সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৩ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-৩০

আলেক্সান্দ্রিয়ায় আমাদের রাত্রিবাসের জন্যে সৌরভ আগে থেকেই হোটেল লে মেট্রোপলে বুকিং দিয়ে রেখেছিল। সাগর তীরের পায়ে চলার পথ থেকে নেমে রাস্তা পার হয়ে একটা ছোট পার্কের পাশ দিয়ে হেঁটে আমরা হোটেলে পৌঁছালাম। কয়েকটা সিঁড়ি ভেঙে লে মেট্রোপলে ঢুকেই বুঝলাম আমরা একটি প্রাচীন অভিজাত অতিথিশালায় ঢুকে পড়েছি। 

রিসেপশনের অংশটুকু দেখে শুধু অভিজাত না বলে বলা যায় রাজকীয়! রানা ভাইকে সে কথা বলতেই তিনি বললেন, ‘আসলেই তো আমরা কিং ফারুকের রয়্যাল গেস্ট হাউসের অতিথি।’ চারিদিকে তাকিয়ে দেখি দামি কাঠের টেবিলে শোভা পাচ্ছে শ্বেতপাথরের ভেনাসের মূর্তি, পরী-শিশুদের হাতের বাতিদানে জ্বলছে শ্বেতশুভ্র গোলক। উপর থেকে নেমে এসেছে স্ফটিকের ঝাড়বাতি, দেয়ালে দেয়ালে ঝুলছে প্রাচীন পেইন্টিং, সিলিংয়ের নিচেই দেয়ালে সোনালি কারুকাজ এবং সুদৃশ্য ভারী পর্দা আলোর প্রবেশাধিকার সীমিত করে ঘিরে রেখেছে বাইরের দিকের কাচের দেয়াল। তবে যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে, তা হলো এই ভবনে উপরে ওঠার লিফট!

হোটেল মেট্রোপলের রিসেপশন

প্রাগৈতিহাসিক যুগের ঊর্ধ্বমুখী উত্তোলনের এই বাহন দেখেই অনুমান করা যায় লিফট ব্যবহারে পুরোনো দিনের রাজা বাদশাদের চেয়ে আমরা এ যুগের সাধারণ মানুষও অনেক ঝামেলাহীন জীবন পার করছি। লে মেট্রোপলের লিফটে ওঠার অভিজ্ঞতা ভীতিকর এবং এর পরিচালনা পদ্ধতি যথেষ্ট জটিল। একজন লিফটম্যান অবশ্য সার্বক্ষণিক দরজায় দাঁড়িয়ে থাকেন। দরজার বাইরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনো উপায় নেই, কারণ চারজনের বেশি যাত্রীর একসঙ্গে সেই বাহনে স্থানসংকুলান হয় না।

লিফটটি চলার প্রস্তুতি হিসেবে একটি সোনালি ধাতব গেট টেনে দেবার পরে আরও একটি লোহার দরজা বন্ধ করে সিন্দুকের হাতলের মতো হাতল চেপে দিতে হয়। তারপরে কারুকাজ করা ফ্রেমে বাঁধানো বোতাম টিপে উপরে ওঠার ব্যবস্থা! ইষ্ট নাম জপতে জপতে তিনতলায় উঠে কার্পেট পাতা লম্বা করিডোর পেরিয়ে ঘরের দরজায় পৌঁছলাম। সারা পৃথিবীর আধুনিক হোটেলে কার্ডের চাবি চালু হলেও এখানে সেই প্রাচীনকালের ধাতব চাবি ঘুরিয়ে ঘরে ঢুকে দেখলাম বাদশাহ ফারুক তার ভবিষ্যতের অতিথিদের জন্যে এখানেও বাদশাহী এন্তেজাম করেই রেখেছেন।

খাট পালঙ্ক, চেয়ার টেবিলসহ আসবাবপত্র ও দরজা জানালায় সেই রাজকীয় বিত্ত বৈভবের আভাস। ঘরের মেঝে তো বটেই দেয়ালগুলোও চিত্রিত কার্পেটে মোড়া। সত্যি বলতে কী, রাজকীয় পরিবেশে অনভ্যস্ত আমার রীতিমতো অস্বস্তি লাগে। অনেক নামিদামি পাঁচতারা আধুনিক হোটেলে যে সমস্যা কখনো অনুভব করিনি তেমন এক ধরনের দম আটকানো অবস্থা থেকে দরজার ভারী পর্দা সরিয়ে ব্যালকনিতে বেরোতেই এক ঝলক বাইরের বাতাস ঘরে ঢুকে পড়ল। বাঁয়ে অল্প দূরেই নীল সমুদ্র আর সামনে কোলাহল মুখর শহরের একটি চত্বর ঘিরে যানবাহনের ব্যস্ত চলাচল। লাঞ্চের সময় পার হয়ে যাচ্ছে বলে খুব বেশিক্ষণ ব্যালকনিতে দাঁড়ানো হলো না। রানা ভাই দরজায় নক করে ১৫ মিনিটের মধ্যে ছয়তলার উপরে রুফটপ রেস্টুরেন্টে চলে আসতে বললেন। আমি ঘরে ঢুকে বিছানায় পড়েই ঘুমিয়ে গেলাম।

ব্যালকনি থেকে সমুদ্র

মিশরীয় রাজতন্ত্রের শেষ সম্রাট বাদশাহ ফারুকের দেড় যুগের রাজত্বকাল ১৯৫২ সালে এক রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে শেষ হলে শিগগিরই গামাল আবদেল নাসের দেশটিকে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসাবে ক্ষমতা আসেন। পনের বছরের শাসনকালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সহযোগিতায় আসোয়ান বাঁধ নির্মাণের মধ্য দিয়ে মিশরের অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চারের পরপরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নাসেরের মৃত্যু হলে বৃটিশ তাড়ানো স্বাধীন মিশরের উন্নয়ন অনেকটাই স্তিমিত হয়ে যায়।

পরবর্তী সময়ে নামে অ্যারাব রিপাবলিক অব ইজিপ্ট হলেও নাসেরের পর থেকে আনোয়ার সাদাত কিংবা হুসনী মোবারক থেকে আবদেল ফাতাহ এল সিসি পর্যন্ত রাজনৈতিক পট-পরির্তনের দিকে চোখ রাখলে বোঝা যায় মিশরের প্রজাতন্ত্র আসলে গত ষাট বছর ধরেই সামরিক বাহিনী সমর্থিত স্বৈরতন্ত্র, বিরোধী মতবাদীদের দমন নিপীড়ন এবং আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বাইরে প্রায় কখনোই জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে ওঠেনি। পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের শাসনামলের মতোই বর্তমান মিশরে চলছে লৌহমানব ফিল্ড মার্শাল এল সিসির সামরিক-গণতান্ত্রিক শাসন।

নগরীর রেস্তোরাঁ

ঘুমটা খুব তাড়াতাড়ি ভেঙেছিল বলে দ্রুত উঠে সেই ভয়ঙ্কর লিফটে না উঠে সিঁড়ি দিয়ে ছয় তলার উপরে ছাদ রেস্তোরাঁয় পৌঁছালাম।  টেবিলে বসে সমুদ্র দর্শনের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ দুই সারিতে পাতা টেবিলের খোলা দিকে বসেছিলাম। দৃশ্য চমৎকার ও বাইরে যথেষ্ট রোদের তাপ থাকলেও সমুদ্রের ঠান্ডা বাতাস কিছুক্ষণের মধ্যেই কাঁপ ধরিয়ে দিল। পরিবেশকদের একজন এসে গাড়ির কাচ নামানোর মতো ট্রান্সপারেন্ট শিল্ড নামিয়ে দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ থেকে রক্ষা করলে আমরা ফারুক সাহেবের রাজকীয় ভবনের রেস্তোরাঁয় বসে আলোচনা করছিলাম ভাগ্যহত বাদশা ফারুকের কথা।

ইতালিতে নির্বাসিত জীবনযাপনের সময় ভ্যাটিকান সিটির কাছে একটি ফরাসি রেস্তোরাঁয় এক গ্রান্ড পার্টিতে ভেড়ার ঠ্যাং চিবিয়ে খাওয়ার সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মাত্র পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সে ফারুকের মৃত্যু হয়। দু দুবার বিবাহ বিচ্ছেদের পরে তখন তার সঙ্গে ছিলেন স্বর্ণকেশী এক ইতালিয় সুন্দরী। মিশর ও সুদানের এক সময়ের একচ্ছত্র অধিপতি বেচারা ফারুকের এই মৃত্যু সম্ভবত তার চার পুত্র-কন্যা ছাড়া আর কাউকেই শোকাভিভূত করেনি।

কথা ছিল লাঞ্চের ঘণ্টাখানেক পরে নগর দর্শনে বেরিয়ে পড়ব। কিন্তু ঘুমিয়ে না পড়লেও রাজকীয় শয্যায় শুয়ে গড়াগড়ি করে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল। ধীরে সুস্থে ঘরে বসেই চা বানিয়ে খেয়ে সাহস করে লিফটে চেপে নিচে নেমে এলাম। লে মেট্রোপল চারতারা হোটেল হলেও সুইমিংপুল ও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা হোটেলের বাইরে খানিকটা দূরে। কাজেই সেই পার্কিং থেকে গাড়ি নিয়ে আসতেও খানিকটা সময় গেল।

স্টেইনলি ব্রিজ

শেষ পর্যন্ত সৌরভ যখন স্টিয়ারিং হুইলে হাত রেখে আলেক্সান্দ্রিয়া নগরের পথে চলতে শুরু করল তখন রাস্তার দুপাশে সড়কবাতিগুলো জ্বলে উঠতে শুরু করেছে। আমরা যে পথ ধরে এগোচ্ছি সেটি ওয়ানওয়ে। হাতের ডান দিকে খ্যাতনামা বিপণী কেন্দ্রের পাশাপাশি অখ্যাত দোকানে ঝলমল করছে নাম ফলকের নিয়ন সাইন। বাঁ দিকের একমুখী রাস্তার ওপারে সমুদ্র। চলার পথে সৌরভ দেখিয়ে দিল আলেক্সান্দ্রিয়ার একটি ল্যান্ড মার্ক স্ট্যানলি ব্রিজ। মূল সড়কের যানজট কমানোর জন্যে নব্বই দশকের শেষ দিকে সমুদ্রের পাশ দিয়ে নতুন একটি রাস্তা তৈরির সময় দেখা গেল একটা জায়গায় শহরের স্থলভাগে ঢুকে পড়েছে ভূমধ্য সাগর। সেখানে সমুদ্রের দুই অংশ যুক্ত করে নির্মিত হয়েছিল এই সেতু।

আমার মনে হয়েছে প্রয়োজনের চেয়েও আলেক্সান্দ্রিয়া শহরের ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নির্মিত সেতুটি নগরের সৌন্দর্যে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। মাত্র চারশ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুতে স্প্যানের সংখ্যা ছয়টি, এর চারটি টাওয়ার ইসলামি স্থাপত্য শিল্পের চমৎকার নিদর্শন। সন্ধ্যার শুরুতে দিনের আলোর পাশাপাশি সাগরের বুকে এই সেতু জুড়ে আলোর নান্দনিক ব্যবহার যে দৃশ্যপট রচনা করেছে তা দীর্ঘ সময় ধরে তাকিয়ে দেখার মতো। গাড়িয়ে থামিয়ে রেখে দেখার মতো অবস্থা না থাকায় আমরা সামনে এগোতে থাকি।

রাতের রাজপথ

আলোকোজ্জ্বল আলেক্সান্দ্রিয়ার প্রতিটি রাতই মনে হয় উৎসব মুখর। তাই শপিং এরিয়া কিংবা বাজার এলাকার আলোকসজ্জা দেখে ক্রিসমাস কিংবা ঈদের সময় বলে ভুল হতে পারে। আমরা অনেক দূরে থেকে ঘুরে এসে ফেরার পথে স্ট্যানলি ব্রিজের উপর দিয়ে পার হলাম।

এবারে হাতের ডানে ভূমধ্যসাগর। উৎসব নগরী এখানে সাগরের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। ফুটপাথে যেমন বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য নারী পুরুষ সমুদ্রের হাওয়া গায়ে মেখে সান্ধ্যকালীন পদচারণায় নেমেছেন, তেমনি সমুদ্রের বুকে সারি সারি রেস্তোঁরায় নৈশভোজের আয়োজনেও মানুষের কমতি নেই। এদের মধ্যে অনেকেই হয়তো পর্যটক, তবে আমরা পর্যটক হলেও রঙিন আলোর ঝলমলে আহ্বানে সাড়া না দিয়ে ঢুকলাম শহরের রেস্তোরা ক্যাফে ডিলা পাইতে। 
সৌরভ এমনিতেই স্বল্পাহারী, ওর রাতের খাবার শুধু খানিকটা পাস্তা। আমার জন্যে অর্ডার দিয়েছিলাম ফিশ ফিলে আর সবচেয়ে যিনি কম খান তিনি বললেন মিক্সড বিফ অ্যান্ড চিকেন ফাইতাস। টেবিলে খাবার এলে দেখা গেল গরু ও মুরগির গ্রিলের সঙ্গে যে পরিমাণ মেক্সিকান ফ্রাইড রাইস পরিবেশিত হয়েছে তা তিনজনের পক্ষেও শেষ করা সম্ভব নয়। অতএব স্যামন মাছ ও সেদ্ধ সবজির বেরসিক মেন্যুর সঙ্গে হেনার গ্রিল্ড বিফ ও ফ্রাইড রাইসের অনেকটাই আমার আহার্যে পরিণত হলো। চমৎকার একটা ডিনারের পরে ঘরে ফিরে ঘুমিয়ে পড়াটা কোনো কাজের কথা নয়। সৌরভ গাড়িটা পার্কিংয়ে রেখে এলে আমরা সমুদ্রের ধারে পাথরের বাঁধের উপরে উঠে বসলাম।

সমুদ্রের তীর থেকে লে মেট্রোপল

রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় গাড়ির চলাচল কমে এসেছে। যন্ত্রচালিত গাড়িগুলোর পাশাপাশি ঘোড়ার খুরে খটখট আওয়াজ তুলে চলে যাচ্ছে মন্থর গতির টাঙ্গা। ফুটপাথের টং দোকানে আগুনে পুড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ভুট্টা। হাত ধরাধরি করে হেঁটে যাচ্ছে তরুণ-তরুণী, আবার রাজ্যের ক্লান্তি নিয়ে দু-চারজন বৃদ্ধকেও পথ চলতে দেখা গেল। রানাভাই নিজেও হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূরে চলে গেছেন। বাঁধের উপরে বসে সৌরভ বলছিল তার প্রথমবার আলেক্সান্দ্রিয়া আসার কথা। কেনিয়া থেকে সস্ত্রীক এসে ঠিক রাস্তার ওপারের হোটেলে সেবার থেকে গেছে। রাস্তা পেরিয়ে পার্কের ওপারেই আমাদের হোটেল মেট্রোপলও এখান থেকে দেখা যায়। 

কিন্তু আমাদের হোটেলের সামনে ভূমধ্যসাগরের তীরে যার ভাস্কর্য ঘিরে ছোট্ট এই উদ্যানটি গড়ে উঠেছে তার নাম কেউ জানে না। রানা ভাই ফিরে এলে জানলাম, মিশরের স্বাধীনতা সংগ্রামে বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন এই মূর্তিটি সেই কীর্তিমান পুরুষ সাদ জগলুল পাশার! ১৯২৭ সালে জগলুল পাশার মৃত্যু হলে পরাধীন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব শূন্যতায় হতাশ নজরুল তার ‘চিরঞ্জীব জগলুল’ নামের দীর্ঘ কবিতায় তাহলে এই মহাত্মার কথাই লিখে গেছেন। ‘তোমার বিদায়ে দূর অতীতের সেই কথা মনে পড়ে/মিসর হইতে বিদায় লইল মুসা যবে চিরতরে/সম্ভ্রমে সরে পথ করে দিল নীল দরিয়ার বারি/পিছু পিছু চলে কাঁদিয়া কাঁদিয়া মিসরের নরনারী?’ 

উদ্যানে নজরুলের জগলুল পাশা

তবে বর্তমান মিশরের নরনারীরা জগলুল পাশার জন্যে কান্নাকাটি করা তো দূরে থাক, তার নামই সম্ভবত শোনেনি। অন্যদিকে আলেক্সান্দ্রিয়ার নগর কর্তারা জগলুল পাশাকে সম্মান জানাতে গিয়ে তাকে উঁচু এক স্তম্ভের উপরে তুলে দিয়েছেন, কিন্তু পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় তার চেহারা দেখার কোনো উপায় নেই। স্তম্ভের পায়ের কাছে কিছু শুকনো ফুল পাতা পড়ে থাকলেও উৎকীর্ণ করা ফলক পাঠোদ্ধারের কোনো ব্যবস্থা তারা রাখেননি। 

রাতের রাজপথে ট্রাম

হোটেলে ফিরে আমরা আবার সেই ঐতিহাসিক লিফটে চড়ে সোজা রুফটপ রেস্তোরাঁয় চলে গেলাম। বেশ রাত হলেও রেস্তোরাঁ তখনো জমজমাট। চাঁদোয়া জুড়ে তারার মতো বাতি ঝিকমিক করছে আর কাচ দিয়ে ঘেরা লম্বা বাতিদানে মোমবাতির শিখার মতো দপদপ করে যে বাতি জ্বলছে তাকে প্রথমে কেরোসিনের প্রদীপ বলে ভুল করেছিলাম। এখানে দাঁড়িয়ে জগলুল পাশা পার্কের ওপারে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যায় রাতের সমুদ্র। অন্ধকার সাগরের বুকে মাঝে মাঝে জাহাজের দুই একটা বাতি জ্বলে উঠেই আবার নিভে যায়। আমরা ঘরে ফিরেও ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে অনেক রাত পর্যন্ত রাস্তায় ট্রামের চলাচল দেখি। ধীরে ধীরে প্রায় জনশূন্য হয়ে আসে আলেক্সান্দ্রিয়ার ব্যস্ত সড়ক, জনাকীর্ণ রাস্তা। 

চলবে...      

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৭ 

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

এসএন 

Header Ad
Header Ad

রাফিনিয়া-ইয়ামালের নৈপুণ্যে দুর্দান্ত জয় পেল বার্সেলোনা

ছবি: সংগৃহীত

বার্সেলোনা চলতি লা লিগা মৌসুমে দুর্দান্ত শুরু করলেও কিছু সময় ছন্দ হারিয়ে শীর্ষস্থান থেকে সরে যায়। তবে, সম্প্রতি টানা চার ম্যাচ জয়হীন থাকার পর রাফিনিয়া ও ইয়ামালের নৈপুণ্যে বড় জয় পেয়ে ছন্দে ফিরেছে কাতালান ক্লাবটি।

২৬ জানুয়ারি, রোববার, বার্সেলোনা তাদের ঘরের মাঠে ভালেন্সিয়াকে ৭-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। ম্যাচের শুরুতেই তৃতীয় মিনিটে লামিনে ইয়ামালের অসাধারণ পাস থেকে গোল করে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং। কিছুক্ষণ পর, ৮ম মিনিটে আলেহান্দ্রো বাল্দের ক্রসে সুনিপুণ গোল করেন তরেস, যিনি তার সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোল উদযাপন করেননি।

অল্প সময়ের মধ্যে ২-০ গোলের লিড নিয়ে বার্সেলোনা ভ্যালেন্সিয়ার রক্ষণে আরও চাপ সৃষ্টি করে। ১৪তম মিনিটে ইয়ামালের ব্যাকহিল থেকে রাফিনিয়াকে বল পান, এবং ডি-বক্সের বাইরে থেকে নিখুঁত শটে গোল করে দলের তৃতীয় গোলটি করেন তিনি। এটি ছিল তার চলতি মৌসুমের ১২তম গোল।

২৪তম মিনিটে পাউ কুবার্সির পাসে দলের চতুর্থ গোলটি করেন লোপেস, যার পরে ভিএআরের মাধ্যমে গোলটি নিশ্চিত করা হয়। বিরতির ঠিক আগে, রাফিনিয়ার একটি শক্তিশালী শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে, লোপেস দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়ে গোল করে বার্সেলোনাকে ৫-০ ব্যবধানে এগিয়ে নিয়ে যান।

দ্বিতীয়ার্ধে, ৫৯তম মিনিটে হুগো দুরো ভ্যালেন্সিয়ার জন্য একটি সম্মানজনক গোল করেন, কিন্তু পরবর্তীতে ৬৬তম মিনিটে লেভানডোভস্কি বার্সেলোনার ব্যবধান আবার ৫ গোল করে বাড়িয়ে দেন। ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে, তোরেসের শট ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক ঠেকালেও ফিরতি বল সিজার টারেগা নিজ জালে পাঠিয়ে দেন, ফলে ৭-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হয় বার্সেলোনার।

এই জয়ে ২১ ম্যাচে ১৩ জয় ও ৩ ড্রয়ে বার্সেলোনা ৪২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে ফিরেছে। ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ এবং ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। অন্যদিকে, ১৬ পয়েন্ট নিয়ে ১৯ নম্বরে রয়েছে ভালেন্সিয়া।

Header Ad
Header Ad

পুলিশের শতকরা ৮০ জনের হৃদয়ে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বর্তমান পুলিশের শতকরা ৮০ জনই আওয়ামী আমলের, যাদের হৃদয়ে ছাত্রলীগ। তারাই এ সরকারের জন্য কাজ করছে না।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে চারটি বইয়ে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, বিপ্লব পরবর্তী কিছু সমস্যা থাকে। তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে সরকার। গণঅভ্যুত্থান নিয়ে সকলের মধ্যে যে ঐক্য ছিল, সেই ঐক্য আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন আসিফ নজরুল।

এর আগে, সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে বিএনপির সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয়। এটি গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের দোসরদের কতটা উৎসাহিত এবং বেপরোয়া করে তুলতে পারে তার কিছুটা প্রমাণ আমরা গত কয়েক দিনে পেয়েছি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, তিনি যতটা জানেন এবং বিশ্বাস করেন— বিএনপি কোনো ষড়যন্ত্রে জড়িত নয় এবং তারা ১/১১ ধরনের কিছু করতে চাচ্ছে না, ছাত্রনেতারা সরকারের অংশ হিসেবে কোনো নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে না বা এতে যোগ দিচ্ছে না, জুলাই ঘোষণাপত্র একটি রাজনৈতিক দলিল হবে এবং ছাত্রনেতারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তির মতামত সঠিকভাবে প্রতিফলিত করার জন্য চেষ্টা করছেন এবং বিএনপি এবং ছাত্রনেতারা এমনকি নির্বাচন কেন্দ্রিক বৃহত্তর সমঝোতার ব্যাপারে আগ্রহী, তবে সেটি আলোচনা সাপেক্ষে। এর অর্থ হলো, বিরোধের কোনো কারণ নেই, বরং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, গণহত্যায় জড়িতদের হাতে রয়েছে লুটপাট করা বিপুল পরিমাণ টাকা, অনেক সুবিধাবাদী গোষ্ঠী, শক্তিশালী প্রচারণা নেটওয়ার্ক এবং শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থন। তাদের বিরুদ্ধে যদি কিছু করতে হয়, তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্রদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের মধ্যে ভিন্নমত থাকবে, তবে তা যেন দেশের শত্রুদের জন্য উৎসাহের কারণ না হয়।

Header Ad
Header Ad

৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের পদত্যাগ এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) শেষ রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের সংগঠক আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, বিচারের আগে কোনো ধরনের পরীক্ষা হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বৈরাচারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ৭ কলেজকে ঢাবির অধিভুক্তি থেকে বাতিল করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলাম।

তিনি বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি ছিল আমাদের। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তা করেনি। উল্টো ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এসব নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। সবশেষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি (শিক্ষা) আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। এর প্রতিবাদে গণতন্ত্র ও মুক্তি তোরণের নিচে অবস্থানকালে ঢাবি শিক্ষার্থী ও পুলিশ সম্মিলিতভাবে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

৭ কলেজকে নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করতে হবে, এমন দাবি জানিয়ে আব্দুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি মামুন আহমেদের বিচার করতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকা শহর অবরোধ করা হবে। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাস এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

রাফিনিয়া-ইয়ামালের নৈপুণ্যে দুর্দান্ত জয় পেল বার্সেলোনা
পুলিশের শতকরা ৮০ জনের হৃদয়ে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল
৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি
ছাদের কার্নিসে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি, সেই এসআই চঞ্চল গ্রেপ্তার
সাত কলেজের সব পরীক্ষা স্থগিত
আজ পবিত্র শবে মেরাজ
মধ্যরাতে ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ৮
সাবেক দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গ্রেপ্তার
রয়্যাল এনফিল্ড কিনে না দেয়ায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ কিশোরের!
রংপুরের টানা দ্বিতীয় হার, রাজশাহীর নাটকীয় জয়
সায়েন্সল্যাব ও টেকনিক্যাল মোড় অবরোধ করেছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা
আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলাদেশের কসাই: প্রেস সচিব
পুলিশের সংখ্যা পর্যাপ্ত, কিন্তু মনোবলের ঘাটতি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশে আসছে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড যাচ্ছেন বাংলাদেশি রোগীরা, কলকাতার হাসপাতাল ব্যবসায় ধস
২৫ দিনে এলো ২০৪৪৭ কোটি টাকার প্রবাসী আয়
বেতন-ভাতায় না পোষালে অন্য পেশায় চলে যান: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ ট্রাস্ট বৃত্তি পেলেন কুবির ৩০ শিক্ষার্থী
নির্বাচনের কথা বললে উপদেষ্টাদের মুখ কালো হয়ে যায়: মেজর হাফিজ
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন সংগীতশিল্পী অরিজিৎ সিং