বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ঢাকাপ্রকাশ-এর সঙ্গে আলাপচারিতায় মুক্তিযুদ্ধ গবেষক অপূর্ব শর্মা

দেশে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মাঠ পর্যায়ে গবেষণায় যে ক’জন গবেষক নিবিষ্ট রয়েছেন তারমধ্যে অপূর্ব শর্মা অন্যতম। মুক্তিযুদ্ধের ছাইচাপা পড়ে থাকা ইতিহাস তুলে আনতে তিনি পালন করে চলেছেন এক অনন্য এবং অতূলনীয় ভূমিকা।  পাশাপাশি সংবেদনশীলভাবে উপস্থাপন করছেন বীরাঙ্গনাদের অগ্নিভাষ্য। যুদ্ধাপরাধীদের স্বরূপ উন্মোচনেও তিনি আপোষহীন। এক কথায় মুক্তিযুদ্ধের অনালোকিত-অনালোচিত দিক জাতির সামনে তুলে ধরতে বিরামহীনভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অপূর্ব শর্মা। সে কারনেই তাঁর নামের পাশে সংযোজিত হয়েছে ‘প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা’র বিশেষণ। জাতীয়ভাবে একাধিক পুরস্কার প্রাপ্ত এই মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার শহীদ স্মৃতি উদ্যান, সিলেট-এর মাধ্যমে আবারো আলোচনায় এসেছেন। সিলেট ক্যাডেট কলেজ সংলগ্ন সালুটিকর বধ্যভূমিতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সূর্য সন্তানদের নাম অনুসন্ধান করে বের করা এবং এই উদ্যান বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য রূপে তাঁর ভূমিকা প্রশংসিত হচ্ছে সর্বমহলে। 

পরম নিষ্ঠার সাথে দীর্ঘ এই অভিযাত্রা সম্পন্ন করেছেন অপূর্ব শর্মা। একাত্তরে সালুটিকর বধ্যভূমি ও সংলগ্ন এলাকায় নির্মম নির্যাতনের পর যেসব মুক্তিকামীকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল হানাদার বাহিনীর সদস্যরা-তাদের আত্মত্যাগের আখ্যান এতকাল ছিলো লোকচক্ষুর অন্তরালে।  ৫২ বছরের পুরণো ঘটনার বিস্তৃত বিবরণ বের করতে তাঁকে যেমন দীর্ঘ অনুসন্ধান চালাতে হয়েছে তেমনি ঘুরে বেড়াতে হয়েছে শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে গ্রামের পর গ্রাম। ধূলিমাখা রাস্তা যেমন পারি দিতে হয়েছে তেমনি অতিক্রম করতে হয়েছে কাঁদামাখা পথ। রোদে যেমন পুড়তে হয়েছে তেমনি ভিজতে হয়েছে বৃষ্টিতে। যেতে হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। কথা বলতে হয়েছে অগনন মানুষের সাথে। অপূর্ব শর্মার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং দীর্ঘ অনুসন্ধানের ফলে এই বধ্যভূমির ইতিহাস এবং শহীদদের একটি অসম্পূর্ণ তালিকা প্রণয়ণ করা সম্ভব হয়েছে। অনুসন্ধান এবং স্মৃতি উদ্যান নির্মাণের আদ্যপান্ত জানতে ফারজানা নাজ শস্পা অপূর্ব শর্মার মুখোমুখি হয়েছিলেন। বিশেষ এই আলাপচারিতার অংশবিশেষ ঢাকা প্রকাশের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

 

ঢাকা প্রকাশ : প্রথমেই সিলেট ক্যাডেট কলেজ সংলগ্ন বধ্যভূমি সম্পর্কে জানতে চাই?

অপূর্ব শর্মা : মুক্তিযুদ্ধচলাকালে সিলেট শহরের নিকটবর্তী তৎকালীন সিলেট রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলকে (বর্তমান সিলেট ক্যাডেট কলেজ) আবর্তিত করে একটি মিনি ক্যান্টনম্যান্ট প্রতিষ্ঠা করেছিল হানাদার বাহিনীর সদস্যরা। পাশেই বিমানবন্দর থাকায় সহজেই এই স্থানটিতে তারা মজবুত সুরক্ষা বলয় তৈরি করে। এখানে এহেন অপকর্ম নেই যা তারা করেনি। সুরমা উপত্যকার অন্যতম বৃহৎ এ বধ্যভূমিতে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে এনে নারী পুরুষ নির্বিশেষে হত্যা করা হয় অগনিত মানুষকে। এই স্থানটিতে ঘুমিয়ে আছেন মুক্তিযোদ্ধা, পেশাজীবি, সাধারণ জনগণ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাম জানা না জানা অগনন নিরীহ মুক্তিকামী মানুষ।

 

ঢাকা প্রকাশ : এই বধ্যভূমিতে আনুমানিক কতো মানুষ হত্যা করা হয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

অপূর্ব শর্মা : মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী এই বধ্যভূমিতে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে নানা তথ্য পাওয়া যায়। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে আমার অনুমান, এখানে দুই হাজারের অধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।

 

ঢাকা প্রকাশ : স্বাধীনতা পরবর্তী এই বধ্যভূমিতে কি কোনও অনুসন্ধান চালানো হয়েছিল?

অপূর্ব শর্মা : হ্যা, হয়েছিল। ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে এই বধ্যভূমিতে সরকারের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান চালানো হয়। এই বধ্যভূমি থেকে ৪ হাজার হাড়, ২৪ টি মাথার খুলি ও ৪টি নরকঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।

ঢাকা প্রকাশ : শুধু কি মুক্তিকামী পুরুষদেরকেই এই বধ্যভূমি ও সংলগ্ন এলাকায় হত্যা করা হয়েছিল?

অপূর্ব শর্মা : না। এখানে অনেক নারীকেও হত্যা করা হয়। এদের প্রায় সবারই পরিচয় অজানা রয়ে গেছে।

 

ঢাকা প্রকাশ : কেন এমনটি হলো, নারীদের পরিচয় অজ্ঞাত থাকার বিশেষ কোনও কারন আছে কি?

অপূর্ব শর্মা : নির্যাতিত এবং হত্যার শিকার নারীদের বড়ো একটি অংশ মুণিপুরী সম্প্রদায়ের ছিলেন, বাকিরা হিন্দু এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের। এদের অনেকের পরিবারই হারিয়ে গেছে যুদ্ধের দামামায়। আবার কারো কারো পরিবার চলে গেছে ভারতে। অবশিষ্ট যারা দেশে আছেন তারাও লোকলজ্জার ভয়ে লুকিয়ে রেখেছেন বিভৎসতার পর হত্যার কথা। 

 

ঢাকা প্রকাশ : শহীদ নারীদের পরিচয় বের করতে কি অনুসন্ধান চালাবেন আপনি?

অপূর্ব শর্মা : অবশ্যই। শুধু নারীরা নন, এই বধ্যভূমিতে শহীদদের আত্মপরিচয় বের করতে আমার অনুসন্ধান প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। 

 ঢাকা প্রকাশ : এই বধ্যভূমিতে এতো মুক্তিকামীকে কিভাবে হত্যা করা হয়?

অপূর্ব শর্মা : এই বধ্যভূমি সংলগ্ন সিলেট রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলে একটি বন্দিশালা গড়ে তুলেছিল হানাদার বাহিনীর সদস্যরা। এটি ছিলো সিলেটের অন্যতম বৃহৎ বন্দিশালা। মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামীদের কাছ থেকে তথ্য আদায়ের জন্য প্রথমে তাদেরকে বন্দিশালায় আটক করে তাদের উপর অবর্ননীয় পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হতো। এরপর তাদেরকে সংলগ্ন বধ্যভূমিতে নিয়ে গিয়ে গুলিতে ঝাঝড়া করা হতো বুক।

 

ঢাকা প্রকাশ : শুধু কি গুলি করেই এখানে মুক্তিকামীদের হত্যা করা হয়েছে?

অপূর্ব শর্মা : না। এখানে প্রাণ শহীদদের একটি অংশ মারা গেছেন রক্তশূণ্যতায়।

 

ঢাকা প্রকাশ : রক্তশূণ্যতার বিষয়টি যদি একটু ক্লিয়ার করেন?

অপূর্ব শর্মা : সিলেট রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের বন্দিশালায় আটক মুক্তিকামীদের শরীর থেকে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রক্ত নিতো হানাদার বাহিনীর সদস্যরা। এই রক্ত তারা সীমান্তে বা বিভিন্ন যুদ্ধ ক্ষেত্রে আহত সৈনিকদের অপারেশনের সময় ব্যবহার করতো।একেক জন বন্দির শরীর থেকে যখন খুশি তখন রক্ত নিয়েছে। এর আগে মিলিয়ে নিতো গ্রুপ। অধিক রক্ত নেয়ার কারনে যারা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যেতো তাদের বধ্যভূমিতে ফেলে আসতো।

 

ঢাকা প্রকাশ : মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে এমন কাউকে কি পেয়েছেন যার শরীর থেকে রক্ত নিয়েছে পাকিরা এবং ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন?

অপূর্ব শর্মা : হ্যা, এরকম কয়েকজনকে পেয়েছি। যাদেরকে আটকের পর বন্দিশালায় রাখা হয়েছিল। এদের শরীর থেকে একাধিকবার রক্ত নিয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়। তাদের খোঁজে বের করে তাদের কাছ থেকেও বেশ কিছু তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছি।

 

ঢাকা প্রকাশ : যে বন্দিশালা সম্পর্কে বললেন, সেটি নিয়ে কি কোনো গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশের ইচ্ছে আছে?

অপূর্ব শর্মা : সিলেটের বৃহৎ এই বন্দিশালা নিয়ে আমার গবেষণা প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ নিয়ে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হবে।

 

ঢাকা প্রকাশ : এবার এখানে শহীদ স্মৃতি উদ্যান নির্মাণ প্রসঙ্গে জানতে চাই?

অপূর্ব শর্মা : সিলেট ক্যাডেট কলেজ সংলগ্ন সালুটিকর বধ্যভূমিটি দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। শহীদ পরিবারের অফুরন্ত ইচ্ছায় স্থানীয় জনগনের প্রত্যাশায় সেনাবাহিনী প্রধানের নিকট আবেদনের প্রেক্ষিতে সিলেট এরিয়া কমান্ডারের বিশেষ সহযোগিতায় এখানে একটি স্মৃতি উদ্যান তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব) আবদুস সালাম বীর প্রতীক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জিয়া উদ্দিন আহমদ এখানে শহীদ স্মৃতি উদ্যান নির্মানের উদ্যোগ নেন এবং এর সঙ্গে আমাকে যুক্ত করেন। বধ্যভূমিতে শহীদদের নাম অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয় আমাকে।

 

ঢাকা প্রকাশ : এই কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে কি কোনো কমিটি গঠন করা হয়েছিল?

অপূর্ব শর্মা : হ্যা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার শহীদ স্মৃতি উদ্যান নির্মানে ৩ সদস্যের একটি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়। 

 

ঢাকা প্রকাশ : বধ্যভূমিতে যাদেরকে ধরে এনে হত্যা করা হয়েছিল, কিভাবে খোঁজ পেলেন তাদের?

অপূর্ব শর্মা : এই প্রক্রিয়াটি ছিলো দুরহ এবং কঠিন। সেইসাথে সময় সাপেক্ষ। যদিও ২০১০ সাল থেকে এই বধ্যভূমিতে শহীদদের নাম অনুসন্ধানে কাজ করছিলাম আমি। কিন্তু বিগত ২ বছর একটানা অনুসন্ধান চালিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী পত্র-পত্রিকা, গবেষণা গ্রন্থ এবং মাঠ পর্যায়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান চালিয়ে, প্রতিটি শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে এপর্যন্ত ৬৬ জনের নাম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।

ঢাকা প্রকাশ : এভাবে স্মৃতি উদ্যান নিমার্ণের বিশেষ কোনও কারন আছে কি?

অপূর্ব শর্মা : বিশেষ একটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এমনটি করা হয়েছে। সেটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মত্যাগকে দৃশ্যমান করা। 

 

 

ঢাকা প্রকাশ : এই উদ্যান নিয়ে শহীদদের সন্তান এবং স্বজনদের অনুভূতি কি?

অপূর্ব শর্মা : গত ৪ মার্চ এই উদ্যান উদ্বোধন করা হয়। ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে এক বিঘা জায়গার ওপর নির্মিত এই উদ্যানের উদ্বোধন করেন শহীদ সৈয়দ সিরাজুল আব্দালের স্ত্রী সৈয়দা সাকিনা আব্দাল। এই অনুষ্ঠানে অর্ধশতাধিক শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সেদিন প্রথমবারের মতো তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাদের স্বজনদের। এদের অনেকেই সেদিন কান্নায় ভেঙে পড়েন। সকলেই আপ্লুত। তাদের অনুভূতি এমন তারা যেনো তাদের স্বজনদের খুজে পেয়েছেন ৫২ বছর পর।

 

ঢাকা প্রকাশ : আপনার অনুভূতি জানতে চাই?

অপূর্ব শর্মা : শুধু আমি নই আমরা যারা স্বাধীনতার শহীদ স্মৃতি উদ্যান বাস্তবায়নের সাথে নানাভাবে সম্পৃক্ত ছিলাম সবাই খুশি। উল্লেখ্য যে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার শহীদ স্মৃতি উদ্যান, সিলেট-উদ্বোধন উপলক্ষে একটি স্মারক প্রকাশিত হয়েছে। সেটি সম্পাদনা করেছেন অপূর্ব শর্মা l এই বধ‍্যভূমির ইতিহাস, শহীদদের নামসহ প্রাসঙ্গিক সকল তথ‍্য উপাত্ত‍্য এবং ছবি গ্রন্থটি তে স্থান পেয়েছে।

 

ঢাকা প্রকাশ : দীর্ঘ সময় দেয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ l

অপূর্ব শর্মা : ঢাকাপ্রকাশের প্রিয় সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিবাদন এবং ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

 

ডিএসএস/ 

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া