সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৩ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৮

‘কত রাজপথ জনপদ ঘুরেছি, সাতটি যে পৃথিবীর বিস্ময়...’ সেই সাত বিস্ময়ের দুটিই মিশরে। এই সাত আশ্চর্যের প্রথমটি এবং এখন পর্যন্ত টিকে থাকা একমাত্র নিদর্শন গিজার পিরামিড দেখা হয়ে গেছে। অন্যটি আলেক্সিন্দ্রিয়ার বাতিঘর প্রবল ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গেছে প্রায় সাড়ে পাঁচশ বছর আগে। কিন্তু এখনো প্রতি বছর অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক উত্তর মিশরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, বন্দর নগরী আলেক্সান্দ্রিয়ায় আসেন বিশ্বখ্যাত লাইব্রেরি আর নিশ্চিহ্ন বাতিঘরের শহরে।

আমরাও ভোরবেলা রওনা দিয়েছি কায়রো থেকে। গাড়ির ড্রাইভিং সিটে সৌরভ, তার পাশে রানা ভাই, পেছনে আমি আর হেনা। দিনটা বৃহস্পতিবার বলে রাস্তায় প্রচণ্ড যানজটে সাত সকালে শহর থেকে বেরোবার মুখেই বেশ কয়েকবার আটকাতে হলো। সৌরভ নিজে গাড়ি চালিয়ে বেশ কয়েকবার আলেক্সান্দ্রিয়ায় গেছে, কাজেই পথঘাট তার চেনা। কায়রোর ছাড়িয়ে কিছুটা এগোবার পরে হাইওয়েতে উঠে যাবার জন্যে গাড়ি ঘুরিয়ে বিকল্প পথে শহরতলীর একটি আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়ল সৌরভ। এরপার চেনা পথ অচেনা হতে হতে পথ হারিয়ে এক সময় আমরা একটা বাগানবাড়ি কিংবা কারখানার গেটের সামনে এসে থেমে গেলাম। এখান থেকে বেরোবার কোনো পথ নেই। সৌরভ নেমে দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করলে সে আকারে ইঙ্গিতে একটা রাস্তা দেখিয়ে দিল। গাড়ি ঘুরিয়ে খানিকটা কাঁচা রাস্তা, কিছুটা ভাঙাচোরা পথে এগিয়ে যেখান থেকে হাইওয়ে ছেড়েছিলাম তার কাছাকাছি একটা জায়গায় পৌঁছালাম। তবে ততোক্ষণে রাস্তায় যানজট একটু কমেছে, আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই একটা রোড সাইড রেস্টুরেন্টে এসে দাঁড়ালাম।

       পথে পথে অসংখ্য মসজিদ

কায়রো থেকে হালকা চা- নাশতা খেয়ে বেরিয়েছিলাম। কাজেই পথের পাশের রেস্তোরাঁর ভেতর থেকে ব্রেকফাস্ট হিসাবে ক্রসো এবং বেশ বড় একটা কফি মগ হাতে নিয়ে সত্যিই পথের ধারে এসে বসলাম। পাশ দিয়ে হুশ হাশ করে গাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রশস্ত ফুটপাথে ঘাসের মতো সবুজ কার্পেটে পাতা টেবিলে বসে নাশতা শেষ করলাম। তারপরে আবার উত্তরমুখি ছুটতে থাকা। শহরের বাইরে পথের পাশে ম্যাডোনাল্ডস বা কেএফসির মতো খাবারের দোকান থাকতেই পারে। কিন্তু এতো দূরে ক্যারিফোর, নাইকি এবং এইচ অ্যান্ড এম-এ জুতা, ছাতা, জামা-কাপড় কিনতে কারা আসে ভেবে পাই না। মাঝে মাঝে খেজুর বাগান আর ছোট ছোট জনপদের ফাঁকে পথের দুপাশেই চোখে পড়ে একের পর এক মসজিদ। প্রতি কিলোমিটারে জনমানুষহীন রাস্তার ধারে গোটা কয়েক সুদৃশ্য মসজিদ দেখে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক— এত মসজিদে নামাজ পড়ে কারা! 

         আলেক্সান্দ্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

মসজিদগুলোর নির্মাণ শৈলী এবং বহিরাঙ্গণের রঙের তফাৎ থাকলেও প্রায় প্রতিটি মসজিদেই রয়েছে একটি করে গম্বুজ এবং একটি মিনার। একাধিক গম্বুজ বা তিন চারটি মিনার বিশিষ্ট মসজিদ যে নেই তা নয়। এ ছাড়া সুনির্মিত সুদৃশ্য তোরণযুক্ত মসজিদও দেখা গেল বেশ কয়েকটি। যারা ঢাকাকে মসজিদ নগরী এবং বাংলাদেশকে মসজিদের দেশ মনে করেন, তারা নিশ্চয়ই কায়রো শহরের অলিগলিতে পা রাখেননি এবং মিশরে শহরাঞ্চলের বাইরে কোথাও যাবার সুযোগ তাদের হয়নি। কয়েকটি মসজিদের সামনের তোরণে কয়েকটি ঘোড়ার মূর্তি দেখে মনে হলো ইসলামে যে মূর্তি নির্মাণ হারাম তা হয়ত এদেশের মানুষ এখনো জানে না। এইসব মসজিদ, ছোট দুই একটি শহর এবং অসংখ্য খেজুর বিথী দেখতে দেখতে এবং গাড়ির সিডি প্লেয়ারে রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতে শুনতে আমরা এক সময় আলেক্সান্দ্রিয়ার উপকণ্ঠে এসে পৌঁছলাম।    

      লাইব্রেরির বৃত্তাকার দেয়াল

মিশরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সাতটি আশ্চর্যের অন্যতম বাতিঘর ছাড়াও ঐতিহাসিক লাইব্রেরির জন্য খ্যাত আলেক্সান্দ্রিয়া ছিল প্রাচীন পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এই শহর এক সময় জ্ঞান-বিজ্ঞান, বুদ্ধিবৃত্তি ও সুকুমার কলার চর্চায় গ্রিসের এথেন্সকেও পেছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে শোনা আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেটের নামে যে শহরের নাম সেই আলেক্সান্দ্রিয়ায় আড়াই ঘণ্টায় পৌঁছাবার কথা থাকলেও আমাদের সময় লেগেছে সাড়ে তিন ঘণ্টা। সমুদ্র নগরীতে প্রবেশের পথেই চোখে পড়ে হাতের ডান দিকে ভূমধ্যসাগরের নিস্তরঙ্গ নীল জলে ভেসে বেড়াচ্ছে ছোট ছোট নৌযান। সমুদ্রের ঢেউ থেকে শহর রক্ষার জন্যে তৈরি প্রকাণ্ড পাথরে বাধানো বাঁধের এ পাশের প্রশস্ত ফুটপাথের উপর কংক্রিটের রেলিংয়ে তরুণ তরুণীরা বসে আড্ডা দিচ্ছে। বেলা এগারোটায় কড়া রোদে সমুদ্র তীরে দীর্ঘ সারিতে তরুণ-তরুণীদের জমায়েত একটু বিসদৃশ্য মনে হচ্ছিল। তবে একটু পরেই বিবলোথিক আলেক্সান্দ্রিয়া, অর্থাৎ আলেক্সান্দ্রিয়া গ্রন্থাগারের সামনে এসে দাঁড়ালে গাড়ি থেকে নেমেই দেখলাম উল্টো দিকে ইউনিভার্সিটি অব আলেক্সান্দ্রিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের এতো কাছে সমুদ্র থাকতে তরুণ-তরুণীরা রেস্তোরাঁ বা ক্যাফেতে আড্ডা দেবে না এটাই স্বাভাবিক।

         দেমিত্রিয়াস ফলেরিয়াস

নগরকেন্দ্রের একটা চমৎকার অবস্থানে প্রাচীন বন্দরের কাছাকাছি গড়ে তোলা হয়েছে নতুন বিবলিওথিকা আলেক্সান্দ্রিয়া। শুরুতে আমাদের পরিকল্পনা ছিল হোটেলে লাগেজ রেখে হাত মুখে পানি দিয়ে লাইব্রেরিতে আসব। কিন্তু বৃহস্পতিবারে দর্শনার্থীদের জন্যে লাইব্রেরির দরজা বন্ধ হয়ে যাবে বিকেল সাড়ে তিনটায়। দেরিতে ঢুকে বিশাল লাইব্রেরি ঘুরে দেখার যথেষ্ট সময় নাও থাকতে পারে। সেই কারণে চেক-ইনের আগেই আমাদের তিনজনকে লাইব্রেরি ভবনের সামনে নামিয়ে দিয়ে সৌরভ হোটেলে চলে গেল। হোটেলের রুমে বসেই সে অফিসের কাজে করবে অনলাইনে। আমরা পাঠাগার পরিভ্রমণ শেষ করে হোটেলে ফিরে লাঞ্চ করব। চত্বরের বাইরে কয়েকটি কাউন্টারে টিকেট বিক্রি হচ্ছে। লাইব্রেরিতে প্রবেশের জন্য নন-ইজিপ্টশিয়ানদের দিতে হবে ৭০ পাউন্ড অর্থাৎ সোয়া চারশ টাকা। দুই হাজার দুইশ সাতষট্টি বছর আগের একটা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের জন্যে চার পাঁচশ টাকা খুব বেশি নয়। লাইব্রেরি চত্বরে প্রবেশের আগেই ভবনটির দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য দৃষ্টি আকর্ষণ করল। বাইরের দেয়াল জুড়ে বিশাল বৃত্তাকার কাঠামো স্থাপত্য শিল্পের একটি ভিন্ন ধরনের নিদর্শন। এই বিস্তৃত কাঠামোর পাথুরে দেয়ালের প্রতিটি ব্লকে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার অক্ষরের কিছু লেখা খোদাই করা। রানা ভাই  আগেও একবার আলেক্সান্দ্রিয়ার লাইব্রেরিতে এসে গেছেন। বললেন, ‘এখানে বাংলা অক্ষরে লেখাও দেয়ালে খোদাই করে রাখা আছে। অগণিত ভাষার ভেতর থেকে বাংলা খুঁজে বের করা সম্ভব হলো না। দেখলাম দলে দলে শিক্ষার্থী, পর্যটক, দর্শনার্থী ভবনে ঢুকে পড়ছে। আগেই জেনেছিলাম প্রতিদিন সর্বোচ্চ তিনশ পর্যটক লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে পারেন। যদিও টিকেট কেনা হয়ে গেছে, তারপরেও যদি কোনো কারণে আটকে দেয়! অতএব বাইরের অংশ পরেও দেখা যাবে ধরে নিয়ে আমরা নিরাপত্তা ফটক পার হয়ে মূল ভবনে ঢুকে পড়লাম।   

       লাইব্রেরির একাংশ

লাইব্রেরির সংগ্রহশালায় প্রবেশের আগে পুরো লাইব্রেরি চত্বর ও ভবনের মডেল দেখে এর স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য বুঝতে চেষ্টা করি, দেয়াল জুড়ে সুদৃশ্য ধাতব মুর্যালের কারুকাজ দেখি। ভবনটি নতুন করে নির্মাণের পরে প্রেসিডেন্ট হুসনী মোবারক উদ্বোধন করেছিলেন ২০০২ সালের ১৬ই অক্টোবর। উদ্বোধনী স্মারকে The whole world celebrated with Egypt and her President, the rebirth of the library to be a beacon of knowledge and home to meeting and dialogue between people and culture, লেখাটি নিঃসন্দেহে সুচিন্তিত ও গুরুত্বপূর্ণ। সত্যিই তো হুসনী মোবারককে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করলেও তার সময়কালেই বিবলিওথিকা আলেক্সান্দ্রিয়ার পুনর্জন্ম ঘটেছে সে কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।  

       লাইব্রেরিতে বইয়ের সারি

উদ্বোধনী ফলক ছাড়াও প্রবেশ পথের পাশে রয়েছে শ্বেত পাথরে তৈরি দেমিত্রিয়াস ফালেরিয়াসের প্রমাণ সাইজের মূর্তি। খ্রিস্টের জন্মের শ তিনেক বছর আগে এথেন্সের কবি দার্শনিক ও বক্তা দেমিত্রিয়াস ছিলেন জ্ঞানে ও শিক্ষায় সমৃদ্ধ অপ্রতিদ্বন্দ্বী একজন মানুষ। এ ধরনের মানুষের শত্রুর অভাব হয় না। তাই তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল প্রথমে থিবস নগরী অর্থাৎ বর্তমানের লুস্করে। পরে তিনি আলেক্সান্দ্রিয়ায় এসে একটি জ্ঞান ভান্ডার গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেটিই পরবর্তীকালে হয়ে ওঠে বিশ্বনন্দিত গ্রন্থাগার। একজন প্রজ্ঞাবান কাজের মানুষ নির্বাসিত জীবনেও যে অবদান রেখে গেছেন আড়াই হাজার বছর পরেও তার স্বীকৃতি স্বরূপ বিবলোথিক আলেক্সান্দ্রিয়ার প্রবেশ পথেই শ্বেতপাথরের ভাস্কর্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি।  লাইব্রেরির ভেতরে প্রথমেই এর বিশালত্ব একটা চমক সৃষ্টি করে। উপরের স্তর থেকে নিচে বাঁ দিকে তাকিয়ে দেখি কয়েকটি স্তরের সবচেয়ে নিচের স্তরে সারি সারি চেয়ার টেবিল সাজানো, তার উপরের একটি স্তরে সাজানো টেবিলগুলোর প্রত্যেকটিতে একটি করে ডেস্কটপ কম্পিউটার। তবে এখানে কম্পিউটার ব্যবহারকারীর সংখ্যা তেমন বেশি নয়। তারও উপরের একটি স্তরে ছাপাখানার বিবর্তনের ইতিহাস হিসাবে প্রদর্শিত হচ্ছে কয়েকশ বছরের পুরোনো কয়েকটি মুদ্রণযন্ত্র। প্রত্যেক স্তর থেকেই উপরে বা নিচের স্তরে যাবার জন্যে চারিদিকে রয়েছে অনেকগুলো সিঁড়ি।   

     শেক্সপিয়ার বেঞ্চ

আমরা পিনপতন নীরবতার ভেতর দিয়ে ডান দিকে এগিয়ে যাই। ডান দিকের স্তরগুলোতে সারি সারি তাকে অসংখ্য বই সাজানো। একটা দীর্ঘ করিডোরের ডান পাশে বইয়ের তাক আর অন্য পাশটা রেলিং দিয়ে ঘেরা, যার নিচেই আরেক স্তরের পাঠক সমাবেশের জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে টেবিল। করিডোরের শুরুতে হলুদ ফিতা টানিয়ে নিষেধাজ্ঞা ঝুলছে, দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ। অতএব আমরা করিডোর ধরে না এগিয়ে সিঁড়ি বেয়ে আরও উপরে উঠে যাই। এখানে শুরুতেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেক্সপিয়ারের নাম লেখা একটি বিশাল খোলা বই। বইটি আসলে একটি বেঞ্চ, দর্শণার্থীরা ক্লান্ত হয়ে পড়লে বসে পড়তে পারেন। আমরা ক্লান্ত হলেও একটা খোলা বইয়ের উপর বসে পড়াটা কেন যেন আমাদের সংস্কারের সঙ্গে মানায় না, তাই এই স্তরের করিডোর ধরে এগোতে থাকি। একের পর এক লেখক কবি নাট্যকারের আবক্ষ মূর্তি চোখে পড়ে বিভিন্ন স্তরে, করিডোরের কোণায় এবং পথের বাঁকে। দ্বাদশ শতকের আজারবাইজানের কবি নিজামী গাঞ্জাভি, গ্রিক কবি সি পি ক্যাভাফি এবং হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডরসনের মতো খ্যাতিমানদের পাশাপাশি একমাত্র ভারতীয় হিসাবে জায়গা করে নিয়েছেন মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধী! গান্ধীজী কাব্যকলা কিংবা সাহিত্য সংস্কৃতিতে কী অবদান রেখেছেন আমার জানা নেই, তবে ভারত সরকার রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্য না পাঠিয়ে প্রতিনিধি হিসাবে গান্ধীজীকে পাঠিয়ে দিয়েছে। বলে রাখা ভালো, এখানে প্রদর্শিত প্রায় সব শিল্পকর্মই সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের উপহার। 

      কবি নিজামী গাঞ্জাবি

এই গ্রন্থাগারের এগারোতলা ভবনে চল্লিশ লক্ষ বই ভবনটিতে সাজিয়ে রাখা সম্ভব, আর সংরক্ষণের জন্য রাখা যাবে আশি লক্ষ পর্যন্ত বই। কিন্তু বর্তমানে লাইব্রেরির দুটি শাখায় নয় লক্ষ পুস্তকের মধ্যে বিভিন্ন দেশের নানা ভাষার বই থাকলেও বাংলা ভাষায় রচিত কোনো বই নেই। রানা ভাই কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে জানালেন, লাইব্রেরির একজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের সঙ্গে বসে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, বাংলা ভাষায় লেখা বাংলাদেশি বা ভারতীয় কোনো বই তাদের সংগ্রহে নেই। তবে বাংলাদেশ সরকার বা জাতীয় গ্রন্থাগারের মতো প্রতিষ্ঠান ছাড়াও কোনো ব্যক্তি যদি বই পাঠাতে চান তাহলে তা সাদরে গৃহীত এবং সংরক্ষিত হবে। বই পাঠাবার নিয়ম-কানুন রানা ভাই জেনে এসেছেন এবং তার নিজের ও আমার লেখা কয়েকটি বই পাঠিয়ে দেবার প্রতিশ্রুতিও দিয়ে এসেছেন। 

আলেক্সান্দ্রিয়ার আড়াই হাজার বছর আগের গ্রন্থাগারের ভেতরে ঘুরতে ঘুরতেই ভাবছিলাম আমাদের ন্যাশনাল লাইব্রেরি এবং জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকাশকদের তদবিরের বই, আমলাদের বই এবং ভাগ বাটোয়ার বই পুস্তক কিনেই সময় এবং অর্থের সংকুলান করতে পারেন না, তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বইপত্র সম্পর্কিত বৈদেশিক বিষয়ের খোঁজ-খবর নেবেন কখন! 

চলবে...    

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৭ 

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

পুলিশের শতকরা ৮০ জনের হৃদয়ে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বর্তমান পুলিশের শতকরা ৮০ জনই আওয়ামী আমলের, যাদের হৃদয়ে ছাত্রলীগ। তারাই এ সরকারের জন্য কাজ করছে না।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে চারটি বইয়ে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, বিপ্লব পরবর্তী কিছু সমস্যা থাকে। তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে সরকার। গণঅভ্যুত্থান নিয়ে সকলের মধ্যে যে ঐক্য ছিল, সেই ঐক্য আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন আসিফ নজরুল।

এর আগে, সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে বিএনপির সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয়। এটি গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের দোসরদের কতটা উৎসাহিত এবং বেপরোয়া করে তুলতে পারে তার কিছুটা প্রমাণ আমরা গত কয়েক দিনে পেয়েছি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, তিনি যতটা জানেন এবং বিশ্বাস করেন— বিএনপি কোনো ষড়যন্ত্রে জড়িত নয় এবং তারা ১/১১ ধরনের কিছু করতে চাচ্ছে না, ছাত্রনেতারা সরকারের অংশ হিসেবে কোনো নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে না বা এতে যোগ দিচ্ছে না, জুলাই ঘোষণাপত্র একটি রাজনৈতিক দলিল হবে এবং ছাত্রনেতারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তির মতামত সঠিকভাবে প্রতিফলিত করার জন্য চেষ্টা করছেন এবং বিএনপি এবং ছাত্রনেতারা এমনকি নির্বাচন কেন্দ্রিক বৃহত্তর সমঝোতার ব্যাপারে আগ্রহী, তবে সেটি আলোচনা সাপেক্ষে। এর অর্থ হলো, বিরোধের কোনো কারণ নেই, বরং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, গণহত্যায় জড়িতদের হাতে রয়েছে লুটপাট করা বিপুল পরিমাণ টাকা, অনেক সুবিধাবাদী গোষ্ঠী, শক্তিশালী প্রচারণা নেটওয়ার্ক এবং শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থন। তাদের বিরুদ্ধে যদি কিছু করতে হয়, তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্রদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের মধ্যে ভিন্নমত থাকবে, তবে তা যেন দেশের শত্রুদের জন্য উৎসাহের কারণ না হয়।

Header Ad
Header Ad

৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের পদত্যাগ এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) শেষ রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের সংগঠক আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, বিচারের আগে কোনো ধরনের পরীক্ষা হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বৈরাচারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ৭ কলেজকে ঢাবির অধিভুক্তি থেকে বাতিল করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলাম।

তিনি বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি ছিল আমাদের। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তা করেনি। উল্টো ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এসব নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। সবশেষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি (শিক্ষা) আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। এর প্রতিবাদে গণতন্ত্র ও মুক্তি তোরণের নিচে অবস্থানকালে ঢাবি শিক্ষার্থী ও পুলিশ সম্মিলিতভাবে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

৭ কলেজকে নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করতে হবে, এমন দাবি জানিয়ে আব্দুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি মামুন আহমেদের বিচার করতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকা শহর অবরোধ করা হবে। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাস এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন।

Header Ad
Header Ad

ছাদের কার্নিসে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি, সেই এসআই চঞ্চল গ্রেপ্তার

শিক্ষার্থীকে গুলি করা পুলিশের সেই উপপরিদর্শক (এসআই) চঞ্চল সরকার। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় ছাদের কার্নিসে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি করা পুলিশের সেই উপপরিদর্শক (এসআই) চঞ্চল সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের হোতাকে খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা থেকে আসা পুলিশের একটি বিশেষ ইউনিট।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তানভীর হাসান জোহার নেতৃত্বে একটি টিম দীঘিনালায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।

দীঘিনালা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া এসআই চঞ্চল সরকারকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি করেছেন। তিনি জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে দীঘিনালা থানা থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ তাকে আটক করে। আটকের পর রাতেই তাকে ঢাকার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জুলাই আন্দোলনে মৃত্যুর ভয়ে ৪ তলার কার্নিশে ঝুলে থাকা কিশোরকে ঠাণ্ডা মাথায় খুব কাছ থেকে কয়েক রাউন্ড গুলি করে হত্যা করে দুই পুলিশ।

রামপুরা-বনশ্রীর মেরাদিয়া বাজারে অবস্থিত রামপুরা থানার পার্শ্ববর্তী নির্মাণাধীন বিল্ডিং-এ পুলিশের গুলিতে টিকতে না পেরে কিশোর ছেলেটি থানার পাশেই মেইনরোড সংলগ্ন একটি নির্মাণাধীন ৪তলা ভবনে উঠে যায়। সবাই চলে যেতে পারলেও এই কিশোর ওই ভবনে আটকা পড়ে যায়। ৪ তলার ছাদের সাইড দিয়ে নেমে সে নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাকে দেখেই দুই পুলিশ রিভলভার দিয়ে পর পর ছয় রাউন্ড গুলি করে ওই কিশোরের মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর গত ৭ নভেম্বর এসআই চঞ্চল সরকার দীঘিনালা থানায় যোগদান করেন। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পুলিশের শতকরা ৮০ জনের হৃদয়ে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল
৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি
ছাদের কার্নিসে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি, সেই এসআই চঞ্চল গ্রেপ্তার
সাত কলেজের সব পরীক্ষা স্থগিত
আজ পবিত্র শবে মেরাজ
মধ্যরাতে ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ৮
সাবেক দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গ্রেপ্তার
রয়্যাল এনফিল্ড কিনে না দেয়ায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ কিশোরের!
রংপুরের টানা দ্বিতীয় হার, রাজশাহীর নাটকীয় জয়
সায়েন্সল্যাব ও টেকনিক্যাল মোড় অবরোধ করেছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা
আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলাদেশের কসাই: প্রেস সচিব
পুলিশের সংখ্যা পর্যাপ্ত, কিন্তু মনোবলের ঘাটতি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশে আসছে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড যাচ্ছেন বাংলাদেশি রোগীরা, কলকাতার হাসপাতাল ব্যবসায় ধস
২৫ দিনে এলো ২০৪৪৭ কোটি টাকার প্রবাসী আয়
বেতন-ভাতায় না পোষালে অন্য পেশায় চলে যান: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ ট্রাস্ট বৃত্তি পেলেন কুবির ৩০ শিক্ষার্থী
নির্বাচনের কথা বললে উপদেষ্টাদের মুখ কালো হয়ে যায়: মেজর হাফিজ
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন সংগীতশিল্পী অরিজিৎ সিং
‘মাকে খুশি করতে’ শিক্ষার্থী সেজে রাবিতে ক্লাস, চার মাস পর আটক