বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৮

‘কত রাজপথ জনপদ ঘুরেছি, সাতটি যে পৃথিবীর বিস্ময়...’ সেই সাত বিস্ময়ের দুটিই মিশরে। এই সাত আশ্চর্যের প্রথমটি এবং এখন পর্যন্ত টিকে থাকা একমাত্র নিদর্শন গিজার পিরামিড দেখা হয়ে গেছে। অন্যটি আলেক্সিন্দ্রিয়ার বাতিঘর প্রবল ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গেছে প্রায় সাড়ে পাঁচশ বছর আগে। কিন্তু এখনো প্রতি বছর অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক উত্তর মিশরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, বন্দর নগরী আলেক্সান্দ্রিয়ায় আসেন বিশ্বখ্যাত লাইব্রেরি আর নিশ্চিহ্ন বাতিঘরের শহরে।

আমরাও ভোরবেলা রওনা দিয়েছি কায়রো থেকে। গাড়ির ড্রাইভিং সিটে সৌরভ, তার পাশে রানা ভাই, পেছনে আমি আর হেনা। দিনটা বৃহস্পতিবার বলে রাস্তায় প্রচণ্ড যানজটে সাত সকালে শহর থেকে বেরোবার মুখেই বেশ কয়েকবার আটকাতে হলো। সৌরভ নিজে গাড়ি চালিয়ে বেশ কয়েকবার আলেক্সান্দ্রিয়ায় গেছে, কাজেই পথঘাট তার চেনা। কায়রোর ছাড়িয়ে কিছুটা এগোবার পরে হাইওয়েতে উঠে যাবার জন্যে গাড়ি ঘুরিয়ে বিকল্প পথে শহরতলীর একটি আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়ল সৌরভ। এরপার চেনা পথ অচেনা হতে হতে পথ হারিয়ে এক সময় আমরা একটা বাগানবাড়ি কিংবা কারখানার গেটের সামনে এসে থেমে গেলাম। এখান থেকে বেরোবার কোনো পথ নেই। সৌরভ নেমে দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করলে সে আকারে ইঙ্গিতে একটা রাস্তা দেখিয়ে দিল। গাড়ি ঘুরিয়ে খানিকটা কাঁচা রাস্তা, কিছুটা ভাঙাচোরা পথে এগিয়ে যেখান থেকে হাইওয়ে ছেড়েছিলাম তার কাছাকাছি একটা জায়গায় পৌঁছালাম। তবে ততোক্ষণে রাস্তায় যানজট একটু কমেছে, আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই একটা রোড সাইড রেস্টুরেন্টে এসে দাঁড়ালাম।

       পথে পথে অসংখ্য মসজিদ

কায়রো থেকে হালকা চা- নাশতা খেয়ে বেরিয়েছিলাম। কাজেই পথের পাশের রেস্তোরাঁর ভেতর থেকে ব্রেকফাস্ট হিসাবে ক্রসো এবং বেশ বড় একটা কফি মগ হাতে নিয়ে সত্যিই পথের ধারে এসে বসলাম। পাশ দিয়ে হুশ হাশ করে গাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রশস্ত ফুটপাথে ঘাসের মতো সবুজ কার্পেটে পাতা টেবিলে বসে নাশতা শেষ করলাম। তারপরে আবার উত্তরমুখি ছুটতে থাকা। শহরের বাইরে পথের পাশে ম্যাডোনাল্ডস বা কেএফসির মতো খাবারের দোকান থাকতেই পারে। কিন্তু এতো দূরে ক্যারিফোর, নাইকি এবং এইচ অ্যান্ড এম-এ জুতা, ছাতা, জামা-কাপড় কিনতে কারা আসে ভেবে পাই না। মাঝে মাঝে খেজুর বাগান আর ছোট ছোট জনপদের ফাঁকে পথের দুপাশেই চোখে পড়ে একের পর এক মসজিদ। প্রতি কিলোমিটারে জনমানুষহীন রাস্তার ধারে গোটা কয়েক সুদৃশ্য মসজিদ দেখে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক— এত মসজিদে নামাজ পড়ে কারা! 

         আলেক্সান্দ্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

মসজিদগুলোর নির্মাণ শৈলী এবং বহিরাঙ্গণের রঙের তফাৎ থাকলেও প্রায় প্রতিটি মসজিদেই রয়েছে একটি করে গম্বুজ এবং একটি মিনার। একাধিক গম্বুজ বা তিন চারটি মিনার বিশিষ্ট মসজিদ যে নেই তা নয়। এ ছাড়া সুনির্মিত সুদৃশ্য তোরণযুক্ত মসজিদও দেখা গেল বেশ কয়েকটি। যারা ঢাকাকে মসজিদ নগরী এবং বাংলাদেশকে মসজিদের দেশ মনে করেন, তারা নিশ্চয়ই কায়রো শহরের অলিগলিতে পা রাখেননি এবং মিশরে শহরাঞ্চলের বাইরে কোথাও যাবার সুযোগ তাদের হয়নি। কয়েকটি মসজিদের সামনের তোরণে কয়েকটি ঘোড়ার মূর্তি দেখে মনে হলো ইসলামে যে মূর্তি নির্মাণ হারাম তা হয়ত এদেশের মানুষ এখনো জানে না। এইসব মসজিদ, ছোট দুই একটি শহর এবং অসংখ্য খেজুর বিথী দেখতে দেখতে এবং গাড়ির সিডি প্লেয়ারে রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতে শুনতে আমরা এক সময় আলেক্সান্দ্রিয়ার উপকণ্ঠে এসে পৌঁছলাম।    

      লাইব্রেরির বৃত্তাকার দেয়াল

মিশরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সাতটি আশ্চর্যের অন্যতম বাতিঘর ছাড়াও ঐতিহাসিক লাইব্রেরির জন্য খ্যাত আলেক্সান্দ্রিয়া ছিল প্রাচীন পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এই শহর এক সময় জ্ঞান-বিজ্ঞান, বুদ্ধিবৃত্তি ও সুকুমার কলার চর্চায় গ্রিসের এথেন্সকেও পেছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে শোনা আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেটের নামে যে শহরের নাম সেই আলেক্সান্দ্রিয়ায় আড়াই ঘণ্টায় পৌঁছাবার কথা থাকলেও আমাদের সময় লেগেছে সাড়ে তিন ঘণ্টা। সমুদ্র নগরীতে প্রবেশের পথেই চোখে পড়ে হাতের ডান দিকে ভূমধ্যসাগরের নিস্তরঙ্গ নীল জলে ভেসে বেড়াচ্ছে ছোট ছোট নৌযান। সমুদ্রের ঢেউ থেকে শহর রক্ষার জন্যে তৈরি প্রকাণ্ড পাথরে বাধানো বাঁধের এ পাশের প্রশস্ত ফুটপাথের উপর কংক্রিটের রেলিংয়ে তরুণ তরুণীরা বসে আড্ডা দিচ্ছে। বেলা এগারোটায় কড়া রোদে সমুদ্র তীরে দীর্ঘ সারিতে তরুণ-তরুণীদের জমায়েত একটু বিসদৃশ্য মনে হচ্ছিল। তবে একটু পরেই বিবলোথিক আলেক্সান্দ্রিয়া, অর্থাৎ আলেক্সান্দ্রিয়া গ্রন্থাগারের সামনে এসে দাঁড়ালে গাড়ি থেকে নেমেই দেখলাম উল্টো দিকে ইউনিভার্সিটি অব আলেক্সান্দ্রিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের এতো কাছে সমুদ্র থাকতে তরুণ-তরুণীরা রেস্তোরাঁ বা ক্যাফেতে আড্ডা দেবে না এটাই স্বাভাবিক।

         দেমিত্রিয়াস ফলেরিয়াস

নগরকেন্দ্রের একটা চমৎকার অবস্থানে প্রাচীন বন্দরের কাছাকাছি গড়ে তোলা হয়েছে নতুন বিবলিওথিকা আলেক্সান্দ্রিয়া। শুরুতে আমাদের পরিকল্পনা ছিল হোটেলে লাগেজ রেখে হাত মুখে পানি দিয়ে লাইব্রেরিতে আসব। কিন্তু বৃহস্পতিবারে দর্শনার্থীদের জন্যে লাইব্রেরির দরজা বন্ধ হয়ে যাবে বিকেল সাড়ে তিনটায়। দেরিতে ঢুকে বিশাল লাইব্রেরি ঘুরে দেখার যথেষ্ট সময় নাও থাকতে পারে। সেই কারণে চেক-ইনের আগেই আমাদের তিনজনকে লাইব্রেরি ভবনের সামনে নামিয়ে দিয়ে সৌরভ হোটেলে চলে গেল। হোটেলের রুমে বসেই সে অফিসের কাজে করবে অনলাইনে। আমরা পাঠাগার পরিভ্রমণ শেষ করে হোটেলে ফিরে লাঞ্চ করব। চত্বরের বাইরে কয়েকটি কাউন্টারে টিকেট বিক্রি হচ্ছে। লাইব্রেরিতে প্রবেশের জন্য নন-ইজিপ্টশিয়ানদের দিতে হবে ৭০ পাউন্ড অর্থাৎ সোয়া চারশ টাকা। দুই হাজার দুইশ সাতষট্টি বছর আগের একটা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের জন্যে চার পাঁচশ টাকা খুব বেশি নয়। লাইব্রেরি চত্বরে প্রবেশের আগেই ভবনটির দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য দৃষ্টি আকর্ষণ করল। বাইরের দেয়াল জুড়ে বিশাল বৃত্তাকার কাঠামো স্থাপত্য শিল্পের একটি ভিন্ন ধরনের নিদর্শন। এই বিস্তৃত কাঠামোর পাথুরে দেয়ালের প্রতিটি ব্লকে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার অক্ষরের কিছু লেখা খোদাই করা। রানা ভাই  আগেও একবার আলেক্সান্দ্রিয়ার লাইব্রেরিতে এসে গেছেন। বললেন, ‘এখানে বাংলা অক্ষরে লেখাও দেয়ালে খোদাই করে রাখা আছে। অগণিত ভাষার ভেতর থেকে বাংলা খুঁজে বের করা সম্ভব হলো না। দেখলাম দলে দলে শিক্ষার্থী, পর্যটক, দর্শনার্থী ভবনে ঢুকে পড়ছে। আগেই জেনেছিলাম প্রতিদিন সর্বোচ্চ তিনশ পর্যটক লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে পারেন। যদিও টিকেট কেনা হয়ে গেছে, তারপরেও যদি কোনো কারণে আটকে দেয়! অতএব বাইরের অংশ পরেও দেখা যাবে ধরে নিয়ে আমরা নিরাপত্তা ফটক পার হয়ে মূল ভবনে ঢুকে পড়লাম।   

       লাইব্রেরির একাংশ

লাইব্রেরির সংগ্রহশালায় প্রবেশের আগে পুরো লাইব্রেরি চত্বর ও ভবনের মডেল দেখে এর স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য বুঝতে চেষ্টা করি, দেয়াল জুড়ে সুদৃশ্য ধাতব মুর্যালের কারুকাজ দেখি। ভবনটি নতুন করে নির্মাণের পরে প্রেসিডেন্ট হুসনী মোবারক উদ্বোধন করেছিলেন ২০০২ সালের ১৬ই অক্টোবর। উদ্বোধনী স্মারকে The whole world celebrated with Egypt and her President, the rebirth of the library to be a beacon of knowledge and home to meeting and dialogue between people and culture, লেখাটি নিঃসন্দেহে সুচিন্তিত ও গুরুত্বপূর্ণ। সত্যিই তো হুসনী মোবারককে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করলেও তার সময়কালেই বিবলিওথিকা আলেক্সান্দ্রিয়ার পুনর্জন্ম ঘটেছে সে কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।  

       লাইব্রেরিতে বইয়ের সারি

উদ্বোধনী ফলক ছাড়াও প্রবেশ পথের পাশে রয়েছে শ্বেত পাথরে তৈরি দেমিত্রিয়াস ফালেরিয়াসের প্রমাণ সাইজের মূর্তি। খ্রিস্টের জন্মের শ তিনেক বছর আগে এথেন্সের কবি দার্শনিক ও বক্তা দেমিত্রিয়াস ছিলেন জ্ঞানে ও শিক্ষায় সমৃদ্ধ অপ্রতিদ্বন্দ্বী একজন মানুষ। এ ধরনের মানুষের শত্রুর অভাব হয় না। তাই তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল প্রথমে থিবস নগরী অর্থাৎ বর্তমানের লুস্করে। পরে তিনি আলেক্সান্দ্রিয়ায় এসে একটি জ্ঞান ভান্ডার গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেটিই পরবর্তীকালে হয়ে ওঠে বিশ্বনন্দিত গ্রন্থাগার। একজন প্রজ্ঞাবান কাজের মানুষ নির্বাসিত জীবনেও যে অবদান রেখে গেছেন আড়াই হাজার বছর পরেও তার স্বীকৃতি স্বরূপ বিবলোথিক আলেক্সান্দ্রিয়ার প্রবেশ পথেই শ্বেতপাথরের ভাস্কর্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি।  লাইব্রেরির ভেতরে প্রথমেই এর বিশালত্ব একটা চমক সৃষ্টি করে। উপরের স্তর থেকে নিচে বাঁ দিকে তাকিয়ে দেখি কয়েকটি স্তরের সবচেয়ে নিচের স্তরে সারি সারি চেয়ার টেবিল সাজানো, তার উপরের একটি স্তরে সাজানো টেবিলগুলোর প্রত্যেকটিতে একটি করে ডেস্কটপ কম্পিউটার। তবে এখানে কম্পিউটার ব্যবহারকারীর সংখ্যা তেমন বেশি নয়। তারও উপরের একটি স্তরে ছাপাখানার বিবর্তনের ইতিহাস হিসাবে প্রদর্শিত হচ্ছে কয়েকশ বছরের পুরোনো কয়েকটি মুদ্রণযন্ত্র। প্রত্যেক স্তর থেকেই উপরে বা নিচের স্তরে যাবার জন্যে চারিদিকে রয়েছে অনেকগুলো সিঁড়ি।   

     শেক্সপিয়ার বেঞ্চ

আমরা পিনপতন নীরবতার ভেতর দিয়ে ডান দিকে এগিয়ে যাই। ডান দিকের স্তরগুলোতে সারি সারি তাকে অসংখ্য বই সাজানো। একটা দীর্ঘ করিডোরের ডান পাশে বইয়ের তাক আর অন্য পাশটা রেলিং দিয়ে ঘেরা, যার নিচেই আরেক স্তরের পাঠক সমাবেশের জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে টেবিল। করিডোরের শুরুতে হলুদ ফিতা টানিয়ে নিষেধাজ্ঞা ঝুলছে, দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ। অতএব আমরা করিডোর ধরে না এগিয়ে সিঁড়ি বেয়ে আরও উপরে উঠে যাই। এখানে শুরুতেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেক্সপিয়ারের নাম লেখা একটি বিশাল খোলা বই। বইটি আসলে একটি বেঞ্চ, দর্শণার্থীরা ক্লান্ত হয়ে পড়লে বসে পড়তে পারেন। আমরা ক্লান্ত হলেও একটা খোলা বইয়ের উপর বসে পড়াটা কেন যেন আমাদের সংস্কারের সঙ্গে মানায় না, তাই এই স্তরের করিডোর ধরে এগোতে থাকি। একের পর এক লেখক কবি নাট্যকারের আবক্ষ মূর্তি চোখে পড়ে বিভিন্ন স্তরে, করিডোরের কোণায় এবং পথের বাঁকে। দ্বাদশ শতকের আজারবাইজানের কবি নিজামী গাঞ্জাভি, গ্রিক কবি সি পি ক্যাভাফি এবং হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডরসনের মতো খ্যাতিমানদের পাশাপাশি একমাত্র ভারতীয় হিসাবে জায়গা করে নিয়েছেন মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধী! গান্ধীজী কাব্যকলা কিংবা সাহিত্য সংস্কৃতিতে কী অবদান রেখেছেন আমার জানা নেই, তবে ভারত সরকার রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্য না পাঠিয়ে প্রতিনিধি হিসাবে গান্ধীজীকে পাঠিয়ে দিয়েছে। বলে রাখা ভালো, এখানে প্রদর্শিত প্রায় সব শিল্পকর্মই সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের উপহার। 

      কবি নিজামী গাঞ্জাবি

এই গ্রন্থাগারের এগারোতলা ভবনে চল্লিশ লক্ষ বই ভবনটিতে সাজিয়ে রাখা সম্ভব, আর সংরক্ষণের জন্য রাখা যাবে আশি লক্ষ পর্যন্ত বই। কিন্তু বর্তমানে লাইব্রেরির দুটি শাখায় নয় লক্ষ পুস্তকের মধ্যে বিভিন্ন দেশের নানা ভাষার বই থাকলেও বাংলা ভাষায় রচিত কোনো বই নেই। রানা ভাই কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে জানালেন, লাইব্রেরির একজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের সঙ্গে বসে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, বাংলা ভাষায় লেখা বাংলাদেশি বা ভারতীয় কোনো বই তাদের সংগ্রহে নেই। তবে বাংলাদেশ সরকার বা জাতীয় গ্রন্থাগারের মতো প্রতিষ্ঠান ছাড়াও কোনো ব্যক্তি যদি বই পাঠাতে চান তাহলে তা সাদরে গৃহীত এবং সংরক্ষিত হবে। বই পাঠাবার নিয়ম-কানুন রানা ভাই জেনে এসেছেন এবং তার নিজের ও আমার লেখা কয়েকটি বই পাঠিয়ে দেবার প্রতিশ্রুতিও দিয়ে এসেছেন। 

আলেক্সান্দ্রিয়ার আড়াই হাজার বছর আগের গ্রন্থাগারের ভেতরে ঘুরতে ঘুরতেই ভাবছিলাম আমাদের ন্যাশনাল লাইব্রেরি এবং জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকাশকদের তদবিরের বই, আমলাদের বই এবং ভাগ বাটোয়ার বই পুস্তক কিনেই সময় এবং অর্থের সংকুলান করতে পারেন না, তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বইপত্র সম্পর্কিত বৈদেশিক বিষয়ের খোঁজ-খবর নেবেন কখন! 

চলবে...    

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৭ 

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯

ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় মদপানের ফলে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আরও ৯ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুই যুবকের মৃত্যু হয়। এর আগে, ঈদের সন্ধ্যায় তারা মদপান করেন এবং রাতের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মৃতদের মধ্যে রয়েছেন আশাশুনি উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের জাফর আলী খাঁর ছেলে জাকির হোসেন টিটু (৪০) ও সোহরাব গাজীর ছেলে নাজমুল গাজী (২৬)।

এ ঘটনায় অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাহ্মণ তেতুলিয়া গ্রামের সাইদ সরদারের ছেলে ফারুক হোসেন, মোকামখালী গ্রামের কুদ্দুস সরদারের ছেলে ইমরান, মিত্র তেতুলিয়ার মর্জিনা খাতুনের ছেলে ইকবাল, কামরুলের ছেলে লিফটন, আজিবার সরদারের ছেলে রবিউল, শহীদ গাজীর ছেলে তুহিন, আনিসের ছেলে নাজমুলসহ আরও কয়েকজন।

গুরুতর অসুস্থদের মধ্যে ফারুক হোসেনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইমরানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঈদের দিন সন্ধ্যায় আশাশুনির তেতুলিয়া শ্মশানঘাট মাঠে বসে জাকির হোসেন টিটু, নাজমুল গাজীসহ মোট ১১ জন একসঙ্গে মদপান করেন। মদপানের পর তারা বাড়ি ফিরে যান এবং ঘুমিয়ে পড়েন।

এরপর রাত ১২টার দিকে একে একে সবাই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাকির হোসেন টিটু ও নাজমুল গাজী মারা যান। বাকি ৯ জনের চিকিৎসা চলছে।

আশাশুনি থানার ডিউটি অফিসার এসআই ফিরোজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যু অন্য কোনো কারণে হয়েছে কিনা, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।"

নিহতদের মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান, চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের অস্ত্র সংগ্রহ নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়।

এই পদক্ষেপকে ইরানের ওপর আরও চাপ সৃষ্টির একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে বলেছিলেন, নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হলে দেশটির ওপর বোমা হামলা চালানো বা নতুন শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও বিচার বিভাগ যৌথভাবে জানিয়েছে, ইরানের ড্রোন কর্মসূচির অন্যতম প্রধান নির্মাতার জন্য মানববিহীন এয়ার ভেহিকল (ইউএভি)–এর উপকরণ সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি সংস্থা ও দুই ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, "ইরান তাদের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়াসহ তাদের প্রক্সিদের সরবরাহ করছে। রুশ বাহিনী এগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, যা বেসামরিক নাগরিক, মার্কিন বাহিনী ও মিত্রদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা ইরানের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স এবং তাদের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রচলিত অস্ত্রের বিস্তার ব্যাহত করতে কাজ চালিয়ে যাব।"

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে একটি ইরান-ভিত্তিক সংস্থা, দুইজন ইরানি নাগরিক, একটি চীন-ভিত্তিক সংস্থা এবং চারটি সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক সংস্থা।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

Header Ad
Header Ad

বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের দোসররা বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, "পরাজিত শক্তি নিউইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। তারা এই অবৈধ টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করতে চায়।"

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, "শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের নামে একটি নাটক সাজিয়ে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন। এটি মূলত ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল। এমনকি একজন সাবেক আইজিপির বইয়েও এটি উঠে এসেছে।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটেনি। বরং বর্তমানে দেশে ফ্যাসিবাদের কোনো ছোবল নেই, মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্মপালন করতে পারছে, কথা বলতে পারছে। এবার মানুষ নির্ভয়ে ঈদ উদযাপন করেছে, যা অতীতে সম্ভব হয়নি।"

আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, "আওয়ামী লীগ বসে নেই, তারা কালো টাকা ব্যবহার করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তারা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।"

তিনি আরও বলেন, "শেখ হাসিনার নির্দেশে মুগ্ধ ফাইয়াজদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই। প্রশাসনের চারপাশে আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে, যার ফলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।"

রিজভী আহমেদ দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, "নির্বাচনী সরকারই হচ্ছে বৈধ সরকার। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হবে।"

তিনি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯
ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী
দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের ঘটনা ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আখাউড়ায় ট্রেনের ছাদে টিকটক বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনা, নিহত ২
বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের
বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২