রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২   

ভোর বেলা আমাদের মরুযাত্রার কথা। যে দেশের পঁচানব্বই শতাংশ এলাকাই মরুভূমি সেই দেশে ঘুরতে এসে প্রকৃত মরু অঞ্চল সফর না করে ফিরে যাওয়া মানে মিশর ভ্রমণ অসম্পূর্ণ রেখে যাওয়া। আমাদের গন্তব্য আল ফাইয়ুম। কায়রো থেকে আশি মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে মরুদ্যান নগরী ফাইয়ুম একই নামের এই প্রশাসনিক এলাকার রাজধানী।

মরু অঞ্চল হলেও আল ফাইয়ুমের বিস্তৃত এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে আছে হ্রদ-নদী-খাল, এমন কি জলপ্রপাতসহ নানা ধরনের জলাধার। ফলে প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই আল ফাইয়ুম তুলা, গম, ভুট্টা, আখসহ ফুল, ফসল আর উট, দুম্বা, ভেড়া জাতীয় প্রাণিজ সম্পদের সমৃদ্ধ ভাণ্ডার। আমরা মরুদ্যানে গড়ে ওঠা শহরে নয়, যেতে চাই প্রকৃত মরুভূমিতে।

         বালি ও পাথরের ওপারের হ্রদ

আমাদের পথপ্রদর্শক হিসাবে মোহামেদ সাদেক বাহন এবং চালকসহ সাত সকালে এসে হাজির।     
রানা ভাই গাড়িতে উঠেই বললেন টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার মরুভূমিতে চলাচলের জন্য যথোপোযুক্ত বাহন। এ ছাড়াও ফোর হুইল, হর্স পাওয়ার এবং ইঞ্জিন সম্পর্কিত আরো কিছু তথ্য দিয়েছিলেন রানা ভাই, গাড়ি সম্পর্কে আমার জানাশোনা একেবারেই মূর্খের পর্যায়ে বলে কিছুই আমার মনে নেই। শুধু বাহন নয়, মোহামেদ সাদেক বাহনের চালক বাসুনির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়, ‘হি ইজ আ ডেজার্ট ডেভিল!’ সুদর্শন শশ্রুমণ্ডিড দীর্ঘদেহী তরুণ গাড়িচালক বাসুনি কোনো ধরনের শয়তান, সে পরিচয় পেয়েছিলাম দিকচিহ্নহীন ধুসর মরুভূমির একেবারে ভেতরে ঢুকে পড়ার পরে। তবে তখন শুধুই দাঁতে দাঁত চেপে ইস্ট নাম জপতে জপতে বালিয়াড়ির মধ্যে টিলা টপকে আবার বালির সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে পড়া ছাড়া কোনো গত্যান্তর ছিল না।  

         সাদেক, বাসুনি, রানাভাই ও হেনা

শহর থেকে বেরোতে ট্রাফিক জ্যামের কারণে আমাদের বেশ কিছুটা সময় নষ্ট হলো। তবে আমাদের উল্টো দিকে শহরের প্রবেশ পথের দিকে গাড়িগুলো সারি সারি পিঁপড়ার মতো ধীর গতিতে এগুচ্ছে দেখে সান্তনা পেলাম, আমরা ওদের চেয়ে দ্রুত এগুচ্ছি। দু পাশের অসংখ্য নতুন স্থাপনার কাজ চলছে। হাজার হাজার রংচটা অসমাপ্ত অর্ধসমাপ্ত বাড়ি আর ধূলি মলিন ভবনের দৃশ্য দেখতে দেখতে তিন চার কিলোমিটার পথ এগোবার পরে যানজট কমে এলো। আমরা ততোক্ষণে গিজার কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।

         আল ফাইয়ুমের জনপদ   

গিজার দুটো পিরামিড হাতের বামে রেখে শহর থেকে বেরিয়ে যাবার পরপরই সাদেক গাড়ির সিডি প্লেয়ারে আরবি গান চালিয়ে দিল। রানা ভাই বললেন এটা তো মনে হচ্ছে উম্মে কুলসুমের কণ্ঠ নয়। আরব বিশ্বের সঙ্গীত সম্রাজ্ঞী মিশরের উম্মে কুলথুম, যাকে আমরা উম্মে কুলসুম নামেই জানি, তিনি চার দশকের বেশি সময় তাঁর গানে মাতিয়ে রেখেছিলেন সমগ্র আরব দুনিয়া। আমরা ভাষা না জেনেও তাঁর গানের সঙ্গে, অসাধারণ কণ্ঠের সুর মূর্ছনার সঙ্গে পরিচিত। তাই প্রথমেই যে নামটি মনে আসে সেটি উম্মে কুলথুম। মোহামেদ সাদেক জানালো, ‘ইনি ফাইরুজ! লেবাননের সবচেয়ে জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী ফিরুজ ফাইরুজ। তবে শুধু লেবানন নয়, সারা আরব দুনিয়া তাঁর কণ্ঠের গানে মাতোয়ারা।’ ফাইরুজ জন্মেছেন উন্মে কুলথুমের চল্লিশ বছর পরে,স্বাভাভিক ভাবেই আধুনিক যন্ত্র অনুসঙ্গ এবং প্রকৌশলগত উৎকর্ষ তাঁর গানে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ফাইরুজের কণ্ঠের সুর মাধুর্যে দ্রুত গতিতে ছুটতে থাকা আমাদের বাহন যেনো প্রতি মুহূর্তে ছন্দের দোলায় দুলতে থাকে। ফাইরুজের কণ্ঠ ছাড়াও আরবি গানের বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রেখে ইন্টরল্যুডে সুর ছড়ায় নে নামের বাঁশি কিংবা ওউদ নামের গিটার। অনেকটা সময় ধরে আমরা ফ্ইারুজের গানে মগ্ন থাকি।  

        কারুন পেরিয়ে চেকপোস্ট

ঘণ্টাখানেক পরে সেনাবাহিনির একটি গ্যাস স্টেশনে প্রথম যাত্রা বিরতি। মরু প্রান্তরে পেট্রোল পাম্পের সঙ্গে গোলাপি টালিতে ছাওয়া একটি ছোট্ট রিসোর্ট তৈরি করে নিয়েছেন সেনাকর্তারা। যে দেশের প্রেসিডেন্ট সেনাবাহিনির সাবেক জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ এল সিসি সে দেশে মরুভূমিতে সেনা কর্মকর্তাদের বিশ্রামে জন্য একটা রিসোর্ট তো থাকতেই পারে। তবে সদাশয় সেনাবাহিনি সাধারণ মানুষের জন্য গাড়ির জ্বালানি নেওয়ার পাশাপাশি চা পানির ব্যবস্থাও রেখেছে। আমরা গাড়ি থেকে নেমে চা কফি কেক বিস্কিটের কিয়স্ক ‘স্মাইল মার্কেট’এ ঢুকে পড়ি। জলযোগ না হলেও জল বিয়োগের জন্যে এখানে থামাটা দরকার ছিল। ‘স্মাইল মার্কেট’এর টয়লেটে ঢুকে এর করুণ দশা দেখে অবশ্য মনে হলো, প্রক্ষালণ কক্ষের উপর সেনাবাহিনির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। নাক চেপে প্রক্ষালণ শেষে আমরা কফির কাপ হাতে একটু বাইরে ঘুরে এলাম। গ্যাস স্টেশনের ভেতরে এবং আশেপাশে কিছু গাছ লাগিয়ে সেগুলো বাঁচিয়ে রাখার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা চলছে এখানে। মরুভূমিতে একটু সবুজের ছোঁয়া দেখে ভালো লাগলো। আমাদের চারপাশে এতো সবুজ, আমরা তাই গাছপালা সংরক্ষণের ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারি না। 

       কারুন লেকের এক প্রান্ত

দুপাশে ছোট ছোট বালির পাহাড় এবং মাঝখানে সরু এক চিলতে পথ দিয়ে ল্যান্ডক্রুজার এগোতে শুরু করলে বুঝলাম ক্রমেই আমরা গভীর মরুভূমির ভেতরে ঢুকে পড়ছি। ছোট বালির পাহাড়গুলো মাঝে মাঝেই বড় হয়ে যায়, বিশাল বালির স্তুপ কখনো কাছে এগিয়ে আসে আবার কখনো দূরে সরে যায়। যতো দূরে চোখ যায় সারি সারি হলদে বাদামি রঙের বালির টিলা চোখে পড়ে। কোথাও কোথাও এইসব বালির সমুদ্রে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে সবুজ ঝোপঝাড়, লতাগুল্ম। তবে এই বিশাল বালুর পৃথিবীতে সবুজের দেখা নেই বললেই চলে, বরং মাঝে মাঝে ধূসর পাথরের ঢিপি কিংবা নুড়ি পাথরের মতো স্তূপ অনেকটা সময় ধরে আমাদের সাথে সাথে চলতে থাকে। সাদেকের ভাষ্যমতে এইসব পাথর প্রধানত লাইম স্টোন। পথের পাশের সারি সারি বালির ঢিপি এবং দূরের বালির পাহাড় হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে গেলে দিগন্ত বিস্তৃত বালির সমুদ্রের ওপারে নীল জলের আভাস পাওয়া যায়। আমার মনে হয়েছিল একি মরিচিকা! রানা ভাই বললেন, ‘এখানে লেক কারুনসহ আরও অনেকগুলো লেক আমাদের পথে পড়বে। কাজেই দূরে যা দেখা যাচ্ছে সেটি সত্যি কোনো একটি জলাধার। মোহামেদ সাদেক জানালো, ’এই পুরো আল ফ্ইায়ুম এলাকাটাই এক সময় কোনো সাগর বা মহাসাগরের অংশ ছিল। তার প্রমাণ তোমরা নিজের চোখেই দেখতে পাবে।’

বালিতে নুড়ি পাথর ছড়ানো যে পথ ধরে এতোক্ষণ চলছিলাম সেটি প্রচলিত ধারণার পাকা রাস্তা না হলেও যথেষ্ট মসৃণ। হঠাৎ করে বাসুনি জোরে স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে তার গাড়ি রাস্তা থেকে ডান দিকে বালির সমুদ্রে তুলে নিয়ে এলো। উঁচু নিচু বালুর তরঙ্গমালায় ঢেউ তুলে এবং এই সাথে আমাদের সারা শরীরে খানিকটা ঝাঁকুনি ছড়িয়ে একটু পরেই থেমে গেল ল্যান্ডক্রুজার। পা রাখলাম মরুময় বালির চত্বরে। জনমানবহীন এই বিশাল প্রান্তরে প্রবহমান বাতাসের মৃদু সির সির শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যায় না। আমরা নিচে নেমে পাথরের টুকরো ছড়ানো হলদে বাদামি বালির সমুদ্র থেকে মুঠো ভরে বালি তুলে নিয়ে অবাক হয়ে দেখি বালির ভেতরে ঝিনুক বা শামুকের খোলের ছোট ছোট ভঙুর অংশ। সাদেক দুই একটি শক্ত পাথরের টুকরো আমাদের হাতে দিয়ে বলে, ‘এই যে দেখো, এটা হয়তো কোনো সামুদ্রিক প্রাণির দাঁত!’ আমাদের অবিশ্বাসের চোখে তাকাতে দেখে সে আবার বলে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক তিমির কঙ্কাল দেখাতে নিয়ে যাবো। ঘণ্টা খানেকের পথ।’

           কারুন হ্রদ

আমরা ল্যান্ডকুজারকে পেছনে রেখে স্তরে স্তরে সাজানো একটি লাইমস্টোনের স্তূপ পার হয়ে সামনে এগিয়ে দেখতে পাই মরুভূমির প্রান্তে বিস্তৃত নীল জলের এক বিশাল হ্রদ। জলাধারের কাছাকাছি দুই একটি সবুজ ঝোপ ঝাড় দেখা গেলেও মনে হয় হ্রদের ওপারে রীতিমতো সবুজের সমারোহ। ফসলের মাঠ নাকি বনভূমি, হয়তো আমাদের দৃষ্টি বিভ্রমও হতে পারে। তবে খুব বেশি সময় এ হলদে বালিয়াড়ি ও নীল জলের সৌন্দর্য উপভোগের সময় ছিল না। আমরা গাড়ির কাছে ফিরে এসে মরুভ্রমণ স্মরণীয় করে রাখতে কয়েকটি ছবি তুলে সামনের দিকে যাত্রা শুরু করি।
কুড়ি পঁচিশ মিনিট চলার পরে হাতের বাঁ দিকে পথের পাশের ছোট বড় পাহাড় উধাও হয়ে গেল। এখানে বালির স্তর ধীরে ধীরে ঢালু হয়ে সমুদ্রের তটরেখোর মতো একটি বিশাল লেকের পানিতে মিশে গেছে। মোহামেদ সাদেক বলে উঠলো, ‘এই হচ্ছে লেক কারুন!’  কারুনের ধন বলে কথিত গল্পে যে অবিশ্বাসীর ধন সম্পদ এক সময় বিশাল হ্রদে তলিয়ে গিয়েছিল এই সেই কারুন হ্রদ! স্মরণাতীত কাল থেকেই মিশরের ইতিহাস, বিশ্বাস ও গল্পগাথার সাথে লেক কারুনের নামটি জড়িয়ে আছে। ধারণা করা হয়, অতীতে আল ফাইয়ুম প্রদেশের পুরো এলাকা জুড়েই ছিল মিঠা পানির জলাধার কারুন হ্রদ। বর্তমানে কম করে হলেও তিপান্ন হাজার একর জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে লেক কারুন, তবে এখন আর সুপেয় নয় এই হ্রদ, বেশির ভাগই লবনাক্ত পানির আধার। তবে মাছসহ জলজ প্রাণির বসবাসও আছে এখানে। 

কোরানে বর্ণিত কাহিনি অনুসারে মুসা আলাইহেসালামের সমসাময়িক কারুন নামের এক সম্পদশালী ব্যক্তির পাপের শাস্তি স্বরূপ তার প্রাসাদ এবং ধন সম্পদ প্লাবিত হয়ে এই বিশাল হ্রদে তলিয়ে গিয়েছিল। স্থানীয় মৎসজীবী এবং লেকের আশেপাশের মানুষের অনেকেই বিশ্বাস করে কারুনের ধন এখনো মৎস কন্যাদের পাহারায় হ্রদের তলায় গচ্ছিত আছে। গত কয়েকশ বছরে অগণিত লোভী লুটেরা মানুষ কারুনের গভীর জলে সোনা দানা হাতড়ে ফিরেছে, কিন্তু কেউই যে শেষ পর্যন্ত কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি সে কথা সবারই জানা। বছর কুড়ি আগে একবার রটে গিয়েছিল, কারুনের বিপুল ধন সম্পদ গভীর জলের তলদেশ থেকে তুলে আনতে হলে হ্রদের তীরে একশ শিশু কোরবানি দিতে হবে। উদ্বিগ্ন বাবা মায়েরা ছেলে মেয়েদের অনেকদিন স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়ে ঘরের ভেতরে আটকে রেখেছেন। এই গুজব বন্ধ করতে সরকারকে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাতে হয়েছিল। শুধু বাংলাদেশে নয়, অন্ধবিশ্বাসী মূর্খদের বসবাস এখনো সারা পৃথিবী জুড়েই আছে।   

     মরুভূমিতে গ্যাস স্টেশন

দীর্ঘ বিস্তৃত কারুন লেকের পাড়ে কোখাও জন্মেছে জলজ উদ্ভিদ, আবার ভেতরেও কোথাও কোথাও জেগে উঠেছে দ্বীপভূমি। এ সব ছোট্ট দ্বীপেও গাছপালা জন্মে। মরুভূমির ভেতরেও বালুময় ধু ধু প্রান্তর, পাথর, পানি ও প্রকৃতির এই রূপ বৈচিত্র্য আল ফাইয়ুমে না এলে কখনোই জানা হতো না। আমরা হ্রদের পাড়ে দাঁড়িয়ে কারুন হ্রদ্র নিয়ে পবিত্র গ্রন্থের বয়ান আর প্রচলিত বিশ্বাসের গল্প শুনে কিছুটা সময় কাটিয়ে আবার গাড়িতে উঠে পড়ি। আমাদের সামনের প্রকৃতি হলদে বাদামি এবং ধূসর থেকে রং বদলে সবুজ হতে থাকে। পথের দুপাশে খেজুর গাছের সারি ছাড়াও দেখা দেয় ফসলের ক্ষেত। একটি দুটি মাটির তৈরি মরু আবাস পেরিয়ে চোখে পড়ে এক সারি তাঁবু। কিছুক্ষণের মধ্যেই  একটা চেকপোস্টে এসে বাসুনি গাড়ি থামিয়ে দেয়। সেনাবাহিনির সশস্ত্র পোশাকধারীরে সাথে মোহামেদ সাদেকের কথপোকথন বুঝতে পারি না, তবে জনপ্রতি পাঁচ ঈজিপ্টশিয়ান পাউন্ড দিয়ে প্রবেশপত্র সংগ্রহের ব্যাপারটা বুঝতে অসুবিধা হয় না। 

চেকপোস্ট পার হয়ে যাবার পর থেকেই পথের দুপাশে ফসলের মাঠ, সবুজ গাছপালা এবং বাড়িঘরের সংখ্যা বেড়ে যায়। আমরা মরুভূমির ভেতরেই একটি নাগরিক জনপদের দিকে এগোতে থাকি। নুড়ি পাথর ছড়ানো পথের পরিবর্তে মসৃণ পিচঢালা পথে উঠে ছুটতে থাকে ল্যান্ডক্রুজার। কিছু পরে সবুজ বেস্টনীর ওপারে আধুনিক বসতবাড়ির ফাঁকে উঁকি দেয় একটি মসজিদের মিনার। 

চলবে...  

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র হজ ফ্লাইট শুরু আগামী মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল)। ওই দিন ৪১৯ জন সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। হজের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

চলতি বছর ৮৭ হাজার ১০০ জন পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন হজযাত্রী সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮১ হাজার ৯০০ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন।

প্রথম ফ্লাইটটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। হজ ব্যবস্থাপনাকে নির্বিঘ্ন করতে সরকারি পর্যায়ে ১১২ জন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১ হাজার ৭৪৩ জন গাইড দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি ৭০ জন মোয়াল্লেম হজযাত্রীদের সার্বিক সহায়তা করবেন।

হজযাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ তিনটি এয়ারলাইনস। ৩১ মে পর্যন্ত হজের ফ্লাইট চলবে। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন এবং শেষ হবে ১০ জুলাই।

পবিত্র হজ উপলক্ষে এ বছর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালনা করবে ১১৮টি, সাউদিয়া ৮০টি এবং নাস এয়ারলাইনস ৩৪টি ফ্লাইট।

হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা, যা ৯ জিলহজ মসজিদে নামিরা থেকে প্রদান করা হয়। এবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে হজের খুতবা, এবং তাৎক্ষণিক অনুবাদ করা হবে ২০টি ভাষায়। 

যেসব ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করা হবে সেগুলো হলো- বাংলা, ফরাসি (ফ্রেঞ্চ), মালয়, উর্দু, ফারসি, চাইনিজ, তুর্কি, রাশিয়ান, হাউসা, ইংরেজি, সুইডিশ, স্প্যানিশ, সোয়াহিলি, আমহারিক, ইতালিয়ান, পর্তুগিজ, বসনিয়ান, মালায়লাম, ফিলিপিনো এবং জার্মান। 

উল্লেখ্য, ১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ৫ জুন) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহিদ রাজিতে ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন। আহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে হরমুজগান প্রদেশের রাজধানী বন্দর আব্বাসের কাছে অবস্থিত এই বন্দরে ঘটে বিপর্যয়টি।

ইরানের জরুরি সেবাবিভাগের মুখপাত্র বাবাক ইয়াকতেপেরেস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার তৎপরতা চলছে, তবে বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মুখপাত্র হোসেন জাফারি জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে নাশকতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বার্তাসংস্থা আইএলএনএ-কে জানান, একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থ থেকেই এই বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয়। তিনি বলেন, “বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তবে সেগুলোতে কান না দিয়ে সরকারি তথ্যের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।”

সরকারি বার্তাসংস্থা ফার্স নিউজ জানিয়েছে, ছোট পরিসরে আগুন লাগার পর তা দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত গরম এবং পরিবেশে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুনের তীব্রতা দ্রুত বেড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শক্তি এতটাই প্রবল ছিল যে ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনারগুলোর মধ্যে সালফারজাতীয় রাসায়নিক থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যদিও কনটেইনারগুলোর সুনির্দিষ্ট উপাদান এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

সরকারি বার্তাসংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, শহিদ রাজি বন্দরটি ইরানের সবচেয়ে আধুনিক সামুদ্রিক বন্দরগুলোর একটি। এটি হরমুজ প্রণালির উত্তরে, বন্দর আব্বাস থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এই প্রণালি দিয়েই বিশ্বের মোট উৎপাদিত তেলের পাঁচ ভাগের এক ভাগ পরিবহন করা হয়, ফলে এ বন্দরের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Header Ad
Header Ad

ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

প্রতীকী ছবি

জুলাই আন্দোলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার জসিম উদ্দিনের মেয়ে লামিয়ার (১৭) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেকের ৬নং রোডের ভাড়া বাসা থেকে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এই কলেজছাত্রীর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দুমকিতে। তিনি গত ১৮ মার্চ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন।

‎প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তার। শনিবার মার্কেট থেকে কিছু কাপড়ও কিনেছেন। রাত আটটায় নিহতের মা ছোট মেয়েকে বাসার পাশেই মাদরাসায় দিয়ে আসতে যান। সেই সুযোগে রাত নয়টার দিকে রুমের ভেতর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন লামিয়া।

এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান।

‎নিহতের মামা সাইফুল ইসলাম জানান, আমি দোকানে বসা ছিলাম। হঠাৎ ফোনে জানতে পারি, আমার ভাগনি মারা গেছে। আমি দৌঁড়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাগনির মরদেহ হাসপাতালে পড়ে আছে। জুলাই আন্দোলনে আমার বোন স্বামীহারা হলো। এখন মেয়েকে হারিয়েছে। এখন আমার ভাগনি চলে গেছে। আমরা কার কাছে বিচার চাইব। কে বিচার করবে আমাদের।

নিহত কলেজছাত্রীর চাচা বলেন, শনিবার রাত ১১টার দিকে তার ভাতিজির আত্মহত্যার খবর পান তিনি। এরপর তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান।

আদাবর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল চন্দ্র ধর বলেন, শেখেরটেকের একটি বাসা থেকে ওই কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তার মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যাজনিত। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে। পুলিশ পুরো ঘটনাটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা জানিয়েছিলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে তার স্বামী গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার শহীদ স্বামীকে দুমকি উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

ভুক্তভোগীর মা বলেন, ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তার কলেজ শিক্ষার্থী মেয়ে। ধর্ষণের সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা তার নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলেন। এরপর ভুক্তভোগী তার মা ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ২০ মার্চ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। সন্ধ্যায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু হয়।

মামলার এজাহারে উপজেলার একটি ইউনিয়নের দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলা হওয়ার দিন রাতে এজাহারভুক্ত ১৭ বছর বয়সী কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ২১ মার্চ অন্য আসামিকে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে তাদের যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।

জানা যায়, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শহিদ জসীম উদ্দিনের মেয়ে তার বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে যাচ্ছিলেন। পথে নলদোয়ানী থেকে অভিযুক্তরা পিছু নেয়। হঠাৎ পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে পার্শ্ববর্তী জলিল মুন্সির বাগানে নিয়ে যায় সাকিব ও সিফাত। একপর্যায়ে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এমনকি তার নগ্ন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার
নাটকীয়তা শেষে রাতে ফাইনালে মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা