শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১

বিষাদ বসুধা

মোহিনীর কপালে বিরক্তির ভাঁজ।

চরম বিরক্তি নিয়ে মধ্যরাত অবধি বসে আছেন মোহিনী। আরেফিন তখনো বাসায় ফেরেননি। মোহিনী বাসায় একা। তিনি আরেফিনের জন্য অপেক্ষা করছেন। তার চোখজুড়ে ঘুম নেমে আসছে। কিন্তু তিনি ঘুমাতে পারছেন না। আরেফিন বাসায় ফিরলে তারা একসঙ্গে খাবেন। এটাই তাদের প্রতিদিনকার রুটিন। সেই রুটিনের আজ ব্যত্যয় ঘটেছে।

রাত দশটার মধ্যে বাসায় ফেরার কথা আরেফিনের। কিন্তু তার বাসায় ফেরার নাম নেই। মোবাইল ফোনও বন্ধ। কেন বন্ধ তা মোহিনী বুঝতে পারছেন না। সাধারণত আরেফিন ফোন বন্ধ রাখেন না। বাসায় ফিরতে দেরি হলে তিনি আগে থেকেই জানিয়ে দেন। আজ কেন জানাননি তাও বুঝতে পারছেন না।

আরেফিন বিকেল থেকে একবারও ফোন করেননি। এটাও একটা দুশ্চিন্তার কারণ। রহস্যজনক বলেও মনে হয় মোহিনীর কাছে। তারপরও তিনি কোনো রকম নেতিবাচক ভাবনা আপাতত ভাবতে চাচ্ছেন না। তিনি ধরেই নিয়েছেন; বিশেষ কোনো ব্যস্ততার কারণে আরেফিন ফোন বন্ধ রেখেছেন। বিশেষ কোনো কারণে হয়তো দেরি হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে নিশ্চয়ই ফিরে আসবেন। অপেক্ষা করতে করতে দুই ঘণ্টা চলে গেছে। আরেফিন বাসায় ফেরেননি।

মোহিনী এখন ভীষণ বিরক্ত। ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছেন আর বলছেন, এখনো কেন আসছে না? কি এমন ব্যস্ততা! ব্যস্ততা থাকলে আমাকে একটা ফোন করে জানাতে পারত! না! ওর দায়িত্বজ্ঞানহীন কাণ্ড আর ভালো লাগে না।

মোহিনীর বিরক্তির পারদও চূড়ায় উঠতে শুরু করে। মোহিনী নিজেও সারাদিন অফিস করেছেন। নটা পাঁচটার ছকে বাঁধা সরকারি অফিস নয়। নিজের বাবার সু ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিস করে বাসার সব কাজ তিনি নিজেই সামলান। বাসায় একজন ছুটা কাজের মহিলা আছে। তার নাম মর্জিনা। সে সন্ধ্যা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত কাজ করে। দশটার দিকেই মোহিনীরা রাতের খাবার খান। এটো থালাবাসন ধুয়েমুছে দিয়ে যায় মর্জিনা। সে রাতের খাবার এই বাসা থেকেই নিয়ে যায়। বেতন দেয়ার পরও মোহিনী এই খাবারটা মর্জিনাকে বাড়তি দেন। কারণ, মর্জিনা ওর দুই বাচ্চাকে স্কুলে পড়ায়। সেই পড়ার খরচও মোহিনী বহন করেন।

মোহিনী খুবই মানবিক ধরনের মানুষ। কারো দুঃখ কষ্ট সে সহ্য করতে পারেন না। নিজে কষ্ট করবেন তবু অন্যের সমস্যা সমাধানে তিনি ঝাপিয়ে পড়বেন। মোহিনী যখন জানতে পারলেন, মর্জিনার স্বামী আরেকটা বিয়ে করে ওকে আর দুই সন্তানকে রেখে চলে গেছে। তখন থেকে মোহিনী মর্জিনা ও তার দুই সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মর্জিনার পরিবারের অনেক খরচও তিনি বহন করেন।

মোহিনী বলেন, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য কতটুকুই বা দরকার। তার চেয়ে বেশি রেখে কি হবে? মানুষ মরলে কবরে তো কিছুই নিয়ে যেতে পারে না। শুধু শুধু সম্পদের পাহাড় গড়ে মানুষ। এসব করে কি লাভ! তার চেয়ে গরীব মানুষদের সাহায্য করলে তারা ভালোভাবে জীবন কাটাতে পারে।

মোহিনী নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করলেও সেখান থেকে তিনি বেতন নেন। যে টাকা তিনি আয় করে তার বেশির ভাগই গরীবদের বিলিয়ে দেন। এতেই তিনি তৃপ্তি অনুভব করেন। ভীষণ আনন্দ পান। মোহিনীর মা বাবাও এমনই। তাদের সম্পদও তারা গরীবদের বিলিয়ে দেন। তারা যেহেতু কোনো রকম কষ্টে নেই। সেহেতু মোহিনীরও কষ্ট হবে না। অন্যকে সাহায্য করলে সৃষ্টিকর্তা তাকে সহায়তা করবে। এটা তার বদ্ধমূল ধারনা।

মোহিনী একবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিনের একটা সাক্ষাৎকার পড়েছিলেন। সেটি পড়ে তার এতো ভালো লেগেছে যে, সেটা তার মগজে ঢুকে গেছে। শির বাবা ছোটবেলায় তাকে বলেছিলেন, বাবা তুমি তিনটি বিষয় মনে রেখ। তাহলে দেখবে জীবনে অনেক সাফল্য আসবে। একটি হচ্ছে, লোভ-লালসা সংবরণ করবে। দ্বিতীয়ত, কখনো নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখ না। তৃতীয়ত, মানুষের জন্য নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিও। মানুষের জন্য জীবন উৎসর্গ করলে জীবন বহুগুণ তোমাকে ফিরিয়ে দেবে।

মোহিনীর বাবাও তাকে এরকমই পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনিও মেয়েকে বলেছিলেন, লোভ-লালসা জীবনে অনেক ক্ষতির কারণ। আর নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখ না। অন্যের জন্য কিছু কোরো। তাতেই পরম শান্তি।

বাবার সেই পরামর্শ মোহিনী প্রতি মুহূর্তে মনে রেখেছেন। তিনি নিজেও দেখে আসছেন, অন্যের জন্য কাজ করলে নিজের কিছু ক্ষতি হলেও তাতে অনেক প্রশান্তি লাভ করা যায়। মোহিনীর বাবা আরো বলেছেন, সংসার জীবনে ত্যাগ স্বীকার করার চেয়ে মহৎ কাজ আর কিছুই নেই। তুমিও তাই কোরো। তাতে হয়তো তোমার কিছু ক্ষতি হবে। কিন্তু এক সময় দেখবে, তুমিই লাভবান হয়েছ।
মোহিনী তার বাবার কথা চিন্তা করেই দাঁত কামড়ে এই সংসারে পড়ে আছেন। কিন্তু মানুষের ধৈর্যেরও একটা সীমা আছে। কখনো কখনো আরেফিন সীমা ছাড়িয়ে যায়। কখনো কখনো তিনি বাউণ্ডলে মানুষের মতো আচরণ করেন। অথচ বিয়ের আগে মোহিনীকে তিনি পাগলের মতো ভালোবাসতেন। তার ভালোবাসার কাছে হার মেনেছিলেন তিনি। বিয়ের পর সেই ভালোবাসা কোথায় গেলো?

মোহিনীর খুব কমই চাওয়া ছিল আরেফিনের কাছে। তিনি কখনো বাড়ি গাড়ি চাননি। চেয়েছেন শুধু ভালোবাসা। হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা। আরেফিনকে নিয়েই একটা ভালোবাসার সংসার সাজাতে চেয়েছিলেন তিনি। বিয়ের পর তেমনিভাবেই শুরু হয়েছিল তাদের সংসার। কিন্তু সেই ভালোবাসার তানপুরাতে আগের মতো সেই সুর আর বাজে না। কখনো কখনো বেসুরো হয়ে যায়। এতে মোহিনীর কোনো দোষ নেই। আরেফিনের অবহেলার কারণেই মোহিনীর মনের কোণে প্রশ্ন দানা বাঁধে। কেন এই অবহেলা?

মোহিনী মনে মনে বললেন, আমি কি ওকে সুখি করতে পারিনি? নাকি অন্য কোথাও ওর কোনো সম্পর্ক আছে? আগে কারো সঙ্গে কোনো সম্পর্ক কি ছিল? না তো! নতুন করে কোনো সম্পর্ক তৈরি হয়েছে? নাকি কেবল বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাবাজি। ও জানে যে আমি বাসায় একা। আমার সময় কী করে কাটে। সেটা তো ওকে ভাবতে হবে। ও না ভাবলে কে ভাববে?

আরেফিন একটা সময় আড্ডাবাজি করে অনেক সময় নষ্ট করেছে। সেটা চাকরি জীবনের আগের কথা। বন্ধুদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিয়েছেন তিনি। বাজে অভ্যাস বলতে এটাই। মদ, গাজা কিংবা জুয়ার আসরে বসার অভ্যাস ছিল না। কাজেই এটাকে নেতিবাচকভাবে নেননি মোহিনী। বিয়ের পরও মাঝেমধ্যে বলেকয়ে আড্ডায় যেত। সেটাও সপ্তাহে একদিন। সময়মতো আবার তিনি ফিরে আসতেন।

আসলে প্রতিদিন সকালে অফিস করতে হলে আড্ডাবাজি করা যায় না। এটা আরেফিন নিজেও ভালো করেই জানেন। ইদানিং তিনি নিয়মিত দেরি করে বাসায় ফেরেন। এর রহস্য খুঁজে পান না মোহিনী।

মোহিনী বিষয়টা জানার জন্য আরেফিনকে সরাসরি জিজ্ঞাসাও করেছেন। কিন্তু আরেফিনের কাছ থেকে সদুত্তর পাওয়া যায়নি। যখনই মোহিনী প্রসঙ্গটি তুলেছেন তখনই তিনি বলেছেন, আর দেরি হবে না। অথচ প্রতিদিনই তিনি একই কাণ্ড করে যাচ্ছেন।

মোহিনীর চোখে রাজ্যের ঘুম নেমে আসে। তিনি আর বসে থাকতে পারেন না। একটা সময় বিছানায় গা এলিয়ে দেন। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েন তা তিনি নিজেও জানেন না।

অনেকক্ষণ ধরেই কলিং বেলের আওয়াজ কানে সুড়সুড়ি দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ঘুমের রেশ কাটাতে পারছিলেন না মোহিনী। এক পর্যায়ে তিনি ঘুম থেকে লাফিয়ে ওঠেন। স্থির হয়ে বসে থাকেন। তার দুই চোখ তখনো বন্ধ। তিনি চোখ খোলার চেষ্টা করেন। আবার কলিং বেলের আওয়াজ পান। ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই তিনি দেখেন ঘড়ির কাঁটা চারটার ঘরে। তিনি মনে মনে বলেন, ওহ মাই গড! চারটা! আরেফিন এখন এলো!

মোহিনী দরজা খুলে দেখে আরেফিন মাথা নীচু করে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তাকে দেখে অচেনা মানুষ মনে হয় মোহিনীর। তিনি বিস্ময়ভরা কণ্ঠে জানতে চান, কি হয়েছে! এতো দেরি হলো কেন! কোনো সমস্যা!
আরেফিন নীচু গলায় বললেন, না।
তাহলে দেরি হলো কেন?
একটু দেরি হয়ে গেলো! সরি।

সরি শব্দটাই এখন আর সহ্য করতে পারেন না মোহিনী। ওই শব্দটা ওর মাথা বিগড়ে দেয়। সরি শুনেই মোহিনী চিৎকার দিয়ে বললেন, ডোন্ট সে সরি।

আরেফিন দাঁড়ালেন না। তিনি টলতে টলতে শোবার ঘরের দিকে চলে গেলেন। তার গা থেকে উটকো গন্ধ বের হয়। মোহিনী নাক চেপে ধরে বলেন, তুমি কোথায় গিয়েছিলে? তুমি কি মদ খেয়ে এসেছ? ছি! ছি আরেফিন!

আরেফিন কোনো কথা বললেন না। মোহিনী দরজার সিটকিনি আটকে শোবার ঘরে এসে দেখেন, আরেফিন গভীর ঘুমে ডুবে গেছেন। মরা লাশের মতো পড়ে আছেন তিনি। বড় অসহায় লাগছে তাকে। মোহিনী আর কিছু বললেন না। তিনিও তার পাশে শুয়ে পড়লেন। তার চোখেও গভীর ঘুম নামে। ঘুমের ঘোরে ডুবে যেতে যেতেই আজানের ধ্বনি তার কানে এলো।


চলবে..

 

Header Ad
Header Ad

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে মন্তব্য এসেছে, তা ভিত্তিহীন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নিপীড়ন চলে আসছে, তার প্রতি ভারতের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের সঙ্গে এই বিষয়টির তুলনা টানার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা একেবারেই অসৎ প্রচেষ্টা। এমনকি যেসব অপরাধী ওইসব ঘটনায় জড়িত, তারা আজও বিচার এড়িয়ে চলেছে।”

এর আগে ৮ এপ্রিল, ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

এই মন্তব্যকেই ‘হস্তক্ষেপমূলক’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশকে দায়ী করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি ছড়িয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, নতুন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়ক অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এই ইস্যু শুধু পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়—উত্তর প্রদেশসহ ভারতের আরও কিছু রাজ্যেও সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ এবং নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্টে ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত পুলিশ কনস্টবল শামীম হোসেন (৩০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সহকর্মীরা শয়নকক্ষের জানালা দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

নিহত শামীম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে। তার কনস্টবল নং ৫৩২।

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই রমজান আলী জানান, শামীম হত অক্টোবরে দর্শনা ইমিগ্রেশনে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকেই গত ৬ মাস ধরে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষে বাস করে আসছিলেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কয়েকজন সহকর্মী খোঁজ নিতে গেলে শামীম হোসেনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সহকারী পুলিশ সুপার দামুড়হুদা -জীবননগর) সার্কেল জাকিয়া সুলতানা, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর বেলা ১১ টায় মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন ২০১৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে।

Header Ad
Header Ad

দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর আত্রাইয়ে বিষ প্রয়োগ করে দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে সানজিদা (১৬) নামে এক কিশোরীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন নিহত কিশোরীর স্বজনেরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত কিশোরীর মামা ফজলুর রহমান। এ সময় অন্যদের মধ্যে ওই কিশোরীর মা খুশি বেগম, নানা মোসলেম প্রামাণিক, চাচা সাইফুল ইসলাম মন্ডল, মামা হামিদুল প্রামাণিক উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্য ফজলুর রহমান বলেন, নিহত কিশোরী সানজিদা আত্রাই উপজেলার আন্দার কোটা গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শামসুল মন্ডলের মেয়ে। সানজিদা উপজেলার ঘোষগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা কাজের সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে সৗদি আরবে ও আরব আমিরাতে (দুবাই) অবস্থান করছেন। শামসুল মন্ডলের স্ত্রী খুশি বেগম মেয়ে সানজিদাকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে বাস করে আসছিলেন। শামসুল বসতবাড়ির বসতভিটার উত্তর পাশে বাবা মোসলেম মন্ডলের কাছ থেকে জমি কিনে নিয়ে ৪ বছর আগে মাটির বাড়ি তৈরি করেন। সেই বাড়িতেই সানজিদা ও তার মা বসবাস করতো। পরে ওই জায়গায় পাকা বাড়ি করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করলে শামসুলের বাবা মোসলেম ও ভাই সাজিম মন্ডল বাঁধ সাজে। সানজিদার দাদা শামসুলকে বসতভিটার উত্তর পাশে পাকা বাড়ি না করে দক্ষিণ পাশে নীচু জায়গায় বাড়ি করার জন্য বলে আসছিল। এ নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। সানজিদার বাবা ও ভাই বিদেশে থাকায় বাড়ি করা নিয়ে বিরোধের জেরে সানজিদা ও তার মায়ের সঙ্গে তাঁর দাদা মোসলেম ও চাচা সাজিমের প্রায় পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো। এই কলহের জেরে দাদা মোসলেম মন্ডল ও সাজিম মন্ডল হত্যার উদ্দেশ্যে গত ৯ এপ্রিল হত্যার উদ্দেশ্যে সানজিদার শরীরে বিষ প্রয়োগ করে। পরবর্তীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ এপ্রিল রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে সানজিদা বলে গেছে তার দাদা ও চাচা তাঁর শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে বিষ প্রয়োগ করেছে। তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও ধারণ করা আছে। এ ঘটনায় রাজশাহী রাজপাড়া থানায় একটি অপমৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে মোসলেম মন্ডল ও সাজিম মন্ডল পলাতক রয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, গত ৯ এপ্রিল সকালে সানজিদা প্রাইভেট পড়ার জন্য ঘোষগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ে যায়। প্রাইভেট পড়ে সে বেলা ১১টার দিকে বাড়িতে আসে। এ সময় সাংসারিক কাজে সানজিদার মা খুশি বেগম বাড়ির বাইরে ছিলেন। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সানজিদার দাদা মোসলেম ও চাচা সাজিম সানজিদার ঘরের ভেতরে যায়। দাদা মোসলেম সানজিদার পাশে বসে একপর্যায়ে তাকে জাপটে ধরে এবং চাচা সাজিম পকেট থেকে বিষের ইনজেকশন বের করে তার বাম হাতের শিরায় জোর ইনজেকশন প্রয়োগ করে। তারা সানজিদাকে হুমকি দিয়ে বলে এ কথা কাউকে বললে তার মতো বাবা ও ভাইকেও হত্যা করবে। সানজিদার মা খুশি বেগম বাড়িতে এসে মেয়েকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় মেয়েকে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ওই দিনই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ এপ্রিল রাতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সানজিদার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত মোসলেম ও সাজিমের ফাঁসি দাবি করা হয়।

সাজিম মন্ডলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়ে তা বন্ধ পাওয়ায় অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাবুদ্দীন বলেন, ‘যে মেয়েটি মারা গেছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় যোগাযোগ করা হয়েছিল। এ ঘটনায় রাজশাহী রাজপাড়া থানায় একটি ইউডি মামলা হয়েছে। সেখানেই নিহত কিশোরীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
নিজেকে বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে মামলা করলেন ফয়জুল করীম