রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান

সৈকতে যেতে ভেড়ার পথ নামক একটা এলাকা পর হতে হতো। কারণ আসলেই আলজিয়ার্সের মাইসন কারি বাজারে যাওয়া আসার পথে অনেক ভেড়া ওই পথে যাতায়াত করত। আসলে সেটা ছিল একটা পার্শ্বিক রাস্তা। সমুদ্র আর শহরকে বিভাজনকারী এই রাস্তাটা এম্পিথিয়েটারের মতো পাহাড়ের দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। রাস্তা আর সমুদ্রের মাঝে ছিল কারখানা, ইটের ভাটা, গ্যাসের কারখানা; রাস্তাটা কাদামাটি কিংবা চুনাগুড়ার আস্তরণে ঢাকা বালিময় এলাকা দ্বারা বিচ্ছিন্ন ছিল অন্য সবকিছু থেকে। সেখানে লোহা আর কাঠের ছাঁট সাদায় পরিণত হতো। সাবলেতেস সৈকতে পৌঁছতে হলে ওই ঊষঢ় এলাকাটা পার হতে হতো। সৈকতের বালির মধ্যে থাকত ময়লা আবর্জনা। আর প্রথম ঢেউয়ের পানি সব সময় পরিষ্কার থাকত না। ডান দিকের গণগোসলখানায় কেবিন ছিল। রণপায়ের ওপর স্থাপিত কাঠের বাক্সের আকারের হলে ছুটির দিনে নাচার ব্যবস্থাও থাকত।

জমজমাট মৌসুমে ফ্রেঞ্চ-ফ্রাইঅলা সৈকতে স্টোভ জ্বালাত। জ্যাকদের ছোট দলের কারো কাছে বেশিরভাগ সময়ই এক ঠোঙা আলুভাজা খাওয়ার পয়সাও থাকত না। যদি কখনও তাদের কারো কাছে ভাজা কেনার পয়সা থাকত তাহলে সে ঠোঙা হাতে গম্ভীর চালে সোজা সৈকতের দিকে হাঁটা দিত। পেছনে বাকিরা তাকে সমীহের সঙ্গে অনুসরণ করত। সমুদ্রের ধারে আটকে থাকা ভাঙাচোরা পুরনো কোনো বজরার ছায়ায় পা বিছিয়ে বসে এক হাতে ঠোঙার নিচের অংশ অন্য হাতে ঠোঙার ওপরের অংশ ধরে থাকত যাতে একটা মচমচে টুকরোও যেন পড়ে না যায়। তাদের মধ্যে নিয়ম ছিল ঠোঙার মালিক সঙ্গীদের প্রত্যেককে সুগ্রাস হিসেবে একটা করে টুকরো দেবে এবং তারা শ্রদ্ধার সঙ্গে গরম গরম ওই এক টুকরো খেয়ে কড়া তেলের স্বাদে আহাউহু করে উঠবে। ঠোঙার ভাগ্যবান মালিক বাকি টুকরোগুলো আয়েশ করে খাবে এবং বাকিরা তার খাওয়া দেখবে। টুকরোগুলো শেষ হয়ে গেলে ঠোঙার তলায় পড়ে থাকা আলু ভাজার গুঁড়োগুলো খাওয়ার জন্য সঙ্গীরা পেটুক মালিকের কাছে অনুনয় বিনয় করত। ঠোঙার মালিক কিপটে জাঁ ছাড়া অন্য কেউ হলে সাধারণত ঠোঙাটা ছিড়ে ভেতরের অংশটা বাইরে এনে প্রত্যেককে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র একেকটা টুকরো খেতে দিত। তখন সবার মাঝে কাড়াকাড়ি পড়ে যেত কে আগে নেবে, কে বড় টুকরোটা নেবে।

খাওয়া-পর্ব শেষ হয়ে গেলে আনন্দ আর হতাশার কথাও তারা ভুলে যেত। এরপর সৈকতের পশ্চিম প্রান্তের দিকে দৌড় শুরু করত সবাই। পশ্চিম প্রান্তে ছিল ইটসুরকির একটা ভাঙা কাঠামো। হয়তো কোনো এক সময়কার বাংলোর ভিত্তি ছিল সেটা। ওই কাঠামোটার কাছে না পৌঁছনো পর্যন্ত তাদের দৌড় চলতেই থাকত। কাঠামোটার আড়ালে সবাই পরনের কাপড় খুলে ফেলত। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সবাই দিগম্বর হয়ে যেত। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই সবাই পানিতে নেমে আনাড়ি ভঙ্গিতে সাঁতার কাটত, চিৎকার ছুড়ে দিত, মুখ থেকে কুলি করে পানি ছিটিয়ে দিত, কে কত গভীরে ডুব দিতে পারে কিংবা কে সবচেয়ে বেশিক্ষণ পানির নিচে ডুব দিয়ে থাকতে পারে তার বাজি ধরত।

সমুদ্র শান্ত এবং উষ্ণ; তাদের ভেজা মাথার ওপরে সূর্যের হালকা আলো পড়ত আর আলোর ঔজ্জ্বল্য তাদের কচি শরীরের ওপর পড়ার ফলে থেকে থেকে আনন্দের চিৎকার ছুড়ে দিত তারা। জীবনের ওপরে এবং সমুদ্রের ওপরে তারা রাজত্ব করত তখন। অভিজাত লোকদের মতো তারা মনে করত, তাদের সম্পদের কোনো সীমা নেই। বেপরোয়ভাবে তারা পৃথিবীর এই দানের সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ উপহার উপভোগ করত।

সমুদ্র আর সৈকতের মাঝে ওঠা নামা করতে করতে তারা সময়ের কথা ভুলে যেত। বালির ওপরে উঠে আসলে তাদের শরীর আঠালো মনে হতো আর সমুদের পানিতে নেমে আবার সাদা পোশাকের মতো বালি ধুয়ে ফেলত। তারা এরপর দৌড়তে থাকত এবং দৌড়ের সঙ্গে তাদের চিৎকার আশপাশের কারখানাগুলোর মধ্যে ডুবে যেতে থাকত। তখন আকাশ ফাঁকা হয়ে যেত এবং দিনের তপ্ত হালকা কুয়াশা উঠে গেলে চারপাশ পরিষ্কার হয়ে উঠত, তারপর সবুজাভ আভা ছড়িয়ে পড়ত। আলো কমে আসলে উপসাগরের অন্য পাশটা তখনও মনে হতো কুয়াশায় ঢাকা। বাড়িঘর আর শহরের ঢালু বিস্তার আরও সুস্পষ্ট মনে হতো। তখনও দিন; তবু আফ্রিকার সংক্ষিপ্ত গোধূলির প্রস্তুতি হিসেবে বাতি জ্বালানো হতো তখনই।

সবার আগে সাধারণত পিয়েরে সংকেত দিত, দেরি হয়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যেত, যতদূর সম্ভব দ্রুত বিদায়। অন্যদের কথা মোটেও না ভেবে যোসেফ এবং জাঁর সঙ্গে বাড়ির দিকে দৌড়তে থাকত জ্যাক। সৈকতের সীমানার বাইরে না আসা পর্যন্ত তারা ঘোড়ার দুলকি দৌড়ের গতিতে চলতে থাকত। তাদের জানা ছিল, যোসেফের মায়ের হাত ভালোই চলে; জ্যাকের নানির হাতও। দ্রুত নেমে আসা রাতের মধ্যে তারা দৌড়ত। গ্যাসের প্রথম আলো জ্বলে উঠলে তাদের আত্মা চমকে উঠত। তাদের সামনে থেকে ট্রলি বাসগুলো আলো জ্বালিয়ে দূরে বিলীন হয়ে যেত। আরও দ্রুত দৌড়তে দৌড়তে তারা দেখতে পেত, রাত ইতোমধ্যে জেঁকে বসেছে। শেষে দরজার কাছে এসে জ্যাক ওদের থেকে আলাদা হয়ে যেত বিদায় না জানিয়েই।

এ রকম সব সন্ধ্যায় জ্যাক পুতিগন্ধময় সিঁড়ির কাছে এসে দেয়ালে হেলান দিয়ে খানিক দাঁড়িয়ে থাকত যাতে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক হয়ে আসে। কিন্তু অপেক্ষা করতে পারত না। আতঙ্কে বরং হৃদস্পন্দন আরও বেড়ে যেত। তিন লাফে সিঁড়ির মাঝখানে, টয়লেটের দিকে যাওয়ার দরজা দিয়ে সোজা মেঝের দিকে পা বাড়াত এবং দরজা খুলত। খাবার ঘরের কোণায় আলো জ্বলত। থালাবাসনের সঙ্গে ঘষা খাওয়া চামচের ক্যাচক্যাচানি শোনা যেত। আরও সামনে প্রবেশ করে দেখত, তার আধো বোবা মামা সশব্দে সুপ পান করে যাচ্ছে। মায়ের বয়স তখনও অল্প ছিল। ছড়িয়ে পড়া বাদামী চুলের আড়ালে মায়ের শান্ত চাহনি চোখে পড়ত। মা কথা বলা শুরু করতেন, তুই ভালো করেই জানিস....।

কিন্তু জ্যাক তখন নানির শুধু পেছন পাশটা দেখেছে যখন তিনি তার মেয়ের কথার মাঝে নিজেই কথা বলা শুরু করে দিয়েছেন। কালো পোশাকে নানির শরীর ঋজু; মুখাবয়ব কাঠিন্যে ভরা; সোজাসুজি কড়া চোখে তাকিয়ে নানি জিজ্ঞেস করতেন, কোথায় ছিলি?

–পিয়েরে আমার পাটীগণিতের বাড়ির কাজ দেখিয়ে দিচ্ছিল।

সোজা হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে নানি তার কাছে এসে জ্যাকের চুল শুঁকতেন। তারপর জ্যাকের পায়ের দিকে হাত দিয়ে দেখতেন–বালির আস্তরণে ঢাকা পড়ে আছে গোড়ালি।

–তুই সৈকতে গিয়েছিলি।

মামা কোনো রকমে বলে উঠতেন, তাহলে তুমি মিথ্যে বলছ।

জ্যাকের পিছন দিকে এগিয়ে গিয়ে নানি দরজার পেছন থেকে কড়া চাবুকটা নিয়ে আসেন। পায়ের নিচের দিকে এবং পাছায় সপাং সপাং বাড়ি মারেন গোটা চারেক। ব্যথায় চিৎকার দিয়ে ওঠে জ্যাক। একটু পরে মুখ আর গলা অশ্রুতে ভরে গেলেও মামার দয়াপরবশ হয়ে দেওয়া সুপের প্লেট সামনে নিয়ে জ্যাক আপ্রাণ চেষ্টা করে চোখ বেয়ে যেন অশ্রু না নামে। নানির দিকে এক নজর তাকিয়ে মা তার কাছে উঠে আসেন। মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে জ্যাক ভেতর থেকে অনুভব করতে থাকে, এই তার একমাত্র প্রিয় মুখ। মা বলেন, তোর সুপ খেয়ে ফেল। আর কিছু বলবে না। আর কিছু বলবে না। জ্যাক তখন সব প্রচেষ্টা ছেড়ে দিয়ে কান্নায় ভাসতে থাকত।

জ্যাক করমারি জেগে উঠেছে। ঘুলঘুলির তামার ওপরে আর সূর্যের আলো পড়ছে না। সূর্য দিগন্তে অস্ত গেছে। কেবিনের কাঠের আচ্ছাদনের ওপর আলো পড়ছে। পোশাক পরে নিয়ে জ্যাক ডেকের দিকে পা বাড়াতে থাকে। রাত শেষ হলেই আলজিয়ার্সের দেখা পাবে সে।

(চলবে)

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি