রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪

ওয়াদি এল হিতামের সরাইখানা থেকে বেরিয়ে আমরা গাড়িতে উঠতে যাব এই সময় রানা ভাই বললেন, ‘দাঁড়ান, মরু বেদুঈনের সাজ পোশাকে একটা ছবি তুলে নিই। আমি ভাবছিলাম এই ধু ধু মরুভূমিতে কোথায় বেদুঈনের পোশাক আর কোথায়ই বা পোশাক বদলের মেকআপ রুম! জোব্বার ব্যবস্থা না হলেও বাসুনি মুহূর্তের মধ্যে রানা ভাইয়ের মাথায় পাগড়ি পরিয়ে দিলে আমি পটাপট বেশ কয়েকটা ছবি তুলে ল্যান্ডক্রুজারে উঠে বসলাম। এবারের গন্তব্য ম্যাজিক লেক। আবার ব্যাগ-পাইপে নাগিনের বাজনা বাজিয়ে এঁকেবেঁকে বালির সমুদ্রে চালক তার বাহন ছুটিয়ে এগোচ্ছে। এবারে মুহূর্তেই ঊর্ধ্বলোক থেকে ঝাঁকুনি দিয়ে নিচে নামিয়ে আনার কসরত না থাকায় গাড়ির ভেতরে মুড়ি মশলা মাখানোর মতো যথেষ্ট ঝাঁকাঝাঁকি থাকলেও হাড়হাড্ডি ভাঙার আশঙ্কা ছিল না। কিন্তু বাসুনি তার এই আপাত ভালোমানুষির আড়ালে আসল শয়তানির চেহারাটা লুকিয়ে রেখেছিল। ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ মিনিট ধরে দুপাশে অসংখ্য দৃষ্টি নন্দন বালির ভাস্কর্য পেছনে ফেলে মরু সমুদ্র পেরিয়ে আমরা এগোতে থাকি। হঠাৎ করেই দুপাশের বালির পাহাড়গুলো আকারে ছোট হতে হতে একসময় সমতল ভূমিতে মিলিয়ে গেল। যতদূর চোখ যায় বালুময় প্রান্তর বিস্তৃত হতে হতে দিগন্তে মিলিয়ে গেছে। বাঁ দিকে তাকালে মনে হয়ে বহুদূরে চিকচিক করছে জলের আভাস। হয়তো মরীচিকা কিংবা সত্যিই কোনো জলের উৎসের দিকে যাচ্ছি আমরা। বাসুনি বামে না ঘুরিয়ে ডান দিকে গাড়ি ঘোরালে চোখে পড়ে বালির বাঁধ খাড়া পাহাড়ের উপরের দিকে উঠে গেছে। এই বাঁধের ওপারে কী আছে তখনো তা অজানা।

মোহামেদ সাদেক বলল, ‘সিটবেল্ট বাধা না থাকলে বেঁধে নাও আর শক্ত করে ধরে বসো।’
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘হোয়াট ইজ গোয়িং টু হ্যাপেন?’
‘উই আর গোয়িং টু ক্লায়িম্ব দ্য স্যান্ড হিল!’
‘ওহ মাই গড! তুমি বরং পাহাড়ে ওঠার আগে আমাকে নামিয়ে দাও।’
রানা ভাই বললেন,‘আমিও নামতে চাই, তবে ছবি তোলার জন্য।’
হেনার ভয় ডর একটু কম, সে গাড়ি থেকে নামতে রাজি নয়। রানা ভাইয়ের মতো আমিও বললাম, ‘খাড়া পাহাড়ে ওঠার দৃশ্যটা ভিডিওতে ধরে রাখার জন্যে নেমে যাওয়াও ভালো।’ আমি আর রানা ভাই নেমে যাবার পরে ডেজার্ট ডেভিল বাসুনি তার ল্যান্ডক্রুজার নিয়ে অনায়াসে খাড়া পাহাড়ে উঠে গেল। আমি অবাক হয়ে হা করে দৃশ্যটা দেখতে দেখতে ক্যামেরার শাটার টিপতেই ভুলে গেলাম।

মোহামেদ সাদেক ও রানা ভাই

মোহামেদ সাদেক ও রানা ভাই

বাঁধের উপর থেকে সাদেক চিৎকার করে বলল, ‘তোমরা নিচেই থাকো, আমরা তোমাদের তুলে নিতে আসছি।’ গাড়িটা যখন নিচে নামছে তখন আর ভুল হলো না। এবারে নেমে আসার দৃশ্যটা ভিডিওতে ধারণ করে গাড়িতে উঠে বসলাম। আবারও গাড়ি খাড়া পাড় বেয়ে সোজা উপরে উঠে গেল। না এবারে আর তেমন ভয় পাইনি। বাঁধের মতো বালির পাহাড়ের অপরিসর চূড়ায় উঠে গাড়ি থামলে আমরা নেমে গেলাম। খাড়া পাড় বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত হয়ে ক্রমশ নিচের দিকে নেমে গেছে। এখন অনেক দূরে তাকালে সত্যিই জলাভূমি দেখা যায়, চোখে পড়ে জলের ছোঁয়ায় প্রাণ পাওয়া লতাগুল্মের ঝোপঝাড়।

খাড়া পাড় বেয়ে নামছে ল্যান্ডক্রুজার

খাড়া পাড় বেয়ে নামছে ল্যান্ডক্রুজার

আমাদের উপস্থিতির সাড়া পেয়ে নিচে থেকে কয়েকজন কিশোর দূর থেকে ছুটে আসতে থাকে। মরুভূমির তপ্ত বালু পায়ে মাড়িয়ে শিগগিরই তারা খাড়া পাড় বেয়ে উপরে উঠে আসে। তাদের সবারই হাতে ঝুলছে ছোট ছোট পাথর দিয়ে গাঁথা মালা। তারা আমাদের ঘিরে ধরে আরবি ভাষায় যে নিবেদন করে তাতে আমার মনে হয় চারজন কিশোর প্রায় একই সুরে কোরআন থেকে কোনো আয়াত উচ্চারণ করছে। না, তারা একেবারেই বিরক্ত করেনি, কেবল সম্ভাব্য ক্রেতার কাছে তাদের প্রোডাক্ট সেল করার চেষ্টা করেছে। মালা না কিনলেও ওদের একেবারে নিরাশ করেননি রানা ভাই। দুই একজনের আপত্তি সত্ত্বেও সবার হাতে ইজিপ্টশিয়ান পাউন্ডের ছোট একটা করে নোট ধরিয়ে দিয়েছেন।

আমি মুগ্ধ চোখে সামনে পেছনে ঘুরে দেখছি। নিচে দুপাড়ের বালুচরের মাঝখানে খালের মতো এঁকেবেঁকে যে ভূখণ্ড বহুদূর চলে গেছে সেখানে জন্ম নিয়েছে গুচ্ছ গুচ্ছ জলজ উদ্ভিদ। কালচে সবুজ শ্যাওলা, জলাভূমির ঘাসের মতো গাছপালা লতাগুল্মের এক অপূর্ব দৃশ্যপট প্রকৃতি নিজের হাতে সাজিয়ে দিয়েছে ধূসর মরুর প্রান্তর জুড়ে। অপসির বালির পাহাড়ের মাথায় ছড়িয়ে আছে নানা ধরনের পাথরের টুকরো। হেনা পাথরের টুকরো হাতে তুলে নিয়ে কাছে থেকে দেখে আবার ছড়িয়ে দিচ্ছে। রানা ভাই কিশোর ফেরিয়ালাদের সাথে কোন ভাষায় কথা বলে গল্প জমিয়েছেন আল্লা মালুম। তবে এই সুন্দর পাহাড় চূড়ার অবস্থান দীর্ঘ হলো না। বাসুনি বালি পাহাড়ের অপ্রশস্ত শীর্ষে তার গাড়ি চালিয়ে নিয়ে এলো পথের শেষ প্রান্তে। এখানে নেমে যাবার পরে মরুভূমির রূপ দেখে আরও একবার বলতে হলো, ‘আহ কী সুন্দর!’

ম্যাজিক লেকের কিশোর ফেরিওয়ালা

ম্যাজিক লেকের কিশোর ফেরিওয়ালা

আল ফাইয়ুমের ওয়াদি এল হিতামের মরূদ্যানে এই অসামান্য জলাধার বছরের বিভিন্ন সময়ে সূর্যের আলোর তারতম্যের সাথে সাথে রঙ বদলায়। সেই কারণেই এই হ্রদের নাম ম্যাজিক লেক।

মোহামেদ সাদেক আগেই বলেছিল, মিশরের সবচেয়ে সুন্দর হ্রদগুলোর মধ্যেও সম্ভবত সবচেয়ে সুন্দর এই ম্যাজিক লেক। নিজের চোখে না দেখলে সেই সৌন্দর্য উপলব্ধি করা কখনোই সম্ভব নয়। চারিদিকে বাদামি বালির টিলা দিয়ে ঘেরা নীল স্বচ্ছ জলের এই সরোবর শুধু চোখে দেখেই যে প্রশান্তি জাগে তার কোনো তুলনা নেই। আর যদি টলটলে পানিতে নেমে সাঁতার কেটে আসা যেত! আঁকাবাঁকা প্রায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই হ্রদে সাঁতার কাটতে কোনো মানা নেই। লেকের পাড়ে বাধা রঙিন নৌকা দেখে বোঝায় যায় ভ্রমণবিলাসী পর্যটকের জন্যে এখানে নৌবহারের ব্যবস্থা করেই রাখা হয়েছে।

দু’পাশে চরভূমি মাঝে প্রবহমান সবুজ

দু’পাশে চরভূমি মাঝে প্রবহমান সবুজ

উড়িষ্যার তপ্তপানি প্রসবনের মতো ম্যাজিক লেকের পানিতে বিভিন্ন খনিজের উপস্থিতির ফলে আর্থারাইটিসের ব্যথা উপশমে বেশ কাজ করে বলে মনে করা হয়। আমাদের সবারই যে বয়স, তাতে প্রায় প্রত্যেকেই আর্থারাইটিসের ব্যথা সয়ে পাহাড়-সাগর-মরুর বাধা অতিক্রম করে চলেছি। সময় থাকলে সত্যিই ঝাঁপ দিয়ে পড়তাম ম্যাজিক লেকের পানিতে। সাদেক আরও একটা লোভনীয় তথ্য দিলে আমার মনে হলো এই একদিনের মরু অভিযান নেহায়েতই বুড়ি ছুঁয়ে যাবার মতো। সাদেকের ভাষ্য অনুসারে ম্যাজিক লেকের সূর্যাস্ত পৃথিবীর সুন্দরতম সূর্যাস্তগুলোর মধ্যে অন্যতম। সূর্য অস্ত যাবার পরে লেকের পাড়ে তাঁবু টানিয়ে ক্যাম্প করে থাকার ব্যবস্থা আছে, খাবার জন্যে বার-বি-কিউ এবং এরপর নিঃসীম বালির সমুদ্রে শুয়ে আকাশের গ্রহ নক্ষত্র দেখেই নির্ঘুম সারারাত কাটিয়ে দেওয়া যায়। আমাদের সৌভাগ্যের সীমানা ততটা সম্প্রসারিত নয় বলে এই অসামান্য হ্রদের পাড়ে তাঁবুতে রাত্রিবাসের কোনো সুযোগ কখনো হবে না, আর কখনোই ফিরে আসা হবে না ওয়াদি এল হিতামের ম্যাজিক লেকে। কিন্তু নিজের চোখে যেটুকু দেখেছি তাই বা কম কিসে! আমরা সমুদ্রের বালুকা বেলায় পায়ের ছাপ ফেলে হেঁটে যাই, এখানে মরু পাহাড়ের বালির বিছানায় আমরা আমাদের পদচিহ্ন রেখে গেলাম।

ম্যাজিক লেকের একাংশ

ম্যাজিক লেকের একাংশ

দুপুর হয়ে আসছে, কিন্তু এই বিরান প্রান্তরে দুপুরের খাবার জুটবে কোথায়! আমাদের ভাবনাটা বোধ হয় পড়ে ফেলেছিল অভিজ্ঞ ট্যুর গাইড মোহামেদ সাদেক। গাড়ি চলতে শুরু করলে সে জানাল আমরা ওয়াদি এল রায়ানের ওয়াটার ফলস হয়ে কুমারদের গ্রাম তিউনিসে লাঞ্চ করব। ওয়াটার ফলস মানে জলপ্রপাত! এই আদিগন্ত ছড়িয়ে থাকা মরুভূমিতে গভীর হ্রদ এবং অগভীর জলাধারসহ জলযোগের ব্যবস্থা তো কম দেখলাম না। কিন্তু সত্যিকারের জলপ্রপাত!

আরও মিনিট কুড়ি পরে আমরা যেখানে গাড়ি থেকে নেমে গেলাম সেখানে চারিদিকের রুক্ষ প্রকৃতির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কিছু খেজুর গাছ। বাঁ দিকের পার্কিংয়ে ছোট বড় অনেকগুলো গাড়ি দেখে বোঝা যায় এখানে টুরিস্ট সমাগম নেহায়েত কম নয়। পার্কিংলটের পাশেই বেশ কিছু উট এবং তাদের মালিক শুয়ে বসে অলস সময় কাটাচ্ছে। মোহামেদ সাদেককে অনুসরণ করে রানা ভাই লম্বা পা ফেলে আগে চলে গেলে আমি একটু পিছিয়ে পড়েছিলাম। পুরো এলাকায় বাঁধানো চত্বরের ডান দিকে গোটা কয়েক রেস্তোরাঁ, বাঁ দিকে একটা মসজিদ। মসজিদের ওপারে আরও একটি খিলান গম্বুজওয়ালা ভবন, সম্ভবত নিরাপত্তাবাহিনী দপ্তর। ভবনের মাথায় অনেকগুলো গম্বুজের সবগুলোতেই ছোট ছোট খোপ কাটা দেখে মনে হয় কবুতরের বাসা। ঘরগুলোর দেয়াল থেকে গম্বুজ সবকিছুই দেখে মনে হয় মাটির তৈরি আর কবুতরের খোপগুলো আসলে প্রকৃতিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা।

ওয়াদি এল রায়ান ফলসের পথে

ওয়াদি এল রায়ান ফলসের পথে

মাটির মসজিদের মাথায় এখানেও আজান প্রচারের জন্য দুদিকে মুখ করে দুটি মাইক বাধা। সামনেই মাটি, কাঠ, খেজুর পাতা এবং বাঁশ-বেত-কাপড়ের তৈরি স্যুভেনিয়ার সাজিয়ে বসেছে স্থানীয় চারু ও কারুশিল্পীরা। অবাক লাগল, নানা ধরনের ঝুড়ি, ব্যাগ, টুপি, মালা, ফুলদানির পাশাপাশি হাতি, ঘোড়া, উট ছাড়াও মানুষের প্রতিরূপ পুতুলও সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

ওয়াদি এল রায়ান মসজিদ

ওয়াদি এল রায়ান মসজিদ

সৃষ্টিশীল লোকজ শিল্পীর কাজে বাধা দেওয়ার কেউ না থাকতে পারে, কিন্তু মসজিদের সামনে মূর্তির পশরা সাজিয়ে বসা হয়তো অ্যারাব রিপাবলিক অব ইজিপ্টের মতো দেশেই সম্ভব। ওয়াদি এল রায়ান উপত্যকার ১৭৬০ বর্গ কিলোমিটারের বিস্তৃত এলাকার একশ তেরো বর্গ কিলোমিটার জলাধার। নীল নদের চল্লিশ কিলোমিটার পশ্চিমে এই জলপ্রপাত। আসলে রায়ান এলাকার মরূদ্যানে ফসল ফলাবার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে যে সেচ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল তারই প্রত্যক্ষ প্রভাবে সৃষ্টি হয়েছে এই জলপ্রপাত। নীল নদ থেকে আপার লেক এবং লোয়ার লেক নামে দুই স্তরের যে দীর্ঘ খাল খনন করা হয়েছিল তারই উপরের স্তরের পানি নেমে এসেছে ওয়াদি এল রায়ানে। প্রপাতের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টি মেলে দিলে চোখে পড়ে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত খাল। এটিই সেচ প্রকল্পের প্রধান সংরক্ষিত জলের রিজার্ভার। এর পানিতে শুধু জমির ফসল নয়, জলপ্রপাত এবং ঝরনাগুলোর আশেপাশে বড় বড় টিলার নিম্নাঞ্চলে জন্মায় বহুবর্ষজীবী নানা উদ্ভিদ।

এখানে জলাভূমি ঘিরে তেরো প্রজাতির পাখির বসবাস। এ ছাড়া প্রতি বছর প্রায় পঁচিশ ধরনের পরিযায়ী পাখি রায়ানের জলাধারগুলো মুখর করে তোলে। সরু শিংওয়ালা হরিণের মতো বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীসহ আরও বারোটি বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় হারিয়ে যাওয়া প্রাণীর শেষ বংশধরেরাও এই মরূদ্যানে নিশ্চিন্ত তাদের জায়গা করে নিয়েছে।

রায়ান জলপ্রপাত

রায়ান জলপ্রপাত

মিশরের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাতের সামনে দাঁড়িয়ে অবিরাম ধারায় ঝরতে থাকা পানির প্রবাহ নিজের চোখে দেখার আগে আমার বিশ্বাসই হতে চায়নি এখানে সত্যিই কোনো ওয়াটার ফলসের অস্তিত্ব আছে! আমাদের দেখা পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশের বড় বড় ওয়াটার ফলসের সাথে তুলনায় রায়ানের এই ক্ষুদ্র জলপ্রপাতটি হয়তো কিছুই নয়। তবুও উপরের স্তর থেকে ঝরে পড়া পানি সরু খালের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ঊষর বালু মাটিতে ফসলের সম্ভাবনা জাগিয়ে বয়ে চলেছে অনেক দূরে। তাই বিস্মিত পর্যটকের দল রায়ান ফলস ঘিরে দাঁড়িয়ে তাদের উচ্ছ্বাস এবং বিস্ময় প্রকাশ করে চলেছেন। তাদের কথায় চাপা পড়ে গেছে রায়ানের বিরতিহীন ঝরে পড়া জলের শব্দ। আমরা কিছুক্ষণ জলপ্রপাতের কাছে দাঁড়িয়ে ফিরে চললাম। চত্বরের বাইরে একসারি খেজুর গাছের ছায়ায় বাসুনি তার ল্যান্ডক্রুজার নিয়ে অপেক্ষা করছে।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>> 

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

এসজি/ 

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর পৌর এলাকার কাইতকাই রূপালী ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ধনবাড়ী উপজেলা পৌর এলাকার চরভাতকুড়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে সিএনজি চালা হেলাল উদ্দিন (৫৫)। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সিএনজি যাত্রী ছিলেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক এ বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাতে দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজি ধনবাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজির চালক ঘটনা স্থলে মারা যান। এ সময় গুরুতর আহত হয় এক যাত্রী।

এরপর তাকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে তিনি মারা যায়।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক জানান, নিহত সিএনজি চালকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে, অজ্ঞাত ওই যাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি, শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

Header Ad
Header Ad

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র হজ ফ্লাইট শুরু আগামী মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল)। ওই দিন ৪১৯ জন সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। হজের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

চলতি বছর ৮৭ হাজার ১০০ জন পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন হজযাত্রী সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮১ হাজার ৯০০ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন।

প্রথম ফ্লাইটটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। হজ ব্যবস্থাপনাকে নির্বিঘ্ন করতে সরকারি পর্যায়ে ১১২ জন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১ হাজার ৭৪৩ জন গাইড দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি ৭০ জন মোয়াল্লেম হজযাত্রীদের সার্বিক সহায়তা করবেন।

হজযাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ তিনটি এয়ারলাইনস। ৩১ মে পর্যন্ত হজের ফ্লাইট চলবে। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন এবং শেষ হবে ১০ জুলাই।

পবিত্র হজ উপলক্ষে এ বছর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালনা করবে ১১৮টি, সাউদিয়া ৮০টি এবং নাস এয়ারলাইনস ৩৪টি ফ্লাইট।

হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা, যা ৯ জিলহজ মসজিদে নামিরা থেকে প্রদান করা হয়। এবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে হজের খুতবা, এবং তাৎক্ষণিক অনুবাদ করা হবে ২০টি ভাষায়। 

যেসব ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করা হবে সেগুলো হলো- বাংলা, ফরাসি (ফ্রেঞ্চ), মালয়, উর্দু, ফারসি, চাইনিজ, তুর্কি, রাশিয়ান, হাউসা, ইংরেজি, সুইডিশ, স্প্যানিশ, সোয়াহিলি, আমহারিক, ইতালিয়ান, পর্তুগিজ, বসনিয়ান, মালায়লাম, ফিলিপিনো এবং জার্মান। 

উল্লেখ্য, ১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ৫ জুন) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহিদ রাজিতে ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন। আহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে হরমুজগান প্রদেশের রাজধানী বন্দর আব্বাসের কাছে অবস্থিত এই বন্দরে ঘটে বিপর্যয়টি।

ইরানের জরুরি সেবাবিভাগের মুখপাত্র বাবাক ইয়াকতেপেরেস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার তৎপরতা চলছে, তবে বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মুখপাত্র হোসেন জাফারি জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে নাশকতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বার্তাসংস্থা আইএলএনএ-কে জানান, একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থ থেকেই এই বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয়। তিনি বলেন, “বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তবে সেগুলোতে কান না দিয়ে সরকারি তথ্যের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।”

সরকারি বার্তাসংস্থা ফার্স নিউজ জানিয়েছে, ছোট পরিসরে আগুন লাগার পর তা দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত গরম এবং পরিবেশে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুনের তীব্রতা দ্রুত বেড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শক্তি এতটাই প্রবল ছিল যে ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনারগুলোর মধ্যে সালফারজাতীয় রাসায়নিক থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যদিও কনটেইনারগুলোর সুনির্দিষ্ট উপাদান এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

সরকারি বার্তাসংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, শহিদ রাজি বন্দরটি ইরানের সবচেয়ে আধুনিক সামুদ্রিক বন্দরগুলোর একটি। এটি হরমুজ প্রণালির উত্তরে, বন্দর আব্বাস থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এই প্রণালি দিয়েই বিশ্বের মোট উৎপাদিত তেলের পাঁচ ভাগের এক ভাগ পরিবহন করা হয়, ফলে এ বন্দরের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২
হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার