শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

ওয়াদি এল রায়ান থেকে তিউনিস ভিলেজের দূরত্ব ত্রিশ কিলোমিটার। হাতের ডাইনে দীর্ঘ কারুন হ্রদ এবং মাঝে মাঝে মরুদ্যান আর বাঁ দিকে বহুদূর বিস্তৃত মরুভূমি পেছনে ফেলে আমরা এগোতে থাকি। 

এক সময় মরুদ্যান ছাড়িয়ে আবারো কিছু দূর ধু ধু মরুপ্রান্তর পেরিয়ে যাবার পরে দেখা দেয় জনপদের চিহ্ন। দুপাশে একটি মরু মফস্বলের চেহারা স্পষ্ট হতে থাকে। একদিকে সুদৃশ্য মসজিদ এবং অন্যদিকে কয়েকটি দোকান বাঁয়ে রেখে আমরা প্রায় জনশূন্য একটা ছোট শহরের মতো এলাকায় ঢুকে পড়ি। পথের পাশে গাড়ি মেরামতের দোকান এবং রেস্তোরাঁর সাইন বোর্ড দেখে বুঝতে পারি এটিই তিউনিস গ্রাম। নামে গ্রাম হলেও এটি যে আসলেই মরুদ্যানের ছোট শহর তা বুঝতে বাকি থাকে না। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসুনি যে রেস্তোরাঁর সামনে এসে দাঁড়াল তার নাম নিউ তিউনিসিয়া রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ক্যাফে! এতোক্ষণ তো ভাবছিলাম গ্রামের নামে শহর! এখন দেখা গেল পুরো একটা দেশের নামই নিয়ে নিয়েছে এই গ্রাম! 

            তিউনিসের বন্ধ রেস্তোরাঁ

রেস্তোরাঁর বাইরে থেকে দরজা কপাট বন্ধ দেখেই সন্দেহ হয়েছিল, তারপরেও মোহামেদ সাদেক খোঁজ নিতে গাড়ি থেকে নেমে গেল। একটু পরে এসে জানাল দুবছর আগে করোনা মহামারির শুরুতে বন্ধ যাওয়া তিউনিসিয়া রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ক্যাফে আর চালু হয়নি। পরপর আরও গোটা দুই সরাইখানার বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে করাঘাত করেও কোনো সাড়া পাওয়া গেল না। 

ওমর খৈয়াম সম্ভবত এই রকম পরিস্থিতিতেই লিখেছিলেন ‘ভোরের পাখি শিস দিয়ে যেই উঠলো চারিধারে/পান্থশালার দ্বারে দাঁড়িয়ে ছিল যারা, বলল হেঁকে তারা/দুয়ার খোলো দুয়ার খোলো ভাই, সময় যে আর নাই।’ 
আমাদের এখানে ভোরের পাখি ডাক দেয়নি বরং দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও খাদ্যের অন্বেষণে পান্থশালা থেকে পান্থশালায় ঘুরে বেড়ালেও কেউ দরজা খোলেনি। 

         মৃৎ পাত্রের কারখানায়

তিউনিস কুমোরদের গ্রাম নামেই পরিচিত। কাজেই এখানে এসে মৃৎশিল্পের কর্মকাণ্ডের অন্তত একটি নমুনা না দেখে, শিল্পীদের নির্মাণ শৈলীর সাথে একটু পরিচিত না হয়ে ফিরে যাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। অতএব নেমে গেলাম সাদেকের নির্দেশনা অনুসারে। ভেতরে প্রবেশ করে বুঝলাম আমাদের কুমোর পাড়া, পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা যেমন মাটি ছেনে, চাক ঘুরিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে লাল টুকটুকে হাড়ি পাতিল কিংবা কালো কলস তৈরি করে তার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। এটি খুব বড় না হলেও মাঝারি আকারের সিরামিকের কারখানা। ভেতরে হাতে নকশা কেটে তৈজসপত্র তৈরির কাজ চলছে, এখানেও আগুনে পুড়ে নতুন রূপ লাবণ্যে ঝলসে উঠছে মাটির পাত্র! কিন্তু নির্মিত পেয়ালা-পিরিচ, থালা-বাসন যতোই ঝকঝক করুক বাইরের দিকে শো-রুমে দাঁড়িয়ে থাকা বিরস বদন বালিকাকে দেখে অনুমান করা যায় বেচা কেনা তেমন নেই।   

        আল মালাকের উদ্যানে     

তিউনিস গ্রামের পথে দু পাশের বর্ণহীন বাড়িগুলোর মধ্যে চোখে পড়ে দুই একটি সুদৃশ্য বাড়ি, কোনো কোনো বাড়ির দেয়াল থেকে ঝুলছে সবুজ লতাপাতাসহ ফুলের ঝাড়। মাঝে মাঝে দু চারটি সাজানো দোকান আর পথে দু চারজন বিদেশি পর্যটক। রংপুরের সতরঞ্চির মতো রঙিন সতরঞ্চি সাজিয়ে একটা দোকানে বসে আছে বিষন্ন কিশোর। সেই দোকানের সামনে দাঁড়াতেই একটু উৎসাহিত হয়েছিল ছেলেটি। কিন্তুতাকে হতাশ করেই আমরা এগোতে থাকি। শেষ পর্যন্ত বাসুনি বেশ কিছুটা সামনে এগিয়ে গাড়ি নিয়ে যেখানে সটান ঢুকে গেল তার চেহারা দেখেই বলে দেয়া যায় এটি একটি উচুঁ মানসম্পন্ন রিসোর্ট কাম রেস্টুরেন্ট। প্রবেশ পথে আল মালাক নামের হোটেলের সাইনবোর্ড পছন্দ হলো না। কিন্তুপাথরে বাঁধানো পথ দিয়ে হেঁটে দুপাশের সবুজ গাছপালা এবং সারি সারি রঙিন ফুলের ঝোপঝাড় পেরিয়ে যেখানে পৌঁছলাম মরুদ্যানে তেমন প্রাকৃতিক পরিবেশ আশা করিনি।

       কাতরানি ক্যাম্প

চারিদিকে দীর্ঘ সবুজ গাছের বেস্টনি দেওয়া মাঠের একদিকে সুইমিং পুল এবং অন্যদিকে ছোট ছোট আবাসিক কুটির। এশিয়া ইওরোপের যে কোনো দেশের বিলাসবহুল হোটেলে সামনে পেছনে খোলা মাঠের চারিদিকে বাগানে ফুটে থাকা ফুলের সমারোহ দেখে অবাক হবার কিছু থাকে না। কিন্তুএখানে এই দিকচিহ্নহীন মরুপ্রান্তরের এক চিলতে মরুদ্যানে পুষ্প পাতার অভাবনীয় দৃশ্য কেবলই আমাদের বিস্মিত করে। ঘাসের সবুজ গালিচায় এক একটি টেবিল ঘিরে পেতে রাখা কয়েক সেট গার্ডেন চেয়ারের তিনটি দখল করে বসে পড়লাম। শুরু হলো মোহামেদ সাদেকের সাথে রেস্তোরাঁর পরিবেশকের কথপোকথন। আমি এরই মধ্যে মাঠের আর এক প্রান্তে চমৎকার প্রক্ষালন কক্ষ থেকে হাত মুখ ধুয়ে রীতিমতো তরতাজা হয়ে ফিরে এসেছি। মরুর দেশে তরু পল্লবে ঘেরা উদ্যানে বসে বিকেলের মৃদুমন্দ হাওয়া মন্দ লাগছিল না। কিন্তু সাদেকের কথা শুনে আমাদের চক্ষু চড়কগাছ! খাবারের মূল্যের কথা বাদ দিলাম, একদিন না হয় একটু বেহিসাবী হওয়া গেল, কিন্তু সময়ের মূল্য পরিশোধ করবে কে! খাবার তৈরি হয়ে টেবিলে পরিবেশনের জন্যে মাত্র দেড় ঘণ্টা সময় চেয়েছে আল মালাক! 

            তাঁবু রাত্রি যাপন

মালাকের কথা শুনে মোহামেদ সাদেক সিদ্ধান্ত দিয়ে দিল, ’এখান থেকে আধা ঘণ্টার দূরত্বে বেদুঈনদের একটা ক্যাম্প আছে কাতরানিতে। সেখানে ফোনে খবর দিয়ে খাবার তৈরি করতে বলে দিই, আমাদের পৌঁছাতে যে সময় লাগবে তার মধ্যে আশা করা যায় লাঞ্চ রেডি হয়ে যাবে।’ সাদেকের কথায় তথাস্তু বলে উঠে পড়লাম। মাঝখান থেকে তিউনিসের চমৎকার গ্রামে প্রায় অকল্পনীয় একটি রিসোর্টের অবিশ্বাস্য বাথরুম বিনামূল্যে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা হলো! গাড়িতে উঠবার আগেই সাদেক তার নির্দেশনা দিয়ে নিশ্চিত হলো। বিকেল সাড়ে তিনটা বাজলেও ক্ষুৎ পিপাসায় কাতর হয়ে গেছি তা বলা যাবে না, তবে কাতরানি পৌঁছে খাবার না পেলে হয়তো সত্যিই কাতরানি শুরু হয়ে যাবে, তাই এই সতর্কতা। 

          কাতরানিতে ক্যাম্প ফায়ার

বিকেলের সূর্যের তেজ কমে যাবার সাথে সাথে বাসুনির তেজও কিছুটা কমে এসেছে মনে হলো। তাই চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আঁকাবাঁকা পথে না ছুটে সে পিচঢালা সোজা পথ ধরে প্রায় পঁচিশ মিনিট চলার পরে ডাইনে ঘুরে গেল। এখানে আবার সেই বালির মধ্যে দুপাশে পাথরের টুকরো বসানো পথের নিশানা। বালির উঁচু নিচু টিলা এবং ভাস্কর্য পেরিয়ে মিনিট পাঁচেক পরে যেখানে পৌঁছলাম সেটি যে আসলেই বেদুঈনের পান্থশালা তা কাউকে বলে দিতে হয় না। এখানে বাঁধানো সড়ক নেই, সবুজের চিহ্ন মাত্র নেই, ইট পাথরের ঘর দরজা নেই। চারিদিকে বালির সমুদ্রের মধ্যে সারি সারি সাদা তাঁবু আর কাঠ বাঁশের তৈরি কিছু অস্থায়ী চালাঘর। বসার ব্যবস্থা  ফালি করে কাটা দীর্ঘ কাঠের বেঞ্চে। মরুভূমিতে নিশি যাপনের জন্যে তাঁবুতে রাত্রিবাসের ব্যবস্থা তো আছেই।

          কাতরানির মরু কুটির

এ ছাড়াও ইচ্ছে করলে বালির পাহাড়ের গায়ে খোড়লের ভেতরে রাত কাটানো যায়। সম্ভবত ‘নাইট লাইফ’ উদযাপনের জন্যে বালির উঠানে মাঝখানে আগুন জ্বালাবার ব্যবস্থাসহ বৃত্তাকারে সতরঞ্চি পেতে আসর সাজানো আছে। উদর পূর্তির পাশাপাশি নৈশ্যভোজে উদর নৃত্যের ব্যবস্থা আছে কিনা তা অবশ্য তখনো জানতে পারিনি।   আমরা বালির আঙ্গিনা জুড়ে পেতে রাখার কাঠের লম্বা বেঞ্চে বসে পড়লাম। মোহামেদ সাদেক কিছুক্ষণ পরেই এসে জানালো খাবার তৈরি হচ্ছে। বুঝলাম ফোনে আধা ঘণ্টা বললেও আরো খানিকটার সময় দিতে হবে। অপেক্ষার সময়টা চারিদিকে ঘুরে ফিরে কাটানো যায়। বিরান বালুর মাঠেও দেখলাম পাশাপাশি গোটা দুই দোলনা ঝুলছে। একটাতে বোরকা পরা তরুণীকে দোল দিচ্ছে জুব্বাধারী এক তরুণ। চমৎকার দৃশ্যটি দেখে মনে হলো মিশরীয় ইসলামে তাহলে দোলনায় দোল খাওয়া হারাম নয়! কিছুদিন আগে এক হুজুরের ওয়াজে শুনেছিলাম ’দোলনা হচ্ছে শ্রী কৃষ্ণ ও রাধার লীলা খেলা, ইসলামে দোলনা দোলানোর কোনো জ্ঞান নাই!’ এরা বাংলাদেশি ইসলামে আরও কতো কিছু যে নিষিদ্ধ করবে আল্লাহই জানে। হেনাকে বললাম, ‘যাও কিছুক্ষণ দোলনায় দোল খেয়ে এসো।’ সে বললো, ‘দেখছো না ওখানে এখন হুজুরদের দোলে দোদুল ঝুলে ঝুলনা চলছে।’ বললাম, ‘একটা তো খালি আছে।’ হেনা বললো, ‘এখন আর দোল খেতে চাই না, খাবার খেতে চাই।’খাবার খেতে চাইলেই তো হয় না, এই পাণ্ডব বর্জিত ধু ধু বালুর চরে কে আমাদের জন্যে খাবার নিয়ে বসে আছে! আমরা দুজন চারিপাশটা ঘুরে দেখতে বেরোলাম।

        বালি পাহাড়ের কোটরে বিছানা-বালিশ

রানা ভাই যথারীতি এই বেদুঈন ক্যাম্পের সামান্য ইংরেজি জানা কর্মচারিকে পাকড়াও করে আলাপ শুরু করেছেন। তাঁবুগুলোকে পেছনে ফেলে ডান পাশে বালির টিলাগুলো রেখে সামনে এগিয়ে গেলেই ছড়িয়ে আছে দীর্ঘ জলাধার কারুন হ্রদ। কিন্তুশান্ত স্বচ্ছ এই হ্রদের আশেপাশে কোথাও কোনো সবুজ গাছ পালার ছিটে ফোঁটাও নেই। বিচিত্র ভাস্কর্যের মতো দেখতে লাইম স্টোনের পাহাড় কেটে কোথাও কোথাও সিঁড়ি চলে গেছে অনেক উপরে। আবার কোথায় নরম বালু মাটির সিঁড়িগুলোকে আটকে রাখার জন্যে ধাপে ধাপে বসিয়ে দেয়া হয়েছে খেজুর গাছের গুড়ি। এইসব সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে দেখালাম সতরঞ্চি এবং বিছানা বালিশ পাতা  একেকটি আবাসিক কক্ষ। লতাপাতা, বাঁশ কিংবা কাঠ খড় দিয়ে তৈরি ঘরগুলোকে নাম দেয়া যায় ‘মরু কুটির’ আর পাহাড়ের খোলের ঘরগুলো ‘গুহাগৃহ!’  আমরা ‘মরু কুটির’ ‘গুহাগৃহ’, মরু কুটিরের বহিরাবরণের আদলে তৈরি প্রাক্ষলণ কক্ষ এবং তাঁবু বাসের ব্যবস্থা সরে জমিনে দেখে এসে যখন টেবিলে বসলাম তখনও খাবারের খবর নেই। 

            বেদুঈনের তাঁবুতে বিলম্বিত লাঞ্চ

রানা ভাই এরই মধ্যে কাতরানি ক্যাম্পের কিছু তথ্য যোগাড় করে ফেলেছেন। আল ফাইয়ুম শহর থেকে প্রায় বিশ কিলোমিটার দূরে লেক কারুনের তীর ঘেষে কয়েক একর জায়গা সরকারের কাছে থেকে লিজ নিয়ে এই তাঁবু বাসের আয়োজন। উচুঁ নিচু পাহাড়ের সারিতে সর্বোচ্চ গিরিশৃঙ্গের উচ্চতা সাড়ে তিনশ মিটার। মরুভূমির প্রাকৃতিক পরিবেশে হাইকিং, ট্রেকিংয়ের জন্যেও অনেকেই, বিশেষ করে তরুণ ব্যাক-প্যাকাররা চলে আসে এখানে। এখানে পাহাড়ের মাথায় সোলার প্যানেল লাগিয়ে সীমিত বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও ঘরে ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই, তবে টয়লেট বাথরুম যথেষ্ট আধুনিক এবং প্রবহমান পানির ব্যবস্থাও আছে। তাঁবু অথবা পাহাড়ের খোলে দুজনে রাত্রি যাপনের জন্যে গুণতে হবে ৩০ থেকে ৪০ মার্কিন ডলার। ট্যুরিস্ট সিজনে বিপুল সংখ্যক পর্যটক উন্মুক্ত বালিয়াড়িতে ক্যাম্প ফায়ারে মেতে ওঠে আর অনেকেই আসে খোলা আকাশের নিচে শুয়ে তারা ভরা আকাশ দেখতে। 

গল্পে আড্ডায় সময় কাটালেও আমাদের দৃষ্টি ছিল কখন কিচেন থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে! অবশেষে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, হাত মুখ ধুয়ে আমাদের খাবারের খুপরিতে আসন নেওয়ার খবর এল। অবাক হয়ে দেখলাম মরুভূমিতে ভোজনের আয়োজন যেমনই হোক, বেসিনের উপরে ট্যাপ ঘুরিয়ে হাত ধোবার ব্যবস্থা আছে। বাড়তি হিসাবে বেসিনের উপরে আয়নায় নিজের চেহারাটাও একবার দেখে নেওয়া গেল। পাহাড়ের খোলে সতরঞ্চি পেতে মাঝখানে সামান্য উচ্চতার একটা টেবিল রেখে জাপানি কায়দায় পরিবেশিত হলো মিশরীয় খাবার। কে জানে মরু অঞ্চলের পরিবেশন রীতিও জাপানিদের মতো কিনা! পরিবেশন পদ্ধতি যাই হোক, খিচুড়ির মতো হলদে রঙের ভাত, গ্রিলড চিকেন, আধা সেদ্ধ আলুর তৈরি সবজি এবং টমেটো শশার সালাদের মধ্যে উঁকি দেওয়া ধনেপাতা দেখে মনে হলো বিলম্বিত লাঞ্চটা নেহায়েত মন্দ হবে না। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই দর্শনধারী দ্বিপ্রাহরিক আহার দেখতে যেমনই হোক, খেতে ততোটা সুস্বাদু মনে হয়নি। তবুও বিরানভূমিতে আমাদের প্রাণ রক্ষার আয়োজনের জন্যে কাতরানি ক্যাম্প ধন্যবাদ পেতেই পারে। 

আমরা যখন লাঞ্চ শুরু করেছি, ঘড়িতে তখন পৌনে পাঁচটা বাজে। অর্থাৎ এরা দেড় ঘণ্টা না হলেও সময় নিয়েছে সোয়া ঘণ্টা। কায়রোর পথে এগিয়ে আসার আধা ঘণ্টা এই পনের মিনিটের সাথে যোগ করলে আমাদের লভ্যাংশে আছে পুরো পঁয়তাল্লিশ মিনিট। তবে সবচেয়ে বড় লাভ কাতরানির এই বেদুঈন ক্যাম্প। তিউনিসের আল মালাকে লাঞ্চ করে কায়রো ফিরে গেলে মরু প্রকৃতির মাঝখানে এই অসামান্য সৌন্দর্যের আবাসভূমি অদেখাই থেকে যেত। লাঞ্চ শেষে আমরা যখন গাড়িতে উঠতে যাচ্ছি তখন চারিদিকে সন্ধ্যা নেমে এসেছে।  হঠাৎ করেই মাথার উপরে ঝরে পড়ল কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি। মোহামেদ সাদেক বলল, ‘এখানে প্রায় কখনোই বৃষ্টি হয় না। তোমরা নেহায়েত ভাগ্যবান!’ 

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad

আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার

ছবি: সংগৃহীত

আর মাত্র ২৪ ঘন্টার অপেক্ষা তারপর আগামীকাল রোববার (২৪ নভেম্বর) সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত হবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) মেগা নিলাম। তবে সেই নিলামের আগেই বড় দুঃসংবাদ পেলেন ভারতীয় দুই ক্রিকেটার মানীশ পান্ডে ও সৃজিত কৃষ্ণ। সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের কারণে নিষিদ্ধ হয়েছেন তারা।এছাড়াও সন্দেহজনকের তালিকায় রাখা হয়েছে আরও তিনজন ক্রিকেটার।

নিষিদ্ধ হওয়া দুই ক্রিকেটার হলেন- মনীশ পান্ডে এবং সৃজিত কৃষ্ণ। দুজনই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এবং আইপিএলে পরিচিত মুখ। যদিও তারা ব্যাটার হিসেবে খেলতে পারবেন, তবু এই নিষেধাজ্ঞা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে।

এছাড়া সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের তালিকায় থাকা অন্যরা হলেন- দীপক হুদা, সৌরভ দুবে এবং কেসি কারিয়াপ্পা। যদিও এই ৫ ক্রিকেটারের কাউকেই দল রিটেইন করেনি। তবে নিলাম থেকে তাদের দল পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বিসিসিআইয়ের এমন খবর জানার পর দলগুলো তাদের দলে ভেড়াতে নিশ্চয় ভাববে।

আইপিএলের মতো বড় টুর্নামেন্টে এমন বিষয়গুলো খেলোয়াড়দের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশন সংশোধন করা হলে তারা আবার ফিরে আসতে পারবেন। তবে দলগুলোর দৃষ্টিকোণ থেকে, এই নিষেধাজ্ঞা এবং সন্দেহ তাদের নিলামে প্রাধান্য হারানোর কারণ হতে পারে।

এদিকে, গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ভারতীয় বোর্ড জানিয়েছে, আগামী বছর আইপিএল শুরু ১৪ মার্চ থেকে। জানিয়ে দেয়া হয়েছে ফাইনালের দিনও। আসন্ন আইপিএলের ফাইনাল হবে ২৫ মে। শুধু আগামী বছরের নয়, ২০২৭ পর্যন্ত আইপিএলের শুরু এবং ফাইনালের দিন জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।

Header Ad

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)।

জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা জরুরি বিভাগে যাচ্ছি।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি