সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ঢাকাপ্রকাশ-এর সঙ্গে আলাপচারিতায় মুক্তিযুদ্ধ গবেষক অপূর্ব শর্মা

দেশে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মাঠ পর্যায়ে গবেষণায় যে ক’জন গবেষক নিবিষ্ট রয়েছেন তারমধ্যে অপূর্ব শর্মা অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধের ছাইচাপা পড়ে থাকা ইতিহাস তুলে আনতে তিনি পালন করে চলেছেন এক অনন্য এবং অতূলনীয় ভূমিকা।  পাশাপাশি সংবেদনশীলভাবে উপস্থাপন করছেন বীরাঙ্গনাদের অগ্নিভাষ্য। যুদ্ধাপরাধীদের স্বরূপ উন্মোচনেও তিনি আপোষহীন। এক কথায় মুক্তিযুদ্ধের অনালোকিত-অনালোচিত দিক জাতির সামনে তুলে ধরতে বিরামহীনভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অপূর্ব শর্মা। সে কারনেই তাঁর নামের পাশে সংযোজিত হয়েছে ‘প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা’র বিশেষণ। জাতীয়ভাবে একাধিক পুরস্কার প্রাপ্ত এই মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার শহীদ স্মৃতি উদ্যান, সিলেট-এর মাধ্যমে আবারো আলোচনায় এসেছেন। সিলেট ক্যাডেট কলেজ সংলগ্ন সালুটিকর বধ্যভূমিতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সূর্য সন্তানদের নাম অনুসন্ধান করে বের করা এবং এই উদ্যান বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য রূপে তাঁর ভূমিকা প্রশংসিত হচ্ছে সর্বমহলে। 

পরম নিষ্ঠার সাথে দীর্ঘ এই অভিযাত্রা সম্পন্ন করেছেন অপূর্ব শর্মা। একাত্তরে সালুটিকর বধ্যভূমি ও সংলগ্ন এলাকায় নির্মম নির্যাতনের পর যেসব মুক্তিকামীকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল হানাদার বাহিনীর সদস্যরা-তাদের আত্মত্যাগের আখ্যান এতকাল ছিলো লোকচক্ষুর অন্তরালে।  ৫২ বছরের পুরণো ঘটনার বিস্তৃত বিবরণ বের করতে তাঁকে যেমন দীর্ঘ অনুসন্ধান চালাতে হয়েছে তেমনি ঘুরে বেড়াতে হয়েছে শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে গ্রামের পর গ্রাম। ধূলিমাখা রাস্তা যেমন পারি দিতে হয়েছে তেমনি অতিক্রম করতে হয়েছে কাঁদামাখা পথ। রোদে যেমন পুড়তে হয়েছে তেমনি ভিজতে হয়েছে বৃষ্টিতে। যেতে হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। কথা বলতে হয়েছে অগনন মানুষের সাথে। অপূর্ব শর্মার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং দীর্ঘ অনুসন্ধানের ফলে এই বধ্যভূমির ইতিহাস এবং শহীদদের একটি অসম্পূর্ণ তালিকা প্রণয়ণ করা সম্ভব হয়েছে। অনুসন্ধান এবং স্মৃতি উদ্যান নির্মাণের আদ্যপান্ত জানতে ফারজানা নাজ শস্পা অপূর্ব শর্মার মুখোমুখি হয়েছিলেন। বিশেষ এই আলাপচারিতার অংশবিশেষ ঢাকা প্রকাশের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

 

ঢাকা প্রকাশ : প্রথমেই সিলেট ক্যাডেট কলেজ সংলগ্ন বধ্যভূমি সম্পর্কে জানতে চাই?

অপূর্ব শর্মা : মুক্তিযুদ্ধচলাকালে সিলেট শহরের নিকটবর্তী তৎকালীন সিলেট রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলকে (বর্তমান সিলেট ক্যাডেট কলেজ) আবর্তিত করে একটি মিনি ক্যান্টনম্যান্ট প্রতিষ্ঠা করেছিল হানাদার বাহিনীর সদস্যরা। পাশেই বিমানবন্দর থাকায় সহজেই এই স্থানটিতে তারা মজবুত সুরক্ষা বলয় তৈরি করে। এখানে এহেন অপকর্ম নেই যা তারা করেনি। সুরমা উপত্যকার অন্যতম বৃহৎ এ বধ্যভূমিতে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে এনে নারী পুরুষ নির্বিশেষে হত্যা করা হয় অগনিত মানুষকে। এই স্থানটিতে ঘুমিয়ে আছেন মুক্তিযোদ্ধা, পেশাজীবি, সাধারণ জনগণ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাম জানা না জানা অগনন নিরীহ মুক্তিকামী মানুষ।

 

ঢাকা প্রকাশ : এই বধ্যভূমিতে আনুমানিক কতো মানুষ হত্যা করা হয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

অপূর্ব শর্মা : মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী এই বধ্যভূমিতে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে নানা তথ্য পাওয়া যায়। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে আমার অনুমান, এখানে দুই হাজারের অধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।

 

ঢাকা প্রকাশ : স্বাধীনতা পরবর্তী এই বধ্যভূমিতে কি কোনও অনুসন্ধান চালানো হয়েছিল?

অপূর্ব শর্মা : হ্যা, হয়েছিল। ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে এই বধ্যভূমিতে সরকারের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান চালানো হয়। এই বধ্যভূমি থেকে ৪ হাজার হাড়, ২৪ টি মাথার খুলি ও ৪টি নরকঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।

ঢাকা প্রকাশ : শুধু কি মুক্তিকামী পুরুষদেরকেই এই বধ্যভূমি ও সংলগ্ন এলাকায় হত্যা করা হয়েছিল?

অপূর্ব শর্মা : না। এখানে অনেক নারীকেও হত্যা করা হয়। এদের প্রায় সবারই পরিচয় অজানা রয়ে গেছে।

 

ঢাকা প্রকাশ : কেন এমনটি হলো, নারীদের পরিচয় অজ্ঞাত থাকার বিশেষ কোনও কারন আছে কি?

অপূর্ব শর্মা : নির্যাতিত এবং হত্যার শিকার নারীদের বড়ো একটি অংশ মুণিপুরী সম্প্রদায়ের ছিলেন, বাকিরা হিন্দু এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের। এদের অনেকের পরিবারই হারিয়ে গেছে যুদ্ধের দামামায়। আবার কারো কারো পরিবার চলে গেছে ভারতে। অবশিষ্ট যারা দেশে আছেন তারাও লোকলজ্জার ভয়ে লুকিয়ে রেখেছেন বিভৎসতার পর হত্যার কথা। 

 

ঢাকা প্রকাশ : শহীদ নারীদের পরিচয় বের করতে কি অনুসন্ধান চালাবেন আপনি?

অপূর্ব শর্মা : অবশ্যই। শুধু নারীরা নন, এই বধ্যভূমিতে শহীদদের আত্মপরিচয় বের করতে আমার অনুসন্ধান প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। 

 ঢাকা প্রকাশ : এই বধ্যভূমিতে এতো মুক্তিকামীকে কিভাবে হত্যা করা হয়?

অপূর্ব শর্মা : এই বধ্যভূমি সংলগ্ন সিলেট রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলে একটি বন্দিশালা গড়ে তুলেছিল হানাদার বাহিনীর সদস্যরা। এটি ছিলো সিলেটের অন্যতম বৃহৎ বন্দিশালা। মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামীদের কাছ থেকে তথ্য আদায়ের জন্য প্রথমে তাদেরকে বন্দিশালায় আটক করে তাদের উপর অবর্ননীয় পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হতো। এরপর তাদেরকে সংলগ্ন বধ্যভূমিতে নিয়ে গিয়ে গুলিতে ঝাঝড়া করা হতো বুক।

 

ঢাকা প্রকাশ : শুধু কি গুলি করেই এখানে মুক্তিকামীদের হত্যা করা হয়েছে?

অপূর্ব শর্মা : না। এখানে প্রাণ শহীদদের একটি অংশ মারা গেছেন রক্তশূণ্যতায়।

 

ঢাকা প্রকাশ : রক্তশূণ্যতার বিষয়টি যদি একটু ক্লিয়ার করেন?

অপূর্ব শর্মা : সিলেট রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের বন্দিশালায় আটক মুক্তিকামীদের শরীর থেকে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রক্ত নিতো হানাদার বাহিনীর সদস্যরা। এই রক্ত তারা সীমান্তে বা বিভিন্ন যুদ্ধ ক্ষেত্রে আহত সৈনিকদের অপারেশনের সময় ব্যবহার করতো।একেক জন বন্দির শরীর থেকে যখন খুশি তখন রক্ত নিয়েছে। এর আগে মিলিয়ে নিতো গ্রুপ। অধিক রক্ত নেয়ার কারনে যারা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যেতো তাদের বধ্যভূমিতে ফেলে আসতো।

 

ঢাকা প্রকাশ : মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে এমন কাউকে কি পেয়েছেন যার শরীর থেকে রক্ত নিয়েছে পাকিরা এবং ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন?

অপূর্ব শর্মা : হ্যা, এরকম কয়েকজনকে পেয়েছি। যাদেরকে আটকের পর বন্দিশালায় রাখা হয়েছিল। এদের শরীর থেকে একাধিকবার রক্ত নিয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়। তাদের খোঁজে বের করে তাদের কাছ থেকেও বেশ কিছু তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছি।

 

ঢাকা প্রকাশ : যে বন্দিশালা সম্পর্কে বললেন, সেটি নিয়ে কি কোনো গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশের ইচ্ছে আছে?

অপূর্ব শর্মা : সিলেটের বৃহৎ এই বন্দিশালা নিয়ে আমার গবেষণা প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ নিয়ে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হবে।

 

ঢাকা প্রকাশ : এবার এখানে শহীদ স্মৃতি উদ্যান নির্মাণ প্রসঙ্গে জানতে চাই?

অপূর্ব শর্মা : সিলেট ক্যাডেট কলেজ সংলগ্ন সালুটিকর বধ্যভূমিটি দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। শহীদ পরিবারের অফুরন্ত ইচ্ছায় স্থানীয় জনগনের প্রত্যাশায় সেনাবাহিনী প্রধানের নিকট আবেদনের প্রেক্ষিতে সিলেট এরিয়া কমান্ডারের বিশেষ সহযোগিতায় এখানে একটি স্মৃতি উদ্যান তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব) আবদুস সালাম বীর প্রতীক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জিয়া উদ্দিন আহমদ এখানে শহীদ স্মৃতি উদ্যান নির্মানের উদ্যোগ নেন এবং এর সঙ্গে আমাকে যুক্ত করেন। বধ্যভূমিতে শহীদদের নাম অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয় আমাকে।

 

ঢাকা প্রকাশ : এই কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে কি কোনো কমিটি গঠন করা হয়েছিল?

অপূর্ব শর্মা : হ্যা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার শহীদ স্মৃতি উদ্যান নির্মানে ৩ সদস্যের একটি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়। 

 

ঢাকা প্রকাশ : বধ্যভূমিতে যাদেরকে ধরে এনে হত্যা করা হয়েছিল, কিভাবে খোঁজ পেলেন তাদের?

অপূর্ব শর্মা : এই প্রক্রিয়াটি ছিলো দুরহ এবং কঠিন। সেইসাথে সময় সাপেক্ষ। যদিও ২০১০ সাল থেকে এই বধ্যভূমিতে শহীদদের নাম অনুসন্ধানে কাজ করছিলাম আমি। কিন্তু বিগত ২ বছর একটানা অনুসন্ধান চালিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী পত্র-পত্রিকা, গবেষণা গ্রন্থ এবং মাঠ পর্যায়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান চালিয়ে, প্রতিটি শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে এপর্যন্ত ৬৬ জনের নাম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।

ঢাকা প্রকাশ : এভাবে স্মৃতি উদ্যান নিমার্ণের বিশেষ কোনও কারন আছে কি?

অপূর্ব শর্মা : বিশেষ একটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এমনটি করা হয়েছে। সেটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগকে দৃশ্যমান করা। 

 

 

ঢাকা প্রকাশ : এই উদ্যান নিয়ে শহীদদের সন্তান এবং স্বজনদের অনুভূতি কি?

অপূর্ব শর্মা : গত ৪ মার্চ এই উদ্যান উদ্বোধন করা হয়। ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে এক বিঘা জায়গার ওপর নির্মিত এই উদ্যানের উদ্বোধন করেন শহীদ সৈয়দ সিরাজুল আব্দালের স্ত্রী সৈয়দা সাকিনা আব্দাল। এই অনুষ্ঠানে অর্ধশতাধিক শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সেদিন প্রথমবারের মতো তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাদের স্বজনদের। এদের অনেকেই সেদিন কান্নায় ভেঙে পড়েন। সকলেই আপ্লুত। তাদের অনুভূতি এমন তারা যেনো তাদের স্বজনদের খুজে পেয়েছেন ৫২ বছর পর।

 

ঢাকা প্রকাশ : আপনার অনুভূতি জানতে চাই?

অপূর্ব শর্মা : শুধু আমি নই আমরা যারা স্বাধীনতার শহীদ স্মৃতি উদ্যান বাস্তবায়নের সাথে নানাভাবে সম্পৃক্ত ছিলাম সবাই খুশি। উল্লেখ্য যে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার শহীদ স্মৃতি উদ্যান, সিলেট-উদ্বোধন উপলক্ষে একটি স্মারক প্রকাশিত হয়েছে। সেটি সম্পাদনা করেছেন অপূর্ব শর্মা l এই বধ‍্যভূমির ইতিহাস, শহীদদের নামসহ প্রাসঙ্গিক সকল তথ‍্য উপাত্ত‍্য এবং ছবি গ্রন্থটি তে স্থান পেয়েছে।

 

ঢাকা প্রকাশ : দীর্ঘ সময় দেয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ l

অপূর্ব শর্মা : ঢাকাপ্রকাশের প্রিয় সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিবাদন এবং ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 

ডিএসএস/ 

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র:রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে