ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত ভাস্কর শামীম শিকদার

পরম ভালোবাসা-শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন প্রয়াত ভাস্কর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক শিক্ষক শামীম শিকদার। একুশে পদকপ্রাপ্ত এ গুণী শিল্পীর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
বুধবার (২২ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা প্রাঙ্গণের ভাস্কর্য বিভাগের সামনে তার মরদেহ রাখা হলে এতে শ্রদ্ধা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ শিল্পাঙ্গণের যুক্ত বন্ধু-স্বজন-শুভাকাঙক্ষী ও বিভিন্ন সংগঠন।
শ্রদ্ধা নিবেদনে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, এমন একটি সময়ে শামীম শিকদার ভাস্কর্য চর্চা করেছিলেন সে সময় সমাজের কেউ এগিয়ে আসেনি। একজন নারী ভাস্কর হিসেবে তিনি বাংলাদেশ উপমহাদেশে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছে। শামীম সিকদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন। এর বাইরেও তার একটি পরিচয় আছে, যা তাকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভাস্কর্য সারা দেশের সম্পদ। নান্দনিক মান বিচারে সেগুলো সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তার শিল্প কর্মগুলো সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তার ভাস্কর্যের নান্দনিকতা রক্ষা, যুগের পর যুগ ধরে তার যেসব শিল্পকর্মগুলো বার্তা দিয়ে যাবে সেব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মনীতি অনুসরণ করে সেই দায়িত্বটি পালন করবে।
চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান নাসিমা হক মিতু বলেন, তার অসমাপ্ত ভাস্কর্যগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে তিনি কাকে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন, সে কথা আমরা জানি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার যে ভাস্কর্যগুলো রয়েছে, সেগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে একটি কমিটি রয়েছে। যদি অন্যান্য ভাস্কর্য সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদের দেওয়া হয়, তবে দায়িত্ব নিয়ে আমরা ওই ভাস্কর্যগুলো সংরক্ষণের চেষ্টা করব।
শামীম সিকদারের ছোট ভাই নাজমুল হক শিকদার বলেন, বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘরে।
শুক্রবার তার দুই ছেলে-মেয়ে দেশে ফিরলে মরদেহ দাফন করা হবে মোহাম্মদপুরের পারিবারিক কবরস্থানে।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাজধানী একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম শিকদার মারা যান। শামীম সিকদার গত শতকের আশির দশকে চারুকলায় শিক্ষকতা শুরু করেন। অধ্যাপক হিসেবে অবসর নেওয়ার পর ৮ বছর আগে তিনি ইংল্যান্ডে চলে যান। ১৯৮৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির পাশে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা ভাস্কর্যটি তৈরি করেন শামীম সিকদার। জগন্নাথ হলের সামনে স্বাধীনতার সংগ্রাম ভাস্কর্যটিও তারই করা। ২০০০ সালে একুশে পদক পান শামীম সিকদার।
এমএমএ/
