রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-৩০

আলেক্সান্দ্রিয়ায় আমাদের রাত্রিবাসের জন্যে সৌরভ আগে থেকেই হোটেল লে মেট্রোপলে বুকিং দিয়ে রেখেছিল। সাগর তীরের পায়ে চলার পথ থেকে নেমে রাস্তা পার হয়ে একটা ছোট পার্কের পাশ দিয়ে হেঁটে আমরা হোটেলে পৌঁছালাম। কয়েকটা সিঁড়ি ভেঙে লে মেট্রোপলে ঢুকেই বুঝলাম আমরা একটি প্রাচীন অভিজাত অতিথিশালায় ঢুকে পড়েছি। 

রিসেপশনের অংশটুকু দেখে শুধু অভিজাত না বলে বলা যায় রাজকীয়! রানা ভাইকে সে কথা বলতেই তিনি বললেন, ‘আসলেই তো আমরা কিং ফারুকের রয়্যাল গেস্ট হাউসের অতিথি।’ চারিদিকে তাকিয়ে দেখি দামি কাঠের টেবিলে শোভা পাচ্ছে শ্বেতপাথরের ভেনাসের মূর্তি, পরী-শিশুদের হাতের বাতিদানে জ্বলছে শ্বেতশুভ্র গোলক। উপর থেকে নেমে এসেছে স্ফটিকের ঝাড়বাতি, দেয়ালে দেয়ালে ঝুলছে প্রাচীন পেইন্টিং, সিলিংয়ের নিচেই দেয়ালে সোনালি কারুকাজ এবং সুদৃশ্য ভারী পর্দা আলোর প্রবেশাধিকার সীমিত করে ঘিরে রেখেছে বাইরের দিকের কাচের দেয়াল। তবে যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে, তা হলো এই ভবনে উপরে ওঠার লিফট!

হোটেল মেট্রোপলের রিসেপশন

প্রাগৈতিহাসিক যুগের ঊর্ধ্বমুখী উত্তোলনের এই বাহন দেখেই অনুমান করা যায় লিফট ব্যবহারে পুরোনো দিনের রাজা বাদশাদের চেয়ে আমরা এ যুগের সাধারণ মানুষও অনেক ঝামেলাহীন জীবন পার করছি। লে মেট্রোপলের লিফটে ওঠার অভিজ্ঞতা ভীতিকর এবং এর পরিচালনা পদ্ধতি যথেষ্ট জটিল। একজন লিফটম্যান অবশ্য সার্বক্ষণিক দরজায় দাঁড়িয়ে থাকেন। দরজার বাইরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনো উপায় নেই, কারণ চারজনের বেশি যাত্রীর একসঙ্গে সেই বাহনে স্থানসংকুলান হয় না।

লিফটটি চলার প্রস্তুতি হিসেবে একটি সোনালি ধাতব গেট টেনে দেবার পরে আরও একটি লোহার দরজা বন্ধ করে সিন্দুকের হাতলের মতো হাতল চেপে দিতে হয়। তারপরে কারুকাজ করা ফ্রেমে বাঁধানো বোতাম টিপে উপরে ওঠার ব্যবস্থা! ইষ্ট নাম জপতে জপতে তিনতলায় উঠে কার্পেট পাতা লম্বা করিডোর পেরিয়ে ঘরের দরজায় পৌঁছলাম। সারা পৃথিবীর আধুনিক হোটেলে কার্ডের চাবি চালু হলেও এখানে সেই প্রাচীনকালের ধাতব চাবি ঘুরিয়ে ঘরে ঢুকে দেখলাম বাদশাহ ফারুক তার ভবিষ্যতের অতিথিদের জন্যে এখানেও বাদশাহী এন্তেজাম করেই রেখেছেন।

খাট পালঙ্ক, চেয়ার টেবিলসহ আসবাবপত্র ও দরজা জানালায় সেই রাজকীয় বিত্ত বৈভবের আভাস। ঘরের মেঝে তো বটেই দেয়ালগুলোও চিত্রিত কার্পেটে মোড়া। সত্যি বলতে কী, রাজকীয় পরিবেশে অনভ্যস্ত আমার রীতিমতো অস্বস্তি লাগে। অনেক নামিদামি পাঁচতারা আধুনিক হোটেলে যে সমস্যা কখনো অনুভব করিনি তেমন এক ধরনের দম আটকানো অবস্থা থেকে দরজার ভারী পর্দা সরিয়ে ব্যালকনিতে বেরোতেই এক ঝলক বাইরের বাতাস ঘরে ঢুকে পড়ল। বাঁয়ে অল্প দূরেই নীল সমুদ্র আর সামনে কোলাহল মুখর শহরের একটি চত্বর ঘিরে যানবাহনের ব্যস্ত চলাচল। লাঞ্চের সময় পার হয়ে যাচ্ছে বলে খুব বেশিক্ষণ ব্যালকনিতে দাঁড়ানো হলো না। রানা ভাই দরজায় নক করে ১৫ মিনিটের মধ্যে ছয়তলার উপরে রুফটপ রেস্টুরেন্টে চলে আসতে বললেন। আমি ঘরে ঢুকে বিছানায় পড়েই ঘুমিয়ে গেলাম।

ব্যালকনি থেকে সমুদ্র

মিশরীয় রাজতন্ত্রের শেষ সম্রাট বাদশাহ ফারুকের দেড় যুগের রাজত্বকাল ১৯৫২ সালে এক রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে শেষ হলে শিগগিরই গামাল আবদেল নাসের দেশটিকে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসাবে ক্ষমতা আসেন। পনের বছরের শাসনকালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সহযোগিতায় আসোয়ান বাঁধ নির্মাণের মধ্য দিয়ে মিশরের অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চারের পরপরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নাসেরের মৃত্যু হলে বৃটিশ তাড়ানো স্বাধীন মিশরের উন্নয়ন অনেকটাই স্তিমিত হয়ে যায়।

পরবর্তী সময়ে নামে অ্যারাব রিপাবলিক অব ইজিপ্ট হলেও নাসেরের পর থেকে আনোয়ার সাদাত কিংবা হুসনী মোবারক থেকে আবদেল ফাতাহ এল সিসি পর্যন্ত রাজনৈতিক পট-পরির্তনের দিকে চোখ রাখলে বোঝা যায় মিশরের প্রজাতন্ত্র আসলে গত ষাট বছর ধরেই সামরিক বাহিনী সমর্থিত স্বৈরতন্ত্র, বিরোধী মতবাদীদের দমন নিপীড়ন এবং আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বাইরে প্রায় কখনোই জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে ওঠেনি। পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের শাসনামলের মতোই বর্তমান মিশরে চলছে লৌহমানব ফিল্ড মার্শাল এল সিসির সামরিক-গণতান্ত্রিক শাসন।

নগরীর রেস্তোরাঁ

ঘুমটা খুব তাড়াতাড়ি ভেঙেছিল বলে দ্রুত উঠে সেই ভয়ঙ্কর লিফটে না উঠে সিঁড়ি দিয়ে ছয় তলার উপরে ছাদ রেস্তোরাঁয় পৌঁছালাম।  টেবিলে বসে সমুদ্র দর্শনের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ দুই সারিতে পাতা টেবিলের খোলা দিকে বসেছিলাম। দৃশ্য চমৎকার ও বাইরে যথেষ্ট রোদের তাপ থাকলেও সমুদ্রের ঠান্ডা বাতাস কিছুক্ষণের মধ্যেই কাঁপ ধরিয়ে দিল। পরিবেশকদের একজন এসে গাড়ির কাচ নামানোর মতো ট্রান্সপারেন্ট শিল্ড নামিয়ে দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ থেকে রক্ষা করলে আমরা ফারুক সাহেবের রাজকীয় ভবনের রেস্তোরাঁয় বসে আলোচনা করছিলাম ভাগ্যহত বাদশা ফারুকের কথা।

ইতালিতে নির্বাসিত জীবনযাপনের সময় ভ্যাটিকান সিটির কাছে একটি ফরাসি রেস্তোরাঁয় এক গ্রান্ড পার্টিতে ভেড়ার ঠ্যাং চিবিয়ে খাওয়ার সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মাত্র পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সে ফারুকের মৃত্যু হয়। দু দুবার বিবাহ বিচ্ছেদের পরে তখন তার সঙ্গে ছিলেন স্বর্ণকেশী এক ইতালিয় সুন্দরী। মিশর ও সুদানের এক সময়ের একচ্ছত্র অধিপতি বেচারা ফারুকের এই মৃত্যু সম্ভবত তার চার পুত্র-কন্যা ছাড়া আর কাউকেই শোকাভিভূত করেনি।

কথা ছিল লাঞ্চের ঘণ্টাখানেক পরে নগর দর্শনে বেরিয়ে পড়ব। কিন্তু ঘুমিয়ে না পড়লেও রাজকীয় শয্যায় শুয়ে গড়াগড়ি করে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল। ধীরে সুস্থে ঘরে বসেই চা বানিয়ে খেয়ে সাহস করে লিফটে চেপে নিচে নেমে এলাম। লে মেট্রোপল চারতারা হোটেল হলেও সুইমিংপুল ও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা হোটেলের বাইরে খানিকটা দূরে। কাজেই সেই পার্কিং থেকে গাড়ি নিয়ে আসতেও খানিকটা সময় গেল।

স্টেইনলি ব্রিজ

শেষ পর্যন্ত সৌরভ যখন স্টিয়ারিং হুইলে হাত রেখে আলেক্সান্দ্রিয়া নগরের পথে চলতে শুরু করল তখন রাস্তার দুপাশে সড়কবাতিগুলো জ্বলে উঠতে শুরু করেছে। আমরা যে পথ ধরে এগোচ্ছি সেটি ওয়ানওয়ে। হাতের ডান দিকে খ্যাতনামা বিপণী কেন্দ্রের পাশাপাশি অখ্যাত দোকানে ঝলমল করছে নাম ফলকের নিয়ন সাইন। বাঁ দিকের একমুখী রাস্তার ওপারে সমুদ্র। চলার পথে সৌরভ দেখিয়ে দিল আলেক্সান্দ্রিয়ার একটি ল্যান্ড মার্ক স্ট্যানলি ব্রিজ। মূল সড়কের যানজট কমানোর জন্যে নব্বই দশকের শেষ দিকে সমুদ্রের পাশ দিয়ে নতুন একটি রাস্তা তৈরির সময় দেখা গেল একটা জায়গায় শহরের স্থলভাগে ঢুকে পড়েছে ভূমধ্য সাগর। সেখানে সমুদ্রের দুই অংশ যুক্ত করে নির্মিত হয়েছিল এই সেতু।

আমার মনে হয়েছে প্রয়োজনের চেয়েও আলেক্সান্দ্রিয়া শহরের ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নির্মিত সেতুটি নগরের সৌন্দর্যে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। মাত্র চারশ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুতে স্প্যানের সংখ্যা ছয়টি, এর চারটি টাওয়ার ইসলামি স্থাপত্য শিল্পের চমৎকার নিদর্শন। সন্ধ্যার শুরুতে দিনের আলোর পাশাপাশি সাগরের বুকে এই সেতু জুড়ে আলোর নান্দনিক ব্যবহার যে দৃশ্যপট রচনা করেছে তা দীর্ঘ সময় ধরে তাকিয়ে দেখার মতো। গাড়িয়ে থামিয়ে রেখে দেখার মতো অবস্থা না থাকায় আমরা সামনে এগোতে থাকি।

রাতের রাজপথ

আলোকোজ্জ্বল আলেক্সান্দ্রিয়ার প্রতিটি রাতই মনে হয় উৎসব মুখর। তাই শপিং এরিয়া কিংবা বাজার এলাকার আলোকসজ্জা দেখে ক্রিসমাস কিংবা ঈদের সময় বলে ভুল হতে পারে। আমরা অনেক দূরে থেকে ঘুরে এসে ফেরার পথে স্ট্যানলি ব্রিজের উপর দিয়ে পার হলাম।

এবারে হাতের ডানে ভূমধ্যসাগর। উৎসব নগরী এখানে সাগরের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। ফুটপাথে যেমন বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য নারী পুরুষ সমুদ্রের হাওয়া গায়ে মেখে সান্ধ্যকালীন পদচারণায় নেমেছেন, তেমনি সমুদ্রের বুকে সারি সারি রেস্তোঁরায় নৈশভোজের আয়োজনেও মানুষের কমতি নেই। এদের মধ্যে অনেকেই হয়তো পর্যটক, তবে আমরা পর্যটক হলেও রঙিন আলোর ঝলমলে আহ্বানে সাড়া না দিয়ে ঢুকলাম শহরের রেস্তোরা ক্যাফে ডিলা পাইতে। 
সৌরভ এমনিতেই স্বল্পাহারী, ওর রাতের খাবার শুধু খানিকটা পাস্তা। আমার জন্যে অর্ডার দিয়েছিলাম ফিশ ফিলে আর সবচেয়ে যিনি কম খান তিনি বললেন মিক্সড বিফ অ্যান্ড চিকেন ফাইতাস। টেবিলে খাবার এলে দেখা গেল গরু ও মুরগির গ্রিলের সঙ্গে যে পরিমাণ মেক্সিকান ফ্রাইড রাইস পরিবেশিত হয়েছে তা তিনজনের পক্ষেও শেষ করা সম্ভব নয়। অতএব স্যামন মাছ ও সেদ্ধ সবজির বেরসিক মেন্যুর সঙ্গে হেনার গ্রিল্ড বিফ ও ফ্রাইড রাইসের অনেকটাই আমার আহার্যে পরিণত হলো। চমৎকার একটা ডিনারের পরে ঘরে ফিরে ঘুমিয়ে পড়াটা কোনো কাজের কথা নয়। সৌরভ গাড়িটা পার্কিংয়ে রেখে এলে আমরা সমুদ্রের ধারে পাথরের বাঁধের উপরে উঠে বসলাম।

সমুদ্রের তীর থেকে লে মেট্রোপল

রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় গাড়ির চলাচল কমে এসেছে। যন্ত্রচালিত গাড়িগুলোর পাশাপাশি ঘোড়ার খুরে খটখট আওয়াজ তুলে চলে যাচ্ছে মন্থর গতির টাঙ্গা। ফুটপাথের টং দোকানে আগুনে পুড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ভুট্টা। হাত ধরাধরি করে হেঁটে যাচ্ছে তরুণ-তরুণী, আবার রাজ্যের ক্লান্তি নিয়ে দু-চারজন বৃদ্ধকেও পথ চলতে দেখা গেল। রানাভাই নিজেও হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূরে চলে গেছেন। বাঁধের উপরে বসে সৌরভ বলছিল তার প্রথমবার আলেক্সান্দ্রিয়া আসার কথা। কেনিয়া থেকে সস্ত্রীক এসে ঠিক রাস্তার ওপারের হোটেলে সেবার থেকে গেছে। রাস্তা পেরিয়ে পার্কের ওপারেই আমাদের হোটেল মেট্রোপলও এখান থেকে দেখা যায়। 

কিন্তু আমাদের হোটেলের সামনে ভূমধ্যসাগরের তীরে যার ভাস্কর্য ঘিরে ছোট্ট এই উদ্যানটি গড়ে উঠেছে তার নাম কেউ জানে না। রানা ভাই ফিরে এলে জানলাম, মিশরের স্বাধীনতা সংগ্রামে বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন এই মূর্তিটি সেই কীর্তিমান পুরুষ সাদ জগলুল পাশার! ১৯২৭ সালে জগলুল পাশার মৃত্যু হলে পরাধীন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব শূন্যতায় হতাশ নজরুল তার ‘চিরঞ্জীব জগলুল’ নামের দীর্ঘ কবিতায় তাহলে এই মহাত্মার কথাই লিখে গেছেন। ‘তোমার বিদায়ে দূর অতীতের সেই কথা মনে পড়ে/মিসর হইতে বিদায় লইল মুসা যবে চিরতরে/সম্ভ্রমে সরে পথ করে দিল নীল দরিয়ার বারি/পিছু পিছু চলে কাঁদিয়া কাঁদিয়া মিসরের নরনারী?’ 

উদ্যানে নজরুলের জগলুল পাশা

তবে বর্তমান মিশরের নরনারীরা জগলুল পাশার জন্যে কান্নাকাটি করা তো দূরে থাক, তার নামই সম্ভবত শোনেনি। অন্যদিকে আলেক্সান্দ্রিয়ার নগর কর্তারা জগলুল পাশাকে সম্মান জানাতে গিয়ে তাকে উঁচু এক স্তম্ভের উপরে তুলে দিয়েছেন, কিন্তু পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় তার চেহারা দেখার কোনো উপায় নেই। স্তম্ভের পায়ের কাছে কিছু শুকনো ফুল পাতা পড়ে থাকলেও উৎকীর্ণ করা ফলক পাঠোদ্ধারের কোনো ব্যবস্থা তারা রাখেননি। 

রাতের রাজপথে ট্রাম

হোটেলে ফিরে আমরা আবার সেই ঐতিহাসিক লিফটে চড়ে সোজা রুফটপ রেস্তোরাঁয় চলে গেলাম। বেশ রাত হলেও রেস্তোরাঁ তখনো জমজমাট। চাঁদোয়া জুড়ে তারার মতো বাতি ঝিকমিক করছে আর কাচ দিয়ে ঘেরা লম্বা বাতিদানে মোমবাতির শিখার মতো দপদপ করে যে বাতি জ্বলছে তাকে প্রথমে কেরোসিনের প্রদীপ বলে ভুল করেছিলাম। এখানে দাঁড়িয়ে জগলুল পাশা পার্কের ওপারে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যায় রাতের সমুদ্র। অন্ধকার সাগরের বুকে মাঝে মাঝে জাহাজের দুই একটা বাতি জ্বলে উঠেই আবার নিভে যায়। আমরা ঘরে ফিরেও ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে অনেক রাত পর্যন্ত রাস্তায় ট্রামের চলাচল দেখি। ধীরে ধীরে প্রায় জনশূন্য হয়ে আসে আলেক্সান্দ্রিয়ার ব্যস্ত সড়ক, জনাকীর্ণ রাস্তা। 

চলবে...      

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৭ 

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

এসএন 

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার তিনটি ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর তুমুল গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই সেনাসদস্যসহ মোট ১৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে আটজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়। একই দিনে উত্তর ওয়াজিরিস্তান ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের দুটি স্থানে আরও দুটি অভিযান চালানো হয়।

উত্তর ওয়াজিরিস্তানে চারজন এবং দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের গোমাল জ্যাম এলাকায় তিনজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে সেনাবাহিনী। এই সংঘর্ষগুলোর একটিতে পাক বাহিনীর দুই সেনা সদস্য প্রাণ হারান।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে।

এদিকে, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, এসব অভিযান ছিল পরিকল্পিত ও গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে, বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে।

‘পাকিস্তান ইন্সটিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ’ (PICS) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ডিসেম্বরের তুলনায় প্রায় ৪২ শতাংশ বেড়েছে। এতে করে পুরো অঞ্চলে নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর পৌর এলাকার কাইতকাই রূপালী ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ধনবাড়ী উপজেলা পৌর এলাকার চরভাতকুড়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে সিএনজি চালা হেলাল উদ্দিন (৫৫)। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সিএনজি যাত্রী ছিলেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক এ বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাতে দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজি ধনবাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজির চালক ঘটনা স্থলে মারা যান। এ সময় গুরুতর আহত হয় এক যাত্রী।

এরপর তাকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে তিনি মারা যায়।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক জানান, নিহত সিএনজি চালকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে, অজ্ঞাত ওই যাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি, শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

Header Ad
Header Ad

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র হজ ফ্লাইট শুরু আগামী মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল)। ওই দিন ৪১৯ জন সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। হজের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

চলতি বছর ৮৭ হাজার ১০০ জন পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন হজযাত্রী সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮১ হাজার ৯০০ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন।

প্রথম ফ্লাইটটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। হজ ব্যবস্থাপনাকে নির্বিঘ্ন করতে সরকারি পর্যায়ে ১১২ জন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১ হাজার ৭৪৩ জন গাইড দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি ৭০ জন মোয়াল্লেম হজযাত্রীদের সার্বিক সহায়তা করবেন।

হজযাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ তিনটি এয়ারলাইনস। ৩১ মে পর্যন্ত হজের ফ্লাইট চলবে। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন এবং শেষ হবে ১০ জুলাই।

পবিত্র হজ উপলক্ষে এ বছর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালনা করবে ১১৮টি, সাউদিয়া ৮০টি এবং নাস এয়ারলাইনস ৩৪টি ফ্লাইট।

হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা, যা ৯ জিলহজ মসজিদে নামিরা থেকে প্রদান করা হয়। এবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে হজের খুতবা, এবং তাৎক্ষণিক অনুবাদ করা হবে ২০টি ভাষায়। 

যেসব ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করা হবে সেগুলো হলো- বাংলা, ফরাসি (ফ্রেঞ্চ), মালয়, উর্দু, ফারসি, চাইনিজ, তুর্কি, রাশিয়ান, হাউসা, ইংরেজি, সুইডিশ, স্প্যানিশ, সোয়াহিলি, আমহারিক, ইতালিয়ান, পর্তুগিজ, বসনিয়ান, মালায়লাম, ফিলিপিনো এবং জার্মান। 

উল্লেখ্য, ১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ৫ জুন) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭
টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২
হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার