মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৯

বিষাদ বসুধা

আসিফ আহমেদ সকাল সকাল অফিসে এসেছেন। অফিসে এসেই বিজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান নূরুজ্জামান ও হিসাব বিভাগের প্রধান মনির হোসেনকে নিয়ে বৈঠকে বসেছেন। ঈদের আগে তিন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। শুরুতেই আসিফ আহমেদ বললেন, আমি কয়েকটি পয়েন্ট বলছি। সেগুলো মাথায় রাখ। প্রথমত, করোনার কারণে এবার যে অবস্থা হয়েছে তাতে বোনাস দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। দ্বিতীয়ত, পাওনাদারদের টাকা ঈদের আগে দেওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। আমাদের এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বেতন পরিশোধ করা। তিন মাসের বেতন পরিশোধ করতে না পারলে বিরাট ঝামেলায় পড়ব। ঈদের পর কেউ কোনো টাকা দেবে না। কারো টিকিটিও ছোঁয়া যাবে না। যা করার ঈদের আগেই করতে হবে। এখন মনির বল, তোমার অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে। এমডি সাহেব যে টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন সেটা কবে নাগাদ পেতে পার।
মনির হোসেন বলল, এমডি স্যার তিনটি চেকের মাধ্যমে ষাট লাখ টাকা দিয়েছেন। এই টাকাটা ব্যাংকে জমা হলে এক মাসের বেতন দেওয়া সম্ভব হবে।
আচ্ছা। সেই এক মাসেরটাই আগে দিয়ে দিও। বাকি দুই মাসের বেতন জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দেবে। দেরি করবে না। সবাই যখন এক সপ্তাহের মধ্যে তিন মাসের বেতন পাবে তখন সবাই খুশি থাকবে। বোনাস নিয়ে ওতো মাথা ঘামাবে না। বুঝতে পারছ?
জি স্যার।
আচ্ছা। তাহলে তোমার আর কত টাকা দরকার হবে?
মনির হোসেন বলল, ঈদের আগে বাকি দুই মাসের বেতন দিতে হলে প্রায় দুই কোটি টাকা প্রয়োজন। পাওনাদারদের বলেকয়ে না হয় ঈদের পরে দিলাম। দুই কোটি টাকার এক টাকা কম হলেও আমরা কিন্তু বেতন শেষ করতে পারব না। আর পোস্ট ডেটেড চেক এলেও হবে না। ওগুলো জমা হতে হতে ঈদের পর চলে যাবে। ঈদের আগে আমাদের হাতে আর দশ দিন সময় আছে। এরমধ্যে দুই শুক্রবার বন্ধ। দুই শনিবারও বেশির ভাগ বন্ধ থাকে। কাজেই হিসাব করলে সময় কিন্তু আছে ছয় দিন। এই ছয় দিনের মধ্যেই বিজ্ঞাপন বিভাগকে যা করার করতে হবে।

নূরুজ্জামান ঢাকার চার অঞ্চলের চার ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে জানাল, আমরা আশা করি ঈদের আগে বেতনের টাকাটা জোগাড় করতে পারব।
ধন্যবাদ। দেখ ঝামেলায় ফেল না ভাই। আমি কিন্তু ভয়ঙ্কর দুশ্চিন্তায় আছি।
ঠিক আছে স্যার। আপনি চিন্তা করবেন না।
দেখ আমার যদি আরও কোথাও বলতে হয় বলে দিই। তারপরও ঈদের আগে বেতনের ঝামেলা আমি শেষ করতে চাই।
জি স্যার। সেটা আমি বলব। তবে আশা করি আর বলতে হবে না। আপনি তো বেশ কয়েক জায়গায় বলে চেক এনেছেন।
তা এনেছি। সেটা কোনো সমস্যা না। এটা একটা টিম ওয়ার্ক। সবাই মিলে আমাদের কাজ করতে হবে। সংকটের সময় টিমওয়ার্কটা আরও বেশি প্রয়োজন। তোমরা দেখ। আরও যদি কোথাও বলতে হয় বলব। যেতে হলে যাব। কোনো অসুবিধা নেই। গ্রামীণ দিয়েছে?
আজ দেওয়ার কথা স্যার।
শোন, গ্রামীণের সিইও কিন্তু আমার খুব ঘনিষ্ঠ। যদি কোনো সমস্যা হয় আমার কথা বোলো।
স্যার, আপনাকে বেঁচেই তো খাচ্ছি।

নূরুজ্জামানের কথা শুনে আসিফ আহমেদ হেসে উঠল। মনির হোসেনও হেসে দিয়ে বলল, হ স্যার। কথাডা মন্দ কয় নাই।
যেভাবেই হোক টাকা আনুক। আমার কোনো অসুবিধা নেই। রবি, বাংলালিংক তারপর ইউনিলিভার, প্রাণ-আরএফএলসহ বড় কোম্পানিগুলোকে ভালো করে ধর। এদের কাছেই তো আমার বেশির ভাগ টাকা পড়ে আছে। আসিফ আহমেদ বললেন।
জি স্যার। আমি এখন তাহলে যাই। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই জোগাড় করতে হবে। শেষ দিনের আশায় থাকা যাবে না। শেষ দিন যা পাই সেটা জমা থাকুক। ঈদের কাজে লাগবে।
মনির হোসেন বলল, সেটা হলে তো আলহামদুলিল্লাহ। ঈদের পর পাওনাদাররা হুমড়ি খেয়ে পড়বে। তাদের টাকাটা জোগাড় করে যেতে পারলে বিরাট কাজ হবে।
এ কথা শুনে আসিফ আহমেদ ভীষণ খুশি। তিনি নূরুজ্জামানকে উদ্দেশ করে বললেন, তুমি যদি আগামী তিন দিনের মধ্যে বেতনের টাকা আনতে পার তাহলে বিশেষ বকশিস তুমি আমার কাছ থেকে পাবে।
নূরুজ্জামান বলল, ধন্যবাদ স্যার। দেখি কী করা যায়।
নূরুজ্জামান চলে যায়। মনির হোসেনও বিদায় নেয়। এর পরপরই সম্পাদকের কক্ষে আসে চিফ রিপোর্টার ও মফস্বল সম্পাদক। চিফ রিপোর্টার কথা বলতে গিয়ে মুখে আটকে গেল। ঠিক বোঝা গেল না কি বলেছে সে। আসিফ আহমেদ জানতে চাইলেন, তোমার কথাটা আমি বুঝতে পারিনি। কী বলতে চেয়েছ বল তো!
আ-আ-আমি আজ বাজার নিয়ে যেতে না পারলে ঘরেই ঢুকতে পারব না। ব-ব-বউ খুবই রেগে আছে। তিন দিন ধরে বা-বা-বাজারের কথা বলে। কিন্তু আমি এড়িয়ে যাই। তার কথা শুনেও না শোনার ভান করি। সকালে গাড়ি স্টার্ট দিতে গিয়ে দেখি স্টার্ট নেয় না। ঘটনা কী! দেখা গেল তেল নেই। ছেলের কাছ থেকে একশ’ টাকা নিয়ে তেল ভরলাম। তারপর অফিসে এলাম।
হুম। বুঝতে পারছি। আসিফ আহমেদ বললেন।

চিফ রিপোর্টার আবার বলল, জামিল ভাইয়ের কাছ থেকে দু দফায় টাকা ধার নিয়েছি। এখন ধার চাইতেও লজ্জা লাগে। সময় মতো পরিশোধ না করলে কেন দেবে বার বার? আসিফ ভাই, বেতন কি আজকে হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে?
দেখি। এমডি সাহেব কিছু টাকা দিয়েছে। ওই টাকা জমা হলে হয়তো আজকেও হয়ে যেতে পারে।
বেতনটা হলে যে কী বাঁচা বাঁচি!
মফস্বল সম্পাদক বলল, আমার ওয়াইফ বলল তুমি তো ঠিক মতো বেতনটেতন পাচ্ছ না; আমরা বরং গ্রামে চলে যাই। কিছুদিন গ্রামে থেকে আসি। গ্রামে পাঠাতেও তো টাকা দরকার। সেই টাকাও পকেটে নেই। তিন মাস পর বেতন পেলে কি চলা সম্ভব? যে টাকা বেতন পাই তা সবই খরচ হয়ে যায়। জমা থাকে না। ধার করে কতদিন চলা যায়!

আসিফ আহমেদ দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বললেন, আমি অফিসে এসেই বিজ্ঞাপন ও হিসাব বিভাগের সঙ্গে বসছিলাম। ওরাও চেষ্টা করছে। আজ না হলেও কাল এক মাসের বেতন পেয়ে যাবে।
চিফ রিপোর্টার সম্পাদককে ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন, আপনার চেষ্টাটা আমাদের সবারই চোখে পড়ছে। যাকগে, আমরা তাহলে মিটিংটা শেষ করি।
কী কী আছে আজকে? দিনের ঘটনা, বিশেষ রিপোর্ট? সম্পাদক জানতে চাইলেন।
চিফ রিপোর্টার বললেন, করোনার দিনের ঘটনা থাকবে। এ ছাড়া করোনায় খাতওয়ারি ক্ষতির রিপোর্ট আজ হাতে পাব। কয়েকজন রিপোর্টার এটা নিয়ে কাজ করছে।
মফস্বল থেকেও আসবে। এ ছাড়া জেলাগুলোতে করোনার টেস্ট ও চিকিৎসা অবকাঠামো কী আছে সে বিষয়ে রিপোর্ট পাব। মফস্বল সম্পাদক যোগ করল।
ভাই, চিকিৎসক, পুলিশ ও জেলা প্রশাসন কিন্তু খুব ভালো ভূমিকা রাখছে। এদের বিষয়ে একটা ইতিবাচক রিপোর্ট কিন্তু করা যায়। চিফ রিপোর্টার বলল।
আসিফ আহমেদ বললেন, কেন নয়? অবশ্যই করাও। মানুষের বিপদে যারা পাশে দাঁড়াবে তাদের নিয়ে অবশ্যই রিপোর্ট করতে হবে। তাহলেই মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াবে।
জি জি। আর বিকেলের মিটিংটা আমরা অনলাইনে সেরে ফেলতে পারি। এখন তো একসঙ্গে বসাটা একটু সমস্যা! আপনার বোধহয় আরেকটা মিটিং আছে! চিফ রিপোর্টার বলল।
হুম। ঠিক আছে। কোনো অসুবিধা নেই। আমি আছি।
এ সময় আসিফ আহমেদের ফোনের রিং বাজে। ফোন ধরতে ধরতে চিফ রিপোর্টার ও মফস্বল সম্পাদককে বিদায় জানায়। ওরা চলে যাওয়ার পর তিনি ফোনে কথা বলা শুরু করেন।

পত্রিকা অফিসে সাধারণত ঈদের ছুটি তিন দিন। ঈদ একদিন পেছালে ছুটি একদিন বাড়ে। এবার আগেভাগেই চার দিন ছুটি ঘোষণা করেছে সংবাদপত্র মালিক সমিতি। ঈদের ছুটি ঘোষণার আগেই তিন মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেন আসিফ আহমেদ। এক সপ্তাহের মধ্যে তিন মাসের বেতন পেয়ে সাংবাদিক-কর্মীরা মহা খুশি। তারা একে একে সম্পাদকের দপ্তরে এসে তাকে ধন্যবাদ জানায়। অনেকে বলে, ব্যাপারটা সত্যিই বিস্ময়কর।
সম্পাদককে ধন্যবাদ জানিয়ে মামুন রশিদ বলল, এটা কী করে সম্ভব হলো? এক সপ্তাহের মধ্যে তিন মাসের বেতন! সত্যিই কী পেরেসানিতেই না পড়েছিলাম! আপনি সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন।
আসিফ আহমেদ বললেন, আমরা ভাবছিলাম হয়তো দুই মাসের বেতন হলেও হতে পারে। তিন মাসের বেতন একসঙ্গে পাব একটা ভাবিনি। আমার যে কী আনন্দ লাগছে তা আর কী বলব!
রিশিত খান বলল, কেউ কেউ তো বলা শুরু করেছিল, আপনি পারছেন না। আর এখন তাদের বোল পাল্টে গেছে। এখন কি বলছে জানেন?
আসিফ আহমেদ বললেন, কী বলছে?
এখন বলছে, আপনার কোনো তুলনা হয় না। আপনি সত্যিই ক্যারিসম্যাটিক লিডার। রিশিত খান বলল।
মামুন রশিদ রিশিত খানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলল, আমার কানেও এসব কথা এসেছে। আমি বলতে চাইনি। আসলে সব অফিসেই বোধহয় কিছু লোক থাকে। তারা সব সময় দোষ খুঁজে বেড়ায়। সেটা যখন আবার মিথ্যা প্রমাণিত হয় তখন তারা বোল পাল্টে ফেলে।

এ সময় নূরুজ্জামান সম্পাদকের কক্ষে এসে বলল, স্যার আপনার দিক-নির্দেশনার কারণেই আমরা সফল হয়েছি। হিসাব বিভাগের মনির সাহেবকেও ওই দিন শক্তভাবে না বললে সে উল্টাপাল্টা কাজ করত। পরিবহনের টাকাটা আগে দিয়ে দিত। ওদের টাকা আগে দিলে আর বেতন দিতে হতো না। পরিবহনের কাছ থেকে ওরা কোনো কমিশন পায় কি না!
আসিফ আহমেদ তাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, বাদ দাও তো ওসব কথা! শোন, তোমাকে বলেছিলাম না, ঈদের আগে তিন মাসের বকেয়া পরিশোধ করতে পারলে তোমাকে বকশিস দেব! এই নাও। এটা রাখো।
নূরুজ্জামান ভীষণ খুশি। সে সম্পাদকের পায়ে সালাম করে বলল, স্যার আপনার কোনো তুলনা নেই। আপনি যা করলেন!
ধন্যবাদ। আমি শুধু গাইড করেছি। তোমরা চেষ্টা না করলে তো কিছুই হতো না। আমি বিধাতার কাছে শুকরিয়া জানাই। আমি যা চেয়েছিলাম তাই হয়েছে। সত্যিই আমার ঈদটা স্বস্তিতে কাটবে।
নূরুজ্জামান বলল, আপনার ওপর বাপ-মায়ের দোয়া আছে স্যার। আপনি অনেক বড় হবেন। সত্যিই অনেক বড় হবেন।
উপস্থিত সবাই নূরুজ্জামানের কথায় সায় দিল।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

 

Header Ad

বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি কমাতে কাজ করেছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি কমাতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। সম্প্রতি বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বজ্র নিরোধক যন্ত্র স্থাপন করাসহ এ বিষয়ক ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তুলতে কার্যকর কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে বলেও জানািন তিনি।

সোমবার সচিবালয়ের নিজের অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরী মাসদুপুইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।

প্রতিমন্ত্রী জানান, বজ্র নিরোধক প্রযুক্তি সুলভ ও ব্যাপকভিত্তিক করতে গবেষণা এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে প্রযুক্তি বিনিময় ও হস্তান্তরে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

সাক্ষাতকালে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে বজ্রপাত প্রতিরোধে প্রযুক্তি জ্ঞান বিনিময় ছাড়াও যন্ত্র স্থাপন, বজ্রপাত নিরোধী অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রশিক্ষণ প্রদানে তার দেশ সহয়তা প্রদান করবে।

জমজ দুই বোনের চমক, এসএসসি পরীক্ষায় পেলো জিপিএ-৫

অর্পিতা সাহা অর্পা ও অর্মিতা সাহা অর্ণা। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

এসএসসি পরীক্ষায় অর্পিতা সাহা অর্পা ও অর্মিতা সাহা অর্ণা জমজ দুই বোন চমক দেখিয়েছেন। তারা উভয়ই জিপিএ-৫ পেয়েছে। গৌরবময় এমন সাফল্য অর্জন করায় ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিকিৎসক ও আরেকজন প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

অর্পা ও অর্ণা টাঙ্গাইল পৌর শহরের আদালত রোডস্থ ওয়ালটন প্লাজার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ম্যানেজার অনুপ কুমার সাহা ও গৃহিনী সুম্মিতা ঘোষ দম্পতির জমজ দুই কন্যা সন্তান। টাঙ্গাইলের ড্যাফোডিল ইন্টার ন্যাশনাল স্কুল থেকে ওই দুইবোন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন এবং তারা একসাথেই বিন্দুবাসিনী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছিল।

 

অর্পিতা সাহা অর্পা ও অর্মিতা সাহা অর্ণা। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

গত রবিবার ১২ মে ফলাফলে দেখা যায়, জিপিএ -৫ প্রাপ্তের মধ্যে অর্পার প্রাপ্ত নম্বর- ১ হাজার ১২৩ আর অর্ণার প্রাপ্ত নম্বর-১ হাজার ১১৪। জমজ দুই বোন বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী।

অর্পিতা সাহা অর্পা জানায়, ভবিষ্যতে সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন চিকিৎসক হতে চায়। দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকার স্বপ্ন দেখছে সে। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলের আর্শিবাদ কামনা করেছে সে।

অর্মিতা সাহা অর্ণা জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে সে। স্বপ্ন পূরণে সকলের আর্শিবাদ কামনা করেছে অর্ণা।

জমজ দুই কন্যার বাবা অনুপ কুমার সাহা বলেন, আমি চাই আমার মেয়েরা মানুষের মত মানুষ যেন হয়। তাদের স্বপ্ন ও আশা পূরণে আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। তারা যেন দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত রাখতে পারে এটিই আমার প্রত্যাশা।

স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য আবাসন : গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন শহরে নিম্ন আয়ের বিশেষ করে বস্তিবাসীদের জন্য আবাসন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

সোমবার (১৩মে) সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী’র সভাপতিত্বে সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিববৃন্দ, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সিদ্দিকুর রহমানসহ মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক গণপূর্তমন্ত্রী নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি ও তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে তিনি পরিবেশ সুরক্ষা, প্রয়োজনীয় বনায়ণ, উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণ, খেলার মাঠ, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন, সৌরশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার, পোড়ামাটির ইটের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহার, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং এর ব্যবস্থা, সারফেস ওয়াটার ব্যবহারের সর্বোচ্চ সুযোগ রাখার পরামর্শ প্রদান করেন।

প্রাথমিকভাবে তিনি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় টঙ্গীর দত্তপাড়ায় তিনটি পর্যায়ে ১০০টি বহুতল ভবনে ১২৬০০টি ফ্ল্যাট নির্মাণের যে প্রস্তাবনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তা দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা দেন। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ১৭টি ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবনে ২১৪২টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। ২য় পর্যায়ে ৪৭টি ভবনে ৫৯২২টি ও তৃতীয় পর্যায়ে ৩৬টি ভবনে ৫৪৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মন্ত্রী রাজধানীর করাইল বস্তি ও টি এন্ড টি কলোনীর বস্তিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও গণপূর্ত অধিদপ্তরকে পৃথক পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন। ৭৫০ বর্গফুট গ্রস আয়তনের এসব ফ্ল্যাটের অভিন্ন ডিজাইন প্রণয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি প্রধান স্থপতিকে মৌখিক নির্দেশনা দেন।

রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য শহরেও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে পর্যায়ক্রমে এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য যে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন উত্তরা আবাসন প্রকল্পে (তৃতীয় পর্যায়) নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসনের জন্য ১০ একর জমি নির্দিষ্ট রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে উক্ত জমিতে নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসনের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির জন্য মন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপশি বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার অর্থায়নও সম্ভব হলে গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জনান।

ইতোমধ্যে রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ বস্তিবাসীদের জন্য ৫৩৩টি ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছে। এসব ফ্ল্যাটে তারা স্বাচ্ছন্দের সাথে বসবাস করছে। এছারা সিরাজগঞ্জের কোবদাস পাড়ায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের স্বল্প আয়ের মানুষের উন্নত জীবন ব্যবস্থা শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার নদী ভাঙ্গন কবলিত, ভূমিহীন বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। পরবর্তী প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এসব প্রকল্পের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্য মন্ত্রী পরামর্শ দেন। সেই সাথে সরকারের এসব জনহিতকর কার্যক্রম সম্পর্কে সর্বসাধারণের মাঝে ইতিবাচক প্রচারের জন্য তিনি পরামর্শ দেন।

সর্বশেষ সংবাদ

বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি কমাতে কাজ করেছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
জমজ দুই বোনের চমক, এসএসসি পরীক্ষায় পেলো জিপিএ-৫
স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য আবাসন : গণপূর্ত মন্ত্রণালয়
নওগাঁয় মেয়াদ পুর্ণ হওয়ার পরও গ্রাহকদের টাকা দিচ্ছে না প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স
চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১৬ মে থেকে আম সংগ্রহ শুরু
২৩ নাবিকসহ কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে এমভি আবদুল্লাহ
মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু
ঢাকাসহ ৭ বিভাগে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস
বিভাজন থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসা উচিত : মির্জা ফখরুল
ভোটারকে থাপ্পড় মারায় এমপির গালে ভোটারের পাল্টা থাপ্পড়, ভিডিও ভাইরাল
শিশু জায়েদকে মামার জিম্মায় দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
কেউ পাস করেনি বিরামপুরের খয়েরবাড়ী মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসায়
বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় অর্ধশতাধিক মার্কিন অধ্যাপক গ্রেপ্তার
প্রেম করলে শরীর ও মন ভালো থাকে: মন্দিরা
এবার একীভূত হলো সোনালী ব্যাংক-বিডিবিএল
১৩ শিক্ষকের বিদ্যালয়ে ১৪ পরীক্ষার্থীর সবাই ফেল, প্রধান শিক্ষককে শোকজ
ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠিন সিদ্ধান্ত মিসরের
নিজের রেকর্ড ভেঙে ২৯ বার এভারেস্ট জিতলেন রিতা শেরপা
বাড়ি ফেরার পথে গরুবাহী ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন এক পুলিশ সদস্য
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ