বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

বিশেষ সাক্ষাৎকার

‘সিংহভাগ শিক্ষক তাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি’

দেশের খ্যাতনামা কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান সংকট, প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ সার্বিক শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে সম্প্রতি তার সঙ্গে কথা হয় ঢাকাপ্রকাশের। সেখানে তিনি এ সংকট উত্তরণের পথও তুলে ধরেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন শেহনাজ পূর্ণা। নিচে সাক্ষাৎকারটির চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল—

ঢাকাপ্রকাশ: শিক্ষাঙ্গনে প্রশ্নপত্র ফাঁস একটি ভয়াবহ সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এর কারণ কি?
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: দেশের শিক্ষাঙ্গনে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে কতগুলো কারণে। একটি হচ্ছে— লোভের সংস্কৃতি, যা ইতোমধ্যে আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সমাজের উচ্চস্তর থেকে নিম্নস্তর অবধি সর্বত্র এই সংস্কৃতি প্রসারমাণ। এখন বেশির ভাগ মানুষ প্রতিমাসে যা আয় করে তার থেকে অনেক বেশি পেতে চায়। কারণ যদি সে তা না পায়, তাহলে স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। একজন শিক্ষক, যার বেতন খুবই কম এবং যার কোনো উপরি উপার্জনের পথ নেই, তার পক্ষে যদি নিজের সম্মানটুকু বজায় রেখে চলতে হয়, তাহলে টিউশন করা ছাড়া উপায় নেই। যারা টিউশন করে টাকা পয়সা উপার্জন করেন, ছেলেমেয়েদের যাদের বিয়ে দিতে হয় ,সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হয়, তাদের পক্ষে সেই ব্যয়ভারটুকু বহন করাও কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। ফলে কেউ কেউ তারা নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে নানা উপায়ে টাকাপয়সা উপার্জন করতে চান। এদের সংখ্যা বাড়ছে।

ঢাকাপ্রকাশ: অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা সবসময়ই শাস্তির বাইরে থেকে যাচ্ছে কেন? তাদের ব্যাপারে আইনগত কি কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: দুঃখের বিষয় হল, আইনের প্রয়োগ আমাদের দেশে হয় না। আইনের শাসনের অবস্থা খুব দুর্বল। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ওঠে সেই দেশে যে দেশে আইনের শাসন নেই। অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি আমাদের পেনাল কোডে আছে। কিন্তু ক্ষমতাধর অপরাধীদের কোনো শাস্তি হয় না। ফলে, অপরাধ করে যখন পার পেয়ে যায় মানুষ, তখন সেটি সোনা চোরাচালান থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের দুর্নীতিতে মানুষ বেপরোয়া হয়ে যায়। মানুষ ভাবে শাস্তি যেহেতু হবে না, কাজেই যেকোনো অপরাধই সিদ্ধ বলে গৃহীত হয়ে যাবে, কোনো সমস্যা হবে না।
এখন প্রশ্ন আসে, এটি সাধারণ দুর্বৃত্তরা করতে পারে কিন্তু শিক্ষকরা কেন করবেন? তার মানে হচ্ছে, শিক্ষকতায় এখন অপরাধপ্রবণ মানুষজন আছেন, অর্থাৎ উঁচু নৈতিকতার মানুষ অনেকেই আসছেন না। শিক্ষকদের প্রতি সম্পূর্ণ সহানুভূতি ও ভালবাসা থেকেই বলছি, সিংহভাগ শিক্ষক তাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। কিন্তু যদি এক শতাংশ শিক্ষকও থাকেন, যারা আদর্শচ্যুত হয়ে নীতি-নৈতিকতার তোয়াক্কা না করে, এ সব করতে থাকেন, তাহলে সমগ্র শিক্ষক সমাজের উপর সেটির একটি প্রভাব পড়বে।

এ ধরনের অপরাধ বাড়ছে এবং আগামীতে হয়ত আরও বাড়বে। এটি কোনো একটি কারণে হয়নি। একদিনেও হয়নি। সামাজিক অস্থিরতা থেকে, লোভের সংস্কৃতি থেকে, আইন শৃঙ্খলার যথাযথ প্রয়োগের অভাব থেকে, দুর্বৃত্তদের আইনের ফাঁক-ফোঁকর গড়িয়ে ঢালাওভাবে পার পেয়ে যাওয়ার উপায় থেকে, এগুলো উদ্ভূত হয়েছে। কিছু দুষ্টুচক্রের কারণে এটি হচ্ছে কিন্তু দুর্নামটি হচ্ছে সমগ্রের। এটি আমাদের মনে রাখতে হবে।

ঢাকাপ্রকাশ: এ রকম একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় কি?
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: এ রকম একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য় আমি মনে করি, প্রথমেই শুরু করতে হবে আইনশৃঙ্খলার সুষ্ঠু প্রয়োগ এবং অপরাধীর বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমে। কোনো অপরাধীকে (যে ধরনের অপরাধই সে করুক না কেন) বিচার প্রক্রিয়ার ভেতর নিয়ে আসতে হবে। অকারণ কালক্ষেপণ করা যাবে না। সেই বিচার প্রক্রিয়া যদি স্বচ্ছ হয়, সত্যিকার অপরাধী যদি শাস্তি পায় এবং কাগজে কলমে সেটি দৃষ্টান্তমূলক হয়ে যায়, তাহলে এটি প্রধান একটি অন্তরায় হয়ে যাবে। সবাই তখন ভয় পেয়ে যাবে যে, এটি করা যাবে না। পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের সময় নৈতিকতার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আমাদের এখানে অনেক নিয়োগ হয় টাকা পয়সার বিনিময়ে। এভাবে যদি শিক্ষক নিয়োগ হয়, তাহলে যে টাকা তিনি খরচ করবেন, নিশ্চয় তা তুলে আনার চেষ্টা করবেন। কীভাবে? এ ধরনের দুর্নীতির মাধমেই তিনি ঘুষ দেওয়া টাকাটা ফেরত পেতে চাইবেন। এই যে ভয়াবহ একটি ধংসের সম্ভাবনা দেখছি শিক্ষকতায়, এটি বাস্তব রূপ ধারণ করেছে দেশের বেশির ভাগ কর্মক্ষেত্রে। এর ফলে আমার মনে হয় না যে, এটি দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়ার মত। আমি যতই সমাধানের কথা বলি, হয়ত তা বলব একটি আদর্শিক দৃষ্টিকোণ থেকে, সাংবাদিক ছাপাবেন একটি আদর্শিক অবস্থান থেকে, সমাজের জনগণ, তারাও এটি বিচার করবে একটি আদর্শিক পরিপ্রেক্ষিতে। কিন্তু সেই আদর্শটুকু আমাদের থাকতে হবে।

আমি শুধু শিক্ষকদের নৈতিকতার কথা বলব না, আমি মনে করি, তাদের বেতন ভাতারও উন্নতি করতে হবে। একজন শিক্ষকের থেকে যখন কম শিক্ষিত একজন ব্যবসায়ী অথবা একজন ঠিকাদারের আয় অনেক গুণ বেশি থাকে বেচারা শিক্ষককে হয়ত চারপাশের মানুষ এমনকি পরিবারের লোকজন থেকেও তার অক্ষমতা নিয়ে কটু কথা শুনতে হয়। শিক্ষকদের যদি আমরা পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিই, বেতন ভাতা বাড়িয়ে দিই, তার পক্ষে দুর্নীতি করার কারণ থাকবে না। দুর্নীতিকে কখনো উৎসাহিত করা যাবে না। যারা অপরাধ করেন, তাদের অপরাধ প্রমাণিত হলে চাকরি থেকে বহিষ্কার করে দুর্নীতির বিষয়টি চিরতরে বাদ দিতে হবে।

ঢাকাপ্রকাশ: এক সময় একাধিক প্রশ্নপত্র সেট ছিল। এখন সেই প্রক্রিয়াটি নেই কেন?
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আমাদের সময় পরীক্ষাপত্রের সেট একটিই থাকতো। তখন এমন একটি নৈতিকতার পরিবেশ ছিল, কেউ নকল করার কথা চিন্তাই করতে পারত না। আমাদের যারা শিক্ষক ছিলেন, যারা কর্মকর্তা ছিলেন, কেরানি ছিলেন, কারো মাথাতেই এ সব চিন্তা আসত না। এখন যেহেতু নকল হয়, সেজন্য আমাদের কিছু চালাকির আশ্রয় নিতে হবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, চালাকির মাধ্যমে আমরা যদি এই পদ্ধতিকে হারাতে চাই, মনে রাখতে হবে এই চালাকিটা ধরে ফেলে আরও বড় চালাকি করার মানুষ কিন্তু বাংলাদেশে আছে। কাজেই আমি বলব, প্রশ্নপত্র পরিবর্তন করলেও কাজ হবে না যদি আমি মানুষটি অসৎ থাকি। যাদের মাধ্যমে প্রশ্নপত্রের সেটগুলো যাবে বিভিন্ন জায়গায়, সেই মানুষগুলো যদি দুর্বৃত্ত হয়, তখন কোনো সেটেই কাজ হবে না। কাজেই আমি মনে করি অধিক সেট তৈরি করা কোনো গুরুত্বপূর্ণ সমাধান নয়। এজন্য বিকল্প ভাবনার অর্থাৎ সেই চালাকির প্রয়োজন। এর জন্য প্রযুক্তি নিশ্চয় আছে। না থাকলে উদ্ভাবন করতে হবে।

আমি আরও একটি বিষয় এখানে সংযুক্ত করতে চাই। সেটি হল এ সব অনাচারের জন্য গুটি কয়েক শিক্ষক জড়িত থাকতে পারেন অথবা অন্য অনেকেই থাকতে পারেন। কিন্তু সব শিক্ষককে এজন্য দায়ী করা ঠিক হবে না। সাধারণীকরণ করা ঠিক হবে না।

ঢাকাপ্রকাশ: সম্প্রতি নতুন কারিকুলাম প্রণীত হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের সৃজনশীল মেধা বিকাশে সেটি কতটুকু কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আপনি মনে করছেন?
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ সব অপরাধ থেকে বের হওয়ার আরেকটি পথ আছে। সম্প্রতি আমরা নতুন কারিকুলাম তৈরি করেছি। প্রাইমারি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত। ভবিষ্যতে এটি আরও সম্প্রসারিত হবে। পরীক্ষা কমিয়ে সৃজনশীলতার দিকে আমাদের বেশি নজর দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে পাঠ্যপুস্তক ও মুখস্ত নির্ভর না হয়ে সৃজনশীলতার চর্চা করে এবং জানার মাধ্যমে নিজের ভাবনার বিকাশ করতে পারে এ বিষয়টির উপর এখন থেকে জোর দেওয়া হবে। এটি সফল হলে নোটবই, গাইডবইয়ের দরকার হবে না।

নোটবই, গাইডবই সিন্ডিকেট করে কিছু মানুষ হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করে। এ সব গাইডবই নির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। টিউশন বাণিজ্যগুলো যারা করে, বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপন দিয়ে এ সব করে, এগুলো থেকে দূরে সরে গিয়ে আমাদের এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করা উচিত, যে শিক্ষাব্যবস্থায় বাচ্চারা নিজেরাই শিক্ষার উপকরণ তৈরি করবে। উদাহরণস্বরূপ— আমি একটি অভিজ্ঞতা ভাগ করতে পারি। নরওয়ের একটি স্কুল পরিদর্শনে গেলে আমাকে বলা হল, আজকে আমাদের বাচ্চারা বাটারফ্লাই অর্থাৎ প্রজাপতি নিয়ে শিখবে। আপনি একটু থাকুন। সেখানে শিক্ষক প্রথমে প্রজাপতি সম্পর্কে বলে দিলেন, তারপর বললেন, তোমরা গুগলে যাও, যতটা পারো জানো ছয়জনের একটি গ্রুপ ব্যস্ত হয়ে পড়ল প্রজাপতি সম্পর্কে জানতে। তারপর ওরা নিজের ভাষায় যে প্রেজেন্টেশন দিল, তাতে এত সুন্দরভাবে প্রজাপতি সম্পর্কে বলল যে, আমি মুগ্ধ হয়ে শুনলাম। এই যে ওরা শিখলো, এটিতো সারাজীবন তাদের মাথায় থাকবে। আমাদের এখানে ছুটির ঘণ্টা বাজলে অর্থাৎ স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা দৌড়ে বাড়ি যেতে চায়, আর ওই দেশে দেখেছি স্কুল ছুটি হলে খুব মন খারাপ করে থাকে। আমাদের বাচ্চাদের যেন আমরা সেভাবেই শিখাতে পারি। আমাদের সেদিকেই যেতে হবে। যে পাঠ্যক্রম চালু হচ্ছে, তা শতভাগ সফল হবে, সেকথা আমি বলছি না, তবে শুরুটাতো হলো। এভাবে যদি আমরা এগোতে পারি, তাহলে আগামী দশ বছরে দ্বিতীয় পর্বে এবং তারপরের পাঁচ বছরে তৃতীয় পর্বে পৌঁছাতে পারবো। ফলে ১৫ থেকে ২০ বছরে একটি নতুন প্রজন্ম আমাদের তৈরি হয়ে যাবে, যারা মুখস্থ-পরীক্ষা-নকল-প্রশ্নপত্র ফাঁস এ রকম নানা ছক থেকে বেরিয়ে সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতিতে বিশ্বমানের শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। এরপর আমাদের আর পেছন ফিরতে হবে না।

ঢাকাপ্রকাশ: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আপনাকেও ধন্যবাদ। সেইসঙ্গে ঢাকাপ্রকাশের সংশ্লিষ্ট সবাইকে ও পাঠকদেরও ধন্যবাদ।

আরএ/

Header Ad
Header Ad

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯

ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় মদপানের ফলে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আরও ৯ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুই যুবকের মৃত্যু হয়। এর আগে, ঈদের সন্ধ্যায় তারা মদপান করেন এবং রাতের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।

মৃতদের মধ্যে রয়েছেন আশাশুনি উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের জাফর আলী খাঁর ছেলে জাকির হোসেন টিটু (৪০) ও সোহরাব গাজীর ছেলে নাজমুল গাজী (২৬)।

এ ঘটনায় অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাহ্মণ তেতুলিয়া গ্রামের সাইদ সরদারের ছেলে ফারুক হোসেন, মোকামখালী গ্রামের কুদ্দুস সরদারের ছেলে ইমরান, মিত্র তেতুলিয়ার মর্জিনা খাতুনের ছেলে ইকবাল, কামরুলের ছেলে লিফটন, আজিবার সরদারের ছেলে রবিউল, শহীদ গাজীর ছেলে তুহিন, আনিসের ছেলে নাজমুলসহ আরও কয়েকজন।

গুরুতর অসুস্থদের মধ্যে ফারুক হোসেনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইমরানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঈদের দিন সন্ধ্যায় আশাশুনির তেতুলিয়া শ্মশানঘাট মাঠে বসে জাকির হোসেন টিটু, নাজমুল গাজীসহ মোট ১১ জন একসঙ্গে মদপান করেন। মদপানের পর তারা বাড়ি ফিরে যান এবং ঘুমিয়ে পড়েন।

এরপর রাত ১২টার দিকে একে একে সবাই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাকির হোসেন টিটু ও নাজমুল গাজী মারা যান। বাকি ৯ জনের চিকিৎসা চলছে।

আশাশুনি থানার ডিউটি অফিসার এসআই ফিরোজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যু অন্য কোনো কারণে হয়েছে কিনা, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।"

নিহতদের মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান, চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের অস্ত্র সংগ্রহ নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়।

এই পদক্ষেপকে ইরানের ওপর আরও চাপ সৃষ্টির একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে বলেছিলেন, নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হলে দেশটির ওপর বোমা হামলা চালানো বা নতুন শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও বিচার বিভাগ যৌথভাবে জানিয়েছে, ইরানের ড্রোন কর্মসূচির অন্যতম প্রধান নির্মাতার জন্য মানববিহীন এয়ার ভেহিকল (ইউএভি)–এর উপকরণ সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি সংস্থা ও দুই ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, "ইরান তাদের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়াসহ তাদের প্রক্সিদের সরবরাহ করছে। রুশ বাহিনী এগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, যা বেসামরিক নাগরিক, মার্কিন বাহিনী ও মিত্রদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা ইরানের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স এবং তাদের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রচলিত অস্ত্রের বিস্তার ব্যাহত করতে কাজ চালিয়ে যাব।"

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে একটি ইরান-ভিত্তিক সংস্থা, দুইজন ইরানি নাগরিক, একটি চীন-ভিত্তিক সংস্থা এবং চারটি সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক সংস্থা।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

Header Ad
Header Ad

বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের দোসররা বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, "পরাজিত শক্তি নিউইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। তারা এই অবৈধ টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করতে চায়।"

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, "শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের নামে একটি নাটক সাজিয়ে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন। এটি মূলত ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল। এমনকি একজন সাবেক আইজিপির বইয়েও এটি উঠে এসেছে।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটেনি। বরং বর্তমানে দেশে ফ্যাসিবাদের কোনো ছোবল নেই, মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্মপালন করতে পারছে, কথা বলতে পারছে। এবার মানুষ নির্ভয়ে ঈদ উদযাপন করেছে, যা অতীতে সম্ভব হয়নি।"

আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, "আওয়ামী লীগ বসে নেই, তারা কালো টাকা ব্যবহার করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তারা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।"

তিনি আরও বলেন, "শেখ হাসিনার নির্দেশে মুগ্ধ ফাইয়াজদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই। প্রশাসনের চারপাশে আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে, যার ফলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।"

রিজভী আহমেদ দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, "নির্বাচনী সরকারই হচ্ছে বৈধ সরকার। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হবে।"

তিনি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সাতক্ষীরায় মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯
ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী
দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের ঘটনা ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আখাউড়ায় ট্রেনের ছাদে টিকটক বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনা, নিহত ২
বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের
বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২