শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: শেষ পর্ব

বিষাদ বসুধা

শুক্রবার মোহিনী দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন। ছুটির দিন। অফিসে যাওয়ার তাড়া নেই। এই দিনটিতে অন্য কোনো কাজও তিনি রাখেন না। টানা ছয়দিন অফিস করার পর শুক্রবার দিনই বিশ্রামের মুডে থাকে। সকাল নটা দশটা পর্যন্ত ঘুমান। ঘুম ভাঙলে তিনি বিছানায় শুয়ে শুয়েই পত্রিকা পড়েন।

এতে তার আরো এক ঘণ্টা সময় চলে যায়। তারপর তিনি বিছানা ছেড়ে গোসলে যান। মন চাইলে নাশতা করেন। তা না হলে এককাপ র চা। কিংবা একটি ফল খান। এতেই তার দুপুর পর্যন্ত কেটে যায়।

মোহিনীর এই রুটিন রহিমাবিবি ভালো করেই জানে। দশটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে সে পত্রিকা নিয়ে মোহিনীর কক্ষে ঢোকে। মোহিনীর বিছানার পাশে রাখে। যাতে হাত বাড়ালেই পত্রিকাটা পায়। মোহিনী বিছানা না ছাড়া পর্যন্ত তার কক্ষের সামনে এসে ঘুরঘুর করে। বিছানা থেকে ওঠা মাত্র সে তার অনুমতি নিয়ে নাশতা তৈরি করে। খাবার নষ্ট করা মোহিনী একদম পছন্দ করেন না। তার কারণে তো নয়ই, অন্য কেউ নষ্ট করলেও তিনি মন খারাপ করেন। এ কারণে বাসার সবাই খুব সতর্ক থাকে।

ঠিক দশটার দিকে মোহিনীর ঘুম ভাঙে। চোখ মেলে দেখে তার মাথার পাশেই ডেইলি স্টার পত্রিকা। তিনি চিৎ হয়ে শুয়ে দুই হাত দিয়ে পত্রিকাটা চোখের সামনে ধরেন। হঠাৎ একটি হেডলাইনের ওপর তার চোখ আটকে যায়। করোনায় নারী নির্যাতন ও দাম্পত্য কলহ বেড়েছে।

মোহিনী খবরটি পড়তে শুরু করেন। তাতে লেখা আছে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দাম্পত্য কলহে ছাড়াছাড়ির ঘটনা দুই তিন গুণ বেশি। এর কারণ হিসেবে সমাজ বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেছেন, পুরুষরা ঘরে থাকতে অভ্যস্ত নয়। করোনার কারণে তারা বাধ্য হয়ে ঘরে থাকছে। এতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ঝগড়াঝাটির ঘটনা বেশি ঘটছে।

খবরটি পড়তে পড়তে মোহিনী ভাবেন, তার মানে পারিবারিক সংকট সৃষ্টির কারণও করোনা! প্রতিটি ঘরে ঘরে তার নেতিবাচক প্রভাব রেখে যাচ্ছে! একদিকে মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। আরেকদিকে পারিবারিক কলহ বাড়ছে। বাড়ছে দুঃখ কষ্ট। এ কারণেই পত্রিকা পড়তে ইচ্ছা করে না। নেতিবাচক খবরগুলো আমাকে সারাক্ষণ পীড়া দিতে থাকে। মাথার চারদিক থেকে চাপ তৈরি করে। সারাদিন এই ভাবনা থেকে বের হতে পারি না।

মোহিনী পত্রিকাটা হাতে নিয়ে মা মা করে ডাকেন। তিনি নিজের কক্ষ থেকে আনোয়ারা বেগমের কক্ষে যান। তাকে পত্রিকার খবর দেখিয়ে বলেন, দেখেছ মা! এই দেখ। কী ভয়াবহ খবর।

আনোয়ারা বেগম একবার পত্রিকার দিকে তাকান; আরেকবার মোহিনীর দিকে। তারপর বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বলেন, কী হয়েছে মোহিনী?
করোনা তো প্রতিটি ঘরে ঘরে সংকট তৈরি করছে!
কী রকম?
এই দেখ না! এখানে একটি জরিপ রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, স্বাভাবিকের তুলনায় করোনাকালীন দাম্পত্য কলহ দুই তিন গুণ বেড়েছে।
বলিস কী! খুব বাজে ব্যাপার তো!
হুম। সত্যিই বলেছ। আসলে আমরা কোথায় যাচ্ছি! আমাদের দেশ কোথায় যাচ্ছে? একটা ভাইরাস সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে! অর্থনীতির চাকা উল্টো দিকে ঘোরাচ্ছে। এরমধ্যেই চাকরি হারিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। পারিবারিক কলহের এটাও কিন্তু একটা বড় কারণ!
তা তো অবশ্যই। আনোয়ারা বেগম বললেন।

মোহিনী আবার বললেন, কত মানুষ যে দরিদ্র হয় তা আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। সবাই ভাবছিল ঈদেও পর আর থাকবে না। অথচ এখনো প্রতিদিন গড়ে চল্লিশ পঞ্চাশ জন করে মারা যাচ্ছে। বেশি বিপদে আছে বয়স্ক লোকরা। আর যাদের ঠাণ্ডা সমস্যা, শ্বাসকষ্ট তারা বেশি ভয়ের মধ্যে আছে। তারা করোনায় আক্রান্ত হলে আর রক্ষা নেই। নাহ; খবরটা দেখে মনটাই খারাপ হয়ে গেল!

মন খারাপ করে আর কী করবি বল! সারাবিশ্বের পরিস্থিতিই এক! এমন এক সংকট যার ওপর মানুষের কোনো হাত নেই। কেবল বিধাতা যদি মানুষকে রক্ষা করেন।
আনোয়ারা বেগমের কথায় সায় দিলেন মোহিনী। কিন্তু তিনি কোনো কথা বললেন না। আনোয়ারা বেগম পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য প্রসঙ্গ পাল্টালেন। তিনি মোহিনীকে উদ্দেশ করে বললেন, আচ্ছা শোন, তুই নাশতা করেছিস?
না মা। সবে তো উঠলাম।
নাশতা কর। তারপর তোর সঙ্গে কিছু কথা আছে।
কি কথা মা?
আগে নাশতা করে আয়; তারপর বলছি। তোর বাবাও কথা বলবে।
তাই নাকি! বাবা কোথায়?
ড্রয়িং রুমে। কে যেন এসেছে। কথা বলছে।
তোমরা নাশতা করেছ তো?
হুম। অনেক আগে।
আমি তো এখনো মুখও ধুইনি।
আচ্ছা যা। হাতমুখ ধুইয়ে নাশতা করে আয়।
ঠিক আছে। আগে যখন বলবে না, তখন নাশতা করেই আসছি।
আনোয়ারা বেগম মুসকি হাসলেন। মোহিনী নিজের কক্ষে যান। পত্রিকাটা রেখে বাথরুমে ঢোকেন। দাঁত ব্রাশ করেন। হাতমুখ ধুয়ে নাশতার টেবিলে বসে রহিমাবিবিকে ডাকেন। রহিমা, রহিমা...

রহিমা ছুটে আসে মোহিনীর কাছে। এসেই বিব্রত ভঙ্গিতে বলে, ও আপা মনি! আপনে উইঠ্যা গেছেন! আপনের জন্য তো নাশতা বানাই নায়। আপনে কন নায় বইলা..
মোহিনী স্বভাব সুলভ ভঙ্গিতে বললেন, কি আছে বল তো?
পরোটা মাংস খাইবেন? সবজিও আছে। পুডিং ফিন্নিও আছে। যেইডা ইচ্ছা হেইডাই খাইতে পারেন।
পরোটা মাংস অল্প করে দে। আর একটু পুডিং দে। কে বানাইছে পুডিং?
রহিমাবিবি মুসকি হেসে বলে, আমি।
আচ্ছা। তোর পুডিং তো ভালোই হয়। দে দে।

রহিমা বিবি আর দেরি করে না। সে ত্বরিত গতিতে গরম পরোটা, মাংস, সবজি আর পুডিং টেবিলে দেয়। মোহিনী খাওয়া শুরু করেন। অনেকদিন পর তিনি সকাল বেলা ভারি খাবার খাচ্ছেন। বেশ মজা পাচ্ছেন তিনি। অনেকদিন পর খাওয়ার মজা অনুভব করছেন। একটিমাত্র পরোটা খেয়েই তার পেট ভরে যায়। পুডিং খাবেন কী খাবেন না তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। তারপর তিনি এক চামচ পুডিং মুখে দেন। পুডিংটুকু তার খাওয়াটাকে যেন পূর্ণতা দিয়েছে।
এরমধ্যেই কফি নিয়ে হাজির হয় রহিমাবিবি। মোহিনী তাকে বললেন, কফি মা’র রুমে দাও। মা কি খাবে জিজ্ঞাসা কর। চা না কফি?
রহিমাবিবি আনোয়ারা বেগমের রুমে মোহিনীর কফির মগ রেখে বলল, খালাম্মা আপনে কী খাইবেন? চা না কফি?
তোর আপা কফি খাচ্ছে?
জে।
আমাকে চা-ই দে।
জে আইচ্ছা।
রহিমা শোন, তোর খালু কই?
সামনের ঘরে। একটা লোক আইছে না! তার লগে কতা কইতেছে।
আচ্ছা। যা আমার চা নিয়ে আয়।
রহিমা বিবি চলে যায়। মোহিনী আনোয়ারা বেগমের কক্ষে এসেই বললেন, মা তুমি কি পরোটা মাংস খেয়েছ?
না রে! আমি একটু সবজি আর একটা রুটি খেয়েছি। তুই খেয়েছিস বুঝি!
হ্যাঁ মা। অনেক দিন পর খুব মজা করে খেলাম। তুমি পুডিং খাওনি?
না।
খুব মজা হয়েছে। খেতে পারো। আনতে বলব?
আচ্ছা।
মোহিনী দরাজ গলায় রহিমাবিবিকে ডাকে। রহিমা রহিমা.. মা’র জন্য পুডিং নিয়ে এসো!
রহিমাবিবি চা নিয়ে মাঝপথেই ছিল। সে মোহিনীর কথা ভালোভাবেই শুনতে পেয়েছে। চায়ের কাপ দিতে দিতে সে বলল, আমি পুডিং নিয়া আইতেছি।
মোহিনী কফিতে চুমুক দিয়ে মগটা টি-টেবিলের ওপর রাখলেন। তারপর বললেন, কী বলবে বলো না মা!

আনোয়ারা বেগম ইশারায় রহিমাবিবিকে দেখিয়ে নীরব রইলেন। মোহিনী ভালো করেই জানে, রহিমাবিবির সামনে কোনো কথা বললে তা দুই মিনিটে রাষ্ট্র হয়ে যাবে। সে খুবই পেট-পাতলা মানুষ। কোনো কথা পেটে রাখতে পারে না। ভালোমন্দ বোঝে না। কারও কাছে কোনো কথা শুনলে তা অন্যকে না বলা পর্যন্ত তার পেটের ভাত হজম হয় না। তাই মোহিনীও নীরব রইলেন।
এরমধ্যেই মোহসীন আহমেদ রুমে আসে হাজির হলেন। তিনি সোফায় বসতে বসতে বললেন, রফিকুজ্জামান সাহেব এসেছিলেন।
মোহিনী বললেন, কোন রফিকুজ্জামান বাবা?
প্রীতম গ্রুপের চেয়ারম্যান।
ও আচ্ছা। কি ব্যাপার বাবা?
উনি একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন।

এ সময় রহিমাবিবি চা নিয়ে ঢুকলে মোহসীন আহমেদ আর কিছু বললেন না। তিনি রহিমাবিবিকে চা দিতে বললেন। রহিমাবিবি চলে যাওয়ার পর তিনি আবার শুর করলেন। তিনি বললেন, উনি ওনার ছেলের জন্য তোকে বউ করে নিতে চান। তুই চিনিস নাকি ছেলেটাকে? ছেলেটা নাকি অসম্ভব ভালো!
মোহিনী মাথা নেড়ে না সূচক জবাব দেন। তারপর বলেন, আমার কখনো পরিচয় হয়নি। আর আমি তো তেমন কোথাও যাইও না। পরিচয় হবে কি করে?
হুম। তাও ঠিক।
আবার রহিমাবিবি চা নিয়ে ঢুকল। মোহসীন আহমেদ চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বললেন, তুই যাওয়ার সময় দরজাটা চাপিয়ে দিস কেমন?
রহিমাবিবি ঘাড় নেড়ে বলল, জে।

রহিমাবিবি চলে যাওয়ার পর আনোয়ারা বেগম বললেন, রফিকুজ্জামান সাহেবের ছেলে আগে বিয়ে করেনি?
না। কেন করেনি তাও ঠিক পরিষ্কার না।
মোহিনী ধীরস্থির ভঙ্গিতে বললেন, বাবা আবার কেন বিয়ে! থাক না। আমি তো ভালোই আছি। বিয়েটিয়ে আর ভালো লাগে না।
কেন মা? জীবনে একজন সঙ্গীও তো লাগে! আমরা আর কতদিনই বা বাঁচব?
মা, যে কেউ যে কোনো সময় চলে যেতে পারে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ব্যবসা আর সামাজিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকব। নতুন করে আর সংসার হবে না আমাকে দিয়ে!
মোহসীন আহমেদ বললেন, তারপরও তুই চিন্তা করে দেখ। সময় নে। আমি এখনই তোকে সিদ্ধান্ত দিতে বলব না। আরও ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নে।
আনোয়ারা বেগমও তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বললেন, হ্যাঁ সেটাই। তাড়াহুড়ার কিছু নেই।
মোহিনী মাথা নিচু করে বসে রইলেন। কিছুক্ষণ কেউ কোনো কথাই বললেন না।

মোহিনী অনেক চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিলেন যে, তিনি আর বিয়ে করবেন না। কথাটা তিনি তার মা বাবাকে জানিয়ে দিলেন। এ কথা জানার পর মোহসীন আহমেদ ও আনোয়ারা বেগম ভাবনায় পড়ে গেলেন। তাদের মনে নানা প্রশ্ন দানা বাঁধে। মোহিনী বিয়ে না করলে এই পরিবারে তৃতীয় প্রজন্ম বলে কিছু থাকবে না! মাই গড! এতো সম্পদ রেখে যাবো কার জন্য? কে ভোগ করবে? কে দেখাশুনা করবে?

সবকিছু কেমন এলোমেলো লাগে মোহসীন আহমেদের কাছে। তিনি আর কিছুই ভাবতে পারছেন না। মোহিনীকে বিয়ে দেওয়া যেন তার একমাত্র ধ্যানজ্ঞান হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিদিনই সকাল কিংবা রাতে খাওয়ার টেবিলে মোহিনীর কানে কথাটা তোলেন। একেবারে লেগে থাকা যাকে বলে। আনোয়ারা বেগমও মরিয়া হয়ে ওঠেন মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য। তাদের কর্মকাণ্ড কখনো কখনো পাগলের পর্যায়ে গিয়ে পৌছে।
মোহিনীও চতুর কম নন। তিনি নানা কৌশলে মা বাবার মনে কষ্ট না দিয়ে বিয়ের প্রসঙ্গটি দূরে রাখেন। মা বাবা যখন ওর বিয়ের প্রসঙ্গ তোলেন তখন তিনি শুনেও না শোনার ভান করেন। তিনি হাসি ঠাট্টার মধ্যদিয়ে বিষয়টি উড়িয়ে দেন। কখনো কখনো বলেন, এই বয়সে বিয়ে করে কী হবে? ছেলে পছন্দ হয় না। অনেকেই আবার অর্থের লোভে তাকে বিয়ে করতে চায়! সেটা কি ঠিক হবে? এসব বলে মোহিনী সময় পার করেন। এতে মোহসীন আহমেদ ও আনোয়ারা বেগম বিরক্তিবোধ করেন। তারপরও তারা ধৈর্য ধরেন। মেয়েকে বোঝানোর চেষ্টা করেন।

একদিন অবশ্য মোহসীন আহমেদ একটু শক্তভাবেই মোহিনীকে বলেছেন যে, সাত দিনের মধ্যে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। তা না হলে তারা জোর করেই তাকে বিয়ে দেবেন। কানা, লুলা, বোবা ছেলে হলেও তারা তাকে মেয়ের জামাই করবেন।
মোহিনী হাসেন। তিনি জানেন তার বাবা সেটা কখনোই করবেন না। মুখে হাজার বললেও মেয়ের স্বাধীনতায় তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না। তবে তাদের চাপাচাপিতে একটি কাজ হয়েছে। তার মনের ভেতরে একটা প্রভাব পড়েছে। তিনি এখন বিয়ের বিষয়টি নিয়ে ভাবেন। প্রায়শ তিনি চিন্তা করেন। মা বাবা যেহেতু বলছেন, বিয়ে করাই যায়! অবশেষে মোহিনী জানালেন, করোনাকাল শেষ হলেই তিনি বিয়ে করবেন। তবে করোনার মধ্যে বিয়ের প্রসঙ্গ নিয়ে যাতে তারা আলোচনা না করেন সে বিষযটিও সতর্ক করে দিয়েছেন।

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩১

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩০

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৯

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

 

Header Ad

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)।

জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা জরুরি বিভাগে যাচ্ছি।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ