মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: শেষ পর্ব

বিষাদ বসুধা

শুক্রবার মোহিনী দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন। ছুটির দিন। অফিসে যাওয়ার তাড়া নেই। এই দিনটিতে অন্য কোনো কাজও তিনি রাখেন না। টানা ছয়দিন অফিস করার পর শুক্রবার দিনই বিশ্রামের মুডে থাকে। সকাল নটা দশটা পর্যন্ত ঘুমান। ঘুম ভাঙলে তিনি বিছানায় শুয়ে শুয়েই পত্রিকা পড়েন।

এতে তার আরো এক ঘণ্টা সময় চলে যায়। তারপর তিনি বিছানা ছেড়ে গোসলে যান। মন চাইলে নাশতা করেন। তা না হলে এককাপ র চা। কিংবা একটি ফল খান। এতেই তার দুপুর পর্যন্ত কেটে যায়।

মোহিনীর এই রুটিন রহিমাবিবি ভালো করেই জানে। দশটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে সে পত্রিকা নিয়ে মোহিনীর কক্ষে ঢোকে। মোহিনীর বিছানার পাশে রাখে। যাতে হাত বাড়ালেই পত্রিকাটা পায়। মোহিনী বিছানা না ছাড়া পর্যন্ত তার কক্ষের সামনে এসে ঘুরঘুর করে। বিছানা থেকে ওঠা মাত্র সে তার অনুমতি নিয়ে নাশতা তৈরি করে। খাবার নষ্ট করা মোহিনী একদম পছন্দ করেন না। তার কারণে তো নয়ই, অন্য কেউ নষ্ট করলেও তিনি মন খারাপ করেন। এ কারণে বাসার সবাই খুব সতর্ক থাকে।

ঠিক দশটার দিকে মোহিনীর ঘুম ভাঙে। চোখ মেলে দেখে তার মাথার পাশেই ডেইলি স্টার পত্রিকা। তিনি চিৎ হয়ে শুয়ে দুই হাত দিয়ে পত্রিকাটা চোখের সামনে ধরেন। হঠাৎ একটি হেডলাইনের ওপর তার চোখ আটকে যায়। করোনায় নারী নির্যাতন ও দাম্পত্য কলহ বেড়েছে।

মোহিনী খবরটি পড়তে শুরু করেন। তাতে লেখা আছে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দাম্পত্য কলহে ছাড়াছাড়ির ঘটনা দুই তিন গুণ বেশি। এর কারণ হিসেবে সমাজ বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেছেন, পুরুষরা ঘরে থাকতে অভ্যস্ত নয়। করোনার কারণে তারা বাধ্য হয়ে ঘরে থাকছে। এতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়াঝাটির ঘটনা বেশি ঘটছে।

খবরটি পড়তে পড়তে মোহিনী ভাবেন, তার মানে পারিবারিক সংকট সৃষ্টির কারণও করোনা! প্রতিটি ঘরে ঘরে তার নেতিবাচক প্রভাব রেখে যাচ্ছে! একদিকে মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। আরেকদিকে পারিবারিক কলহ বাড়ছে। বাড়ছে দুঃখ কষ্ট। এ কারণেই পত্রিকা পড়তে ইচ্ছা করে না। নেতিবাচক খবরগুলো আমাকে সারাক্ষণ পীড়া দিতে থাকে। মাথার চারদিক থেকে চাপ তৈরি করে। সারাদিন এই ভাবনা থেকে বের হতে পারি না।

মোহিনী পত্রিকাটা হাতে নিয়ে মা মা করে ডাকেন। তিনি নিজের কক্ষ থেকে আনোয়ারা বেগমের কক্ষে যান। তাকে পত্রিকার খবর দেখিয়ে বলেন, দেখেছ মা! এই দেখ। কী ভয়াবহ খবর।

আনোয়ারা বেগম একবার পত্রিকার দিকে তাকান; আরেকবার মোহিনীর দিকে। তারপর বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বলেন, কী হয়েছে মোহিনী?
করোনা তো প্রতিটি ঘরে ঘরে সংকট তৈরি করছে!
কী রকম?
এই দেখ না! এখানে একটি জরিপ রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, স্বাভাবিকের তুলনায় করোনাকালীন দাম্পত্য কলহ দুই তিন গুণ বেড়েছে।
বলিস কী! খুব বাজে ব্যাপার তো!
হুম। সত্যিই বলেছ। আসলে আমরা কোথায় যাচ্ছি! আমাদের দেশ কোথায় যাচ্ছে? একটা ভাইরাস সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে! অর্থনীতির চাকা উল্টো দিকে ঘোরাচ্ছে। এরমধ্যেই চাকরি হারিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। পারিবারিক কলহের এটাও কিন্তু একটা বড় কারণ!
তা তো অবশ্যই। আনোয়ারা বেগম বললেন।

মোহিনী আবার বললেন, কত মানুষ যে দরিদ্র হয় তা আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। সবাই ভাবছিল ঈদেও পর আর থাকবে না। অথচ এখনো প্রতিদিন গড়ে চল্লিশ পঞ্চাশ জন করে মারা যাচ্ছে। বেশি বিপদে আছে বয়স্ক লোকরা। আর যাদের ঠাণ্ডা সমস্যা, শ্বাসকষ্ট তারা বেশি ভয়ের মধ্যে আছে। তারা করোনায় আক্রান্ত হলে আর রক্ষা নেই। নাহ; খবরটা দেখে মনটাই খারাপ হয়ে গেল!

মন খারাপ করে আর কী করবি বল! সারাবিশ্বের পরিস্থিতিই এক! এমন এক সংকট যার ওপর মানুষের কোনো হাত নেই। কেবল বিধাতা যদি মানুষকে রক্ষা করেন।
আনোয়ারা বেগমের কথায় সায় দিলেন মোহিনী। কিন্তু তিনি কোনো কথা বললেন না। আনোয়ারা বেগম পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য প্রসঙ্গ পাল্টালেন। তিনি মোহিনীকে উদ্দেশ করে বললেন, আচ্ছা শোন, তুই নাশতা করেছিস?
না মা। সবে তো উঠলাম।
নাশতা কর। তারপর তোর সঙ্গে কিছু কথা আছে।
কি কথা মা?
আগে নাশতা করে আয়; তারপর বলছি। তোর বাবাও কথা বলবে।
তাই নাকি! বাবা কোথায়?
ড্রয়িং রুমে। কে যেন এসেছে। কথা বলছে।
তোমরা নাশতা করেছ তো?
হুম। অনেক আগে।
আমি তো এখনো মুখও ধুইনি।
আচ্ছা যা। হাতমুখ ধুইয়ে নাশতা করে আয়।
ঠিক আছে। আগে যখন বলবে না, তখন নাশতা করেই আসছি।
আনোয়ারা বেগম মুসকি হাসলেন। মোহিনী নিজের কক্ষে যান। পত্রিকাটা রেখে বাথরুমে ঢোকেন। দাঁত ব্রাশ করেন। হাতমুখ ধুয়ে নাশতার টেবিলে বসে রহিমাবিবিকে ডাকেন। রহিমা, রহিমা...

রহিমা ছুটে আসে মোহিনীর কাছে। এসেই বিব্রত ভঙ্গিতে বলে, ও আপা মনি! আপনে উইঠ্যা গেছেন! আপনের জন্য তো নাশতা বানাই নায়। আপনে কন নায় বইলা..
মোহিনী স্বভাব সুলভ ভঙ্গিতে বললেন, কি আছে বল তো?
পরোটা মাংস খাইবেন? সবজিও আছে। পুডিং ফিন্নিও আছে। যেইডা ইচ্ছা হেইডাই খাইতে পারেন।
পরোটা মাংস অল্প করে দে। আর একটু পুডিং দে। কে বানাইছে পুডিং?
রহিমাবিবি মুসকি হেসে বলে, আমি।
আচ্ছা। তোর পুডিং তো ভালোই হয়। দে দে।

রহিমা বিবি আর দেরি করে না। সে ত্বরিত গতিতে গরম পরোটা, মাংস, সবজি আর পুডিং টেবিলে দেয়। মোহিনী খাওয়া শুরু করেন। অনেকদিন পর তিনি সকাল বেলা ভারি খাবার খাচ্ছেন। বেশ মজা পাচ্ছেন তিনি। অনেকদিন পর খাওয়ার মজা অনুভব করছেন। একটিমাত্র পরোটা খেয়েই তার পেট ভরে যায়। পুডিং খাবেন কী খাবেন না তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। তারপর তিনি এক চামচ পুডিং মুখে দেন। পুডিংটুকু তার খাওয়াটাকে যেন পূর্ণতা দিয়েছে।
এরমধ্যেই কফি নিয়ে হাজির হয় রহিমাবিবি। মোহিনী তাকে বললেন, কফি মা’র রুমে দাও। মা কি খাবে জিজ্ঞাসা কর। চা না কফি?
রহিমাবিবি আনোয়ারা বেগমের রুমে মোহিনীর কফির মগ রেখে বলল, খালাম্মা আপনে কী খাইবেন? চা না কফি?
তোর আপা কফি খাচ্ছে?
জে।
আমাকে চা-ই দে।
জে আইচ্ছা।
রহিমা শোন, তোর খালু কই?
সামনের ঘরে। একটা লোক আইছে না! তার লগে কতা কইতেছে।
আচ্ছা। যা আমার চা নিয়ে আয়।
রহিমা বিবি চলে যায়। মোহিনী আনোয়ারা বেগমের কক্ষে এসেই বললেন, মা তুমি কি পরোটা মাংস খেয়েছ?
না রে! আমি একটু সবজি আর একটা রুটি খেয়েছি। তুই খেয়েছিস বুঝি!
হ্যাঁ মা। অনেক দিন পর খুব মজা করে খেলাম। তুমি পুডিং খাওনি?
না।
খুব মজা হয়েছে। খেতে পারো। আনতে বলব?
আচ্ছা।
মোহিনী দরাজ গলায় রহিমাবিবিকে ডাকে। রহিমা রহিমা.. মা’র জন্য পুডিং নিয়ে এসো!
রহিমাবিবি চা নিয়ে মাঝপথেই ছিল। সে মোহিনীর কথা ভালোভাবেই শুনতে পেয়েছে। চায়ের কাপ দিতে দিতে সে বলল, আমি পুডিং নিয়া আইতেছি।
মোহিনী কফিতে চুমুক দিয়ে মগটা টি-টেবিলের ওপর রাখলেন। তারপর বললেন, কী বলবে বলো না মা!

আনোয়ারা বেগম ইশারায় রহিমাবিবিকে দেখিয়ে নীরব রইলেন। মোহিনী ভালো করেই জানে, রহিমাবিবির সামনে কোনো কথা বললে তা দুই মিনিটে রাষ্ট্র হয়ে যাবে। সে খুবই পেট-পাতলা মানুষ। কোনো কথা পেটে রাখতে পারে না। ভালোমন্দ বোঝে না। কারও কাছে কোনো কথা শুনলে তা অন্যকে না বলা পর্যন্ত তার পেটের ভাত হজম হয় না। তাই মোহিনীও নীরব রইলেন।
এরমধ্যেই মোহসীন আহমেদ রুমে আসে হাজির হলেন। তিনি সোফায় বসতে বসতে বললেন, রফিকুজ্জামান সাহেব এসেছিলেন।
মোহিনী বললেন, কোন রফিকুজ্জামান বাবা?
প্রীতম গ্রুপের চেয়ারম্যান।
ও আচ্ছা। কি ব্যাপার বাবা?
উনি একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন।

এ সময় রহিমাবিবি চা নিয়ে ঢুকলে মোহসীন আহমেদ আর কিছু বললেন না। তিনি রহিমাবিবিকে চা দিতে বললেন। রহিমাবিবি চলে যাওয়ার পর তিনি আবার শুর করলেন। তিনি বললেন, উনি ওনার ছেলের জন্য তোকে বউ করে নিতে চান। তুই চিনিস নাকি ছেলেটাকে? ছেলেটা নাকি অসম্ভব ভালো!
মোহিনী মাথা নেড়ে না সূচক জবাব দেন। তারপর বলেন, আমার কখনো পরিচয় হয়নি। আর আমি তো তেমন কোথাও যাইও না। পরিচয় হবে কি করে?
হুম। তাও ঠিক।
আবার রহিমাবিবি চা নিয়ে ঢুকল। মোহসীন আহমেদ চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বললেন, তুই যাওয়ার সময় দরজাটা চাপিয়ে দিস কেমন?
রহিমাবিবি ঘাড় নেড়ে বলল, জে।

রহিমাবিবি চলে যাওয়ার পর আনোয়ারা বেগম বললেন, রফিকুজ্জামান সাহেবের ছেলে আগে বিয়ে করেনি?
না। কেন করেনি তাও ঠিক পরিষ্কার না।
মোহিনী ধীরস্থির ভঙ্গিতে বললেন, বাবা আবার কেন বিয়ে! থাক না। আমি তো ভালোই আছি। বিয়েটিয়ে আর ভালো লাগে না।
কেন মা? জীবনে একজন সঙ্গীও তো লাগে! আমরা আর কতদিনই বা বাঁচব?
মা, যে কেউ যে কোনো সময় চলে যেতে পারে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ব্যবসা আর সামাজিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকব। নতুন করে আর সংসার হবে না আমাকে দিয়ে!
মোহসীন আহমেদ বললেন, তারপরও তুই চিন্তা করে দেখ। সময় নে। আমি এখনই তোকে সিদ্ধান্ত দিতে বলব না। আরও ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নে।
আনোয়ারা বেগমও তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বললেন, হ্যাঁ সেটাই। তাড়াহুড়ার কিছু নেই।
মোহিনী মাথা নিচু করে বসে রইলেন। কিছুক্ষণ কেউ কোনো কথাই বললেন না।

মোহিনী অনেক চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, তিনি আর বিয়ে করবেন না। কথাটা তিনি তার মা বাবাকে জানিয়ে দিলেন। এ কথা জানার পর মোহসীন আহমেদ ও আনোয়ারা বেগম ভাবনায় পড়ে গেলেন। তাদের মনে নানা প্রশ্ন দানা বাঁধে। মোহিনী বিয়ে না করলে এই পরিবারে তৃতীয় প্রজন্ম বলে কিছু থাকবে না! মাই গড! এতো সম্পদ রেখে যাবো কার জন্য? কে ভোগ করবে? কে দেখাশুনা করবে?

সবকিছু কেমন এলোমেলো লাগে মোহসীন আহমেদের কাছে। তিনি আর কিছুই ভাবতে পারছেন না। মোহিনীকে বিয়ে দেওয়া যেন তার একমাত্র ধ্যানজ্ঞান হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিদিনই সকাল কিংবা রাতে খাওয়ার টেবিলে মোহিনীর কানে কথাটা তোলেন। একেবারে লেগে থাকা যাকে বলে। আনোয়ারা বেগমও মরিয়া হয়ে ওঠেন মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য। তাদের কর্মকাণ্ড কখনো কখনো পাগলের পর্যায়ে গিয়ে পৌছে।
মোহিনীও চতুর কম নন। তিনি নানা কৌশলে মা বাবার মনে কষ্ট না দিয়ে বিয়ের প্রসঙ্গটি দূরে রাখেন। মা বাবা যখন ওর বিয়ের প্রসঙ্গ তোলেন তখন তিনি শুনেও না শোনার ভান করেন। তিনি হাসি ঠাট্টার মধ্যদিয়ে বিষয়টি উড়িয়ে দেন। কখনো কখনো বলেন, এই বয়সে বিয়ে করে কী হবে? ছেলে পছন্দ হয় না। অনেকেই আবার অর্থের লোভে তাকে বিয়ে করতে চায়! সেটা কি ঠিক হবে? এসব বলে মোহিনী সময় পার করেন। এতে মোহসীন আহমেদ ও আনোয়ারা বেগম বিরক্তিবোধ করেন। তারপরও তারা ধৈর্য ধরেন। মেয়েকে বোঝানোর চেষ্টা করেন।

একদিন অবশ্য মোহসীন আহমেদ একটু শক্তভাবেই মোহিনীকে বলেছেন যে, সাত দিনের মধ্যে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। তা না হলে তারা জোর করেই তাকে বিয়ে দেবেন। কানা, লুলা, বোবা ছেলে হলেও তারা তাকে মেয়ের জামাই করবেন।
মোহিনী হাসেন। তিনি জানেন তার বাবা সেটা কখনোই করবেন না। মুখে হাজার বললেও মেয়ের স্বাধীনতায় তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না। তবে তাদের চাপাচাপিতে একটি কাজ হয়েছে। তার মনের ভেতরে একটা প্রভাব পড়েছে। তিনি এখন বিয়ের বিষয়টি নিয়ে ভাবেন। প্রায়শ তিনি চিন্তা করেন। মা বাবা যেহেতু বলছেন, বিয়ে করাই যায়! অবশেষে মোহিনী জানালেন, করোনাকাল শেষ হলেই তিনি বিয়ে করবেন। তবে করোনার মধ্যে বিয়ের প্রসঙ্গ নিয়ে যাতে তারা আলোচনা না করেন সে বিষযটিও সতর্ক করে দিয়েছেন।

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩১

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩০

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৯

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

 

Header Ad

বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি কমাতে কাজ করেছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি কমাতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। সম্প্রতি বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বজ্র নিরোধক যন্ত্র স্থাপন করাসহ এ বিষয়ক ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তুলতে কার্যকর কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে বলেও জানািন তিনি।

সোমবার সচিবালয়ের নিজের অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরী মাসদুপুইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।

প্রতিমন্ত্রী জানান, বজ্র নিরোধক প্রযুক্তি সুলভ ও ব্যাপকভিত্তিক করতে গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে প্রযুক্তি বিনিময় ও হস্তান্তরে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

সাক্ষাতকালে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে বজ্রপাত প্রতিরোধে প্রযুক্তি জ্ঞান বিনিময় ছাড়াও যন্ত্র স্থাপন, বজ্রপাত নিরোধী অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রশিক্ষণ প্রদানে তার দেশ সহয়তা প্রদান করবে।

জমজ দুই বোনের চমক, এসএসসি পরীক্ষায় পেলো জিপিএ-৫

অর্পিতা সাহা অর্পা ও অর্মিতা সাহা অর্ণা। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

এসএসসি পরীক্ষায় অর্পিতা সাহা অর্পা ও অর্মিতা সাহা অর্ণা জমজ দুই বোন চমক দেখিয়েছেন। তারা উভয়ই জিপিএ-৫ পেয়েছে। গৌরবময় এমন সাফল্য অর্জন করায় ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিকিৎসক ও আরেকজন প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

অর্পা ও অর্ণা টাঙ্গাইল পৌর শহরের আদালত রোডস্থ ওয়ালটন প্লাজার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ম্যানেজার অনুপ কুমার সাহা ও গৃহিনী সুম্মিতা ঘোষ দম্পতির জমজ দুই কন্যা সন্তান। টাঙ্গাইলের ড্যাফোডিল ইন্টার ন্যাশনাল স্কুল থেকে ওই দুইবোন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন এবং তারা একসাথেই বিন্দুবাসিনী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছিল।

 

অর্পিতা সাহা অর্পা ও অর্মিতা সাহা অর্ণা। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

গত রবিবার ১২ মে ফলাফলে দেখা যায়, জিপিএ -৫ প্রাপ্তের মধ্যে অর্পার প্রাপ্ত নম্বর- ১ হাজার ১২৩ আর অর্ণার প্রাপ্ত নম্বর-১ হাজার ১১৪। জমজ দুই বোন বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী।

অর্পিতা সাহা অর্পা জানায়, ভবিষ্যতে সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন চিকিৎসক হতে চায়। দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকার স্বপ্ন দেখছে সে। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলের আর্শিবাদ কামনা করেছে সে।

অর্মিতা সাহা অর্ণা জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে সে। স্বপ্ন পূরণে সকলের আর্শিবাদ কামনা করেছে অর্ণা।

জমজ দুই কন্যার বাবা অনুপ কুমার সাহা বলেন, আমি চাই আমার মেয়েরা মানুষের মত মানুষ যেন হয়। তাদের স্বপ্ন ও আশা পূরণে আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। তারা যেন দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত রাখতে পারে এটিই আমার প্রত্যাশা।

স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য আবাসন : গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন শহরে নিম্ন আয়ের বিশেষ করে বস্তিবাসীদের জন্য আবাসন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

সোমবার (১৩মে) সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী’র সভাপতিত্বে সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিববৃন্দ, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সিদ্দিকুর রহমানসহ মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক গণপূর্তমন্ত্রী নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি ও তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে তিনি পরিবেশ সুরক্ষা, প্রয়োজনীয় বনায়ণ, উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণ, খেলার মাঠ, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন, সৌরশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার, পোড়ামাটির ইটের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহার, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং এর ব্যবস্থা, সারফেস ওয়াটার ব্যবহারের সর্বোচ্চ সুযোগ রাখার পরামর্শ প্রদান করেন।

প্রাথমিকভাবে তিনি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় টঙ্গীর দত্তপাড়ায় তিনটি পর্যায়ে ১০০টি বহুতল ভবনে ১২৬০০টি ফ্ল্যাট নির্মাণের যে প্রস্তাবনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তা দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা দেন। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ১৭টি ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবনে ২১৪২টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। ২য় পর্যায়ে ৪৭টি ভবনে ৫৯২২টি ও তৃতীয় পর্যায়ে ৩৬টি ভবনে ৫৪৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মন্ত্রী রাজধানীর করাইল বস্তি ও টি এন্ড টি কলোনীর বস্তিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও গণপূর্ত অধিদপ্তরকে পৃথক পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন। ৭৫০ বর্গফুট গ্রস আয়তনের এসব ফ্ল্যাটের অভিন্ন ডিজাইন প্রণয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি প্রধান স্থপতিকে মৌখিক নির্দেশনা দেন।

রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য শহরেও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে পর্যায়ক্রমে এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য যে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন উত্তরা আবাসন প্রকল্পে (তৃতীয় পর্যায়) নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসনের জন্য ১০ একর জমি নির্দিষ্ট রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে উক্ত জমিতে নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসনের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির জন্য মন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপশি বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার অর্থায়নও সম্ভব হলে গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জনান।

ইতোমধ্যে রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ বস্তিবাসীদের জন্য ৫৩৩টি ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছে। এসব ফ্ল্যাটে তারা স্বাচ্ছন্দের সাথে বসবাস করছে। এছারা সিরাজগঞ্জের কোবদাস পাড়ায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের স্বল্প আয়ের মানুষের উন্নত জীবন ব্যবস্থা শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার নদী ভাঙ্গন কবলিত, ভূমিহীন বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। পরবর্তী প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এসব প্রকল্পের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্য মন্ত্রী পরামর্শ দেন। সেই সাথে সরকারের এসব জনহিতকর কার্যক্রম সম্পর্কে সর্বসাধারণের মাঝে ইতিবাচক প্রচারের জন্য তিনি পরামর্শ দেন।

সর্বশেষ সংবাদ

বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি কমাতে কাজ করেছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
জমজ দুই বোনের চমক, এসএসসি পরীক্ষায় পেলো জিপিএ-৫
স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য আবাসন : গণপূর্ত মন্ত্রণালয়
নওগাঁয় মেয়াদ পুর্ণ হওয়ার পরও গ্রাহকদের টাকা দিচ্ছে না প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স
চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১৬ মে থেকে আম সংগ্রহ শুরু
২৩ নাবিকসহ কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে এমভি আবদুল্লাহ
মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু
ঢাকাসহ ৭ বিভাগে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস
বিভাজন থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসা উচিত : মির্জা ফখরুল
ভোটারকে থাপ্পড় মারায় এমপির গালে ভোটারের পাল্টা থাপ্পড়, ভিডিও ভাইরাল
শিশু জায়েদকে মামার জিম্মায় দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
কেউ পাস করেনি বিরামপুরের খয়েরবাড়ী মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসায়
বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় অর্ধশতাধিক মার্কিন অধ্যাপক গ্রেপ্তার
প্রেম করলে শরীর ও মন ভালো থাকে: মন্দিরা
এবার একীভূত হলো সোনালী ব্যাংক-বিডিবিএল
১৩ শিক্ষকের বিদ্যালয়ে ১৪ পরীক্ষার্থীর সবাই ফেল, প্রধান শিক্ষককে শোকজ
ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠিন সিদ্ধান্ত মিসরের
নিজের রেকর্ড ভেঙে ২৯ বার এভারেস্ট জিতলেন রিতা শেরপা
বাড়ি ফেরার পথে গরুবাহী ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন এক পুলিশ সদস্য
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ