শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান

চেয়েছিলেন জ্যাকের বড়ভাই হেনরি যেন বেহালা বাজানো শেখে। বেহালা বাজানো শেখার কাজ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য জ্যাক বলেছিল, এই অতিরিক্ত কাজের বোঝা নিয়ে স্কুলে ভালো ফলাফল করতে পারবে না। সুতরাং তার ভাই একটা নিষ্প্রাণ বেহালা থেকে কায়ক্লেশে অতি ভয়ঙ্কর কিছু শব্দ বাজাতে শিখেছিল। সে কয়েকটা নকল সুরে জনপ্রিয় গান বাজাতে পারত। কণ্ঠ ভালো থাকায় জ্যাকও ওই গানগুলো গাইতে পারত। তবে ওই নিষ্পাপ অবসর বিনোদনের ভয়াবহ ফলাফল সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা ছিল না।

নানির বিবাহিত মেয়েদের দুজন তাদের স্বামীদের হারিয়েছিলেন যুদ্ধে। তারা এবং অন্য বিবাহিত মেয়েরা রবিবারে বেড়াতে আসতেন। নানির আরেক বোন ছিলেন। তিনি সাহেলের এক খামারে বাস করতেন এবং স্প্যানিস ভাষার চেয়ে অবলীলায় বরং মাহুন উপভাষায় কথা বলতেন। তারা সবাই রবিবারে কেউ না কেউ আসতেনই। আর তখন নানি তার নাতিদের ডাকতেন তাদের সামনে প্রত্যুৎপন্ন সংগীতের কনসার্টের জন্য। দুরু দুরু বুকে তারা সংগীতের একটা ধাতব স্ট্যান্ড এবং সুপরিচিত সুর সংবলিত খাঁজকাটা দুটো পৃষ্ঠা নিয়ে আসত। তাদের ওই দায়িত্ব থেকে রেহাই ছিল না বলে হেনরির বেহালার আঁকাবাকা সুরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করে জ্যাক র‌্যামোনার গান গাইত: র‌্যামোনা, আমি একটা অদ্ভূত স্বপ্ন দেখেছি; শুধু তুমি আর আমি চলে এসেছি, শুধু তুমি আর আমি; কিংবা, নাচো, ও আমার প্রিয়তমা, আজ রাতে শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো। কিংবা প্রাচ্যে থেকে যাওয়ার গান: চীনের রাত, আদর সোহাগের রাত, প্রেমের রাত, পরমানন্দের রাত, কোমলতার রাত–ইত্যাদি ইত্যাদি। কোনো সময় নানি তাদেরকে জীবনমুখি গান গাইতে বলতেন। জ্যাক গাইত, প্রিয়তম, সত্যিই এই তুমি কি সেই তুমি যাকে আমি এত ভালোবেসেছি, যে আমাকে কথা দিয়েছিলে। খোদা জানেন, তুমি কথা দিয়েছিলে কখনও কাঁদাবে না আমাকে।

এই গানটিই জ্যাক খুব দরদ দিয়ে গাইত। কারণ গানের বিষয়বস্তুর নায়িকা একদল লোকের ভীড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে মর্মস্পর্শী ধ্রুবপদ বার বার গাইত: তখন তার সামনে যেন তার অবাধ্য প্রেমিককে ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে। তবে নানির পছন্দ ছিল আরেকটা গান; সে গানটার বিষাদময় কোমল সুর যেন তার অন্তর ছুঁয়ে যেত। গানটা ছিল টসেলির সেরেনাদ। সে গানটাতে হেনরি এবং জ্যাক তাদের নিজস্ব ভঙ্গির মিশেল দিত। অবশ্য আলজেরীয় উচ্চারণ গানটির নৈশকালীন মুগ্ধ আবহ ফুটিয়ে তোলার জন্য উপযুক্ত ছিল না।
রৌদ্রজ্জ্বল বিকেলে এবড়ো থেবেড়ো করে সাদা রং করা দেয়ালের হতদরিদ্র অবস্থায় সজ্জিত রুমে কালো পোশাক পরিহিত চার পাঁচজন মহিলা স্পেনদেশীয় মহিলাদের মাথা এবং কাঁধ ঢাকার কালো ওড়না দিয়ে তাদের মাথা থেকে নামিয়ে হেনরি এবং জ্যাকের গানের কথা আর সুরের সঙ্গে হালকাভাবে মাথা দোলাতে থাকতেন। নানি অবশ্য অন্যদের মতো কালো ওড়না ব্যবহার করতেন না। সারেগামার প্রথম সা থেকে শেষের সা পর্যন্ত কোনোটাই তিনি উচ্চারণ করেননি কোনোদিন এবং সুরপরম্পরার সংকেতগুলোর নামও জানতেন না। তবু হঠাৎ যখন তিনি কাঠখোট্টাভাবে বলে উঠতেন, এই যে এখানে ভুল হয়ে গেল, তখনই অন্যদের মাথা দোলানো বন্ধ হয়ে যেত। আর গায়ক এবং বাদকের পালের হাওয়া যেত পড়ে। দুরূহ যাত্রা যখন তার রুচিকে সন্তুষ্ট করার পর্যায়ে চলে এসেছে নানি বলে উঠতেন, আমার ওসব জানা আছে। আবার গান শুরু হলে মহিলারা মাথা দোলানো শুরু করতেন এবং গান শেষে দুজন কলাকোবিদকে বাহবা দিতেন।

গায়ক বাদকও তাদের সরঞ্জামাদি তাড়াতাড়ি গুছিয়ে নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য রাস্তায় বের হয়ে যেত। শুধু ক্যাথরিন করমারি এক কোণে চুপচাপ বসে থাকতেন। জ্যাকের আজো মনে আছে, একদিন গানের পালা শেষ করে তারা বের হচ্ছে কোনো এক খালা তার গানের প্রশংসায় মাকে কিছু একটা বললেন এবং মা তার জবাবে বললেন, ভালোই পারে। ছেলের বুদ্ধি আছে। কথাটা শুনে জ্যাকের মনে হলো, মায়ের কথাদুটো আলাদা। তবে দুটোর মধ্যে কোথায় যেন একটা সংযোগ আছে। বের হওয়ার সময় পেছন ফিরে তাকিয়ে জ্যাক পরিষ্কার বুঝতে পারল, সংযোগটা কোথায়: মায়ের মুখমণ্ডল জুড়ে শিহরণ, তার শান্ত চোখ জোড়ায় উপচেপড়া ব্যাকুলতা। মায়ের গভীর অর্থময় দৃষ্টি যেন তাকে পিছে টানছে, দ্বিধায় ফেলে দিচ্ছে। এরপর জ্যাক ছুটে বেরিয়ে গেল। মা আমাকে ভালোবাসেন। মা তাহলে ভালোবাসেন আমাকে–সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে নিজেকেই শোনাতে লাগল জ্যাক। একই সময় সে উপলব্ধি করতে পারল, মাকে সেও পাগলের মতো ভালোবাসে, বুঝতে পারল, মায়ের ভালোবাসা পওয়ার জন্য সমস্ত হৃদয় তার ব্যাকুল হয়েছিল এতদিন, আরও বুঝতে পারল, ওই মুহূর্তের আগ পর্যন্ত তার মধ্যে দ্বিধা ছিল, মা সত্যিই তাকে ভালবাসেন কি না।

পাড়ার ছবি ঘরে আরেক আনন্দের উৎস ছিল বালক জ্যাকের জন্য। সেখানেও তার এক বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হতো। এই ভূমিকা পালন করতে হতো রবিবার অথবা বৃহষ্পতিবার বিকেলে। পাড়ার সিনেমা হলটা ছিল তাদের বাড়ির ঠিক নিচের রাস্তায়। সিনেমা হল এবং ওই রাস্তার নাম ছিল একজন রোমান্টিক কবির নামে। সিনেমা হলে ঢোকার পথে থাকত আরব ফেরিঅলাদের এলোপাথারিভাবে সাজানো পসরার প্রতিবন্ধকতা: কেউ কেউ বিক্রি করত চীনাবাদাম, লবণ মাখানো শুকনো মটরদানা, এক ধরনের গোখাদ্যের ফল ভাজা, গাঢ় রঙের চিনি মেশানো জবভাজা এবং আঠালো টক লাড্ডু। অন্য কেউ বিক্রি করত জমকালো পেস্ট্রি; সেগুলোর মধ্যে ছেড়ে দেওয়া থাকত গোলাপী রঙের চিনি ছড়ানো পিরামিড সদৃস কুঞ্চন। অন্য কেউ আবার হয়তো বিক্রি করত আরবীয় কায়দায় তেল আর মধুতে ডোবানো ফলের পাতলা টুকরো। মিষ্টি খাদ্যগুলোর দ্বারা আকৃষ্ট হতো দলে দলে মাছি আর ছোট ছেলেমেয়েরা। একে অন্যকে ধাওয়া করার কারণে ভনভনানি আর চিৎকার চেঁচামেচি একাকার হয়ে মিশে যেত ফেরিঅলাদের খিস্তির সঙ্গে।

ফেরিঅলারা নিজ নিজ পসরার খাবারের নিরাপত্তা বিধানের জন্য মাছি আর ছেলেমেয়েদের দলকে একই রকম অঙ্গভঙ্গির দ্বারা তাড়াতে থাকত। কোনো কোনো ফেরিঅলা সিনেমা হলের একপাশে বর্ধিত তাবুর নিচে জায়গা পেত। অন্যরা তাদের আঠালো খাবারের পসরা কড়া সূর্যালোক আর বাচ্চাদের সৃষ্ট ধূলির নিচে ফেলে রাখতে বাধ্য হতো। জ্যাক তার নানিকে সিনেমা হলে নিয়ে যেত। সিনেমায় যাওয়া উপলক্ষে নানির সাদা চুল পেছনের দিকে টেনে মসৃণ করে বাঁধা থাকত আর তার চিরন্তন কালো পোশাক রূপালি পিন দিয়ে আটকানো থাকত। হাউকাউ করা বাচ্চাদের ভীড় অবলীলায় সরিয়ে নানি এক টিকেট কাউন্টারের সামনে গিয়ে ‘সংরক্ষিত’ আসনের টিকেট কিনতেন। ‘সংরক্ষিত’ আসন মানে ভাঁজ করে রাখা চেয়ার যেগুলো খুলে বসার সময় বাজে এক ধরনের শব্দ তৈরি হতো। আরেক ধরনের আসন ছিল বেঞ্চ: সেগুলোতে সাধারণত ছোট ছেলেমেয়েরাই বেশি বসত। শেষ মুহূর্তে পাশের একটা দরজা খুলে দেওয়া হলে তারা নিজেদের আসন নিয়ে ঝগড়া করতে করতে প্রবেশ করত। আসলে ওই দুধরনের আসন ছাড়া আর কোনো রকমের আসন ব্যবস্থা ছিল না। প্রত্যেক বেঞ্চের শেষ মাথায় একজন করে প্রবেশক থাকত। শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তার হাতে থাকত চামড়ার চাবুক; প্রায়ই দেখা যেত, সে কোনো বাচ্চাকে কিংবা বয়স্ক কাউকে অমার্জিত আচরণের জন্য সিনেমা হল থেকে বের করে দিচ্ছে। সেকালে সিনেমা থিয়েটারে প্রথমে দেখানো হতো নির্বাকচিত্র, সংবাদচিত্র, তারপর স্বল্পদৈর্ঘ্য কমেডি, সেটাই হতো প্রধান বিষয় এবং সর্বশেষে ধারাবাহিক কাহিনীচিত্র; এরকম কাহিনীর প্রদর্শনী গড়ে সপ্তাহে এক পর্ব দেখানো হতো।

নানির বিশেষ পছন্দের ছিল ওই ধারাবাহিকগুলো, বিশেষ করে যেগুলো প্রতিপর্বে শেষ হতো অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে। যেমন পেশীবহুল নায়ক আহত সাদাচুলের নায়িকাকে কোলে নিয়ে গিরিখাতের স্রোতের ওপরে তৈরি লতাগুল্মের সেতু পার হওয়া শুরু করেছে; সাপ্তাহিক পর্বে সর্বশেষ আলোক সম্পাতে দেখা যেত, একটা উল্কি আঁকা হাত একটা ভোতা ছুরি দিয়ে ওই সেতু কেটে দিচ্ছে। সিনেমা হলের ভেতরের বেঞ্চের দর্শকদের সতর্কবাণী সত্ত্বেও নায়ক তার পথে সগর্বে এগিয়ে যেত। নায়ক নায়িকা ওখান থেকে পালিয়ে যেতে পারবে কি না সেটা বড় কথা নয়, সন্দেহ নেই পারবেই। আসল কথা হচ্ছে, তারা কীভাবে নিজেদের মুক্ত করবে সেটাই। আর সে কারণেই এত আরব আর ফরাসি দর্শক পরবর্তী সপ্তাহে আসবে এবং দেখবে ঈশ্বর প্রদত্ত কোনো বিশাল গাছ এসে প্রেমিক প্রেমিকাকে ইহপতন থেকে রক্ষা করে দিচ্ছে। গোটা প্রদর্শনী জুড়ে মূল চলচ্চিত্রের সঙ্গে সিনেমা হলের ভেতর থেকে জীবন্ত একজন বয়স্কা অনূঢ়ার পিয়ানো বাদন শোনা যেত। মিনারেল পানির বোতলের মতো পিঠ প্রদর্শন করে সে বেঞ্চে বসা দর্শকদের দাঁত কেলানো হাসির সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করত। সে সময় জ্যাকের মনে হতো, প্রচণ্ড গরমের ভেতর মহিলার আঙুলবিহীন দস্তানা পরাটা একটা বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিষয়। তার কাজটা যে যত সহজই মনে করুক না কেন আসলে খুব সহজ ছিল না।

যখন যে দৃশ্য দেখানো হতো সেটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুর বদল করে বাজাতে হতো। বসন্ত উৎসবের সঙ্গে প্রাণবন্ত চার কিংবা পাঁচ যুগল নৃত্যের জন্য যে সুর সেখান থেকে চোপিনের চীনে বন্যার কারণে দাফন যাত্রার সুরে যাওয়ার সময় কিংবা জাতীয় অথবা আন্তর্জাতিক মানের কোনো ব্যক্তির দাফন দৃশ্যের সুরে যাওয়ার সময় বিশেষ লক্ষণীয় কোনো ক্রান্তি টানত না সে। সে যে সুরই বাজাত সেটাই অবিচলভাবে বাজাত যেন গোটা দশেক ছোট যান্ত্রিক বাদ্যযন্ত্র চিরতরে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ঘড়ির যন্ত্রাংশের মতো ওই পুরনো হলুদ হয়ে যাওয়া কীবোর্ডটা যথাযথভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। নামমাত্র দেয়ালঘেরা এবং মেঝেতে চীনাবাদমের খোসা ছড়ানো হলের মধ্যে ক্রেসিলের গন্ধ মিশে যেত মনুষ্য শরীরের কড়া গন্ধের সঙ্গে। হলের মধ্যে কান ঝালাপালা করা হৈচৈ থামানোর জন্য পিয়ানো বাদিকার ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ: পূর্ণ প্যাডালে গৌরচদ্রিকায় চলে যেত সে এবং এতেই ম্যাটিনি শোর দর্শকদের মধ্যে ভাব চলে আসত।

চলবে...

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত