শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | ২৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

অঞ্জন রাস্তার ধারে গিয়ে রিকশা দাঁড় করায়। কাছে এসে হালিমা খাতুনকে টেনে তোলে। মা-মেয়ে দু’জনকে রিকশায় উঠিয়ে দিয়ে রিকশাওয়ালাকে বলে, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে নিয়ে গিয়ে দাঁড়াও। আমি আসছি, তোমার পেছনে পেছনে। রিকশাওয়ালা আস্তে আস্তে চালায়। অঞ্জন দ্রুত পায়ে হাঁটে। অল্পক্ষণে হাসপাতালে ঢোকে ওরা। ঘড়ি দেখে বিড়বিড়িয়ে বলে, ক্লাস তো শুরু হয়ে গেল। আজকে আর ক্লাস করা হবে না। থাক, একটা ক্লাস না করলে কিছু হবে না। এই গরিবের উপকারটুকু করে দিই। রিকশার পাশে এসে দাঁড়ালে কুকড়ি লাফ দিয়ে রিকশা থেকে নামে। মেয়েটি খুব চঞ্চল। নেমেই অঞ্জনের হাত আঁকড়ে ধরে বলে, আমি কিছু খাব।


-কী খাবি?

-ভাত, রুটি, বিস্কুট যা পাওয়া যায়।

-দাঁড়া তোর মাকে নামাই।

হালিমা খাতুনের হাত ধরে রিকশা থেকে নামায় অঞ্জন। তারপর রিকশাওয়ালাকে ভাড়ার টাকা দেয়। হালিমা খাতুনকে জিজ্ঞেস করে, এখন কেমন লাগছে শরীর?

-খুব খারাপ। মনে হচ্ছে গায়ে কোনো শক্তি নেই।
অঞ্জন দু’জনকে সামনের দোকানে নিয়ে গিয়ে পাউরুটি, বিস্কুট কিনে দেয়। দু’জনকে বলে, এই কোনায় দাঁড়িয়ে আপনারা খান। এই পানির বোতলটা রাখেন।

-তুমি খাবে না বাবা?

-না, আমি বাড়ি থেকে ভাত খেয়ে এসেছি।

-দুটো বিস্কুট খাও।

-না খালা, কিছু খাব না। কুকড়ির হাতে বিস্কুটের প্যাকেট থাকুক। ওর যখন ইচ্ছা হবে, খাবে। ওর কত বয়স হলো খালা?

-সাড়ে চার বছর। আমি হাসপাতালে ভর্তি হলে আমার মেয়ে কোথায় থাকবে? ওকে কি হাসপাতালে থাকতে দেবে?

-ভেতরে চলেন। কথা বলে দেখি।

-বাবারে আমার মেয়েরে যদি হাসপাতালে না রাখে তাহলে আমি ভর্তি হব না।

-না, না, এমন কথা ভাববেন না। দেখি কী ব্যবস্থা করা যায়।

কুকড়ি দু’হাতে অঞ্জনের হাত ধরে বলে, যদি আমাকে হাসপাতালে না রাখে তাহলে আমি ভাইয়ার কাছে থাকব। ভাইয়া তোমার বাড়িতে ঘর না থাকলে আমি বারান্দায় ঘুমাব।

-বলিস কি রে দুষ্টু মেয়ে। তুই তো অনেক কথা জানিস দেখি।

-বস্তিতে থাকি যে সবার কাছ থেকে কথা শিখি। কত লোক চারপাশে। সবাই অনেক কথা বলে।
হালিমা খাতুন ধমক দিয়ে বলে, হয়েছে থাম। আর কথা বলবি না।

-বলব, আমি অনেক কথা বলতে ভালোবাসি।

-থাম কুকড়ি। আর কথা বলিস না। খালা চলেন আমরা ইমার্জেন্সিতে যাই। আপনার কোনো ডাক্তার দেখানোর সুযোগ হয়েছে কি?

-না, রে বাবা। কেমন করে সুযোগ হবে? ভিক্ষার টাকায় ভাত খাই। ওষুধ খাওয়ার জন্য তো রাখতে পারি না।
-ঠিক আছে চলেন।

দু’হাতে দু’জনকে ধরে এগোয় অঞ্জন। বুকের ভেতর চনমন করে। আজ একটি অন্যদিন ওর সামনে। ও এই দায়িত্ব না নিলেও পারত। ওদের ছেড়ে চলে আসত কলেজে। কিন্তু বিবেকের তাড়নায় পারেনি। মানবিক বোধ চিন্তাকে আচ্ছন্ন করে বলেছিল, মানুষের জন্য মানুষকেই দায়িত্ব নিতে হয়। যে দায়িত্ব নেয় না সে অমানুষ। নিজেকে শাসন করে দায়িত্ব নিয়েছে। ভবিষ্যতে নিজেও ডাক্তার হবে। দেখেশুনে রাখতে হবে এমন অসংখ্য মানুষকে। এই প্রতিজ্ঞা করলাম দু’জনের হাত ধরে। বুকের ভেতর কথা জমিয়ে রাখে অঞ্জন। ভাবে, বাড়িতে গিয়ে বাবা-মাকে এই কথা বলবে।

ইমার্জেন্সিতে গেলে ডাক্তার জিজ্ঞেস করেন, কী খবর অঞ্জন? কাকে নিয়ে এসেছ?

-তিনি একজন পথের ভিখারি।

-কোথা থেকে আনলে তাঁকে?

-শহীদ মিনার থেকে। এটি ওনার মেয়ে। দু’জনে ভিক্ষা করে জীবন চালায়। শহীদ মিনারে দেখা হলো আমার সঙ্গে।

-কী সমস্যা হয়েছে ওনার?

-খুবই অসুস্থ। সেজন্য আমি হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ওনার জ্বর এবং পেটে ব্যথা।

-যে অসুখের কথা বললে তার জন্য তো ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসা নেই। এটা তো জরুরি বিভাগ।

-উনি তো রাস্তার মানুষ। বস্তিতে থাকেন। ডাক্তার দেখানোর সাধ্য নেই। সেজন্য আমি নিয়ে এসেছি যে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করব। মেডিকেল কলেজে পড়ি বলে আপনাদের চিনি। আপনাদের কাছ থেকে ভর্তির সহযোগিতা নেব। আপনাকে ব্যবস্থা করে দিতেই হবে ডাক্তার ভাই। আপনার মানবিক বিবেচনা এ ক্ষেত্রে কাজ করুক। অফিস ফরমালিটিজ দিয়ে আমরা সব দিক রক্ষা করতে পারব না।

-ঠিক আছে আমি দেখছি। তুমি দাঁড়াও।
কুকড়ি লাফিয়ে বলে, আমিও হাসপাতালে থাকব।

-তুমি কেন হাসপাতালে থাকবে? তোমার তো জ্বর হয়নি।

-আমার তো খিদা পায়। পেট চোঁ-চোঁ করে। এটা অসুখ না?

অঞ্জন দু’হাতে তার মাথা জড়িয়ে ধরে বলে, হ্যাঁ রে, অসুখ। অনেক বড় অসুখ।

-এর ওষুধ কী বলো তো?

-ভাত।

সবাই হো-হো করে হাসে। হাসতে হাসতে ডাক্তার হালিমা খাতুনের ভর্তির ব্যবস্থা করে দেয়। আট নম্বর ওয়ার্ডের পঁচিশ নম্বর বেড। অঞ্জনকে কাগজপত্র দিয়ে বলে নিয়ে যাও। হালিমা খাতুন ডাক্তারকে বলে, ডাক্তার সাহেব। কুকড়ি জিজ্ঞেস করে, আমি কোথায় থাকব?

-মায়ের সঙ্গে।

-ওহ, মায়ের সঙ্গে। মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে ঘুমাব। মা-মাগো চলো, চলো।

লাফাতে লাফাতে ও বারান্দায় বেরিয়ে যায়। অঞ্জন হালিমা খাতুনের হাত ধরে এগোয়। কুকড়ি সামনে থেকে ছুটে এসে অঞ্জনের হাত ধরে। নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে পৌঁছে সব ব্যবস্থা করে দিয়ে অঞ্জন বেরিয়ে আসার সময় ওয়ার্ডের কর্মী বলে, এই বাচ্চাকে রেখে যাচ্ছেন কেন? কে ওকে দেখাশোনা করবে?

-ওর মা তো অসুস্থ। আমরা এখানে কোনো বাচ্চা রাখি না। রোগীর সঙ্গে আবার বাচ্চা কেন? ওকে বাড়িতে রেখে আসেন।

-ওরা তো রাস্তার মানুষ। বাড়ি নাই। ওর কেউ নাই।

-তাহলে, আপনি ওকে রাখার ব্যবস্থা করেন। আপনি আসুন আমার সঙ্গে আপনাকে বিছানায় দিয়ে আসি।

-হ্যাঁ, আমি বিছানায় যাব। আমার মাথা ঘোরাচ্ছে।

 

 

(চলবে..)

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

Header Ad
Header Ad

ভারী বর্ষণ-বজ্রপাতে ভারত ও নেপালে প্রায় ১০০ জনের প্রাণহানি

ছবি: সংগৃহীত

ভারত ও নেপালের কিছু অংশে ভারী বৃষ্টিপাত ও বজ্রঝড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০০ জন। বুধবার (৯ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়া এ দুর্যোগে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বহু প্রাণহানির ঘটে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা ও গণমাধ্যম। খবর, রয়টার্সের।

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বুধবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাতে সেখানে অন্তত ৮২ জন নিহত হয়েছে।

অন্যদিকে, দেশটির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশেও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, সেখানে ১৮ জনেরও বেশি মানুষ বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।

দেশটির আবহাওয়া অধিদফতর (আইএমডি) পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে বজ্রঝড় ও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে শনিবার (১২ এপ্রিল) পর্যন্ত একটি সতর্কতা জারি করেছে।

ভারতের প্রতিবেশী দেশ নেপালেও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। দেশটির জাতীয় দুর্যোগ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেখানে বজ্রপাত ও ভারী বৃষ্টির কারণে অন্তত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ গত সপ্তাহে জানিয়েছিল, এপ্রিল মাসজুড়ে অধিকাংশ অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি গরম পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-পাকিস্তানে বর্ষা মৌসুম শুরু হয় জুন মাসে থেকে। শীতের শেষে মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত সাধারণত শুষ্ক আবহাওয়া থাকে।

Header Ad
Header Ad

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৮ বস্তা টাকা, গণনা চলছে

ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের পৌর শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান বক্স খোলা হয়েছে। এবার চার মাস ১২ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৭টায় ১১টি দানবাক্স ও একটি ট্রাঙ্ক থেকে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। সঙ্গে পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গহনা। এখন চলছে গণনার কাজ। গণনায় অংশ নিয়েছেন প্রায় ৪০০ জনের একটি দল।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, এবার আমরা চার মাস ১২ দিন পর দানবক্স খুলেছি। এবার ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। ব্যাংক কর্মকর্তা ও মাদরাসার ছাত্ররা টাকা গণনার কাজ করছেন।

এর আগে, গত বছরের ৩০ নভেম্বর দান সিন্দুক খোলা হয়েছিল। তখন ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়, আর গণনা শেষে তখন রেকর্ড ভেঙে ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা সংগ্রহ হয়েছিল। প্রায় ১০ ঘণ্টায় ৪০০ জনের একটি দল এ টাকা গণনার কাজ শেষ করেন। সঙ্গে ছিল স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা, এমনকি রুপার অলংকারও।

মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৭টার দিকে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের ৯টি দান দানবাক্স খোলা হয়েছে। দান দানবাক্সগুলো খুলে ৩০টি বস্তায় ভরে টাকাগুলো মসজিদের দোতলায় আনা হয়েছে গণনার জন্য। এখন চলছে টাকা গণনার কাজ।

টাকা গণনার কাজে অংশ নিয়েছেন, কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, সিবিএ নেতা মো. আনোয়ার পারভেজসহ মাদরাসার ২৮৫ জন ছাত্র, ব্যাংকের ৮০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য।

মসজিদের খতিব, এলাকাবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন সূত্রে জানা যায়, এ মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এ মসজিদে দান করে থাকেন।

জনশ্রুতি আছে, এক সময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে। মুসলিম-হিন্দু নির্বিশেষে সব ধর্মের লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই সাধকের আস্তানায়। পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী।

কিন্তু ওই সাধকের দেহাবসানের পর থেকে আশ্চর্যজনকভাবে এলাকা এমনকি দেশের দূর-দূরান্তের লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে। মানত কিংবা দান খয়রাত করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সের হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের নারী-পুরুষ মানত নিয়ে আসেন এ মসজিদে। তারা নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি এমনকি বৈদেশিক মুদ্রাও দান করেন।

বর্তমানে কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ জমির ওপর মসজিদটি গড়ে উঠলেও বর্তমানে মসজিদ কমপ্লেক্সটি ৩ একর ৮৮ শতাংশ জায়গা আছে। এ মসজিদের পরিধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্য।

এরই মধ্যে দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামি কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। এছাড়া মসজিদের আয় থেকে বিভিন্ন সেবামূলক খাতে অর্থ সাহায্য করা হয়।

পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। যার নামকরণ হবে পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। সেখানে ৩০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

Header Ad
Header Ad

অবশেষে জানা গেল কলকাতার কোথায় আছেন ওবায়দুল কাদের

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত এক চরিত্র ওবায়দুল কাদের। তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ছিলেন। ওবায়দুল কাদের কলকাতার অভিজাত এলাকা রাজারহাট নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রীকে নিয়ে থাকছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিনি ডিএলএফ নিউটাউন হাইটস প্লাজায় আছেন। এটি মূলত হাইরাইজ কমপ্লেক্স, যেখানে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা আছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় গাজী নাসির উদ্দীন আহমেদ নামে এক ব্যক্তি ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য প্রকাশ করেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‌‘তার এক বন্ধু কলকাতায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে শুক্রবার বিকালে অ্যাপোলো হাসপাতালের অ্যান্ডোক্রাইনোলজিস্ট শ্যামাশীষ ব্যানার্জির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় তিনি সেখানে ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে পান।’

নাসির উদ্দীন লিখেছেন, ডাক্তারের রুম বন্ধ, ফোনও বন্ধ। ডাক্তারের সহকারী বলেন- স্যার লাঞ্চে। এক ঘণ্টার মতো অপেক্ষার পর রুমের কপাট খুলল। এর পর আকাশি রঙের টি-শার্ট ও প্যান্ট পরা এক ভদ্রলোক বের হলেন। লোকটাকে চিনে ফেলে, যেই না বলছে, ‘ওবায়দুল কাদের না!’ ভদ্রলোক সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক মুখে দিয়ে হন হন করে হেঁটে চলে গেলেন।

তিনি আরও লেখেন, ‘আমার বন্ধু বলছেন- পুরা চকচক করতেছিলেন স্যার। দেখে মনে হয়েছে, তিনি সুস্থ আছেন।’

কলকাতায় বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ভারতের সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ব্যাপারে ‘ওয়াকিবহাল’। তাই কোনো অপরাধ না করলে তাদের ‘হয়রানি’ করা হয় না।

হাজারী নিজেও ওই ভবনের আরেকটি ফ্ল্যাটে থাকেন বলে জানা গেছে। নিউটাউন হাইটস প্লাজায় আরও থাকেন টাঙ্গাইল-২ আসনের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনির। ছোট মনির সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী ও শ্রমিকনেতা শাজাহান খানের জামাতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা কলকাতা থেকে জানিয়েছেন, দলের সাধারণ সম্পাদক বাসা থেকে খুব একটা বের হন না। তবে মাঝেমধ্যে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যান। ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখাও করেন না। তিনি মূলত নিজাম হাজারী ও ছোট মনিরের বলয়ের মধ্যেই থাকেন।

জানা গেছে, ওবায়দুল কাদের ৫ আগস্টের পরও কয়েক মাস দেশেই পালিয়ে ছিলেন। পরে তিনি সীমান্ত পার হয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং চলে যান। সেখানে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ অনেক নেতাকে নিয়ে ছিলেন ওবায়দুল কাদের। শিলংয়ে কিছুদিন থেকে পরে স্থলপথে আসাম হয়ে সস্ত্রীক কলকাতা যান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভারী বর্ষণ-বজ্রপাতে ভারত ও নেপালে প্রায় ১০০ জনের প্রাণহানি
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৮ বস্তা টাকা, গণনা চলছে
অবশেষে জানা গেল কলকাতার কোথায় আছেন ওবায়দুল কাদের
স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ
মার্চ ফর গাজা: প্রস্তুত সোহরাওয়ার্দী, আসছে মানুষ-জনসমুদ্রের অপেক্ষা
চারুকলায় আগুন, নববর্ষের দুদিন আগে পুড়ে গেল ‘ফ্যাসিবাদের মোটিফ’
কুল-বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ডে বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ মিরাজ, দর্শক পছন্দে সেরা ঋতুপর্ণা
রাজধানীর ওয়াসার পানিতে কিলবিল করছে পোকা, মগবাজার-মধুবাগে তীব্র ভোগান্তি
বিদেশি আইনের আওতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ: গভর্নর
মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদল নয়, বরং ঐতিহ্যে ফেরত: ঢাবি উপাচার্য
তৃতীয় বিয়ের ইতি, রোশন সিংয়ের সঙ্গে আইনিভাবে বিচ্ছিন্ন শ্রাবন্তী
৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত