সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৩ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৬

ফারাওদের রাজত্ব থেকে ফাইয়ুমের মরুভূমি পর্যন্ত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিলেও ঐতিহাসিক খানে খলিলি বাজার ছাড়া কায়রোর সাধারণ কোনো বাজারে যাওয়া হয়নি। যে কোনো নতুন শহরে সুযোগ পেলেই আমরা কাছে পিঠের কাঁচা বাজারে একটা চক্কর দিয়ে আসি। সকালে নাস্তার পরেই বেরিয়ে গেলাম আল মাআদি এলাকার বাজারে। যদিও মাআদি তুলনামূলক বিচারে অনেকটাই আমাদের গুলশান বনানীর মতো একটি অভিজাত আবাসিক এলাকা, কিন্তু রেল লাইন পার হয়ে একটু সামনে এগোলে যে বাজার তার চেহারার সঙ্গে হাতিরপুল বাজারের তেমন পার্থক্য নেই। বিভিন্ন জিনিসপত্রের সারি সারি দোকানের ফাঁকে, রুটির কারখানা এবং বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট। দোকানগুলোর সামনে রাস্তার উপরেই বসে গেছে সবজি এবং ফলের দোকান। মুদি দোকানের পাশেই গরু কিংবা ভেড়ার লম্বা ঠ্যাং ঝুলিয়ে কসাইখানায় বিক্রি হচ্ছে মাংস।

প্রথমেই আমরা একটা রুটির দোকানে দাঁড়ালাম। আয়েশ বালাদি নামের নিত্যদিনের খাবারের রুটি সাধারণত কেউ বাড়িতে তৈরি করে না। পুরোনো ঢাকায় যেমন তন্দুর রুটি বা বাখরখানি তৈরি হয় তেমনি তাৎক্ষণিকভাবে তৈরি গরম আয়েশ বালাদি কিনে বাড়িতে নিয়ে আয়েশ করে খাওয়াই প্রচলিত রীতি। এখানে অবশ্য হাতের বানিয়ে তন্দুরে রুটি সেঁকার ব্যবস্থা দেখা গেল না। ভেতরে কোথাও তৈরি হয়ে কনভেয়ার বেল্টের মতো একটা চলমান ধাতব পাতের উপর থেকে এক সঙ্গে গোটা কয়েক রুটি টুপটাপ করে এসে পড়ছে। রানা ভাই রুটিওয়ালা তরুণের সঙ্গে কথা জমাতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সে বেচারা ভীষণ ব্যস্ত, প্রতি মুহূর্তে খদ্দের সামলে সাধ্যমতো রানা ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছিল। আমরা খুব বেশি দেরি না করে এক প্যাকেট রুটি কিনে সামনে এগিয়ে গেলাম। সরকার রুটিতে ভর্তুকি দেওয়ার ফলে আকারভেদে দশটি বালাদি রুটির দাম মাত্র পাঁচ থেকে ছয় ঈজিপশিয়ান পাউন্ড ।

রেস্টুরেন্ট এবং চা কফির দোকানে এবং দোকানের বাইরে সাত সকালেই জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন অনেকেই। রানা ভাই চায়ের দোকানের বাইরে এক বৃদ্ধের সঙ্গে কথা শুরু করইে তিনি গ্রিনটির অফার দিয়ে ফেললেন। আমরা অবশ্য চা না খেয়ে রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার একটা ছবি তুলে সামনে এগিয়ে গেলাম। পাশাপাশি চশমা এবং একটা প্রসাধন সমাগ্রীর দোকানের সামনে অনেকগুলো বাক্স সাজিয়ে প্রচুর ফলের সম্ভার সাজানো। আপেল, আঙুর, কমলা, নাশপাতি এমনকি শরিফা পর্যন্ত আমাদের পরিচিত ফলের সঙ্গে কিছু অপরিচিত ফলও দেখা গেল, কিন্তু গাবের মতো লাল টুকটুকে ফলটার নাম জানা গেল না। প্রসাধন সামগ্রীর দোকানের ঠিক পাশেই বিক্রি হচ্ছে মাংস। এতোক্ষণ রুটি, চা, ফলমূলের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বেশ কিছু ছবি তোলা হয়ে গেছে। কিন্তু মাংস ঝোলানো দোকানের দিকে ক্যামেরা তুলতেই ছুরি হাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল এক কসাই। ছবি তুলতে গিয়ে কায়রোর কসাইয়ের ছুরিকাঘাতে হতাহত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটার আগেই ক্যামেরা সরিয়ে নিলাম। তবে এর আগেই কসাইদের কারবার ভিডিওতে ধারণ করা হয়ে গেছে।

     রাস্তায় সবজি বাজার

কাঁচা বাজারে ফলমূলের মতো শাক সবজিরও কোনো অভাব নেই। বেশিরভাগ সবজির দোকানে নারী অথবা শিশু বিক্রেতারা গাঁজর মূলা সিম বেগুন ক্যাপসিকাম এবং শশাসহ বিভিন্ন ধরনের বীনের ডালা সাজিয়ে বসে আছে। পালং শাক এবং নাম না জানা আরও দুই এক ধরনের শাকের আঁটি দেখে মনে হলো মরুভূমির লোকেরা শুধু শুকনো রুটি, দুম্বার মাংস আর খেজুর খেয়ে বাঁচে বলে আমাদের যে ধারণা ছিল তা মোটেও সত্যি নয়। আমরা ফুটপাথের দোকানে দোকানে ঘুরে জিনিসপত্রের দাম সম্পর্কে একটা ধারণা পাবার চেষ্টা করছিলাম। ভাষা না বুঝলেও প্রায় সবাই সাধ্যমতো উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছে, প্রায় সবাই ছিল বেশ হাসিখুশি। কয়েকজন কিশোর আমাদের সঙ্গে ছবি তোলার জন্যে এগিয়ে এসে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে গেল। শুধু একজন নারী বিক্রেতার দোকানের ছবি তোলার সময় শিশু কোলে দাঁড়ানো পুরুষ লোকটি ‘লা লা’ বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তার পুরুষত্ব জাহির করলে আমরা ক্ষান্ত দিলাম।

     কায়রোর কসাইখানা

কিছু ফল কিছু শাক-সবজি কিনে ঘরে ফেরার পরে দেখা গেল তিন কেজি আপেল নাসপাতিসহ রানা ভাই ব্যাগটা কোনো একটা দোকানে ভুল করে ফেলে চলে এসেছেন। কিন্তু ব্যাগটা কোথায় রেখেছেন তিনি কিছুতেই মনে করতে পারলেন না। আমার ক্যামেরায় শ্যুট করা ভিডিও ফুটেজ দেখতে দেখতে হঠাৎ চোখে পড়ল বাজার থেকে বেরোবার আগে রানা ভাই শেষ যে বড় দোকানটায় ঢুকেছিলেন সেখানেই বাইরের দিকের ডেস্কের উপর ব্যাগটা রেখেছেন। দোকান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেল আশা করি তিন কেজি ফল ফেরতও পাওয়া যাবে।

বিকেলে পুরোনো কায়রোর রিলিজিয়াস কমপ্লেক্সে যাওয়ার কথা। তবে তার আগে ফলোদ্ধারের জন্যে বাজারের দিকে যেতে হলো। সেই দোকানের সামনে রানা ভাই গাড়ি থেকে নামতেই দোকানের ভেতর থেকে একজন হৈ হৈ করে ইংরেজি আরবি মিশিয়ে যা বললেন তার অর্থ ‘তুমি চলে যাবার পরপরই তোমাকে খুঁজেছি। তোমার ফলের ব্যাগটা এখানে থেকে গেছে।’ আমাদের ভিডিও এভিডেন্স বের করার কোনো দরকার হলো না, তার আগেই ফলের ব্যাগ হাতে পেয়ে রানা ভাই ‘শুকরান শুকরান’ বলে গাড়িতে উঠে পড়লেন।

        আবু সেরাগা চার্চের একাংশ

পুরোনো কায়রোর ঐতিহাসিক মসজিদ আমর ইবনে আল আস-এর কাছাকাছি বেশ বড় একটা এলাকা জুড়ে মসজিদ এবং বিভিন্ন মতাদর্শের কয়েকটি গির্জার পাশাপাশি একটি ইহুদি উপাসনালয় মিলিয়ে বড় এলাকা জুড়ে এই জটিল ধর্মীয় চত্বর। রিলিজিয়াস কমপ্লেক্স, কায়রো, লেখা একটি নির্দেশনা ফলক পেরিয়ে ভেতরে ঢোকার পরে মনে হলো এলাকাটা তুলনামূলকভাবে জনবিরল এবং ব্যস্ত কায়রোর অন্যান্য এলাকার চেয়ে নীরব। পরিচ্ছন্ন পথে মানুষের চলাচল কম এবং কোথাও আবর্জনার স্তূপ চোখে পড়ে না। এখানে চার্চ অব মেরি গার্গস, চার্চ অব আবু সেফিয়ান, চার্চ অব সেইন্ট বারবারা নামে ক্যাথলিক, প্রোটেস্টান্ট, অর্থডক্স এবং অ্যাভেঞ্জেলিক চার্চ মিলিয়ে সবগুলো গির্জা একদিনে দেখে শেষ করা অসম্ভব। আমরা বেছে নিলাম কাছাকাছি আবু সেরগা। খানিকটা দূরে পার্কিং-এ গাড়ি রেখে পাশাপাশি কয়েকটি গির্জার চত্বরে প্রবেশের আগে নাম কা ওয়াস্তে একটা নিরাপত্তা ফটক পার হতে হলো। তারপরেই হেঁটে গেলাম আবু সেরগার দরজা পর্যন্ত।

     আবু সেরগা চার্চের ধর্মাপোদেশ

স্থানীয়ভাবে আবু সেরগা নামে পরিচিত কায়রোর প্রাচীনতম কপটিক চার্চগুলোর একটি সেইন্ট সেরগিয়াস ও সেইন্ট বাচুস চাচের্র প্রবেশ পথে চার্চের নাম লেখা থাকলেও আসল গির্জা ভবনে ঢুকতে অনেক দূর পর্যন্ত একটা সরু গলিপথ পার হতে হলো। গলিপথের দুপাশের তাকে সাজানো অসংখ্য বই। কিছু সংখ্যক তাকে বাইবেলের নানা কাহিনি থেকে নেওয়া রঙিন ছবি। এই গির্জা যে হাজার দেড়েক বছর আগের তা এর নির্মাণকাল না জানলেও বলে দেয়া যায়। সিরিয়ায় ধর্ম বিশ্বাসের জন্য শহিদ ধর্মযোদ্ধা সেইন্ট সেরগিয়াস ও সেইন্ট বাচুসের নামে ক্রিস্টিয় চতুর্থ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত গির্জা সংলগ্ন ভূগর্ভের গহীনে মা মেরি, জোসেফ এবং শিশু যিশুখ্রিস্ট বিশ্রাম নিয়েছিলেন বলে প্রচলিত আছে। আগুনে ভষ্মীভুত হবার পরে মধ্যযুগ পর্যন্ত বহুবার পুননির্মাণ করায় কপটিক চার্চটি বর্তমান অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে।

অনন্য স্থাপত্যশৈলী এবং অলঙ্করণের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিশরের খ্রিস্টিয় নির্মাণ কলার উপাদানগুলো মিলে মিশে গির্জার অভ্যন্তরভাগ অসাধারণ সুন্দর। চারিদিকের দেয়ালের বেশিরভাগ নির্মিত হয়েছে জুড়ে কালচে-লাল ইটের গাঁথুনিতে। শক্তপোক্ত দেয়াল এবং খিলানসহ স্তম্ভ উঠে গেছে তিন তলার উচ্চতায়। মিম্বর, গম্বুজ, কলাম, রোস্ট্রাম এবং দেয়ালগুলোতে সুদৃশ্য কাঠের কারুকাজ আর কাঠের উপরে আইভরির কারুকাজ করা বেদি মধ্যযুগের কারুশিল্পীদের সৃষ্টিশীল কাজের উদাহরণ। দেয়ালগুলোতে শোভা পাচ্ছে সাধু সন্ত আর প্রেরিত পুরুষদের প্রমাণ সাইজের পেইন্টিং। এসব ছবিও কারুকাজ করা ভারি কাঠের ফ্রেমে আটকানো।

মূল প্রার্থনা কক্ষে সাজানো সারি সারি ভারী কাঠের বেঞ্চের পেছনে দাঁড়িয়ে দেখলাম একজন প্রিস্ট বক্তব্য দিচ্ছেন। তার পরনে কালো আলখাল্লা, মাথায় চেগুয়েভারার মতো টুপি তবে সেটাও কালো, হাতে কালো ব্যান্ডের ঘড়ি আর আর বুকে ঝোলানো ক্রশ। তার কণ্ঠস্বর, বলার ভঙ্গি এবং নাটকীয় অভিব্যক্তি মিলিয়ে সামনের বেঞ্চগুলোতে বসা পনের কুড়িজন তরুণ তরুণী তার কথা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছে। তিনি আরবিতে ভাষণ দিচ্ছেন, শুধু এইটুকু ছাড়া তার বক্তব্যের বিন্দু বিসর্গ না বুঝেও আমার শুনতে ভালো লাগছিল। তরুণ শ্রোতাদের মধ্যে দুজন তরুণীকে দেখলাম হিজাব পরিহিতা। সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায় এই দুজনসহ প্রায় সবাই ধর্মগুরু তার কথার যাদুতে সম্মোহিত করে ফেলেছেন। ভাষা বুঝলে আমি নিজেও সম্মোহিত হয়ে পড়তাম কিনা কে জানে!

      হাজার বছর আগের বাইবেল

কিছুক্ষণ ধর্মোপদেশ শোনার পরে প্রথমে ডান দিকের গ্যালারি এবং পরে বাঁ দিকের করিডোর পার হয়ে যেখানে পৌঁছলাম সেটি একটি সংগ্রহশালা। এখানে বিভিন্ন তাকে সংরক্ষিত রয়েছে প্রাচীন পুঁথি পুস্তক, ধর্মগ্রন্থ, বিশেষ করে হাতে লেখা বাইবেল। হিব্রু ভাষায় লেখা একটি বাইবেলে দেখা গেল মূল ভাষার পাশাপাশি ছোট করে আরবি অনুবাদ অথবা ফুটনোট। বইপত্র ছাড়াও বাতিদান, পান পাত্র, সিলমোহর ও ধাতব ক্রশসহ কিছু ছোট জিনিস ঠাঁই পেয়েছে এই ছোট্ট মিউজিয়ামে। কে জানে এইসব কতশত বা কয় হাজার বছর আগের নিদর্শন! সংগ্রহশালার মেঝেতে একটি কূপের মুখ মোটা কাচের ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বৃত্তাকার ঢাকনা ঘিরে আরবি এবং ইংরেজিতে লেখা: ঞযব বিষষ The well which the Holy Family drank from. তবে আবে জমজমের মতো এই পবিত্র পানি পানের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

      বই পুস্তকের গলিপথ

জাদুঘরের ভেতর থেকেই দুপাশে কাঠের রেলিং দেওয়া পাথরের একটি সিঁড়ি নিচে নেমে গেছে। কথিত আছে অ্যাপোস্টেলিক যুগে মা মেরি তার শিশু সন্তান যিশুখ্রিস্টকে নিয়ে তিন মাস এখানেই নিচের একটি গুহায় বসবাস করেছেন। বিবি মরিয়ম তার শিশু পুত্র ঈসা আলাইহেওয়াস-সালামসহ মাস তিনেক গুহাবাসী হিসেবে কালাতিপাত করে থাকলে গির্জা না হয়ে এখানে এখানে একটি মসজিদও হতে পারত। যাই হোক, ইসলামের আবির্ভাবের আগেই ঘটনাগুলো ঘটে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বিবাদের কোনো সুযোগ নেই। এখন এই কাহিনি কেবলই বিশ্বাসের। আমরা খ্রিস্টিয় ধর্মগুরুর বক্তৃতা শুনে, অসাধারণ স্থাপত্য নৈপুনের একটি নিদর্শন দেখে মুগ্ধ হয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম।

   বিন এজরা সিনাগগ

বই-পুস্তকের দীর্ঘ গলিপথ পেরিয়ে যখন রাস্তায় এলাম তখন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। পথের বাঁ দিকের কয়েকটি দোকানে এবং গির্জার দরজাগুলোতে জ্বলে উঠেছে আলো। কয়েকটি চার্চ পেরিয়ে রিলিজিয়াস কমপ্লেক্সে ইহুদি প্রার্থনা মন্দিরটির অবস্থান একদিকে গির্জা এবং অন্যদিকে আমর ইবনে আল আস মসজিদের মাঝখানে। এলাকায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে ঈশ্বরের প্রেরিত পুরুষ মুসা নবী নীল নদের কাছাকাছি প্রার্থনার জন্যে এই জায়গাটি বেছে নিয়েছিলেন। এক সময় খ্রিস্টান আধিপত্যের যুগে এখানে নির্মিত উপাসনালয় অর্থডক্স চার্চে রূপান্তরিত হয়ে যায়। পরে খ্রিস্টধর্মের অনুসারিরা ট্যাক্স পরিশোধ করতে না পারায় বিশ হাজার রিয়াল দিয়ে ভগ্নদশা ভবনটি কিনে নেন ইহুদি ইব্রাহিম বিন এজরা। তার নামে উপাসনালয়ের নামই হয়ে যায় বিন এজরা সিনাগগ। তবে ভাঙা গড়ার মধ্যে দিয়ে সিনাগগটি বর্তমান অবস্থায় আসতে বহু বছর লেগেছে। বিন এজরার পুনরুদ্ধার এবং পুনঃনির্মাণে মিশর সরকারের বিরাট ভূমিকা ছিল। প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণে সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগ ও আর্থিক অনুদানের পাশাপাশি সারাবিশ্বের ইহুদি সম্প্রদায়ের সাহায্য সমর্থন তো ছিলই।

    রিলিজিয়াস কমপ্লেক্সে সন্ধ্যা

সিনাগগের ভেতরে কারুকাজ করা সোনালি দেয়াল, দীর্ঘ কলাম এবং পরিমিত আলোর ব্যবহার এক অপার্থিব ভাবগম্ভীর পরিবেশ। প্রথম তলাটি পুরুষের এবং দ্বিতীয় তলা নারীদের প্রার্থনার জন্য নির্ধারিত। কলামগুলো মার্বেল পাথরে আবৃত এবং উপরের দিকে কারুকাজ করা সোনালি মুকুটে ঢাকা। আলোক সজ্জার ব্যবস্থা ছাড়াও সিলিংয়ে তাকালে চোখে পড়ে বাতাস চলাচলের ফোকর। উল্লেখ করা করা যেতে পারে ইসলামের অনুশাসনের মতোই ইহুদি ধর্মেও উপাসনালয়ের দেয়ালে কোনো দেব দেবী, ঈশ্বর অথবা প্রেরিত পুরুষের কোনো মূর্তি বা প্রতিকৃতি নেই।

আমর ইবনে আল আস মসজিদে যাওয়ার জন্যে নিরাপত্তা চৌকি পেরিয়ে যখন রাস্তায় এলাম তখন গাছপালার ফাঁকে আকাশে দেখা গেল বেশ বড় একটা গোল চাঁদ।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

রাফিনিয়া-ইয়ামালের নৈপুণ্যে দুর্দান্ত জয় পেল বার্সেলোনা

ছবি: সংগৃহীত

বার্সেলোনা চলতি লা লিগা মৌসুমে দুর্দান্ত শুরু করলেও কিছু সময় ছন্দ হারিয়ে শীর্ষস্থান থেকে সরে যায়। তবে, সম্প্রতি টানা চার ম্যাচ জয়হীন থাকার পর রাফিনিয়া ও ইয়ামালের নৈপুণ্যে বড় জয় পেয়ে ছন্দে ফিরেছে কাতালান ক্লাবটি।

২৬ জানুয়ারি, রোববার, বার্সেলোনা তাদের ঘরের মাঠে ভালেন্সিয়াকে ৭-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। ম্যাচের শুরুতেই তৃতীয় মিনিটে লামিনে ইয়ামালের অসাধারণ পাস থেকে গোল করে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং। কিছুক্ষণ পর, ৮ম মিনিটে আলেহান্দ্রো বাল্দের ক্রসে সুনিপুণ গোল করেন তরেস, যিনি তার সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোল উদযাপন করেননি।

অল্প সময়ের মধ্যে ২-০ গোলের লিড নিয়ে বার্সেলোনা ভ্যালেন্সিয়ার রক্ষণে আরও চাপ সৃষ্টি করে। ১৪তম মিনিটে ইয়ামালের ব্যাকহিল থেকে রাফিনিয়াকে বল পান, এবং ডি-বক্সের বাইরে থেকে নিখুঁত শটে গোল করে দলের তৃতীয় গোলটি করেন তিনি। এটি ছিল তার চলতি মৌসুমের ১২তম গোল।

২৪তম মিনিটে পাউ কুবার্সির পাসে দলের চতুর্থ গোলটি করেন লোপেস, যার পরে ভিএআরের মাধ্যমে গোলটি নিশ্চিত করা হয়। বিরতির ঠিক আগে, রাফিনিয়ার একটি শক্তিশালী শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে, লোপেস দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়ে গোল করে বার্সেলোনাকে ৫-০ ব্যবধানে এগিয়ে নিয়ে যান।

দ্বিতীয়ার্ধে, ৫৯তম মিনিটে হুগো দুরো ভ্যালেন্সিয়ার জন্য একটি সম্মানজনক গোল করেন, কিন্তু পরবর্তীতে ৬৬তম মিনিটে লেভানডোভস্কি বার্সেলোনার ব্যবধান আবার ৫ গোল করে বাড়িয়ে দেন। ম্যাচের ৭৫তম মিনিটে, তোরেসের শট ভ্যালেন্সিয়ার গোলরক্ষক ঠেকালেও ফিরতি বল সিজার টারেগা নিজ জালে পাঠিয়ে দেন, ফলে ৭-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হয় বার্সেলোনার।

এই জয়ে ২১ ম্যাচে ১৩ জয় ও ৩ ড্রয়ে বার্সেলোনা ৪২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে ফিরেছে। ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ এবং ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। অন্যদিকে, ১৬ পয়েন্ট নিয়ে ১৯ নম্বরে রয়েছে ভালেন্সিয়া।

Header Ad
Header Ad

পুলিশের শতকরা ৮০ জনের হৃদয়ে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, বর্তমান পুলিশের শতকরা ৮০ জনই আওয়ামী আমলের, যাদের হৃদয়ে ছাত্রলীগ। তারাই এ সরকারের জন্য কাজ করছে না।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে চারটি বইয়ে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, বিপ্লব পরবর্তী কিছু সমস্যা থাকে। তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে সরকার। গণঅভ্যুত্থান নিয়ে সকলের মধ্যে যে ঐক্য ছিল, সেই ঐক্য আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন আসিফ নজরুল।

এর আগে, সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে বিএনপির সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয়। এটি গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের দোসরদের কতটা উৎসাহিত এবং বেপরোয়া করে তুলতে পারে তার কিছুটা প্রমাণ আমরা গত কয়েক দিনে পেয়েছি।

আইন উপদেষ্টা বলেন, তিনি যতটা জানেন এবং বিশ্বাস করেন— বিএনপি কোনো ষড়যন্ত্রে জড়িত নয় এবং তারা ১/১১ ধরনের কিছু করতে চাচ্ছে না, ছাত্রনেতারা সরকারের অংশ হিসেবে কোনো নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে না বা এতে যোগ দিচ্ছে না, জুলাই ঘোষণাপত্র একটি রাজনৈতিক দলিল হবে এবং ছাত্রনেতারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তির মতামত সঠিকভাবে প্রতিফলিত করার জন্য চেষ্টা করছেন এবং বিএনপি এবং ছাত্রনেতারা এমনকি নির্বাচন কেন্দ্রিক বৃহত্তর সমঝোতার ব্যাপারে আগ্রহী, তবে সেটি আলোচনা সাপেক্ষে। এর অর্থ হলো, বিরোধের কোনো কারণ নেই, বরং সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, গণহত্যায় জড়িতদের হাতে রয়েছে লুটপাট করা বিপুল পরিমাণ টাকা, অনেক সুবিধাবাদী গোষ্ঠী, শক্তিশালী প্রচারণা নেটওয়ার্ক এবং শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থন। তাদের বিরুদ্ধে যদি কিছু করতে হয়, তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্রদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের মধ্যে ভিন্নমত থাকবে, তবে তা যেন দেশের শত্রুদের জন্য উৎসাহের কারণ না হয়।

Header Ad
Header Ad

৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের পদত্যাগ এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) শেষ রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের সংগঠক আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, বিচারের আগে কোনো ধরনের পরীক্ষা হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বৈরাচারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ৭ কলেজকে ঢাবির অধিভুক্তি থেকে বাতিল করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলাম।

তিনি বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি ছিল আমাদের। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তা করেনি। উল্টো ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এসব নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। সবশেষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি (শিক্ষা) আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। এর প্রতিবাদে গণতন্ত্র ও মুক্তি তোরণের নিচে অবস্থানকালে ঢাবি শিক্ষার্থী ও পুলিশ সম্মিলিতভাবে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়।

৭ কলেজকে নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করতে হবে, এমন দাবি জানিয়ে আব্দুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-ভিসি মামুন আহমেদের বিচার করতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার সকাল ৯টা থেকে ঢাকা শহর অবরোধ করা হবে। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাস এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

রাফিনিয়া-ইয়ামালের নৈপুণ্যে দুর্দান্ত জয় পেল বার্সেলোনা
পুলিশের শতকরা ৮০ জনের হৃদয়ে ছাত্রলীগ: আসিফ নজরুল
৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি
ছাদের কার্নিসে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি, সেই এসআই চঞ্চল গ্রেপ্তার
সাত কলেজের সব পরীক্ষা স্থগিত
আজ পবিত্র শবে মেরাজ
মধ্যরাতে ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ৮
সাবেক দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গ্রেপ্তার
রয়্যাল এনফিল্ড কিনে না দেয়ায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ কিশোরের!
রংপুরের টানা দ্বিতীয় হার, রাজশাহীর নাটকীয় জয়
সায়েন্সল্যাব ও টেকনিক্যাল মোড় অবরোধ করেছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা
আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলাদেশের কসাই: প্রেস সচিব
পুলিশের সংখ্যা পর্যাপ্ত, কিন্তু মনোবলের ঘাটতি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশে আসছে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড যাচ্ছেন বাংলাদেশি রোগীরা, কলকাতার হাসপাতাল ব্যবসায় ধস
২৫ দিনে এলো ২০৪৪৭ কোটি টাকার প্রবাসী আয়
বেতন-ভাতায় না পোষালে অন্য পেশায় চলে যান: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ ট্রাস্ট বৃত্তি পেলেন কুবির ৩০ শিক্ষার্থী
নির্বাচনের কথা বললে উপদেষ্টাদের মুখ কালো হয়ে যায়: মেজর হাফিজ
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন সংগীতশিল্পী অরিজিৎ সিং