শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা এখনো তাড়িয়ে বেড়ায়: সাঈদ খোকন

আজ (রবিবার) একুশে আগস্ট। প্রায় দেড় যুগ আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার উদ্দেশে চালানো হয়েছিল ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে চালানো সেই গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারান আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভী রহমানসহ ২৪ জন।

আর স্প্লিন্টারের ক্ষত নিয়ে অনেকেই দুঃসহ যন্ত্রণা আর সেদিনের সেই ভয়ংকর হামলার স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়াচ্ছেন আজও। অনেকে হয়েছেন স্বজন হারিয়ে বাকরুদ্ধ। তাদেরই একজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। যিনি নিজে আহত হয়েছে। হারিয়েছেন প্রিয় বাবাকেও।

ঢাকাপ্রকাশ-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সেই দিনের সেই ভয়াবহতার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।

ঢাকাপ্রকাশ: একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় আপনি তো ঘটনাস্থলে ছিলেন। সে দিনের সেই ভয়াল হামলা নিয়ে আপনার স্মৃতিকথা জানতে চাই?

মোহাম্মদ সাঈদ খোকন: তৎকালীন সময়ে ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। তৎকালীন সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে দেশে জঙ্গিবাদের চরম উত্থান ঘটে। একের পর এক বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি হামলা ঘটনা ঘটছিল। এমনি একটি সময়ে ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন ব্রিটিশ হাই কমিশনারের উপর বোমা হামলা চালানো হয় সিলেট হযরত শাহজালাল (রা.) মাজারে।

এ ছাড়া, দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছিল। এ সমস্ত বোমা হামলার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ একটি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। সে সময় আমার প্রয়াত পিতা মোহাম্মদ হানিফ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি ছিলাম সাংগঠনিক সম্পাদক। সেদিন সেই সমাবেশের প্রাম্ভিক পর্যায়ে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে সমাবেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করি এবং আমি সঞ্চালনা শুরু করি। অল্প কিছুক্ষণ পর আরেকজনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে আমি পুরনো ঢাকায় চলে যাই। পুরনো ঢাকার একটি বিশাল মিছিলের নেতৃত্ব দিয়ে সমাবেশ স্থলে আনার জন্য সেখানে যাই। পুরনো ঢাকা থেকে হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটিয়ে বিশাল মিছিল নিয়ে আমরা বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হই। মিছিল আসার পর আমি সেখানে সবাইকে অবস্থান করিয়ে দিয়ে দিকে মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাই। ট্রাকের মঞ্চে যে কাঠের সিঁড়ি করা হয়েছিল আমি সেই সিঁড়ির পাশে ছিলাম। আমাদের দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী আমার ঠিক দুই তিন হাত পেছনেই ছিলেন। আমার প্রয়াত পিতা ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ নেত্রীর একেবারেই কাছাকাছি ছিলেন। জাতীয় নেতারা ছিলেন। সে সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সবার মাঝেই একটা শঙ্কা ছিল, কখন কী হয়, কখন কী ঘটে। সারাদেশে তখন একের পর এক সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চলছিল। মুখে মুখে প্রচার ছিল যে আওয়ামী লীগের সমাবেশ এবং আমাদের নেত্রীর উপর হামলা চালানো হতে পারে। এরকম একটা কথা চাউড় ছিল বেশ কিছুদিন ধরে। এমন টানটান অবস্থাতে সমাবেশ যখন শেষ পর্যায়ে নেত্রী বক্তব্য শেষ করেন, তারপর আবার ফটোসেশনের জন্য তিনি ফিরে যান। ঠিক সেই মুহূর্তে প্রথম গ্রেনেডটি বিস্ফোরিত হয় আমার খুব কাছাকাছি। প্রথম বোমা বিস্ফোরিত হওয়ার পর মনে হল আমার দুইটা পা জ্বলসে গেছে। আগুন ধরিয়ে দিলে যে রকম অবস্থা ঠিক সেরকম অবস্থায হয়ে যায় আমার দুটো পায়ের। আমি লাফ দিয়ে ট্রাকের উপর পড়ে যাই। তারপর একের পর এক গ্রেনেড বিস্ফোরণ হতে থাকে। আমার উপরেও অনেকে পড়ে যায়। এ সময় আমার বাবা নেত্রীকে আগলে ধরে রাখেন। বাবার সারা শরীরে রক্ত ঝরছিল। স্প্রিন্টারের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত শরীরের সমস্ত রক্ত নেত্রীর গায়ে গড়িয়ে পড়ছিল। নেত্রী শাড়ি বাবার রক্তে ভিজে গিয়েছিল।

গ্রেনেড হামলা কিছুটা বন্ধ হওয়ার পর আমার পিতা এবং কেন্দ্রীয় নেতারা যারা ছিলেন নেত্রীকে গাড়িতে তুলে দিলেন। আমার উপর অনেক লোকজন পড়া ছিল তারা একে একে নেমে পড়ে। আমার উঠতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। কোনো মতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সিঁড়ি থেকে নেমে যখন পার্টি অফিসের গেটের সামনে আমার বাবাকে দেখি। আমি চিৎকার দিয়ে উঠি। আমার বাবার সারা শরীরে রক্ত। আমার পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। সে সময় বাবাকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করি ঠিক তখনই আরও একটি গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়। আমি এবং আমার আব্বা দুজনই মাটিতে লুটিয়ে পড়ি এবং কিছুক্ষণ পর আমাদের কর্মীরা আমাদেরকে উদ্ধার করে যুবলীগের অফিসে নিয়ে আমাদের সেখানে বসান। পার্টি অফিসের সামনে লাশ পড়ে আছে। রক্তে ভিজে আছে সারা রাস্তা। বীভৎস একটা পরিস্থিতি। আমাদের কর্মীরা আমাদেরকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ঢাকাপ্রকাশ: পরবর্তী সময়ে দেখেছি আপনার বাবা আর আপনি একই হাসপাতালে পাশাপাশি বেডে চিকিৎসা নিয়েছেন। সেসময় আপনার বাবার সঙ্গে কোনো কথা হতো?

মোহাম্মদ সাঈদ খোকন: হ্যাঁ, বাবা-ছেলে একই কেবিনে পাশাপাশি সিটে চিকিৎসা নিচ্ছিলাম। অত্যন্ত মর্মান্তিক, অত্যন্ত বেদনাদায়ক সেই স্মৃতি। যেটা আমাকে আজও তাড়িয়ে বেড়ায়। বাবাকে দেখলাম নেত্রীর প্রতি তার আনুগত্য, ভালোবাসা, কতটা গভীর থাকলে জীবনের মায়া ত্যাগ করে সমস্ত কিছু উপেক্ষা করে নেত্রীর জন্য জীবন উৎসর্গ করলেন; দেখলাম। এটা আমাদের জন্য শিক্ষণীয়, আমাদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসাবে থেকে যাবে যুগের পর যুগ। নেতৃত্বের প্রতি আস্থা, বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতি আস্থা, যে কোন পরিস্থিতিতে, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে নেত্রী পাশে থাকার যে আদর্শ তিনি আমাদের দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে আগামী দিনের পথ চলায় এটা থেকে যাবে।

ঢাকাপ্রকাশ: যেহেতু আপনারা পাশাপাশি সিটেই ভর্তি ছিলেন। যখন আপনার জ্ঞান ফিরল তখন আপনার বাবা কি রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনো কথা বলেছিলেন?

মোহাম্মদ সাঈদ খোকন: আমরা অবাক ছিলাম, নির্বাক ছিলাম। একটা দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এই ধরনের বর্বর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ কোনো মানুষ চালাতে পারে বা কোনো গোষ্ঠী চালাতে পারে-এটা আমাদের জন্য অনেকটা বিস্ময়কর ছিল। কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব এ ধরনের কর্মকাণ্ড করতে পারে-এটা আমাদের কাছে অবিশ্বাস্য ছিল। এই ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা, এই ঘটনা ঘটতে পারে, এমন একটি আশঙ্কা আমার বাবার হয়তো বা ছিল। তিনি ঘটনার দুদিন আগে আমাকে ডেকে বিষয়টি অবহিত করবার জন্য সুধাসদনে পাঠান। আমি আমাদের নেত্রীর কাছে বিষয়টি অবহিত করি। এ রকম ঘটনা সত্যি বিস্ময়কর। জঙ্গিবাদ একটি দেশের জন্য কতটা ক্ষতির কারণ হতে পারে, রাজনীতির জন্য কতটা ক্ষতির কারণ হতে পারে, একটি রাজনৈতিক নেতৃত্ব যখন উগ্র চিন্তায় উগ্র ভাবনায় মেতে ওঠে, সে দেশের কী পরিণতি হয় সেটা আমরা দেখেছি।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি কি মনে করেন আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্যই কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠী এটা করেছে?

মোহাম্মদ সাঈদ খোকন: এটাতো অবশ্যই। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে শূন্য করবার লক্ষ্য নিয়ে এই হত্যাযজ্ঞটি চালানো হয়েছিল। আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশে, খুন করার উদ্দেশে এভাবে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে খুন করার জন্য, হত্যা করার জন্যই গ্রেনেড হামলাটি চালানো হয়েছিল। এদেশ থেকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে যদি শূন্য করা যায়, এদেশ থেকে আওয়ামী লীগকে যদি ধ্বংস করে দেওয়া যায়, তাহলে একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য তাদের অবশ্যই ছিল। যে লক্ষ্যে তারা যেতে চেয়েছিল। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি সেদিন আল্লাহ নেত্রীকে প্রাণে বাঁচিয়েছেন। আমার পিতা হয়তো উসিলা ছিল তিনি তার নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে নেত্রীর প্রাণ বাঁচিয়েছেন সেদিন।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি বলেছেন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। সেই হত্যাকাণ্ডের বিচার কি হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন বা বিচারে সন্তুষ্টু কি না?

মোহাম্মদ সাঈদ খোকন: ইতোমধ্যে যে রায়টা ঘোষণা হয়েছে। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে আহত। আমার পায়ে এখনো স্প্লিন্টার আছে। আমার বাম পায়ে এখনো সমস্যা হয়। মাঝে মাঝেই বাম পায়ে সমস্যা হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে আহত আক্রান্ত, আমি আক্রান্ত পরিবারের একজন সদস্য। আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি। এই গ্রেনেড হামলার অসংখ্য স্প্লিন্টারের কারণে আমার বাবার চিকিৎসা আমরা করাতে পারেনি, ধীরে ধীরে তিনি পৃথিবী থেকে চলে যান। আমি একজন আহত ভুক্তভোগী এবং ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য হিসেবে বলব, যে বিচার হয়েছে সেটার অবশ্যই পুনর্বিবেচনা হওয়া উচিত। এবং এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে যিনি চিহ্নিত হয়েছেন তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আমি আমি মনে করি তার সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া উচিত এবং দ্রুত এই বিচারের রায় কার্যকর করে এ ধরনের ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার দৃষ্টান্ত দ্রুত স্থাপন করা উচিত।

ঢাকাপ্রকাশ: আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য আপনার বাবা যেভাবে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। আগামীতে সেই আনুগত্য থাকবে কি না?

মোহাম্মদ সাঈদ খোকন: শুধু আমি নই, আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীর জন্য মোহাম্মদ হানিফ অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। সেই দৃষ্টান্তকে সামনে রেখে সকল দুর্যোগে প্রাণপ্রিয় নেত্রীর সঙ্গে থাকা, পাশে থাকা এবং সর্বোচ্চ ত্যাগের প্রস্তুত থেকে বর্তমানে যে ঘোলাটে পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে সেটা থেকে আমাদেরকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। সেটা থেকে আমাদেরকে মুক্ত হতে হবে।

ঢাকাপ্রকাশ: দীর্ঘক্ষণ সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

মোহাম্মদ সাঈদ খোকন: আপনার মাধ্যমে ঢাকাপ্রকাশ-এর সবাইকে ধন্যবাদ।


এনএইচবি/এমএমএ/

Header Ad

অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের

ছবি: সংগৃহীত

গত অক্টোবর মাসে দেশজুড়ে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৩৪টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৭৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৮৭৫ জন। এরমধ্যে ৪৫২টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৮১৫ জন। একই সময়ে রেলপথে ৬৩টি দুর্ঘটনায় ৭৬ নিহত, ২৪ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৯টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ৩৬ জন আহত এবং ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

এছাড়া এই সময়ে ১৩৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৩ জন নিহত, ২৩৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩০.৫৩ শতাংশ, নিহত ৩৪.৩১ শতাংশ ও আহত ২৯.৩২ শতাংশ।

শনিবার (২৩ অক্টোবর) সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। সংগঠনটি বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয়, আঞ্চলিক, অনলাইন এবং ইলেক্ট্রনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথের সংগঠিত দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৪৯ চালক, ১৩৭ পথচারী, ৫১ পরিবহন শ্রমিক, ৭৩ শিক্ষার্থী, ১৮ শিক্ষক, ৭৬ নারী, ৬২ শিশু, ৫ চিকিৎসক, ৯ সাংবাদিক এবং ১৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে ৬ জন পুলিশ সদস্য, ৩ সেনা সদস্য, ১ আনসার সদস্য, ১২৪ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ১১৭ জন পথচারী, ৫৮ জন নারী, ৫১ জন শিশু, ৪৯ জন শিক্ষার্থী, ৩২ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৫ জন শিক্ষক, ৪ জন চিকিৎসক, ৬ জন সাংবাদিক, ১৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৬৩১টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৪.৪১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২.৫০ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৮.৫৪ শতাংশ বাস, ১৭.৯১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৩.৯৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৬.৬৫ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.০২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৯.৪৮ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৫.২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪.৭৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৯.৫১ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.২৫ শতাংশ ট্রেন যাববাহনে সংঘর্ষ। এবং চাকায় ওড়না পেছিয়ে ০.৭৫ শতাংশ।

সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— দেশের সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের অনুপস্থিতি সুযোগে আইন লঙ্ঘন করে যানবাহনের অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় এবং অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়া; এসব গর্তের কারণে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে; জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টানিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন এবং অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানোকে।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে— জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মত ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা; উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেফটি অডিট করা; মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা।

Header Ad

গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব

ছবি: সংগৃহীত

আর মাত্র তিন পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের গায়ানায় পর্দা উঠবে গ্লোবাল সুপার লিগের প্রথম আসরের। বৈশ্বিক ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোর চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে উইন্ডিজ ক্রিকেট আয়োজন করছে গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লিগ, আর এই টুর্নামেন্টের জন্য তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিবকে দলে ভিড়িয়েছে স্বাগতিক গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এই টাইগার পেসার।

এর আগে বাংলাদেশ সময় বুধবার দুপুরে ঢাকা ত্যাগ করেছিলেন সাকিব। এরপর গায়ানায় সাকিবকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় ফ্যাঞ্চাইজিটি। নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্ট করে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে গ্লোবাল সুপার লিগ কতৃপক্ষ।

চোটের কারণে এই আসরে সাকিবের খেলা নিয়ে এতদিন অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন সাকিব। কিন্তু গত সোমবার ফিটনেস টেস্ট দিয়ে সেই অনিশ্চিয়তা দূর করেছেন তিনি। যার ফলে বিসিবির কাছ থেকে এই লিগে খেলার অনুমতি পান সাকিব।

রংপুর রাইডার্স ও গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সসহ টুর্নামেন্টটিতে অংশ নেবে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্স, ইংল্যান্ডের হ্যাম্পশায়ার ও অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত খেলা ভিক্টোরিয়ান ক্রিকেট দল।

টুর্নামেন্টটির প্রথম রাউন্ডে প্রতিটি দলই একে অপরের মুখোমুখি হবে। পাঁচ দলের মধ্য থেকে চার দল যাবে সেমিফাইনালে। এরপর আগামী ৭ ডিসেম্বর হবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল।

Header Ad

আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার

ছবি: সংগৃহীত

আর মাত্র ২৪ ঘন্টার অপেক্ষা তারপর আগামীকাল রোববার (২৪ নভেম্বর) সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত হবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) মেগা নিলাম। তবে সেই নিলামের আগেই বড় দুঃসংবাদ পেলেন ভারতীয় দুই ক্রিকেটার মানীশ পান্ডে ও সৃজিত কৃষ্ণ। সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের কারণে নিষিদ্ধ হয়েছেন তারা।এছাড়াও সন্দেহজনকের তালিকায় রাখা হয়েছে আরও তিনজন ক্রিকেটার।

নিষিদ্ধ হওয়া দুই ক্রিকেটার হলেন- মনীশ পান্ডে এবং সৃজিত কৃষ্ণ। দুজনই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এবং আইপিএলে পরিচিত মুখ। যদিও তারা ব্যাটার হিসেবে খেলতে পারবেন, তবু এই নিষেধাজ্ঞা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে।

এছাড়া সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের তালিকায় থাকা অন্যরা হলেন- দীপক হুদা, সৌরভ দুবে এবং কেসি কারিয়াপ্পা। যদিও এই ৫ ক্রিকেটারের কাউকেই দল রিটেইন করেনি। তবে নিলাম থেকে তাদের দল পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বিসিসিআইয়ের এমন খবর জানার পর দলগুলো তাদের দলে ভেড়াতে নিশ্চয় ভাববে।

আইপিএলের মতো বড় টুর্নামেন্টে এমন বিষয়গুলো খেলোয়াড়দের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশন সংশোধন করা হলে তারা আবার ফিরে আসতে পারবেন। তবে দলগুলোর দৃষ্টিকোণ থেকে, এই নিষেধাজ্ঞা এবং সন্দেহ তাদের নিলামে প্রাধান্য হারানোর কারণ হতে পারে।

এদিকে, গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ভারতীয় বোর্ড জানিয়েছে, আগামী বছর আইপিএল শুরু ১৪ মার্চ থেকে। জানিয়ে দেয়া হয়েছে ফাইনালের দিনও। আসন্ন আইপিএলের ফাইনাল হবে ২৫ মে। শুধু আগামী বছরের নয়, ২০২৭ পর্যন্ত আইপিএলের শুরু এবং ফাইনালের দিন জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২