শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৬

বিষাদ বসুধা

দুপুরের রোদে খা খা করছে চারদিক। রোদের উত্তাপে গাছের পাতাগুলো লজ্জাবতী গাছের মতো কেমন মিইয়ে পড়েছে। গাছপাতা, তরুলতাগুলোও যেন একটুখানি বাতাসের জন্য হা-পিত্তেশ করছে। কিন্তু বাতাসের কোনো নাম-গন্ধও নেই। গরমে হাঁসফাঁস করছেন জমিলা খাতুন। তিনি রান্না করতে গিয়ে গরমে হাপিয়ে উঠেন। কোথাও স্বস্তি নেই। শ্বাস-প্রশ্বাসও উত্তাপ ছড়াচ্ছে।

জমিলা খাতুন তালের পাখা নিয়ে ঘরের বারান্দায় এসে বসলেন। এ সময় একটি কাক ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে বাড়ির উঠানে বাঁশের আড়ার উপর বসে। তারপর শুরু করে ডাকাডাকি। একেবারে উথালিপাথালি ডাক। কাক ডাকার শব্দটা যেন কলিজায় গিয়ে লাগে। এমন ডাক খুব সহসা শোনেননি জমিলা খাতুন। কাকের ডাক শুনে বুক ধরফর করে উঠে তার। মনটা স্থির হয়ে উঠে। তিনি কাকটাকে হাত দিয়ে তাড়া করেন। যা কাক, যা। এমন করে কেন ডাকতেছিস? কার সর্বনাশের খবর নিয়া আইছিস ক তো? যা। আর সর্বনাশা ডাক ডাকিছ না। যা যা।

কাকটা কিছুতেই যায় না। এদিক উড়ে, ওদিক উড়ে। আবার বাঁশের উপর বসে। পড়ে পড়ে ডাকে। কা কা কা কা!

জমিলা খাতুনের কাছে কাকের ডাকটা ভয়ঙ্কর লাগে। তার ছেলের কথা মনে পড়ে। তার কলিজার টুকরা আরেফিন। পরিবারের একমাত্র রত্ন। একমাত্র মানিক। গ্রামের লোকেরা ওকে বলে, গোবরে পদ্মফুল। ওদের সংসারে সবাই গো-মূর্খ। কারও ভেতরে কোনো শিক্ষার আলো নেই। পূর্বপুরুষরাও কেউ কখনো স্কুল-কলেজে যায়নি। মেধার গুণে আরেফিন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত যেতে পেরেছে। তার মেধার মূল্যায়ন করেছেন মোহিনী। তিনি বড়লোকের মেয়ে হয়েও অতি নীচু পরিবারের সন্তান আরেফিনকে ভালোবাসেন। তাকে তিনি বিয়ে করেন। পাল্টে যায় আরেফিনের জীবনধারা। কত বড় ভাগ্য নিয়ে তিনি পৃথিবীতে এসেছেন কে জানে!

আরেফিন মা বাবার জন্য গ্রামে প্রতিমাসে টাকা পাঠান। যত ঝড়ঝাপটাই তার উপর দিয়ে যাক, মা বাবার কাছে টাকা পাঠানোর কথা ভোলেন না। আরেফিন এক দেশ থেকে আরেক দেশে যান, আর বাবার বুকের ছাতিম ফুলেফেঁপে বড় হয়। মার মুখে হাসি ফোটে। সেই হাসি ছড়িয়ে পড়ে আজিমপুর গ্রামে। একে বলে ওকে বলে, আমার সোনার মানিকের কথা শুনছ? বিরাট পাস দিছে আমার ছেলে। বিরাট চাকরি করে। বড়লোকের মেয়েরে বিয়া করছে। আর কি চাই?

কেউ কেউ টিপ্পনি কেটে বলে, ছেলের বউরে কখনো দেখছ? খুব তো বড়াই করতেছ?

জোখের মুখে চুন পড়ার মতো অবস্থা হয় জমিলা খাতুনের। তিনি মাথা নিচু করে অন্য দিকে চলে যান। মনে মনে বলেন, সব হিংসা। এই দুনিয়ায় কারো ভালো কেউ কি দেখতে পারে! পারে না। হিংসায় জইলা পুইড়া মরে। নিজেগো পোলারা মাইনসের খেতে বদলা দেয়। আমাগো পোলায় লেখাপড়া কইরা ঢাকা শহরে বড় চাকরি করে। এইডা কি কারো সহ্য হয়। হয় না। এই জন্যই টিটকারি মাইরা কথা কয়। ওইসব আমি বুঝি না! সব বুঝি।

কিছুক্ষণ পর আবার কাকটা পড়ে পড়ে ডাকে। কা কা কা কা!

জমিলা খাতুনের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। কোনো একটা অঘটন ঘটছে। তা না হলে কাকটা এমন করে ডাকতো না। আরেফিনের বাপ কোথায় গেল! সারাদিন কই কই যে থাহে!

জমিলা খাতুন মনে মনে ছোটছেলেকে খোঁজেন। আক্কাস গেল কই? আক্কাস আক্কাস!
আক্কাস দৌড়ে আসে মা’র কাছে। কি হইছে মা?
দেখ তো তোর বাপ কই? তাড়াতাড়ি খুইজা আন।
আনতাছি মা। আনতাছি।

আক্কাস দৌড়ে দরজার দিকে যায়। বৈঠকখানায় বসে আক্কাসের বাবা আলী আকবর গল্পগুজব করছিলেন। গরমের দিনে বৈঠকখানায় বাড়ির লোকদের আড্ডা বসে। আড্ডার মধ্যমণি আলী আকবর। ছেলের কারণে আলী আকবর বাড়ির লোকদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছেন। তিনি না গেলে আড্ডা জমে না। তিনি যতক্ষণ বৈঠকখানায় থাকেন ততক্ষণই আড্ডা জমজমাট থাকে। বাড়ির লোকরা নানা বিষয়ে এখন আলী আকবরের পরামর্শ নেন। ভালোমন্দ জানতে চান। আলী আকবরও বিজ্ঞলোকের মতো যাকে যে পরামর্শ দেওয়া দরকার তা দিয়ে থাকেন। প্রতিদিনের মতো আজও আড্ডা বেশ জমে উঠে। আজ তিনি তার গর্বের ছেলেকে নিয়ে গল্প করছিলেন। কিভাবে বড়লোকের মেয়েকে বিয়ে করল সেই গল্প। সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো আলী আকবরের গল্প শুনছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে আক্কাস আলী সেখানে হাজির হয়। সে তার কাছে গিয়ে কানে কানে বলে, মা ডাকতাছে। কি যেন হইছে তার। কেমন জানি করতাছে। তাড়াতাড়ি বাড়ি চলেন বাবা।
পরে জামু। তুই গিয়া ক, আমি একটু পর আসতাছি।
বাবা, এই কথা গিয়া কইলে মা রাগ করব। আপনি চলেন তো! পরে আইসা গল্প কইরেন।
আলী আকবর সবার উদ্দেশে বললেন, মিয়ারা, আমার গল্প শেষ হয়নি। আমি আবার আসতাছি। আইসা গল্প শেষ করব।

আলী আকবর হন হন করে হেঁটে বাড়ির দিকে ছুটে যান। জমিলা খাতুনের কাছাকাছি গিয়ে বলেন, কি হইছে আরেফিনের মা? এতো উতালা হইছ কেন? আমি আমার ছেলেরে নিয়া গল্প করছিলাম। সবাই উদাস হইয়া আমার ছেলের গল্প শুনছিল। সেইডা তোমার সহ্য হইল না?
আরেফিনের গল্প?
আর কার গল্প? গল্প কিংবা গর্ব করার মতোন আর কে আছে কও?
দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে জমিলা খাতুন বললেন, আমার আরেফিন! ওর লইগ্যা আমার মনডা কেমন জানি করতেছে। বুকের মধ্যে কী রহম জানি ধুকফুক ধুকফুক করতেছে। আপনে আরফিনের খবর নেন তো! কোনো সমস্যা হইল কি না পোলাডার।
কেন? আবার কি হইল?
কাকটা দেহেন না, এহনও পইড়া পইড়া ডাকতেছে। বড় অহস্য লাগতেছে।
ওসব বাদ দেও তো! কাক ডাকতাছে তাতে সমস্যা কি? কাক ডাকবো না?
আপনে আমার কতাডা একটু হোনেন। আপনে খোঁজ লন পোলাডার। খোঁজ লইতে তো কোনো দোষ নেই! খোঁজ লইয়া আমারে কন, পোলাডা ভালো আছে।
হুম, কয়দিন পর পর কাক ডাকবো আর তোমার মন উতালা হইব; এইডা কেমন কথা?
আপনে খোঁজ লইবেন? নাকি অন্য কাউরে কমু?

কও না কও। কারে কইবা? আরেফিন যে দেশে নাই এইডা কেউ জানে? মন খারাপ কইরো বউ। আরেফিন চীন দেশে গেছে। ছোডবেলায় চীনের গল্প হোন নাই? চীনরে বলে মহাচীন। সেই দেশে আমার ছেলে গেছে। ভালোই তো আছে কইল। খারাপ থাকলে ফোন কইরা জানাইতো না?
আপনের লগে কবে কতা হইছে?
ওইদিন, তাও তিন চাইর দিন হইয়া গেছে।
আজকে তো হয় নাই?
না। আজকে হই নাই। আচ্ছা, তুমি যেহেতু কইতেছ, আমি ফোন কইরা দেখতেছি।

আলী আকবর মোবাইল হাতে নিয়ে আরেফিনের নম্বরে ফোন দেন। কিছুতেই তার ফোনে ঢোকা যাচ্ছে না। একবার দুইবার তিনবার ফোন করেন তিনি। না। কিছুতেই ফোনে ঢোকা যাচ্ছে না। ফোন বন্ধ কি না তাও বোঝা যাচ্ছে না। তিনি বিরক্ত হন। ভীষণ বিরক্ত হন। কিছুক্ষণ পর তিনি ছেলের বউর নম্বরে ফোন করেন। মোহিনীর ফোনে রিং বাজে। কিন্তুমোহিনী ফোন ধরছে না। মোহিনীর নম্বরেও কয়েকবার ফোন করেন তিনি। বিরক্ত হয়ে তিনি ফোনটাকে বিছানার উপর ছুড়ে মারেন।

জমিলা খাতুন স্বামীর কা-কির্তি দেখে বলেন, ওকি ওকি! ফোনডারে ছুইরা মারলেন যে!

আলী আকবর ক্ষোভের সঙ্গে বললেন, আইজ কি হইল বুঝতে পারতেছি না। কুফা লাগছে। পাইতেছি না। কাউকেই পাইতেছি না।
কি কন?
হ। আরেফিনের ফোন বন্ধ। বউমা ফোন ধরতেছে না।
হায় হায়! তাইলে কি হইব?
কি আর হইব। পরে আবার দেখবনে।
বউমার ফোনে আগে কি কতা কইছেন?
না। তা কই নাই।
তাইলে কেমনে পাইবেন? আপনের অচেনা নম্বর ধরব নাকি?
অচেনা নম্বর বইলা ফোনডাও ধরব না? না ধরলে না ধরলো!
জমিলা খাতুন হতাশার চোখে আলী আকবরের দিকে তাকিয়ে থাকেন। ছেলের জন্য তার দুশ্চিন্তা হচ্ছে। মনে মনে আল্লাহকে ডাকেন তিনি। বিড় বিড় করে বলেন, মাবুদ গো; তুমি আমার ছেলেরে ভালো রাইখো। আমার সোনার মানিকরে তুমি সুস্থ রাইখো।

জমিলা খাতুনের চেহারা দেখে আলী আকবরও ভাবনায় পড়েন। তিনি বিড় বিড় করে বলেন, কয়দিন আগেও কতা হইল। কইল, ভালোই আছে। কোনো অসুবিধা নাই। মোবাইলডা কেন যে বন্ধ রাখল? বউমাও ফোনডা ধরতেছে না। বউমার কাছে কি আমার নম্বর আছে? কে জানে! অচেনা নাম্বার তো কেউ ধরতে চায় না।
আলী আকবর স্ত্রীর মাথায় হাত রাখেন। মন খারাপ কইরো না। আইজ যেমনেই হইক ছেলের খবর নিমু।
আবারও কাকটা ডানা ঝাপটে ঝাপটে ডাকে। কা কা কা কা!

দুশ্চিন্তায় হাবুডুবু খাচ্ছেন আলী আকবর ও জমিলা খাতুন। তাদের ধারণা, ছেলেটা কোনো বিপদে পড়েছে। তা না হলে নিশ্চয়ই সে যোগাযোগ করত। সে যোগাযোগ করছে না বলে আমরাও চুপচাপ বসে থাকব! না না! এভাবে ঘরে বসে থাকা যায় না!
আলী আকবর বললেন, আমি বরং ঢাকায় যাই। কি কও?
হ যান। ঢাকায় যান। বাসায় কেউ না কেউ তো থাকব!
হ। তা নিশ্চয়ই থাকব। ঠিকানাডা তোমার কাছে আছে নাহি?
আছে আছে। রাখছিলাম।
জমিলা খাতুন ধর্মীয় বইপুস্তকের ফাঁকে সাদা কাগজে লেখা একটা কাগজ বের করলেন। আলী আকবরের হাতে দিয়ে বললেন, দেহেন এইডা কি না?
হ আইডাই। রাহো। কাইল তাইলে রওয়ানা হই?
হ যান। দেরি কইরা লাভ নাই।
আলী আকবর ছেলের খোঁজে ঢাকায় আসেন। ছেলের বাসায় গিয়ে দেখেন দরজায় তালা ঝুলছে। বিস্ময়ের সঙ্গে বাসার দিকে তাকিয়ে থাকেন। মনে মনে ভাবেন, কি ব্যাপার! বাসার লোকজন মানে বউমা কই? বউ মা কি এই বাসায় থাহে না। আমাগোরে তো কিছুই কইলো না। এখন উপায় কি?

কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর আলী আকবর বাড়ির দারোয়ানের কাছে জানতে চান, আরেফিনের কোনো খবর জানো তোমরা?
আরেফিন স্যার আপনার কি হয়? দারোয়ান জানতে চাইল।
আমার ছেলে। ছেলে হয়।
সে তো বিদেশে!
হ জানি। চীন দেশে গেছে। কিন্তু বউমা? বউমা কই?
আপনার ছেলে যেদিন বিদেশে গেছে সেদিনই আপনার বউমা নিজ বাড়িতে চলে গেছে।
ওহ! বউমার ঠিকানাডা কি তোমার কাছে আছে? আমারে দিতে পারবা?
আমি কই পাব তার ঠিকানা? আমারে দেয় নাই। কেন, আপনি আপনার ছেলের শ্বশুর বাড়ি যান নাই?
দীঘনিশ্বাস ছেড়ে আলী আকবর বলেন, না রে বাবা!
দারোয়ান বিস্ময়ের দৃষ্টিতে আলী আকবরের দিকে তাকিয়ে থাকে। আলী আকবর মাথা নিচু করে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি কি করবেন তা নিয়ে ভাবেন। ছেলের খোঁজ না নিয়েই তিনি বাড়ি ফিরে যাবেন! নাকি ঠিকানা জোগাড় করে ছেলের শ্বশুর বাড়িতে যাবেন! তিনি কোনো দিন ছেলের বড়লোক শ্বশুর বাড়ি যাননি। পরিচয়ও নেই ছেলের শ্বশুরের সঙ্গে। সেখানে গেলে তাকে যদি দূরদূর করে তাড়িয়ে দেয়! তখন কি হবে?

রাজ্যের চিন্তা মাথায় নিয়ে আলী আকবর বাইরের দিকে পা বাড়ান।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  

ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে মিন্টু। ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো একটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে নগরীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন এলাকার কাশবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, হত্যা করে কাশবনে ফেলে দেওয়া হয়েছে লাশটি।

নিহত ব্যক্তির নাম আবুল বাসার ওরফে মিন্টু (৩৫)। পেশায় ব্যবসায়ী মিন্টু নগরীর মির্জাপুর পূর্বপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিনোদপুর বাজারে তার ইলেকট্রিক ব্যবসার দোকান আছে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম জানান, কাশবনে ঘুরতে আসা কয়েকজন লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। ঘুরতে আসা অনেকে লাশের ছবিটি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে শেয়ার করে। জানাজানির পর নিহতের পরিবার ঘটনাস্থলে এসে লাশটি শনাক্ত করে।

আশরাফুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মিন্টুর খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। কাশবনে তার মুখ পলিথিন দিয়ে ঢাকা ছিল। পলিথিনের ওপর স্কচটেপ প্যাঁচানো ছিল।

ওসি আরও বলেন, ‘আলামত দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত

ওমানের মাসকটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ওমানের রাজধানী মাস্কাটে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার ( ২১ ফেব্রুয়ারি) নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারত- বাংলাদেশের মধ্যকার উক্ত বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

তিনি বলেন, মাস্কাটে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবাই জানে কোন দেশ ও তার কী ধরনের কর্মকাণ্ড সার্ককে কোণঠাসা করে রেখেছে। তৌহিদ হোসেনকে জয়শঙ্কর এ কথাও বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বাভাবিকীকরণ করাটা বাংলাদেশের উচিত নয়।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের কোনো কোনো উপদেষ্টার কিছু কিছু মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত এসব মন্তব্য নজরে রেখেছে। ওই ধরনের মন্তব্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজকর্মে তার প্রভাব–প্রতিক্রিয়ার বিষয়ও ভারতের গোচরে রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য অবশ্যই সহায়ক নয়। এর প্রতিক্রিয়া কী, তা তাদেরই ভেবে দেখা দরকার।

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালকদের বৈঠক সদ্য শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ৫ আগস্টের পালাবদলের পর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত, মিডিয়ার সৃষ্টি।

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে জয়সোয়াল বলেন, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কী হয়েছে, সে বিষয়ে সবাই অবগত। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বারবার প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্রকেও এ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী

ছবিঃ সংগৃহীত

যানজটে আটকে থাকা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের গাড়ি বহরকে সাইড করে দিতে গিয়ে বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জসিম উদ্দিন (৫৩) নামে জামায়াতের একজন কর্মী।

নিহত জসিম উদ্দিন উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের সৈয়দপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত আলী আশ্রাফ মোল্লার ছেলে। তার স্ত্রী ও শিশুসহ তিন ছেলে সন্তান রয়েছে।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার ওয়ালটন শো-রুমের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মারুপ সিরাজী বলেন, লক্ষীপুর যাওয়ার পথে জামায়াত আমিরের বহরের ৪টি গাড়ি বাগমারা উত্তরবাজারে যানজটে আটকা পড়লে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। হঠাৎ তিশা পরিবহনের ঢাকামুখী একটি দ্রুতগতির বাস ধাক্কা দিলে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দীনের মাথা থেতলে যায়। রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হলেও বাগমারা বাজার অংশে অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে দুই লেন করা হয়েছে।সে কারণে ২৪ ঘণ্টাই সড়কের এই অংশে যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলে আজ হয়তো এমন মৃত্যু হতো না।

লালমাই উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ইমাম হোসেন বলেন, আমিরে জামায়াত লক্ষীপুর যাওয়ার পথে বাগমারা উত্তর বাজার বালুর মাঠে পথসভা করেন। পথসভাস্থলে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগে তাঁর গাড়ি বহর যানজটে আটকা পড়ে।

তখন আমিসহ সংগঠনের ১৫/২০ জন কর্মী ট্রাফিকের দায়িত্ব শুরু করি। আমরা আমিরে জামায়াতকে নিয়ে পথসভায় চলে যাওয়ার পর জামায়াতের কর্মী জসিম উদ্দিন বাস চাপায় মারা যান।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, বাগমারা উত্তরবাজারে বাস চাপায় জসিম উদ্দিন নামের একজন মারা গেছেন। মরদেহ নিহতের বাড়িতে রয়েছে। খবর পেয়েই নিহতের বাড়িতে গিয়েছি।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পদ্মাপাড়ে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচানো ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার  
সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রশ্নে বাংলাদেশকে যে বার্তা দিলো ভারত
জামায়াতের আমিরকে যানজট মুক্ত করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন কর্মী
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা  
একুশে টিভির জিডি, কর্মচারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে জামায়াত  
আফ্রিকার রানের চাপে বড় ব্যবধানে হারলো আফগানিস্তান
আগামীকাল দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে
অপারেশন ডেভিল হান্ট: ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৪৬১
খিলগাঁওয়ে স-মিলে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০ ইউনিট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পশ্চিম তীরে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিলেন নেতানিয়াহু
মেসির অটোগ্রাফ চেয়ে শাস্তি পেলেন রেফারি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে হয়নি দুই বাংলার মিলন মেলা
মাতৃভাষার গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে যা বললেন ড. ইউনূস
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানি: তিন দিন পর মামলা, আতঙ্কে যাত্রীরা
বিপ্লবের আত্মত্যাগ উন্নত বাংলাদেশের পথে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে : পররাষ্ট্রসচিব
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন
চ্যাম্পিয়নশিপের দল শেফিল্ডে মাসে ৪০ কোটি টাকা বেতন পাবেন হামজা চৌধুরী
পবিপ্রবিতে আবাসিক হলগুলোর নাম পরিবর্তন, মুছে ফেলা হলো শেখ পরিবারের নাম
ইসরায়েলের তেল আবিবে তিনটি বাসে বিস্ফোরণ