রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

বিকেল বেলাটা ব্যালকনিতে বসে কফি খেয়ে কিছুটা আলসেমি করে সময় কাটালাম। অবশ্য বেশিক্ষণ অলস কাটাবার উপায় ছিল না। সন্ধ্যায় সৈয়দ আজিজ এবং মান্নি ভাবির বাসায় দাওয়াতে যেতে হবে। কায়রো আসার পর প্রথম দিনেই পরিচয় ঘটেছে মরুর দেশে এই চমৎকার এক টুকরো বাংলাদেশের সঙ্গে। 

সৌরভ বাসায় ফেরার কিছু পরেই আমরা বেরিয়ে পড়লাম। পথে ফুলের দোকানের পাশে গাড়ি থামিয়ে সৌরভ একগুচ্ছ ফুল কিনে আনলে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কোনো উপলক্ষ আছে কিনা? সেক্ষেত্রে আমরাও কিছু একটা নিতে পারতাম।’ সৌরভ জানালো কোনো উপলক্ষ নেই, এমনিতে মাঝে মধ্যে ওরা একত্রিত হয়। ধারণা করলাম, আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করা কায়রো নিবাসী বাংলাদেশি এবং সঙ্গে বিদেশি ঘনিষ্ঠজনদের এই ঘরোয়া আয়োজন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। এবারে রানাভাইসহ আমাদের সংক্ষিপ্ত মিশর সফর উপলক্ষে আজকের আয়োজন।  

            মোকাত্তম থেকে রাতের কায়রো

সৈয়দ আজিজ কাজ করেন আন্তর্জাতিক রেডক্রসে, বসবাস আপাতত কায়রোতে। বিস্তৃত মরুভূমির দেশে দিনযাপন করেন ব্যস্ততার মধ্যে, কিন্তু সম্ভবত মন পড়ে থাকে সবুজ শ্যামল বাংলাদেশে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন এবং তারুণ্যের উদ্দাম দিনগুলোতে মেতেছিলেন কবিতায়, যুক্ত ছিলেন আবৃত্তি চর্চায়। কণ্ঠশীলনের মতো সংগঠন আর অধ্যাপক নরেন বিশ্বাসের মতো শিক্ষক যে ভিত্তিভূমিতে তাঁকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন তা তিনি শুধু আঁকড়ে ধরে আছেন বললে ভুল বলা হবে। সৈয়দ আজিজ নিজে চর্চা অব্যাহত রেখেছেন, যুক্ত আছেন দেশের কবি ও আবৃত্তি শিল্পীদের সঙ্গে। ‘শব্দরূপ’ ঐতিহ্যের অঙ্গীকার নামে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে নিয়মিত কবিতা পাঠের অনুষ্ঠান প্রচার করছেন। কায়রোতে বসে দেশের ও পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কবি ও আবৃত্তিকারদের তিনি যুক্ত করে চলেছেন এই অনুষ্ঠানে। 

           সৈয়দ আজিজ ও মান্নি ভাবির সঙ্গে

বৈমানিক রাজি তাঁর বিদেশিনী স্ত্রী ভ্যালেরি এবং দুই পুত্র কন্যাসহ আমাদের আগেই পৌঁছে গেছেন। তাঁরা ছাড়াও অল্প সময়ের ব্যবধানে আরও কয়েকজন বিদেশি অতিথি এলেন। শাখা প্রশাখা বিস্তার করে আড্ডার গল্প গুজব ছড়িয়ে পড়ল কোভিড পরবর্তী পৃথিবীর বিভিন্ন সংকট, বৈশ্বিক অর্থনীতি ও বাণিজ্য থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি শিল্প-সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের নানা প্রসঙ্গে। স্বাভাবিকভাইে আমরা বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনায় ঢুকে পড়ি। সৈয়দ আজিজ আশঙ্কা প্রকাশ করেন, দেশের কিছু সংখ্যক বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেল যেভাবে ইংরেজি মেশানো বিকৃত বাংলায় অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু করেছে, তাতে ভবিষ্যতে প্রমিত বাংলা খুঁজে পাওয়াই কঠিন হবে। আজীবন বিশুদ্ধ বাংলায় নিবেদিত এই আবৃত্তি শিল্পী বাংলাদেশের কয়েকজন লেখক ও চলচ্চিত্র নির্মাতার বিরুদ্ধেও ভাষা বিকৃতির অভিযোগ তুলে ধরেন। সস্তা জনপ্রিয়তার লোভ সংবরণ করতে না পারা লেখক বুদ্ধিজীবী চলচ্চিত্র নির্মাতারা অবলীলায় বিকৃতি ঘটিয়ে বাংলা ভাষার সর্বনাশ করে চলেছেন অথচ তাদের প্রচার প্রপাগান্ডার সুফলভোগী হিসাবে আমরা কেউই তার প্রতিবাদ করছি না। 

           মোকাত্তম পাহাড়ে রেস্তোরাঁর সারি

মান্নি ভাবি যখন তাঁর নিজের হাতে রান্না করা খাবার এনে টেবিল জুড়ে সাজিয়ে রাখছেন সে সময় সৈয়দ আজিজ আমাকে নিয়ে এলেন তাঁর স্টুডিওতে। তাঁর বাসায় একটি ঘরকে পুরোপুরি টেলিভিশন স্টুডিওতে রূপান্তরিত করে ফেলেছেন। এটি একটি ছোট অথচ পূর্ণাঙ্গ প্রফেশনাল অডিও-ভিজ্যুয়াল স্টুডিও। সেট-লাইট-ক্যামেরা-মাইক্রোফান ছাড়াও চমৎকৃত হবার মতো যা দেখেছি তা হলো অডিও ইক্যুয়ালাইজার, ভিডিও সম্পাদনার ব্যবস্থা, এমন কি ক্রোমাকি বা কালার সেপারেশন ওভার-লের সবুজ পর্দা। আমি নিজে দীর্ঘদিন এই মাধ্যমে কাজ করেছি বলে সহজেই বুঝতে পারি এবং বিস্মিত হই কতটা পেশাদারিত্ব এবং কতটা আন্তরিকতার সঙ্গে গড়ে তোলা হয়েছে এই স্টুডিও। 
অধ্যাপক নরেন বিশ্বাসের প্রয়াণ দিবসে ২৭শে নভেম্বর শব্দরূপের পরিবেশনায় প্রচারিত হবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্য নাটক ‘বিসর্জন’। তিন দশক আগে ধারণকৃত এই শ্রুতি নাটকের উপদেশক ছিলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং সার্বিক তত্ত্বাবধান করেছেন আশরাফুল আলম। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন স্বয়ং অধ্যাপক নরেন বিশ্বাস। সে সময়ের প্রথিতযথা আবৃত্তিকার এবং অভিনেতাদের অনেকেই হয়তো অনন্তলোকে যাত্রা করেছেন, কিন্তু শ্রুতি নাটকের মধ্য দিয়ে সৈয়দ আজিজ ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন অতীতের সোনালী দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। শব্দরূপ শুধু কথায় নয় কাজেও ঐতিহ্যের অঙ্গীকার রেখে চলেছে। আমি সৈয়দ আজিজকে বললাম, ‘দেশে ফিরেই আশরাফুল আলম ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হলে আপনার উদ্যোগের কথা বলবো।’

                আড্ডা

খাওয়া-দাওয়ার বিপুল আয়োজন শেষ করে সৈয়দ আজিজ মান্নি ভাবির কাছে থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠার পরে সৌরভ বলল, ‘রাত খুব বেশি হয়নি। মোকাত্তম থেকে ঘুরে আসা যায়।’ কোথায় মোকাত্তম আর কীই বা তার বৈশিষ্ট্য কিছুই জানা নেই। কাজেই সৌরভের পরিকল্পনার কাছে নিজেদের ছেড়ে দিয়ে  আমরা গাড়িতে বসে থাকি। কায়রোর আলোকোজ্জ্বল শহর ছেড়ে এগুতে থাকি আরও দক্ষিণ দিকে। ক্রমেই আলো জ্বলা ঝলমলে শহর নিষ্প্রভ হতে থাকে। শহরের যানবাহন চলাচলের ব্যস্ততা কমে আসে। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ ধরে মনে হয়ে আমরা ক্রমেই উপরের দিকে উঠে যাচ্ছি। মিনিট পনের কুড়ি পরে অনেকটা উপরে উঠে গাড়ি পার্ক করে সৌরভ।

                মোকাত্তম পাহাড়ে

এখানেও গাড়ি রাখার জায়গা খুঁজে বের করতে সময় লাগে। নদী তীরের একটি দীর্ঘ বাঁধের মতো উঁচু ছোট ছোট ব্লকে ঘিরে রাখা জায়গায় এসে ঢুকলাম আমরা। এখানে কোথাও কয়েক সারি চেয়ার টেবিল পাতা, কোথাও টেবিল ঘিরে বৃত্তাকারে সাজানো আসনে বসে চলছে তুমুল আড্ডা আবার কোথাও বসার ব্যবস্থা এক একটি বৃত্তাকার সোফার মতো কাপড়ে ঢাকা গদিতে। প্রত্যেকটি বর্গক্ষেত্র বা আয়তক্ষেত্রই এক একটি অস্থায়ী রেস্তোরাঁ। রেস্তোরাঁর সীমানা ঘিরে আলো জ্বলছে, কোথাও ফ্লুরোসেন্ট বাগান বাতি আবার কোথাও রঙিন আলো। তবে প্রায় সব ক্ষেত্রেই ফুটলাইট হিসেবে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে লম্বা নিয়ন বাতি অথবা টিউব লাইট। বাতিগুলো কী সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্যে, নাকি অন্ধকারে অতিথিদের পথ দেখাতে অথবা কেবলই রেস্টুরেন্টের সীমানা নির্ধারণের জন্যে জ্বালানো হয়েছে বুঝতে পারলাম না। কিছু এলাকায় মনে হলো ইচ্ছে করেই খানিকটা আলো আঁধারি ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। আমরা বাঁধের কিনারায় তেমনি এক আলো আঁধারিতে ঘেরা জায়গায় এসে বসলাম। বালির চত্বরের উপরে কাপড়ে ঢাকা গোলাকার আসনগুলো দৃষ্টিনন্দন হলেও বসে আরাম নেই। তবে যেখানে বসেছি সেখান থেকে নিচে তাকিয়ে দেখলাম যেমনটা কখনো ভাবিনি তেমনি এক কায়রোকে। দূরে— যতো দূরে দৃষ্টি যায় অলোর মালায় সাজানো কায়রো ঝলমল করছে। আলো অন্ধকারে ঘেরা প্রায় অন্ধকারাচ্ছন্ন শহরটা যে এতোটা আলোর ঝিলিক ছড়াতে পারে তা এই মোকাত্তম পাহাড়ের উচ্চতায় এসে না দাঁড়ালে কখনোই জানা হতো না। 

       রাতের কায়রো টাওয়ার

কায়রো শহরের দক্ষিণে এক সারি পাহাড়ের নাম আল মোকাত্তম। আরবি মোকত্তম বাংলায় রূপান্তর করলে অর্থ দাঁড়ায় ভেঙে ফেলা বা বিচ্ছিন্ন করা। এখানে উঁচু নিচু পাহাড়ের দীর্ঘ বিন্যাস কোনো এক কালে ভেঙে তিনটি টুকরোয় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল, তাই বর্তমান তিন পাহাড়ের নাম হয়ে গেছে মোকাত্তম। আমাদের যেমন ‘দুই পাহাড়ের মাঝে মওলায় মসজিদ বানাইছে’, তেমনি এই তিন পাহাড় নিয়েও গল্প গাথার অভাব নেই। কথিত আছে খ্রিস্টিয় দশম শতকে আলেক্সান্দ্রিয়ার কপটিক পোপ আব্রাহাম তাঁর গুরু সেইন্ট সাইমন ট্যানরের পরামর্শ অনুসারে পাহাড় সংলগ্ন ভূমিতে একটি গণ প্রার্থনার আয়োজন করেন। মিশরের তৎকালীন মুসলিম খলিফার কাছে তিনি প্রমাণ করে দেন, যার মনে শরিষা দানার মতো বিশ্বাস আছে তিনি ইচ্ছা করলে একটি পাহাড়কেও সরিয়ে দিতে পারেন। কপটিট চার্চে এই বিশ্বাস প্রবল হলেও প্রকৃত পক্ষে হাজার বছর ধরে বিভিন্ন যুগে পিরামিড থেকে শুরু করে নানা ধর্মমতের মন্দির মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের চুনাপাথর আহরণের ফলে পাহাড়ের তলদেশে শূন্যতার সৃষ্টি হয়ে হয়তো তিনভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে এই পাহাড় শ্রেণি। মোকাত্তম পাহাড়ের পক্ষে বিপক্ষে বিশ্বাস কিংবা যুক্তি যাই থাকুক, বর্তমানের বাস্তবতা হলো কায়রোর সবচেয়ে গরিব কুড়ি হাজার মানুষের বসবাস ‘গার্বেজ সিটি’ নামে পরিচিত এই মোকাত্তম এলাকায়। 

               মান্নি ভাবির সঙ্গে

সৈয়দ আজিজ মান্নি ভাবির বাসায় রীতিমতো নৈশ্যভোজ শেষ করেই আবার কোনো রেস্টুরেন্টে ঢুকে পড়ার কথা নয়। তবে আমরা তো এখানে খাবার খেতে আসিনি, উপরের পাহাড় থেকে রাত্রিকালীন কায়রোর সৌন্দর্য দেখতে এসেছি। তারপরেও নেহায়েত কিছু অর্ডার না দিলে কেমন হয় বলেই সৌরভ চায়ের কথা বলে এলো। দূরের আলোকিত কায়রোর দিকে তাকিয়ে বোঝার উপায় নেই ঠিক এই পাহাড়ের ভাঁজে অথবা পায়ের কাছে, চড়াই উৎরাইয়ের ফাঁকে দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে অসংখ্য মানুষ। আবর্জনাই যাদের অধিকাংশের আয়ের একমাত্র উৎস! সারা শহরের বর্জ্য এবং বাতিল জিনিসপত্র থেকে বিক্রয়যোগ্য কিছু খুঁজে বের করাই এদের নিত্যদিনের কাজ। কয়েক মিনিটের ভেতরে আমাদের মাথার উপর দিয়ে আকাশে এক এক করে গোটা তিনের বিমান উড়ে যায়। জনা তিনেক ফেরিওয়ালা তাদের সাম্ভাব্য ক্রেতার সন্ধানে আমাদের সামনে দিয়ে ঘুরে যায়। কায়রো শহরে একটা অদ্ভুত ব্যাপার দেখেছি, ট্রেনে বাসে তো বটেই, কোনো রেস্টুরেন্টে হকারর ফেরিওয়ালা, এমন কি সাহায্যপ্রার্থীরা অবাধে প্রবেশ করতে পারেন, কেউ তাদের বাধা দেন না।

কিছুক্ষণের মধ্যে চা এসে গেলে আমরা হাতে হাতে চায়ের কাপ নিয়ে দূরে তাকিয়ে থাকি। কায়রোর স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে মোকাত্তম পাহাড়ের উচ্চতায় মনে হয় উষ্ণতা কম, মাঝে মাঝে কোথাও থেকে একটু বাতাস বয়ে যায়। সে বাতাস মরুভূমির লু হাওয়া নয়, বসন্তের ঝিরঝিরে হাওয়া। কাজেই চায়ের কাপ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বেশ কিছু সময় বসে থাকি। এভাবে হয়তো আরও অনেকক্ষণ বসে কাটিয়ে দেওয়া যেতো, কিন্তু পরদিন ভোরে আমাদের আল ফাইয়ুম যাবার কথা। সেই কারণে ইচ্ছে না থাকলেও তাড়াতাড়ি উঠে পড়তে হলো। বাঁধ থেকে বেরিয়ে রাস্তায় উঠে দেখলাম রেস্তোরাঁ এলাকার বাইরেও পাহাড়ের গায়ে বহুতল ভবনের সারি। পাহাড় থেকে নিচে নেমে ফেরার পথে অন্ধকার আবর্জনার স্তূপের ফাঁকে ফাঁকে রাস্তার পাশে চোখে পড়ে হতদরিদ্র মানুষের ভাঙাচোরা বসত বাড়ি। একেই বোধহয় বলে প্রদীপের নিচ অন্ধকার! 

চলবে... 

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর পৌর এলাকার কাইতকাই রূপালী ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ধনবাড়ী উপজেলা পৌর এলাকার চরভাতকুড়া গ্রামের মৃত হাতেম আলীর ছেলে সিএনজি চালা হেলাল উদ্দিন (৫৫)। অপরজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সিএনজি যাত্রী ছিলেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক এ বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাতে দুর্ঘটনা কবলিত সিএনজি ধনবাড়ীর দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজির চালক ঘটনা স্থলে মারা যান। এ সময় গুরুতর আহত হয় এক যাত্রী।

এরপর তাকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে তিনি মারা যায়।

এ ব্যাপারে মধুপুর থানার ডিউটি অফিসার মো. মনজুরুল হক জানান, নিহত সিএনজি চালকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে, অজ্ঞাত ওই যাত্রীর পরিচয় পাওয়া যায়নি, শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

Header Ad
Header Ad

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা

হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র হজ ফ্লাইট শুরু আগামী মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল)। ওই দিন ৪১৯ জন সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। হজের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

চলতি বছর ৮৭ হাজার ১০০ জন পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন হজযাত্রী সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮১ হাজার ৯০০ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন।

প্রথম ফ্লাইটটি রাত ২টা ১৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। হজ ব্যবস্থাপনাকে নির্বিঘ্ন করতে সরকারি পর্যায়ে ১১২ জন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১ হাজার ৭৪৩ জন গাইড দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি ৭০ জন মোয়াল্লেম হজযাত্রীদের সার্বিক সহায়তা করবেন।

হজযাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ তিনটি এয়ারলাইনস। ৩১ মে পর্যন্ত হজের ফ্লাইট চলবে। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন এবং শেষ হবে ১০ জুলাই।

পবিত্র হজ উপলক্ষে এ বছর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিচালনা করবে ১১৮টি, সাউদিয়া ৮০টি এবং নাস এয়ারলাইনস ৩৪টি ফ্লাইট।

হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা, যা ৯ জিলহজ মসজিদে নামিরা থেকে প্রদান করা হয়। এবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে হজের খুতবা, এবং তাৎক্ষণিক অনুবাদ করা হবে ২০টি ভাষায়। 

যেসব ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করা হবে সেগুলো হলো- বাংলা, ফরাসি (ফ্রেঞ্চ), মালয়, উর্দু, ফারসি, চাইনিজ, তুর্কি, রাশিয়ান, হাউসা, ইংরেজি, সুইডিশ, স্প্যানিশ, সোয়াহিলি, আমহারিক, ইতালিয়ান, পর্তুগিজ, বসনিয়ান, মালায়লাম, ফিলিপিনো এবং জার্মান। 

উল্লেখ্য, ১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ৫ জুন) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহিদ রাজিতে ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন। আহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ৭৫০ ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে হরমুজগান প্রদেশের রাজধানী বন্দর আব্বাসের কাছে অবস্থিত এই বন্দরে ঘটে বিপর্যয়টি।

ইরানের জরুরি সেবাবিভাগের মুখপাত্র বাবাক ইয়াকতেপেরেস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে এখনও উদ্ধার তৎপরতা চলছে, তবে বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মুখপাত্র হোসেন জাফারি জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে নাশকতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বার্তাসংস্থা আইএলএনএ-কে জানান, একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থ থেকেই এই বিস্ফোরণের সূত্রপাত হয়। তিনি বলেন, “বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তবে সেগুলোতে কান না দিয়ে সরকারি তথ্যের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।”

সরকারি বার্তাসংস্থা ফার্স নিউজ জানিয়েছে, ছোট পরিসরে আগুন লাগার পর তা দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং একাধিক বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় আবহাওয়া ছিল অত্যন্ত গরম এবং পরিবেশে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুনের তীব্রতা দ্রুত বেড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শক্তি এতটাই প্রবল ছিল যে ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত কনটেইনারগুলোর মধ্যে সালফারজাতীয় রাসায়নিক থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যদিও কনটেইনারগুলোর সুনির্দিষ্ট উপাদান এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

সরকারি বার্তাসংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে বলা হয়, শহিদ রাজি বন্দরটি ইরানের সবচেয়ে আধুনিক সামুদ্রিক বন্দরগুলোর একটি। এটি হরমুজ প্রণালির উত্তরে, বন্দর আব্বাস থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এই প্রণালি দিয়েই বিশ্বের মোট উৎপাদিত তেলের পাঁচ ভাগের এক ভাগ পরিবহন করা হয়, ফলে এ বন্দরের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

টাঙ্গাইলে ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২
হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার, উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা
ইরানের বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৪, আহত সাড়ে ৭ শতাধিক
ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সিন্ধুর পানি ছাড়ল ভারত, হঠাৎ বন্যায় ডুবলো পাকিস্তানের কাশ্মীর
রিয়ালের হৃদয়ভাঙা রাত, কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
উত্তরায় সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় তরুণ-তরুণীর মৃত্যু
জাতীয় গ্রিডে যান্ত্রিক ত্রুটিতে ১০ জেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট
আবারও দুই ধাপে ৬ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পাকিস্তানি হামলার আশঙ্কায় বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন ভারতীয়রা
চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করলো বিএনপি
আওয়ামী লীগ ভারতের গোলামী করা দল : নুরুল হক নুর
ইরানের রাজাই বন্দরে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, আহত ৫১৬ জন
প্রায় দুই ঘণ্টা পর মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক
গোবিন্দগঞ্জে মৃত আওয়ামী লীগ নেতার নামে জামাতের মামলা
গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেফতারের দাবি পুলিশের
নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই বাসীর গলার কাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ অবশেষে সংস্কার
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রোরেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ
গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ ট্রাকের চালক-হেলপার গ্রেপ্তার
আদমদীঘিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা তোহা গ্রেপ্তার