বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-৩২     

আলেক্সান্দ্রিয়া থেকে কায়রোর দূরত্ব ২৩০ কিলোমিটারের বেশি নয়। তবে শহর থেকে বেরোবার মুখেই সৌরভ জানাল, আমরা যে পথে এসেছিলাম সেই পথে না ফিরে একটু ঘুরে এগ্রিকালচার রোড ধরে ফিরব। ডেজার্ট রোডের দুপাশে বেশিরভাগ সময় মরুভূমি আর সে তুলনায় এই পথে দুপাশেই সবুজের দেখা মিলবে। সত্যিই শহর ছাড়তেই মাঝে মাঝে ছোট ছোট শহর আর দুই একটা বড় শহর ছাড়া প্রায় সারা রাস্তায় দুপাশে কৃষি জমি। শহরগুলোতে যথারীতি দোকান বাজার আর মসজিদের ছড়াছড়ি। অধিকাংশ বেহাল দশা আবাসিক ভবনের মাঝে কারুকাজ করা দীর্ঘ মিনার এবং সুদৃশ্য গম্বুজওয়ালা রঙিন মসজিদ বেমানান লাগে। তবে ঝাঁ চকচকে বাড়িঘর বা বিশাল বিপনীবিতানও যে পথে পড়েনি তা নয়।

এগ্রিকালচার রোড

গাড়ির গতি একবার একটু কমে এলে দেখলাম ওয়েল্ডিংশপ, গ্রোসারি ও দরজির দোকানের পাশাপাশি এক সারি গরু কিংবা ভেড়ার ঠ্যাং ঝুলছে একটা কসাইখানায়। এইসব ঘন বসতি ও লোকালয় ছেড়ে একটা গ্যাস স্টেশনে গাড়ি থামাল সৌরভ। গ্যাস স্টেশনের সঙ্গেই রেস্টুরেন্ট ও টয়লেট। এগ্রিকালচার রোডের কৃষি ক্ষেতের মাঝখানে বেশ পরিচ্ছন্ন আধুনিক ব্যবস্থাপনা দেখে বোঝা যায় অন্তত হাইওয়েতে যাত্রীদের খাদ্য পানীয় প্রক্ষালণ জাতীয় পরিসেবার ক্ষেত্রে ওরা আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছে। হালকা খাবার, ঠান্ডা পানীয় চা-কফি মিলিয়ে আমাদের যাত্রা বিরতির সংক্ষিপ্ত মধ্যাহ্নভোজ শেষ করে বিল দেওয়ার সময় আমি ইচ্ছে করে ক্রেডিট কার্ড এগিয়ে দিলাম। ধারণা ছিল ওরা হয়তো কার্ডে পেমেন্ট নিতে চাইবে না। কিন্তু বিনা বাক্য ব্যয়ে কার্ডে বিল পরিশোধ করে বেরিয়ে এসে কিছুক্ষণ হাইওয়েতে গাড়ির চলাচল দেখলাম।

এগ্রিকালচার রোডে খেজুর গাছের সারি

এ পথে কন্টেইনার বোঝাই ভারী যানবাহন এবং লরিসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল পরিবহনের গাড়ির সংখ্যা যথেষ্ট বেশি। সেই তুলানায় ট্যাক্সি, মাইক্রোবাস জাতীয় হালকা বাহনের সংখ্যা অনেক কম। ডেজার্ট রোডের মসৃণ রাস্তা ছেড়ে কেই বা ভাঙাচোরা রাস্তায় আসতে চায়! মরুভূমির পাড়ি দিয়ে যেতেও কারো আপত্তি নেই। তানতা শহরের কাছাকাছি হাইওয়ের সমান্তরালে চলতে থাকা রেললাইন ধরে বেশ কয়েকবার দীর্ঘ ইন্টারসিটি ট্রেন উত্তরে আলেক্সান্দ্রিয়া আবার কখনো কায়রোর দিকে চলে গেল। কায়রো আলেক্সান্দ্রিয়া রেলপথে সময় লাগে চার ঘণ্টা। রানা ভাইকে বললাম, ‘একবার ট্রেনে কায়রো থেকে আলেক্সান্দ্রিয়া যেতে পারলে ভালো হতো।’ রানা ভাই বললেন, ‘ভালো হতো, তবে সঙ্গে গাড়ি থাকার বাড়তি সুবিধাটা পাওয়া যেত না।’ সুবিধা যেহেতু বেশি এবং সেটা আমরা খুব ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছি, অতএব এ ব্যাপার আর কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। 

লেভেল ক্রসিং-এ সূর্যাস্ত

মাইলের পর মাইল এই পথে চলার সময় দু পাশে চষা জমি, কোথাও সবুজ ফসলের ক্ষেত এবং মাঝে মাঝে খেজুর গাছের সারি দেখে বোঝার উপায় নেই নীল নদের দু পাড়ের সামান্য অংশ বাদ দিলে এ দেশের ভূভাগের প্রায় সবটাই মরুভূমি। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নেমে আসছিল। ঠিক সূর্যাস্তের সময় আমরা একটা দীর্ঘ খেজুর বাগান পার হচ্ছিলাম। গাছের আড়ালে পাতার ফাঁকে রক্তিম সূর্য খানিক উঁকি দিয়েই আড়ালে চলে যাচ্ছিল। একটা লেভেল ক্রসিং-এ এস দাঁড়াবার পরে দেখতে দেখতে আলোর বিচ্ছুরণ থেমে গেল, দিগন্তে মিলিয়ে গেল লাল টুকটুকে সূর্য।   

রাতে খাবার কথা ছিল অভিজাত মাদি এলাকার রোড নম্বর নাইনের ভিলা কারাক্কাসে। দূরত্ব সামান্য বেশি হলেও এগ্রিকালচার রোডে ট্রাফিক জ্যাম কম, সাড়ে তিন ঘণ্টায় কায়রো পৌঁছে যাবার কথা। কিন্তু দেরিতে বেরিয়ে পথে কিছু সময় লাঞ্চ বিরতি দিয়ে ধীরে সুস্থে চালিয়ে আমরা যখন কায়রো শহরে ঢুকেছি তখন পথে পথে সড়কবাতি জ্বলে উঠেছে, দূরে থেকে ঝলমলে কায়রো টাওয়ার দেখে বুঝতে বাকি থাকে না গন্তব্যের কাছাকাছি এসে গেছি। পথে যানজট না থাকলেও শহরের ভেতরে কয়েক কিলোমিটার পথ পার হতে অনেকটা সময় লেগে গেল। সেই কারণে সিদ্ধান্ত হলো বাসায় না ফিলে সরাসরি রেস্টুরেন্টে চলে যাব। আমরা ভিলা কারাক্কাসে ঢুকলাম সোয়া আটটার দিকে।

ভিলা ক্যারাক্কাস বাইরে থেকে 

সন্ধ্যাবেলা রেস্টুরেন্ট পাড়ায় একটু ঘুরে এলে মিশরে লেবানিজ খাবারের জনপ্রিয়তা এবং একই সঙ্গে সচ্ছল পরিবারের নারী পুরুষ শিশুদের নিয়ে বাইরে খেতে যাওয়ার প্রবণতা সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়। আমাদের দেশেও সাধ ও সাধ্য অনুসারে রেস্টুরেন্টগুলোতে ভিড় বেড়েছে, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আড্ডা বা অন্তরঙ্গ পরিবেশে কথোপকথনের চেয়ে উদরপূর্তিই এখনো মুখ্য। কায়রোর মানুষ স্বভাবগতভাবেই আড্ডা প্রিয়, চা কিংবা কফি কাপ হাতে এরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্পগুজব করে কাটিয়ে দেয়। কাজেই রেস্টুরেন্টে দীর্ঘ সময় বসে অনেক রাত পর্যন্ত চলতে থাকে জমজমাট আড্ডা।

ভিলা কারাকাক্কাসের ভেতরে বাইরে দেখে বোঝা যায় পুরোনো বড় একটা বাড়ি রেস্তোঁরায় রূপান্তরিত করা হয়েছে। সামনে পেছনে ছোট বড় কক্ষগুলো ছাড়াও বিস্তৃত প্রাঙ্গণের কোথাও কোনো ঠায় নেই। সৌরভ আগে থেকেই টেবিল বুক করে রেখেছিল বলে আমরা সহজেই জায়গা পেয়ে যাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে চলে এলেন সৈয়দ আজিজ ও মাননি ভাবি। লেবানিজ খাবার শুধু যে খেতেই ভালো তা নয় পরিবেশনের বৈচিত্র্যের কারণে মনে হলো কিছু ‘অস্বাদু’ খাবারও সুস্বাদু হয়ে গেছে। আমরাও কায়রোনিবাসীদের মতো দীর্ঘ সময় ধরে এইসব চর্ব- চোষ্য-লেহ্য-পেয় শেষ করে যখন ঘরে ফিরলাম তখন গভীর রাত।   

ভিলা ক্যারাক্কাস ভেতরে        

পরদিন সকালে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা না থাকায় রোড নম্বর নাইনে কিছু সময় সুভ্যেনিয়ার শপে আর বাকি সময় অকারণে ঘোরাঘুরি করে কাটানোর উদ্দেশ্যে বের হলাম। খানিকটা পথ যাবার পরে টিপটিপ করে বৃষ্টি শুরু হলো। এই বৃষ্টি আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি, শ্রাবণের ঘন বর্ষণ বা ভাদ্রমাসের ঝিরঝিরে এক পশলা বৃষ্টির মতো নয়। বৃষ্টি বিরল কায়রো শহরে হয়তো গত ছয়মাস বা বছরে একদিনও বৃষ্টি হয়নি। কিন্তু আশেপাশে মানুষের মুখ দেখে বোঝার উপায় নেই এই আকস্মিক বারিপাতে তারা কী আনন্দিত না দুঃখিত! আমি নিশ্চিত আমাদের কোনো শহরে ছ-মাস ন-মাসে একদিক বৃষ্টি নামলে কিশোর কিশোরীরা রাস্তায়, গৃহবধূরা বাড়ির ছাদে বৃষ্টিতে ভিজতে নেমে যেত, কবিরা কবিতার খাতা খুলে বসতেন, রান্নাঘর থেকে খিচুড়ির ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ত পাড়ায় মহল্লায় এবং ‘ওয়েদার ডিমান্ডস’ বলে কে যে কী করতেন আল্লা মালুম। কায়রোর মানুষের উচ্ছ্বাসহীন বৃষ্টির চরিত্র নির্ধারণ করে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগেই বৃষ্টি যেমন এসেছিল তেমনি মিলিয়ে গেল।  রাস্তা ভেজার আগে বৃষ্টি ছেড়ে যাওয়ায় আমরা রাস্তায় নেমে কোনো কিছু কেনার ইচ্ছে না থাকলেও এ দোকান সে দোকান ঘুরে প্যাপিরাসের পাতা, পাথরের তৈরি পিরামিডের ছোট্ট রেপ্লিকা, হাইরোগ্লিফিক লিপি আঁকা টি-শার্টসহ টুকটাক স্যুভেনিয়ার কিনে কিছু ইজিপশিয়ান পাউন্ড কায়রোতে রেখে গেলাম।

লামিয়া ইব্রাহিম

বাসায় ফিরে দেখলাম সৌরভের মিশরী ‘বুয়া’ আপন মনে তার কাজ করে যাচ্ছে। আগেই জেনেছি মেয়েটি কায়রোর একটি সরকারি হাসপাতালের নার্স। কিন্তু সরকার বাহাদুর সপ্তাহে ছয়দিন কাজের বিনিময়ে তাকে যে বেতন দেয় তাতে তার নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। মিশরে নুন থাকলেও পান্তার প্রচলন আছে কিনা জানি না, তবে শ্রমজীবী ও বেতন কাঠামোর নিচের দিকের পেশাজীবী মানুষের আর্থিক অবস্থা যে খুব ভালো নয় তা সহজেই বোঝা যায়। ফলে প্রয়োজনের তাগিদেই সে সপ্তাহের একটা ছুটির দিনে একবেলা সৌরভের বাসার যাবতীয় কাজ যথেষ্ট নৈপুন্য, বিশ্বস্ততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে করে রেখে যায়।

ওর কাছে বাসার এক সেট চাবি আছে, কাজেই কেউ না থাকলেও সে তার কাজ ঠিকঠাক মতো করে সব গুছিয়ে রেখে যায়। গৃহকর্মে নিপুণা মেয়েটির গৃহ এবং সংসারের কথা জানি না মনে হয়েছে দারিদ্র্য এবং পরিশ্রম তার মুখের হাসিটুকু কেড়ে নিতে পারেনি। হেনা ওর সঙ্গে দুই একটা কথা বলার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সে একেবারেই ইংরেজি না জানায় আলাপটা জমেনি।  সন্ধ্যায় আমার ‘মিছছরররের’ বন্ধু লামিয়ার আসার কথা। কায়রো এসেই যোগযোগ করেছিলাম, কিন্তু বেশিরভাগ দিন তো আসোয়ান লুক্সর আলেক্সান্দ্রিয়ায় কেটে গেল। ফলে ইচ্ছে থাকলেও আমি দেখা করতে যেতে পারিনি এবং লামিয়াও আসতে পারেনি। লামিয়ার সঙ্গে দেখা হয়েছিল সউলে কোরিয়ান ব্রডকাস্টিং সিস্টেমের ডকুমেন্টারি ওয়ার্কশপে দুই দশকের বেশি সময় আগে।

লামিয়ার দেওয়া উপহার

ঊনিশ দেশের ঊনিশজন টেলিভিশন প্রযোজক এবং ডকুমেন্টারি ফিল্মমেকারের সেই অন্তরঙ্গ কর্মযজ্ঞে নাইল নিউজের প্রযোজক লামিয়া ইব্রাহিম ছিল সবচেয়ে উজ্জ্বল উচ্ছল প্রাণবন্ত তরুণী। প্রশিক্ষণ কোর্সের ঊনিশজনের মধ্যে যে পাঁচ-সাতজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাদের অন্যতম লামিয়ার সঙ্গে দুই দশকের বেশি সময়েও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি। ঈদে পরবে, নববর্ষে ও জন্মদিনে শুভেচ্ছা বিনিময় ছাড়াও মাঝে মধ্যে মেইলে যোগাযোগ আছে এখনো। 

লামিয়া বাসার নিচে এসে গাড়ি পার্কিংয়ে রেখে তার আসার খবর দিয়েছে। আমি লম্বা করিডোর পেরিয়ে লিফটের কাছে পৌঁছাতেই লিফটের দরজার খুলে বেরিয়ে এল লামিয়া। বলল, ‘ইটস লং টুয়েন্টি টু ইয়ার্স! মনে হচ্ছে যেন এই তো সেদিন।’

বয়সের সঙ্গে লামিয়ার উচ্ছলতা হয়তো কমেছে, তবে হাসিটা আগের মতোই আছে। নাইল নিউজের ডিরেক্টর হিসেবে ব্যস্ততা ও দায়িত্ব বেড়েছে। সউল থেকে ফিরেই লামিয়ে জানিয়েছিল সে বিয়ে করতে যাচ্ছে। বিয়ে করেছিল কিন্তু সংসারটা বেশি দিন টেকেনি। ছেলে মেয়ে নেই, এখন মায়ের সঙ্গে থাকে। শারীরিকভাবেও পুরোপুরি সুস্থ নয়, খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারেও বেশ কড়াকড়ি রকমের নিষেধাজ্ঞা আছে, চা কফি সবই নিষেধ। তাই রানা ভাইয়ের পরামর্শে ফ্রেশ মিন্টসহ এক কাপ গরম জল ছাড়া লামিয়ার জন্যে কোনো আপ্যায়নের ব্যবস্থা করতে পারলাম না।

লামিয়ার সঙ্গে

আমরা কেবিএস-এর সেই আনন্দঘন পুরোনো দিনগুলোর কথা, সতীর্থ গ্রাজিনা, এদোয়ার্দো, আলা, কিবারার, জিনা ও জোকে নিয়ে কথা বলে কেমন করে যেন প্রায় দুই ঘণ্টা সময় কাটিয়ে দিলাম। লামিয়া সঙ্গে করে এনেছিল একটা বৃত্তাকার মিষ্টান্ন, ঠিক কেক নয় তবে কেক-এর মতো কিছু একটা আর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের মতো ফারাও সম্রাজ্ঞীর চেহারা ঊৎকীর্ণ মগ। কেক-এর নামটা ভুলে গেছি, তবে সেটা যে ইজিপশিয়ান ডেলিকেসির উৎকৃষ্ট উদাহরণ, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

বিদায় নেওয়ার সময় লামিয়া বলল, ‘আর হয়তো কখনো দেখা হবে না, তবে যোগাযোগ রেখ।’ বললাম, ‘আমি তো একবার হলেও কায়রো ঘুরে গেলাম, সম্ভব হলে তুমি একবার ঢাকায় এস, তাহলেই দেখা হবে।’ 

নিচে নেমে গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে লামিয়া একবার হাত নেড়ে বিদায় জানাল। তারপর সাবলীলভাবে স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে রাস্তায় উঠে গেলে চলমান যান বাহনের স্রোতে মিশে গেল লামিয়ার বাহন। 

চলবে...         

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-৩১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-৩০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৭ 

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

এসএন 

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া