শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৬ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বিশেষ সাক্ষাৎকার

‘সিংহভাগ শিক্ষক তাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি’

দেশের খ্যাতনামা কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান সংকট, প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ সার্বিক শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে সম্প্রতি তার সঙ্গে কথা হয় ঢাকাপ্রকাশের। সেখানে তিনি এ সংকট উত্তরণের পথও তুলে ধরেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন শেহনাজ পূর্ণা। নিচে সাক্ষাৎকারটির চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল—

ঢাকাপ্রকাশ: শিক্ষাঙ্গনে প্রশ্নপত্র ফাঁস একটি ভয়াবহ সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এর কারণ কি?
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: দেশের শিক্ষাঙ্গনে প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে কতগুলো কারণে। একটি হচ্ছে— লোভের সংস্কৃতি, যা ইতোমধ্যে আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সমাজের উচ্চস্তর থেকে নিম্নস্তর অবধি সর্বত্র এই সংস্কৃতি প্রসারমাণ। এখন বেশির ভাগ মানুষ প্রতিমাসে যা আয় করে তার থেকে অনেক বেশি পেতে চায়। কারণ যদি সে তা না পায়, তাহলে স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। একজন শিক্ষক, যার বেতন খুবই কম এবং যার কোনো উপরি উপার্জনের পথ নেই, তার পক্ষে যদি নিজের সম্মানটুকু বজায় রেখে চলতে হয়, তাহলে টিউশন করা ছাড়া উপায় নেই। যারা টিউশন করে টাকা পয়সা উপার্জন করেন, ছেলেমেয়েদের যাদের বিয়ে দিতে হয় ,সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হয়, তাদের পক্ষে সেই ব্যয়ভারটুকু বহন করাও কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। ফলে কেউ কেউ তারা নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে নানা উপায়ে টাকাপয়সা উপার্জন করতে চান। এদের সংখ্যা বাড়ছে।

ঢাকাপ্রকাশ: অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা সবসময়ই শাস্তির বাইরে থেকে যাচ্ছে কেন? তাদের ব্যাপারে আইনগত কি কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: দুঃখের বিষয় হল, আইনের প্রয়োগ আমাদের দেশে হয় না। আইনের শাসনের অবস্থা খুব দুর্বল। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ওঠে সেই দেশে যে দেশে আইনের শাসন নেই। অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি আমাদের পেনাল কোডে আছে। কিন্তু ক্ষমতাধর অপরাধীদের কোনো শাস্তি হয় না। ফলে, অপরাধ করে যখন পার পেয়ে যায় মানুষ, তখন সেটি সোনা চোরাচালান থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের দুর্নীতিতে মানুষ বেপরোয়া হয়ে যায়। মানুষ ভাবে শাস্তি যেহেতু হবে না, কাজেই যেকোনো অপরাধই সিদ্ধ বলে গৃহীত হয়ে যাবে, কোনো সমস্যা হবে না।
এখন প্রশ্ন আসে, এটি সাধারণ দুর্বৃত্তরা করতে পারে কিন্তু শিক্ষকরা কেন করবেন? তার মানে হচ্ছে, শিক্ষকতায় এখন অপরাধপ্রবণ মানুষজন আছেন, অর্থাৎ উঁচু নৈতিকতার মানুষ অনেকেই আসছেন না। শিক্ষকদের প্রতি সম্পূর্ণ সহানুভূতি ও ভালবাসা থেকেই বলছি, সিংহভাগ শিক্ষক তাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। কিন্তু যদি এক শতাংশ শিক্ষকও থাকেন, যারা আদর্শচ্যুত হয়ে নীতি-নৈতিকতার তোয়াক্কা না করে, এ সব করতে থাকেন, তাহলে সমগ্র শিক্ষক সমাজের উপর সেটির একটি প্রভাব পড়বে।

এ ধরনের অপরাধ বাড়ছে এবং আগামীতে হয়ত আরও বাড়বে। এটি কোনো একটি কারণে হয়নি। একদিনেও হয়নি। সামাজিক অস্থিরতা থেকে, লোভের সংস্কৃতি থেকে, আইন শৃঙ্খলার যথাযথ প্রয়োগের অভাব থেকে, দুর্বৃত্তদের আইনের ফাঁক-ফোঁকর গড়িয়ে ঢালাওভাবে পার পেয়ে যাওয়ার উপায় থেকে, এগুলো উদ্ভূত হয়েছে। কিছু দুষ্টুচক্রের কারণে এটি হচ্ছে কিন্তু দুর্নামটি হচ্ছে সমগ্রের। এটি আমাদের মনে রাখতে হবে।

ঢাকাপ্রকাশ: এ রকম একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় কি?
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: এ রকম একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য় আমি মনে করি, প্রথমেই শুরু করতে হবে আইনশৃঙ্খলার সুষ্ঠু প্রয়োগ এবং অপরাধীর বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমে। কোনো অপরাধীকে (যে ধরনের অপরাধই সে করুক না কেন) বিচার প্রক্রিয়ার ভেতর নিয়ে আসতে হবে। অকারণ কালক্ষেপণ করা যাবে না। সেই বিচার প্রক্রিয়া যদি স্বচ্ছ হয়, সত্যিকার অপরাধী যদি শাস্তি পায় এবং কাগজে কলমে সেটি দৃষ্টান্তমূলক হয়ে যায়, তাহলে এটি প্রধান একটি অন্তরায় হয়ে যাবে। সবাই তখন ভয় পেয়ে যাবে যে, এটি করা যাবে না। পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের সময় নৈতিকতার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আমাদের এখানে অনেক নিয়োগ হয় টাকা পয়সার বিনিময়ে। এভাবে যদি শিক্ষক নিয়োগ হয়, তাহলে যে টাকা তিনি খরচ করবেন, নিশ্চয় তা তুলে আনার চেষ্টা করবেন। কীভাবে? এ ধরনের দুর্নীতির মাধমেই তিনি ঘুষ দেওয়া টাকাটা ফেরত পেতে চাইবেন। এই যে ভয়াবহ একটি ধংসের সম্ভাবনা দেখছি শিক্ষকতায়, এটি বাস্তব রূপ ধারণ করেছে দেশের বেশির ভাগ কর্মক্ষেত্রে। এর ফলে আমার মনে হয় না যে, এটি দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়ার মত। আমি যতই সমাধানের কথা বলি, হয়ত তা বলব একটি আদর্শিক দৃষ্টিকোণ থেকে, সাংবাদিক ছাপাবেন একটি আদর্শিক অবস্থান থেকে, সমাজের জনগণ, তারাও এটি বিচার করবে একটি আদর্শিক পরিপ্রেক্ষিতে। কিন্তু সেই আদর্শটুকু আমাদের থাকতে হবে।

আমি শুধু শিক্ষকদের নৈতিকতার কথা বলব না, আমি মনে করি, তাদের বেতন ভাতারও উন্নতি করতে হবে। একজন শিক্ষকের থেকে যখন কম শিক্ষিত একজন ব্যবসায়ী অথবা একজন ঠিকাদারের আয় অনেক গুণ বেশি থাকে বেচারা শিক্ষককে হয়ত চারপাশের মানুষ এমনকি পরিবারের লোকজন থেকেও তার অক্ষমতা নিয়ে কটু কথা শুনতে হয়। শিক্ষকদের যদি আমরা পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিই, বেতন ভাতা বাড়িয়ে দিই, তার পক্ষে দুর্নীতি করার কারণ থাকবে না। দুর্নীতিকে কখনো উৎসাহিত করা যাবে না। যারা অপরাধ করেন, তাদের অপরাধ প্রমাণিত হলে চাকরি থেকে বহিষ্কার করে দুর্নীতির বিষয়টি চিরতরে বাদ দিতে হবে।

ঢাকাপ্রকাশ: এক সময় একাধিক প্রশ্নপত্র সেট ছিল। এখন সেই প্রক্রিয়াটি নেই কেন?
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আমাদের সময় পরীক্ষাপত্রের সেট একটিই থাকতো। তখন এমন একটি নৈতিকতার পরিবেশ ছিল, কেউ নকল করার কথা চিন্তাই করতে পারত না। আমাদের যারা শিক্ষক ছিলেন, যারা কর্মকর্তা ছিলেন, কেরানি ছিলেন, কারো মাথাতেই এ সব চিন্তা আসত না। এখন যেহেতু নকল হয়, সেজন্য আমাদের কিছু চালাকির আশ্রয় নিতে হবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, চালাকির মাধ্যমে আমরা যদি এই পদ্ধতিকে হারাতে চাই, মনে রাখতে হবে এই চালাকিটা ধরে ফেলে আরও বড় চালাকি করার মানুষ কিন্তু বাংলাদেশে আছে। কাজেই আমি বলব, প্রশ্নপত্র পরিবর্তন করলেও কাজ হবে না যদি আমি মানুষটি অসৎ থাকি। যাদের মাধ্যমে প্রশ্নপত্রের সেটগুলো যাবে বিভিন্ন জায়গায়, সেই মানুষগুলো যদি দুর্বৃত্ত হয়, তখন কোনো সেটেই কাজ হবে না। কাজেই আমি মনে করি অধিক সেট তৈরি করা কোনো গুরুত্বপূর্ণ সমাধান নয়। এজন্য বিকল্প ভাবনার অর্থাৎ সেই চালাকির প্রয়োজন। এর জন্য প্রযুক্তি নিশ্চয় আছে। না থাকলে উদ্ভাবন করতে হবে।

আমি আরও একটি বিষয় এখানে সংযুক্ত করতে চাই। সেটি হল এ সব অনাচারের জন্য গুটি কয়েক শিক্ষক জড়িত থাকতে পারেন অথবা অন্য অনেকেই থাকতে পারেন। কিন্তু সব শিক্ষককে এজন্য দায়ী করা ঠিক হবে না। সাধারণীকরণ করা ঠিক হবে না।

ঢাকাপ্রকাশ: সম্প্রতি নতুন কারিকুলাম প্রণীত হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের সৃজনশীল মেধা বিকাশে সেটি কতটুকু কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আপনি মনে করছেন?
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ সব অপরাধ থেকে বের হওয়ার আরেকটি পথ আছে। সম্প্রতি আমরা নতুন কারিকুলাম তৈরি করেছি। প্রাইমারি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত। ভবিষ্যতে এটি আরও সম্প্রসারিত হবে। পরীক্ষা কমিয়ে সৃজনশীলতার দিকে আমাদের বেশি নজর দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে পাঠ্যপুস্তক ও মুখস্ত নির্ভর না হয়ে সৃজনশীলতার চর্চা করে এবং জানার মাধ্যমে নিজের ভাবনার বিকাশ করতে পারে এ বিষয়টির উপর এখন থেকে জোর দেওয়া হবে। এটি সফল হলে নোটবই, গাইডবইয়ের দরকার হবে না।

নোটবই, গাইডবই সিন্ডিকেট করে কিছু মানুষ হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করে। এ সব গাইডবই নির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। টিউশন বাণিজ্যগুলো যারা করে, বড় বড় প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞাপন দিয়ে এ সব করে, এগুলো থেকে দূরে সরে গিয়ে আমাদের এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করা উচিত, যে শিক্ষাব্যবস্থায় বাচ্চারা নিজেরাই শিক্ষার উপকরণ তৈরি করবে। উদাহরণস্বরূপ— আমি একটি অভিজ্ঞতা ভাগ করতে পারি। নরওয়ের একটি স্কুল পরিদর্শনে গেলে আমাকে বলা হল, আজকে আমাদের বাচ্চারা বাটারফ্লাই অর্থাৎ প্রজাপতি নিয়ে শিখবে। আপনি একটু থাকুন। সেখানে শিক্ষক প্রথমে প্রজাপতি সম্পর্কে বলে দিলেন, তারপর বললেন, তোমরা গুগলে যাও, যতটা পারো জানো ছয়জনের একটি গ্রুপ ব্যস্ত হয়ে পড়ল প্রজাপতি সম্পর্কে জানতে। তারপর ওরা নিজের ভাষায় যে প্রেজেন্টেশন দিল, তাতে এত সুন্দরভাবে প্রজাপতি সম্পর্কে বলল যে, আমি মুগ্ধ হয়ে শুনলাম। এই যে ওরা শিখলো, এটিতো সারাজীবন তাদের মাথায় থাকবে। আমাদের এখানে ছুটির ঘণ্টা বাজলে অর্থাৎ স্কুল ছুটির পরে বাচ্চারা দৌড়ে বাড়ি যেতে চায়, আর ওই দেশে দেখেছি স্কুল ছুটি হলে খুব মন খারাপ করে থাকে। আমাদের বাচ্চাদের যেন আমরা সেভাবেই শিখাতে পারি। আমাদের সেদিকেই যেতে হবে। যে পাঠ্যক্রম চালু হচ্ছে, তা শতভাগ সফল হবে, সেকথা আমি বলছি না, তবে শুরুটাতো হলো। এভাবে যদি আমরা এগোতে পারি, তাহলে আগামী দশ বছরে দ্বিতীয় পর্বে এবং তারপরের পাঁচ বছরে তৃতীয় পর্বে পৌঁছাতে পারবো। ফলে ১৫ থেকে ২০ বছরে একটি নতুন প্রজন্ম আমাদের তৈরি হয়ে যাবে, যারা মুখস্থ-পরীক্ষা-নকল-প্রশ্নপত্র ফাঁস এ রকম নানা ছক থেকে বেরিয়ে সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতিতে বিশ্বমানের শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। এরপর আমাদের আর পেছন ফিরতে হবে না।

ঢাকাপ্রকাশ: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: আপনাকেও ধন্যবাদ। সেইসঙ্গে ঢাকাপ্রকাশের সংশ্লিষ্ট সবাইকে ও পাঠকদেরও ধন্যবাদ।

আরএ/

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা। ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গায় সকল সড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত ভ্যান (পাখিভ্যান) ও  ইজিবাইক চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আগামীকাল রোববারের মধ্যে প্রশাসন তাদের দাবি বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে সোমবার সকাল থেকে জেলার সকল পথে পরিবহন চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত  এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।  সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম মঈন উদ্দিন লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন এবং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের আগে জেলায় ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক,পাখিভ্যান, থ্রি হুইলার সহ অন্য অবৈধ যানগুলো যেভাবে চলাচল করতো, সেভাবেই তারা চলাচল করুক এই দাবিতে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন। প্রশাসন বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা সেটা রক্ষা করেনি।

কর্মসূচি ঘোষণাকালে বলা হয়, ২৩ ডিসেম্বর সোমবার থেকে টানা দুইদিন পরিবহন চলাচল বন্ধের মধ্যে প্রশাসন যদি বসে সমাধানের উদ্যোগ না নেয়, তাহলে আগামী ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে অভ্যন্তরীণ পথের পাশাপাশি দূরপাল্লার সকল রুটে পরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হবে। এসময় চুয়াডাঙ্গা জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান ইমাম বকুল, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম সহ সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

জুমার দিনে ফিলিস্তিনের মসজিদে আগুন দিল ইসরায়েলিরা

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতকারীরা একটি মসজিদে আগুন লাগিয়ে ভবনের দেওয়ালে বিদ্বেষমূলক স্লোগান লিখে গেছে। শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) জুমার দিন সকালে সালফিতের মারদা গ্রামে বার আল-ওয়ালিদাইন মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, মসজিদের সামনের দেয়ালে হিব্রু ভাষায় ‘প্রতিশোধ’, ‘আরবদের মৃত্যু হোক’সহ বিভিন্ন স্লোগান লিখে রেখেছেন ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা। এ ছাড়া উত্তর পশ্চিম তীরের মারদা গ্রামের মসজিদের প্রবেশপথে কালো পোড়া দাগ দেখা গেছে। তবে আগুন বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ার আগেই তা নেভানো হয়।

ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনাস্থল থেকে সাক্ষ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করছে।

মারদা গ্রাম পরিষদের প্রধান নাসফাত আল-খুফাশ বলেন, শুক্রবার মারদা গ্রাম একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলায় জেগে উঠল। বসতিস্থাপনকারী গোষ্ঠী বীর আল-ওয়ালিদিন মসজিদে আগুন দেয়। বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠীগুলোর এই ধরনের আক্রমণ ধারাবাহিক ও পরিকল্পিত।

ইসরায়েলি পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেত এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুতর বলে মনে করে। দোষীদের কঠোর বিচার নিশ্চিত করতে তারা দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।

এদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই আক্রমণকে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সংঘটিত অপরাধের ধারাবাহিক সর্বশেষ ঘটনা বলে নিন্দা জানিয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষায় সহায়তার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে আবেদন জানিয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্য মতে, অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৩০ লাখ ফিলিস্তিনির মধ্যে ৭ লক্ষাধিক ইসরায়েলি বসবাস করে। ১৯৬৭ সালে এই দুটি অঞ্চল দখল করে নেয় ইসরায়েল। তবে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এই দখলকৃত ভূমিতে গড়ে ওঠা ইসরায়েলি বসতিগুলোকে অবৈধ বলে মনে করে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা দক্ষিণ ইসরায়েলে আক্রমণ চালানোর পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

Header Ad
Header Ad

গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত অন্তত ১০

গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় ইসলামি জলসাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পল্টন মোড়ে।

সাবেক ওই আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমানে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বলে জানা গেছে। এর আগে তিনি বগুড়া শহর যুবলীগের বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, সাঘাটা ইউনিয়নের সরদারপাড়া গ্রামে একটি ইসলামি মাহফিলের আয়োজনে অতিথি করাকে কেন্দ্র করে উপজেলার পল্টন মোড়ে জামায়াত-বিএনপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় সাঘাটা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সেলিম আহমেদ তুলিপসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হন।

পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সাঘাটা উপজেলা ও জেলা বিএনপির সদস্য কামরুজ্জামান সোহাগ বলেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপিতে যোগদান করা সাবেক যুবলীগ নেতা নাহিদুজ্জামান নিশাদকে একটি ইসলামি মাহফিলে অতিথি করেন জামায়াতের আয়োজকরা। সেখানে উপজেলা বিএনপির প্রকৃত কোনও নেতাকে অতিথির তালিকায় রাখা হয়নি। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সেলিম আহমেদ তুলিপকে মারপিট ও মাথায় আঘাত করা হয়। পরে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় অভিযোগ দিতে জেলা বিএনপির নেতারা থানায় আসেন বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম জানান, একটি ইসলামি মাহফিলকে কেন্দ্র করে মূলত জামায়াত-বিএনপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের ৮ থেকে ১০ জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ যানবাহন বন্ধ না হলে গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা
জুমার দিনে ফিলিস্তিনের মসজিদে আগুন দিল ইসরায়েলিরা
গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত অন্তত ১০
আশ্বস্ত করছি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না: প্রধান উপদেষ্টা
সত্যি কি থাপ্পড় মেরেছিলেন শাহরুখ, ৯ বছর পর মুখ খুললেন হানি সিং
মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তর, বগুড়ার শ্রাবণী এখন শ্রাবণ
বাড়ি ফেরার পথে সড়কে ঝরে গেল বাবা-ছেলের প্রাণ
ছাত্রলীগ নেতা মুক্তাদির শিক্ষার্থীদের হাতে আটক, থানায় সোপর্দ
এ দেশে মেজরিটি–মাইনরিটি বলে কিছু নেই: জামায়াতের আমির
আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, সবচেয়ে ছোট দিন আগামীকাল
রাজনীতিবিদকে বিয়ে করতে চান ফারজানা সিঁথি
গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ
পাকিস্তানে জঙ্গি হামলায় ১৬ সেনা নিহত
বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত সচিব ইসমাইল বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার
হামজাকে নিয়ে যা বললেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল
বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতি, বহু ধর্মের বিকাশে কাজ করতে চায় কমিশন: ফারুকী
অবৈধ অনুপ্রেবেশের অভিযোগে ত্রিপুরায় শিশুসহ ৬ বাংলাদেশি গ্রেফতার
টাঙ্গাইলে বাস-সিএনজির সংঘর্ষ: নিহত ২
চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি, দুদিনের মধ্যে অভিযান: ডিএমপি কমিশনার