শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব- ৩১

বিষাদ বসুধা

করোনার কারণে এবার ঈদ কাটল নিরানন্দে। এ রকম ঈদ মুসলমানদের জীবনে বিগত একশ’ বছরেও আসেনি। মক্কার পবিত্র কাবা শরিফ পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সৌদি সরকার সাতাশ ফেব্রুয়ারি (দুই হাজার বিশ খ্রিষ্টাব্দ) থেকে হজ ও ওমরাহ ভিসা স্থগিত করে দিয়েছে। এমনকি পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে তাওয়াফও স্থগিত করা হয়।

ইতিহাসে আছে, নবম হিজরিতে হজ ফরজ হওয়ার পর থেকে যুদ্ধ-বিগ্রহ, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থবিরতা, মহামারির প্রাদুর্ভাব ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেকবার হজ ও ওমরাহ বন্ধ ছিল। সেটা হাজার বছর আগের কথা। সাধারণত কাবা শরিফ কখনো বন্ধ থাকে না। দিবারাত্র চব্বিশ ঘণ্টা খোলা থাকে। সারাবিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সেখানে যান। সারাক্ষণই তারা জিকির আসকার করেন। নামাজ আদায় করেন। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে পানাহ চান। এবারই তার ব্যত্যয় ঘটল। করোনায় কাবা শরিফের দরজাও বন্ধ করে দিতে হল।

বাংলাদেশে অবশ্য বিধিনিষেধ মেনে সীমিত আকারে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। খুব কম সংখ্যক মুসল্লি নিয়ে খুব সতর্কতা ঢাকা শহরের মসজিদগুলোতে ঈদের জামাত হয়েছে। আসিফ আহমেদের বাসা মসজিদ লাগোয়া। বাসা থেকে মাইকে ইমামের বক্তৃতা, নামাজের একামত সবই শোনা যায়। তাই তিনি মসজিদে যাওয়ার ঝুঁকি নিলেন না। তিনি ঘরে বসেই ঈদের নামাজ আদায় করলেন। বাসাতেই ঈদের ছুটি কাটালেন। প্রতিবার কোরবানির ঈদে তার বাসায় ভাইবোনরা ও তাদের ছেলেমেয়েরা আসে। ভীষণ আনন্দ হয়। এবার কেউ আসেনি। তিনিও কারো বাসায় যাননি। টানা চারদিন বাসায় শুয়ে-বসে কাটিয়েছেন।

ঈদের একদিন পরই অফিস খুলে যায়। আসিফ আহমেদ সকাল সকাল অফিসে যান। তার মতে, অফিসের শীর্ষ ব্যক্তি সময়মতো অফিসে না গেলে অন্যরা গাফিলতি করে। তাই তিনি কোনো অবস্থাতেই অফিসে দেরি করেন না। করোনায় ঝুঁকি মাথায় নিয়ে প্রতিদিন অফিস করেন। যদিও অফিসের অনেকের জন্য ‘হোম অফিস’ চালু করেছেন। যাতে পুরো টিম আক্রান্ত হয়ে না যায় সেজন্যই এই ব্যবস্থা।

আসিফ আহমেদ গাড়ি থেকে অফিসের গেটে নামার পর দেখে সেনিটাইজার কিংবা নিরাপত্তাকর্মীরা কেউ নেই। দুএকজন পিওন দাঁড়িয়ে আছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা অফিস ঝাড়াপোছা করছে ঠিকই। কিন্তু তাদের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে তারা হেলেদুলে চলছে। কাজে ভালোভাবে হাত লাগাতে পারছে না।

চারদিন ছুটি কাটানোর পর সবার মধ্যেই এক ধরনের আলসেমি ভাব থাকে। যাই যাচ্ছি করে অফিসে যেতে দেরি করে। কিন্তু পত্রিকা অফিসে যাই যাচ্ছি করলে চলে না। বলতে হয় এখনই যাচ্ছি। পত্রিকার অনলাইন খোলা ছিল। এই শাখার সংবাদকর্মীরা ঈদের দিনও অফিসে এসে কাজ করেছে। ওরা নিজেদের বাসা থেকে খাবার এনে খেয়েছে।

আসিফ আহমেদ অফিসে এসেই অনলাইন শাখার কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাদের খোঁজখবর নেন। তারপর নিজের দপ্তরে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মোবাইলে ফোন আসে। মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখেন, এমডি সাহেব ফোন দিয়েছেন। ফোন ধরে সালাম জানিয়ে আসিফ আহমেদ তাকে ঈদ মোবারক জানান। শাহবাজ খান ঈদ মোবারক জানিয়েই বললেন, আগামী রবিবার আপনার সঙ্গে মিটিং। সকাল এগারোটার মধ্যে চলে আসবেন। দেরি করবেন না। তালিকাটা নিয়ে আসবেন।

শাহবাজ খান আর কোনো কথা বললেন না। তিনি হঠাৎ করেই ফোন রেখে দিলেন। আসিফ আহমেদ ভাবনায় পড়ে যান। আবার সেই তালিকা! ছাঁটাই না করে তিনি শান্তি পাচ্ছেন না! কে তার মাথায় এটা ঢোকাল? হিসাব বিভাগ? ওদের তো কাজ একটাই। আয় কমেছে কাজেই লোক কমাও। এটাকে যে অন্যভাবে ম্যানেজ করা যায় সেটা ভাবে না। মিডিয়াবান্ধব হিসাবরক্ষক না হলে যা হয়! শুধু কস্ট-কাটিংয়ের কথা মাথায় রাখে। আর কিছু চিন্তা করে না। একটা বড় পত্রিকা। পত্রিকা ভালো না হলে পাঠকরা ছুড়ে ফেলবে। আর একবার ছুড়ে ফেললে সেটা আর হাতে তুলবে না। ডাসবিনে যেমন মানুষ কাগজ ছুড়ে ফেলে তেমনি পত্রিকাটাও ছুড়ে ফেলবে। এটা মালিক কর্তৃপক্ষও ভালো করেই জানে। জানে না হিসাব বিভাগ। ওরা চাকরি টিকিয়ে রাখার জন্য সারাক্ষণ কস্ট-কাটিংয়ের হিসাব কষে।

হিসাবরক্ষকদের হিসাবের গ্যাড়াকলে পড়েছি আমরা। এর আগে কস্ট-কাটিং করতে গিয়ে পত্রিকার সার্কুলেশনই কমিয়ে দিয়েছে। প্রায় এক লক্ষ কাগজ কমিয়ে দিয়েছে। এখন চেষ্টা করেও আর সার্কুলেশন বাড়ানো যাচ্ছে না। পত্রিকা হচ্ছে স্ত্রীলোকের মতো। একবার ঘর থেকে বের হয়ে গেলে মানুষ তাকে আর ঘরে তুলতে চায় না। সবাই চায় সার্কুলেশন বাড়াতে। আর এরা হিসাবরক্ষকদের কথায় সার্কুলেশন কমিয়ে এখন হায় হায় করছে। তারপরও সার্কুলেশনের লোকরাই এদের কাছে প্রিয়।

এ এক অদ্ভুত ধরনের অফিস। হিসাবরক্ষকদের কথা ছাড়া এরা এক চুলও নড়ে না। এরা এত বড় কীভাবে হলো তা আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন। সবাই দেখল, হিসাবরক্ষকের কথায় পত্রিকার সার্কুলেশন কমিয়ে কতবড় ক্ষতি হয়েছে! অথচ সেই লোকটি বহাল তবিয়তে আছে! তার সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। পদোন্নতি হয়েছে। অথচ দশ বছরেও অনেক সাংবাদিকের কোনো পদোন্নতি হয়নি। পদোন্নতির কথা বলতে গেলেই সোরগোল ওঠে, খরচ বেড়ে যাবে। কিছুতেই এটা করা যাবে না। পদোন্নতিই যদি না হয় তাহলে কিসের আশায় বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একটা ছেলে এখানে বছরের পর বছর পড়ে থাকবে! কেন পড়ে থাকবে। সে তো তার ক্যারিয়ারের জন্য অন্যত্র ছুটবেই।

বিষয়গুলো নিয়ে আসিফ আহমেদ বড্ড বেশি ভাবছেন। তিনি কিছুতেই মানতে পারেন না। তার মধ্যে ভয়ানক রকম অস্বস্তি হয়। অফিসের স্বার্থে অনেক কিছুই মেনে নিতে হয়। কখনো কখনো ধৈর্যও ধরতে হয়। সেটা সে ধরেও। কিন্তু যখন ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়! লেবু অতিরিক্ত কচলালে তিতা হয়ে যায়। এটা সবাই জানে। তারপরও কচলাতেই থাকে। এই অফিসটাকেও লেবুর মতো কচলানো হচ্ছে। তাই অফিসটি দিনে দিনে তেতো হয়ে যাচ্ছে।

বিষয়গুলো নিয়ে আসিফ আহমেদ অনেকক্ষণ ধরে ভাবেন। তারপর মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন, মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে তিনি চাকরি করবেন না। তিনি নিজের সঙ্গে অনেক বোঝাপড়া করেছেন। অতঃপর তিনি একটি পদত্যাগপত্র লিখলেন।

শাহবাজ খান সকালে অফিসে এসেই আসিফ আহমেদকে ডেকে পাঠালেন। মিডিয়া অফিসের খুব কাছাকাছি করপোরেট অফিস। তিনি অতি অল্প সময়ের মধ্যেই এমডি সাহেবের অফিসে গিয়ে পৌঁছলেন। এমপি সাহেবের পিওন আসিফ আহমেদকে দেখেই বলল, স্যার আপনি এসেছেন? স্যার আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন। আসেন স্যার, আসেন।
আসিফ আহমেদ এমডি সাহেবের অফিসে ঢোকামাত্র তিনি তাকে উদ্দেশ করে বললেন, তালিকা এনেছেন?
আসিফ আহমেদ অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে বললেন, সরি, কিসের তালিকা?
শাহবাজ খান বিরক্তির সঙ্গে বললেন, আপনাকে না বললাম ছাঁটাইয়ের তালিকা করতে!
আসিফ আহমেদ নরম গলায় বললেন, ছাঁটাইয়ের তালিকা আমি করিনি। আর এ মুহূর্তে আমার পক্ষে ছাঁটাই করা সম্ভব নয়। ছাঁটাই করলে আমি চলে যাওয়ার পর করেন।
শাহবাজ খান বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, মানে!
আমি পদত্যাগ করছি। এ ছাড়া আমি কোনো বিকল্প পথ দেখছি না।
শাহবাজ খান বললেন, ঠিক আছে। আপনি যখন কিছুতেই আমার প্রস্তাবে রাজি হচ্ছেন না; তখন আর কী করা! আমার তো অফিসটাকে টিকিয়ে রাখতে হবে!
আমি কিন্তু আপনাকে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছিলাম। ওই প্রস্তাবটি বিবেচনা করলে ছাঁটাইয়ের মতো মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হতো না। আসিফ আহমেদ বললেন।
শাহবাজ খান বললেন, আমরা ছাঁটাইয়ের বিকল্প কিছু ভাবছি না।
আসিফ আহমেদ আর কোনো কথা না বাড়িয়ে নিজের হাতে ফাইলের ভেতরে রাখা পদত্যাগপত্রটি শাহবাজ খানের দিকে এগিয়ে দিলেন। তিনি পদত্যাগপত্রের দিকে একবার তাকালেন। মুহূর্তের মধ্যে তার মুখাবয়বে যেন কালো ছায়া পড়ল। কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তারপর আসিফ আহমেদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ঠিক আছে। ভালো থাকবেন।
আসিফ আহমেদ বের হয়ে অফিসের দিকে গেলেন। তিনি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভাগীয় প্রধানরা ছুটে এল তার কক্ষে। অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে জানতে চাইল, এমডি সাহেবের সঙ্গে মিটিং কেমন হলো? ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত কি স্থগিত করা গেছে?
আসিফ আহমেদ মাথা নিচু করে কিছুক্ষণ বসে রইলেন। দীর্ঘদিন ধরে অনেক যত্নে যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন সেটি তাঁকে আজ ছেড়ে যেতে হবে। এই মর্মবেদনা তিনি কিছুতেই সহ্য করতে পারছেন না। তারা ভীষণ কান্না পাচ্ছে। কিন্তু কাঁদতেও পারছেন না। তিনি চলে গেলে যদি সবার চাকরি থাকত তাহলেও তিনি নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারতেন। তিনি চলে যাওয়ামাত্রই ছাঁটাই শুরু হয়ে যাবে। কতজন যে চাকরি হারায় কে জানে! বেতন হয়তো সবারই কমে যাবে।

আসিফ আহমেদকে বিমর্ষ দেখে কারো আর বুঝতে বাকি রইল না। তারপরও জানার কৌতুহল। সম্পাদকের মুখ থেকে শোনার কৌতুহল। কিন্তু সম্পাদক যে ভেতরে ভেতরে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছে! নিজের আবেগ সংবরণের চেষ্টা চালাচ্ছেন তা কি কেউ বুঝতে পারছেন? তা বুঝতে পারলে হয়তো কেউ আর প্রশ্ন করত না।
অবশেষে আসিফ আহমেদ ধরা গলায় বললেন, আমি চলে যাচ্ছি। তোমরা ভালো থেক। পত্রিকাটাকে ভালো রেখ।
সবাই বিস্ময়ের দৃষ্টিতে আসিফ আহমেদের দিকে তাকিয়ে রইল।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩০

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৯

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

এসএন 

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি