছিল না। তবে বর্তমান সরকার শহিদ বুদ্ধিজীবীদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবীদের একটি প্রাথমিক তালিকা চূড়ান্ত করেছে। এতে এক হাজার ২২২ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হলেও তালিকা নির্ধারণের জন্য শহিদ বুদ্ধিজীবীর পূর্ণাঙ্গ সংজ্ঞাও নেই। এ তালিকা তৈরির অংশ হিসেবে শহিদ বুদ্ধিজীবীর সংজ্ঞা চূড়ান্ত করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ৩১ জানুয়ারি ১৯৭২ পর্যন্ত সময়কালে যেসব বাঙালি সাহিত্যিক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, রাজনীতিক, সমাজসেবী, সংস্কৃতিসেবী, চলচ্চিত্র, নাটক ও সংগীতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন এবং এর ফলে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী বা তাদের সহযোগীদের হাতে শহিদ কিংবা ওই সময়ে চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন, তারা শহিদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে বিবেচিত হবেন।

শহিদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা তৈরির কাজ প্রথমে ১৯৭২ সালে শুরু হলেও, সে তালিকা কখনো সরকারি নথি বা গেজেটভুক্ত হয়নি। এখন যে এক হাজার ২২২ জনের প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, সেটি গেজেটভুক্ত করা হবে। শহিদ বুদ্ধিজীবীদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির জন্য গত বছরের ১৯ নভেম্বর একটি কমিটি গঠন করা হয়।

ডাক মন্ত্রণালয় থেকে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের নামে ডাকটিকিট বের করা হয়েছে। এরপর আরও নতুন নাম যুক্ত করে বাংলা একাডেমির একটি গবেষণা আছে। এই সব মিলিয়ে সরকারিভাবে যাদের সম্মাননা বা স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, সেগুলোকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা ছিল মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। দীর্ঘ অপেক্ষার পর বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত কয়েকজন শীর্ষ অপরাধীর বিচার ও শাস্তি কার্যকর হয়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশ বেরিয়ে আসতে পেরেছে। এটি জাতির জন্য স্বস্তিকর। কিন্তু অস্বস্তির বিষয় হলো–আদালতের রায়ে সর্বোচ্চ শাস্তিপ্রাপ্ত বিদেশে পলাতক আলবদর কমান্ডার চৌধুরী মঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের শাস্তি কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। তারা যে বুদ্ধিজীবী হত্যার মূল হোতা ছিলেন, তা আদালতের রায়েও বেরিয়ে এসেছে।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান তার রায়ের পর্যবেক্ষণে এই দুই ঘাতকের নির্মমতার যে চিত্র তুলে ধরেছিলেন, তা অত্যন্ত রোমহর্ষক। বুদ্ধিজীবী নিধনের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আশরাফুজ্জামান বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ও চৌধুরী মঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। এটা ভেবে আশ্চর্য হতে হয় যে, যেসব রাষ্ট্র নিজেদের মানবতা ও ন্যায়বিচারের রক্ষক বলে দাবি করে, তারা কীভাবে এ ঘৃণ্য ঘাতকদের আশ্রয় দেয়? তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি আজ বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ১৪ ডিসেম্বরে বেছে বেছে জাতির মেধাবী মানুষগুলোকে যদি হত্যা করা না হতো, যদি ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড না ঘটাত, যদি জেলহত্যার ঘটনা না ঘটত, তাহলে আজ আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ নিশ্চয়ই জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হতো। যে লক্ষ্য ও চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই লক্ষ্য ও চেতনাকে লালন করে, তাদের প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে প্রিয় বাংলাদেশকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমেই শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মদানের প্রতি যথাযথ মর্যাদা ও সম্মান প্রদর্শন করা যাবে। আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে এটিই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

লেখক: সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

এসএ/

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর