রাশিয়া-ক্রিমিয়া সংযোগ সেতুতে বিস্ফোরণ
রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার সংযোগ স্থাপনকারী সেতুতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এর ফলে এ সেতুর আংশিক পানিতে ধসে পড়েছে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, স্থানীয় সময় সকাল ৬টার পর এ ঘটনা ঘটে। রাশিয়ার ন্যাশনাল অ্যান্টি-টেররিস্ট কমিটির মতে, প্রথমে একটি লরি উড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর সমান্তরাল রেল ব্রিজে একটি মালবাহী ট্রেনের সাতটি জ্বালানি কুণ্ডে আগুন ধরে যায়।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ঠিক কী ঘটেছে তা পরীক্ষা করার জন্য এবং মেরামতের তদারকির জন্য একটি সরকারি কমিশন গঠন করেছেন। রাশিয়ার তদন্ত কমিটি একটি ফৌজদারি মামলাও চালু করেছে।
এদিন স্থানীয় সময় সকালে ক্রিমিয়া থেকে সড়কপথে রাশিয়ায় যাওয়ার একমাত্র পথ কার্চ সেতুতে বিস্ফোরণটি ঘটে। বিস্ফোরণের ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে সেতুতে থাকা একটি তেলবাহী ট্রেনের সাতটি ট্যাংকারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণে ধসে পড়ে সেতুতে গাড়ি চলাচলের দুটি লেন। এ ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
ইউক্রেনীয়দের মাধ্যমে সেতুতে বিস্ফোরণের বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। গত এপ্রিলে কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ মস্কোভা ডুবির সঙ্গে সেতু বিস্ফোরণকে তুলনা করা হচ্ছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সুসংবাদ পাচ্ছেন ইউক্রেনীয়রা। দেশটির সেনারা রুশ বাহিনী দখলে নেওয়া বিভিন্ন এলাকা পুনরায় নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছেন।
এ অবস্থায় ধসে পড়া ও জ্বলন্ত কার্চ সেতু দেখে ইউক্রেনীয়দের মনোবল বাড়ছে। তাঁদের এই প্রতিক্রিয়াকে সন্ত্রাসী ভাবনার প্রতিফলন হিসেবে দেখছে রাশিয়া।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি সেতু ধসের ঘটনা নিয়ে ইউক্রেনীয়রা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা করছেন।
এ ছাড়া, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সেতু ধসের ঘটনাকে গত এপ্রিলে কৃষ্ণসাগরে রুশ যুদ্ধজাহাজ মস্কোভা ডুবির সঙ্গে তুলনা করছে। তিনি আরও বলেছেন, সেতু ধসের ঘটনা নিয়ে কিয়েভের প্রতিক্রিয়া এক ধরনের সন্ত্রাসী আচরণ।
ক্রিমিয়ায় নিযুক্ত রুশ প্রধান সেরগেই আকিসনভ স্থানীয় জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। জনগণকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেছেন, ক্রিমিয়া উপদ্বীপে জ্বালানি ও খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুত আছে।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চলকে নিজেদের অংশ ঘোষণা করে রাশিয়া। পরে একটি গণভোটের মধ্য দিয়ে অঞ্চলটিকে রাশিয়ার সঙ্গে অঙ্গীভূত করা হয়। এরপর যোগাযোগের জন্য এই সেতু তৈরি করা হয়।
২০১৮ সালে সেতুটি উদ্বোধন করেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ সেনাদের কাছে সামরিক রসদ পাঠানোর ক্ষেত্রে এই সেতু ব্যবহার করা হচ্ছে।
এমএমএ/