রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা

কথায় বলে, অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর। আলী আকবর পুত্রকে হারিয়ে একেবারে পাথর হয়ে গেছেন। তিনি কাঁদতেও পারছেন না। তার কান্না পাচ্ছে না। কেমন যেন একটা অস্বাভাবিক ভঙ্গি করে মানুষের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কখনো কখনো আকাশের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে কী যেন বলেন। তিনি বাড়িতে গিয়ে যখন পা রাখলেন তখন সকাল নটা। তাকে দেখে বাড়ির সবাই এগিয়ে এসেছে। সবাই তার কাছে আরেফিনের কথা জানতে চাচ্ছে। আরেফিনের কী খবর? কোথায় আছে? কেমন আছে? কবে দেশে আসবে সে?
আরেফিন যে কোনোদিনই আর দেশে ফিরবে না; সেকথা কী তারা কেউ জানে! জানতে কী এ রকম প্রশ্ন কেউ করত? ঘাতক করোনায় আরেফিনের জীবন বিনাশ করেছে। আরেফিনকে চিরদিনের জন্য কেড়ে নিয়েছে। সেই কথা যে আলী আকবর মুখ ফুটে বলবেন তা পারছেন না। তিনি তার স্ত্রী জমিলা খাতুনের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলেন। তার চোখের দৃষ্টি দেখেই হয়ত আঁচ করতে পারলেন। বাড়ির অন্যলোকগুলো কিছু বোঝার আগেই মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন জমিলা খাতুন। সবাই দৌড়ে গেল তাকে ধরার জন্য। আলী আকবরের চোখের সামনে তার স্ত্রী পড়ে গেলেও তিনি ধরতে গেলেন না। তিনি ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন। বিদ্যুতায়িত হলে মানুষের যেমন অবস্থা হয় আলী আকবরের সেই অবস্থা হয়েছে। তাকে কেউ ছুঁয়ে দিলেও হয়তো তিনি পড়ে যাবেন।

আলী আকবরের ছোট ছেলে আক্কাস আলী মেজছেলে আবদুল আলী চিৎকার দিয়ে মা’র কাছে যায়। জমিলা খাতুন ততক্ষণে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন। বাড়ির মহিলারা তাকে ধরে মাটিতে পাটি বিছিয়ে শুইয়ে দিয়েছে। একজন জগে করে পানি এনে জমিলা খাতুনের চোখেমুখে ছিটিয়ে দিচ্ছে। আরেকজন তালপাখা দিয়ে বাতাস করছে। আবদুল আলী আর আক্কাস আলী কান্নাকাটি করছে। তারা তখনো বোঝেনি, তাদের বড় ভাই আর পৃথিবীতে নেই। কোনোদিন তারা তাকে দেখতে পাবে না।
আবদুল আলী কাঁদতে কাঁদতে বলে, কী হয়েছে মা? চোখ খোল মা! চোখ খোল!
আক্কাস আলীও কাঁদে। অঝোরধারায় তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। মা’র জন্য তার খুব কষ্ট হচ্ছে। বাড়ির পুরুষ লোকগুলো আলী আকবরকে ধরে খাটের ওপর বসিয়েছেন। একজন দৌড়ে এসে তার মাথায় তেল-পানি দিতে দিতে বলল, ইহ! মাথাডা কী গরম! মনে হয় আগুন বাইর হইতেছে!
আলী আকবর আর বসে থাকতে পারলেন না। তাকে বিছানায় শুইয়ে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যেই জমিলা খাতুনের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি চোখ মেলে দেখেন বাড়ির সব মহিলা তার চারপাশে ঘিরে বসে আছে। তিনি তাদের কাছে জানতে চান, আমার বড় পোলাডা কই? আমার আরেফিন?
মহিলারা একজন আরেকজনের মুখ চাওয়া চাওয়ি করেন। হঠাৎ আরেফিনের কথা জিজ্ঞাসা করাতে তারা ঠিক বুঝতে পারছেন না, কী বলা উচিত। একজন আরেকজনকে বললেন, আরেফিন কী বাড়িতে আইছে?
আরেকজন ঠোট উল্টে জবাব দেন। কই, দেহি নাই তো!
জমিলা খাতুন বললেন, আরেফিনের বাপরে জিজ্ঞাসা কর না, আমার আরেফিন কই?
চাচা মিয়া চাচা মিয়া বলতে বলতে জরিনা বেগম আলী আকবরের কাছে যায়। গিয়ে দেখে তিনিও বিছানায় শুয়ে আছেন। বাড়ির লোকরা তাকে ঘিরে বসে আছেন। জরিনা বেগম তাদের কাছে জানতে চায়, চাচা মিয়ার কী হইছে?
কী যে হইল বুঝতে পারতেছি না। করিম মুন্সি বলল।
এরমধ্যেই আলী আকবর হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বললেন, আমার আরেফিন নাইগো, আরেফিন বাঁইচা নাই! করোনায় আরেফিনরে নিয়া গেছে!
আরেফিনের মৃত্যুর খবর শুনে বাড়ির লোকরা একেবারে থ। নির্বাক দৃষ্টিতে তারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা নিজেদের কানকে যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। সবার মনে এক প্রশ্ন, আমরা ঠিক শুনছি তো! নাকি আরেফিনের বাবা পাগল টাগল হইয়া গেল! এমন আবোল তাবোল বকতেছে কেন?
আরেফিনের মা বাবা ভাই-বোনের সঙ্গে বাড়ির লোকরাও কাঁদছে। কে কাকে দেবে সান্ত্বনা। পুরো বাড়িতে শুধু কান্নার রোল। সেই কান্না শুনে আশপাশের মানুষও জড়ো হয় আরেফিনদের বাড়িতে। তারাও আরেফিনের খবর শুনে আপসোস করে। প্রতিবেশি জালালউদ্দিন দুঃখ করে বলে, বড় ভালো ছেলে ছিল আরেফিন। সব সময় হাসি দিয়া কতা কইত। আজরাইল তারে টাইন্যা নিল চীনে? দুনিয়াতে ভালো মানুষ থাকতে পারে না গো! গ্রামে কত খারাপ মানুষ, তাগোরে চোহে দেহে না। গ্রামে এতো অন্যায় অত্যাচার হইতাছে; অথচ গ্রামে করোনা নাই। করোনা সব শহরে ঘুরতাছে।
নাসির উদ্দিন তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলল, ঠিকই কইছ। আমাগো গ্রামে এহন পর্যন্ত একটাও করোনা রুগী পাওয়া যায় নাই। এহন আবার নতুন খবর বাইর হইছে। চীনই নাকি এই ভাইরাস বানাইয়া ছাইড়া দিছে।
তাই নাহি? এইসব কতা তুমি কই পাইলা নাসির ভাই? আবদুল করিম বলল।
আমার পোলায় কইল। পত্রিকায় নাহি দিছে? হারা দুনিয়ায় দহল চীনের হাতে যাইব বুঝলা? এই দুনিয়ায় যার হাতে টাকা থাকব, সে-ই তো সব! চীন এহন সবার সেরা। আমেরিকা, ইউরোপ-সবাই নাকি চীনের কাছে ধরা।
আরে তুমি তো দেহি সব খবরই রাহো! আবদুল করিম বলল।
নাসির উদ্দিন গর্বের সঙ্গে বলল, আমি কী এসব জানি নাহি। আমার পোলায় সব খবর রাহে। হাতে একখান মোবাইল। হারাদিন মোবাইল টেপে। আমি কইলাম, কিরে আফসার? তোর কী কোনো পড়ালেহা নাই। হারাদিন মোবাইল টেপোস? ও কইল, মোবাইলে পত্রিকা পড়ে! সারা দুনিয়ার খবর নাহি মোবাইলে পাওয়া যায়! কও দেহি কী কাণ্ড! আমারে কয়েকটা খবর পইড়াও হুনাইলো। না হুনাইলে তো বিশ্বাসও করতাম না!
আবদুল করিম বলল, আশ্চর্য কতা কইলা নাসির ভাই। কী মোবাইল কও তো? আমারও তো মোবাইল আছে। মোবাইলে পত্রিকা পড়া যায় তা তো কহনো হুনি নাই!
আমাগো বাড়ি লও। দেখবা হানে। নাসির উদ্দিন বলল।
আবদুল করিম নাসির উদ্দিনের বাড়ির দিকে হাঁটা দেয়। অন্যরা যে যার বাড়ির দিকে চলে যায়। ধীরে ধীরে আলী আকবর মাথা তোলেন। বিছানা থেকে উঠে বসেন। শোকে মুহ্যমান পরিবেশটা আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এভাবেই আপনজন হারানোর বেদনা ভুলে যায় মানুষ। কিংবা ভুলে যেতে বাধ্য হয়। শোকের পাটি ভাঁজ করে পাশে রেখে কাজের পেছনে ছুটতে হয় তাকে। বেঁচে থাকার তাগিদ যে অনেক বড়। সেজন্যই হয়তো মানুষ সব ভুলে যেতে পারে।

ঘরের মেঝেতে বসে আছেন জমিলা খাতুন। তার হাতে একটা অ্যালবাম। অ্যালবামে বড় ছেলে ও ছেলের বউ’র ছবি। তিনি একটা একটা করে অ্যালবামের পাতা উল্টান আর ছবি দেখেন। তার পাশে বসে ছোট ছেলে আক্কাসও ছবি দেখে। ছবি দেখে মাকে এটা ওটা জিজ্ঞাসা করে। ছেলের সব প্রশ্নের জবাব দিতে পারেন না জমিলা খাতুন। তিনি কিছুক্ষণ পরপর আঁচল দিয়ে চোখের পানি মোছেন। আক্কাস তার মা’র দিকে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আবার ছবির দিকে তাকায়। ছবি দেখে আর মাকে প্রশ্ন করে। এরমধ্যেই বাইরে থেকে ঘরে আসেন আলী আকবর। তিনি জলচকি টেনে জমিলা খাতুনের কাছে গিয়ে বসেন। জমিলা খাতুন তাকে এক নজর দেখে আবার অ্যালবামে চোখ রাখেন। আলী আকবর কোনো রকম ভনিতা ছাড়াই বলতে শুরু করেন। বুঝলা আরেফিনের মা, পোলার বউরে তো তুমি দেহ নাই! আস্ত একটা পরী! আল্লায় মিলাইছিল! এতো সোন্দর মাইয়া আমি কোনো দিন দেহি নাই। আমার কাছে মনে হইতেছে স্বপ্ন। আমি স্বপ্ন দেখতাছি! আমি বিমান বন্দরের সামনে কান্নাকাটি করতে আছিলাম। বউমারে তো আমি চিনি না! আমারে আইয়া কইল, আপনে কানতেছেন কেন? আমি কইলাম, চীন থেকে আইজ আমার পোলার লাশ আইব। আমি আমার পোলার মুখটা একটু দেখমু। তারপর জিগাইল, আপনের পোলা কেডা?
আমি আরেফিনের নাম কইলাম। সঙ্গে সঙ্গে কইল, আপনে আমার গাড়িতে ওডেন। আমি গিয়া গাড়িতে উঠলাম। ওরে বাপরে! ওই রহম গাড়িতে আমি জীবনেও উডি নাই। সিডে বইলেই ঘুম আইয়া পড়ে। কিছুক্ষণ পর বউমা আমারে তার অফিসে লইয়া গেলো। ওরে বাবা! অফিস না যেন স্বর্গখানা! তারপর আমারে বইতে কইল। ঘ্রাণ আলা চা খাওইয়াল। বিস্কুট খাওইয়াল। তারপর দুই লাখ টাকা দিয়া কইল। ছেলেরে তো আর ফেরত পাইবেন না। ধইরা নেন আমিই আপনার ছেলে। আমার দুই চোখ দিয়া দরদর কইরা পানি বাইর হইতে লাগল। বউমা চোখ মুইছা দিয়া কইল, মন খারাপ কইরেন না। বাড়ির ঠিকানাডা দিয়া যান। আমি আপনাগো লাইগ্যা মাসে মাসে টাকা পাডাইয়া দিমু।
আবার কাঁদলেন আলী আকবর। তিনি চোখে চোখে বউমাকে দেখছেন। আর মনে মনে ভাবছেন, বউমা তার চোখের পানি মুছে দিয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছে। এই সান্ত্বনাটুকুই যেন তার বেঁচে থাকার অবলম্বন।

চলবে...

 

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

Header Ad
Header Ad

নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা চায় জামায়াত

জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। ছবি: সংগৃহীত

আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ লক্ষ্যে বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন উল্লেখ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সহযোগিতা চেয়েছে দলটি।

রোববার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এ তথ্য জানান জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।

সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তাহের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে প্রধান উপদেষ্টার নির্ধারিত টাইমলাইনের ওপরই জামায়াত আস্থা রাখবে।’ তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে পরিদর্শক দল পাঠানোর অনুরোধও করেছে জামায়াত।

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আমরা তাদের জানিয়েছি, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে প্রচুর গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়। এ শিল্পের প্রসারের জন্য নির্দিষ্ট একটি এলাকা নির্ধারণ করে সেখানে আরও বিনিয়োগের সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছি।’

নারীদের অধিকার ও জঙ্গিবাদ দমনে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তাহের বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা ইইউ প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেছি। নারীদের অংশগ্রহণের দিক থেকে জামায়াতে ৪৩ শতাংশ নারী সদস্য রয়েছে, যা অন্য যেকোনো দলের তুলনায় বেশি।’

তিনি নারী সংস্কার কমিশনের পতিতাদের শ্রমিক স্বীকৃতির বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন, ‘এটি নারীদের জন্য চরম অপমানজনক।’

Header Ad
Header Ad

কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার

কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মো. জাফর আলম। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মো. জাফর আলমকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রোববার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তিনি জানান, বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে ধানমণ্ডি এলাকা থেকে মো. জাফর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে ঠিক কী অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

Header Ad
Header Ad

ভারতের দিকে তাক করা পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক বোমা

ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মীরের পহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভয়াবহ হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তেজনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সীমান্তে প্রতিদিন গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে, বাড়ছে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা। এর মধ্যেই পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী হানিফ আব্বাসী ভারতে পরমাণু হামলার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।

রোববার (২৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এ তথ্য জানিয়েছে।

শনিবার এক অনুষ্ঠানে হানিফ আব্বাসী বলেন, "শুধুমাত্র ভারতের জন্য ১৩০টি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র তাক করে রাখা হয়েছে। ঘৌরি, শাহিন এবং গজনবির মতো অত্যাধুনিক মিসাইলও প্রস্তুত আছে।" ভারতের প্রতি কঠোর সতর্কবার্তা দিয়ে তিনি বলেন, "তারা যদি সিন্ধু নদীর পানি বন্ধ করার চেষ্টা করে, তাহলে সর্বাত্মক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।"

মন্ত্রী আরও বলেন, "আমরা মিলিটারি সরঞ্জাম ও মিসাইল শুধু প্রদর্শনের জন্য রাখিনি। পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কোথায় রাখা আছে তা কেউ জানে না, তবে এটুকু নিশ্চিত - এগুলো ভারতের দিকেই তাক করে রয়েছে।"

পাকিস্তানের আকাশসীমা ভারতীয় বিমানের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গ টেনে হানিফ আব্বাসী বলেন, "নয়া দিল্লি এখন বুঝতে শুরু করেছে তাদের কর্মকাণ্ডের কঠোর পরিণতি কী হতে পারে। যদি এই পরিস্থিতি ১০ দিন চলতে থাকে, তাহলে ভারতের এয়ারলাইন্সগুলো দেউলিয়া হয়ে যাবে।"

পহেলগাম হামলার জন্য ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতাকেই দায়ী করেন তিনি। তাঁর ভাষায়, "ভারত কিছু ঘটলেই অকারণে পাকিস্তানকে দোষারোপ করে।"

প্রসঙ্গত, পহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সমস্ত ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত।

ভারতীয় অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। ইসলামাবাদ ইতিমধ্যে সিমলা চুক্তি স্থগিত করেছে এবং পাকিস্তানের আকাশসীমা দিয়ে ভারতের বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। পাশাপাশি সিন্ধু নদীর পানি বন্ধ করা হলে যুদ্ধের হুঁশিয়ারিও দিয়েছে পাকিস্তান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা চায় জামায়াত
কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার
ভারতের দিকে তাক করা পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক বোমা
চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় তাওহিদ হৃদয়, বাড়ছে নাটকের রঙ
উত্তেজনার মধ্যেই যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল ভারত
ছেলে খুঁজে পাচ্ছি না, একজন জীবনসঙ্গী দরকার: মিলা
টাঙ্গাইলে শ্রমিকদলের নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধে ভারতের ১.১৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির শঙ্কা
দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা
রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে, এটি সংস্কার করা প্রয়োজন: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
উত্তাল ইউআইইউ ক্যাম্পাস, ভিসি-ডিনসহ ১১ কর্মকর্তার পদত্যাগ
এপ্রিলেই দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে থাকবেন দুই পুত্রবধূ
বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬০৮
ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় ফ্যাসিবাদী শাসক পালাতে বাধ্য হয়েছে: আলী রীয়াজ
মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান: ‍শেহবাজ শরীফ
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭
টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২
হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা