শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৬

বিষাদ বসুধা

আরেফিন অন্যভাবে ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বললেন, আমার ক্যারিয়ারের জন্য খুব প্রয়োজন। যেতে রাজি না হলে আমার চাকরির জন্য সমস্যা হতো।


মোহিনী রেগেমেগে বললেন, রাখো তোমার ক্যারিয়ার! তোমার সংসার বড়ো নাকি তোমার চাকরি?

আরেফিন নরম গলায় বললেন, দুটোই বড়। তুমি এতোটা রাগবে তা আমি বুঝতে পারিনি মোহিনী। তুমি বোঝার চেষ্টা করো। আমি আসলে আমার ক্যারিয়ারের কথা ভেবেছি। আর আমার চাকরির সমস্যা হবে বলেই এটা করেছি।

তাহলে আমার সঙ্গে আগে থেকে আলোচনা করতে! আমাকে জানাতে যে, এ রকম একটা অফার তুমি পেয়েছ! এটা তো হুট করে আসেনি; তাই না? জাতিসংঘ একটা আন্তর্জাতিক সংস্থা। তারা তো আর হুট করে বলবে না। সময় দেবে।

আসলে তোমাকে জানাব জানাব করে আর জানানো হয়নি। আমার ভুল হয়ে গেছে মোহিনী। প্লিজ তুমি এবারের জন্য বিবেচনা করো। আমার আর এ রকম হবে না।
না। আমি এটা কিছুতেই মানব না। তুমি গেলে নিজ দায়িত্বে যাবে।

মোহিনী!
হ্যাঁ। তুমি গেলে নিজ দায়িত্বে যাবে। আমি অনেক সহ্য করেছি। আর না।

মোহিনীর কথা শুনে আরেফিনের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। তিনি কি করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। শেষ মুহূর্তে না গেলে ওর চাকরি থাকবে না। এসময় চাকরি গেলে চাকরি পাওয়া যাবে না। আরেফিন অসহায় হয়ে পড়বেন। তিনি যে প্রতি মাসে বাড়িতে টাকা পাঠান তাও বন্ধ হয়ে যাবে। বাড়িতে টাকা পাঠানো বন্ধ হলে সবাই না খেয়ে মরবে। এটা ভাবতেই তার গা শিউরে ওঠে।

আরেফিন চোখ বন্ধ করে পুরো বিষয়টা নিয়ে ভাবেন। একটা পর্যায়ে গিয়ে সে আর ভাবতে পারেন না। তিনি মোহিনীকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু মোহিনী তার কোনো কথাই কানে তুলছেন না। এ বিষয়টি নিয়ে সে কোনো আলোচনাই করতে রাজি নন। সঙ্গত কারণেই আরেফিন আর আগান না। তিনি চোখে চোখে তার অসহায় মা বাবাকে দেখেন। তার অসহায় ভাইবোনকে দেখেন। আরেফিনের টাকায় যাদের অন্ন জোটে। তিনি মনে মনে ভাবেন, এই অসহায় মানুষগুলোর কি হবে? আমি কি মোহিনীর কাছে হাত পাতবো? সে অনেক দিয়েছে। যথেষ্টই দিয়েছে! তার কাছ থেকেই বা কত চাইব? না না! এ হয় না। নিজের চাকরি না থাকলে মানুষের কোনো ব্যক্তিত্ব থাকে না। পরমুখাপেক্ষি মানুষ ভিক্ষুকের চেয়েও অধম। মোহিনী আমার বউ; তাতেে কি? তার যত টাকাই থাকুক, আমার না থাকলে সে বেশি বেশি খোটা দেবে। অন্যের টাকার ওপর ভরসা করে মা বাবাকে টাকা পাঠাবো?

আরেফিন আবার ভাবে, মোহিনী খুব ভালো মেয়ে। আমি অনেক ভুল করেছি। মোহিনীকে অবহেলা করেছি। সে সেগুলো মনে রাখেনি। তার মেজাজ ঠাÐা হলে সব ভুলে যাবে। সে আমাকে ঠিকই যেতে দেবে। আমি যদি ভালো কিছু করি তাহলে নিশ্চয়ই সে খুশি হবে।

এরমধ্যে বেশ কিছুদিন কেটে যায়। আরেফিনের বিদেশে যাওয়ার প্রসঙ্গটিও চাপা পড়ে যায়। হঠাৎ একদিন আরেফিন মোহিনীকে বললেন, সাতাশ ডিসেম্বর তিনি চীন যাবেন। বিকেলে তার ফ্লাইট।
একথা শুনে বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকান মোহিনী। তিনি মনে মনে শুধু বললেন, এতোকিছুর পরও আরেফিন বিদেশে যাচ্ছে!

মোহিনী নিজেই আরেফিনকে বিমান বন্দর পৌছে দিতে যান। স্বাভাবিকভাবেই আরেফিনকে বিদায় দেন। মোহিনী তাকে বুঝতে দেননি যে, তিনি নিজেদের বাসায় ফিরে আসবেন। তিনি শুধু বিদায়ের সময় আরেফিনকে উদ্দেশ করে বললেন, ভালো থেকো। আর কোনো কথা হয়নি তাদের মধ্যে।

ইমিগ্রেশন পার হয়ে আরেফিন ফোন দিয়েছিলেন। একবার দুবার নয়, পাঁচ পাঁচবার। কিন্তু মোহিনী ফোন ধরেননি। পরে একাধিকবার আরেফিন মোহিনীকে এসএমএস করেছেন। তারও কোনো জবাব দেননি তিনি। ইচ্ছা করেই এটা তিনি করেছেন। এবার মোহিনী তাকে বুঝিয়েছেন, তার বিদেশ যাওয়া তিনি ভালোভাবে নেননি। ফোন না ধরার কারণে আরেফিন চিন্তায় পড়েছেন। কেন ফোন ধরছে না, কেন এসএমএসের কোনো জবাব দিচ্ছে না তা নিয়ে আরেফিনের মনে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খায়।

আরেফিন ড্রাইভারকে ফোন দেন। সেও ফোন ধরছে না। পরে আরো কয়েকবার তাকে ফোন দেয়া হয়েছে। কিন্তু আরেফিন ফোন ধরেনি। এতে আরেফিনের দুশ্চিন্তা আরো বাড়ে। তিনি মনে মনে বলেন, কি ব্যাপার! ড্রাইভারও তো ফোন ধরছে না! কি ঘটনা?

আরেফিন এবার তার বন্ধু সওগাত আলীকে ফোন করেন। তাকে পুরো ঘটনা খুলে বলেন। তিনি তাকে অনুরোধ জানান, মোহিনীকে ফোন করে বিষয়টা বোঝার জন্য। সওগাতের ফোন ধরলে আরেফিন বুঝতে পারবেন।

আরেফিনের অনুরোধে সওগাত মোহিনীকে ফোন করেন। সঙ্গে সঙ্গে মোহিনী তার ফোন ধরেন। তার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। সওগাত আরেফিনের কথা জানতে চায়। তিনি তার জবাবও ঠিকঠাক মতো দেন। পরে সওগাত আরেফিনকে ফোন করে বললেন, মোহিনীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তার সঙ্গে কথা বলে তো নেগেটিভ কিছু মনে হলো না। স্বাভাবিক মনে হলো।
আরেফিন সওগাতের সঙ্গে কথা বলা শেষ করে ফ্লাইট ধরার জন্য এগিয়ে যায়। যেতে যেতে তিনি ভাবেন মোহিনীকে নিয়ে। তিনি মনে মনে বলেন, মোহিনী সওগাতের ফোন ধরল! অথচ আমার ফোন কেন ধরছে না!

আনোয়ারা বেগম মোহিনীকে দেখে চমকে উঠলেন। মোহিনী এ সময় তাদের বাসায় যাবেন তা তিনি কল্পনাও করেননি। বিয়ের পর শুক্রবার কিংবা শনিবার ছাড়া তিনি তাদের বাসায় যাননি। ঈদের সময় দুটি ঈদ তিনি বাপের বাসায় করেছেন। আর দুটি ঈদ করেছেন দেশের বাইরে। ওদের বিয়ের বয়স চার বছর। মোহিনী তার সংসার এবং নিজের অফিস নিয়েই বেশি ব্যস্ত। তবে প্রতিদিন তার মা’র সঙ্গে কথা বলা তার অভ্যাস। সেটাও দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে। সেই সময়টা আনোয়ারা বেগম জানেন। অন্য সময় আনোয়ার বেগমও ফোন করলে বলেন, মা আমি এখন ব্যস্ত। পরে কথা বলি!

মা মেয়ের সম্পর্কটা খুবই চমৎকার। কিন্তু সময় বুঝে তারা কথা বলেন। আনোয়ারা বেগম জানেন, তার মেয়ে একটা অফিস চালায়। তাকে তার অফিস নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। সেই ব্যস্ততার মাঝে আনোয়ার বেগম কখনোই মেয়েকে ফোন করেন না। বিশেষ প্রয়োজন হলে এসএমএস করে ফ্রি আছে কি না জানতে চান। তারপর ফোন করে কথা বলেন। বিয়ের পরও এই রুটিনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি জানেন মেয়ের নিজের সংসার হয়েছে। সে তার অফিসের কাজের বাইরে স্বামীকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সেই সময়ে তিনি ভাগ বসাতে চান না।

আনোয়ার বেগম বিস্ময়ের সঙ্গে জানতে চান, মোহিনী তুই!
কেন মা? তোমাদের বাসায় বুঝি আমার আসতে মানা?
আরে কি বলিস তুই? আমাদের বাসায় মানে! এটা তোরও তো বাসা! আর আসতে মানা হবে কেন? বিয়ের পর তোকে এরকম অসময়ে তো দেখিনি!
তোমাকে দেখতে এলাম মা।
মেয়ের কথা শুনে হাসি ছড়িয়ে দিলেন তিনি। তারপর বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন, তুই আসবি না তো কে আসবে বল! কেমন আছিস মা?
মোহিনী স্বভাব সুলভ ভঙ্গিতে বললেন, ভালো আছি মা।
তুই একা! আরেফিন কোথায়?
ও চীনে গেছে। উহানে ওদের দুই মাসের কর্মশালা আছে।
দুই মাস! বলিস কী! এতোদিন কিসের কর্মশালা?
কি জানি। জানি না। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমার বাসায় আপাতত যাচ্ছি না। তোমাদের এখানেই থাকব।
বিস্ময়ের সঙ্গে আনোয়ারা বেগম বললেন, মানে! হ্যারে মা, তোরা ঝগড়াঝাটি করিসনি তো?
না মা। তেমন কিছু না। তবে আমি আপাতত তোমাদের এখানেই থাকব।

আনোয়ারা বেগম চিন্তিত হয়ে পড়েন। তিনি মেয়ের পাশে গিয়ে বসেন। বোঝার চেষ্টা করেন। আরেফিনের সঙ্গে সত্যিই কিছু হয়েছে কিনা তা বুঝতে চান তিনি। বিয়ের সময়ই তিনি আপত্তি করেছিলেন। মোহিনীর বাবাও চাননি আরেফিনের সঙ্গে ওর বিয়ে হোক। মোহিনী জোর করে তাদেরকে রাজি করিয়েছেন। তিনি তার মা বাবাকে বলেছেন, তোমরা আমাকে নীতি নৈতিকতা শিখিয়েছ। মানবিকতা শিখিয়েছ। মনুষ্যত্ববোধ, কৃতজ্ঞতাবোধ আমার ভেতরে ঢুকিয়েছ। আমি তার বাইরে যাই কি করে বলো! আমি আরেফিনের পরিবার দেখিনি। ওর কি আছে না আছে সেদিকে নজর দিই না। আমার প্রতি আমার যে অন্ধ ভালোবাসা; তাও নয়। আমি শুধু কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে ওকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছি।

মোহিনীকে কিছুতেই বোঝানো যায়নি যে, অশিক্ষিত, নীচু পরিবার থেকে উঠে আসা কোনো ছেলে মেয়ে, যতই শিক্ষিত হোক, তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পাল্টাবে না। মানসিকতা পাল্টাতে পারবে না। কথায় বলে না, গোবরে পদ্ম ফুল। মেধার গুণে গোবরে পদ্মফুল ফুটতেই পারে। কিন্তু তার মানসিকতা পদ্মফুলের মতো হবে না।

মোহিনী দাম্পত্য জীবনের দূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে হারে হারে উপলব্ধি করছেন যে, তিনি কতবড় ভুল করেছেন! দাম্পত্য জীবনের জটিল অংক মেলাতে গিয়ে সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সুন্দরভাগে এগিয়ে গিয়েও হঠাৎ যেন থমকে গেছে। মনটা কেমন যেন অস্থির হয়ে উঠছে। কখনো কখনো মানসিক চাপ অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে। সেই চাপ তিনি আর নিতে পারছেন না।

মোহিনী তার মা’র কাছে অকপটে তার ভুলের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, এমন ভুল তিনি করেছে যা শোধরাবার নয়। তবে ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার আছে। জীবনকে তিনি থমকে দিতে রাজি নন। জীবন চলমান নদীর মতো। নদী যেমন সব ধরনের ঝড়ঝঞ্জা মারিয়ে এগিয়ে চলে, মোহিনীও তেমনি করে এগিয়ে চলতে চান। তিনি তার ব্যবসার হালটাকে শক্তভাবে ধরতে চান।
মোহিনীর কথায় আনোয়ারা বেগম ভীষণভাবে আপ্লুত হন। তিনি মনে মনে বলেন, এই না হলে আমাদের মেয়ে!

আনোয়ারা বেগম চুপ করে আছেন দেখে মোহিনী বলেন, মা তুমি চুপ করে আছো যে! কিছু বলছ না যে! আমি থাকলে তোমাদের কোনো অসুবিধা হবে? অসুবিধাবোধ করলে আমি চলে যাবো।
মোহিনী, তুই এমনভাবে বললে আমি খুব কষ্ট লাগে। তুই আমার একমাত্র মেয়ে। তুই ছাড়া আমাদের আর কে আছে? আমাদেরকে আল্লাহ তায়ালা এতো সম্পদ দিয়েছেন, এসব কে খাবে? কে দেখবে? তোকেই তো সব দেখতে হবে!

ধন্যবাদ মা। আমি এখন অফিসে যাবো। আমার রুমটা ঠিকঠাক করিয়ে রেখো।
ঠিক আছে। তুই অফিসে যা।

চলবে....

 

আরও পড়ুন

 

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

 

Header Ad

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)।

জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা জরুরি বিভাগে যাচ্ছি।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ