অভিযুক্ত শামীম উদ্দীনের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
‘অনিশ্চয়তায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ’ শিরোনামে ঢাকাপ্রকাশ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ পাঠিয়েছেন অভিযুক্ত মো. শামীম উদ্দীন। গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের ওপর ২৭ আগস্ট ডং জিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল (বিডি) কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক মো. শামীম উদ্দীনের পক্ষে প্রতিবাদ পাঠান ব্যারিস্টার মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী।
প্রতিষ্ঠানটির শিপিং ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক মো. শামীম উদ্দীনের যোগসাজশে কাঁচামাল আমদানি দেখিয়ে মদ আমদানি করার অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনটি ‘চরম মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে উদ্দেশ্য-প্রণোদিতভাবে বানোয়াট, অপব্যাখ্যামূলক, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ ও অনলাইনে ভিডিও সম্প্রচার করেছে বলে প্রতিবাদপত্রে অভিযোগ করা হয়। অথচ ঘটনার সত্যতা মো. শামীম উদ্দীনের পাঠানো প্রতিবাদ পত্রেই প্রমাণিত হয়। তিনি প্রতিবাদপত্রে লিখেছেন, ‘কোন এক স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল ইতোপূর্বে কোম্পানির ব্যবহৃত আইপি নম্বর পুনরায় ব্যবহার করে সম্পূর্ণ জাল ও বানোয়াট নথিপত্র তৈরির মাধ্যমে সূতা আমদানি দেখিয়ে মদ্য আমদানি করে।’
সূতা আমদানি দেখিয়ে মদ্য আমদানির ঘটনা প্রতিবাদলিপি অনুসারেও সত্য। তাহলে ‘চরম মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া’, ’বানোয়াট’, ’অপব্যাখ্যামূলক’ ও ’বিভ্রান্তিকর’ বলে প্রতিবাদ পাঠানোর যৌক্তিকতা কোথায়?
প্রতিবাদপত্রে শামীম উদ্দীন জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে নথি তৈরির কথা বলেছেন। তাহলে তিনি এখন পর্যন্ত আইনি ব্যবস্থা কেন নেননি? নাকি তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন?
প্রতিবাদলিপিতে সম্মানহানির কথা বলা হয়েছে। আসলে সম্মানহানি কার হয়েছে? কোম্পানির মানহানির প্রশ্নই ওঠে না। বরং জাতীয় অর্থনীতিতে কোম্পানিটি যে বিশাল অবদান রেখেছে তা তুলে ধরা হয়েছে। বেকার সমস্যায় জর্জরিত এই দেশের ৪০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৯ সালে কোম্পানির যাত্রা শুরু করে। এখন এর ১৭টি প্রতিষ্ঠান। ভালো ভাবমূর্তি আর সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেই কোম্পানিটি এতোদূর এসেছে। তা ছাড়া কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অজান্তে যে কাজটি হয়েছে সে কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর ফলে কোম্পানির ভাবমূর্তি আরও বেড়েছে। ব্যক্তি বিশেষের অপরাধের দায় কেন কোম্পানির উপর বর্তাবে?
প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির শিপিং ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক মো. শামীম উদ্দীনের যোগসাজশে ‘সুতা আমদানি দেখিয়ে মদ আমদানি করা’ হয়। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটি আইনি জটিলতায় পড়েছে। আর এতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অর্থাৎ ৪০ হাজার কর্মীর জীবিকার স্থল এই প্রতিষ্ঠানগুলো একজন কর্মীর কারণে বিপাকে পড়েছে। একজন বিদেশি বিনিয়োগকারী এই দেশে বিনিয়োগে উৎসাহ হারানোর ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। এই বিনিয়োগকারীকে দেখে বিদেশি অন্য বিনিয়োগকারীরাও উৎসাহ হারানোর ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিষয়গুলোতে সংশ্লিষ্টদের নজরে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। তাহলে এটি প্রতিষ্ঠানের জন্য মানহানিকর হলো কী করে?
এই প্রসঙ্গে তিনি প্রতিবেদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্যারা (ইন্ট্রোসহ প্রথম দুই প্যারা) উদ্ধৃত করেন। যাতে লেখা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে একেবারে ব্যতিক্রমী খাত ‘পরচুলা’ তৈরি ও রপ্তানি করে রেকর্ড করেছে এভারগ্রিন প্রোডাক্ট ফ্যাক্টরি (বিডি) লিমিটেড। এভারগ্রিন নামে ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করে গড়ে তুলেছেন ডং জিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি লিমিটেড, মাস্টার পার্পেল লিমিটেডসহ আরও ১৭টি প্রতিষ্ঠান।
এ সব প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যাং ই চং ফিলিক্স (Chang Yoe Chong Felix) নামে এক চীনা বিনিয়োগকারী। এ খাতে তিনি পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগেরও রেকর্ড করেছেন। চীন থেকে কাঁচামাল এনে নীলফামারী উত্তরা ইপিজেটে শতভাগ কমপ্লায়েন্স মেনে সুনামের সঙ্গে আমেরিকা, ইউরোপ, রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই প্রতিষ্ঠানের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।
মূল প্রতিবেদনটি পড়ুন>>>
অনিশ্চয়তায় ৫ হাজার কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ
এমএমএ/আরএ/