নির্মাণ ও জ্বালানি খাতে কাতারকে বিনিয়োগের আহ্বান বাংলাদেশের
হাই-টেক পার্ক, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, নির্মাণ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করার জন্য কাতারকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) কাতারের রাজধানী দোহায় দুই দেশের মধ্যে ২য় ফরেন অফিস কনসালটেশনস (এফওসি) বৈঠকে এই অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর অনুরোধ করেছে কাতার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। কাতারের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোলতান বিন সাদ আল-মুরাইখি। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দুই প্রতিনিধি দল দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক বিষয়গুলির সামগ্রিক পর্যালোচনা করে। যে বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষ জনশক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতা বৃদ্ধি, ব্যবসায়িক যোগাযোগ বৃদ্ধি, দুই দেশের কূটনীতিক ও কর্মকর্তাদের ভিসা মওকুফ, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বেসামরিক বিমান চলাচলে সহযোগিতা।
দুই পক্ষ আঞ্চলিক ইস্যুতেও মতবিনিময় করেছে। তারা ২০২৪ সালে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন এবং উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময় এবং বাংলাদেশ-কাতার সংস্কৃতি বর্ষসহ যৌথ কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা করেন।
শাহরিয়ার আলম আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশকে সংযোগের আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা সম্পর্কে অবহিত করেন।
তিনি কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে দেশে শিল্প প্রবৃদ্ধির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশে অতিরিক্ত এলএনজি সরবরাহের বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ জানান।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে কাতারের সমর্থনও চেয়েছেন। কাতারের প্রতিমন্ত্রী কাতারের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সম্প্রদায়ের ভূমিকার প্রশংসা করেন যা উভয় দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখে।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কাতারের আমিরকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণ পুনর্ব্যক্ত করা হয়। কাতারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী বছর কাতারের আমির বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ২০২২ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে দোহায় অনুষ্ঠিতব্য ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনে কাতারের সার্বিক প্রস্তুতির প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশ থেকে নার্স, চিকিৎসা পেশাজীবী এবং প্রযুক্তিবিদ নিয়োগের ব্যাপারেও গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে কাতার। উভয় পক্ষ বিদ্যমান বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরও সুসংহত করতে এবং নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে দুই মন্ত্রী বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে কূটনৈতিক, অফিসিয়াল এবং বিশেষ পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা মওকুফ সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে সই করেন। উভয় পক্ষ আসন্ন উচ্চ পর্যায়ের সফরের সময় দ্বিগুণ কর পরিহার, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা, আইনী ক্ষেত্রে সহযোগিতা, শিক্ষা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং ওয়াকফ ও ইসলামিক বিষয়ে সহযোগিতা ইত্যাদি বিষয়ে চুক্তি সই করতে সম্মত হয়েছে।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমেদ চৌধুরী, কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন এবং কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া বিভাগের পরিচালক রাষ্ট্রদূত সোলতান লারাম।
পরবর্তী এফওসি অনুষ্ঠিত হবে ২০২৩ সালে ঢাকায়।
আরইউ/এমএমএ/