গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া নিয়ে জাতিসংঘ থেকে কোনো ধরনের ইঙ্গিত বা বার্তা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পায়নি বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। সোমবার (১০ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সম্প্রতি বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের অনুষ্ঠান হার্ডটক-এ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের মন্তব্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রচারিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা প্রদান করা হয়েছিল।
আইএসপিআর জানায়, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার থেকে কোনো ধরনের ইঙ্গিত বা বার্তা পায়নি। যদি এমন কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়ে থাকে, তবে তা হয়তো তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়েছে, সেনাবাহিনীকে নয়।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মানবাধিকারের তাৎপর্য যথাযথভাবে মূল্যায়ন করে এবং গঠনমূলক সমালোচনাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে। তবে, অধিকতর সঠিকতা ও স্বচ্ছতার উদ্দেশ্যে উক্ত মন্তব্যের কিছু বিষয়ে স্পষ্টিকরণ প্রয়োজন।”
আইএসপিআর জানায়, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতীয় নিরাপত্তা নির্দেশিকা অনুযায়ী কাজ করে এবং সব সময় আইনের শাসন ও মানবাধিকার নীতির প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখে। তবে ভলকার তুর্কের মন্তব্য কিছু মহলের মাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে, যা সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।”
গত ৫ মার্চ বিবিসির সাক্ষাৎকারে ভলকার তুর্ক বলেছিলেন, “জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সতর্ক করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, যদি তারা সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে, তবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।”
আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় সেনাবাহিনী জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং কোনো পক্ষপাত বা বাহ্যিক প্রভাব ছাড়াই জননিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।”
আইএসপিআর জানায়, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সাথে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ককে গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ন করে এবং দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি দায়িত্ব পালনে সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেনাবাহিনীর ভূমিকা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে উদ্বেগ বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলে তা গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।”
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জানায়, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার থেকে কোনো ধরনের বার্তা তারা পায়নি এবং আন্দোলনের সময় তারা জনগণের পাশে থেকেই দায়িত্ব পালন করেছে।