রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

ওয়াদি এল রায়ান থেকে তিউনিস ভিলেজের দূরত্ব ত্রিশ কিলোমিটার। হাতের ডাইনে দীর্ঘ কারুন হ্রদ এবং মাঝে মাঝে মরুদ্যান আর বাঁ দিকে বহুদূর বিস্তৃত মরুভূমি পেছনে ফেলে আমরা এগোতে থাকি। 

এক সময় মরুদ্যান ছাড়িয়ে আবারো কিছু দূর ধু ধু মরুপ্রান্তর পেরিয়ে যাবার পরে দেখা দেয় জনপদের চিহ্ন। দুপাশে একটি মরু মফস্বলের চেহারা স্পষ্ট হতে থাকে। একদিকে সুদৃশ্য মসজিদ এবং অন্যদিকে কয়েকটি দোকান বাঁয়ে রেখে আমরা প্রায় জনশূন্য একটা ছোট শহরের মতো এলাকায় ঢুকে পড়ি। পথের পাশে গাড়ি মেরামতের দোকান এবং রেস্তোরাঁর সাইন বোর্ড দেখে বুঝতে পারি এটিই তিউনিস গ্রাম। নামে গ্রাম হলেও এটি যে আসলেই মরুদ্যানের ছোট শহর তা বুঝতে বাকি থাকে না। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসুনি যে রেস্তোরাঁর সামনে এসে দাঁড়াল তার নাম নিউ তিউনিসিয়া রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ক্যাফে! এতোক্ষণ তো ভাবছিলাম গ্রামের নামে শহর! এখন দেখা গেল পুরো একটা দেশের নামই নিয়ে নিয়েছে এই গ্রাম! 

            তিউনিসের বন্ধ রেস্তোরাঁ

রেস্তোরাঁর বাইরে থেকে দরজা কপাট বন্ধ দেখেই সন্দেহ হয়েছিল, তারপরেও মোহামেদ সাদেক খোঁজ নিতে গাড়ি থেকে নেমে গেল। একটু পরে এসে জানাল দুবছর আগে করোনা মহামারির শুরুতে বন্ধ যাওয়া তিউনিসিয়া রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ক্যাফে আর চালু হয়নি। পরপর আরও গোটা দুই সরাইখানার বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে করাঘাত করেও কোনো সাড়া পাওয়া গেল না। 

ওমর খৈয়াম সম্ভবত এই রকম পরিস্থিতিতেই লিখেছিলেন ‘ভোরের পাখি শিস দিয়ে যেই উঠলো চারিধারে/পান্থশালার দ্বারে দাঁড়িয়ে ছিল যারা, বলল হেঁকে তারা/দুয়ার খোলো দুয়ার খোলো ভাই, সময় যে আর নাই।’ 
আমাদের এখানে ভোরের পাখি ডাক দেয়নি বরং দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও খাদ্যের অন্বেষণে পান্থশালা থেকে পান্থশালায় ঘুরে বেড়ালেও কেউ দরজা খোলেনি। 

         মৃৎ পাত্রের কারখানায়

তিউনিস কুমোরদের গ্রাম নামেই পরিচিত। কাজেই এখানে এসে মৃৎশিল্পের কর্মকাণ্ডের অন্তত একটি নমুনা না দেখে, শিল্পীদের নির্মাণ শৈলীর সাথে একটু পরিচিত না হয়ে ফিরে যাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। অতএব নেমে গেলাম সাদেকের নির্দেশনা অনুসারে। ভেতরে প্রবেশ করে বুঝলাম আমাদের কুমোর পাড়া, পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা যেমন মাটি ছেনে, চাক ঘুরিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে লাল টুকটুকে হাড়ি পাতিল কিংবা কালো কলস তৈরি করে তার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। এটি খুব বড় না হলেও মাঝারি আকারের সিরামিকের কারখানা। ভেতরে হাতে নকশা কেটে তৈজসপত্র তৈরির কাজ চলছে, এখানেও আগুনে পুড়ে নতুন রূপ লাবণ্যে ঝলসে উঠছে মাটির পাত্র! কিন্তু নির্মিত পেয়ালা-পিরিচ, থালা-বাসন যতোই ঝকঝক করুক বাইরের দিকে শো-রুমে দাঁড়িয়ে থাকা বিরস বদন বালিকাকে দেখে অনুমান করা যায় বেচা কেনা তেমন নেই।   

        আল মালাকের উদ্যানে     

তিউনিস গ্রামের পথে দু পাশের বর্ণহীন বাড়িগুলোর মধ্যে চোখে পড়ে দুই একটি সুদৃশ্য বাড়ি, কোনো কোনো বাড়ির দেয়াল থেকে ঝুলছে সবুজ লতাপাতাসহ ফুলের ঝাড়। মাঝে মাঝে দু চারটি সাজানো দোকান আর পথে দু চারজন বিদেশি পর্যটক। রংপুরের সতরঞ্চির মতো রঙিন সতরঞ্চি সাজিয়ে একটা দোকানে বসে আছে বিষন্ন কিশোর। সেই দোকানের সামনে দাঁড়াতেই একটু উৎসাহিত হয়েছিল ছেলেটি। কিন্তুতাকে হতাশ করেই আমরা এগোতে থাকি। শেষ পর্যন্ত বাসুনি বেশ কিছুটা সামনে এগিয়ে গাড়ি নিয়ে যেখানে সটান ঢুকে গেল তার চেহারা দেখেই বলে দেয়া যায় এটি একটি উচুঁ মানসম্পন্ন রিসোর্ট কাম রেস্টুরেন্ট। প্রবেশ পথে আল মালাক নামের হোটেলের সাইনবোর্ড পছন্দ হলো না। কিন্তুপাথরে বাঁধানো পথ দিয়ে হেঁটে দুপাশের সবুজ গাছপালা এবং সারি সারি রঙিন ফুলের ঝোপঝাড় পেরিয়ে যেখানে পৌঁছলাম মরুদ্যানে তেমন প্রাকৃতিক পরিবেশ আশা করিনি।

       কাতরানি ক্যাম্প

চারিদিকে দীর্ঘ সবুজ গাছের বেস্টনি দেওয়া মাঠের একদিকে সুইমিং পুল এবং অন্যদিকে ছোট ছোট আবাসিক কুটির। এশিয়া ইওরোপের যে কোনো দেশের বিলাসবহুল হোটেলে সামনে পেছনে খোলা মাঠের চারিদিকে বাগানে ফুটে থাকা ফুলের সমারোহ দেখে অবাক হবার কিছু থাকে না। কিন্তুএখানে এই দিকচিহ্নহীন মরুপ্রান্তরের এক চিলতে মরুদ্যানে পুষ্প পাতার অভাবনীয় দৃশ্য কেবলই আমাদের বিস্মিত করে। ঘাসের সবুজ গালিচায় এক একটি টেবিল ঘিরে পেতে রাখা কয়েক সেট গার্ডেন চেয়ারের তিনটি দখল করে বসে পড়লাম। শুরু হলো মোহামেদ সাদেকের সাথে রেস্তোরাঁর পরিবেশকের কথপোকথন। আমি এরই মধ্যে মাঠের আর এক প্রান্তে চমৎকার প্রক্ষালন কক্ষ থেকে হাত মুখ ধুয়ে রীতিমতো তরতাজা হয়ে ফিরে এসেছি। মরুর দেশে তরু পল্লবে ঘেরা উদ্যানে বসে বিকেলের মৃদুমন্দ হাওয়া মন্দ লাগছিল না। কিন্তু সাদেকের কথা শুনে আমাদের চক্ষু চড়কগাছ! খাবারের মূল্যের কথা বাদ দিলাম, একদিন না হয় একটু বেহিসাবী হওয়া গেল, কিন্তু সময়ের মূল্য পরিশোধ করবে কে! খাবার তৈরি হয়ে টেবিলে পরিবেশনের জন্যে মাত্র দেড় ঘণ্টা সময় চেয়েছে আল মালাক! 

            তাঁবু রাত্রি যাপন

মালাকের কথা শুনে মোহামেদ সাদেক সিদ্ধান্ত দিয়ে দিল, ’এখান থেকে আধা ঘণ্টার দূরত্বে বেদুঈনদের একটা ক্যাম্প আছে কাতরানিতে। সেখানে ফোনে খবর দিয়ে খাবার তৈরি করতে বলে দিই, আমাদের পৌঁছাতে যে সময় লাগবে তার মধ্যে আশা করা যায় লাঞ্চ রেডি হয়ে যাবে।’ সাদেকের কথায় তথাস্তু বলে উঠে পড়লাম। মাঝখান থেকে তিউনিসের চমৎকার গ্রামে প্রায় অকল্পনীয় একটি রিসোর্টের অবিশ্বাস্য বাথরুম বিনামূল্যে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা হলো! গাড়িতে উঠবার আগেই সাদেক তার নির্দেশনা দিয়ে নিশ্চিত হলো। বিকেল সাড়ে তিনটা বাজলেও ক্ষুৎ পিপাসায় কাতর হয়ে গেছি তা বলা যাবে না, তবে কাতরানি পৌঁছে খাবার না পেলে হয়তো সত্যিই কাতরানি শুরু হয়ে যাবে, তাই এই সতর্কতা। 

          কাতরানিতে ক্যাম্প ফায়ার

বিকেলের সূর্যের তেজ কমে যাবার সাথে সাথে বাসুনির তেজও কিছুটা কমে এসেছে মনে হলো। তাই চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আঁকাবাঁকা পথে না ছুটে সে পিচঢালা সোজা পথ ধরে প্রায় পঁচিশ মিনিট চলার পরে ডাইনে ঘুরে গেল। এখানে আবার সেই বালির মধ্যে দুপাশে পাথরের টুকরো বসানো পথের নিশানা। বালির উঁচু নিচু টিলা এবং ভাস্কর্য পেরিয়ে মিনিট পাঁচেক পরে যেখানে পৌঁছলাম সেটি যে আসলেই বেদুঈনের পান্থশালা তা কাউকে বলে দিতে হয় না। এখানে বাঁধানো সড়ক নেই, সবুজের চিহ্ন মাত্র নেই, ইট পাথরের ঘর দরজা নেই। চারিদিকে বালির সমুদ্রের মধ্যে সারি সারি সাদা তাঁবু আর কাঠ বাঁশের তৈরি কিছু অস্থায়ী চালাঘর। বসার ব্যবস্থা  ফালি করে কাটা দীর্ঘ কাঠের বেঞ্চে। মরুভূমিতে নিশি যাপনের জন্যে তাঁবুতে রাত্রিবাসের ব্যবস্থা তো আছেই।

          কাতরানির মরু কুটির

এ ছাড়াও ইচ্ছে করলে বালির পাহাড়ের গায়ে খোড়লের ভেতরে রাত কাটানো যায়। সম্ভবত ‘নাইট লাইফ’ উদযাপনের জন্যে বালির উঠানে মাঝখানে আগুন জ্বালাবার ব্যবস্থাসহ বৃত্তাকারে সতরঞ্চি পেতে আসর সাজানো আছে। উদর পূর্তির পাশাপাশি নৈশ্যভোজে উদর নৃত্যের ব্যবস্থা আছে কিনা তা অবশ্য তখনো জানতে পারিনি।   আমরা বালির আঙ্গিনা জুড়ে পেতে রাখার কাঠের লম্বা বেঞ্চে বসে পড়লাম। মোহামেদ সাদেক কিছুক্ষণ পরেই এসে জানালো খাবার তৈরি হচ্ছে। বুঝলাম ফোনে আধা ঘণ্টা বললেও আরো খানিকটার সময় দিতে হবে। অপেক্ষার সময়টা চারিদিকে ঘুরে ফিরে কাটানো যায়। বিরান বালুর মাঠেও দেখলাম পাশাপাশি গোটা দুই দোলনা ঝুলছে। একটাতে বোরকা পরা তরুণীকে দোল দিচ্ছে জুব্বাধারী এক তরুণ। চমৎকার দৃশ্যটি দেখে মনে হলো মিশরীয় ইসলামে তাহলে দোলনায় দোল খাওয়া হারাম নয়! কিছুদিন আগে এক হুজুরের ওয়াজে শুনেছিলাম ’দোলনা হচ্ছে শ্রী কৃষ্ণ ও রাধার লীলা খেলা, ইসলামে দোলনা দোলানোর কোনো জ্ঞান নাই!’ এরা বাংলাদেশি ইসলামে আরও কতো কিছু যে নিষিদ্ধ করবে আল্লাহই জানে। হেনাকে বললাম, ‘যাও কিছুক্ষণ দোলনায় দোল খেয়ে এসো।’ সে বললো, ‘দেখছো না ওখানে এখন হুজুরদের দোলে দোদুল ঝুলে ঝুলনা চলছে।’ বললাম, ‘একটা তো খালি আছে।’ হেনা বললো, ‘এখন আর দোল খেতে চাই না, খাবার খেতে চাই।’খাবার খেতে চাইলেই তো হয় না, এই পাণ্ডব বর্জিত ধু ধু বালুর চরে কে আমাদের জন্যে খাবার নিয়ে বসে আছে! আমরা দুজন চারিপাশটা ঘুরে দেখতে বেরোলাম।

        বালি পাহাড়ের কোটরে বিছানা-বালিশ

রানা ভাই যথারীতি এই বেদুঈন ক্যাম্পের সামান্য ইংরেজি জানা কর্মচারিকে পাকড়াও করে আলাপ শুরু করেছেন। তাঁবুগুলোকে পেছনে ফেলে ডান পাশে বালির টিলাগুলো রেখে সামনে এগিয়ে গেলেই ছড়িয়ে আছে দীর্ঘ জলাধার কারুন হ্রদ। কিন্তুশান্ত স্বচ্ছ এই হ্রদের আশেপাশে কোথাও কোনো সবুজ গাছ পালার ছিটে ফোঁটাও নেই। বিচিত্র ভাস্কর্যের মতো দেখতে লাইম স্টোনের পাহাড় কেটে কোথাও কোথাও সিঁড়ি চলে গেছে অনেক উপরে। আবার কোথায় নরম বালু মাটির সিঁড়িগুলোকে আটকে রাখার জন্যে ধাপে ধাপে বসিয়ে দেয়া হয়েছে খেজুর গাছের গুড়ি। এইসব সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে দেখালাম সতরঞ্চি এবং বিছানা বালিশ পাতা  একেকটি আবাসিক কক্ষ। লতাপাতা, বাঁশ কিংবা কাঠ খড় দিয়ে তৈরি ঘরগুলোকে নাম দেয়া যায় ‘মরু কুটির’ আর পাহাড়ের খোলের ঘরগুলো ‘গুহাগৃহ!’  আমরা ‘মরু কুটির’ ‘গুহাগৃহ’, মরু কুটিরের বহিরাবরণের আদলে তৈরি প্রাক্ষলণ কক্ষ এবং তাঁবু বাসের ব্যবস্থা সরে জমিনে দেখে এসে যখন টেবিলে বসলাম তখনও খাবারের খবর নেই। 

            বেদুঈনের তাঁবুতে বিলম্বিত লাঞ্চ

রানা ভাই এরই মধ্যে কাতরানি ক্যাম্পের কিছু তথ্য যোগাড় করে ফেলেছেন। আল ফাইয়ুম শহর থেকে প্রায় বিশ কিলোমিটার দূরে লেক কারুনের তীর ঘেষে কয়েক একর জায়গা সরকারের কাছে থেকে লিজ নিয়ে এই তাঁবু বাসের আয়োজন। উচুঁ নিচু পাহাড়ের সারিতে সর্বোচ্চ গিরিশৃঙ্গের উচ্চতা সাড়ে তিনশ মিটার। মরুভূমির প্রাকৃতিক পরিবেশে হাইকিং, ট্রেকিংয়ের জন্যেও অনেকেই, বিশেষ করে তরুণ ব্যাক-প্যাকাররা চলে আসে এখানে। এখানে পাহাড়ের মাথায় সোলার প্যানেল লাগিয়ে সীমিত বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও ঘরে ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই, তবে টয়লেট বাথরুম যথেষ্ট আধুনিক এবং প্রবহমান পানির ব্যবস্থাও আছে। তাঁবু অথবা পাহাড়ের খোলে দুজনে রাত্রি যাপনের জন্যে গুণতে হবে ৩০ থেকে ৪০ মার্কিন ডলার। ট্যুরিস্ট সিজনে বিপুল সংখ্যক পর্যটক উন্মুক্ত বালিয়াড়িতে ক্যাম্প ফায়ারে মেতে ওঠে আর অনেকেই আসে খোলা আকাশের নিচে শুয়ে তারা ভরা আকাশ দেখতে। 

গল্পে আড্ডায় সময় কাটালেও আমাদের দৃষ্টি ছিল কখন কিচেন থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে! অবশেষে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, হাত মুখ ধুয়ে আমাদের খাবারের খুপরিতে আসন নেওয়ার খবর এল। অবাক হয়ে দেখলাম মরুভূমিতে ভোজনের আয়োজন যেমনই হোক, বেসিনের উপরে ট্যাপ ঘুরিয়ে হাত ধোবার ব্যবস্থা আছে। বাড়তি হিসাবে বেসিনের উপরে আয়নায় নিজের চেহারাটাও একবার দেখে নেওয়া গেল। পাহাড়ের খোলে সতরঞ্চি পেতে মাঝখানে সামান্য উচ্চতার একটা টেবিল রেখে জাপানি কায়দায় পরিবেশিত হলো মিশরীয় খাবার। কে জানে মরু অঞ্চলের পরিবেশন রীতিও জাপানিদের মতো কিনা! পরিবেশন পদ্ধতি যাই হোক, খিচুড়ির মতো হলদে রঙের ভাত, গ্রিলড চিকেন, আধা সেদ্ধ আলুর তৈরি সবজি এবং টমেটো শশার সালাদের মধ্যে উঁকি দেওয়া ধনেপাতা দেখে মনে হলো বিলম্বিত লাঞ্চটা নেহায়েত মন্দ হবে না। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই দর্শনধারী দ্বিপ্রাহরিক আহার দেখতে যেমনই হোক, খেতে ততোটা সুস্বাদু মনে হয়নি। তবুও বিরানভূমিতে আমাদের প্রাণ রক্ষার আয়োজনের জন্যে কাতরানি ক্যাম্প ধন্যবাদ পেতেই পারে। 

আমরা যখন লাঞ্চ শুরু করেছি, ঘড়িতে তখন পৌনে পাঁচটা বাজে। অর্থাৎ এরা দেড় ঘণ্টা না হলেও সময় নিয়েছে সোয়া ঘণ্টা। কায়রোর পথে এগিয়ে আসার আধা ঘণ্টা এই পনের মিনিটের সাথে যোগ করলে আমাদের লভ্যাংশে আছে পুরো পঁয়তাল্লিশ মিনিট। তবে সবচেয়ে বড় লাভ কাতরানির এই বেদুঈন ক্যাম্প। তিউনিসের আল মালাকে লাঞ্চ করে কায়রো ফিরে গেলে মরু প্রকৃতির মাঝখানে এই অসামান্য সৌন্দর্যের আবাসভূমি অদেখাই থেকে যেত। লাঞ্চ শেষে আমরা যখন গাড়িতে উঠতে যাচ্ছি তখন চারিদিকে সন্ধ্যা নেমে এসেছে।  হঠাৎ করেই মাথার উপরে ঝরে পড়ল কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি। মোহামেদ সাদেক বলল, ‘এখানে প্রায় কখনোই বৃষ্টি হয় না। তোমরা নেহায়েত ভাগ্যবান!’ 

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার তিনটি ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর তুমুল গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই সেনাসদস্যসহ মোট ১৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে আটজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়। একই দিনে উত্তর ওয়াজিরিস্তান ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের দুটি স্থানে আরও দুটি অভিযান চালানো হয়।

উত্তর ওয়াজিরিস্তানে চারজন এবং দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের গোমাল জ্যাম এলাকায় তিনজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে সেনাবাহিনী। এই সংঘর্ষগুলোর একটিতে পাক বাহিনীর দুই সেনা সদস্য প্রাণ হারান।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, অভিযানের সময় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে।

এদিকে, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, এসব অভিযান ছিল পরিকল্পিত ও গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে, বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে।

‘পাকিস্তান ইন্সটিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ’ (PICS) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে সন্ত্রাসী হামলার সংখ্যা ডিসেম্বরের তুলনায় প্রায় ৪২ শতাংশ বেড়েছে। এতে করে পুরো অঞ্চলে নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর পৌর এলাকার কাইতকাই রূপালী ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ধনবাড়ী উপজেলা পৌর এলাকার চরভাতকুড়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে সিএনজি চালা হেলাল উদ্দিন (৫৫)। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সিএনজি যাত্রী ছিলেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক এ বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাতে দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজি ধনবাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজির চালক ঘটনা স্থলে মারা যান। এ সময় গুরুতর আহত হয় এক যাত্রী।

এরপর তাকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে তিনি মারা যায়।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক জানান, নিহত সিএনজি চালকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে, অজ্ঞাত ওই যাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি, শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

Header Ad
Header Ad

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র হজ ফ্লাইট শুরু আগামী মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল)। ওই দিন ৪১৯ জন সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। হজের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

চলতি বছর ৮৭ হাজার ১০০ জন পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন হজযাত্রী সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮১ হাজার ৯০০ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন।

প্রথম ফ্লাইটটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। হজ ব্যবস্থাপনাকে নির্বিঘ্ন করতে সরকারি পর্যায়ে ১১২ জন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১ হাজার ৭৪৩ জন গাইড দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি ৭০ জন মোয়াল্লেম হজযাত্রীদের সার্বিক সহায়তা করবেন।

হজযাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ তিনটি এয়ারলাইনস। ৩১ মে পর্যন্ত হজের ফ্লাইট চলবে। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন এবং শেষ হবে ১০ জুলাই।

পবিত্র হজ উপলক্ষে এ বছর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালনা করবে ১১৮টি, সাউদিয়া ৮০টি এবং নাস এয়ারলাইনস ৩৪টি ফ্লাইট।

হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা, যা ৯ জিলহজ মসজিদে নামিরা থেকে প্রদান করা হয়। এবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে হজের খুতবা, এবং তাৎক্ষণিক অনুবাদ করা হবে ২০টি ভাষায়। 

যেসব ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করা হবে সেগুলো হলো- বাংলা, ফরাসি (ফ্রেঞ্চ), মালয়, উর্দু, ফারসি, চাইনিজ, তুর্কি, রাশিয়ান, হাউসা, ইংরেজি, সুইডিশ, স্প্যানিশ, সোয়াহিলি, আমহারিক, ইতালিয়ান, পর্তুগিজ, বসনিয়ান, মালায়লাম, ফিলিপিনো এবং জার্মান। 

উল্লেখ্য, ১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ৫ জুন) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পাকিস্তানে সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলি, দুই সেনাসদস্যসহ নিহত ১৭
টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২
হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার