মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব- ৩১

বিষাদ বসুধা

করোনার কারণে এবার ঈদ কাটল নিরানন্দে। এ রকম ঈদ মুসলমানদের জীবনে বিগত একশ’ বছরেও আসেনি। মক্কার পবিত্র কাবা শরিফ পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সৌদি সরকার সাতাশ ফেব্রুয়ারি (দুই হাজার বিশ খ্রিষ্টাব্দ) থেকে হজ ও ওমরাহ ভিসা স্থগিত করে দিয়েছে। এমনকি পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে তাওয়াফও স্থগিত করা হয়।

ইতিহাসে আছে, নবম হিজরিতে হজ ফরজ হওয়ার পর থেকে যুদ্ধ-বিগ্রহ, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থবিরতা, মহামারির প্রাদুর্ভাব ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেকবার হজ ও ওমরাহ বন্ধ ছিল। সেটা হাজার বছর আগের কথা। সাধারণত কাবা শরিফ কখনো বন্ধ থাকে না। দিবারাত্র চব্বিশ ঘণ্টা খোলা থাকে। সারাবিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সেখানে যান। সারাক্ষণই তারা জিকির আসকার করেন। নামাজ আদায় করেন। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে পানাহ চান। এবারই তার ব্যত্যয় ঘটল। করোনায় কাবা শরিফের দরজাও বন্ধ করে দিতে হল।

বাংলাদেশে অবশ্য বিধিনিষেধ মেনে সীমিত আকারে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। খুব কম সংখ্যক মুসল্লি নিয়ে খুব সতর্কতা ঢাকা শহরের মসজিদগুলোতে ঈদের জামাত হয়েছে। আসিফ আহমেদের বাসা মসজিদ লাগোয়া। বাসা থেকে মাইকে ইমামের বক্তৃতা, নামাজের একামত সবই শোনা যায়। তাই তিনি মসজিদে যাওয়ার ঝুঁকি নিলেন না। তিনি ঘরে বসেই ঈদের নামাজ আদায় করলেন। বাসাতেই ঈদের ছুটি কাটালেন। প্রতিবার কোরবানির ঈদে তার বাসায় ভাইবোনরা ও তাদের ছেলেমেয়েরা আসে। ভীষণ আনন্দ হয়। এবার কেউ আসেনি। তিনিও কারো বাসায় যাননি। টানা চারদিন বাসায় শুয়ে-বসে কাটিয়েছেন।

ঈদের একদিন পরই অফিস খুলে যায়। আসিফ আহমেদ সকাল সকাল অফিসে যান। তার মতে, অফিসের শীর্ষ ব্যক্তি সময়মতো অফিসে না গেলে অন্যরা গাফিলতি করে। তাই তিনি কোনো অবস্থাতেই অফিসে দেরি করেন না। করোনায় ঝুঁকি মাথায় নিয়ে প্রতিদিন অফিস করেন। যদিও অফিসের অনেকের জন্য ‘হোম অফিস’ চালু করেছেন। যাতে পুরো টিম আক্রান্ত হয়ে না যায় সেজন্যই এই ব্যবস্থা।

আসিফ আহমেদ গাড়ি থেকে অফিসের গেটে নামার পর দেখে সেনিটাইজার কিংবা নিরাপত্তাকর্মীরা কেউ নেই। দুএকজন পিওন দাঁড়িয়ে আছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা অফিস ঝাড়াপোছা করছে ঠিকই। কিন্তু তাদের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে তারা হেলেদুলে চলছে। কাজে ভালোভাবে হাত লাগাতে পারছে না।

চারদিন ছুটি কাটানোর পর সবার মধ্যেই এক ধরনের আলসেমি ভাব থাকে। যাই যাচ্ছি করে অফিসে যেতে দেরি করে। কিন্তু পত্রিকা অফিসে যাই যাচ্ছি করলে চলে না। বলতে হয় এখনই যাচ্ছি। পত্রিকার অনলাইন খোলা ছিল। এই শাখার সংবাদকর্মীরা ঈদের দিনও অফিসে এসে কাজ করেছে। ওরা নিজেদের বাসা থেকে খাবার এনে খেয়েছে।

আসিফ আহমেদ অফিসে এসেই অনলাইন শাখার কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাদের খোঁজখবর নেন। তারপর নিজের দপ্তরে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মোবাইলে ফোন আসে। মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখেন, এমডি সাহেব ফোন দিয়েছেন। ফোন ধরে সালাম জানিয়ে আসিফ আহমেদ তাকে ঈদ মোবারক জানান। শাহবাজ খান ঈদ মোবারক জানিয়েই বললেন, আগামী রবিবার আপনার সঙ্গে মিটিং। সকাল এগারোটার মধ্যে চলে আসবেন। দেরি করবেন না। তালিকাটা নিয়ে আসবেন।

শাহবাজ খান আর কোনো কথা বললেন না। তিনি হঠাৎ করেই ফোন রেখে দিলেন। আসিফ আহমেদ ভাবনায় পড়ে যান। আবার সেই তালিকা! ছাঁটাই না করে তিনি শান্তি পাচ্ছেন না! কে তার মাথায় এটা ঢোকাল? হিসাব বিভাগ? ওদের তো কাজ একটাই। আয় কমেছে কাজেই লোক কমাও। এটাকে যে অন্যভাবে ম্যানেজ করা যায় সেটা ভাবে না। মিডিয়াবান্ধব হিসাবরক্ষক না হলে যা হয়! শুধু কস্ট-কাটিংয়ের কথা মাথায় রাখে। আর কিছু চিন্তা করে না। একটা বড় পত্রিকা। পত্রিকা ভালো না হলে পাঠকরা ছুড়ে ফেলবে। আর একবার ছুড়ে ফেললে সেটা আর হাতে তুলবে না। ডাসবিনে যেমন মানুষ কাগজ ছুড়ে ফেলে তেমনি পত্রিকাটাও ছুড়ে ফেলবে। এটা মালিক কর্তৃপক্ষও ভালো করেই জানে। জানে না হিসাব বিভাগ। ওরা চাকরি টিকিয়ে রাখার জন্য সারাক্ষণ কস্ট-কাটিংয়ের হিসাব কষে।

হিসাবরক্ষকদের হিসাবের গ্যাড়াকলে পড়েছি আমরা। এর আগে কস্ট-কাটিং করতে গিয়ে পত্রিকার সার্কুলেশনই কমিয়ে দিয়েছে। প্রায় এক লক্ষ কাগজ কমিয়ে দিয়েছে। এখন চেষ্টা করেও আর সার্কুলেশন বাড়ানো যাচ্ছে না। পত্রিকা হচ্ছে স্ত্রীলোকের মতো। একবার ঘর থেকে বের হয়ে গেলে মানুষ তাকে আর ঘরে তুলতে চায় না। সবাই চায় সার্কুলেশন বাড়াতে। আর এরা হিসাবরক্ষকদের কথায় সার্কুলেশন কমিয়ে এখন হায় হায় করছে। তারপরও সার্কুলেশনের লোকরাই এদের কাছে প্রিয়।

এ এক অদ্ভুত ধরনের অফিস। হিসাবরক্ষকদের কথা ছাড়া এরা এক চুলও নড়ে না। এরা এত বড় কীভাবে হলো তা আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন। সবাই দেখল, হিসাবরক্ষকের কথায় পত্রিকার সার্কুলেশন কমিয়ে কতবড় ক্ষতি হয়েছে! অথচ সেই লোকটি বহাল তবিয়তে আছে! তার সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। পদোন্নতি হয়েছে। অথচ দশ বছরেও অনেক সাংবাদিকের কোনো পদোন্নতি হয়নি। পদোন্নতির কথা বলতে গেলেই সোরগোল ওঠে, খরচ বেড়ে যাবে। কিছুতেই এটা করা যাবে না। পদোন্নতিই যদি না হয় তাহলে কিসের আশায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একটা ছেলে এখানে বছরের পর বছর পড়ে থাকবে! কেন পড়ে থাকবে। সে তো তার ক্যারিয়ারের জন্য অন্যত্র ছুটবেই।

বিষয়গুলো নিয়ে আসিফ আহমেদ বড্ড বেশি ভাবছেন। তিনি কিছুতেই মানতে পারেন না। তার মধ্যে ভয়ানক রকম অস্বস্তি হয়। অফিসের স্বার্থে অনেক কিছুই মেনে নিতে হয়। কখনো কখনো ধৈর্যও ধরতে হয়। সেটা সে ধরেও। কিন্তু যখন ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়! লেবু অতিরিক্ত কচলালে তিতা হয়ে যায়। এটা সবাই জানে। তারপরও কচলাতেই থাকে। এই অফিসটাকেও লেবুর মতো কচলানো হচ্ছে। তাই অফিসটি দিনে দিনে তেতো হয়ে যাচ্ছে।

বিষয়গুলো নিয়ে আসিফ আহমেদ অনেকক্ষণ ধরে ভাবেন। তারপর মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন, মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে তিনি চাকরি করবেন না। তিনি নিজের সঙ্গে অনেক বোঝাপড়া করেছেন। অতঃপর তিনি একটি পদত্যাগপত্র লিখলেন।

শাহবাজ খান সকালে অফিসে এসেই আসিফ আহমেদকে ডেকে পাঠালেন। মিডিয়া অফিসের খুব কাছাকাছি করপোরেট অফিস। তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যেই এমডি সাহেবের অফিসে গিয়ে পৌঁছলেন। এমপি সাহেবের পিওন আসিফ আহমেদকে দেখেই বলল, স্যার আপনি এসেছেন? স্যার আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন। আসেন স্যার, আসেন।
আসিফ আহমেদ এমডি সাহেবের অফিসে ঢোকামাত্র তিনি তাকে উদ্দেশ করে বললেন, তালিকা এনেছেন?
আসিফ আহমেদ অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে বললেন, সরি, কিসের তালিকা?
শাহবাজ খান বিরক্তির সঙ্গে বললেন, আপনাকে না বললাম ছাঁটাইয়ের তালিকা করতে!
আসিফ আহমেদ নরম গলায় বললেন, ছাঁটাইয়ের তালিকা আমি করিনি। আর এ মুহূর্তে আমার পক্ষে ছাঁটাই করা সম্ভব নয়। ছাঁটাই করলে আমি চলে যাওয়ার পর করেন।
শাহবাজ খান বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, মানে!
আমি পদত্যাগ করছি। এ ছাড়া আমি কোনো বিকল্প পথ দেখছি না।
শাহবাজ খান বললেন, ঠিক আছে। আপনি যখন কিছুতেই আমার প্রস্তাবে রাজি হচ্ছেন না; তখন আর কী করা! আমার তো অফিসটাকে টিকিয়ে রাখতে হবে!
আমি কিন্তু আপনাকে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছিলাম। ওই প্রস্তাবটি বিবেচনা করলে ছাঁটাইয়ের মতো মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হতো না। আসিফ আহমেদ বললেন।
শাহবাজ খান বললেন, আমরা ছাঁটাইয়ের বিকল্প কিছু ভাবছি না।
আসিফ আহমেদ আর কোনো কথা না বাড়িয়ে নিজের হাতে ফাইলের ভেতরে রাখা পদত্যাগপত্রটি শাহবাজ খানের দিকে এগিয়ে দিলেন। তিনি পদত্যাগপত্রের দিকে একবার তাকালেন। মুহূর্তের মধ্যে তার মুখাবয়বে যেন কালো ছায়া পড়ল। কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তারপর আসিফ আহমেদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ঠিক আছে। ভালো থাকবেন।
আসিফ আহমেদ বের হয়ে অফিসের দিকে গেলেন। তিনি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভাগীয় প্রধানরা ছুটে এল তার কক্ষে। অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে জানতে চাইল, এমডি সাহেবের সঙ্গে মিটিং কেমন হলো? ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত কি স্থগিত করা গেছে?
আসিফ আহমেদ মাথা নিচু করে কিছুক্ষণ বসে রইলেন। দীর্ঘদিন ধরে অনেক যত্নে যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন সেটি তাঁকে আজ ছেড়ে যেতে হবে। এই মর্মবেদনা তিনি কিছুতেই সহ্য করতে পারছেন না। তারা ভীষণ কান্না পাচ্ছে। কিন্তু কাঁদতেও পারছেন না। তিনি চলে গেলে যদি সবার চাকরি থাকত তাহলেও তিনি নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারতেন। তিনি চলে যাওয়ামাত্রই ছাঁটাই শুরু হয়ে যাবে। কতজন যে চাকরি হারায় কে জানে! বেতন হয়তো সবারই কমে যাবে।

আসিফ আহমেদকে বিমর্ষ দেখে কারো আর বুঝতে বাকি রইল না। তারপরও জানার কৌতুহল। সম্পাদকের মুখ থেকে শোনার কৌতুহল। কিন্তু সম্পাদক যে ভেতরে ভেতরে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছে! নিজের আবেগ সংবরণের চেষ্টা চালাচ্ছেন তা কি কেউ বুঝতে পারছেন? তা বুঝতে পারলে হয়তো কেউ আর প্রশ্ন করত না।
অবশেষে আসিফ আহমেদ ধরা গলায় বললেন, আমি চলে যাচ্ছি। তোমরা ভালো থেক। পত্রিকাটাকে ভালো রেখ।
সবাই বিস্ময়ের দৃষ্টিতে আসিফ আহমেদের দিকে তাকিয়ে রইল।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩০

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৯

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

এসএন 

Header Ad

বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি কমাতে কাজ করেছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি কমাতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। সম্প্রতি বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বজ্র নিরোধক যন্ত্র স্থাপন করাসহ এ বিষয়ক ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তুলতে কার্যকর কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে বলেও জানািন তিনি।

সোমবার সচিবালয়ের নিজের অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরী মাসদুপুইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।

প্রতিমন্ত্রী জানান, বজ্র নিরোধক প্রযুক্তি সুলভ ও ব্যাপকভিত্তিক করতে গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে প্রযুক্তি বিনিময় ও হস্তান্তরে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

সাক্ষাতকালে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে বজ্রপাত প্রতিরোধে প্রযুক্তি জ্ঞান বিনিময় ছাড়াও যন্ত্র স্থাপন, বজ্রপাত নিরোধী অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রশিক্ষণ প্রদানে তার দেশ সহয়তা প্রদান করবে।

জমজ দুই বোনের চমক, এসএসসি পরীক্ষায় পেলো জিপিএ-৫

অর্পিতা সাহা অর্পা ও অর্মিতা সাহা অর্ণা। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

এসএসসি পরীক্ষায় অর্পিতা সাহা অর্পা ও অর্মিতা সাহা অর্ণা জমজ দুই বোন চমক দেখিয়েছেন। তারা উভয়ই জিপিএ-৫ পেয়েছে। গৌরবময় এমন সাফল্য অর্জন করায় ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিকিৎসক ও আরেকজন প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

অর্পা ও অর্ণা টাঙ্গাইল পৌর শহরের আদালত রোডস্থ ওয়ালটন প্লাজার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ম্যানেজার অনুপ কুমার সাহা ও গৃহিনী সুম্মিতা ঘোষ দম্পতির জমজ দুই কন্যা সন্তান। টাঙ্গাইলের ড্যাফোডিল ইন্টার ন্যাশনাল স্কুল থেকে ওই দুইবোন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন এবং তারা একসাথেই বিন্দুবাসিনী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছিল।

 

অর্পিতা সাহা অর্পা ও অর্মিতা সাহা অর্ণা। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

গত রবিবার ১২ মে ফলাফলে দেখা যায়, জিপিএ -৫ প্রাপ্তের মধ্যে অর্পার প্রাপ্ত নম্বর- ১ হাজার ১২৩ আর অর্ণার প্রাপ্ত নম্বর-১ হাজার ১১৪। জমজ দুই বোন বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী।

অর্পিতা সাহা অর্পা জানায়, ভবিষ্যতে সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন চিকিৎসক হতে চায়। দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকার স্বপ্ন দেখছে সে। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলের আর্শিবাদ কামনা করেছে সে।

অর্মিতা সাহা অর্ণা জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে সে। স্বপ্ন পূরণে সকলের আর্শিবাদ কামনা করেছে অর্ণা।

জমজ দুই কন্যার বাবা অনুপ কুমার সাহা বলেন, আমি চাই আমার মেয়েরা মানুষের মত মানুষ যেন হয়। তাদের স্বপ্ন ও আশা পূরণে আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। তারা যেন দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত রাখতে পারে এটিই আমার প্রত্যাশা।

স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য আবাসন : গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন শহরে নিম্ন আয়ের বিশেষ করে বস্তিবাসীদের জন্য আবাসন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

সোমবার (১৩মে) সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী’র সভাপতিত্বে সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিববৃন্দ, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সিদ্দিকুর রহমানসহ মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক গণপূর্তমন্ত্রী নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি ও তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে তিনি পরিবেশ সুরক্ষা, প্রয়োজনীয় বনায়ণ, উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণ, খেলার মাঠ, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন, সৌরশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার, পোড়ামাটির ইটের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহার, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং এর ব্যবস্থা, সারফেস ওয়াটার ব্যবহারের সর্বোচ্চ সুযোগ রাখার পরামর্শ প্রদান করেন।

প্রাথমিকভাবে তিনি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় টঙ্গীর দত্তপাড়ায় তিনটি পর্যায়ে ১০০টি বহুতল ভবনে ১২৬০০টি ফ্ল্যাট নির্মাণের যে প্রস্তাবনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তা দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা দেন। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ১৭টি ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবনে ২১৪২টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। ২য় পর্যায়ে ৪৭টি ভবনে ৫৯২২টি ও তৃতীয় পর্যায়ে ৩৬টি ভবনে ৫৪৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মন্ত্রী রাজধানীর করাইল বস্তি ও টি এন্ড টি কলোনীর বস্তিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও গণপূর্ত অধিদপ্তরকে পৃথক পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন। ৭৫০ বর্গফুট গ্রস আয়তনের এসব ফ্ল্যাটের অভিন্ন ডিজাইন প্রণয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি প্রধান স্থপতিকে মৌখিক নির্দেশনা দেন।

রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য শহরেও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে পর্যায়ক্রমে এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য যে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন উত্তরা আবাসন প্রকল্পে (তৃতীয় পর্যায়) নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসনের জন্য ১০ একর জমি নির্দিষ্ট রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে উক্ত জমিতে নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসনের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির জন্য মন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপশি বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার অর্থায়নও সম্ভব হলে গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জনান।

ইতোমধ্যে রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ বস্তিবাসীদের জন্য ৫৩৩টি ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছে। এসব ফ্ল্যাটে তারা স্বাচ্ছন্দের সাথে বসবাস করছে। এছারা সিরাজগঞ্জের কোবদাস পাড়ায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের স্বল্প আয়ের মানুষের উন্নত জীবন ব্যবস্থা শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার নদী ভাঙ্গন কবলিত, ভূমিহীন বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। পরবর্তী প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এসব প্রকল্পের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্য মন্ত্রী পরামর্শ দেন। সেই সাথে সরকারের এসব জনহিতকর কার্যক্রম সম্পর্কে সর্বসাধারণের মাঝে ইতিবাচক প্রচারের জন্য তিনি পরামর্শ দেন।

সর্বশেষ সংবাদ

বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি কমাতে কাজ করেছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
জমজ দুই বোনের চমক, এসএসসি পরীক্ষায় পেলো জিপিএ-৫
স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য আবাসন : গণপূর্ত মন্ত্রণালয়
নওগাঁয় মেয়াদ পুর্ণ হওয়ার পরও গ্রাহকদের টাকা দিচ্ছে না প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স
চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১৬ মে থেকে আম সংগ্রহ শুরু
২৩ নাবিকসহ কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে এমভি আবদুল্লাহ
মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু
ঢাকাসহ ৭ বিভাগে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস
বিভাজন থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসা উচিত : মির্জা ফখরুল
ভোটারকে থাপ্পড় মারায় এমপির গালে ভোটারের পাল্টা থাপ্পড়, ভিডিও ভাইরাল
শিশু জায়েদকে মামার জিম্মায় দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
কেউ পাস করেনি বিরামপুরের খয়েরবাড়ী মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসায়
বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় অর্ধশতাধিক মার্কিন অধ্যাপক গ্রেপ্তার
প্রেম করলে শরীর ও মন ভালো থাকে: মন্দিরা
এবার একীভূত হলো সোনালী ব্যাংক-বিডিবিএল
১৩ শিক্ষকের বিদ্যালয়ে ১৪ পরীক্ষার্থীর সবাই ফেল, প্রধান শিক্ষককে শোকজ
ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠিন সিদ্ধান্ত মিসরের
নিজের রেকর্ড ভেঙে ২৯ বার এভারেস্ট জিতলেন রিতা শেরপা
বাড়ি ফেরার পথে গরুবাহী ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন এক পুলিশ সদস্য
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ