শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

-আমার হাঁড়িতে ছিল বলে দিতে পেরেছি। নইলেতো পারতাম না।
-যাক, আমাদের বাচ্চা দুটোকে খাওয়াতে পারলাম এটা আমাদের ভাগ্য। ওদেরকে খাওয়াতে পেরে আমাদের মনের কষ্ট কমেছে। আপনাকে সালাম জানাই।
-থাক, এত কথা বলবেন না। বাচ্চা দুটোকে খাওয়ানোর দায়তো আমারও ছিল। কিছুতেই ওদের কান্না শুনতে পারতাম না।
-আমরা সবাই এমন চিন্তায় শরণার্থী শিবিরে থাকব।
-হ্যাঁ, তাই থাকব। থাকতেই হবে। আমরা সবাই স্বাধীনতার জন্য এসেছি।

স্বাধীনতা শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে ধ্বনি ওঠে চারদিকে স্বাধীনতা-স্বাধীনতা-বঙ্গবন্ধু-বঙ্গবন্ধু।
অঞ্জন নিজেও বলতে থাকে। ওর মন-প্রাণ ভরে যায় স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু শব্দে। বঙ্গবন্ধু ছাড়াতো স্বাধীনতার সূচনা রচিত হতোনা। এক বিপুল কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন তিনি। সেই কর্মযজ্ঞে শামিল পুরো দেশবাসী। অনেকে আবার উল্টো কর্মে আছে। ওদের বিবেক নাই। ওদেরকে অবশ্যই মুখ থুবড়ে পড়তে হবে স্বাধীনতাকামী মানুষের পায়ের নিচে।

আকরাম তখন বলে, চলো যে যার তাঁবুতে চলে যাই।
সবাই উঠে পড়ে। বাচ্চা দুটোর হাত ধরে ওদের বাবা। ওরা হাঁটতে শুরু করে।
অঞ্জন আকরামকে বলে, দেখেন ওদের শক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন আপনি।
-আহারে, এতটুকু ভাত দেয়া খুব বড় কাজ হয়েছে নাকি?
-হয়েছেতো বটেই। দেখছেন না ওদেরকে। দু’ভাই কেমন লাফালাফি করছে। ওরা প্রাণশক্তি ফিরে পেয়েছে। ওরা বলেনি যে আমরা একটুখানি ভাত খেয়েছি। আমাদের আরও ভাত দাও।

আকরাম হাসতে হাসতে বলে, ওরা বুদ্ধিমান ছেলে। বুঝে গেছে যে ভাত চাইলেই রাস্তায় ভাত পাওয়া যায় না।
অঞ্জন হা-হা করে হেসে ওঠে। হাসতে হাসতে বলে, আপনার ব্যাখ্যা খুব সুন্দর। আপনি ওদেরকে বড় মানুষ বানিয়ে দিলেন।
-এই শরণার্থী জীবনের পরে স্বাধীনতা পেলে ওরা বড় মানুষ হবে।
ছেলেদুটোর বাবা-মা হাততালি দিয়ে বলে, আপনি ওদের জন্য দোয়া করবেন আকরাম ভাই।
-হ্যাঁ, দোয়াতো করবই। আল্লাহর রহমত থাকবে ওদের উপর। আমি যাই।
-আমরাও যাই।

যে যার মতো হাঁটতে শুরু করে। ধুলোমলিন রাস্তায় হাঁটতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না অঞ্জন। এপাশে ওপাশে পা ফেলে হাঁটতে গিয়ে বিরক্ত হয়। দেখতে পায় অন্যরা একইভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ওদের দিকে তাকিয়ে নিজের বিরক্তি কাটিয়ে নেয়। তারপর এলোমেলো পথে দ্রুতপায়ে হাঁটতে থাকে। ধুলোয় ধুসরিত এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা জীবনের সরলরেখা নয়। জীবনযাত্রার এলোপাতাড়ি নানা সংকটের চিহ্ন তুলে ধরেছে। প্রত্যেককেই এমন পথ বুঝে চলতে হবে। কখনো স্বপ্ন, কখনো কষ্ট, কখনো শান্তি, কখনো জন্ম-মৃত্যু ইত্যাদি সবকিছু নিয়ে হেঁটে যাওয়া বেঁচে থাকার সত্যের মাত্রা। অঞ্জন চারদিকে তাকায়। কত তাঁবু মানুষের দিনযাপনের জন্য। প্রত্যেকের সামনে স্বপ্ন একটাই। স্বাধীনতা। এভাবে ব্যক্তির ঊর্ধ্বে সমষ্টির স্বপ্ন এক হয়। নিজের ভাবনায় আলোড়িত হয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়ায় অঞ্জন। কেউ একজন ডাক্তার সাহেব বলতে বলতে ছুটে আসছে তার দিকে। কাছাকাছি এলে ও নিজেই বলে, কি হয়েছে আশরাফ?
-আমার ছেলেটার খালি পায়খানা হচ্ছে। কলেরা হলো নাকি? আপনি ওকে দেখতে চলেন।
-হ্যাঁ, চলেন।

দুজনে হাঁটতে শুরু করে। নানা তাঁবু থেকে শোনা যায় কান্নার শব্দ। অঞ্জন চারদিকে চারদিকে তাকিয়ে মুষড়ে পড়ে। তাঁবুতে তাঁবুকে কি অসুস্থতা শুরু হয়েছে। বুকের ভেতর টনটনিয়ে উঠে অঞ্জনের। আশরাফের তাঁবুর দিকে দ্রুতপায়ে হেঁটে যায়। তাঁবুতে পৌঁছে বাচ্চাটিকে পরীক্ষা করে বলে, হ্যাঁ, ও কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে। আমি হাসপাতালে গিয়ে ওষুধের ব্যবস্থা করব।

আশরাফ কাঁদতে শুরু করে। কাঁদতে কাঁদতে বলে, ওষুধের জোগাড় করতে তো সময় লাগবে।
অঞ্জন ওর ঘাড়ে হাত রেখে বলে, ধৈর্য ধরেন। আপনাকে কাঁদতে দেখলে ছেলেটার মন খারাপ হবে।
আশরাফ দুহাতে চোখ মুছে চুপ করে যায়। অঞ্জন বলে, যাই, অন্য তাঁবুতে কারা কাঁদছে দেখে আসি।
কয়েকটি তাঁবুতে গিয়ে টের পায় সবাই কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে। ওর শরীর কাঁপে থরথর করে। শরণার্থী শিবিরে কলেরার মহামারি শুরু হয়েছে এটা দেখে ও স্থির থাকতে পারে না। মেঘভরা আকাশ থেকে হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়। যশোর রোডের কাঁচা রাস্তা বৃষ্টির পানিতে কাদামাখা হয়ে যায়। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অঞ্জন কাদামাখা রাস্তায় হাঁটতে শুরু করে। মনে মনে ভাবে, শরণার্থী শিবিরে বাস করার এটা একটা ভিন্ন অভিজ্ঞতা। এর আগে কখনো এভাবে বৃষ্টিতে হাঁটেনি। বৃষ্টি পড়তে দেখলে ঘরে ঢুকেছে। তারপর বারান্দায় বসে বৃষ্টি পড়া দেখেছে। আজ ও বৃষ্টি মাথায় নিয়ে গুনগুন করে গায়, ‘ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা’..।

হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূরে আসে অঞ্জন। ভেজার আনন্দ বুকের ভেতর জমে থাকে। কোনোরকম ভয় আসে না মনে। তাঁবুতে ফিরলে বাবা-মা বকবে এমন ধারণা পেয়ে বসে ওকে। ও আর এগোয়না। ফিরে আসে তাঁবুতে। বাবা ওর ভিজে থাকা অবস্থা দেখে চেঁচিয়ে বলে, এত ভিজেছিস কেন? যদি জ্বর আসে মার খাবি।
মা গামছা এগিয়ে দিয়ে বলে, ভেতরে যা। গা মুছে তাড়াতাড়ি কাপড় বদলে ফ্যাল।

অঞ্জন মায়ের হাত থেকে গামছা নিয়ে তাঁবুর ভেতর ঢুকে পড়ে। শরীরজুড়ে গড়িয়ে পড়া বৃষ্টির পানির ছোঁয়া তখনো বুকের ভেতর আনন্দের ঢেউ তুলছে। ও বুকের উপর গামছা চেপে ধরে গুনগুনিয়ে বলে বৃষ্টি আমার স্বাধীনতা। স্বাধীনতার সোনার পানিতে ভিজে ভিজে মৃত্যুর দরজায় যাব। মৃত্যুকে বলব, মৃত্যু তুমি আমাকে বৃষ্টির পানিতে ভিজিয়ে রাখ। আমি স্বাধীনতা বুকে নিয়ে মরে যেতে চাই।
ওর মা মাথা বাড়িয়ে বলে, কি রে তুই কার সঙ্গে কথা বলছিস?
-বৃষ্টির সঙ্গে।

শব্দ করে হেসে উঠে ওর মা। হাসতে হাসতে বলে, ছেলেটাকে ডাক্তার বানিয়েছি। ওর নিজে নিজে কবি হয়েছে। বাড়িতে থাকতে জারুল গাছের ফুলের দিকে তাকিয়ে থাকত। এখন বৃষ্টি ওর কবিতা হয়েছে। ভালোইতো ফুল আর বৃষ্টি নিয়ে আমার ছেলে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখছে।

মায়ের কথা শুনে শব্দ করে হাসতে থাকে অঞ্জন। হাসতে হাসতে বলে, মাগো স্বাধীনতার স্বপ্ন এমনই। সবটুকু সৌন্দর্য নিয়ে স্বাধীনতা সবার মনে থাকবে। আমরা কখনোই স্বাধীনতার অমর্যাদা করবনা।
-তাঁবুতে যে চারদিকে কলেরা শুরু হয়েছে এটা কি সৌন্দর্য?
-মাগো এটাও সৌন্দর্যের আর এক দিক। এটা হবে মানবিক সৌন্দর্য। কলেরা রোগীদের আমরা কীভাবে দেখাশোনা করব সেটাই সৌন্দর্য। কাউকে আমরা অবহেলা করব না। এই সৌন্দর্য আমাদের বানাতে হবে।
-বুঝলাম। সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। তবে এটাও জানি মহামারি সাবইকে সাবধান থাকতে দেয়না। সবাধান থাকলেও গায়ে চেপে বসে। রক্ষা পাওয়া যায়না।
-থাক, এসব কথা। আমাদের এখন এত কথা বলার দরকার নাই।
-তুই যে বৃষ্টিতে ভিজলি এটা নিয়ে আমার চিন্তার ঝড় উঠেছে রে ছেলে। কেন তুই বৃষ্টিতে ভিজলি?
-মাগো এটাকে আমার একটা খেলা মনে হয়েছিল। কোনো ভয় ছিলনা মনে।
-সবই বুঝলাম। এখন জ্বর না আসলে আল্লাহর রহমত হবে।
অঞ্জন হাসতে হাসতে বলে, দেখা যাক কি হয়। মায়ের দোয়ায় সুস্থ থাকব।

মা ছেলের মাথায় হাত রেখে বলে, আল্লাহ তোকে সুস্থ রাখবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন।
অঞ্জন মায়ের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে। দূর থেকে ভেসে আসে কান্নার শব্দ। দুজনে স্তব্ধ হয়ে যায়। কেউ আর কোনো কথা বলেনা। শরণার্থী শিবিরে দিন কাটানোর কষ্ট বুকে নিয়ে বেদনায় ম্রিয়মান হয়ে থাকে।

চলবে…..

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব-৩২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার

দিলশাদ আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির শৃঙ্খলা ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে আসে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এর নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী আপনার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড আমাদের সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এর অনুরোধক্রমে আপনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আফরিন জাতীয় নাগরিক কমিটির শহীদ আহত কল্যাণ সেলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তারপরেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহীদ ও আহত পরিবারের আর্থিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। যা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি অবগত ছিল না বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে ‍দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকা মেহেরপুর জেলার ইছাখালি সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১২৪ এর নিকট শূন্য রেখা বরাবর ভারতীয় পার্শ্বে বিএসএফ নব চন্দ্রপুর ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিবি’র পক্ষে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্টাফ অফিসারসহ মোট ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

অপরদিকে বিএসএফ এর পক্ষে ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী বিনয় কুমার তাঁর স্টাফ অফিসারসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষ ঈদ-উল-ফিতর পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, যৌথ টহল তৎপরতা জোরদারকরণ এবং গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সীমান্তকে অধিক সুসংহত ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। এছাড়াও, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ও সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ সম্মত হন।

বৈঠক শেষে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেইন পিলার ১২৪ সহ তৎসংলগ্ন সীমান্ত পিলারসমূহ যৌথভাবে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আন্তরিক ও সদ্ভাবপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক শেষ হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হলেন ধোনি
‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলা গ্রেফতার
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা
ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বাবার হাতে প্রাণ গেল মেয়ের
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল
জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন (ভিডিও)
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ