বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৬ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা

কথায় বলে, অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর। আলী আকবর পুত্রকে হারিয়ে একেবারে পাথর হয়ে গেছেন। তিনি কাঁদতেও পারছেন না। তার কান্না পাচ্ছে না। কেমন যেন একটা অস্বাভাবিক ভঙ্গি করে মানুষের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কখনো কখনো আকাশের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে কী যেন বলেন। তিনি বাড়িতে গিয়ে যখন পা রাখলেন তখন সকাল নটা। তাকে দেখে বাড়ির সবাই এগিয়ে এসেছে। সবাই তার কাছে আরেফিনের কথা জানতে চাচ্ছে। আরেফিনের কী খবর? কোথায় আছে? কেমন আছে? কবে দেশে আসবে সে?
আরেফিন যে কোনোদিনই আর দেশে ফিরবে না; সেকথা কী তারা কেউ জানে! জানতে কী এ রকম প্রশ্ন কেউ করত? ঘাতক করোনায় আরেফিনের জীবন বিনাশ করেছে। আরেফিনকে চিরদিনের জন্য কেড়ে নিয়েছে। সেই কথা যে আলী আকবর মুখ ফুটে বলবেন তা পারছেন না। তিনি তার স্ত্রী জমিলা খাতুনের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলেন। তার চোখের দৃষ্টি দেখেই হয়ত আঁচ করতে পারলেন। বাড়ির অন্যলোকগুলো কিছু বোঝার আগেই মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন জমিলা খাতুন। সবাই দৌড়ে গেল তাকে ধরার জন্য। আলী আকবরের চোখের সামনে তার স্ত্রী পড়ে গেলেও তিনি ধরতে গেলেন না। তিনি ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন। বিদ্যুতায়িত হলে মানুষের যেমন অবস্থা হয় আলী আকবরের সেই অবস্থা হয়েছে। তাকে কেউ ছুঁয়ে দিলেও হয়তো তিনি পড়ে যাবেন।

আলী আকবরের ছোট ছেলে আক্কাস আলী মেজছেলে আবদুল আলী চিৎকার দিয়ে মা’র কাছে যায়। জমিলা খাতুন ততক্ষণে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন। বাড়ির মহিলারা তাকে ধরে মাটিতে পাটি বিছিয়ে শুইয়ে দিয়েছে। একজন জগে করে পানি এনে জমিলা খাতুনের চোখেমুখে ছিটিয়ে দিচ্ছে। আরেকজন তালপাখা দিয়ে বাতাস করছে। আবদুল আলী আর আক্কাস আলী কান্নাকাটি করছে। তারা তখনো বোঝেনি, তাদের বড় ভাই আর পৃথিবীতে নেই। কোনোদিন তারা তাকে দেখতে পাবে না।
আবদুল আলী কাঁদতে কাঁদতে বলে, কী হয়েছে মা? চোখ খোল মা! চোখ খোল!
আক্কাস আলীও কাঁদে। অঝোরধারায় তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। মা’র জন্য তার খুব কষ্ট হচ্ছে। বাড়ির পুরুষ লোকগুলো আলী আকবরকে ধরে খাটের ওপর বসিয়েছেন। একজন দৌড়ে এসে তার মাথায় তেল-পানি দিতে দিতে বলল, ইহ! মাথাডা কী গরম! মনে হয় আগুন বাইর হইতেছে!
আলী আকবর আর বসে থাকতে পারলেন না। তাকে বিছানায় শুইয়ে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যেই জমিলা খাতুনের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি চোখ মেলে দেখেন বাড়ির সব মহিলা তার চারপাশে ঘিরে বসে আছে। তিনি তাদের কাছে জানতে চান, আমার বড় পোলাডা কই? আমার আরেফিন?
মহিলারা একজন আরেকজনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করেন। হঠাৎ আরেফিনের কথা জিজ্ঞাসা করাতে তারা ঠিক বুঝতে পারছেন না, কী বলা উচিত। একজন আরেকজনকে বললেন, আরেফিন কী বাড়িতে আইছে?
আরেকজন ঠোট উল্টে জবাব দেন। কই, দেহি নাই তো!
জমিলা খাতুন বললেন, আরেফিনের বাপরে জিজ্ঞাসা কর না, আমার আরেফিন কই?
চাচা মিয়া চাচা মিয়া বলতে বলতে জরিনা বেগম আলী আকবরের কাছে যায়। গিয়ে দেখে তিনিও বিছানায় শুয়ে আছেন। বাড়ির লোকরা তাকে ঘিরে বসে আছেন। জরিনা বেগম তাদের কাছে জানতে চায়, চাচা মিয়ার কী হইছে?
কী যে হইল বুঝতে পারতেছি না। করিম মুন্সি বলল।
এরমধ্যেই আলী আকবর হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বললেন, আমার আরেফিন নাইগো, আরেফিন বাঁইচা নাই! করোনায় আরেফিনরে নিয়া গেছে!
আরেফিনের মৃত্যুর খবর শুনে বাড়ির লোকরা একেবারে থ। নির্বাক দৃষ্টিতে তারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা নিজেদের কানকে যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। সবার মনে এক প্রশ্ন, আমরা ঠিক শুনছি তো! নাকি আরেফিনের বাবা পাগল টাগল হইয়া গেল! এমন আবোল তাবোল বকতেছে কেন?
আরেফিনের মা বাবা ভাই-বোনের সঙ্গে বাড়ির লোকরাও কাঁদছে। কে কাকে দেবে সান্ত্বনা। পুরো বাড়িতে শুধু কান্নার রোল। সেই কান্না শুনে আশপাশের মানুষও জড়ো হয় আরেফিনদের বাড়িতে। তারাও আরেফিনের খবর শুনে আপসোস করে। প্রতিবেশি জালালউদ্দিন দুঃখ করে বলে, বড় ভালো ছেলে ছিল আরেফিন। সব সময় হাসি দিয়া কতা কইত। আজরাইল তারে টাইন্যা নিল চীনে? দুনিয়াতে ভালো মানুষ থাকতে পারে না গো! গ্রামে কত খারাপ মানুষ, তাগোরে চোহে দেহে না। গ্রামে এতো অন্যায় অত্যাচার হইতাছে; অথচ গ্রামে করোনা নাই। করোনা সব শহরে ঘুরতাছে।
নাসির উদ্দিন তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলল, ঠিকই কইছ। আমাগো গ্রামে এহন পর্যন্ত একটাও করোনা রুগী পাওয়া যায় নাই। এহন আবার নতুন খবর বাইর হইছে। চীনই নাকি এই ভাইরাস বানাইয়া ছাইড়া দিছে।
তাই নাহি? এইসব কতা তুমি কই পাইলা নাসির ভাই? আবদুল করিম বলল।
আমার পোলায় কইল। পত্রিকায় নাহি দিছে? হারা দুনিয়ায় দহল চীনের হাতে যাইব বুঝলা? এই দুনিয়ায় যার হাতে টাকা থাকব, সে-ই তো সব! চীন এহন সবার সেরা। আমেরিকা, ইউরোপ-সবাই নাকি চীনের কাছে ধরা।
আরে তুমি তো দেহি সব খবরই রাহো! আবদুল করিম বলল।
নাসির উদ্দিন গর্বের সঙ্গে বলল, আমি কী এসব জানি নাহি। আমার পোলায় সব খবর রাহে। হাতে একখান মোবাইল। হারাদিন মোবাইল টেপে। আমি কইলাম, কিরে আফসার? তোর কী কোনো পড়ালেহা নাই। হারাদিন মোবাইল টেপোস? ও কইল, মোবাইলে পত্রিকা পড়ে! সারা দুনিয়ার খবর নাহি মোবাইলে পাওয়া যায়! কও দেহি কী কাণ্ড! আমারে কয়েকটা খবর পইড়াও হুনাইলো। না হুনাইলে তো বিশ্বাসও করতাম না!
আবদুল করিম বলল, আশ্চর্য কতা কইলা নাসির ভাই। কী মোবাইল কও তো? আমারও তো মোবাইল আছে। মোবাইলে পত্রিকা পড়া যায় তা তো কহনো হুনি নাই!
আমাগো বাড়ি লও। দেখবা হানে। নাসির উদ্দিন বলল।
আবদুল করিম নাসির উদ্দিনের বাড়ির দিকে হাঁটা দেয়। অন্যরা যে যার বাড়ির দিকে চলে যায়। ধীরে ধীরে আলী আকবর মাথা তোলেন। বিছানা থেকে উঠে বসেন। শোকে মুহ্যমান পরিবেশটা আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এভাবেই আপনজন হারানোর বেদনা ভুলে যায় মানুষ। কিংবা ভুলে যেতে বাধ্য হয়। শোকের পাটি ভাঁজ করে পাশে রেখে কাজের পেছনে ছুটতে হয় তাকে। বেঁচে থাকার তাগিদ যে অনেক বড়। সেজন্যই হয়তো মানুষ সব ভুলে যেতে পারে।

ঘরের মেঝেতে বসে আছেন জমিলা খাতুন। তার হাতে একটা অ্যালবাম। অ্যালবামে বড় ছেলে ও ছেলের বউ’র ছবি। তিনি একটা একটা করে অ্যালবামের পাতা উল্টান আর ছবি দেখেন। তার পাশে বসে ছোট ছেলে আক্কাসও ছবি দেখে। ছবি দেখে মাকে এটা ওটা জিজ্ঞাসা করে। ছেলের সব প্রশ্নের জবাব দিতে পারেন না জমিলা খাতুন। তিনি কিছুক্ষণ পরপর আঁচল দিয়ে চোখের পানি মোছেন। আক্কাস তার মা’র দিকে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আবার ছবির দিকে তাকায়। ছবি দেখে আর মাকে প্রশ্ন করে। এরমধ্যেই বাইরে থেকে ঘরে আসেন আলী আকবর। তিনি জলচকি টেনে জমিলা খাতুনের কাছে গিয়ে বসেন। জমিলা খাতুন তাকে এক নজর দেখে আবার অ্যালবামে চোখ রাখেন। আলী আকবর কোনো রকম ভনিতা ছাড়াই বলতে শুরু করেন। বুঝলা আরেফিনের মা, পোলার বউরে তো তুমি দেহ নাই! আস্ত একটা পরী! আল্লায় মিলাইছিল! এতো সোন্দর মাইয়া আমি কোনো দিন দেহি নাই। আমার কাছে মনে হইতেছে স্বপ্ন। আমি স্বপ্ন দেখতাছি! আমি বিমান বন্দরের সামনে কান্নাকাটি করতে আছিলাম। বউমারে তো আমি চিনি না! আমারে আইয়া কইল, আপনে কানতেছেন কেন? আমি কইলাম, চীন থেকে আইজ আমার পোলার লাশ আইব। আমি আমার পোলার মুখটা একটু দেখমু। তারপর জিগাইল, আপনের পোলা কেডা?
আমি আরেফিনের নাম কইলাম। সঙ্গে সঙ্গে কইল, আপনে আমার গাড়িতে ওডেন। আমি গিয়া গাড়িতে উঠলাম। ওরে বাপরে! ওই রহম গাড়িতে আমি জীবনেও উডি নাই। সিডে বইলেই ঘুম আইয়া পড়ে। কিছুক্ষণ পর বউমা আমারে তার অফিসে লইয়া গেলো। ওরে বাবা! অফিস না যেন স্বর্গখানা! তারপর আমারে বইতে কইল। ঘ্রাণ আলা চা খাওইয়াল। বিস্কুট খাওইয়াল। তারপর দুই লাখ টাকা দিয়া কইল। ছেলেরে তো আর ফেরত পাইবেন না। ধইরা নেন আমিই আপনার ছেলে। আমার দুই চোখ দিয়া দরদর কইরা পানি বাইর হইতে লাগল। বউমা চোখ মুইছা দিয়া কইল, মন খারাপ কইরেন না। বাড়ির ঠিকানাডা দিয়া যান। আমি আপনাগো লাইগ্যা মাসে মাসে টাকা পাডাইয়া দিমু।
আবার কাঁদলেন আলী আকবর। তিনি চোখে চোখে বউমাকে দেখছেন। আর মনে মনে ভাবছেন, বউমা তার চোখের পানি মুছে দিয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছে। এই সান্ত্বনাটুকুই যেন তার বেঁচে থাকার অবলম্বন।

চলবে...

 

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

Header Ad
Header Ad

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে

অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক ও মাউশির লোগো। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক নেতাদের আন্দোলন ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) পদ থেকে অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি শিক্ষা ক্যাডারের ১৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি তার বিতর্কিত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে মাউশিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে, নতুন মহাপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানের এই দায়িত্ব কেবল সাময়িক, যা পদোন্নতি হিসেবে গণ্য হবে না। পরবর্তীতে নিয়মিত নিয়োগের মাধ্যমে মহাপরিচালক নিয়োগ হলে এই চলতি দায়িত্ব বাতিল হয়ে যাবে।

অধ্যাপক এহতেসাম উল হকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তিনি বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তথ্য তিনি পুলিশের কাছে সরবরাহ করেছিলেন।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তার অপসারণের দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০২১ সালের জুন মাসে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যান। তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ থাকাকালীন তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন এবং আন্দোলনে অসহযোগিতা করতেন। এমনকি কলেজের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন, যা তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও ব্যবহার করতেন। তিনি কলেজের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নিজের বাসায় গ্রিল নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ করিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দিতেন এবং বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) খারাপ করে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। এছাড়া, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে বিদায় করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ডিজি পদ থেকে এহতেসাম উল হককে অপসারণের খবরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একজন বিতর্কিত ব্যক্তি শিক্ষাখাতের এত বড় দায়িত্বে থাকতে পারেন না। তার অপসারণের মাধ্যমে প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।

Header Ad
Header Ad

২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি

ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালের বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত ছয়টি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে এই কর্মকর্তাদের ওএসডি করা হয়েছে। এর আগে একই কারণে আরও ১২ জন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছিল।

ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মাহমুদুল আলম, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঈনউল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্মসচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম।

এছাড়া তালিকায় রয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কাজী আবু তাহের, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন।

এছাড়া, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোপাল চন্দ্র দাশসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই ওই সময়ের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এবার সেই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে ওএসডি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশ্লেষকরা।

Header Ad
Header Ad

ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন রাজনীতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল।

মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে একটি নতুন নির্বাচন হওয়া উচিত। বিশ্লেষকদের মতে, এটি জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনারই ইঙ্গিত।

ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনে দীর্ঘদিন ধরে কোনো নির্বাচন হয়নি এবং সেখানে সামরিক আইন চলছে। তার দাবি, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র চার শতাংশে নেমে গেছে, আর দেশটি ধ্বংসের পথে। যদিও যুদ্ধকালীন সময়ে নির্ভরযোগ্য জনমত জরিপ পাওয়া কঠিন, তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ট্রাম্পের দাবির মতো এতটা কমেনি।

এছাড়া, ইউক্রেনের নির্বাচন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, "তারা কি জনগণের মতামত নিয়েছে? তারা আলোচনার টেবিলে বসতে চায়, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কোনো নির্বাচন হয়নি।"

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে ২০২৪ সালের এপ্রিলে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন সময়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য কৌতুকপূর্ণ, কারণ তিনি নিজেই ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ইউক্রেন চাইলে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতো এবং তাদের উচিত ছিল রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর অর্থ হলো—ইউক্রেনকে হয় রাশিয়ার মিত্র সরকার গঠনের প্রস্তাবে রাজি হতে হতো, নয়তো প্রতিরোধ ছেড়ে দিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হতো।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইউক্রেনকে সমর্থন না দিয়ে বরং রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি বিতর্কিত শান্তিচুক্তির দিকে এগোতে পারেন, যা পুতিনের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক জয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

সূত্র: সিএনএন

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে
২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি
ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল
ডিবির সাবেক প্রধান হারুনের ১০০ বিঘা জমি, ৫ ভবন ও ২ ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেখা গুপ্তা, বিজেপির সিদ্ধান্তে চমক
একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতির শহীদ মিনারে না যাওয়ার আহ্বান
নামাজি জীবনসঙ্গী খুঁজছেন আইশা খান
গাইবান্ধায় গাঁজাসহ আটক এএসআইকে কারাগারে প্রেরণ
উপদেষ্টাদের মিটিংয়ে কোন প্রটোকলে গিয়েছিলেন হাসনাত-পাটোয়ারী: ছাত্রদল সেক্রেটারি
সরকারে থেকে ‘নতুন দল’ গঠন করলে মেনে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল
হোস্টিং সামিট ২০২৫ অনুষ্ঠিত
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩২১ রানের বড় লক্ষ্য দিলো নিউজিল্যান্ড
বৈষম্যবিরোধী নামধারী শীর্ষ নেতার নির্দেশে কুয়েটে ছাত্রদলের ওপর হামলা: রাকিব
যান্ত্রিক ত্রুটিতে আবারও বন্ধ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কুবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে মানববন্ধন ও সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল
২২০ জনকে নিয়োগ দেবে সমরাস্ত্র কারখানা, এসএসসি পাসেও আবেদন
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২ দিনব্যাপি খামারি প্রশিক্ষণ
সবার সাত দিন কারাগারে থাকা উচিত: আদালতে পলক
বিপ্লবী সরকারের ডাক থেকে সরে এলেন কাফি  
নাঈম ভাই হেনা কোথায়?: ‘তুই অনেক দেরি করে ফেলেছিস বাপ্পা’