বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৬

ফারাওদের রাজত্ব থেকে ফাইয়ুমের মরুভূমি পর্যন্ত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিলেও ঐতিহাসিক খানে খলিলি বাজার ছাড়া কায়রোর সাধারণ কোনো বাজারে যাওয়া হয়নি। যে কোনো নতুন শহরে সুযোগ পেলেই আমরা কাছে পিঠের কাঁচা বাজারে একটা চক্কর দিয়ে আসি। সকালে নাস্তার পরেই বেরিয়ে গেলাম আল মাআদি এলাকার বাজারে। যদিও মাআদি তুলনামূলক বিচারে অনেকটাই আমাদের গুলশান বনানীর মতো একটি অভিজাত আবাসিক এলাকা, কিন্তু রেল লাইন পার হয়ে একটু সামনে এগোলে যে বাজার তার চেহারার সঙ্গে হাতিরপুল বাজারের তেমন পার্থক্য নেই। বিভিন্ন জিনিসপত্রের সারি সারি দোকানের ফাঁকে, রুটির কারখানা এবং বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট। দোকানগুলোর সামনে রাস্তার উপরেই বসে গেছে সবজি এবং ফলের দোকান। মুদি দোকানের পাশেই গরু কিংবা ভেড়ার লম্বা ঠ্যাং ঝুলিয়ে কসাইখানায় বিক্রি হচ্ছে মাংস।

প্রথমেই আমরা একটা রুটির দোকানে দাঁড়ালাম। আয়েশ বালাদি নামের নিত্যদিনের খাবারের রুটি সাধারণত কেউ বাড়িতে তৈরি করে না। পুরোনো ঢাকায় যেমন তন্দুর রুটি বা বাখরখানি তৈরি হয় তেমনি তাৎক্ষণিকভাবে তৈরি গরম আয়েশ বালাদি কিনে বাড়িতে নিয়ে আয়েশ করে খাওয়াই প্রচলিত রীতি। এখানে অবশ্য হাতের বানিয়ে তন্দুরে রুটি সেঁকার ব্যবস্থা দেখা গেল না। ভেতরে কোথাও তৈরি হয়ে কনভেয়ার বেল্টের মতো একটা চলমান ধাতব পাতের উপর থেকে এক সঙ্গে গোটা কয়েক রুটি টুপটাপ করে এসে পড়ছে। রানা ভাই রুটিওয়ালা তরুণের সঙ্গে কথা জমাতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সে বেচারা ভীষণ ব্যস্ত, প্রতি মুহূর্তে খদ্দের সামলে সাধ্যমতো রানা ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছিল। আমরা খুব বেশি দেরি না করে এক প্যাকেট রুটি কিনে সামনে এগিয়ে গেলাম। সরকার রুটিতে ভর্তুকি দেওয়ার ফলে আকারভেদে দশটি বালাদি রুটির দাম মাত্র পাঁচ থেকে ছয় ঈজিপশিয়ান পাউন্ড ।

রেস্টুরেন্ট এবং চা কফির দোকানে এবং দোকানের বাইরে সাত সকালেই জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন অনেকেই। রানা ভাই চায়ের দোকানের বাইরে এক বৃদ্ধের সঙ্গে কথা শুরু করইে তিনি গ্রিনটির অফার দিয়ে ফেললেন। আমরা অবশ্য চা না খেয়ে রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার একটা ছবি তুলে সামনে এগিয়ে গেলাম। পাশাপাশি চশমা এবং একটা প্রসাধন সমাগ্রীর দোকানের সামনে অনেকগুলো বাক্স সাজিয়ে প্রচুর ফলের সম্ভার সাজানো। আপেল, আঙুর, কমলা, নাশপাতি এমনকি শরিফা পর্যন্ত আমাদের পরিচিত ফলের সঙ্গে কিছু অপরিচিত ফলও দেখা গেল, কিন্তু গাবের মতো লাল টুকটুকে ফলটার নাম জানা গেল না। প্রসাধন সামগ্রীর দোকানের ঠিক পাশেই বিক্রি হচ্ছে মাংস। এতোক্ষণ রুটি, চা, ফলমূলের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বেশ কিছু ছবি তোলা হয়ে গেছে। কিন্তু মাংস ঝোলানো দোকানের দিকে ক্যামেরা তুলতেই ছুরি হাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল এক কসাই। ছবি তুলতে গিয়ে কায়রোর কসাইয়ের ছুরিকাঘাতে হতাহত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটার আগেই ক্যামেরা সরিয়ে নিলাম। তবে এর আগেই কসাইদের কারবার ভিডিওতে ধারণ করা হয়ে গেছে।

     রাস্তায় সবজি বাজার

কাঁচা বাজারে ফলমূলের মতো শাক সবজিরও কোনো অভাব নেই। বেশিরভাগ সবজির দোকানে নারী অথবা শিশু বিক্রেতারা গাঁজর মূলা সিম বেগুন ক্যাপসিকাম এবং শশাসহ বিভিন্ন ধরনের বীনের ডালা সাজিয়ে বসে আছে। পালং শাক এবং নাম না জানা আরও দুই এক ধরনের শাকের আঁটি দেখে মনে হলো মরুভূমির লোকেরা শুধু শুকনো রুটি, দুম্বার মাংস আর খেজুর খেয়ে বাঁচে বলে আমাদের যে ধারণা ছিল তা মোটেও সত্যি নয়। আমরা ফুটপাথের দোকানে দোকানে ঘুরে জিনিসপত্রের দাম সম্পর্কে একটা ধারণা পাবার চেষ্টা করছিলাম। ভাষা না বুঝলেও প্রায় সবাই সাধ্যমতো উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছে, প্রায় সবাই ছিল বেশ হাসিখুশি। কয়েকজন কিশোর আমাদের সঙ্গে ছবি তোলার জন্যে এগিয়ে এসে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে গেল। শুধু একজন নারী বিক্রেতার দোকানের ছবি তোলার সময় শিশু কোলে দাঁড়ানো পুরুষ লোকটি ‘লা লা’ বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তার পুরুষত্ব জাহির করলে আমরা ক্ষান্ত দিলাম।

     কায়রোর কসাইখানা

কিছু ফল কিছু শাক-সবজি কিনে ঘরে ফেরার পরে দেখা গেল তিন কেজি আপেল নাসপাতিসহ রানা ভাই ব্যাগটা কোনো একটা দোকানে ভুল করে ফেলে চলে এসেছেন। কিন্তু ব্যাগটা কোথায় রেখেছেন তিনি কিছুতেই মনে করতে পারলেন না। আমার ক্যামেরায় শ্যুট করা ভিডিও ফুটেজ দেখতে দেখতে হঠাৎ চোখে পড়ল বাজার থেকে বেরোবার আগে রানা ভাই শেষ যে বড় দোকানটায় ঢুকেছিলেন সেখানেই বাইরের দিকের ডেস্কের উপর ব্যাগটা রেখেছেন। দোকান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেল আশা করি তিন কেজি ফল ফেরতও পাওয়া যাবে।

বিকেলে পুরোনো কায়রোর রিলিজিয়াস কমপ্লেক্সে যাওয়ার কথা। তবে তার আগে ফলোদ্ধারের জন্যে বাজারের দিকে যেতে হলো। সেই দোকানের সামনে রানা ভাই গাড়ি থেকে নামতেই দোকানের ভেতর থেকে একজন হৈ হৈ করে ইংরেজি আরবি মিশিয়ে যা বললেন তার অর্থ ‘তুমি চলে যাবার পরপরই তোমাকে খুঁজেছি। তোমার ফলের ব্যাগটা এখানে থেকে গেছে।’ আমাদের ভিডিও এভিডেন্স বের করার কোনো দরকার হলো না, তার আগেই ফলের ব্যাগ হাতে পেয়ে রানা ভাই ‘শুকরান শুকরান’ বলে গাড়িতে উঠে পড়লেন।

        আবু সেরাগা চার্চের একাংশ

পুরোনো কায়রোর ঐতিহাসিক মসজিদ আমর ইবনে আল আস-এর কাছাকাছি বেশ বড় একটা এলাকা জুড়ে মসজিদ এবং বিভিন্ন মতাদর্শের কয়েকটি গির্জার পাশাপাশি একটি ইহুদি উপাসনালয় মিলিয়ে বড় এলাকা জুড়ে এই জটিল ধর্মীয় চত্বর। রিলিজিয়াস কমপ্লেক্স, কায়রো, লেখা একটি নির্দেশনা ফলক পেরিয়ে ভেতরে ঢোকার পরে মনে হলো এলাকাটা তুলনামূলকভাবে জনবিরল এবং ব্যস্ত কায়রোর অন্যান্য এলাকার চেয়ে নীরব। পরিচ্ছন্ন পথে মানুষের চলাচল কম এবং কোথাও আবর্জনার স্তূপ চোখে পড়ে না। এখানে চার্চ অব মেরি গার্গস, চার্চ অব আবু সেফিয়ান, চার্চ অব সেইন্ট বারবারা নামে ক্যাথলিক, প্রোটেস্টান্ট, অর্থডক্স এবং অ্যাভেঞ্জেলিক চার্চ মিলিয়ে সবগুলো গির্জা একদিনে দেখে শেষ করা অসম্ভব। আমরা বেছে নিলাম কাছাকাছি আবু সেরগা। খানিকটা দূরে পার্কিং-এ গাড়ি রেখে পাশাপাশি কয়েকটি গির্জার চত্বরে প্রবেশের আগে নাম কা ওয়াস্তে একটা নিরাপত্তা ফটক পার হতে হলো। তারপরেই হেঁটে গেলাম আবু সেরগার দরজা পর্যন্ত।

     আবু সেরগা চার্চের ধর্মাপোদেশ

স্থানীয়ভাবে আবু সেরগা নামে পরিচিত কায়রোর প্রাচীনতম কপটিক চার্চগুলোর একটি সেইন্ট সেরগিয়াস ও সেইন্ট বাচুস চাচের্র প্রবেশ পথে চার্চের নাম লেখা থাকলেও আসল গির্জা ভবনে ঢুকতে অনেক দূর পর্যন্ত একটা সরু গলিপথ পার হতে হলো। গলিপথের দুপাশের তাকে সাজানো অসংখ্য বই। কিছু সংখ্যক তাকে বাইবেলের নানা কাহিনি থেকে নেওয়া রঙিন ছবি। এই গির্জা যে হাজার দেড়েক বছর আগের তা এর নির্মাণকাল না জানলেও বলে দেয়া যায়। সিরিয়ায় ধর্ম বিশ্বাসের জন্য শহিদ ধর্মযোদ্ধা সেইন্ট সেরগিয়াস ও সেইন্ট বাচুসের নামে ক্রিস্টিয় চতুর্থ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত গির্জা সংলগ্ন ভূগর্ভের গহীনে মা মেরি, জোসেফ এবং শিশু যিশুখ্রিস্ট বিশ্রাম নিয়েছিলেন বলে প্রচলিত আছে। আগুনে ভষ্মীভুত হবার পরে মধ্যযুগ পর্যন্ত বহুবার পুননির্মাণ করায় কপটিক চার্চটি বর্তমান অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে।

অনন্য স্থাপত্যশৈলী এবং অলঙ্করণের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিশরের খ্রিস্টিয় নির্মাণ কলার উপাদানগুলো মিলে মিশে গির্জার অভ্যন্তরভাগ অসাধারণ সুন্দর। চারিদিকের দেয়ালের বেশিরভাগ নির্মিত হয়েছে জুড়ে কালচে-লাল ইটের গাঁথুনিতে। শক্তপোক্ত দেয়াল এবং খিলানসহ স্তম্ভ উঠে গেছে তিন তলার উচ্চতায়। মিম্বর, গম্বুজ, কলাম, রোস্ট্রাম এবং দেয়ালগুলোতে সুদৃশ্য কাঠের কারুকাজ আর কাঠের উপরে আইভরির কারুকাজ করা বেদি মধ্যযুগের কারুশিল্পীদের সৃষ্টিশীল কাজের উদাহরণ। দেয়ালগুলোতে শোভা পাচ্ছে সাধু সন্ত আর প্রেরিত পুরুষদের প্রমাণ সাইজের পেইন্টিং। এসব ছবিও কারুকাজ করা ভারি কাঠের ফ্রেমে আটকানো।

মূল প্রার্থনা কক্ষে সাজানো সারি সারি ভারী কাঠের বেঞ্চের পেছনে দাঁড়িয়ে দেখলাম একজন প্রিস্ট বক্তব্য দিচ্ছেন। তার পরনে কালো আলখাল্লা, মাথায় চেগুয়েভারার মতো টুপি তবে সেটাও কালো, হাতে কালো ব্যান্ডের ঘড়ি আর আর বুকে ঝোলানো ক্রশ। তার কণ্ঠস্বর, বলার ভঙ্গি এবং নাটকীয় অভিব্যক্তি মিলিয়ে সামনের বেঞ্চগুলোতে বসা পনের কুড়িজন তরুণ তরুণী তার কথা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছে। তিনি আরবিতে ভাষণ দিচ্ছেন, শুধু এইটুকু ছাড়া তার বক্তব্যের বিন্দু বিসর্গ না বুঝেও আমার শুনতে ভালো লাগছিল। তরুণ শ্রোতাদের মধ্যে দুজন তরুণীকে দেখলাম হিজাব পরিহিতা। সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায় এই দুজনসহ প্রায় সবাই ধর্মগুরু তার কথার যাদুতে সম্মোহিত করে ফেলেছেন। ভাষা বুঝলে আমি নিজেও সম্মোহিত হয়ে পড়তাম কিনা কে জানে!

      হাজার বছর আগের বাইবেল

কিছুক্ষণ ধর্মোপদেশ শোনার পরে প্রথমে ডান দিকের গ্যালারি এবং পরে বাঁ দিকের করিডোর পার হয়ে যেখানে পৌঁছলাম সেটি একটি সংগ্রহশালা। এখানে বিভিন্ন তাকে সংরক্ষিত রয়েছে প্রাচীন পুঁথি পুস্তক, ধর্মগ্রন্থ, বিশেষ করে হাতে লেখা বাইবেল। হিব্রু ভাষায় লেখা একটি বাইবেলে দেখা গেল মূল ভাষার পাশাপাশি ছোট করে আরবি অনুবাদ অথবা ফুটনোট। বইপত্র ছাড়াও বাতিদান, পান পাত্র, সিলমোহর ও ধাতব ক্রশসহ কিছু ছোট জিনিস ঠাঁই পেয়েছে এই ছোট্ট মিউজিয়ামে। কে জানে এইসব কতশত বা কয় হাজার বছর আগের নিদর্শন! সংগ্রহশালার মেঝেতে একটি কূপের মুখ মোটা কাচের ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বৃত্তাকার ঢাকনা ঘিরে আরবি এবং ইংরেজিতে লেখা: ঞযব বিষষ The well which the Holy Family drank from. তবে আবে জমজমের মতো এই পবিত্র পানি পানের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

      বই পুস্তকের গলিপথ

জাদুঘরের ভেতর থেকেই দুপাশে কাঠের রেলিং দেওয়া পাথরের একটি সিঁড়ি নিচে নেমে গেছে। কথিত আছে অ্যাপোস্টেলিক যুগে মা মেরি তার শিশু সন্তান যিশুখ্রিস্টকে নিয়ে তিন মাস এখানেই নিচের একটি গুহায় বসবাস করেছেন। বিবি মরিয়ম তার শিশু পুত্র ঈসা আলাইহেওয়াস-সালামসহ মাস তিনেক গুহাবাসী হিসেবে কালাতিপাত করে থাকলে গির্জা না হয়ে এখানে এখানে একটি মসজিদও হতে পারত। যাই হোক, ইসলামের আবির্ভাবের আগেই ঘটনাগুলো ঘটে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বিবাদের কোনো সুযোগ নেই। এখন এই কাহিনি কেবলই বিশ্বাসের। আমরা খ্রিস্টিয় ধর্মগুরুর বক্তৃতা শুনে, অসাধারণ স্থাপত্য নৈপুনের একটি নিদর্শন দেখে মুগ্ধ হয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম।

   বিন এজরা সিনাগগ

বই-পুস্তকের দীর্ঘ গলিপথ পেরিয়ে যখন রাস্তায় এলাম তখন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। পথের বাঁ দিকের কয়েকটি দোকানে এবং গির্জার দরজাগুলোতে জ্বলে উঠেছে আলো। কয়েকটি চার্চ পেরিয়ে রিলিজিয়াস কমপ্লেক্সে ইহুদি প্রার্থনা মন্দিরটির অবস্থান একদিকে গির্জা এবং অন্যদিকে আমর ইবনে আল আস মসজিদের মাঝখানে। এলাকায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে ঈশ্বরের প্রেরিত পুরুষ মুসা নবী নীল নদের কাছাকাছি প্রার্থনার জন্যে এই জায়গাটি বেছে নিয়েছিলেন। এক সময় খ্রিস্টান আধিপত্যের যুগে এখানে নির্মিত উপাসনালয় অর্থডক্স চার্চে রূপান্তরিত হয়ে যায়। পরে খ্রিস্টধর্মের অনুসারিরা ট্যাক্স পরিশোধ করতে না পারায় বিশ হাজার রিয়াল দিয়ে ভগ্নদশা ভবনটি কিনে নেন ইহুদি ইব্রাহিম বিন এজরা। তার নামে উপাসনালয়ের নামই হয়ে যায় বিন এজরা সিনাগগ। তবে ভাঙা গড়ার মধ্যে দিয়ে সিনাগগটি বর্তমান অবস্থায় আসতে বহু বছর লেগেছে। বিন এজরার পুনরুদ্ধার এবং পুনঃনির্মাণে মিশর সরকারের বিরাট ভূমিকা ছিল। প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণে সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগ ও আর্থিক অনুদানের পাশাপাশি সারাবিশ্বের ইহুদি সম্প্রদায়ের সাহায্য সমর্থন তো ছিলই।

    রিলিজিয়াস কমপ্লেক্সে সন্ধ্যা

সিনাগগের ভেতরে কারুকাজ করা সোনালি দেয়াল, দীর্ঘ কলাম এবং পরিমিত আলোর ব্যবহার এক অপার্থিব ভাবগম্ভীর পরিবেশ। প্রথম তলাটি পুরুষের এবং দ্বিতীয় তলা নারীদের প্রার্থনার জন্য নির্ধারিত। কলামগুলো মার্বেল পাথরে আবৃত এবং উপরের দিকে কারুকাজ করা সোনালি মুকুটে ঢাকা। আলোক সজ্জার ব্যবস্থা ছাড়াও সিলিংয়ে তাকালে চোখে পড়ে বাতাস চলাচলের ফোকর। উল্লেখ করা করা যেতে পারে ইসলামের অনুশাসনের মতোই ইহুদি ধর্মেও উপাসনালয়ের দেয়ালে কোনো দেব দেবী, ঈশ্বর অথবা প্রেরিত পুরুষের কোনো মূর্তি বা প্রতিকৃতি নেই।

আমর ইবনে আল আস মসজিদে যাওয়ার জন্যে নিরাপত্তা চৌকি পেরিয়ে যখন রাস্তায় এলাম তখন গাছপালার ফাঁকে আকাশে দেখা গেল বেশ বড় একটা গোল চাঁদ।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯

ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় মদপানের ফলে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আরও ৯ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুই যুবকের মৃত্যু হয়। এর আগে, ঈদের সন্ধ্যায় তারা মদপান করেন এবং রাতের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মৃতদের মধ্যে রয়েছেন আশাশুনি উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের জাফর আলী খাঁর ছেলে জাকির হোসেন টিটু (৪০) ও সোহরাব গাজীর ছেলে নাজমুল গাজী (২৬)।

এ ঘটনায় অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাহ্মণ তেতুলিয়া গ্রামের সাইদ সরদারের ছেলে ফারুক হোসেন, মোকামখালী গ্রামের কুদ্দুস সরদারের ছেলে ইমরান, মিত্র তেতুলিয়ার মর্জিনা খাতুনের ছেলে ইকবাল, কামরুলের ছেলে লিফটন, আজিবার সরদারের ছেলে রবিউল, শহীদ গাজীর ছেলে তুহিন, আনিসের ছেলে নাজমুলসহ আরও কয়েকজন।

গুরুতর অসুস্থদের মধ্যে ফারুক হোসেনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইমরানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঈদের দিন সন্ধ্যায় আশাশুনির তেতুলিয়া শ্মশানঘাট মাঠে বসে জাকির হোসেন টিটু, নাজমুল গাজীসহ মোট ১১ জন একসঙ্গে মদপান করেন। মদপানের পর তারা বাড়ি ফিরে যান এবং ঘুমিয়ে পড়েন।

এরপর রাত ১২টার দিকে একে একে সবাই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাকির হোসেন টিটু ও নাজমুল গাজী মারা যান। বাকি ৯ জনের চিকিৎসা চলছে।

আশাশুনি থানার ডিউটি অফিসার এসআই ফিরোজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যু অন্য কোনো কারণে হয়েছে কিনা, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।"

নিহতদের মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান, চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের অস্ত্র সংগ্রহ নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়।

এই পদক্ষেপকে ইরানের ওপর আরও চাপ সৃষ্টির একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে বলেছিলেন, নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হলে দেশটির ওপর বোমা হামলা চালানো বা নতুন শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও বিচার বিভাগ যৌথভাবে জানিয়েছে, ইরানের ড্রোন কর্মসূচির অন্যতম প্রধান নির্মাতার জন্য মানববিহীন এয়ার ভেহিকল (ইউএভি)–এর উপকরণ সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি সংস্থা ও দুই ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, "ইরান তাদের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়াসহ তাদের প্রক্সিদের সরবরাহ করছে। রুশ বাহিনী এগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, যা বেসামরিক নাগরিক, মার্কিন বাহিনী ও মিত্রদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা ইরানের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স এবং তাদের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রচলিত অস্ত্রের বিস্তার ব্যাহত করতে কাজ চালিয়ে যাব।"

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে একটি ইরান-ভিত্তিক সংস্থা, দুইজন ইরানি নাগরিক, একটি চীন-ভিত্তিক সংস্থা এবং চারটি সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক সংস্থা।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

Header Ad
Header Ad

বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের দোসররা বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, "পরাজিত শক্তি নিউইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। তারা এই অবৈধ টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করতে চায়।"

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, "শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের নামে একটি নাটক সাজিয়ে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন। এটি মূলত ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল। এমনকি একজন সাবেক আইজিপির বইয়েও এটি উঠে এসেছে।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটেনি। বরং বর্তমানে দেশে ফ্যাসিবাদের কোনো ছোবল নেই, মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্মপালন করতে পারছে, কথা বলতে পারছে। এবার মানুষ নির্ভয়ে ঈদ উদযাপন করেছে, যা অতীতে সম্ভব হয়নি।"

আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, "আওয়ামী লীগ বসে নেই, তারা কালো টাকা ব্যবহার করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তারা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।"

তিনি আরও বলেন, "শেখ হাসিনার নির্দেশে মুগ্ধ ফাইয়াজদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই। প্রশাসনের চারপাশে আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে, যার ফলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।"

রিজভী আহমেদ দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, "নির্বাচনী সরকারই হচ্ছে বৈধ সরকার। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হবে।"

তিনি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯
ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী
দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের ঘটনা ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আখাউড়ায় ট্রেনের ছাদে টিকটক বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনা, নিহত ২
বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের
বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২