রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-৩১  

খুব ভোরে আলেক্সান্দ্রিয়া শহর জেগে ওঠার আগেই আমরা দুজন হাঁটতে হাঁটতে সমুদ্রের ধারে চলে গেলাম। রাস্তায় তেমন যানবাহন চলাচল শুরু হয়নি। পুরো ফুটপাথ জনমানবশূন্য। গভীর রাত পর্যন্ত যারা বাঁধের উপরে পাথরের দেয়ালে বসে ছিল, তারাও নিশ্চয়ই ঘুমাচ্ছে। প্রায় শান্ত সমুদ্রের ছোট ছোট ঢেউ এসে পাড়ে ফেলে রাখা পাথরের চৌকোগুলোতে দোলা দিয়ে যাচ্ছে, মাঝে মাঝেই সূর্যের কিরণ ঢেউয়ের সঙ্গে ঝিকমিক করে উঠছে।

সাগরের নীল জলে চোখ রেখে আমরা বেশ কিছুক্ষণ বাঁধের উপরে বসে রইলাম। পার্কের ডান দিকের প্রান্তে একটা ট্রাফিক সিগনালে লাল বাতি সবুজ বাতি ক্রমাগতভাবে জলছে, নিভছে কিন্তু কেউ কোনো পাত্তা দিচ্ছে না। দেখতে দেখতেই দুজন ট্রাফিক পুলিশ এসে দাঁড়িয়ে গেল এবং সিগন্যাল যাই থাকে, আমাদের দেশের মতোই হাত দেখিয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ শুরু করলে জেব্রা ক্রসিংয়ে গাড়ি-ঘোড়া দাঁড়াতে শুরু করল। আমরা প্রচলিত অর্থে গাড়িঘোড়া বললেও এখানে কিন্তু সত্যিই গাড়ির পাশাপাশি সিগন্যালে ঘোড়াও দাঁড়িয়ে যায়।

আলেক্সান্দ্রিয়ায় ভূমধ্যসাগর

মনে হতে পারে কায়রো আলেক্সান্দ্রিয়া কিংবা লুক্সরের মতো আধুনিক শহরে চারপেয়ে ঘোড়াগুলো খুরে খুটখাট শব্দ তুলে ছুটে চলেছে, এই দৃশ্য বড়ই বেমানান। মাঝে মধ্যে তারা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে পথের মাঝখানে যে কাণ্ড করছে তাও গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু আমাদের দেশে অশ্বশক্তির পরিবর্তে যে মনুষ্য শক্তিচালিত হাজার হাজার সাইকেল-রিকশা শহরে নগরে ছুটে বেড়াচ্ছে সেটাও কী আমাদের উন্নয়ন, আমাদের সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে মানানসই!

ধীরে ধীরে রোদের তাপ ও পথে গাড়ির সংখ্যা বাড়তে থাকলে আমরা জেব্রাক্রসিং পেরিয়ে পার্কের পাশ দিয়ে হোটেলের পথ ধরলাম। বিপরীত দিকের ফুটপাথে আলেক্স ব্যাংক ভবনের সামনে ছয় ছয়টি ছোট ছোট ভাস্কর্য জিগজ্যাগ করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। চেহারায় গ্রিক এইসব মূর্তিমানেরা নিশ্চয়ই কোনো কীর্তিমান বা কীর্তিমতি নারী পুরুষ হবেন। কিন্তু তাদের কোনো পরিচয় পাওয়া গেল না।

ফেরার পথে আর একবার জগলুল পার্কে স্তম্ভশীর্ষে জগলুল পাশার ভাস্কর্যের দিকে তাকিয়ে মনে হলো, কাজী নজরুল ইসলাম তার চিরঞ্জীব জগলুল কবিতায় মিশরকে লিখেছেন মিসর।

সড়কের পাশে ভাস্কর্য

কায়রোর নাইল নিউজের প্রযোজক আমার সতীর্থ লামিয়া ইব্রাহিমের সঙ্গে যখন প্রথমবার সউলে দেখা হয়, তখন সে মিশরের যে উচ্চারণ শিখিয়েছিল তা উচ্চারণ করা আমার জন্যে রীতিমতো কঠিন হলেও সেটা ছিল ‘মিছছছরর...’ এর মতো কিছু একটা। উচ্চারণ যাই হোক আপাতত ভ্রমণ গদ্যের গুরুমশাই সৈয়দ মুজতবা আলীকে অনুকরণ করে ‘মিশর’ই সহি বলে ধরে নিচ্ছি।  লে মেট্রোপলের নিচে যে রেস্টুরেন্টে ব্রেকফাস্ট করতে ঢুকলাম তার নাম ত্রিয়ানন। রাবনের প্রকৃত নাম দশানন বলে জানতাম, কিন্তু তিনমুণ্ডুবিশিষ্ট কারো কথা মনে পড়ে না। রেস্টুরেন্টের নাম বরং ত্রি-নয়ন বা ত্রিনয়নী হলে ভালো হতো। নামে কী আসে যায়, নাস্তা ভালো হলেই ভালো।

বেশ কয়েকটা সেট মেন্যুর মধ্যে থেকে বেছে অর্ডার দিলেও সেট ম্যেনুতে পছন্দ মেলানো কঠিন। আমেরিকান ব্রেকফাস্টের টোস্ট অমলেটের সঙ্গে কফি থাকলেও ইজিপশিয়ান নাস্তার সঙ্গে চা কফি নেই। ভিন্ন করে নিতে হবে। অগত্যা তাই সই, পাউরুটি আর ডিমভাজা তো আমাদের নিত্যদিনের খাবার। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল আমার বালাদির সঙ্গে রাজমার মতো মোটা দানার ডাল আর সেদ্ধ ডিম মোটেও উপাদেয় কোনো খাবার ছিল না। এরে চেয়ে বরং হেনার চিজ টোস্ট, ক্রসো, অমলেট অনেক ভালো ছিল।    

আলেক্সসান্দ্রিয়া ফোর্ট

ব্রেকফাস্টের পরে ঘরে ফিরে তড়িঘড়ি তৈরি হয়ে হোটেল থেকে একবারে চেক আউট করে গাড়িতে উঠে বসলাম। আলেক্সান্দ্রিয়ার সেই ফারাও যুগের বাতিঘর নেই, হাজার বছরের জ্ঞান ভাণ্ডার পুরোনো বিবিলিওথিক নেই, নেই অটোমান সাম্রাজ্যের স্বর্ণযুগ কিংবা কিং ফারুকের অপরিণামদর্শী বিলাসের রাজত্ব। কিন্তু আলেক্সান্দ্রিয়ায় এসে কাইতবে ফোর্ট না দেখে ফিরে যাওয়াটা হবে অসম্পূর্ণ ভ্রমণ।

আমরা হাতের ডান দিকে সমুদ্র রেখে কাইতবে সিটাডেলে পৌঁছলাম সকাল সাড়ে নয়টার দিকে। অনেক দূরে থেকেই দেখা যায় দূর্গ শীর্ষে উড়ছে মিশরের জাতীয় পতাকা। ভারতের দিল্লি বা জয়পুরের কোনো দুর্গ নগরীর মতো ফোর্ট এলাকায় পৌঁছবার আগে একটা বাজার, সারি সারি রেস্তোঁরা এবং স্যুভ্যেনিয়ারের দোকান পার হয়ে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা খুঁজে বের করাই কঠিন হয়ে গেল। সৌরভ এর আগেও একাধিকবার এসেছে, কাজেই আমাদের জন্যে ঘণ্টা দুয়েক সময় বেঁধে দিয়ে সে গাড়িতেই থেকে গেল। ছুটির দিন বলেই হয়তো সকালেই প্রচুর দর্শণার্থীর ভিড়ে কাউন্টার থেকে টিকিট পাওয়াই কঠিন মনে হলো। ভেবেছিলাম লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট পেতে আর কতক্ষণই বা লাগতে পারে। 

দূর্গ চত্বর

ইউরোপে দেখেছি, লাইন যতো দীর্ঘ হোক, কেউ অধৈর্য্য না হয়ে সকলেই গুটি গুটি পায়ে এগোতে থাকে। এখানে আমাদের দেশের মতোই লাইন ভেঙে আগে যাবার চেষ্টা দেখা গেল কারো কারো মধ্যে। অবশ্য সকলের সম্মিলিত হৈ চৈ-এর কারণে লাইন ভাঙা মাস্তানেরা খুব সুবিধা করতে পারল না। এক তরুণ তো সিনিয়ার সিটিজেন বলে আমাকে এগিয়েও দিতে চেয়েছিল তবে সে সুযোগ গ্রহণ না করেই একশ আশি ইজিপশিয়ান পাউন্ড দিয়ে তিনজনের জন্য টিকিট কিনে সাতশ বছর আগে ঢুকে পড়লাম।  

অটোমান সাম্রাজ্যের অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি থামিয়ে দিতে, বিশেষ করে আলেক্সান্দ্রিয়াকে রক্ষা করতে ১৪শ শতকে সুলতান কাইতবে তৈরি করেছিলেন সুদৃশ্য এই দুর্গ। কৌশলগত কারণে ভূমধ্য সাগরের তীরে আলেক্সান্দ্রিয়া বন্দর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া একটি সরু ভূখণ্ডের উপর দূর্গটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সুলতান বাহাদুরের পরবর্তী বংশধরদের অবশ্য শেষরক্ষা হয়নি, ১৫১২ খ্রিস্টাব্দে অটোমানরা মিশরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। তবে দূর্গটি টিকে গেছে এবং সুলতান কাইতবে হেরে গেলেও শেষ পর্যন্ত নামটি হারিয়ে যায়নি। সেই কারণে সাতশ বছর পরেও দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর এই মধ্যযুগীয় দূর্গ।

দূর্গে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে

সামনের ফটক দিয়ে দূর্গ চত্বরে প্রবেশের পরে মাঝের পাথর বাঁধানো পথের বাঁদিকের দেয়াল জুড়ে ছোট ছোট কক্ষ আর সামনে বিস্তৃত পাথুরে প্রাঙ্গণ। ডান দিকে তুলনামূলকভাবে অপরিসর সবুজ ঘাসের আঙিনা ঘিরে সবুজ কাঁটা জাতীয় গাছের বেড়া। কয়েক সারি দীর্ঘ পাম গাছ আর মাঝে কয়েকটি ছোট্ট মাটির দ্বীপে ঘেরা সবুজ গাছপালার সঙ্গে ছিটেফোঁটা ফুলের আভাস। পায়ে চলার পথের পাশেও এদিকে চলছে ফুল ফোটাবার প্রচেষ্টা। অনেকেই ঘাসের উপর হাত-পা ছড়িয়ে বসে পড়েছে। বাঁ দিকের পাথরের প্রান্তরের পরিবর্তে আমরা ডান দিকে খানিকটা এগোতেই একদল ছেলে-মেয়ের পাল্লায় পড়লাম। ওরা আমাদরে সঙ্গে ছবি তুলতে চায়। ছবি তোলার সঙ্গে সঙ্গে আরবিতে চিৎকার করে সমস্বরে ওরা কী যে বললো আল্লাহ মালুম। তবে ভিনদেশিদের সঙ্গে ছবি তুলতে পেরে ওরা যে খুশি হয়েছে বোঝা গেল। এরপর সামনে এগিয়ে খাড়া সিঁড়ি দিয়ে আমরা উপরে উঠে গেলাম।   

   প্রায় বর্গাকার এই দূর্গের দেয়াল টাওয়ার এবং কুঠুরিগুলো ভারী পাথরের তৈরি। উত্তর দিকের দুটি অংশের একদিকে সমুদ্র। সেখানে দূর্গের খিলানযুক্ত দেয়ালে উঠে বসে আছে অনেকেই। তারা কী রোদ পোহাচ্ছে না সমুদ্র দর্শন করছে তা কে জানে! উপরের অংশের খাঁজকাটা ফোকরগুলো দিয়েই কামানে নল গলিয়ে দিয়ে গোলাগুলি ছোঁড়ার ব্যবস্থা। আর নিচের অংশের ছাদের উপর প্রশস্ত পথ ধরে আমরা হাঁটতে হাঁটতে এগোতে থাকি। এরই নিচের কক্ষগুলিতে এক সময় বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করার কলাকৌশল নিয়ে বসবাস করত সে কালের সৈন্য-সামন্ত।

দূর্গ দেয়াল থেকে সমুদ্র

উপর থেকে পেছনের মূল দূর্গের টাওয়ার এবং প্রহরা চৌকিসহ প্রধান ফটক চমৎকার দেখা যায়। পুরো অংশটা ঘুরে পেছন দিকে এসে দেখলাম এদিকের প্রতিরক্ষা দেয়ালের ওপারেও সমুদ্র। অর্থাৎ প্রায় তিন দিক থেকে সমুদ্র ঘিরে রেখেছে এই দূর্গ। সেকালে নৌপথে আক্রমণের আশঙ্কা বেশি ছিল বলে কাইতবে সিটাডেলের স্থান নির্বাচনের সিদ্ধান্তটি ছিল সমর বিশারদদের কাছে অনন্য সাধারণ।

নিচে নামার পরে পেছন থেকে দূর্গের কুশলী গঠনশৈলীর অনেকটাই দেখা যায়। এখানে স্কুল পড়ুয়া শাখামৃগেরা এক দেয়াল থেকে অন্য দেয়ালে বিপজ্জনকভাবে লাফিয়ে পার হচ্ছে। সূর্যের বিপরীতে বলে এই এলাকাটা ছায়া ছায়া, রোদের তাপ বেশ কম। পেছনের বুলন্দ দরওয়াজা দিয়ে ঢোকার পরে দেখলাম ভেতরটা বেশ ঠাণ্ডা। ভারি পাথরের দেয়াল দিয়ে ঘেরা এই অংশেই রয়েছে আলেক্সান্দ্রিয়ার প্রথম এবং মিশরের দ্বিতীয় মসজিদ। মসজিদের মিহরাব এবং মাথার উপরের সিলিংয়ে ব্যবহার করা হয়েছে লাল রঙের ছোট ছোট পাথরের টুকরো আর মেঝেতে ব্যবহৃত সাদা কালো মার্বেল পাথরের সুদৃশ্য কারুকাজ এখনো অক্ষত আছে। মসজিদের মিহরাবটি ঠিক কাবার দিকে মুখ করে তৈরি করা হয়নি।

আলেক্সান্দ্রিয়া প্রথম মসজিদ

দূর্গের স্থপতি নাকি বলেছিলেন, ‘এই দূর্গ প্রধানত ইসলামের শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য তৈরি। প্রার্থনার চেয়ে প্রতিরোধ এখানে বেশি গুরুত্বপূর্ণ!’ ভাবতে অবাক লাগে সেই সালতানাতের যুগেও এমন কথা বলার মতো বুকের পাটা একজন স্থপতির ছিল!   

দুপাশের দীর্ঘ দেয়াল দিয়ে ঘেরা সরু গলি পথ দিয়ে হেঁটে ভাণ্ডার ঘর, গম বা যবের মতো দানাদার ফসল গুঁড়ো করে আটা ময়দা  তৈরি করার ঘানিঘর ঘুরে দেখার পাশাপাশি এই কক্ষগুলো, এর শক্তপোক্ত নির্মাণ এবং অনেক উপরের ফাঁক-ফোকর দিয়ে আসা রোদের আলোয় আলোকিত করার ব্যবস্থা দেখে বিস্মিত হতে হয়। অপরিসর সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেলে একটা বৃত্তাকার খোলা জায়গা দিয়ে নিচের অংশ দেখা যায়। বেশ কষ্টসাধ্য এই ওঠা নামা শেষ করে আমরা বাইরে বেরিয়ে আসি। মূল দূর্গ কাঠামোর পেছন দিক দিয়ে ঢুকে সামনে বেরোতেই যে বিশাল চত্বর তার পাশের কক্ষগুলোতে এক সময় ছিল মাদ্রাসা। এখন অসংখ্য শিশু-কিশোর হৈ চৈ করে সেই চত্বর মাতিয়ে রেখেছে।

ভেতরে বিভিন্ন স্তরে কুশলী স্থাপত্য

দূর্গের দিয়ে এগিয়ে আসা উপদ্বীপটি স্থানীয় মৎস্যজীবীদের কাছে প্রিয় হলেও পর্যটক আকর্ষণের দিক থেকেও ভীষণ জনপ্রিয়। বাইরে থেকে আসা দর্শনার্থী ছাড়াও স্থানীয় মানুষেরাও যে পরিবার পরিজন নিয়ে এখানে বেড়াতে আসেন তা বেশ বোঝা যাচ্ছিল। দল বেঁধে শিক্ষা সফরে আসা এবং স্কুল কলেজের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ঘুরতে আসা ছাত্র-ছাত্রীদেরও দেখা মেলে এই দূর্গ চত্বরে। অকারণে বেড়াতে আসার জন্যেও তো জায়গাটা চমৎকার। 

সাড়ে এগারোটায় বেরিয়ে যাবার কথা থাকলেও ঘড়িতে বারোটা বেজে গেছে। কাজেই দূর্গ প্রাচীরের নিচে একদিকে বিশাল সমুদ্র আর অন্যদিকে অসংখ্য রেস্তোরাঁ, কফিশপ, আইসক্রিম পার্লার এবং ভ্রাম্যমাণ সুভ্যেনিয়ার বিক্রেতাদের হাঁক-ডাক পেছনে ফেলে সৌরভকে খুঁজে বের করে গাড়িতে উঠে বসলাম। এবারে আমরা ভিন্ন পথে কায়রো ফিরব। মহাসড়কটির নাম এগ্রিকালচার রোড। 

চলবে...   

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-৩০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৭ 

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

এসএন 

 

Header Ad
Header Ad

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন

কবি দাউদ হায়দার। ছবি: সংগৃহীত

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রতিবাদী ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। জার্মানির বার্লিনে স্থানীয় সময় শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে একটি রিহ্যাবিলিটেশন হোমে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

কবির মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করেছেন লন্ডনপ্রবাসী নাট্যশিল্পী ও সংগঠক স্বাধীন খসরু এবং বার্লিনে অবস্থানরত কবির ঘনিষ্ঠজন সংস্কৃতিকর্মী মাইন চৌধুরী পিটু।

জানা যায়, গেল বছরের ডিসেম্বর থেকে কবি দাউদ হায়দার বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। কয়েক মাস ধরে বার্লিনের বিভিন্ন হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল। ১২ ডিসেম্বর নিজ বাসার সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হলে তিনি জ্ঞান হারান এবং তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেসময় তাকে ‘কৃত্রিম কোমা’-তে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকায় শেষ পর্যন্ত শনিবার রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মরদেহ বার্লিনেই দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন পিটু। তবে কবির শেষ বিদায়ের সময় ও স্থান নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলোচনার পর।

দাউদ হায়দার বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নির্বাসিত কবি হিসেবে পরিচিত। ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত তার একটি কবিতা—‘কালো সূর্য্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’—এর কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৭৪ সালের ২০ মে তাকে মুক্তি দিয়ে পরদিন কলকাতাগামী একটি বিশেষ ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়। ওই ফ্লাইটে অন্য কোনো যাত্রী ছিল না।

ভারত সরকারও পরবর্তীতে তাকে বহিষ্কার করে। পরে নোবেলজয়ী জার্মান সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের প্রচেষ্টায় ১৯৮৭ সালে তিনি জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেন এবং সেখানেই বাকিজীবন কাটান।

দাউদ হায়দার বাংলা সাহিত্যে সত্তরের দশকের অন্যতম প্রধান কবি হিসেবে বিবেচিত। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’। সাহসী ও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে তিনি বাংলা কবিতায় আলাদা একটি ধারা সৃষ্টি করেন।

১৯৭৩ সালে লন্ডন সোসাইটি ফর পোয়েট্রি তার একটি কবিতাকে ‘দ্য বেস্ট পোয়েম অব এশিয়া’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। সে সময় তিনি ‘দৈনিক সংবাদ’-এর সাহিত্য পাতার সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনি বাংলা ট্রিবিউনে নিয়মিত কলাম লিখতেন।

দাউদ হায়দার ছিলেন চিরকুমার। জীবনের শেষভাগে একাকিত্ব ও বয়সজনিত জটিলতায় ভুগেছেন। তিনি ছিলেন একজন ব্রডকাস্ট সাংবাদিকও।

কবি দাউদ হায়দারের জন্ম ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, পাবনা জেলায়। নিজের লেখনী ও বিশ্বাসের কারণে স্বদেশ থেকে বহু দূরে দীর্ঘদিন কাটালেও বাংলা ভাষা ও সাহিত্যই ছিলেন তার চেতনাজগতের কেন্দ্রবিন্দু।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার তিনটি ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর তুমুল গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই সেনাসদস্যসহ মোট ১৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে আটজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়। একই দিনে উত্তর ওয়াজিরিস্তান ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের দুটি স্থানে আরও দুটি অভিযান চালানো হয়।

উত্তর ওয়াজিরিস্তানে চারজন এবং দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের গোমাল জ্যাম এলাকায় তিনজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে সেনাবাহিনী। এই সংঘর্ষগুলোর একটিতে পাক বাহিনীর দুই সেনা সদস্য প্রাণ হারান।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে।

এদিকে, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, এসব অভিযান ছিল পরিকল্পিত ও গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে, বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে।

‘পাকিস্তান ইন্সটিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ’ (PICS) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ডিসেম্বরের তুলনায় প্রায় ৪২ শতাংশ বেড়েছে। এতে করে পুরো অঞ্চলে নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর পৌর এলাকার কাইতকাই রূপালী ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ধনবাড়ী উপজেলা পৌর এলাকার চরভাতকুড়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে সিএনজি চালা হেলাল উদ্দিন (৫৫)। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সিএনজি যাত্রী ছিলেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক এ বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাতে দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজি ধনবাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজির চালক ঘটনা স্থলে মারা যান। এ সময় গুরুতর আহত হয় এক যাত্রী।

এরপর তাকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে তিনি মারা যায়।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক জানান, নিহত সিএনজি চালকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে, অজ্ঞাত ওই যাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি, শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭
টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২
হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ