নতুন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঢোকার আশঙ্কা নেই: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নতুন করে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঢোকার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত ২-৩ দিন আমরা বুঝতে পারছি সেখানকার অভ্যন্তরীণ অবস্থার হয়তো অবনতি হয়েছে। এটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ব্যপার। আমরা যেটা বলছি সেটা হলো এতে যেন বাংলাদেশের বর্ডারে কোনো প্রভাব না পড়ে।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘অনেকে আশঙ্কা করছেন যে ওখানে যে পরিমাণ রোহিঙ্গা এখনো রয়ে গেছেন তারা আবার বাংলাদেশে চলে না আসে। আমরা এই বিষয়টাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ ২০১৬-১৭ সালে তাদের এই চলে আসাটা ঠেকাতে পারিনি বা ইনটেনশনালি আমরা ঠেকাতেও চাইনি। মানবতার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রধানমন্ত্রী তাদের জায়গা করে দিয়েছেন।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কিন্তু এবার আমাদের কাছে কিছু তথ্য আছে যেটা সেই সময় ছিল না। একারণে আমাদের সংস্থাগুলো খুব প্রস্তুত যে বিজিবিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে যেন একজনও মিয়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে। আমরা মনেও করিনা যে এবার এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ হলো যে লোকেশনে এগুলো ঘটছে সেই লোকেশনে কোন রোহিঙ্গা এখন আর থাকে না সেই অর্থে।’
আগস্টের ২০ ও ২৮ তারিখে দুটি মর্টার শেল আমাদের ভূখণ্ডে পড়েছে। তার পরপরই আমরা ২১ ও ২৯ আগস্ট মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে এখানে ডেকে প্রতিবাদপত্র দেওয়া হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন তিনি বিষয়টি তাদের রাজধানীতে জানাবেন। তবে এবার দেশটি আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি।
বাংলাদেশ মিয়ানমারের ফাঁদে পা দিতে চায় না জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এ ধরনের একটা দিকে আমাদের নিয়ে যেতে পারলে তাদের হয়তো একটা স্ট্রাটেজিক বেনিফিট থাকতে পারে। এবং রোহিঙ্গা নিয়ে আমরা যে সমস্যায় আছি সেখান থেকে আমাদের উপরও একটা দায় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হতে পারে।’
বাংলাদেশ দায়িত্বশীল প্রতিবেশী এমন মন্তব্য করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর অনেককে এপাড় থেকে আটক করে ফেরত দিয়েছি। কারণ আমরা দায়িত্বশীল প্রতিবেশী। এটার কিন্তু একটা ভ্যালু আছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের ইনটেনশনটা জানে। এবং আমরা পরিকল্পনা করেছি এই বর্তমান পরিস্থিতি আমরা কূটনৈতিক সম্প্রদায়কে জানিয়ে রাখব। যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তারা যেন বুঝতে পারেন ‘
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সদিচ্ছা তখনই আমরা দেখেছি যখন আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘কিছুদিন আগে জাতিসংঘের একজন দূত যখন মিয়ানমার সফর করেন তখন তাদের সদিচ্ছা দেখেছি। আবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রায়ের পর তাদের সদিচ্ছা দেখেছি। মানে চাপে পড়লেই তারা শুধু মুভমেন্টটা করে।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে একটা সরাসরি বৈঠক হতে পারে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, তবে এক্ষেত্রে এটাও বলে রাখি আমরা কিন্তু সম্প্রতি দুই দফা তাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি ইনভলভড হয়েছি সেটা কিন্তু অনেক দূরই এগিয়েছে। সেখানে কিছু ভেরিফিকেশনের ইস্যু আছে আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। তাদের কাছ থেকে আমরা একটা সদিচ্ছা দেখেছি যে অদূর ভবিষ্যতে একটা বৈঠক হতে পারে। দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। ’
আরইউ/এমএমএ/
