শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান

বাবা, তার মৃত্যু

যুদ্ধ, বোমা বিস্ফোরণ

একটানা পাঁচটা সিঁড়ি বেয়ে, নিশ্চিত গতিতে একটাও ভুল পদক্ষেপ না ফেলে, তার শরীর যেন সিঁড়িগুলোর সঠিক উচ্চতা এখনও ঠিক ঠিক মনে রেখেছে, তেমনিভাবে দৌড়ে উঠে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে দরজার সামনেই জ্যাক মাকে জড়িয়ে ধরল। যখন সে ট্যাক্সি থেকে নামল তখন রাস্তাটা ইতোমধ্যে জেগে উঠেছে; জায়গায় জায়গায় সকাল ঝলমল করে উঠছে। কুয়াশার ভেতরে পল্লবিত তাপ চারপাশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। অনেক দিন আগে যেখানে তাকে দেখা গেছে সেখানেই মাকে দেখতে পেল জ্যাক নাপিতের দোকানের মাথার উপরে দুই রুমের মাঝখানে সরু ব্যালকনিতে।

এই নাপিত লোকটা অবশ্য জাঁ এবং যোসেফের বাবা নন; তিনি যক্ষায় মারা গেছেন। তার স্ত্রী বলতেন তার কাজের কারণেই যক্ষা হয়েছিল, মানে তার নিঃশ্বাসের সঙ্গে সব সময় শরীরের মধ্যে চুল প্রবেশ করত। টিনের চালার উপরে আগের মতোই আছে ডুমুরের ফল, ছোট ছোট কাগজের টুকরো, সিগারেটের গোড়ালি ইত্যাদি। মা ওখানে দাঁড়িয়েছিলেন। চুল এখনও অনেক; তবে বেশ কয়েক বছর আগেই পেকে গেছে। বয়স বাহাত্তর বছর হয়ে গেলেও শরীর টানটান; হালকা পাতলা শরীরের কারণে তাকে আসলে বয়সের চেয়ে দশ বছরের মতো ছোট দেখায়। শরীরের শক্তি মনে হয় আগের মতোই আছে; তাদের পরিবারের সবারই শরীর-স্বাস্থ্য এরকমই। তাদের সবারই শরীর হালকা পাতলা, নির্লিপ্ত চালচলনের কারণে ক্লান্তিহীন অবয়ব। তাদের কারও উপরে বার্ধক্য ভর করতে পারেনি। পঞ্চাশ বছর বয়সেও তার আধাবোবা মামা এমিলকে অল্পবয়সী যুবকের মতো মনে হয়। নানি মারা যাওয়ার সময়েও তার মাথা একটু নুইয়ে পড়েনি। আর তার মা, যার কাছে জ্যাক এই তো ছুটে এসেছে, কোনো কিছুই তার নীরব সহ্য ক্ষমতাকে ক্ষয় করতে পারেনি। জ্যাক ছোটবেলায় সর্বান্তকরণে মায়ের অল্পবয়সী সুদর্শনা চেহারাটা ভক্তিতে উচ্চে তুলেছে; তার সেই চেহারাটা দশকের পর দশক ধরে কায়িক শ্রমের বোঝা পার করেছে। তবু যেন সেই অল্পবয়সীই রয়ে গেছেন তিনি।

জ্যাক চৌকাঠের কাছে পৌঁছলে মা দরজা খুলে দিয়ে নিজেকে ছেলের বাহুতে এলিয়ে দিলেন। আগে যেমন প্রতিবারই পুনর্মিলনের সময় দুতিনবার চুমু খেতেন ছেলেকে এবারও নিজের শরীরের সঙ্গে সর্বশক্তি দিয়ে চেপে ধরে চুমু খেলেন। আর জ্যাক মাকে নিজের বাহুর মধ্যে ধারণ করে মায়ের পাঁজরের হাড়গুলোর অস্তিত্ব টের পেল। মায়ের কাঁধের বের হয়ে আসা অস্থিগুলো যেন একটুখানি কেঁপে গেল। তখন মায়ের ত্বকের কোমল সুগন্ধ জ্যাকের নাকে আসে আর মনে পড়ে যায় মায়ের স্বরযন্ত্রের নিচে এবং ঘাড়ের তন্তুর মাঝের দাগের কথা। আগে ওখানে চুমু দেওয়ার সাহস হতো না।

তবে মাঝে মাঝে মা তাকে কোলে বসিয়ে দিলে ধুমের ভান করে ওখানে নাক ডুবিয়ে থাকতে ভালো লাগত; ছেলেবেলায় মায়ের ঘাড়ের ওখানে নাক ডুবিয়ে যে কোমলতার পরশ পেত ওই জীবনে আর কোথাও তেমন পেত না। মা এবার জ্যাককে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আবার ছেড়ে দিলেন যেন ছেলের প্রতি তার ভালোবাসা কতখানি আছে কিংবা কতখানি প্রকাশ করেছেন তা মেপে দেখছেন এবং বুঝতে পারছেন, আরও খানিকটা বাদ আছে প্রকাশ করা। সেটুকু প্রকাশ করতেই তিনি আবেগভরা কণ্ঠে বলে উঠলেন, বাবা, কত দূরে ছিলি এতদিন! তারপর ঘুরে গিয়ে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে রাস্তামুখি খাবার ঘরটাতে গিয়ে বসলেন। মনে হলো, তিনি আর ছেলের কথা ভাবছেন না কিংবা তিনি আর বর্তমানের মুহূর্তে নেই: ছেলের দিকে এমনভাবে থেকে থেকে তাকাচ্ছেন যেন ছেলে তার সামনে নেই; ছেলে রাস্তায় আছে আর এই শূন্য, সরু, আবদ্ধ জায়গাতে তার একাকী অবস্থানকে ছেলের অনুপস্থিতি অস্থির করে দিচ্ছে।

জ্যাক তার পাশে বসে পড়ার পর মনে হলো, তিনি যেন আজও কোনো এক দুশ্চিতার মধ্যেই আছেন, থেকে থেকে রাস্তার দিকে তাকাচ্ছেন তার সুন্দর বিষণ্ন চাহনির প্রকাশ দিয়ে। যতক্ষণ চোখ জোড়া রাস্তার দিকে ততক্ষণ চোখের উপর অস্থিরতা ভর করে আছে; রাস্তা থেকে ছেলের দিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে আনার সঙ্গে সঙ্গে চোখ দুটো যেন শান্ত হয়ে যাচ্ছে।

রাস্তাটা আরও হৈচৈপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে: লাল রঙের বিশাল ট্রলিবাসগুলো ক্রমেই সংখ্যায় বেশি হচ্ছে এবং জোরে শব্দ করতে করতে চলা শুরু করছে। জ্যাক মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে: সাদা কলারঅলা ধূসর রঙের ছোট একটা ব্লাউজ পরে আছেন তিনি; আগেও জানালার পাশের যে অস্বস্তিকর একটা চেয়ারে বসতেন সেটার উপরেই বসে আছেন; বয়সের কারণে পিঠটা একটুখানি প্রশস্ত হয়ে গেছে, তবু চেয়ারের গায়ে হেলান দেননি; হাতে একটা রুমাল; রুমালটা তার শক্ত হয়ে যাওয়া আঙুলে পেঁচিয়ে গোলাকার বল বানাচ্ছেন, আবার পরনের কাপড়ের ফাঁকায় রেখে দিচ্ছেন। মাথাটা কিছুটা জানালার দিকে ফেরানো। ত্রিশ বছর আগে যেমন ছিলেন তেমনই আছেন তিনি। মুখের উপরে বার্ধক্যের ভাঁজগুলো থাকলেও মুখটা অলৌকিকভাবে আগের মতোই রয়ে গেছে। মসৃণ এবং মার্জিত ভ্রু জোড়া যেন কপালের উপরে বসিয়ে দেয়ো হয়েছে। ছোট নাকটা সোজা, খাড়া। দুশ্চিন্তার ছাপ সত্ত্বেও মাড়ির পাশ থেকে ঠোঁটের সঙ্গে যেন তার মুখটা সুস্পষ্টভাবে অংকন করে রাখা হয়েছে। ঘাড়ের পাশটা দ্রুতই দুর্বল হয়েছে মনে হলেও আকৃতি আগের মতোই আছে; অবশ্য তন্তুগুলো গ্রন্থিল হয়ে গেছে; আর থুতনি কিছুটা দুর্বল হয়েছে।

জ্যাক জিজ্ঞেস করল, নাপিতের ওখানে গিয়েছিলে?

দুষ্টুমিতে ধরা পড়া বাচ্চা মেয়ের মতো করে হাসলেন মা, হ্যাঁ, তুই আসছিলি বলে। স্পষ্ট করে দেখা না গেলেও মায়ের আচরণে একটা অপ্রকাশী ভাব থাকে: যা বলছেন তার মধ্যে কেমন একটা প্যাঁচ। আবার অন্যদিকে তার পোশাক আশাকের ব্যাপারে একদম সোজাসাপটা: অরুচিকর কোনো পোশাক তাকে পড়তে দেখেনি জ্যাক। এখনও ধূসর আর কালো রঙের পোশাক পরেছেন; তার মধ্যে রয়েছে রুচিপূর্ণ নির্বাচনের ছাপ। এরকমটাই তাদের বংশের লোকদের ধারা: সব সময়ই হতভাগ্য অবস্থা, একেবারেই গরিব, কিংবা কারো অবস্থা একটু স্বচ্ছল–যা-ই হোক না কেন, তাদের পোশাকের বাছবিচার বেশ স্পষ্ট। তাদের সবাই, বিশেষ করে পুরুষেরা, ভূমধ্যগাগরীয় অন্য সবার মতোই সাদা শার্ট আর স্ত্রী করা ট্রাউজার পরার উপরে জোর দিয়ে আসছে।

নিজেদের পোশাক-আশাক সংখ্যায় কম হলেও নিয়মিত ভালো করে ধুয়ে স্ত্রী করার বাধ্যবাধকতা থাকার কারণে নারীদের কাজের পরিমাণ আরও বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক, তা সে নারী মা, স্ত্রী যে-ই হোক না কেন। জ্যাকের মায়ের কথা বলতে গেলে, তিনি মনে করতেন, অন্য লোকদের ঘরদোর পরিষ্কার করা এবং জামা কাপড় ধোয়াই যথ্ষ্টে নয়, বাড়ির লোকদের জামাকাপড়ও পরিষ্কার করা দরকার। জ্যাকের যতদূর মনে পড়ে, তাদের দুভাইয়ের মাত্র একটা করে ট্রাউজার ছিল। তবু সেগুলো ধুয়ে নিয়মিত স্ত্রী করে দিতেন মা। পরবর্তীতে জ্যাক বাইরের জীবনে প্রবেশ করে দেখেছে সেখানে নারীরা কেউ এই কাজ করে না।

মা বললেন, এই লোকটা ইতালীয়; কাজকর্ম ভালোই করে।

হ্যাঁ, বলল জ্যাক। সে বলতে যাচ্ছিল, মা তুমি কত সুন্দর। কিন্তু বলতে পারল না। মা সম্পর্কে তার ধারণা সব সময় এরকমই ছিল। তবে কখনওই বলা হয়নি। অবশ্য এর পেছনে এমন কোনো কারণ নেই যে, মা তার এই প্রশংসার কথা অবজ্ঞাভরে উড়িয়ে দেবেন, কিংবা এরকম প্রশংসায় মা খুশি হবেন–তাও মনে হয়নি। বরং মনে হয়েছে, তার এবং মায়ের মাঝে যে অদৃশ্য দেয়াল আছে সেটায় ফাটল তৈরি হতে পারে; দেয়ালের আড়ালেই মাকে সে সারা জীবন আশ্রয় নিতে দেখে এসেছে। তখন মাকে মনে হয়েছে কত বিনয়ী, নম্র, সৌজন্যপূর্ণ, এমনকি অপ্রতিরোধী তবে কোনো ব্যক্তি কিংবা কোনো বিষয় তাকে জয় করতে পারেনি। কিছুটা বধির হওয়ার কারণে তিনি সবার থেকে বিচ্ছিন্ন, নিজেকে প্রকাশ করতে অপারগ। সুন্দর হলেও কার্যত অপ্রবেশ্য; আর মায়ের এই অবস্থাটা সবচেয়ে বেশি মনে বেজেছে মা যখন অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি হাসিখুশি ছিলেন এবং জ্যাক মায়ের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য পেতে উৎসুক ছিল তখন। হ্যাঁ, সারা জীবন জ্যাক মায়ের এরকম আচরণই দেখে এসেছে: সমীহজাগানিয়া-ভীতিকর এবং নমনীয়, তবু দূরের।

ত্রিশ বছর আগেও মায়ের এই চাহনিই দেখেছে জ্যাক; তখন তার নানি চাবুক দিয়ে জ্যাককে আঘাত করেছেন। আর মা কিছু বলতে পারেননি। মা নিজে কোনো দিন তাদের গায়ে হাত তোলেননি, এমনকি কোনো দিন বকুনিও দেননি; সন্দেহ নেই, ছেলের গায়ের আঘাতে তিনিও জর্জরিত হয়েছেন। তবু তিনি কিছু করতে পারেননি। কারণ তিনি ছিলেন ক্লান্ত; কারণ বলার মতোকোনো কথা তার মুখ দিয়ে বের হয়নি। কারণ তার মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাও ছিল; তিনি হস্তক্ষেপ করতে পারেননি।

প্রত্যেকটা দীর্ঘ দিন, প্রত্যেকটা দীর্ঘ বছর তিনি তার সন্তানদের উপর বর্ষিত সেই আঘাত সহ্য করেছেন যেভাবে অন্য লোকদের কাজ করার জন্য তাকে কঠিন পরিশ্রমের ভেতর দিয়ে সময় পার করতে হয়েছে: তাদের কাপড় ধোয়া, হাঁটুর উপর ভর করে মেঝে পরিষ্কার করা–সবই করতে হয়েছে। পুরুষ-শূন্য জীবন যাপন করতে হয়েছে অন্য লোকদের আবর্জনা পরিষ্কার করে। একটা একটা করে দিন পার হয়ে বছর গড়িয়ে গেছে তার জীবনে। জীবনে কোনো আশা না থাকায় তার মধ্যে ক্ষোভও তৈরি হয়নি। অজ্ঞ থেকে ধৈর্য ধারণ করতে পেরেছেন। নিজের এবং তার সন্তানদের জীবন কষ্ট ভোগের কাছে ছেড়ে দিয়েছেন। জ্যাক মাকে কখনও কারো বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করতে শোনেনি। বড় জোর বলেছেন তিনি ক্লান্ত, কিংবা সারা দিন অনেক কাপড়-চোপড় ধুয়ে পিঠ ব্যথা করছে। মাকে কারো নামে কোনো খারাপ কথা বলতেও শোনেনি জ্যাক। কখনও হয়তো উল্লেখ করেছেন অমুক বোন কিংবা অমুক খালা-চাচি কেমন রূঢ় আচরণ করেছেন। অন্যদিকে, মাকে কোনো দিন প্রাণ খুলে হাসতেও দেখেনি সে। ইদানিং মায়ের হাসিখুশি ভাবটা একটু বেড়েছে; কারণ তাকে আর অন্য লোকদের কাজ করতে হয় না। তার সব প্রয়োজন তার সন্তানেরা মিটিয়ে থাকে। বাড়িটাও আগের মতোই আছে; এখানে মায়ের নিয়ম মতো চলা। এই পাড়ায় সব কিছু তার কাছে সহজলভ্য; অন্য কোনো আরামের জায়গায় গেলে সবকিছু কঠিন হয়ে যেত বলে মনে হয় তার। এই রুমটাও সেই একই রকম আছে; শুধু আসবাবগুলো তারা বদলে দিয়েছে। এখন আরেকটু মার্জিত রূপ পেয়েছে রুমটা; হত অবস্থাটা কিছুটা দূর হয়েছে; তবু আসবাবপত্রগুলো কেমন ফাঁকা ফাঁকা মনে হয়। সবগুলো আসবাই এখনও দেয়ালঘেঁষা।

তুই আগের মতোই সবকিছু হাতড়ে বেড়াস কেমন, মা বললেন।

হ্যাঁ, দেরাজ না খুললে যেন তার চলেই না; প্রবল আকাঙ্ক্ষা নিয়ে খুলতে গেলেও আসলে দেরাজের ভেতরে অতি নগণ্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না। দেরাজের নিরাভরণ চেহারাটাও তাকে আকর্ষণ করে। দেরাজের ড্রয়ারগুলো খুলে দেখতে পায় দুতিন রকমের ওষুধ–বাড়ির মানুষদের জন্য দরকারে কোনো রকমে চালিয়ে নেয়ওার মতো ওষুধ। সেখানে দুতিন রকমের পুরনো খবরের কাগজ, কয়েক টুকরো সুতা, পড়ে থাকা কয়েকটা বোতামভরা কয়েকটা কার্ডবোর্ড বাক্স আর সবার পরিচিতিমূলক পুরনো একটা ছবির সঙ্গে মিশে আছে। এখানে অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর চেহারাও মলিন; কারণ অপ্রয়োজনীয় জিনিস তাদের কখনোই ছিল না।

জ্যাকের ভালো করেই জানা আছে, তার নিজের বর্তমানের বাড়ির মতো জায়গায় যেখানে সবকিছুর প্রাচুর্য আছে তার মাকে সেখানে নিয়ে গেলেও মা শুধু অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলোই ব্যবহার করবেন। সে জানে, পাশের ঘরটায় মা থাকেন; সেখানে রয়েছে একটা ছোট আলমারি, একটা সরু বিছানা, কাঠের একটা ড্রেসিং টেবিল আর নিচে খড় দেওয়া একটা চেয়ার। ঘরটার একটা জানালায় হাতে বোনা নকশাঅলা একটা পর্দা ঝুলছে। তা ছাড়া আর তেমন কিছু সেখানে পাওয়া যাবে না। বড় জোর ড্রেসিং টেবিলটার উপরে মোড়ানো একটা রুমাল থাকতে পারে। মা আগে সেরকমই রাখতেন।

(চলবে)

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা

ছবি: সংগৃহীত

রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মুখোমুখি লড়াই মানেই ফুটবল দুনিয়ায় বাড়তি উত্তেজনা। স্প্যানিশ ফুটবলের এই দুই মহারথীর লড়াই কেবল মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এতে মিশে আছে স্পেন ও কাতালুনিয়ার জাতিসত্ত্বার লড়াই এবং রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের ইতিহাসও।

এবারের কোপা দেল রে ফাইনালে (শনিবার দিবাগত রাত ২টা, বাংলাদেশ সময়) আবার মুখোমুখি হচ্ছে রিয়াল ও বার্সা। তবে এবারের লড়াইয়ে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। রেফারিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে অস্থিরতা। সেভিয়ায় ফাইনালের আগে নির্ধারিত অনুশীলন করেনি রিয়াল, সংবাদ সম্মেলনেও আসেননি কোচ ও খেলোয়াড়রা। এমনকি দুই ক্লাবের কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজেও থাকছেন না রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। গুঞ্জন উঠেছিল, রিয়াল হয়তো ফাইনাল বয়কটও করতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা খেলবে।

এদিকে, বার্সেলোনার সামনে রয়েছে ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জ। লা লিগায় শীর্ষে থাকা বার্সা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছে। কোপা দেল রে শিরোপা তাদের ট্রেবল যাত্রার প্রথম ধাপ হতে পারে।

 

ছবি: সংগৃহীত

বার্সার জন্য দুঃসংবাদ, ইনজুরির কারণে দলের নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কি এই ফাইনালে খেলতে পারবেন না। তার জায়গায় শুরুতে দেখা যেতে পারে ফেরান তোরেসকে। তবে দলের বাকিরা সুস্থ ও প্রস্তুত রয়েছেন। লিগের শেষ ম্যাচে অধিকাংশ মূল খেলোয়াড় বিশ্রামে থাকায় বার্সেলোনা কিছুটা সতেজ ভাবেই নামবে মাঠে।

রিয়াল মাদ্রিদেও রয়েছে ইনজুরি সমস্যা। দলের ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপে চোটে পড়েছিলেন আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচে। শেষ মুহূর্তে তার ফিটনেস দেখে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ডিফেন্ডার ফার্লান্দ মেন্ডি ফাইনালে থাকছেন না, এটা নিশ্চিত।

এখন পর্যন্ত সামগ্রিক এল ক্লাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে—১০৫ জয়। বার্সেলোনা জয় পেয়েছে ১০২ ম্যাচে। তবে কোপা দেল রে’র ইতিহাসে এগিয়ে আছে বার্সা। ৩৭ দেখায় বার্সা জিতেছে ১৬ ম্যাচ, রিয়াল ১৩টি। ৮ ম্যাচ ছিল ড্র।

তবে কোপা দেল রে’র ফাইনালে ৭ বার এল ক্লাসিকো অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে রিয়াল জিতেছে ৪ বার এবং বার্সা ৩ বার।

চলতি মৌসুমে দুই দলের দুই দেখায় দুটিতেই বার্সেলোনা জয়ী হয়েছে—লা লিগায় ৪-০ এবং সুপারকোপা দে এস্পানার ফাইনালে ৫-২ ব্যবধানে।

 

স্টেডিয়াম: দে লা কার্তুহা, সেভিল
সময়: বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ২টা

 

Header Ad
Header Ad

মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরে নাঈম সরকার (১৯) নামের এক যুবককে মাদকাসক্তির কারণে ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন তার বাবা মফিজুল ইসলাম। ছেলের মাদকাসক্তি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

মফিজুল ইসলাম উপজেলার কোম্পানীগঞ্জের নগরপাড় এলাকার বাসিন্দা। তিনি বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কুমিল্লা নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এক হলফনামার মাধ্যমে ছেলে নাঈমের সঙ্গে পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিক সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

হলফনামায় মফিজুল উল্লেখ করেন, নাঈম একাদশ শ্রেণির ছাত্র হলেও দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। সে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশাজাত দ্রব্যে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এতে পরিবারে প্রতিনিয়ত অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছিল। গভীর রাতে বাড়ি ফেরা, মা-বাবার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা এবং নানা অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছিল নাঈম। পরিবারের মান-মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মফিজুল ইসলাম বলেন, "সন্তানের এমন বিপথগামী আচরণে আমি অত্যন্ত মর্মাহত। বহু চেষ্টা করেও তাকে সঠিক পথে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছি। অবশেষে পরিবার ও সমাজের সম্মান রক্ষার্থে তার সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হয়েছি।"

Header Ad
Header Ad

গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে ক্রমাগত গরম বাড়ছে। সামনে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে লোডশেডিং ও ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছে সাধারণ মানুষ। তবে এ নিয়ে আশার খবর দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, "এবারের গরমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। আমরা সীমিত পর্যায়ে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছি। আমাদের প্রজেকশনে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে। আশা করছি, অনেকটাই ম্যানেজ করতে পারবো।"

শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টারস বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত 'জ্বালানি সংকট উত্তরণের পথ' শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে উপদেষ্টা আরও জানান, লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করা হবে। জ্বালানি আমদানি করে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখতে হবে। এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সরকারের মেয়াদ স্বল্প হওয়ায় কাজের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, "জ্বালানির ক্ষেত্রে যেকোনো কাজ সম্পন্ন করতে সময় লাগে। আমরা এমন কিছু হাতে নিচ্ছি না, যা সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বকেয়া পরিশোধে। বিল পরিশোধ না করলে কোনো দেশ ব্যবসা করবে না।"

তিনি আরও জানান, আগামী দুই মাসের মধ্যে সিস্টেম লস ৫০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লাইন লিকেজ ও গ্যাস চুরির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ও কমিয়ে আনা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আগামী বছর আর কোনো বকেয়া থাকবে না, শুধুমাত্র কারেন্ট পেমেন্ট দিতে হবে। ভর্তুকি বাড়বে না, বরং কমবে। আমরা যে সংকটের গহ্বরে পড়েছিলাম, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।"

সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, বিট নিলামে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে পুনরায় রি-টেন্ডার করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
মাদকাসক্ত ছেলেকে ত্যাজ্য ঘোষণা করলেন বাবা
গরমে লোডশেডিং নিয়ে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত: সৌরভ গাঙ্গুলি
র‍্যাফেল ড্রতে ৯ কোটি টাকা জিতলেন দুই প্রবাসী বাংলাদেশি
৬২ জন পুলিশ সদস্য পাচ্ছেন বিপিএম ও পিপিএম পদক
সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
অন্য নারীতে মজেছেন সৃজিত! মিথিলা কোথায়?
৪ মাসে কুরআনের হাফেজ হলেন ১০ বছরের অটিস্টিক শিশু আহমাদ
রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা যেন বেহাত না হয়: আলী রীয়াজ
১৪ ব্যাংকে ২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তর, যা বললেন বিসিবি সভাপতি
কাশ্মীর সীমান্তে ফের গোলাগুলি, মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান সেনা
বাইরে থেকে ফিরেই ঠান্ডা গোসল? সাবধান! এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বিপদ
কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান-ভারত পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
রাঙামাটিতে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে রিয়াল, ফাইনাল ম্যাচ বয়কটের হুমকি
আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে ভারতের গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন, মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি
নিজ দেশেই বিমান হামলা চালালো ভারত, ‘অসাবধানতা’ বলছে বিমান বাহিনী
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে যা বললেন ডা. তাসনিম জারা