বোটানিক্যাল গার্ডেনে আবর্জনা পোড়ানো বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানকে (বোটানিক্যাল গার্ডেনে) বলা হয় ঢাকার ফুসফুস। এই উদ্যানের বিভিন্ন স্থানে নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড দেওয়া থাকলেও খোদ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনাতেই উদ্যানেই আগুনে পোড়ানো হয় ময়লা-আবর্জনা। উদ্যানের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা উদ্যানের ভিতরে বিভিন্ন বর্জ্য জড়ো করে অন্তত ১০০টি স্থানে সেই বর্জ্য আগুনে পোড়াচ্ছেন। অথচ জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান একটি সংরক্ষিত অঞ্চল।
পরিবেশকর্মী নয়ন সরকারকে হেনস্থা করার প্রতিবাদ, হেনস্থাকারীদের এবং জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ করার দাবিতে বুধবার উদ্যানের প্রধান ফটকে মানবন্ধন করেছে সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ। মানববন্ধন শেষে তিন দফা দাবি জানিয়ে একটি স্মারকলিপিও উদ্যান কর্তৃপক্ষের কাছে দিয়েছে সংগঠনটির প্রতিনিধিরা।
তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে-জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ করতে হবে। জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে পলিথিন, প্লাস্টিকের প্যাকেটজাত খাবার নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে ও উদ্যানের ভেতরে ক্যান্টিন-খাবার স্টল বন্ধ করতে হবে। এবং উদ্যানে সামাজিক পরিবেশ বজায়ে রাখতে ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে মনিটরিং জোরদার করতে হবে।
২০৮ একরের উদ্যানে হাজারো প্রজাতির গাছপালাসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী রয়েছে। বায়ু দূষণের শীর্ষে থাকা ঢাকা শহরের বাসিন্দারা ঢাকার ফুসফুসখ্যাত এই উদ্যানে বিশুদ্ধ বায়ু সেবন করতে আসেন। কিন্তু সবুজে ঘেরা নির্মল বায়ুর এই উদ্যানে বর্জ্য পোড়ানোর কারণে সেটি ব্যাহত হয়। ফলে বায়ু দূষণের কারণে নগরবাসীকে বাহিরেও যেমন দূষিত বায়ু সেবন করতে হয়, আবার উদ্যানেও দূষিত বায়ু সেবন করতে হয়।
এ ছাড়া, উদ্যানে মাইক বা শব্দবর্ধক যন্ত্র ব্যবহার করা নিষিদ্ধ থাকলেও উদ্যানের ক্যানটিন সারাক্ষণ উচ্চস্বরে গান চালানো হয়। ফলে শব্দদূষণ হয় এবং শব্দে প্রাণীরা আতঙ্কিত হয়। বনভূমিতে আগুন লাগানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বর্জ্য আগুন লাগানোর কারণে উদ্যানেও আগুন লেগে যাওয়ার শঙ্কা থাকে।
এ ছাড়া, আগুন লাগানোর কারণে নিচের লতাপাতা, মাঠি পুড়ে যায়, কীটপতঙ্গ পুড়ে যায়। আর বর্জ্য পোড়ানোর এই কাজটি জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে বছরের পর বছর ধরে হয়ে আসছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের নামে উদ্যানের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি ও বায়ু দূষিত করছে। উদ্যানে ধূমপান নিষিদ্ধ থাকলেও হরহামেশা উদ্যানে ধূমপান করতে দেখ যায় এমনকি ফিটিংবাজ ও ছিনতাইকারীদের তৎপর রয়েছে।
অনুমতি ছাড়া স্কুল-কলেজ ড্রেস পরিহিত অবস্থায় শিক্ষার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও সকাল থেকে পোশাক পরিহিত অবস্থায় শিক্ষার্থীদের উদ্যানে দেখা যায়। উদ্যানে কিছু দর্শনার্থীদের অশালীন চালচলন লক্ষ্য করা যায়। বন বিভাগের আওতায় থাকা জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে এতো নিয়ম থাকলেও অনিয়ম তার নিজস্ব গতিতে চলছে। পরিবেশ কর্মীরা বলছেন, এভাবে আর চলতে পারে না। সময় এসেছে পরিবর্তনের।
এনএইচবি/এমএমএ/
