রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৬

ফারাওদের রাজত্ব থেকে ফাইয়ুমের মরুভূমি পর্যন্ত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিলেও ঐতিহাসিক খানে খলিলি বাজার ছাড়া কায়রোর সাধারণ কোনো বাজারে যাওয়া হয়নি। যে কোনো নতুন শহরে সুযোগ পেলেই আমরা কাছে পিঠের কাঁচা বাজারে একটা চক্কর দিয়ে আসি। সকালে নাস্তার পরেই বেরিয়ে গেলাম আল মাআদি এলাকার বাজারে। যদিও মাআদি তুলনামূলক বিচারে অনেকটাই আমাদের গুলশান বনানীর মতো একটি অভিজাত আবাসিক এলাকা, কিন্তু রেল লাইন পার হয়ে একটু সামনে এগোলে যে বাজার তার চেহারার সঙ্গে হাতিরপুল বাজারের তেমন পার্থক্য নেই। বিভিন্ন জিনিসপত্রের সারি সারি দোকানের ফাঁকে, রুটির কারখানা এবং বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট। দোকানগুলোর সামনে রাস্তার উপরেই বসে গেছে সবজি এবং ফলের দোকান। মুদি দোকানের পাশেই গরু কিংবা ভেড়ার লম্বা ঠ্যাং ঝুলিয়ে কসাইখানায় বিক্রি হচ্ছে মাংস।

প্রথমেই আমরা একটা রুটির দোকানে দাঁড়ালাম। আয়েশ বালাদি নামের নিত্যদিনের খাবারের রুটি সাধারণত কেউ বাড়িতে তৈরি করে না। পুরোনো ঢাকায় যেমন তন্দুর রুটি বা বাখরখানি তৈরি হয় তেমনি তাৎক্ষণিকভাবে তৈরি গরম আয়েশ বালাদি কিনে বাড়িতে নিয়ে আয়েশ করে খাওয়াই প্রচলিত রীতি। এখানে অবশ্য হাতের বানিয়ে তন্দুরে রুটি সেঁকার ব্যবস্থা দেখা গেল না। ভেতরে কোথাও তৈরি হয়ে কনভেয়ার বেল্টের মতো একটা চলমান ধাতব পাতের উপর থেকে এক সঙ্গে গোটা কয়েক রুটি টুপটাপ করে এসে পড়ছে। রানা ভাই রুটিওয়ালা তরুণের সঙ্গে কথা জমাতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সে বেচারা ভীষণ ব্যস্ত, প্রতি মুহূর্তে খদ্দের সামলে সাধ্যমতো রানা ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছিল। আমরা খুব বেশি দেরি না করে এক প্যাকেট রুটি কিনে সামনে এগিয়ে গেলাম। সরকার রুটিতে ভর্তুকি দেওয়ার ফলে আকারভেদে দশটি বালাদি রুটির দাম মাত্র পাঁচ থেকে ছয় ঈজিপশিয়ান পাউন্ড ।

রেস্টুরেন্ট এবং চা কফির দোকানে এবং দোকানের বাইরে সাত সকালেই জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন অনেকেই। রানা ভাই চায়ের দোকানের বাইরে এক বৃদ্ধের সঙ্গে কথা শুরু করইে তিনি গ্রিনটির অফার দিয়ে ফেললেন। আমরা অবশ্য চা না খেয়ে রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার একটা ছবি তুলে সামনে এগিয়ে গেলাম। পাশাপাশি চশমা এবং একটা প্রসাধন সমাগ্রীর দোকানের সামনে অনেকগুলো বাক্স সাজিয়ে প্রচুর ফলের সম্ভার সাজানো। আপেল, আঙুর, কমলা, নাশপাতি এমনকি শরিফা পর্যন্ত আমাদের পরিচিত ফলের সঙ্গে কিছু অপরিচিত ফলও দেখা গেল, কিন্তু গাবের মতো লাল টুকটুকে ফলটার নাম জানা গেল না। প্রসাধন সামগ্রীর দোকানের ঠিক পাশেই বিক্রি হচ্ছে মাংস। এতোক্ষণ রুটি, চা, ফলমূলের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে বেশ কিছু ছবি তোলা হয়ে গেছে। কিন্তু মাংস ঝোলানো দোকানের দিকে ক্যামেরা তুলতেই ছুরি হাতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল এক কসাই। ছবি তুলতে গিয়ে কায়রোর কসাইয়ের ছুরিকাঘাতে হতাহত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটার আগেই ক্যামেরা সরিয়ে নিলাম। তবে এর আগেই কসাইদের কারবার ভিডিওতে ধারণ করা হয়ে গেছে।

     রাস্তায় সবজি বাজার

কাঁচা বাজারে ফলমূলের মতো শাক সবজিরও কোনো অভাব নেই। বেশিরভাগ সবজির দোকানে নারী অথবা শিশু বিক্রেতারা গাঁজর মূলা সিম বেগুন ক্যাপসিকাম এবং শশাসহ বিভিন্ন ধরনের বীনের ডালা সাজিয়ে বসে আছে। পালং শাক এবং নাম না জানা আরও দুই এক ধরনের শাকের আঁটি দেখে মনে হলো মরুভূমির লোকেরা শুধু শুকনো রুটি, দুম্বার মাংস আর খেজুর খেয়ে বাঁচে বলে আমাদের যে ধারণা ছিল তা মোটেও সত্যি নয়। আমরা ফুটপাথের দোকানে দোকানে ঘুরে জিনিসপত্রের দাম সম্পর্কে একটা ধারণা পাবার চেষ্টা করছিলাম। ভাষা না বুঝলেও প্রায় সবাই সাধ্যমতো উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছে, প্রায় সবাই ছিল বেশ হাসিখুশি। কয়েকজন কিশোর আমাদের সঙ্গে ছবি তোলার জন্যে এগিয়ে এসে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে গেল। শুধু একজন নারী বিক্রেতার দোকানের ছবি তোলার সময় শিশু কোলে দাঁড়ানো পুরুষ লোকটি ‘লা লা’ বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তার পুরুষত্ব জাহির করলে আমরা ক্ষান্ত দিলাম।

     কায়রোর কসাইখানা

কিছু ফল কিছু শাক-সবজি কিনে ঘরে ফেরার পরে দেখা গেল তিন কেজি আপেল নাসপাতিসহ রানা ভাই ব্যাগটা কোনো একটা দোকানে ভুল করে ফেলে চলে এসেছেন। কিন্তু ব্যাগটা কোথায় রেখেছেন তিনি কিছুতেই মনে করতে পারলেন না। আমার ক্যামেরায় শ্যুট করা ভিডিও ফুটেজ দেখতে দেখতে হঠাৎ চোখে পড়ল বাজার থেকে বেরোবার আগে রানা ভাই শেষ যে বড় দোকানটায় ঢুকেছিলেন সেখানেই বাইরের দিকের ডেস্কের উপর ব্যাগটা রেখেছেন। দোকান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেল আশা করি তিন কেজি ফল ফেরতও পাওয়া যাবে।

বিকেলে পুরোনো কায়রোর রিলিজিয়াস কমপ্লেক্সে যাওয়ার কথা। তবে তার আগে ফলোদ্ধারের জন্যে বাজারের দিকে যেতে হলো। সেই দোকানের সামনে রানা ভাই গাড়ি থেকে নামতেই দোকানের ভেতর থেকে একজন হৈ হৈ করে ইংরেজি আরবি মিশিয়ে যা বললেন তার অর্থ ‘তুমি চলে যাবার পরপরই তোমাকে খুঁজেছি। তোমার ফলের ব্যাগটা এখানে থেকে গেছে।’ আমাদের ভিডিও এভিডেন্স বের করার কোনো দরকার হলো না, তার আগেই ফলের ব্যাগ হাতে পেয়ে রানা ভাই ‘শুকরান শুকরান’ বলে গাড়িতে উঠে পড়লেন।

        আবু সেরাগা চার্চের একাংশ

পুরোনো কায়রোর ঐতিহাসিক মসজিদ আমর ইবনে আল আস-এর কাছাকাছি বেশ বড় একটা এলাকা জুড়ে মসজিদ এবং বিভিন্ন মতাদর্শের কয়েকটি গির্জার পাশাপাশি একটি ইহুদি উপাসনালয় মিলিয়ে বড় এলাকা জুড়ে এই জটিল ধর্মীয় চত্বর। রিলিজিয়াস কমপ্লেক্স, কায়রো, লেখা একটি নির্দেশনা ফলক পেরিয়ে ভেতরে ঢোকার পরে মনে হলো এলাকাটা তুলনামূলকভাবে জনবিরল এবং ব্যস্ত কায়রোর অন্যান্য এলাকার চেয়ে নীরব। পরিচ্ছন্ন পথে মানুষের চলাচল কম এবং কোথাও আবর্জনার স্তূপ চোখে পড়ে না। এখানে চার্চ অব মেরি গার্গস, চার্চ অব আবু সেফিয়ান, চার্চ অব সেইন্ট বারবারা নামে ক্যাথলিক, প্রোটেস্টান্ট, অর্থডক্স এবং অ্যাভেঞ্জেলিক চার্চ মিলিয়ে সবগুলো গির্জা একদিনে দেখে শেষ করা অসম্ভব। আমরা বেছে নিলাম কাছাকাছি আবু সেরগা। খানিকটা দূরে পার্কিং-এ গাড়ি রেখে পাশাপাশি কয়েকটি গির্জার চত্বরে প্রবেশের আগে নাম কা ওয়াস্তে একটা নিরাপত্তা ফটক পার হতে হলো। তারপরেই হেঁটে গেলাম আবু সেরগার দরজা পর্যন্ত।

     আবু সেরগা চার্চের ধর্মাপোদেশ

স্থানীয়ভাবে আবু সেরগা নামে পরিচিত কায়রোর প্রাচীনতম কপটিক চার্চগুলোর একটি সেইন্ট সেরগিয়াস ও সেইন্ট বাচুস চাচের্র প্রবেশ পথে চার্চের নাম লেখা থাকলেও আসল গির্জা ভবনে ঢুকতে অনেক দূর পর্যন্ত একটা সরু গলিপথ পার হতে হলো। গলিপথের দুপাশের তাকে সাজানো অসংখ্য বই। কিছু সংখ্যক তাকে বাইবেলের নানা কাহিনি থেকে নেওয়া রঙিন ছবি। এই গির্জা যে হাজার দেড়েক বছর আগের তা এর নির্মাণকাল না জানলেও বলে দেয়া যায়। সিরিয়ায় ধর্ম বিশ্বাসের জন্য শহিদ ধর্মযোদ্ধা সেইন্ট সেরগিয়াস ও সেইন্ট বাচুসের নামে ক্রিস্টিয় চতুর্থ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত গির্জা সংলগ্ন ভূগর্ভের গহীনে মা মেরি, জোসেফ এবং শিশু যিশুখ্রিস্ট বিশ্রাম নিয়েছিলেন বলে প্রচলিত আছে। আগুনে ভষ্মীভুত হবার পরে মধ্যযুগ পর্যন্ত বহুবার পুননির্মাণ করায় কপটিক চার্চটি বর্তমান অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে।

অনন্য স্থাপত্যশৈলী এবং অলঙ্করণের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিশরের খ্রিস্টিয় নির্মাণ কলার উপাদানগুলো মিলে মিশে গির্জার অভ্যন্তরভাগ অসাধারণ সুন্দর। চারিদিকের দেয়ালের বেশিরভাগ নির্মিত হয়েছে জুড়ে কালচে-লাল ইটের গাঁথুনিতে। শক্তপোক্ত দেয়াল এবং খিলানসহ স্তম্ভ উঠে গেছে তিন তলার উচ্চতায়। মিম্বর, গম্বুজ, কলাম, রোস্ট্রাম এবং দেয়ালগুলোতে সুদৃশ্য কাঠের কারুকাজ আর কাঠের উপরে আইভরির কারুকাজ করা বেদি মধ্যযুগের কারুশিল্পীদের সৃষ্টিশীল কাজের উদাহরণ। দেয়ালগুলোতে শোভা পাচ্ছে সাধু সন্ত আর প্রেরিত পুরুষদের প্রমাণ সাইজের পেইন্টিং। এসব ছবিও কারুকাজ করা ভারি কাঠের ফ্রেমে আটকানো।

মূল প্রার্থনা কক্ষে সাজানো সারি সারি ভারী কাঠের বেঞ্চের পেছনে দাঁড়িয়ে দেখলাম একজন প্রিস্ট বক্তব্য দিচ্ছেন। তার পরনে কালো আলখাল্লা, মাথায় চেগুয়েভারার মতো টুপি তবে সেটাও কালো, হাতে কালো ব্যান্ডের ঘড়ি আর আর বুকে ঝোলানো ক্রশ। তার কণ্ঠস্বর, বলার ভঙ্গি এবং নাটকীয় অভিব্যক্তি মিলিয়ে সামনের বেঞ্চগুলোতে বসা পনের কুড়িজন তরুণ তরুণী তার কথা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছে। তিনি আরবিতে ভাষণ দিচ্ছেন, শুধু এইটুকু ছাড়া তার বক্তব্যের বিন্দু বিসর্গ না বুঝেও আমার শুনতে ভালো লাগছিল। তরুণ শ্রোতাদের মধ্যে দুজন তরুণীকে দেখলাম হিজাব পরিহিতা। সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায় এই দুজনসহ প্রায় সবাই ধর্মগুরু তার কথার যাদুতে সম্মোহিত করে ফেলেছেন। ভাষা বুঝলে আমি নিজেও সম্মোহিত হয়ে পড়তাম কিনা কে জানে!

      হাজার বছর আগের বাইবেল

কিছুক্ষণ ধর্মোপদেশ শোনার পরে প্রথমে ডান দিকের গ্যালারি এবং পরে বাঁ দিকের করিডোর পার হয়ে যেখানে পৌঁছলাম সেটি একটি সংগ্রহশালা। এখানে বিভিন্ন তাকে সংরক্ষিত রয়েছে প্রাচীন পুঁথি পুস্তক, ধর্মগ্রন্থ, বিশেষ করে হাতে লেখা বাইবেল। হিব্রু ভাষায় লেখা একটি বাইবেলে দেখা গেল মূল ভাষার পাশাপাশি ছোট করে আরবি অনুবাদ অথবা ফুটনোট। বইপত্র ছাড়াও বাতিদান, পান পাত্র, সিলমোহর ও ধাতব ক্রশসহ কিছু ছোট জিনিস ঠাঁই পেয়েছে এই ছোট্ট মিউজিয়ামে। কে জানে এইসব কতশত বা কয় হাজার বছর আগের নিদর্শন! সংগ্রহশালার মেঝেতে একটি কূপের মুখ মোটা কাচের ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বৃত্তাকার ঢাকনা ঘিরে আরবি এবং ইংরেজিতে লেখা: ঞযব বিষষ The well which the Holy Family drank from. তবে আবে জমজমের মতো এই পবিত্র পানি পানের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

      বই পুস্তকের গলিপথ

জাদুঘরের ভেতর থেকেই দুপাশে কাঠের রেলিং দেওয়া পাথরের একটি সিঁড়ি নিচে নেমে গেছে। কথিত আছে অ্যাপোস্টেলিক যুগে মা মেরি তার শিশু সন্তান যিশুখ্রিস্টকে নিয়ে তিন মাস এখানেই নিচের একটি গুহায় বসবাস করেছেন। বিবি মরিয়ম তার শিশু পুত্র ঈসা আলাইহেওয়াস-সালামসহ মাস তিনেক গুহাবাসী হিসেবে কালাতিপাত করে থাকলে গির্জা না হয়ে এখানে এখানে একটি মসজিদও হতে পারত। যাই হোক, ইসলামের আবির্ভাবের আগেই ঘটনাগুলো ঘটে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বিবাদের কোনো সুযোগ নেই। এখন এই কাহিনি কেবলই বিশ্বাসের। আমরা খ্রিস্টিয় ধর্মগুরুর বক্তৃতা শুনে, অসাধারণ স্থাপত্য নৈপুনের একটি নিদর্শন দেখে মুগ্ধ হয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম।

   বিন এজরা সিনাগগ

বই-পুস্তকের দীর্ঘ গলিপথ পেরিয়ে যখন রাস্তায় এলাম তখন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। পথের বাঁ দিকের কয়েকটি দোকানে এবং গির্জার দরজাগুলোতে জ্বলে উঠেছে আলো। কয়েকটি চার্চ পেরিয়ে রিলিজিয়াস কমপ্লেক্সে ইহুদি প্রার্থনা মন্দিরটির অবস্থান একদিকে গির্জা এবং অন্যদিকে আমর ইবনে আল আস মসজিদের মাঝখানে। এলাকায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে ঈশ্বরের প্রেরিত পুরুষ মুসা নবী নীল নদের কাছাকাছি প্রার্থনার জন্যে এই জায়গাটি বেছে নিয়েছিলেন। এক সময় খ্রিস্টান আধিপত্যের যুগে এখানে নির্মিত উপাসনালয় অর্থডক্স চার্চে রূপান্তরিত হয়ে যায়। পরে খ্রিস্টধর্মের অনুসারিরা ট্যাক্স পরিশোধ করতে না পারায় বিশ হাজার রিয়াল দিয়ে ভগ্নদশা ভবনটি কিনে নেন ইহুদি ইব্রাহিম বিন এজরা। তার নামে উপাসনালয়ের নামই হয়ে যায় বিন এজরা সিনাগগ। তবে ভাঙা গড়ার মধ্যে দিয়ে সিনাগগটি বর্তমান অবস্থায় আসতে বহু বছর লেগেছে। বিন এজরার পুনরুদ্ধার এবং পুনঃনির্মাণে মিশর সরকারের বিরাট ভূমিকা ছিল। প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণে সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগ ও আর্থিক অনুদানের পাশাপাশি সারাবিশ্বের ইহুদি সম্প্রদায়ের সাহায্য সমর্থন তো ছিলই।

    রিলিজিয়াস কমপ্লেক্সে সন্ধ্যা

সিনাগগের ভেতরে কারুকাজ করা সোনালি দেয়াল, দীর্ঘ কলাম এবং পরিমিত আলোর ব্যবহার এক অপার্থিব ভাবগম্ভীর পরিবেশ। প্রথম তলাটি পুরুষের এবং দ্বিতীয় তলা নারীদের প্রার্থনার জন্য নির্ধারিত। কলামগুলো মার্বেল পাথরে আবৃত এবং উপরের দিকে কারুকাজ করা সোনালি মুকুটে ঢাকা। আলোক সজ্জার ব্যবস্থা ছাড়াও সিলিংয়ে তাকালে চোখে পড়ে বাতাস চলাচলের ফোকর। উল্লেখ করা করা যেতে পারে ইসলামের অনুশাসনের মতোই ইহুদি ধর্মেও উপাসনালয়ের দেয়ালে কোনো দেব দেবী, ঈশ্বর অথবা প্রেরিত পুরুষের কোনো মূর্তি বা প্রতিকৃতি নেই।

আমর ইবনে আল আস মসজিদে যাওয়ার জন্যে নিরাপত্তা চৌকি পেরিয়ে যখন রাস্তায় এলাম তখন গাছপালার ফাঁকে আকাশে দেখা গেল বেশ বড় একটা গোল চাঁদ।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন

কবি দাউদ হায়দার। ছবি: সংগৃহীত

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রতিবাদী ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। জার্মানির বার্লিনে স্থানীয় সময় শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে একটি রিহ্যাবিলিটেশন হোমে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

কবির মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করেছেন লন্ডনপ্রবাসী নাট্যশিল্পী ও সংগঠক স্বাধীন খসরু এবং বার্লিনে অবস্থানরত কবির ঘনিষ্ঠজন সংস্কৃতিকর্মী মাইন চৌধুরী পিটু।

জানা যায়, গেল বছরের ডিসেম্বর থেকে কবি দাউদ হায়দার বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। কয়েক মাস ধরে বার্লিনের বিভিন্ন হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল। ১২ ডিসেম্বর নিজ বাসার সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হলে তিনি জ্ঞান হারান এবং তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেসময় তাকে ‘কৃত্রিম কোমা’-তে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকায় শেষ পর্যন্ত শনিবার রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মরদেহ বার্লিনেই দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন পিটু। তবে কবির শেষ বিদায়ের সময় ও স্থান নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলোচনার পর।

দাউদ হায়দার বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নির্বাসিত কবি হিসেবে পরিচিত। ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত তার একটি কবিতা—‘কালো সূর্য্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’—এর কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৭৪ সালের ২০ মে তাকে মুক্তি দিয়ে পরদিন কলকাতাগামী একটি বিশেষ ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়। ওই ফ্লাইটে অন্য কোনো যাত্রী ছিল না।

ভারত সরকারও পরবর্তীতে তাকে বহিষ্কার করে। পরে নোবেলজয়ী জার্মান সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের প্রচেষ্টায় ১৯৮৭ সালে তিনি জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেন এবং সেখানেই বাকিজীবন কাটান।

দাউদ হায়দার বাংলা সাহিত্যে সত্তরের দশকের অন্যতম প্রধান কবি হিসেবে বিবেচিত। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’। সাহসী ও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে তিনি বাংলা কবিতায় আলাদা একটি ধারা সৃষ্টি করেন।

১৯৭৩ সালে লন্ডন সোসাইটি ফর পোয়েট্রি তার একটি কবিতাকে ‘দ্য বেস্ট পোয়েম অব এশিয়া’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। সে সময় তিনি ‘দৈনিক সংবাদ’-এর সাহিত্য পাতার সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনি বাংলা ট্রিবিউনে নিয়মিত কলাম লিখতেন।

দাউদ হায়দার ছিলেন চিরকুমার। জীবনের শেষভাগে একাকিত্ব ও বয়সজনিত জটিলতায় ভুগেছেন। তিনি ছিলেন একজন ব্রডকাস্ট সাংবাদিকও।

কবি দাউদ হায়দারের জন্ম ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, পাবনা জেলায়। নিজের লেখনী ও বিশ্বাসের কারণে স্বদেশ থেকে বহু দূরে দীর্ঘদিন কাটালেও বাংলা ভাষা ও সাহিত্যই ছিলেন তার চেতনাজগতের কেন্দ্রবিন্দু।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার তিনটি ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর তুমুল গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই সেনাসদস্যসহ মোট ১৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে আটজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়। একই দিনে উত্তর ওয়াজিরিস্তান ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের দুটি স্থানে আরও দুটি অভিযান চালানো হয়।

উত্তর ওয়াজিরিস্তানে চারজন এবং দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের গোমাল জ্যাম এলাকায় তিনজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে সেনাবাহিনী। এই সংঘর্ষগুলোর একটিতে পাক বাহিনীর দুই সেনা সদস্য প্রাণ হারান।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে।

এদিকে, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, এসব অভিযান ছিল পরিকল্পিত ও গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে, বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে।

‘পাকিস্তান ইন্সটিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ’ (PICS) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ডিসেম্বরের তুলনায় প্রায় ৪২ শতাংশ বেড়েছে। এতে করে পুরো অঞ্চলে নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর পৌর এলাকার কাইতকাই রূপালী ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ধনবাড়ী উপজেলা পৌর এলাকার চরভাতকুড়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে সিএনজি চালা হেলাল উদ্দিন (৫৫)। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সিএনজি যাত্রী ছিলেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক এ বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাতে দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজি ধনবাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজির চালক ঘটনা স্থলে মারা যান। এ সময় গুরুতর আহত হয় এক যাত্রী।

এরপর তাকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে তিনি মারা যায়।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক জানান, নিহত সিএনজি চালকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে, অজ্ঞাত ওই যাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি, শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭
টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২
হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ