প্রথমবারের মতো চীনে চিকিৎসা নিতে গেলেন ১৪ বাংলাদেশি

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমবারের মতো চীনে গেলেন ১৪ জন রোগী। গতকাল সোমবার দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চীনের কুনমিংয়ের উদ্দেশে তাঁরা যাত্রা করেন। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব জসিম উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, ১৮ ফেব্রুয়ারি চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও জানিয়েছিলেন, ইউনান প্রদেশের তিনটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালকে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিমানবন্দরের সিআইপি বহির্গমন টার্মিনালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, "এই কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশিরা উন্নত চিকিৎসা সেবা পাবেন। ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করাসহ বাংলাদেশি রোগীদের সব ধরনের সেবা দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে চীনের।" তিনি আরও জানান, চিকিৎসা ও মেডিক্যাল চেকআপের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের প্রথম ব্যাচে ৩১ জন রয়েছেন, যেখানে ১৪ জন রোগী, ছয়জন পরিবারের সদস্য, পাঁচজন চিকিৎসক, পাঁচজন এইচইউসি প্রতিনিধি এবং সাংবাদিক অন্তর্ভুক্ত।
ইয়াও ওয়েন বলেন, "বাংলাদেশের প্রয়োজন অনুযায়ী চারটি হাসপাতাল ডেডিকেট করা হয়েছে। এসব হাসপাতালে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেবা প্রদান করা হবে।"
চীনে যাওয়া রোগীদের মধ্যে রয়েছেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী হায়দার আলীসহ বিভিন্ন পেশায় কর্মরত ব্যক্তি। তাঁরা আশা করছেন, উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে সুস্থ হয়ে দেশে ফিরতে পারবেন। হায়দার আলী বলেন, "পশ্চিমা দেশসহ অনেক জায়গায় চিকিৎসা করিয়েছি, কিন্তু উপকার পাইনি। শুনেছি, চীনে ভালো চিকিৎসা দেওয়া হয়, তাই সেখানে যাচ্ছি। আশা করি, ভালো চিকিৎসা পাব।"
আইনজীবী রাকিনুল হাকিম বলেন, "এর আগে আমরা চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যেতাম। এবার প্রথমবারের মতো চীনে যাচ্ছি। আশা করছি, উন্নত চিকিৎসা পাব এবং সুস্থ হয়ে ফিরব। বাংলাদেশের আরও রোগীও এই সুবিধা পাবে।"
প্রতিনিধিদলের সদস্য ড. রাশেদুল হাসান চীনে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ সম্পর্কে বলেন, "চীনে গুরুতর রোগের চিকিৎসা ও বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিস্থাপন ব্যবস্থা অনেক উন্নত। আমরা চিকিৎসকরা সেখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ পাব, যা বাংলাদেশে প্রয়োগ করা যাবে।"
পররাষ্ট্রসচিব মিজানুর রহমান এই উদ্যোগকে ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। অনুষ্ঠানে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রোগীদের প্রতিনিধি, চিকিৎসক এবং ভ্রমণ সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি চীন সফরের সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন, বিশেষ করে জনস্বাস্থ্য খাতে। তিনি চীনকে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসায় সহায়তা এবং বাংলাদেশে হাসপাতাল প্রকল্পের জন্য সহায়তা প্রদানের অনুরোধ জানান।
