মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫ | ২৪ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা

আসিফ আহমেদ ঘুমাতে পারছেন না। তিনি কিছুতেই দুই চোখের পাতা এক করতে পারছে না। অফিসের চিন্তায় তার মাথা খারাপ অবস্থা। লোক ছাঁটাইয়ের চাপ তিনি আর নিতে পারছেন না। তার কেবলই মনে হয় কাজটা অমানবিক। এতোগুলো কর্মীকে বিদায় করে তিনি ঠ্যাং দুলিয়ে অফিস করবেন তা তার পক্ষে সম্ভব না।

অন্যের পেটে লাথি দেওয়া তার স্বভাব না। অমানবিক কাজ তাকে দিয়ে হবে না। তিনি মানুষকে চাকরি দিয়েছেন। কিন্তু কারো চাকরি খেয়েছেন তার কোনো নজির নেই। কেউ কোনো ভুল করলে, কিংবা ঠিকমতো অ্যাসাইনমেন্ট না করলে বকাবাজি করেন। রাগ করেন। কখনো কখনো কথা বলা বন্ধ রাখেন। কেউ বড় কোনো অন্যায় করলে তাকে শাস্তি হিসেবে বাধ্যতামূলক ছুটি কিংবা বড়জোর কয়েকদিনের বেতন কেটেছেন। সেটাও যে অহরহ ঘটেছে তা নয়। কেবলমাত্র নৈতিক স্খলন ছাড়া কাউকে চাকরিচ্যুত করেননি। অথচ সেই মানুষটাকেই ছাঁটাই করতে বলা হচ্ছে। কমপক্ষে একশ’ লোককে ছাঁটাই করতে হবে। তিনি নিজের অজান্তেই বলে ওঠেন, না না! এটা কী করে সম্ভব!

আসিফ আহমেদের অবস্থা দেখে তার স্ত্রী মুনমুন আহমেদ বললেন, কি হয়েছে আসিফ? ঘুম আসছে না? কেন, কি হয়েছে? তোমার তো এমন হয় না!
আসিফ শুকনো গলায় বললেন, অফিস নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।
মুনমুন আহমেদ বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, কেন কী হয়েছে?
সংবাদ-কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য ব্যাপকভাবে চাপ দিচ্ছে।
এই সময় ছাঁটাই! এটা কেমন ধরনের কথা! এখন তো মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়ায়! এ সময় কি কেউ চাকরিচ্যুত করে?
তাহলে বলো, এটা কি মানা যায়?
না না! তুমি এ কাজ কোরো না। যা হয় হবে। এটা করতে গেলে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগবে। সেটা আরো বেশি খারাপ হবে।

আসিফ আহমেদ ধরা গলায় বললেন, সকালেই আমাকে তালিকা নিয়ে যেতে বলেছে। তালিকা দিতে হবে। আর ছাঁটাইয়ে রাজি না হলে পদত্যাগপত্র দিতে হবে। এ ছাড়া আর কি করব?
সেটাই ভালো। তুমি পদত্যাগ করো। শুধু শুধু মানসিক চাপ নেওয়ার কোনো দরকার নেই। মুনমুন আহমেদ বললেন।
ধন্যবাদ মুনমুন। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। আমি তোমার কাছ থেকে এটাই প্রত্যাশা করেছিলাম। তুমি চিন্তা করো, এই মানুষগুলো দশ বছর প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছে। এখন একটা বিপদ এসেছে। প্রাকৃতিক বিপদ। এর জন্য কেউ দায়ী নয়। অথচ এর জন্য কর্মীদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হবে। এটা কী ধরনের আচরণ?
শোন, আমি তো তোমাকে চিনি। ছাঁটাই করে তুমি একদিনও অফিস করতে পারবে না। আর তোমার তো দীর্ঘ ক্যারিয়ার পড়ে আছে। তোমাকে চাকরি করেই যেতে হবে। সারাজীবন মানুষের কথা শুনতে হবে। সবাই বলবে, আপনি এতো এতো লোককে ছাঁটাই করেছেন নিজের চাকরি টেকাবার জন্য। আর যদি ছাঁটাই না করে নিজে পদত্যাগ করে চলে আসো তাহলে আর কেউ বদনাম রটাতে পারবে না।
ঠিক বলেছ। আমি নিজের জন্য আসলে কখনো ভাবিনি। সব সময় আমি কর্মীদের কথা ভেবেছি। তাদের সুযোগ-সুবিধা, পদোন্নতির কথা ভেবেছি। তুমি দেখ, বিগত আট বছরে আমার এক টাকাও বেতন বাড়েনি। অথচ পাঁচ বছর আগে একটা ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করেছি। এরমধ্যে আরেকটি ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করা হয়েছে। সেটা বাস্তবায়নের নামও নেইনি। অথচ কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এতোগুলো মানুষের অভিশাপ নিয়ে আমি অফিস করব!
বুঝতে পারছি। তুমি কোনো চিন্তা কোরো না। আমার চাকরি তো আছে! আশা করি অসুবিধা হবে না। তুমি এখন ঘুমাও।
ধন্যবাদ মুনমুন। এখন সত্যিই আমার ঘুম আসবে। আমি ঘুমাবো। নিশ্চিন্তে ঘুমাবো।

মুনমুন আসিফ আহমেদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। চুলের ভেতরে আঙুল ঢুকিয়ে বিলি কেটে দেন। এক পর্যায়ে মুনমুন তাকে জড়িয়ে ধরে। ফিসফিস করে বলেন, শান্ত হও। শান্ত হয়ে ঘুমাও। তা না হলে শরীর খারাপ করবে। মাথা থেকে চিন্তা ঝেড়ে ফেলো। সময়টা পার হোক। নিশ্চয়ই আরো ভালো কিছু তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। তোমার মন যে কাজটি করতে সায় দিচ্ছে না, সেই কাজ তুমি কেন করবে? আমি তোমায় কথা দিচ্ছি, সংসার নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি যা আয় করি তা দিয়ে খুব ভালোভাবেই আমাদের চলে যাবে।

আসিফ আহমেদ মুনমুনকে আবারও ধন্যবাদ জানালেন। সেই সঙ্গে কৃতজ্ঞতাও। এ রকম একটা জটিল সময়ে মুনমুনের এই সাপোর্ট তার দরকার ছিল। মুনমুন ঠিকই ওর মনের অবস্থা বুঝতে পেরেছে। এটাই তার সবচেয়ে ভালোলাগার একটা ব্যাপার। স্ত্রীকে স্বামীর সুবিধা-অসুবিধা বুঝতে হয়। স্বামীর সীমাবদ্ধতার জায়গাগুলো উপলব্ধি করতে হয়। একইভাবে স্ত্রীর সুবিধা-অসুবিধা কিংবা সীমাবদ্ধতা বুঝতে হয় স্বামীকে। তাহলেই একটা সুন্দর সংসার গড়ে ওঠে।

মুনমুনের সাপোর্টে আসিফ যে কতটা মানসিক শক্তি পেয়েছেন তা তিনি আজ টের পাচ্ছেন। তার মনোবল অনেকগুণ বেড়ে গেছে। তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ছাঁটাই করবেন না। তিনি পদত্যাগই করবেন। স্ত্রীকে বলে দিয়েছেন কাল যদি আবার ছাঁটাইয়ের প্রসঙ্গ তোলে তাহলে তিনি বলবেন, আমার পক্ষে ছাঁটাই করা সম্ভব নয়। আমি নিজেই চলে যাচ্ছি। বার বার মনের মধ্যে এটাই তিনি রপ্ত করছেন। আগে নিজের সঙ্গে নিজে অনেক বোঝাপড়া করেছেন। অনেক হিসাব নিকাশ করেছেন। শেষ পর্যন্ত তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন। মুনমুনও তাকে সেই পরামর্শই দিয়েছেন। শুধু পরামর্শই দেননি। তিনি পুরো সংসারের ভার নিজের কাঁধে নিয়েছেন। যতদিন আসিফের সুসময় না আসবে ততদিন সেই সংসার চালাবেন। এ নিয়ে আসিফের চিন্তা করতে হবে না। এর চেয়ে বড় স্বস্তির কথা আর কী হতে পারে!

অফিসের কথা ভাবতে ভাবতেই আসিফ ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে মোবাইলে এলার্ম বাজার শব্দ পেয়ে তিনি ঘুম থেকে লাফিয়ে ওঠেন। সকাল তখন আটটা। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি, শরীরচর্চা করে গোসলে যান। এরমধ্যে মুনমুনও ঘুম থেকে ওঠেন। গোসল সেরে তিনি নাশতা রেডি করেন। একসঙ্গে নাশতা খান। চা খেতে খেতে আবারও মুনমুন আসিফকে বললেন, চিন্তা করবে না। একদম চিন্তা করবে না। কোনো রকম মাথা গরম করবে না। ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করবে। তোমার এমডি তো আজই যেতে বলেছে?
আসিফ আহমেদ মাথা ঝাঁকিয়ে জবাব দিলেন।
মুনমুন আবারও বললেন, অফিসে যাও। যদি যাকে তুমি সরাসরিই বলবে, তুমি ছাঁটাই করবে না। তুমিই পদত্যাগ করবে। আর তোমার ব্যক্তিগত জিনিসপত্র গুছিয়ে রেখ। আসার সময় সেগুলো নিয়ে এসো। গতকাল ব্যাগে করে কি এনেছিলে?
আমার ব্যক্তগত কিছু কাগজপত্র।
হুম। তার মানে তোমার মানসিক প্রস্তুতি আগে থেকেই ছিল?
হুম।
চলো তাহলে বের হই।
হুম। চলো।
আসিফ আহমেদ ও মুনমুন একসঙ্গে অফিসের উদ্দেশে বের হলেন।

আসিফ আহমেদ এগারো বছর আগে দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা প্রথম আলো ছেড়ে নতুন উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হন। আসিফের শুভাকাঙ্ক্ষীরা তখন আপত্তি করেছিলেন। প্রতিষ্ঠিত পত্রিকা ছেড়ে কেন তিনি অনিশ্চিত একটা জায়গায় যাচ্ছেন? নতুন পত্রিকা যদি না দাঁড়ায়! যদি শুরুতেই হোঁচট খায়! তাহলে তো ক্যারিয়ারটাই শেষ!

আসিফ কারো কথায় কান দেননি। কারো পরামর্শই তিনি শোনেননি। তার নিজের কাছেই মনে হয়েছে ক্যারিয়ারের স্বার্থেই তাকে নতুন উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। নতুন জায়গায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে। নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ তৈরি হবে। কিন্তু যোগ দিয়েই তিনি একটা গোলকধাঁধাঁয় পড়ে গেলেন। শুরুর সেই সময়গুলোর কথা আজ মনে পড়ছে তার। কত ঝড়-ঝাপটা যে তাকে সইতে হয়েছে। কত রকম ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে তাকে। নানামুখি ষড়যন্ত্র। কাজ জানা লোকদের এই হলো সমস্যা। অকাজের লোকরা সব সময়ই তাদের ঈর্ষা করে। সবাই মিলে তাদের টেনে-হিঁচড়ে নামানোর চেষ্টা করে। কথায় বলে না, সব শেয়ালের এক রা। সেটাই আজ পদে পদে প্রত্যক্ষ করছেন তিনি। তিনি জানেন, তাকে ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। তাই করেছিলেন তিনি।

আসিফ এমন এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলেন যা তিনি কখনো কল্পনাও করেননি। তার কাছে মনে হয়েছে, জায়গা বড় আজব। এখানে বেশিদিন থাকলে তার ক্যারিয়ারটা শেষ হয়ে যাবে। তাই তিনি চাকরি ছেড়ে চলে যাবেন বলে মনস্থির করেন। অন্যত্র যোগ দেওয়ার কথা ভাবেন। তিনি তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের বলেছেনও সে কথা। শুভাকাঙ্ক্ষীরাও তার জন্য চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ভালো কোনো সুযোগ তৈরি হয়নি। তিনিও তখন মাটি কামড়ে পড়ে থাকার মতো পড়ে ছিলেন। কখনো কখনো চোখের পানি ফেলেছেন। কত ধৈর্য ধরবেন? ধৈর্যেরও তো একটা সীমা আছে! সেই কঠিন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করে। আসিফও মনকে বোঝান, দেখলে তো সবুরে মেওয়া ফলে! ঘুরেফিরে সেই তো তোমার কাছেই দায়িত্ব এলো! কাজ করে যাও। তুমি জানো, তোমার চারপাশে শত্রু। তারা সর্বত্র কাঁটা বিছিয়ে রেখেছে। তোমাকে খুব সাবধানে, দেখেশুনে পদ চলতে হবে।

আসিফ সব সময় একটা ভরসাই করেছেন যে, তার ওপর মা বাবার দোয়া আছে। কাজেই কেউ তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। বাস্তবে সেটাই হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা সব রকম চেষ্টা করেও আসিফকে তার অবস্থান থেকে সরাতে পারেনি। কিন্তু আজকে যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে সেটা তিনি কীভাবে মোকাবিলা করবেন? এটা একটা নীতি-নৈতিকতার প্রশ্ন, মানবিকতার প্রশ্ন। মনুষ্যত্বের প্রশ্ন। নিজের নীতি-নৈতিকতা জলাঞ্জলি দিয়ে তিনি সম্পাদকের পদ আকড়ে থাকবেন? এতোদিন তিনি প্রতিষ্ঠানের একটি বটবৃক্ষের মতো ছিল। সবাইকে তিনি ছায়া দিয়ে রেখেছেন। সেই ছায়াটা না দিতে পারলে তার থাকার কী মূল্য! তা ছাড়া মিডিয়াতে আসিফের একটা সুনাম আছে। সাংবাদিক-কর্মীবান্ধব সম্পাদক, আপাদমস্তক পেশাদার সম্পাদক বলে সবাই মনে করে। সেই ভাবমূর্তি মুহূর্তের মধ্যে ধুলোয় মিশে যাবে। সবাই ছি ছি করবে। সম্পাদক হিসেবে যতটুকু সুনাম অর্জন করেছিলেন তার চেয়ে দুর্নাম হবে অনেক বেশি। ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত পর্বে এসে আপোস করবেন? একটা অশুভ, অসুর শক্তির সঙ্গে আপোস করবেন! যদিও সময়টা খুব খারাপ। চাকরি ছাড়ার জন্য তো আরো খারাপ! যে সময় মানুষ ছাঁটাই হচ্ছে সে সময় চাকরি ছাড়বেন!

আসিফ বারবার নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করেছেন। নিজের মনকে বারবার প্রশ্ন করেছেন যে তিনি ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কি না! একবার নয়, দুইবার নয়। তিনি বারবার ভেবেছেন। শেষমেষ তিনি স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, পদত্যাগই তার একমাত্র সমাধান। এর বিকল্প হচ্ছে ছাঁটাই। জীবনের মধ্য গগনে এসে ছাঁটাই করে তিনি কলঙ্কের বোঝা নিজের মাথায় নেবেন না।
অতঃপর আসিফ অফিসে বসে চেয়ারম্যান বরাবর একটি পদত্যাগপত্র লিখলেন।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

Header Ad
Header Ad

সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বিজিবির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বিজিবির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গায় সীমান্ত এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবির আয়োজনে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় দর্শনা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার শুরুতে বিজিবি চুয়াডাঙ্গা ৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান উপস্থিত সকলের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সীমান্ত এলাকায় বসবাস কারী জনসাধারণের জীবনযাত্রা মান উন্নয়ন, অবৈধ কর্মকাণ্ড ও সীমান্ত অতিক্রম রোধ, আন্ত সীমান্ত অপরাধ দমন এবং আঞ্চলিক উন্নয়নে অবদান রাখার বিষয়ে মতবিনিময় সভা আরম্ভ করেন।

পরবর্তীতে সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি এর ভূমিকা, চোরাচালান প্রতিরোধ কর্মকাণ্ডে সম্মিলিত প্রয়াস, সীমান্ত এলাকার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা, সীমান্ত উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় সম্মিলিত প্রয়াস, অর্থ সামাজিক উন্নয়নের সম্মিলিত প্রয়াস, সমস্যা চিহ্নিতকরণ, সম্ভাব্য সমাধান ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা, কারিগরি ও কর্মমুক্তি প্রশিক্ষণ, কৃষি ও পশু পালন খাতে সহায়তা, নারী উন্নয়ন কর্মসূচি, বেসরকারি সংস্থা ও কর্পোরেটর সংযোগ ইত্যাদি বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন। শেষে উপস্থিত- দামুড়হুদা ইউএনও, এসিল্যান্ড, ওসি সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকদের মাঝে পয়েন্ট আহ্বান করেন।

সীমান্ত এলাকায় বাল্যবিবাহ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দমন করা, মহিলা বিষয়ক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা, ইভটিজিংয়ের পরিমাণ বর্তমানে একটু কম যাতে না বাড়তে পারে সেদিকে সর্বপ্রকার সম্মিলিত প্রচেষ্টা, মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বপ্রকার তথ্য দিয়ে সকল প্রশাসনকে সহযোগিতা করা, এছাড়াও যেকোনো প্রকার অসঙ্গতিপূর্ণ কাজের তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে সহায়তা করা। সীমান্তবর্তী এলাকায় সকল প্রকার অটো বাইক, অটো ভ্যান পৌরসভার মাধ্যমে লাইসেন্স কার্ড করা যাতে তার নাম ঠিকানা সকল তথ্য থাকে এবং যে কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশির জন্য ডাকলে সহজে তারা এগিয়ে আসে এবং নাম পরিচয় সহজে যাতে পাওয়া যায়।

মাদক ব্যবসায়ীদের ধর্মীয় ভয়-ভীতি দেখানো, মাদক ব্যবসায়ীরা অভিনব কায়দায় ছোট ছেলেমেয়েদের বাহক হিসেবে ব্যবহার করছেন, শিক্ষকদের মাধ্যমে জনশ্বাসনতা বৃদ্ধি করা, জনসংযোগ বৃদ্ধি করা, মাদক ব্যবসায়ীদের মূল গডফাদারকে ধরার ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সচেতন ব্যক্তিবর্গ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মাদক প্রতিরোধ করা, প্রতিপক্ষ ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী নাগরিকদের সাথে কি ধরনের আচরণ করেন সেই সম্পর্কে ধারণা গ্রহণ করা, কুরআন ও হাদিসের আলোকে সীমান্ত পাহারায় সুফল সম্পর্কে, মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী পরকালে তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানানো, ১৬ বছরের নিচে প্রকাশ্যে বিড়ি-সিগারেট সেবনকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা, মাদকসহ বিভিন্ন চোরাকারবারিদের অন্য কোন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) দর্শনা চেকপোস্ট এবং মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) এর নিমতলা বিওপির মধ্যবর্তী স্থানে বিজিবি চেক পোস্ট বসানো, দর্শনা কেউ কোম্পানি হতে মদ চোরাকারবারিরা যাহাতে নিতে না পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে মাদক এর কুফল সম্পর্কে জনসাধারণ এর মাঝে জানানো, মাদক ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বাড়িতে গিয়ে ভয়-ভীতি দেখানো, ১৫ হতে ১৬ বছরের ছেলে মেয়ে মাদক ব্যবসায়ী এবং ইভটিজিং এর সাথে জড়িত হচ্ছে তাদের প্রতি নজরদারি বৃদ্ধি করা, বাল্য বিবাহের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এছাড়াও দৃশ্যমান শাস্তি প্রদান করা, স্বর্ণ এবং রূপ্য চোরাকারবারিদের গডফাদার দের চিহ্নিত করা, দারিদ্র বিমোচনের জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে দক্ষ করে গড়ে তোলা, সীমান্তবর্তী এলাকায় বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে মাদকসহ বিভিন্ন চোরাকারবারি নির্মূলে কমিটি গঠন করা, মাঝে মাঝে এ ধরনের সেমিনার মত বিনিময় সবার আয়োজন করা, সীমান্ত এলাকায় এনজিওদের মাধ্যমে উন্নয়নমূলক প্রোগ্রাম ও সেমিনারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা, বিভিন্ন চোরাকারবারিদের ব্যবসা পরিচালনাকারীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সীমান্ত এলাকায় দেড়শো গজের মধ্যে তিন ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ফসল আবাদ না করা এবং ভারতের ১৫০ গজ সীমান্ত এলাকায় কলাগাছের বাগান তৈরিতে বাধা দেওয়া যাতে চোরাকারবারিরা ব্যবহার করতে না পারে- এই বিষয়গুলো মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সুধীজনের আলোচনায় উঠে আসে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা ইউএনও তিথী মিত্র, চুয়াডাঙ্গা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আজিজুর রহমান, এসি ল্যান্ড তাসফিকুর রহমান, বিজিবি ৬ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক হায়দার আলী, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর, বিজিবির দর্শনা আইসিপি কমান্ডার জাকির হোসেন প্রমুখ।

এ ছাড়াও মসজিদের ইমাম, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক, এনজিও কর্মী এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানালো বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত গণহত্যা ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার (৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েলকে অবিলম্বে সব সামরিক অভিযান বন্ধ ও সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করতে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন মেনে চলার দাবি জানিয়েছে।’’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে,নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘‘জাতিগত নির্মূল’’ অভিযান চালানোর জন্য গাজার ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বিমান থেকে নির্বিচার বোমাবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে বাংলাদেশ।

গত মাসে একতরফা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে ইসরায়েলের চলমান হামলায় বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া গাজায় মানবিক সহায়তা ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে, যা ওই অঞ্চলটিকে মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েলের প্রতি বারবার আহ্বান জানানো হলেও তারা এতে কোনো গুরুত্বই দেয়নি; বরং তারা ক্রমবর্ধমান হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘের কাছে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের জন্য তাৎক্ষণিক ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষা ও অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য সেখানে সব ধরনের যুদ্ধবিরতি বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফিলিস্তিনি জনগণের সব ন্যায্য অধিকার, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের আগের সীমান্তের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।

বাংলাদেশ সরকার মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় আলোচনার প্রয়োজনীয়তার বিষয় পুনর্ব্যক্ত করে বিবৃতিতে বলেছে, এটা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংসতা ও তাদের দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে কূটনীতি ও সংলাপের পথে নিজেদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের জন্য ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে ফিলিস্তিনের সমস্যার দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি বাংলাদেশ তার আহ্বানে অবিচল ও দ্ব্যর্থহীন।

Header Ad
Header Ad

সতর্কতার মাত্রা বাড়াল ইরান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে প্রকাশ্য হুমকি

ছবি: সংগৃহীত

ইরান তার নিরাপত্তা সতর্কতার স্তর সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদপত্র ইয়েদিওথ আহরোনোথ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি নিশ্চিত করেছেন, দেশটির সেনাবাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।

এক বিবৃতিতে, পরিস্থিতির গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে ‘বহিরাগত হুমকির’ সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কেও সতর্ক করেছেন খামেনি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের প্রতি হুমকির পাশাপাশি ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, তুরস্ক এবং বাহরাইনের মতো নিজের প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতিও সরাসরি সতর্কবার্তা জারি করেছে ইরান।

তেহরানের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, আকাশসীমা বা আঞ্চলিক ক্ষেত্র ব্যবহারসহ ইরানের মাটিতে আক্রমণ শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্রকে যেকোনো সহায়তা দেয়া হলে তা একটি ‘শত্রুতাপূর্ণ কাজ’ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সেই দেশগুলোকে ‘আক্রমণের তালিকায়’ রাখবে ইরান।

অঞ্চলটিতে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই এমন বার্তা দিলো তেহরান, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে সম্ভাব্য যেকোনো সংঘাতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় বিজিবির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানালো বাংলাদেশ
সতর্কতার মাত্রা বাড়াল ইরান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে প্রকাশ্য হুমকি
সাবেক নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ভারত থেকে ৪০টি রেফ্রিজারেটেড মিল্ক ভ্যান আমদানি করছে সেনাবাহিনী
ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল: ৫ বাংলাদেশিসহ ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্র
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ: পাঁচ জেলায় বাটা-কেএফসিতে হামলা-ভাঙচুর
ঈদের ছুটি শেষে দর্শনা বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু
নওগাঁয় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ
লাঠিপেটা না করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ, রাষ্ট্রপতি পদক পাচ্ছেন সেই পুলিশ কনস্টেবল
ইন্ডিয়ান আইডলের শিরোপা জিতলেন কলকাতার মানসী ঘোষ
প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা পেলেন বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী
নতুন শুল্ক প্রস্তাব স্থগিত করতে ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি
ঢাকায় মার্কিন নাগরিকদের জন্য চলাচলে সতর্কতা জারি
ইসরায়েলি বর্বরতা ও গণহত্যার নিন্দা জানালো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অন্নপূর্ণা–১ জয় করলেন বাবর আলী
বৈশাখে যারা ইলিশ কিনে খাবেন তারা আইনের লঙ্ঘন করবেন: উপদেষ্টা ফরিদা
ঢাকা-রংপুর ৪ লেন প্রকল্পে পলাশবাড়ীতে এক জমি দুইবার বিক্রি, গাইবান্ধা ডিসি অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ১৫ কোটি টাকার অধিক লুটপাটের চেষ্টা
ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ানোয় ভারতে বিদ্যুৎ বিভাগের 'মুসলিম কর্মী' বরখাস্ত
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বেনাপোল ও শার্শায় বিক্ষোভ মিছিল