রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫ | ৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেন পৌঁছাল মাওয়া

স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে বহুল কাঙ্ক্ষিত পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুর একটা ২১ মিনিটে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে বেলা ৩টা ১৮ মিনিটে ট্রেনটি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া স্টেশনে গিয়ে থামে।

অত্যাধুনিক সাতটি কোচ নিয়ে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে। পরীক্ষামূলক এই যাত্রায় যাত্রী হয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, স্থানীয় সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তারা, সাংবাদিক, সরকারি দলের স্থানীয় নেতা-কর্মী এবং স্থানীয় সাধারণ মানুষ। সব মিলিয়ে কয়েকশ মানুষ এই পরীক্ষামূলক ট্রেনে টিকিট ছাড়া চড়ে ইতিহাসের স্বাক্ষী হলেন।

চলতি বছরের শেষ দিকে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা লাইনে চালু হবে ট্রেন সার্ভিস। তারই অংশ হিসেবে ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে মাওয়া পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ট্রেন যাত্রা শুরু হলো। এর মধ্য দিয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরও একটি মাইলফলক স্পর্শ করছে বাংলাদেশ।

চীন থেকে কেনা নতুন ৭টি কোচ দিয়ে তৈরি করা একটি বিশেষ ট্রেন দিয়ে পদ্মা সেতুর রেলপথে প্রথম ট্রায়াল রান অনুষ্ঠিত হলো।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন থেকে বিশেষ ট্রেনে করে পদ্মা সেতুর পার হন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেনের ট্রায়াল রানের জন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে একটি বিশেষ ট্রেন ফরিদপুরে নিয়ে আসা হয়।

রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে গত সপ্তাহে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এর ফলে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত রেললাইনের কাজও শেষ হয়েছে। তাই চীন থেকে কেনা নতুন কোচ দিয়ে একটি বিশেষ পরীক্ষামূলক ট্রেন আজ ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত চলাচলের মাধ্যমে ট্রায়াল করা হলো।’

তিনি বলেন, ‘আশা করছি সেপ্টেম্বরের কোনো এক সুবিধাজনক সময়ে প্রধানমন্ত্রী ভাঙ্গা থেকে মাওয়া এ রেল যোগাযোগ উদ্বোধন করবেন।’

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণসহ পদ্মা সেতু রেল সংযোগের পুরো প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালে জুনের মধ্যে শেষ হবে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ। পদ্মার মূল সেতুতে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে গত সপ্তাহে।

গত ২৫ মার্চ রাত ১০টায় সেতুর মাঝামাঝি ৫ নম্বর মুভমেন্ট জয়েন্টে ইস্পাতের সর্বশেষ স্লিপারটি বসানো হয়। এরপাশে সাত মিটার ঢালাই কাজ বাকি ছিল, যা গত ২৬ মার্চ বিকালে শেষ করা হয়। এর মাধ্যমে পদ্মা সেতুতে রেল চলাচলের জন্য ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার বসানোর কাজ শেষ হয়।

এ বিষয়ে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পর পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, পুরো প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে। এর আগে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হবে এ বছরের শেষ দিকে। এ পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ। মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত অংশের কাজ প্রায় ৯১ শতাংশ শেষ হয়েছে। পদ্মার মূল সেতুতে মাওয়া-জাজিরা অংশে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।

প্রকল্প সূত্র জানা গেছে, পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-যশোর পর্যন্ত তিনটি অংশে রেলপথটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা-যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার মেইন লাইন, ঢাকা-গেণ্ডারিয়া পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার ডাবল লাইন, লুপ, সাইডিং ও ওয়াই-কানেকশসসহ মোট ২১৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার ব্রড গেজ রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।

গত বছর ২৬ জুন পদ্মা সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের প্রায় তিন মাস পর গত বছর ২০ আগস্ট পদ্মার মূল সেতুর জাজিরা প্রান্তে রেললাইন বসানোর কাজের উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী।

মূল সেতু ও ভায়াডাক্টসহ প্রায় ৭ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ সিঙ্গেল লাইন বসাতে প্রায় ৭ মাস সময় লাগে। মূল এবং দুপাশের ভায়াডাক্ট মিলিয়ে পদ্মা রেলসেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার।

রেল সেতুতে আটটি মুভমেন্ট জয়েন্ট রয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের আটটি স্লিপার ছাড়া বাকি সবগুলো কংক্রিটের তৈরি। বিশেষ তাপমাত্রায় মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের স্লিপারগুলো চীন থেকে তৈরি করে আনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

প্রকল্প সূত্র জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ডিপিপি অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ২০১৯ সালের এপ্রিলে প্রকল্পের ব্যয় আরও ৪ হাজার ২৬৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা বৃদ্ধি করে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩৯ হাজার ২৫৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া, ২০২৪ সালে জুনে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো প্রস্তাব অনুমোদন দেয় একনেক।

জিটুজি ভিত্তিতে প্রকল্পের অর্থায়নে করছে চায়না এক্সিম ব্যাংক। এর মধ্যে এক্সিম ব্যাংকের ঋণ সহায়তা হচ্ছে ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। বাকি ১৮ হাজার ২২১ কোটি ৪৪ টাকা ব্যয় হয়ে সরকারি তহবিল থেকে। মূল প্রকল্পে ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ছিল ৯ হাজার ৯৫৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ব্যয়বৃদ্ধির এই প্রকল্পটিতে সরকারি অর্থায়ন ১৮ হাজার ২২১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া, চীন সরকার জি-টু-জি পদ্ধতিতে ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে। যা আগে ছিল ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের এপ্রিলে চীনের সঙ্গে চূড়ান্ত ঋণচুক্তি হয়। এর দুই বছর আগে কমার্সিয়াল চুক্তি হয়েছিল। প্রকল্পের নির্মাণ কাজ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিআরইসি।

থাকছে ২০টি স্টেশন

পদ্মারেল সংযোগ প্রকল্পে কমলাপুর থেকে যশোর পর্যন্ত ২০টি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৪টি স্টেশনই হবে নতুন। পুরোনো ছয়টি স্টেশনকে ঢেলে সাজানো হবে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে। কেরানীগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের নিমতলায় নতুন দুটি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া, মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর ও মাওয়া স্টেশন নির্মাণ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মাওয়া স্টেশনের পরে পদ্মা সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরায় নির্মিত হচ্ছে ‘পদ্মা স্টেশন’। পদ্মা স্টেশনের পরে শরীয়তপুরে ‘শিবচর স্টেশন’।

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় উন্নত দেশের আদলে নির্মাণ করা হচ্ছে জংশন। ভাঙ্গা থেকে একটি লুপ লাইন ফরিদপুর সদর ও অন্য একটি লুপ লাইন নাগরকান্দা পর্যন্ত যাবে। প্রকল্পের আওতায় নাগরকান্দায় স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এরপরে গোপালগঞ্জের মকসুদপুর ও মহেশপুরে নির্মিত হবে দুটি রেলস্টেশন। এ ছাড়া, নড়াইলের লোহাগড়া, নড়াইল সদরে একটি করে স্টেশন নির্মাণ করা হবে। যশোরের জামদিয়া ও পদ্মবিলে দুটি নতুন স্টেশন নির্মাণ করা হবে বলে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে।

প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান ছয়টি রেলস্টেশন ঢেলে সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন। এ ছাড়া, গেণ্ডারিয়া ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন নান্দনিক করে গড়ে তোলা হবে। সংস্কার করা হবে তিনটি স্টেশন। সেগুলো হলো, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি, যশোরের সিংগাই ও রূপদিয়া স্টেশন।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, কমলাপুর থেকে গেণ্ডারিয়া তৃতীয় ডুয়েলগেজ লাইন, ভাঙ্গা জংশনে ওভারহেড স্টেশন, কমলাপুরের টিটিপাড়ায় আন্ডারপাস, নড়াইলের তুলারামপুরে নতুন আন্ডারপাস এবং ভাঙ্গা স্টেশনে আন্ডারপাস নির্মাণ করা হবে। যেসব স্টেশনে আন্ডারপাসের মাধ্যমে এক প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে যাওয়া যাবে। মাওয়া, পদ্মবিল, কাশিয়ানি, রূপদিয়া স্টেশনগুলোতে অপারেশনাল সুবিধা বাড়ানো হবে।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

ভাঙ্গার তুজারপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান পরিমল চন্দ্র দাস বলেন, আমাদের অনেক দিনেশ আশা, এই এলাকার মানুষ ট্রেনে চড়ে ঢাকায় যাবেন।

অল্প খরচে ও নিরাপদে ঢাকা পৌঁছে দিনের কাজ শেষ করে আবার এলাকায় ফিরে আসবে। শেষ পর্যন্ত আমাদের সেটি স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে। এই অঞ্চলের মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।

ভাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী জাবেদ সরদার নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, জীবনে যা দেখতে পারিনি, সেটা দেখে গেলাম। এই দৃশ্য জীবনে ভুলব না। আজকে আমাদের আনন্দের দিন।

ভাঙ্গা কলেজ পাড়া এলাকার বাসিন্দা নাঈম ভুইয়া, পরীক্ষামূলক ট্রেনে চড়ে ভীষণ আনন্দিত। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যা করে দিয়েছেন তার ঋণ কোনোদিন শোধ করার নয়। আল্লাহ তাকে আরও বহু বছর বাঁচিয়ে রাখুন। আমাদের এলাকা বদলে গেছে।

ভাঙ্গার ঘারোয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সফি উদ্দীন মোল্লা বলেন, আমাদের একটা স্বপ্নের পদ্মা সেতু, সেই সেতুতে রেল সংযোগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

তিনি বলেন, এই রেল চালু হওয়ায় আমাদের এলাকার আমূল পরিবর্ন হবে। আমাদের এলাকার কৃষকরা লাভবান হবেন। তাদের উৎপাদিত সবজি সহজেই রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যাবে। নগরবাসী কম দামে টাটকা সবজি খেতে পারবেন।

ঘারোয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মনসুর মুন্সি বলেন, আজকে অনেক ভালো লাগছে। এত সুন্দর একটা কাজের সাক্ষী হতে পেরে আনন্দিত। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যাবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। তার কারণেই আজ এ অঞ্চলের মানুষ যোগাযোগের সুবিধা পেয়েছেন। সড়ক সেতুর পর এখন ট্রেনও চালু হওয়ার পথে। এটা আমাদের বড় প্রাপ্তি। প্রার্থনা করি আল্লাহ প্রধানমন্ত্রীকে দীর্ঘ জীবন দান করুন।

এনএইচবি/এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: ৪ জনের লাশ উদ্ধার, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে

ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা ডুবে যায়। এ ঘটনায় এক শিশুসহ চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, এবং বিজিবির এক সদস্যসহ আরও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।

শুক্রবার (২২ মার্চ) রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম উপকূল এলাকা থেকে ভেসে আসা চারটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মধ্যে একজন শিশু এবং তিনজন নারী রয়েছেন। এই ঘটনায় আরও কয়েকজন রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধার তৎপরতার সময় সাগরে পড়ে নিখোঁজ হন বিজিবির সিপাহী মোহাম্মদ বেলাল (২৮)।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানান, "রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকা ডুবির ঘটনায় রাত পর্যন্ত ৪টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং বিজিবির পক্ষ থেকে চারটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।"

টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বলেন, "শুক্রবার মধ্যরাতে শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিমপাড়া এলাকায় সাগরে রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকাটি অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় নৌকার তলা ফেটে যায়। খবর পেয়ে সৈকতের পাশে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদের নিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন এবং ২৫ জন রোহিঙ্গাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন। তবে উদ্ধার তৎপরতার সময় বিজিবি সদস্য মোহাম্মদ বেলাল নিখোঁজ হন।"

এদিকে, শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিমপাড়া জেলে ঘাটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, "গভীর রাতে একটি রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকা অনুপ্রবেশের সময় সাগরে ডুবে যায়, এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪ রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।"

Header Ad
Header Ad

বিদ্রোহী ১৮ নারী ফুটবলার অবশেষে ফিরছেন ক্যাম্পে

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার অবশেষে জাতীয় দলের প্রস্তুতি ক্যাম্পে যোগ দিতে যাচ্ছেন। আগামী ৬ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এই ক্যাম্পে অংশ নেবেন সাবিনা খাতুন, মারিয়া মান্দা, মাসুরা পারভীনসহ অন্যান্য ফুটবলাররা। ৭ এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে দলের অনুশীলন।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ৫৫ জন নারী ফুটবলকে ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে ১৮ বিদ্রোহী ফুটবলারেরাও রয়েছেন।

বাফুফে সদস্য ও নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ জানান, "৬ এপ্রিল থেকে ক্যাম্প শুরু হবে এবং কোচ পিটার বাটলারও ওইদিন দেশে ফিরবেন। পরদিন ৭ এপ্রিল থেকে অনূর্ধ্ব-২০ ও সিনিয়র দলের আনুষ্ঠানিক অনুশীলন শুরু হবে।"

এই ক্যাম্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জুনে অনুষ্ঠিতব্য অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ এবং জুলাইয়ের এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের প্রস্তুতি।

এদিকে, জাতীয় দলের আরব আমিরাত সফরের আগেই সিনিয়র ফুটবলাররা তাদের বিদ্রোহ শেষ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবার মাঠে ফিরছেন তারা। ঈদের পর মাসুরা পারভীন ও রূপনা চাকমা ভুটানের ক্লাব ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেডে যোগ দেওয়ার জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

Header Ad
Header Ad

সেবার বিনিময়ে ‘উপহার’ নিতে পারবেন না সরকারি চাকরিজীবীরা

ফাইল ছবি

সরকারি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আচরণ সংহিতা (কোড অব কনডাক্ট) তৈরি করেছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো সংস্থায় কর্মরত কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পরিবারের সদস্যদের জন্য সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভজনক হতে পারে, এমন কোনো কর্মকাণ্ডে তারা যুক্ত হতে পারবেন না। সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে অস্বাভাবিক কোনো সুবিধাও গ্রহণ করতে পারবেন না তাঁরা। এ ছাড়া সংস্থার অনুমোদন ছাড়া সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে কেউ কোনো উপহার বা মূল্যবান বস্তু গ্রহণ করতে পারবেন না। কোন পরিস্থিতিতে কী উপহার ও সুবিধা গ্রহণ করা যাবে, তার তালিকা করাসহ রেকর্ড সংরক্ষণ করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে বলা হয়েছে।

অ-আর্থিক সংস্থা বলতে বোঝানো হয়েছে, দেশের কোনো আইনের মাধ্যমে তৈরি বা পরিচালিত অথবা আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোনো স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, কমিশন, কাউন্সিল, বোর্ড ইত্যাদি।

অর্থ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ভ্রমণসহ প্রাতিষ্ঠানিক ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কর্মচারীদের শেয়ার, সিকিউরিটিজ বা অন্যান্য আর্থিক সম্পদ কেনাবেচা, লেনদেন ও ধারণ করার ক্ষেত্রে সরকারের প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণ করতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নিজ সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক স্বার্থ আছে, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত হতে পারবেন না কেউ, ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না এবং ব্যক্তিগত লাভের জন্য কিছু করা যাবে না। অন্য কোথাও বৈতনিক বা অবৈতনিক অথবা খণ্ডকালীন চাকরিও করা যাবে না।

এতে বলা হয়েছে, নিজের ধর্মের প্রতি সম্মান বজায় রাখার পাশাপাশি অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতিও সমানুভূতি প্রকাশ করতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গনির্বিশেষে সবার প্রতি সমান সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করতে হবে। হেনস্তা, বৈষম্য বা অন্য কোনো অস্বস্তিকর আচরণমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে নিজের অফিসে। সেবাগ্রহীতাদের তৃপ্তি বা অতৃপ্তি, সন্তুষ্টি বা অসন্তোষ ইত্যাদি প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

সরকারি কেনাকাটায় কোনোভাবেই আইন বা বিধির ফাঁকে প্রতিযোগিতার ব্যত্যয় ঘটিয়ে দরপত্র ডাকা যাবে না। ক্রয়প্রক্রিয়া এমনভাবে সম্পাদন করতে হবে, যাতে কোনোভাবেই স্বজনপ্রীতি বা পক্ষপাতিত্বের সূত্রপাত না ঘটে। আর অর্থ বিভাগের অনুমোদন ছাড়া কোনো প্রকার বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করা যাবে না। বৈদেশিক মুদ্রায় কোনো দায় সৃষ্টির অঙ্গীকারও করা যাবে না।

আরও বলা হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কেউ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না, চাকরিস্থল ত্যাগও করতে পারবেন না। কাজ করতে পারবেন না কেউ কোনো বিমা কোম্পানির এজেন্ট হিসেবেও।

আচরণ সংহিতা লঙ্ঘন করলে কী হবে—এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। অর্থ বিভাগের একজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা জানান, সরকার চায় সব সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীই এ আচরণ সংহিতা মেনে চলবেন। এটা লঙ্ঘনের দায়ে কী করা হবে বলা না থাকলেও সরকার চাইলে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: ৪ জনের লাশ উদ্ধার, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে
বিদ্রোহী ১৮ নারী ফুটবলার অবশেষে ফিরছেন ক্যাম্পে
সেবার বিনিময়ে ‘উপহার’ নিতে পারবেন না সরকারি চাকরিজীবীরা
নাইজারে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর জঙ্গি হামলা, নিহত ৪৪
জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ, এবার প্রকাশ্যে জুয়ার প্রচারে সাকিব
সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে: তারেক রহমান
দানব আওয়ামী লীগের পুনরুত্থান ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: রিজভী
আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের পরিকল্পনা কঠোর হাতে দমন করা হবে: নাহিদ ইসলাম
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম জুলাইয়ে আহতদের
নওগাঁয় ১১৯ কেজি গাঁজাসহ ছয় মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
আইপিএল খেলতে ৩ ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে সাকিবের যোগাযোগ
২৫৫ পদে নিয়োগ দেবে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা
বক্সিং কিংবদন্তি জর্জ ফোরম্যানের মৃত্যু
ঈদযাত্রায় গলার কাঁটা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ১৩ কিলোমিটার, যানজটের শঙ্কা
১৬ বছরে ভোটার ও ২৩ বছরে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব রাখবে এনসিপি
কাজী ডাকতে গেল প্রেমিক, প্রেমিকাকে নিয়ে পালাল বন্ধু
মধ্যরাতে ন্যান্সির বাড়ি ঘেরাও
ঈদ বাজারে জাল নোটের ছড়াছড়ি, জেনে নিন চেনার উপায়
মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে ২ বাংলাদেশি যুবক আহত
অনলাইন পোর্টালের জন্য গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের ৭ সুপারিশ