বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা

আসিফ আহমেদ ঘুমাতে পারছেন না। তিনি কিছুতেই দুই চোখের পাতা এক করতে পারছে না। অফিসের চিন্তায় তার মাথা খারাপ অবস্থা। লোক ছাঁটাইয়ের চাপ তিনি আর নিতে পারছেন না। তার কেবলই মনে হয় কাজটা অমানবিক। এতোগুলো কর্মীকে বিদায় করে তিনি ঠ্যাং দুলিয়ে অফিস করবেন তা তার পক্ষে সম্ভব না।

অন্যের পেটে লাথি দেওয়া তার স্বভাব না। অমানবিক কাজ তাকে দিয়ে হবে না। তিনি মানুষকে চাকরি দিয়েছেন। কিন্তু কারো চাকরি খেয়েছেন তার কোনো নজির নেই। কেউ কোনো ভুল করলে, কিংবা ঠিকমতো অ্যাসাইনমেন্ট না করলে বকাবাজি করেন। রাগ করেন। কখনো কখনো কথা বলা বন্ধ রাখেন। কেউ বড় কোনো অন্যায় করলে তাকে শাস্তি হিসেবে বাধ্যতামূলক ছুটি কিংবা বড়জোর কয়েকদিনের বেতন কেটেছেন। সেটাও যে অহরহ ঘটেছে তা নয়। কেবলমাত্র নৈতিক স্খলন ছাড়া কাউকে চাকরিচ্যুত করেননি। অথচ সেই মানুষটাকেই ছাঁটাই করতে বলা হচ্ছে। কমপক্ষে একশ’ লোককে ছাঁটাই করতে হবে। তিনি নিজের অজান্তেই বলে ওঠেন, না না! এটা কী করে সম্ভব!

আসিফ আহমেদের অবস্থা দেখে তার স্ত্রী মুনমুন আহমেদ বললেন, কি হয়েছে আসিফ? ঘুম আসছে না? কেন, কি হয়েছে? তোমার তো এমন হয় না!
আসিফ শুকনো গলায় বললেন, অফিস নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।
মুনমুন আহমেদ বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, কেন কী হয়েছে?
সংবাদ-কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য ব্যাপকভাবে চাপ দিচ্ছে।
এই সময় ছাঁটাই! এটা কেমন ধরনের কথা! এখন তো মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়ায়! এ সময় কি কেউ চাকরিচ্যুত করে?
তাহলে বলো, এটা কি মানা যায়?
না না! তুমি এ কাজ কোরো না। যা হয় হবে। এটা করতে গেলে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগবে। সেটা আরো বেশি খারাপ হবে।

আসিফ আহমেদ ধরা গলায় বললেন, সকালেই আমাকে তালিকা নিয়ে যেতে বলেছে। তালিকা দিতে হবে। আর ছাঁটাইয়ে রাজি না হলে পদত্যাগপত্র দিতে হবে। এ ছাড়া আর কি করব?
সেটাই ভালো। তুমি পদত্যাগ করো। শুধু শুধু মানসিক চাপ নেওয়ার কোনো দরকার নেই। মুনমুন আহমেদ বললেন।
ধন্যবাদ মুনমুন। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। আমি তোমার কাছ থেকে এটাই প্রত্যাশা করেছিলাম। তুমি চিন্তা করো, এই মানুষগুলো দশ বছর প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছে। এখন একটা বিপদ এসেছে। প্রাকৃতিক বিপদ। এর জন্য কেউ দায়ী নয়। অথচ এর জন্য কর্মীদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হবে। এটা কী ধরনের আচরণ?
শোন, আমি তো তোমাকে চিনি। ছাঁটাই করে তুমি একদিনও অফিস করতে পারবে না। আর তোমার তো দীর্ঘ ক্যারিয়ার পড়ে আছে। তোমাকে চাকরি করেই যেতে হবে। সারাজীবন মানুষের কথা শুনতে হবে। সবাই বলবে, আপনি এতো এতো লোককে ছাঁটাই করেছেন নিজের চাকরি টেকাবার জন্য। আর যদি ছাঁটাই না করে নিজে পদত্যাগ করে চলে আসো তাহলে আর কেউ বদনাম রটাতে পারবে না।
ঠিক বলেছ। আমি নিজের জন্য আসলে কখনো ভাবিনি। সব সময় আমি কর্মীদের কথা ভেবেছি। তাদের সুযোগ-সুবিধা, পদোন্নতির কথা ভেবেছি। তুমি দেখ, বিগত আট বছরে আমার এক টাকাও বেতন বাড়েনি। অথচ পাঁচ বছর আগে একটা ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করেছি। এরমধ্যে আরেকটি ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করা হয়েছে। সেটা বাস্তবায়নের নামও নেইনি। অথচ কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এতোগুলো মানুষের অভিশাপ নিয়ে আমি অফিস করব!
বুঝতে পারছি। তুমি কোনো চিন্তা কোরো না। আমার চাকরি তো আছে! আশা করি অসুবিধা হবে না। তুমি এখন ঘুমাও।
ধন্যবাদ মুনমুন। এখন সত্যিই আমার ঘুম আসবে। আমি ঘুমাবো। নিশ্চিন্তে ঘুমাবো।

মুনমুন আসিফ আহমেদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। চুলের ভেতরে আঙুল ঢুকিয়ে বিলি কেটে দেন। এক পর্যায়ে মুনমুন তাকে জড়িয়ে ধরে। ফিসফিস করে বলেন, শান্ত হও। শান্ত হয়ে ঘুমাও। তা না হলে শরীর খারাপ করবে। মাথা থেকে চিন্তা ঝেড়ে ফেলো। সময়টা পার হোক। নিশ্চয়ই আরো ভালো কিছু তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। তোমার মন যে কাজটি করতে সায় দিচ্ছে না, সেই কাজ তুমি কেন করবে? আমি তোমায় কথা দিচ্ছি, সংসার নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি যা আয় করি তা দিয়ে খুব ভালোভাবেই আমাদের চলে যাবে।

আসিফ আহমেদ মুনমুনকে আবারও ধন্যবাদ জানালেন। সেই সঙ্গে কৃতজ্ঞতাও। এ রকম একটা জটিল সময়ে মুনমুনের এই সাপোর্ট তার দরকার ছিল। মুনমুন ঠিকই ওর মনের অবস্থা বুঝতে পেরেছে। এটাই তার সবচেয়ে ভালোলাগার একটা ব্যাপার। স্ত্রীকে স্বামীর সুবিধা-অসুবিধা বুঝতে হয়। স্বামীর সীমাবদ্ধতার জায়গাগুলো উপলব্ধি করতে হয়। একইভাবে স্ত্রীর সুবিধা-অসুবিধা কিংবা সীমাবদ্ধতা বুঝতে হয় স্বামীকে। তাহলেই একটা সুন্দর সংসার গড়ে ওঠে।

মুনমুনের সাপোর্টে আসিফ যে কতটা মানসিক শক্তি পেয়েছেন তা তিনি আজ টের পাচ্ছেন। তার মনোবল অনেকগুণ বেড়ে গেছে। তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ছাঁটাই করবেন না। তিনি পদত্যাগই করবেন। স্ত্রীকে বলে দিয়েছেন কাল যদি আবার ছাঁটাইয়ের প্রসঙ্গ তোলে তাহলে তিনি বলবেন, আমার পক্ষে ছাঁটাই করা সম্ভব নয়। আমি নিজেই চলে যাচ্ছি। বার বার মনের মধ্যে এটাই তিনি রপ্ত করছেন। আগে নিজের সঙ্গে নিজে অনেক বোঝাপড়া করেছেন। অনেক হিসাব নিকাশ করেছেন। শেষ পর্যন্ত তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন। মুনমুনও তাকে সেই পরামর্শই দিয়েছেন। শুধু পরামর্শই দেননি। তিনি পুরো সংসারের ভার নিজের কাঁধে নিয়েছেন। যতদিন আসিফের সুসময় না আসবে ততদিন সেই সংসার চালাবেন। এ নিয়ে আসিফের চিন্তা করতে হবে না। এর চেয়ে বড় স্বস্তির কথা আর কী হতে পারে!

অফিসের কথা ভাবতে ভাবতেই আসিফ ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে মোবাইলে এলার্ম বাজার শব্দ পেয়ে তিনি ঘুম থেকে লাফিয়ে ওঠেন। সকাল তখন আটটা। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি, শরীরচর্চা করে গোসলে যান। এরমধ্যে মুনমুনও ঘুম থেকে ওঠেন। গোসল সেরে তিনি নাশতা রেডি করেন। একসঙ্গে নাশতা খান। চা খেতে খেতে আবারও মুনমুন আসিফকে বললেন, চিন্তা করবে না। একদম চিন্তা করবে না। কোনো রকম মাথা গরম করবে না। ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করবে। তোমার এমডি তো আজই যেতে বলেছে?
আসিফ আহমেদ মাথা ঝাঁকিয়ে জবাব দিলেন।
মুনমুন আবারও বললেন, অফিসে যাও। যদি যাকে তুমি সরাসরিই বলবে, তুমি ছাঁটাই করবে না। তুমিই পদত্যাগ করবে। আর তোমার ব্যক্তিগত জিনিসপত্র গুছিয়ে রেখ। আসার সময় সেগুলো নিয়ে এসো। গতকাল ব্যাগে করে কি এনেছিলে?
আমার ব্যক্তগত কিছু কাগজপত্র।
হুম। তার মানে তোমার মানসিক প্রস্তুতি আগে থেকেই ছিল?
হুম।
চলো তাহলে বের হই।
হুম। চলো।
আসিফ আহমেদ ও মুনমুন একসঙ্গে অফিসের উদ্দেশে বের হলেন।

আসিফ আহমেদ এগারো বছর আগে দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা প্রথম আলো ছেড়ে নতুন উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হন। আসিফের শুভাকাঙ্ক্ষীরা তখন আপত্তি করেছিলেন। প্রতিষ্ঠিত পত্রিকা ছেড়ে কেন তিনি অনিশ্চিত একটা জায়গায় যাচ্ছেন? নতুন পত্রিকা যদি না দাঁড়ায়! যদি শুরুতেই হোঁচট খায়! তাহলে তো ক্যারিয়ারটাই শেষ!

আসিফ কারো কথায় কান দেননি। কারো পরামর্শই তিনি শোনেননি। তার নিজের কাছেই মনে হয়েছে ক্যারিয়ারের স্বার্থেই তাকে নতুন উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। নতুন জায়গায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে। নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ তৈরি হবে। কিন্তু যোগ দিয়েই তিনি একটা গোলকধাঁধাঁয় পড়ে গেলেন। শুরুর সেই সময়গুলোর কথা আজ মনে পড়ছে তার। কত ঝড়-ঝাপটা যে তাকে সইতে হয়েছে। কত রকম ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে তাকে। নানামুখি ষড়যন্ত্র। কাজ জানা লোকদের এই হলো সমস্যা। অকাজের লোকরা সব সময়ই তাদের ঈর্ষা করে। সবাই মিলে তাদের টেনে-হিঁচড়ে নামানোর চেষ্টা করে। কথায় বলে না, সব শেয়ালের এক রা। সেটাই আজ পদে পদে প্রত্যক্ষ করছেন তিনি। তিনি জানেন, তাকে ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। তাই করেছিলেন তিনি।

আসিফ এমন এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলেন যা তিনি কখনো কল্পনাও করেননি। তার কাছে মনে হয়েছে, জায়গা বড় আজব। এখানে বেশিদিন থাকলে তার ক্যারিয়ারটা শেষ হয়ে যাবে। তাই তিনি চাকরি ছেড়ে চলে যাবেন বলে মনস্থির করেন। অন্যত্র যোগ দেওয়ার কথা ভাবেন। তিনি তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের বলেছেনও সে কথা। শুভাকাঙ্ক্ষীরাও তার জন্য চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ভালো কোনো সুযোগ তৈরি হয়নি। তিনিও তখন মাটি কামড়ে পড়ে থাকার মতো পড়ে ছিলেন। কখনো কখনো চোখের পানি ফেলেছেন। কত ধৈর্য ধরবেন? ধৈর্যেরও তো একটা সীমা আছে! সেই কঠিন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করে। আসিফও মনকে বোঝান, দেখলে তো সবুরে মেওয়া ফলে! ঘুরেফিরে সেই তো তোমার কাছেই দায়িত্ব এলো! কাজ করে যাও। তুমি জানো, তোমার চারপাশে শত্রু। তারা সর্বত্র কাঁটা বিছিয়ে রেখেছে। তোমাকে খুব সাবধানে, দেখেশুনে পদ চলতে হবে।

আসিফ সব সময় একটা ভরসাই করেছেন যে, তার ওপর মা বাবার দোয়া আছে। কাজেই কেউ তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। বাস্তবে সেটাই হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা সব রকম চেষ্টা করেও আসিফকে তার অবস্থান থেকে সরাতে পারেনি। কিন্তু আজকে যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে সেটা তিনি কীভাবে মোকাবিলা করবেন? এটা একটা নীতি-নৈতিকতার প্রশ্ন, মানবিকতার প্রশ্ন। মনুষ্যত্বের প্রশ্ন। নিজের নীতি-নৈতিকতা জলাঞ্জলি দিয়ে তিনি সম্পাদকের পদ আকড়ে থাকবেন? এতোদিন তিনি প্রতিষ্ঠানের একটি বটবৃক্ষের মতো ছিল। সবাইকে তিনি ছায়া দিয়ে রেখেছেন। সেই ছায়াটা না দিতে পারলে তার থাকার কী মূল্য! তা ছাড়া মিডিয়াতে আসিফের একটা সুনাম আছে। সাংবাদিক-কর্মীবান্ধব সম্পাদক, আপাদমস্তক পেশাদার সম্পাদক বলে সবাই মনে করে। সেই ভাবমূর্তি মুহূর্তের মধ্যে ধুলোয় মিশে যাবে। সবাই ছি ছি করবে। সম্পাদক হিসেবে যতটুকু সুনাম অর্জন করেছিলেন তার চেয়ে দুর্নাম হবে অনেক বেশি। ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত পর্বে এসে আপোস করবেন? একটা অশুভ, অসুর শক্তির সঙ্গে আপোস করবেন! যদিও সময়টা খুব খারাপ। চাকরি ছাড়ার জন্য তো আরো খারাপ! যে সময় মানুষ ছাঁটাই হচ্ছে সে সময় চাকরি ছাড়বেন!

আসিফ বারবার নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করেছেন। নিজের মনকে বারবার প্রশ্ন করেছেন যে তিনি ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কি না! একবার নয়, দুইবার নয়। তিনি বারবার ভেবেছেন। শেষমেষ তিনি স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, পদত্যাগই তার একমাত্র সমাধান। এর বিকল্প হচ্ছে ছাঁটাই। জীবনের মধ্য গগনে এসে ছাঁটাই করে তিনি কলঙ্কের বোঝা নিজের মাথায় নেবেন না।
অতঃপর আসিফ অফিসে বসে চেয়ারম্যান বরাবর একটি পদত্যাগপত্র লিখলেন।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত