রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৮

‘কত রাজপথ জনপদ ঘুরেছি, সাতটি যে পৃথিবীর বিস্ময়...’ সেই সাত বিস্ময়ের দুটিই মিশরে। এই সাত আশ্চর্যের প্রথমটি এবং এখন পর্যন্ত টিকে থাকা একমাত্র নিদর্শন গিজার পিরামিড দেখা হয়ে গেছে। অন্যটি আলেক্সিন্দ্রিয়ার বাতিঘর প্রবল ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গেছে প্রায় সাড়ে পাঁচশ বছর আগে। কিন্তু এখনো প্রতি বছর অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক উত্তর মিশরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, বন্দর নগরী আলেক্সান্দ্রিয়ায় আসেন বিশ্বখ্যাত লাইব্রেরি আর নিশ্চিহ্ন বাতিঘরের শহরে।

আমরাও ভোরবেলা রওনা দিয়েছি কায়রো থেকে। গাড়ির ড্রাইভিং সিটে সৌরভ, তার পাশে রানা ভাই, পেছনে আমি আর হেনা। দিনটা বৃহস্পতিবার বলে রাস্তায় প্রচণ্ড যানজটে সাত সকালে শহর থেকে বেরোবার মুখেই বেশ কয়েকবার আটকাতে হলো। সৌরভ নিজে গাড়ি চালিয়ে বেশ কয়েকবার আলেক্সান্দ্রিয়ায় গেছে, কাজেই পথঘাট তার চেনা। কায়রোর ছাড়িয়ে কিছুটা এগোবার পরে হাইওয়েতে উঠে যাবার জন্যে গাড়ি ঘুরিয়ে বিকল্প পথে শহরতলীর একটি আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়ল সৌরভ। এরপার চেনা পথ অচেনা হতে হতে পথ হারিয়ে এক সময় আমরা একটা বাগানবাড়ি কিংবা কারখানার গেটের সামনে এসে থেমে গেলাম। এখান থেকে বেরোবার কোনো পথ নেই। সৌরভ নেমে দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করলে সে আকারে ইঙ্গিতে একটা রাস্তা দেখিয়ে দিল। গাড়ি ঘুরিয়ে খানিকটা কাঁচা রাস্তা, কিছুটা ভাঙাচোরা পথে এগিয়ে যেখান থেকে হাইওয়ে ছেড়েছিলাম তার কাছাকাছি একটা জায়গায় পৌঁছালাম। তবে ততোক্ষণে রাস্তায় যানজট একটু কমেছে, আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই একটা রোড সাইড রেস্টুরেন্টে এসে দাঁড়ালাম।

       পথে পথে অসংখ্য মসজিদ

কায়রো থেকে হালকা চা- নাশতা খেয়ে বেরিয়েছিলাম। কাজেই পথের পাশের রেস্তোরাঁর ভেতর থেকে ব্রেকফাস্ট হিসাবে ক্রসো এবং বেশ বড় একটা কফি মগ হাতে নিয়ে সত্যিই পথের ধারে এসে বসলাম। পাশ দিয়ে হুশ হাশ করে গাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রশস্ত ফুটপাথে ঘাসের মতো সবুজ কার্পেটে পাতা টেবিলে বসে নাশতা শেষ করলাম। তারপরে আবার উত্তরমুখি ছুটতে থাকা। শহরের বাইরে পথের পাশে ম্যাডোনাল্ডস বা কেএফসির মতো খাবারের দোকান থাকতেই পারে। কিন্তু এতো দূরে ক্যারিফোর, নাইকি এবং এইচ অ্যান্ড এম-এ জুতা, ছাতা, জামা-কাপড় কিনতে কারা আসে ভেবে পাই না। মাঝে মাঝে খেজুর বাগান আর ছোট ছোট জনপদের ফাঁকে পথের দুপাশেই চোখে পড়ে একের পর এক মসজিদ। প্রতি কিলোমিটারে জনমানুষহীন রাস্তার ধারে গোটা কয়েক সুদৃশ্য মসজিদ দেখে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক— এত মসজিদে নামাজ পড়ে কারা! 

         আলেক্সান্দ্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

মসজিদগুলোর নির্মাণ শৈলী এবং বহিরাঙ্গণের রঙের তফাৎ থাকলেও প্রায় প্রতিটি মসজিদেই রয়েছে একটি করে গম্বুজ এবং একটি মিনার। একাধিক গম্বুজ বা তিন চারটি মিনার বিশিষ্ট মসজিদ যে নেই তা নয়। এ ছাড়া সুনির্মিত সুদৃশ্য তোরণযুক্ত মসজিদও দেখা গেল বেশ কয়েকটি। যারা ঢাকাকে মসজিদ নগরী এবং বাংলাদেশকে মসজিদের দেশ মনে করেন, তারা নিশ্চয়ই কায়রো শহরের অলিগলিতে পা রাখেননি এবং মিশরে শহরাঞ্চলের বাইরে কোথাও যাবার সুযোগ তাদের হয়নি। কয়েকটি মসজিদের সামনের তোরণে কয়েকটি ঘোড়ার মূর্তি দেখে মনে হলো ইসলামে যে মূর্তি নির্মাণ হারাম তা হয়ত এদেশের মানুষ এখনো জানে না। এইসব মসজিদ, ছোট দুই একটি শহর এবং অসংখ্য খেজুর বিথী দেখতে দেখতে এবং গাড়ির সিডি প্লেয়ারে রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতে শুনতে আমরা এক সময় আলেক্সান্দ্রিয়ার উপকণ্ঠে এসে পৌঁছলাম।    

      লাইব্রেরির বৃত্তাকার দেয়াল

মিশরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সাতটি আশ্চর্যের অন্যতম বাতিঘর ছাড়াও ঐতিহাসিক লাইব্রেরির জন্য খ্যাত আলেক্সান্দ্রিয়া ছিল প্রাচীন পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এই শহর এক সময় জ্ঞান-বিজ্ঞান, বুদ্ধিবৃত্তি ও সুকুমার কলার চর্চায় গ্রিসের এথেন্সকেও পেছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে শোনা আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেটের নামে যে শহরের নাম সেই আলেক্সান্দ্রিয়ায় আড়াই ঘণ্টায় পৌঁছাবার কথা থাকলেও আমাদের সময় লেগেছে সাড়ে তিন ঘণ্টা। সমুদ্র নগরীতে প্রবেশের পথেই চোখে পড়ে হাতের ডান দিকে ভূমধ্যসাগরের নিস্তরঙ্গ নীল জলে ভেসে বেড়াচ্ছে ছোট ছোট নৌযান। সমুদ্রের ঢেউ থেকে শহর রক্ষার জন্যে তৈরি প্রকাণ্ড পাথরে বাধানো বাঁধের এ পাশের প্রশস্ত ফুটপাথের উপর কংক্রিটের রেলিংয়ে তরুণ তরুণীরা বসে আড্ডা দিচ্ছে। বেলা এগারোটায় কড়া রোদে সমুদ্র তীরে দীর্ঘ সারিতে তরুণ-তরুণীদের জমায়েত একটু বিসদৃশ্য মনে হচ্ছিল। তবে একটু পরেই বিবলোথিক আলেক্সান্দ্রিয়া, অর্থাৎ আলেক্সান্দ্রিয়া গ্রন্থাগারের সামনে এসে দাঁড়ালে গাড়ি থেকে নেমেই দেখলাম উল্টো দিকে ইউনিভার্সিটি অব আলেক্সান্দ্রিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের এতো কাছে সমুদ্র থাকতে তরুণ-তরুণীরা রেস্তোরাঁ বা ক্যাফেতে আড্ডা দেবে না এটাই স্বাভাবিক।

         দেমিত্রিয়াস ফলেরিয়াস

নগরকেন্দ্রের একটা চমৎকার অবস্থানে প্রাচীন বন্দরের কাছাকাছি গড়ে তোলা হয়েছে নতুন বিবলিওথিকা আলেক্সান্দ্রিয়া। শুরুতে আমাদের পরিকল্পনা ছিল হোটেলে লাগেজ রেখে হাত মুখে পানি দিয়ে লাইব্রেরিতে আসব। কিন্তু বৃহস্পতিবারে দর্শনার্থীদের জন্যে লাইব্রেরির দরজা বন্ধ হয়ে যাবে বিকেল সাড়ে তিনটায়। দেরিতে ঢুকে বিশাল লাইব্রেরি ঘুরে দেখার যথেষ্ট সময় নাও থাকতে পারে। সেই কারণে চেক-ইনের আগেই আমাদের তিনজনকে লাইব্রেরি ভবনের সামনে নামিয়ে দিয়ে সৌরভ হোটেলে চলে গেল। হোটেলের রুমে বসেই সে অফিসের কাজে করবে অনলাইনে। আমরা পাঠাগার পরিভ্রমণ শেষ করে হোটেলে ফিরে লাঞ্চ করব। চত্বরের বাইরে কয়েকটি কাউন্টারে টিকেট বিক্রি হচ্ছে। লাইব্রেরিতে প্রবেশের জন্য নন-ইজিপ্টশিয়ানদের দিতে হবে ৭০ পাউন্ড অর্থাৎ সোয়া চারশ টাকা। দুই হাজার দুইশ সাতষট্টি বছর আগের একটা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের জন্যে চার পাঁচশ টাকা খুব বেশি নয়। লাইব্রেরি চত্বরে প্রবেশের আগেই ভবনটির দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য দৃষ্টি আকর্ষণ করল। বাইরের দেয়াল জুড়ে বিশাল বৃত্তাকার কাঠামো স্থাপত্য শিল্পের একটি ভিন্ন ধরনের নিদর্শন। এই বিস্তৃত কাঠামোর পাথুরে দেয়ালের প্রতিটি ব্লকে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার অক্ষরের কিছু লেখা খোদাই করা। রানা ভাই  আগেও একবার আলেক্সান্দ্রিয়ার লাইব্রেরিতে এসে গেছেন। বললেন, ‘এখানে বাংলা অক্ষরে লেখাও দেয়ালে খোদাই করে রাখা আছে। অগণিত ভাষার ভেতর থেকে বাংলা খুঁজে বের করা সম্ভব হলো না। দেখলাম দলে দলে শিক্ষার্থী, পর্যটক, দর্শনার্থী ভবনে ঢুকে পড়ছে। আগেই জেনেছিলাম প্রতিদিন সর্বোচ্চ তিনশ পর্যটক লাইব্রেরিতে প্রবেশ করতে পারেন। যদিও টিকেট কেনা হয়ে গেছে, তারপরেও যদি কোনো কারণে আটকে দেয়! অতএব বাইরের অংশ পরেও দেখা যাবে ধরে নিয়ে আমরা নিরাপত্তা ফটক পার হয়ে মূল ভবনে ঢুকে পড়লাম।   

       লাইব্রেরির একাংশ

লাইব্রেরির সংগ্রহশালায় প্রবেশের আগে পুরো লাইব্রেরি চত্বর ও ভবনের মডেল দেখে এর স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য বুঝতে চেষ্টা করি, দেয়াল জুড়ে সুদৃশ্য ধাতব মুর্যালের কারুকাজ দেখি। ভবনটি নতুন করে নির্মাণের পরে প্রেসিডেন্ট হুসনী মোবারক উদ্বোধন করেছিলেন ২০০২ সালের ১৬ই অক্টোবর। উদ্বোধনী স্মারকে The whole world celebrated with Egypt and her President, the rebirth of the library to be a beacon of knowledge and home to meeting and dialogue between people and culture, লেখাটি নিঃসন্দেহে সুচিন্তিত ও গুরুত্বপূর্ণ। সত্যিই তো হুসনী মোবারককে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করলেও তার সময়কালেই বিবলিওথিকা আলেক্সান্দ্রিয়ার পুনর্জন্ম ঘটেছে সে কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।  

       লাইব্রেরিতে বইয়ের সারি

উদ্বোধনী ফলক ছাড়াও প্রবেশ পথের পাশে রয়েছে শ্বেত পাথরে তৈরি দেমিত্রিয়াস ফালেরিয়াসের প্রমাণ সাইজের মূর্তি। খ্রিস্টের জন্মের শ তিনেক বছর আগে এথেন্সের কবি দার্শনিক ও বক্তা দেমিত্রিয়াস ছিলেন জ্ঞানে ও শিক্ষায় সমৃদ্ধ অপ্রতিদ্বন্দ্বী একজন মানুষ। এ ধরনের মানুষের শত্রুর অভাব হয় না। তাই তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল প্রথমে থিবস নগরী অর্থাৎ বর্তমানের লুস্করে। পরে তিনি আলেক্সান্দ্রিয়ায় এসে একটি জ্ঞান ভান্ডার গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেটিই পরবর্তীকালে হয়ে ওঠে বিশ্বনন্দিত গ্রন্থাগার। একজন প্রজ্ঞাবান কাজের মানুষ নির্বাসিত জীবনেও যে অবদান রেখে গেছেন আড়াই হাজার বছর পরেও তার স্বীকৃতি স্বরূপ বিবলোথিক আলেক্সান্দ্রিয়ার প্রবেশ পথেই শ্বেতপাথরের ভাস্কর্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি।  লাইব্রেরির ভেতরে প্রথমেই এর বিশালত্ব একটা চমক সৃষ্টি করে। উপরের স্তর থেকে নিচে বাঁ দিকে তাকিয়ে দেখি কয়েকটি স্তরের সবচেয়ে নিচের স্তরে সারি সারি চেয়ার টেবিল সাজানো, তার উপরের একটি স্তরে সাজানো টেবিলগুলোর প্রত্যেকটিতে একটি করে ডেস্কটপ কম্পিউটার। তবে এখানে কম্পিউটার ব্যবহারকারীর সংখ্যা তেমন বেশি নয়। তারও উপরের একটি স্তরে ছাপাখানার বিবর্তনের ইতিহাস হিসাবে প্রদর্শিত হচ্ছে কয়েকশ বছরের পুরোনো কয়েকটি মুদ্রণযন্ত্র। প্রত্যেক স্তর থেকেই উপরে বা নিচের স্তরে যাবার জন্যে চারিদিকে রয়েছে অনেকগুলো সিঁড়ি।   

     শেক্সপিয়ার বেঞ্চ

আমরা পিনপতন নীরবতার ভেতর দিয়ে ডান দিকে এগিয়ে যাই। ডান দিকের স্তরগুলোতে সারি সারি তাকে অসংখ্য বই সাজানো। একটা দীর্ঘ করিডোরের ডান পাশে বইয়ের তাক আর অন্য পাশটা রেলিং দিয়ে ঘেরা, যার নিচেই আরেক স্তরের পাঠক সমাবেশের জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে টেবিল। করিডোরের শুরুতে হলুদ ফিতা টানিয়ে নিষেধাজ্ঞা ঝুলছে, দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ। অতএব আমরা করিডোর ধরে না এগিয়ে সিঁড়ি বেয়ে আরও উপরে উঠে যাই। এখানে শুরুতেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেক্সপিয়ারের নাম লেখা একটি বিশাল খোলা বই। বইটি আসলে একটি বেঞ্চ, দর্শণার্থীরা ক্লান্ত হয়ে পড়লে বসে পড়তে পারেন। আমরা ক্লান্ত হলেও একটা খোলা বইয়ের উপর বসে পড়াটা কেন যেন আমাদের সংস্কারের সঙ্গে মানায় না, তাই এই স্তরের করিডোর ধরে এগোতে থাকি। একের পর এক লেখক কবি নাট্যকারের আবক্ষ মূর্তি চোখে পড়ে বিভিন্ন স্তরে, করিডোরের কোণায় এবং পথের বাঁকে। দ্বাদশ শতকের আজারবাইজানের কবি নিজামী গাঞ্জাভি, গ্রিক কবি সি পি ক্যাভাফি এবং হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডরসনের মতো খ্যাতিমানদের পাশাপাশি একমাত্র ভারতীয় হিসাবে জায়গা করে নিয়েছেন মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধী! গান্ধীজী কাব্যকলা কিংবা সাহিত্য সংস্কৃতিতে কী অবদান রেখেছেন আমার জানা নেই, তবে ভারত সরকার রবীন্দ্রনাথের ভাস্কর্য না পাঠিয়ে প্রতিনিধি হিসাবে গান্ধীজীকে পাঠিয়ে দিয়েছে। বলে রাখা ভালো, এখানে প্রদর্শিত প্রায় সব শিল্পকর্মই সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের উপহার। 

      কবি নিজামী গাঞ্জাবি

এই গ্রন্থাগারের এগারোতলা ভবনে চল্লিশ লক্ষ বই ভবনটিতে সাজিয়ে রাখা সম্ভব, আর সংরক্ষণের জন্য রাখা যাবে আশি লক্ষ পর্যন্ত বই। কিন্তু বর্তমানে লাইব্রেরির দুটি শাখায় নয় লক্ষ পুস্তকের মধ্যে বিভিন্ন দেশের নানা ভাষার বই থাকলেও বাংলা ভাষায় রচিত কোনো বই নেই। রানা ভাই কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে জানালেন, লাইব্রেরির একজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের সঙ্গে বসে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, বাংলা ভাষায় লেখা বাংলাদেশি বা ভারতীয় কোনো বই তাদের সংগ্রহে নেই। তবে বাংলাদেশ সরকার বা জাতীয় গ্রন্থাগারের মতো প্রতিষ্ঠান ছাড়াও কোনো ব্যক্তি যদি বই পাঠাতে চান তাহলে তা সাদরে গৃহীত এবং সংরক্ষিত হবে। বই পাঠাবার নিয়ম-কানুন রানা ভাই জেনে এসেছেন এবং তার নিজের ও আমার লেখা কয়েকটি বই পাঠিয়ে দেবার প্রতিশ্রুতিও দিয়ে এসেছেন। 

আলেক্সান্দ্রিয়ার আড়াই হাজার বছর আগের গ্রন্থাগারের ভেতরে ঘুরতে ঘুরতেই ভাবছিলাম আমাদের ন্যাশনাল লাইব্রেরি এবং জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকাশকদের তদবিরের বই, আমলাদের বই এবং ভাগ বাটোয়ার বই পুস্তক কিনেই সময় এবং অর্থের সংকুলান করতে পারেন না, তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বইপত্র সম্পর্কিত বৈদেশিক বিষয়ের খোঁজ-খবর নেবেন কখন! 

চলবে...    

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৭ 

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার তিনটি ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর তুমুল গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই সেনাসদস্যসহ মোট ১৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে আটজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়। একই দিনে উত্তর ওয়াজিরিস্তান ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের দুটি স্থানে আরও দুটি অভিযান চালানো হয়।

উত্তর ওয়াজিরিস্তানে চারজন এবং দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের গোমাল জ্যাম এলাকায় তিনজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে সেনাবাহিনী। এই সংঘর্ষগুলোর একটিতে পাক বাহিনীর দুই সেনা সদস্য প্রাণ হারান।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে।

এদিকে, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, এসব অভিযান ছিল পরিকল্পিত ও গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে, বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে।

‘পাকিস্তান ইন্সটিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ’ (PICS) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ডিসেম্বরের তুলনায় প্রায় ৪২ শতাংশ বেড়েছে। এতে করে পুরো অঞ্চলে নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর পৌর এলাকার কাইতকাই রূপালী ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ধনবাড়ী উপজেলা পৌর এলাকার চরভাতকুড়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে সিএনজি চালা হেলাল উদ্দিন (৫৫)। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সিএনজি যাত্রী ছিলেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক এ বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাতে দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজি ধনবাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজির চালক ঘটনা স্থলে মারা যান। এ সময় গুরুতর আহত হয় এক যাত্রী।

এরপর তাকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে তিনি মারা যায়।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক জানান, নিহত সিএনজি চালকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে, অজ্ঞাত ওই যাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি, শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

Header Ad
Header Ad

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র হজ ফ্লাইট শুরু আগামী মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল)। ওই দিন ৪১৯ জন সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। হজের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

চলতি বছর ৮৭ হাজার ১০০ জন পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন হজযাত্রী সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮১ হাজার ৯০০ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন।

প্রথম ফ্লাইটটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। হজ ব্যবস্থাপনাকে নির্বিঘ্ন করতে সরকারি পর্যায়ে ১১২ জন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১ হাজার ৭৪৩ জন গাইড দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি ৭০ জন মোয়াল্লেম হজযাত্রীদের সার্বিক সহায়তা করবেন।

হজযাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ তিনটি এয়ারলাইনস। ৩১ মে পর্যন্ত হজের ফ্লাইট চলবে। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন এবং শেষ হবে ১০ জুলাই।

পবিত্র হজ উপলক্ষে এ বছর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালনা করবে ১১৮টি, সাউদিয়া ৮০টি এবং নাস এয়ারলাইনস ৩৪টি ফ্লাইট।

হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা, যা ৯ জিলহজ মসজিদে নামিরা থেকে প্রদান করা হয়। এবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে হজের খুতবা, এবং তাৎক্ষণিক অনুবাদ করা হবে ২০টি ভাষায়। 

যেসব ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করা হবে সেগুলো হলো- বাংলা, ফরাসি (ফ্রেঞ্চ), মালয়, উর্দু, ফারসি, চাইনিজ, তুর্কি, রাশিয়ান, হাউসা, ইংরেজি, সুইডিশ, স্প্যানিশ, সোয়াহিলি, আমহারিক, ইতালিয়ান, পর্তুগিজ, বসনিয়ান, মালায়লাম, ফিলিপিনো এবং জার্মান। 

উল্লেখ্য, ১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ৫ জুন) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭
টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২
হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার