বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪

ওয়াদি এল হিতামের সরাইখানা থেকে বেরিয়ে আমরা গাড়িতে উঠতে যাব এই সময় রানা ভাই বললেন, ‘দাঁড়ান, মরু বেদুঈনের সাজ পোশাকে একটা ছবি তুলে নিই। আমি ভাবছিলাম এই ধু ধু মরুভূমিতে কোথায় বেদুঈনের পোশাক আর কোথায়ই বা পোশাক বদলের মেকআপ রুম! জোব্বার ব্যবস্থা না হলেও বাসুনি মুহূর্তের মধ্যে রানা ভাইয়ের মাথায় পাগড়ি পরিয়ে দিলে আমি পটাপট বেশ কয়েকটা ছবি তুলে ল্যান্ডক্রুজারে উঠে বসলাম। এবারের গন্তব্য ম্যাজিক লেক। আবার ব্যাগ-পাইপে নাগিনের বাজনা বাজিয়ে এঁকেবেঁকে বালির সমুদ্রে চালক তার বাহন ছুটিয়ে এগোচ্ছে। এবারে মুহূর্তেই ঊর্ধ্বলোক থেকে ঝাঁকুনি দিয়ে নিচে নামিয়ে আনার কসরত না থাকায় গাড়ির ভেতরে মুড়ি মশলা মাখানোর মতো যথেষ্ট ঝাঁকাঝাঁকি থাকলেও হাড়হাড্ডি ভাঙার আশঙ্কা ছিল না। কিন্তু বাসুনি তার এই আপাত ভালোমানুষির আড়ালে আসল শয়তানির চেহারাটা লুকিয়ে রেখেছিল। ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ মিনিট ধরে দুপাশে অসংখ্য দৃষ্টি নন্দন বালির ভাস্কর্য পেছনে ফেলে মরু সমুদ্র পেরিয়ে আমরা এগোতে থাকি। হঠাৎ করেই দুপাশের বালির পাহাড়গুলো আকারে ছোট হতে হতে একসময় সমতল ভূমিতে মিলিয়ে গেল। যতদূর চোখ যায় বালুময় প্রান্তর বিস্তৃত হতে হতে দিগন্তে মিলিয়ে গেছে। বাঁ দিকে তাকালে মনে হয়ে বহুদূরে চিকচিক করছে জলের আভাস। হয়তো মরীচিকা কিংবা সত্যিই কোনো জলের উৎসের দিকে যাচ্ছি আমরা। বাসুনি বামে না ঘুরিয়ে ডান দিকে গাড়ি ঘোরালে চোখে পড়ে বালির বাঁধ খাড়া পাহাড়ের উপরের দিকে উঠে গেছে। এই বাঁধের ওপারে কী আছে তখনো তা অজানা।

মোহামেদ সাদেক বলল, ‘সিটবেল্ট বাধা না থাকলে বেঁধে নাও আর শক্ত করে ধরে বসো।’
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘হোয়াট ইজ গোয়িং টু হ্যাপেন?’
‘উই আর গোয়িং টু ক্লায়িম্ব দ্য স্যান্ড হিল!’
‘ওহ মাই গড! তুমি বরং পাহাড়ে ওঠার আগে আমাকে নামিয়ে দাও।’
রানা ভাই বললেন,‘আমিও নামতে চাই, তবে ছবি তোলার জন্য।’
হেনার ভয় ডর একটু কম, সে গাড়ি থেকে নামতে রাজি নয়। রানা ভাইয়ের মতো আমিও বললাম, ‘খাড়া পাহাড়ে ওঠার দৃশ্যটা ভিডিওতে ধরে রাখার জন্যে নেমে যাওয়াও ভালো।’ আমি আর রানা ভাই নেমে যাবার পরে ডেজার্ট ডেভিল বাসুনি তার ল্যান্ডক্রুজার নিয়ে অনায়াসে খাড়া পাহাড়ে উঠে গেল। আমি অবাক হয়ে হা করে দৃশ্যটা দেখতে দেখতে ক্যামেরার শাটার টিপতেই ভুলে গেলাম।

মোহামেদ সাদেক ও রানা ভাই

মোহামেদ সাদেক ও রানা ভাই

বাঁধের উপর থেকে সাদেক চিৎকার করে বলল, ‘তোমরা নিচেই থাকো, আমরা তোমাদের তুলে নিতে আসছি।’ গাড়িটা যখন নিচে নামছে তখন আর ভুল হলো না। এবারে নেমে আসার দৃশ্যটা ভিডিওতে ধারণ করে গাড়িতে উঠে বসলাম। আবারও গাড়ি খাড়া পাড় বেয়ে সোজা উপরে উঠে গেল। না এবারে আর তেমন ভয় পাইনি। বাঁধের মতো বালির পাহাড়ের অপরিসর চূড়ায় উঠে গাড়ি থামলে আমরা নেমে গেলাম। খাড়া পাড় বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত হয়ে ক্রমশ নিচের দিকে নেমে গেছে। এখন অনেক দূরে তাকালে সত্যিই জলাভূমি দেখা যায়, চোখে পড়ে জলের ছোঁয়ায় প্রাণ পাওয়া লতাগুল্মের ঝোপঝাড়।

খাড়া পাড় বেয়ে নামছে ল্যান্ডক্রুজার

খাড়া পাড় বেয়ে নামছে ল্যান্ডক্রুজার

আমাদের উপস্থিতির সাড়া পেয়ে নিচে থেকে কয়েকজন কিশোর দূর থেকে ছুটে আসতে থাকে। মরুভূমির তপ্ত বালু পায়ে মাড়িয়ে শিগগিরই তারা খাড়া পাড় বেয়ে উপরে উঠে আসে। তাদের সবারই হাতে ঝুলছে ছোট ছোট পাথর দিয়ে গাঁথা মালা। তারা আমাদের ঘিরে ধরে আরবি ভাষায় যে নিবেদন করে তাতে আমার মনে হয় চারজন কিশোর প্রায় একই সুরে কোরআন থেকে কোনো আয়াত উচ্চারণ করছে। না, তারা একেবারেই বিরক্ত করেনি, কেবল সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে তাদের প্রোডাক্ট সেল করার চেষ্টা করেছে। মালা না কিনলেও ওদের একেবারে নিরাশ করেননি রানা ভাই। দুই একজনের আপত্তি সত্ত্বেও সবার হাতে ইজিপ্টশিয়ান পাউন্ডের ছোট একটা করে নোট ধরিয়ে দিয়েছেন।

আমি মুগ্ধ চোখে সামনে পেছনে ঘুরে দেখছি। নিচে দুপাড়ের বালুচরের মাঝখানে খালের মতো এঁকেবেঁকে যে ভূখণ্ড বহুদূর চলে গেছে সেখানে জন্ম নিয়েছে গুচ্ছ গুচ্ছ জলজ উদ্ভিদ। কালচে সবুজ শ্যাওলা, জলাভূমির ঘাসের মতো গাছপালা লতাগুল্মের এক অপূর্ব দৃশ্যপট প্রকৃতি নিজের হাতে সাজিয়ে দিয়েছে ধূসর মরুর প্রান্তর জুড়ে। অপসির বালির পাহাড়ের মাথায় ছড়িয়ে আছে নানা ধরনের পাথরের টুকরো। হেনা পাথরের টুকরো হাতে তুলে নিয়ে কাছে থেকে দেখে আবার ছড়িয়ে দিচ্ছে। রানা ভাই কিশোর ফেরিয়ালাদের সাথে কোন ভাষায় কথা বলে গল্প জমিয়েছেন আল্লা মালুম। তবে এই সুন্দর পাহাড় চূড়ার অবস্থান দীর্ঘ হলো না। বাসুনি বালি পাহাড়ের অপ্রশস্ত শীর্ষে তার গাড়ি চালিয়ে নিয়ে এলো পথের শেষ প্রান্তে। এখানে নেমে যাবার পরে মরুভূমির রূপ দেখে আরও একবার বলতে হলো, ‘আহ কী সুন্দর!’

ম্যাজিক লেকের কিশোর ফেরিওয়ালা

ম্যাজিক লেকের কিশোর ফেরিওয়ালা

আল ফাইয়ুমের ওয়াদি এল হিতামের মরূদ্যানে এই অসামান্য জলাধার বছরের বিভিন্ন সময়ে সূর্যের আলোর তারতম্যের সাথে সাথে রঙ বদলায়। সেই কারণেই এই হ্রদের নাম ম্যাজিক লেক।

মোহামেদ সাদেক আগেই বলেছিল, মিশরের সবচেয়ে সুন্দর হ্রদগুলোর মধ্যেও সম্ভবত সবচেয়ে সুন্দর এই ম্যাজিক লেক। নিজের চোখে না দেখলে সেই সৌন্দর্য উপলব্ধি করা কখনোই সম্ভব নয়। চারিদিকে বাদামি বালির টিলা দিয়ে ঘেরা নীল স্বচ্ছ জলের এই সরোবর শুধু চোখে দেখেই যে প্রশান্তি জাগে তার কোনো তুলনা নেই। আর যদি টলটলে পানিতে নেমে সাঁতার কেটে আসা যেত! আঁকাবাঁকা প্রায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই হ্রদে সাঁতার কাটতে কোনো মানা নেই। লেকের পাড়ে বাধা রঙিন নৌকা দেখে বোঝায় যায় ভ্রমণবিলাসী পর্যটকের জন্যে এখানে নৌবহারের ব্যবস্থা করেই রাখা হয়েছে।

দু’পাশে চরভূমি মাঝে প্রবহমান সবুজ

দু’পাশে চরভূমি মাঝে প্রবহমান সবুজ

উড়িষ্যার তপ্তপানি প্রসবনের মতো ম্যাজিক লেকের পানিতে বিভিন্ন খনিজের উপস্থিতির ফলে আর্থারাইটিসের ব্যথা উপশমে বেশ কাজ করে বলে মনে করা হয়। আমাদের সবারই যে বয়স, তাতে প্রায় প্রত্যেকেই আর্থারাইটিসের ব্যথা সয়ে পাহাড়-সাগর-মরুর বাধা অতিক্রম করে চলেছি। সময় থাকলে সত্যিই ঝাঁপ দিয়ে পড়তাম ম্যাজিক লেকের পানিতে। সাদেক আরও একটা লোভনীয় তথ্য দিলে আমার মনে হলো এই একদিনের মরু অভিযান নেহায়েতই বুড়ি ছুঁয়ে যাবার মতো। সাদেকের ভাষ্য অনুসারে ম্যাজিক লেকের সূর্যাস্ত পৃথিবীর সুন্দরতম সূর্যাস্তগুলোর মধ্যে অন্যতম। সূর্য অস্ত যাবার পরে লেকের পাড়ে তাঁবু টানিয়ে ক্যাম্প করে থাকার ব্যবস্থা আছে, খাবার জন্যে বার-বি-কিউ এবং এরপর নিঃসীম বালির সমুদ্রে শুয়ে আকাশের গ্রহ নক্ষত্র দেখেই নির্ঘুম সারারাত কাটিয়ে দেওয়া যায়। আমাদের সৌভাগ্যের সীমানা ততটা সম্প্রসারিত নয় বলে এই অসামান্য হ্রদের পাড়ে তাঁবুতে রাত্রিবাসের কোনো সুযোগ কখনো হবে না, আর কখনোই ফিরে আসা হবে না ওয়াদি এল হিতামের ম্যাজিক লেকে। কিন্তু নিজের চোখে যেটুকু দেখেছি তাই বা কম কিসে! আমরা সমুদ্রের বালুকা বেলায় পায়ের ছাপ ফেলে হেঁটে যাই, এখানে মরু পাহাড়ের বালির বিছানায় আমরা আমাদের পদচিহ্ন রেখে গেলাম।

ম্যাজিক লেকের একাংশ

ম্যাজিক লেকের একাংশ

দুপুর হয়ে আসছে, কিন্তু এই বিরান প্রান্তরে দুপুরের খাবার জুটবে কোথায়! আমাদের ভাবনাটা বোধ হয় পড়ে ফেলেছিল অভিজ্ঞ ট্যুর গাইড মোহামেদ সাদেক। গাড়ি চলতে শুরু করলে সে জানাল আমরা ওয়াদি এল রায়ানের ওয়াটার ফলস হয়ে কুমারদের গ্রাম তিউনিসে লাঞ্চ করব। ওয়াটার ফলস মানে জলপ্রপাত! এই আদিগন্ত ছড়িয়ে থাকা মরুভূমিতে গভীর হ্রদ এবং অগভীর জলাধারসহ জলযোগের ব্যবস্থা তো কম দেখলাম না। কিন্তু সত্যিকারের জলপ্রপাত!

আরও মিনিট কুড়ি পরে আমরা যেখানে গাড়ি থেকে নেমে গেলাম সেখানে চারিদিকের রুক্ষ প্রকৃতির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কিছু খেজুর গাছ। বাঁ দিকের পার্কিংয়ে ছোট বড় অনেকগুলো গাড়ি দেখে বোঝা যায় এখানে টুরিস্ট সমাগম নেহায়েত কম নয়। পার্কিংলটের পাশেই বেশ কিছু উট এবং তাদের মালিক শুয়ে বসে অলস সময় কাটাচ্ছে। মোহামেদ সাদেককে অনুসরণ করে রানা ভাই লম্বা পা ফেলে আগে চলে গেলে আমি একটু পিছিয়ে পড়েছিলাম। পুরো এলাকায় বাঁধানো চত্বরের ডান দিকে গোটা কয়েক রেস্তোরাঁ, বাঁ দিকে একটা মসজিদ। মসজিদের ওপারে আরও একটি খিলান গম্বুজওয়ালা ভবন, সম্ভবত নিরাপত্তাবাহিনী দপ্তর। ভবনের মাথায় অনেকগুলো গম্বুজের সবগুলোতেই ছোট ছোট খোপ কাটা দেখে মনে হয় কবুতরের বাসা। ঘরগুলোর দেয়াল থেকে গম্বুজ সবকিছুই দেখে মনে হয় মাটির তৈরি আর কবুতরের খোপগুলো আসলে প্রকৃতিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা।

ওয়াদি এল রায়ান ফলসের পথে

ওয়াদি এল রায়ান ফলসের পথে

মাটির মসজিদের মাথায় এখানেও আজান প্রচারের জন্য দুদিকে মুখ করে দুটি মাইক বাধা। সামনেই মাটি, কাঠ, খেজুর পাতা এবং বাঁশ-বেত-কাপড়ের তৈরি স্যুভেনিয়ার সাজিয়ে বসেছে স্থানীয় চারু ও কারুশিল্পীরা। অবাক লাগল, নানা ধরনের ঝুড়ি, ব্যাগ, টুপি, মালা, ফুলদানির পাশাপাশি হাতি, ঘোড়া, উট ছাড়াও মানুষের প্রতিরূপ পুতুলও সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

ওয়াদি এল রায়ান মসজিদ

ওয়াদি এল রায়ান মসজিদ

সৃষ্টিশীল লোকজ শিল্পীর কাজে বাধা দেওয়ার কেউ না থাকতে পারে, কিন্তু মসজিদের সামনে মূর্তির পশরা সাজিয়ে বসা হয়তো অ্যারাব রিপাবলিক অব ইজিপ্টের মতো দেশেই সম্ভব। ওয়াদি এল রায়ান উপত্যকার ১৭৬০ বর্গ কিলোমিটারের বিস্তৃত এলাকার একশ তেরো বর্গ কিলোমিটার জলাধার। নীল নদের চল্লিশ কিলোমিটার পশ্চিমে এই জলপ্রপাত। আসলে রায়ান এলাকার মরূদ্যানে ফসল ফলাবার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে যে সেচ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল তারই প্রত্যক্ষ প্রভাবে সৃষ্টি হয়েছে এই জলপ্রপাত। নীল নদ থেকে আপার লেক এবং লোয়ার লেক নামে দুই স্তরের যে দীর্ঘ খাল খনন করা হয়েছিল তারই উপরের স্তরের পানি নেমে এসেছে ওয়াদি এল রায়ানে। প্রপাতের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টি মেলে দিলে চোখে পড়ে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত খাল। এটিই সেচ প্রকল্পের প্রধান সংরক্ষিত জলের রিজার্ভার। এর পানিতে শুধু জমির ফসল নয়, জলপ্রপাত এবং ঝরনাগুলোর আশেপাশে বড় বড় টিলার নিম্নাঞ্চলে জন্মায় বহুবর্ষজীবী নানা উদ্ভিদ।

এখানে জলাভূমি ঘিরে তেরো প্রজাতির পাখির বসবাস। এ ছাড়া প্রতি বছর প্রায় পঁচিশ ধরনের পরিযায়ী পাখি রায়ানের জলাধারগুলো মুখর করে তোলে। সরু শিংওয়ালা হরিণের মতো বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীসহ আরও বারোটি বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় হারিয়ে যাওয়া প্রাণীর শেষ বংশধরেরাও এই মরূদ্যানে নিশ্চিন্ত তাদের জায়গা করে নিয়েছে।

রায়ান জলপ্রপাত

রায়ান জলপ্রপাত

মিশরের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাতের সামনে দাঁড়িয়ে অবিরাম ধারায় ঝরতে থাকা পানির প্রবাহ নিজের চোখে দেখার আগে আমার বিশ্বাসই হতে চায়নি এখানে সত্যিই কোনো ওয়াটার ফলসের অস্তিত্ব আছে! আমাদের দেখা পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশের বড় বড় ওয়াটার ফলসের সাথে তুলনায় রায়ানের এই ক্ষুদ্র জলপ্রপাতটি হয়তো কিছুই নয়। তবুও উপরের স্তর থেকে ঝরে পড়া পানি সরু খালের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ঊষর বালু মাটিতে ফসলের সম্ভাবনা জাগিয়ে বয়ে চলেছে অনেক দূরে। তাই বিস্মিত পর্যটকের দল রায়ান ফলস ঘিরে দাঁড়িয়ে তাদের উচ্ছ্বাস এবং বিস্ময় প্রকাশ করে চলেছেন। তাদের কথায় চাপা পড়ে গেছে রায়ানের বিরতিহীন ঝরে পড়া জলের শব্দ। আমরা কিছুক্ষণ জলপ্রপাতের কাছে দাঁড়িয়ে ফিরে চললাম। চত্বরের বাইরে একসারি খেজুর গাছের ছায়ায় বাসুনি তার ল্যান্ডক্রুজার নিয়ে অপেক্ষা করছে।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>> 

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

এসজি/ 

Header Ad
Header Ad

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯

ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় মদপানের ফলে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আরও ৯ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুই যুবকের মৃত্যু হয়। এর আগে, ঈদের সন্ধ্যায় তারা মদপান করেন এবং রাতের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মৃতদের মধ্যে রয়েছেন আশাশুনি উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের জাফর আলী খাঁর ছেলে জাকির হোসেন টিটু (৪০) ও সোহরাব গাজীর ছেলে নাজমুল গাজী (২৬)।

এ ঘটনায় অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাহ্মণ তেতুলিয়া গ্রামের সাইদ সরদারের ছেলে ফারুক হোসেন, মোকামখালী গ্রামের কুদ্দুস সরদারের ছেলে ইমরান, মিত্র তেতুলিয়ার মর্জিনা খাতুনের ছেলে ইকবাল, কামরুলের ছেলে লিফটন, আজিবার সরদারের ছেলে রবিউল, শহীদ গাজীর ছেলে তুহিন, আনিসের ছেলে নাজমুলসহ আরও কয়েকজন।

গুরুতর অসুস্থদের মধ্যে ফারুক হোসেনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইমরানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঈদের দিন সন্ধ্যায় আশাশুনির তেতুলিয়া শ্মশানঘাট মাঠে বসে জাকির হোসেন টিটু, নাজমুল গাজীসহ মোট ১১ জন একসঙ্গে মদপান করেন। মদপানের পর তারা বাড়ি ফিরে যান এবং ঘুমিয়ে পড়েন।

এরপর রাত ১২টার দিকে একে একে সবাই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাকির হোসেন টিটু ও নাজমুল গাজী মারা যান। বাকি ৯ জনের চিকিৎসা চলছে।

আশাশুনি থানার ডিউটি অফিসার এসআই ফিরোজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যু অন্য কোনো কারণে হয়েছে কিনা, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।"

নিহতদের মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান, চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের অস্ত্র সংগ্রহ নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়।

এই পদক্ষেপকে ইরানের ওপর আরও চাপ সৃষ্টির একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে বলেছিলেন, নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হলে দেশটির ওপর বোমা হামলা চালানো বা নতুন শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও বিচার বিভাগ যৌথভাবে জানিয়েছে, ইরানের ড্রোন কর্মসূচির অন্যতম প্রধান নির্মাতার জন্য মানববিহীন এয়ার ভেহিকল (ইউএভি)–এর উপকরণ সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি সংস্থা ও দুই ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, "ইরান তাদের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়াসহ তাদের প্রক্সিদের সরবরাহ করছে। রুশ বাহিনী এগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, যা বেসামরিক নাগরিক, মার্কিন বাহিনী ও মিত্রদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা ইরানের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স এবং তাদের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রচলিত অস্ত্রের বিস্তার ব্যাহত করতে কাজ চালিয়ে যাব।"

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে একটি ইরান-ভিত্তিক সংস্থা, দুইজন ইরানি নাগরিক, একটি চীন-ভিত্তিক সংস্থা এবং চারটি সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক সংস্থা।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

Header Ad
Header Ad

বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের দোসররা বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, "পরাজিত শক্তি নিউইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। তারা এই অবৈধ টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করতে চায়।"

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, "শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের নামে একটি নাটক সাজিয়ে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন। এটি মূলত ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল। এমনকি একজন সাবেক আইজিপির বইয়েও এটি উঠে এসেছে।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটেনি। বরং বর্তমানে দেশে ফ্যাসিবাদের কোনো ছোবল নেই, মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্মপালন করতে পারছে, কথা বলতে পারছে। এবার মানুষ নির্ভয়ে ঈদ উদযাপন করেছে, যা অতীতে সম্ভব হয়নি।"

আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, "আওয়ামী লীগ বসে নেই, তারা কালো টাকা ব্যবহার করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তারা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।"

তিনি আরও বলেন, "শেখ হাসিনার নির্দেশে মুগ্ধ ফাইয়াজদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই। প্রশাসনের চারপাশে আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে, যার ফলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।"

রিজভী আহমেদ দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, "নির্বাচনী সরকারই হচ্ছে বৈধ সরকার। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হবে।"

তিনি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯
ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী
দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের ঘটনা ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আখাউড়ায় ট্রেনের ছাদে টিকটক বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনা, নিহত ২
বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের
বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২