মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা

কথায় বলে, অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর। আলী আকবর পুত্রকে হারিয়ে একেবারে পাথর হয়ে গেছেন। তিনি কাঁদতেও পারছেন না। তার কান্না পাচ্ছে না। কেমন যেন একটা অস্বাভাবিক ভঙ্গি করে মানুষের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কখনো কখনো আকাশের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে কী যেন বলেন। তিনি বাড়িতে গিয়ে যখন পা রাখলেন তখন সকাল নটা। তাকে দেখে বাড়ির সবাই এগিয়ে এসেছে। সবাই তার কাছে আরেফিনের কথা জানতে চাচ্ছে। আরেফিনের কী খবর? কোথায় আছে? কেমন আছে? কবে দেশে আসবে সে?
আরেফিন যে কোনোদিনই আর দেশে ফিরবে না; সেকথা কী তারা কেউ জানে! জানতে কী এ রকম প্রশ্ন কেউ করত? ঘাতক করোনায় আরেফিনের জীবন বিনাশ করেছে। আরেফিনকে চিরদিনের জন্য কেড়ে নিয়েছে। সেই কথা যে আলী আকবর মুখ ফুটে বলবেন তা পারছেন না। তিনি তার স্ত্রী জমিলা খাতুনের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলেন। তার চোখের দৃষ্টি দেখেই হয়ত আঁচ করতে পারলেন। বাড়ির অন্যলোকগুলো কিছু বোঝার আগেই মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন জমিলা খাতুন। সবাই দৌড়ে গেল তাকে ধরার জন্য। আলী আকবরের চোখের সামনে তার স্ত্রী পড়ে গেলেও তিনি ধরতে গেলেন না। তিনি ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন। বিদ্যুতায়িত হলে মানুষের যেমন অবস্থা হয় আলী আকবরের সেই অবস্থা হয়েছে। তাকে কেউ ছুঁয়ে দিলেও হয়তো তিনি পড়ে যাবেন।

আলী আকবরের ছোট ছেলে আক্কাস আলী মেজছেলে আবদুল আলী চিৎকার দিয়ে মা’র কাছে যায়। জমিলা খাতুন ততক্ষণে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন। বাড়ির মহিলারা তাকে ধরে মাটিতে পাটি বিছিয়ে শুইয়ে দিয়েছে। একজন জগে করে পানি এনে জমিলা খাতুনের চোখেমুখে ছিটিয়ে দিচ্ছে। আরেকজন তালপাখা দিয়ে বাতাস করছে। আবদুল আলী আর আক্কাস আলী কান্নাকাটি করছে। তারা তখনো বোঝেনি, তাদের বড় ভাই আর পৃথিবীতে নেই। কোনোদিন তারা তাকে দেখতে পাবে না।
আবদুল আলী কাঁদতে কাঁদতে বলে, কী হয়েছে মা? চোখ খোল মা! চোখ খোল!
আক্কাস আলীও কাঁদে। অঝোরধারায় তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। মা’র জন্য তার খুব কষ্ট হচ্ছে। বাড়ির পুরুষ লোকগুলো আলী আকবরকে ধরে খাটের ওপর বসিয়েছেন। একজন দৌড়ে এসে তার মাথায় তেল-পানি দিতে দিতে বলল, ইহ! মাথাডা কী গরম! মনে হয় আগুন বাইর হইতেছে!
আলী আকবর আর বসে থাকতে পারলেন না। তাকে বিছানায় শুইয়ে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যেই জমিলা খাতুনের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি চোখ মেলে দেখেন বাড়ির সব মহিলা তার চারপাশে ঘিরে বসে আছে। তিনি তাদের কাছে জানতে চান, আমার বড় পোলাডা কই? আমার আরেফিন?
মহিলারা একজন আরেকজনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করেন। হঠাৎ আরেফিনের কথা জিজ্ঞাসা করাতে তারা ঠিক বুঝতে পারছেন না, কী বলা উচিত। একজন আরেকজনকে বললেন, আরেফিন কী বাড়িতে আইছে?
আরেকজন ঠোট উল্টে জবাব দেন। কই, দেহি নাই তো!
জমিলা খাতুন বললেন, আরেফিনের বাপরে জিজ্ঞাসা কর না, আমার আরেফিন কই?
চাচা মিয়া চাচা মিয়া বলতে বলতে জরিনা বেগম আলী আকবরের কাছে যায়। গিয়ে দেখে তিনিও বিছানায় শুয়ে আছেন। বাড়ির লোকরা তাকে ঘিরে বসে আছেন। জরিনা বেগম তাদের কাছে জানতে চায়, চাচা মিয়ার কী হইছে?
কী যে হইল বুঝতে পারতেছি না। করিম মুন্সি বলল।
এরমধ্যেই আলী আকবর হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বললেন, আমার আরেফিন নাইগো, আরেফিন বাঁইচা নাই! করোনায় আরেফিনরে নিয়া গেছে!
আরেফিনের মৃত্যুর খবর শুনে বাড়ির লোকরা একেবারে থ। নির্বাক দৃষ্টিতে তারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা নিজেদের কানকে যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। সবার মনে এক প্রশ্ন, আমরা ঠিক শুনছি তো! নাকি আরেফিনের বাবা পাগল টাগল হইয়া গেল! এমন আবোল তাবোল বকতেছে কেন?
আরেফিনের মা বাবা ভাই-বোনের সঙ্গে বাড়ির লোকরাও কাঁদছে। কে কাকে দেবে সান্ত্বনা। পুরো বাড়িতে শুধু কান্নার রোল। সেই কান্না শুনে আশপাশের মানুষও জড়ো হয় আরেফিনদের বাড়িতে। তারাও আরেফিনের খবর শুনে আপসোস করে। প্রতিবেশি জালালউদ্দিন দুঃখ করে বলে, বড় ভালো ছেলে ছিল আরেফিন। সব সময় হাসি দিয়া কতা কইত। আজরাইল তারে টাইন্যা নিল চীনে? দুনিয়াতে ভালো মানুষ থাকতে পারে না গো! গ্রামে কত খারাপ মানুষ, তাগোরে চোহে দেহে না। গ্রামে এতো অন্যায় অত্যাচার হইতাছে; অথচ গ্রামে করোনা নাই। করোনা সব শহরে ঘুরতাছে।
নাসির উদ্দিন তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলল, ঠিকই কইছ। আমাগো গ্রামে এহন পর্যন্ত একটাও করোনা রুগী পাওয়া যায় নাই। এহন আবার নতুন খবর বাইর হইছে। চীনই নাকি এই ভাইরাস বানাইয়া ছাইড়া দিছে।
তাই নাহি? এইসব কতা তুমি কই পাইলা নাসির ভাই? আবদুল করিম বলল।
আমার পোলায় কইল। পত্রিকায় নাহি দিছে? হারা দুনিয়ায় দহল চীনের হাতে যাইব বুঝলা? এই দুনিয়ায় যার হাতে টাকা থাকব, সে-ই তো সব! চীন এহন সবার সেরা। আমেরিকা, ইউরোপ-সবাই নাকি চীনের কাছে ধরা।
আরে তুমি তো দেহি সব খবরই রাহো! আবদুল করিম বলল।
নাসির উদ্দিন গর্বের সঙ্গে বলল, আমি কী এসব জানি নাহি। আমার পোলায় সব খবর রাহে। হাতে একখান মোবাইল। হারাদিন মোবাইল টেপে। আমি কইলাম, কিরে আফসার? তোর কী কোনো পড়ালেহা নাই। হারাদিন মোবাইল টেপোস? ও কইল, মোবাইলে পত্রিকা পড়ে! সারা দুনিয়ার খবর নাহি মোবাইলে পাওয়া যায়! কও দেহি কী কাণ্ড! আমারে কয়েকটা খবর পইড়াও হুনাইলো। না হুনাইলে তো বিশ্বাসও করতাম না!
আবদুল করিম বলল, আশ্চর্য কতা কইলা নাসির ভাই। কী মোবাইল কও তো? আমারও তো মোবাইল আছে। মোবাইলে পত্রিকা পড়া যায় তা তো কহনো হুনি নাই!
আমাগো বাড়ি লও। দেখবা হানে। নাসির উদ্দিন বলল।
আবদুল করিম নাসির উদ্দিনের বাড়ির দিকে হাঁটা দেয়। অন্যরা যে যার বাড়ির দিকে চলে যায়। ধীরে ধীরে আলী আকবর মাথা তোলেন। বিছানা থেকে উঠে বসেন। শোকে মুহ্যমান পরিবেশটা আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এভাবেই আপনজন হারানোর বেদনা ভুলে যায় মানুষ। কিংবা ভুলে যেতে বাধ্য হয়। শোকের পাটি ভাঁজ করে পাশে রেখে কাজের পেছনে ছুটতে হয় তাকে। বেঁচে থাকার তাগিদ যে অনেক বড়। সেজন্যই হয়তো মানুষ সব ভুলে যেতে পারে।

ঘরের মেঝেতে বসে আছেন জমিলা খাতুন। তার হাতে একটা অ্যালবাম। অ্যালবামে বড় ছেলে ও ছেলের বউ’র ছবি। তিনি একটা একটা করে অ্যালবামের পাতা উল্টান আর ছবি দেখেন। তার পাশে বসে ছোট ছেলে আক্কাসও ছবি দেখে। ছবি দেখে মাকে এটা ওটা জিজ্ঞাসা করে। ছেলের সব প্রশ্নের জবাব দিতে পারেন না জমিলা খাতুন। তিনি কিছুক্ষণ পরপর আঁচল দিয়ে চোখের পানি মোছেন। আক্কাস তার মা’র দিকে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আবার ছবির দিকে তাকায়। ছবি দেখে আর মাকে প্রশ্ন করে। এরমধ্যেই বাইরে থেকে ঘরে আসেন আলী আকবর। তিনি জলচকি টেনে জমিলা খাতুনের কাছে গিয়ে বসেন। জমিলা খাতুন তাকে এক নজর দেখে আবার অ্যালবামে চোখ রাখেন। আলী আকবর কোনো রকম ভনিতা ছাড়াই বলতে শুরু করেন। বুঝলা আরেফিনের মা, পোলার বউরে তো তুমি দেহ নাই! আস্ত একটা পরী! আল্লায় মিলাইছিল! এতো সোন্দর মাইয়া আমি কোনো দিন দেহি নাই। আমার কাছে মনে হইতেছে স্বপ্ন। আমি স্বপ্ন দেখতাছি! আমি বিমান বন্দরের সামনে কান্নাকাটি করতে আছিলাম। বউমারে তো আমি চিনি না! আমারে আইয়া কইল, আপনে কানতেছেন কেন? আমি কইলাম, চীন থেকে আইজ আমার পোলার লাশ আইব। আমি আমার পোলার মুখটা একটু দেখমু। তারপর জিগাইল, আপনের পোলা কেডা?
আমি আরেফিনের নাম কইলাম। সঙ্গে সঙ্গে কইল, আপনে আমার গাড়িতে ওডেন। আমি গিয়া গাড়িতে উঠলাম। ওরে বাপরে! ওই রহম গাড়িতে আমি জীবনেও উডি নাই। সিডে বইলেই ঘুম আইয়া পড়ে। কিছুক্ষণ পর বউমা আমারে তার অফিসে লইয়া গেলো। ওরে বাবা! অফিস না যেন স্বর্গখানা! তারপর আমারে বইতে কইল। ঘ্রাণ আলা চা খাওইয়াল। বিস্কুট খাওইয়াল। তারপর দুই লাখ টাকা দিয়া কইল। ছেলেরে তো আর ফেরত পাইবেন না। ধইরা নেন আমিই আপনার ছেলে। আমার দুই চোখ দিয়া দরদর কইরা পানি বাইর হইতে লাগল। বউমা চোখ মুইছা দিয়া কইল, মন খারাপ কইরেন না। বাড়ির ঠিকানাডা দিয়া যান। আমি আপনাগো লাইগ্যা মাসে মাসে টাকা পাডাইয়া দিমু।
আবার কাঁদলেন আলী আকবর। তিনি চোখে চোখে বউমাকে দেখছেন। আর মনে মনে ভাবছেন, বউমা তার চোখের পানি মুছে দিয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছে। এই সান্ত্বনাটুকুই যেন তার বেঁচে থাকার অবলম্বন।

চলবে...

 

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

Header Ad
Header Ad

বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকার লুটপাট

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিদ্যুৎ খাতকে কেন্দ্র করে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দ্রুত সরবরাহ আইন (কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট আইন) প্রণয়ন করে দায়মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে এই খাতে লুটপাটের মডেল তৈরি হয়। গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনায় ঘুষ, কমিশন, এবং অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতার কারণে জনগণের ওপর ৭২ হাজার কোটি টাকার বোঝা চাপানো হয়েছে।

২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৫,৭০০ মেগাওয়াট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৩২,০০০ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। এ সময়ে শতাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বেশিরভাগ প্রকল্প দ্রুত সরবরাহ আইনের আওতায় অনুমোদন পাওয়ায় উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার সুযোগ বন্ধ ছিল।

বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে ৩০ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার দুর্নীতির মাধ্যমে লুট হয়েছে।

মহাপরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুতের চাহিদা ৩০,০০০ মেগাওয়াট ধরা হলেও, পরে এই লক্ষ্যমাত্রা ৪০,০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়। চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করায় অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতা তৈরি হয়। এই অতিরিক্ত সক্ষমতার জন্য ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বাবদ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার অপচয় হয়েছে।

বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেছেন, “উচ্চমাত্রার লক্ষ্য নির্ধারণ করে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এর ফলে জনগণের কাঁধে ভাড়া ও অন্যান্য ব্যয়ের বোঝা চেপেছে।”

শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন নির্মাণ এবং মিটার কেনাকাটায় বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। তবে এসব খাতে দুর্নীতির বিস্তারিত চিত্র এখনও স্পষ্ট নয়।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিদ্যুৎ খাতে এ ধরনের দুর্নীতি অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সরকারের উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের ফলে জনগণকে অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হয়েছে।

প্রস্তাবিত সমাধান:

- বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি কমাতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে প্রকল্প অনুমোদন।
- দায়মুক্তি আইন বাতিল করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
- শ্বেতপত্রে বিস্তারিত তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতির চিত্র প্রকাশ।
- অপ্রয়োজনীয় সক্ষমতা বন্ধ এবং বিদ্যুতের চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ।

বিদ্যুৎ খাতের এই সংকট উত্তরণে জনসাধারণ, বিশেষজ্ঞ এবং গণমাধ্যমের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

Header Ad
Header Ad

সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক আটক

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে মো. নাজির উদ্দিন কার্তিক (২৫) আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে নওগাঁ ব্যাটালিয়নের (১৬ বিজিবি) বিজিবি সদস্যরা গোমস্তাপুর উপজেলার কেতাব বাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।

আজ মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ১৬ বিজিবির গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

নওগাঁ ব্যাটালিয়নের (১৬ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বাংগাবাড়ি বিজিবির নিয়মিত টহল দল মঙ্গলবার সকালে সীমান্ত পিলার ২০৪/এমপি হতে আনুমানিক ১ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যান্তরে কেতাব বাজার এলাকায় টহল পরিচালনা করছিলেন। টহল দেওয়ার সময় একজন ব্যক্তির গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে বিজিবির সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি অসংলগ্ন বক্তব্য দিতে থাকেন। পরে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি স্বীকার করেন তিনি ভারতীয় নাগরিক। ওই ব্যক্তির ভাষ্যমতে তাঁর নাম, নাজির উদ্দিন কার্তিক। তিনি ভারতের বিহার রাজ্যের কাঠিয়ার জেলার আবাদপুর থানার গাবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তল্লাশী করে ওই ব্যক্তির কাছ ভারতীয় ১০ রুপি এবং বাংলাদেশী ২৫০ টাকা পাওয়া গেছে। তাঁর কাছ থেকে কোনো পাসপোর্ট বা বৈধ ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে আটক পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম চলমান আছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি জানলেই হয়রানি

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় ভ্রমণ ও চিকিৎসার কাজে যাওয়া বাংলাদেশিরা সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এবং বিজেপি সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচি ঘিরে এই হয়রানির মাত্রা বেড়ে গেছে।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) থেকে আগরতলায় হোটেল ভাড়া না পেয়ে বাংলাদেশি পর্যটকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বাসিন্দা ফরিদ মিয়া জানান, হোটেল ভাড়া নেওয়ার পর মুসলিম এবং বাংলাদেশি হওয়ায় তাকে এক ঘণ্টার মধ্যেই হোটেল থেকে বের করে দেওয়া হয়। টাকা ফেরত না পেয়ে তিনি বাধ্য হয়ে শহরের বাইরে আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটান এবং পরদিন দেশে ফিরে আসেন।

আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সীমান্ত পারাপারের সময় বাংলাদেশিদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হচ্ছে। আখাউড়া স্থলবন্দরে ফিরে আসা যাত্রীরা জানিয়েছেন, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হুমকি ও হয়রানির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান শিলচরে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ারে জামদানি শাড়ির একটি স্টল দিয়েছিলেন। সেখানে একদল যুবক "জয় শ্রী রাম" স্লোগান দিয়ে তার দোকানে হামলা চালায়। হামলাকারীরা দোকান ভাঙচুর করে এবং সমস্ত টাকা-পয়সা লুটপাট করে নিয়ে যায়।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জাবের বিন জব্বার জানিয়েছেন, সীমান্তে কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশিরা এমন হয়রানি ও বৈষম্যমূলক আচরণের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে এর সমাধানের জন্য দুই দেশের সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা নিরসনে কূটনৈতিক পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকার লুটপাট
সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক আটক
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি জানলেই হয়রানি
প্রতিবেশী রাষ্ট্রের গোলামি করতে স্বাধীনতা অর্জন করিনি: সোহেল তাজ
মাইক্রোসফটের সমীক্ষায় ভুয়া খবর ছড়ানোর শীর্ষে ভারত
আগরতলার বাংলাদেশ হাইকমিশনে কনস্যুলার সেবা বন্ধ
একটি ইস্যু দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক মূল্যায়ন করা যাবে না : ভারতীয় হাইকমিশনার
জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ
শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা মমতা বোঝেন কিনা, নিশ্চিত নই: শশী থারুর
যমুনার চর কেটে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ
২০২৩ সালে সর্বোচ্চ দুর্নীতি পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলায়
শেখ হাসিনার পতন কোনোভাবেই মানতে পারছেন না ভারত : রিজভী
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে জরুরি তলব
সেনাবাহিনীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, এসএসসি পাসেই আবেদনের সুযোগ
এস আলম পরিবারের ৩৫০ ব্যাংক হিসাবের সন্ধান
২৮ বিয়ে প্রসঙ্গে যা বললেন নায়িকা রোমানা
বাংলাদেশিদের সেবা দেবে না ত্রিপুরার কোনো হোটেল–রেস্তোরাঁ
ভারত সফরে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন
‘বাংলাদেশি কনস্যুলেটে হামলা প্রতিবেশীদের মধ্যে বিবাদের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে’
বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭