পাবনার আটঘরিয়ায় দিনে-দুপুরে বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট
বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট (ইনসটে: প্রধান অভিযুক্ত মনোয়ারুল ইসলাম আলম)। ছবি: সংগৃহীত
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার বয়রা গ্রামের আব্দুল মান্নানের বাড়িতে দিনে দুপুরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গত ২০ নভেম্বর দুপুরে এই হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীর পরিবারের দাবি আটঘরিয়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব মনোয়ারুল ইসলাম আলমের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের এক সদস্য জানান, আলমের নেতৃত্বে ২০-২৫টি মোটরসাইকেল এবং তিনটি সিএনজিতে করে প্রায় অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী আমার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এসময় তাদের সাথে আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি এবং বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ছিল। লুটপাটের পর তারা বাড়িতে থাকা সকলকে অস্ত্র দেখিয়ে হত্যার হুমকি দেয় এবং ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মনোয়ারুল ইসলাম আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর জামাই পারভেজ আহম্মেদ পলাশ জানান, এ ঘটনা শোনার পর প্রথমে থানায় মামলা করার জন্য গেলে সেখানে মামলা নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে আমি বাদী হয়ে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মনোয়ার হোসেন আলমকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের করি। মামলায় মনোয়ার ছাড়াও আরও ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪০/৫০ জনকে আমসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামীরা জোটবদ্ধ হয়ে বাদী পলাশের শ্বশুর মো. আব্দুল মান্নানের বাড়িতে গত ২০ নভেম্বর দুপুর অনুমান ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে হাতে দোনালা বন্দুক, একনালা বন্দুক, পিস্তল, রামদা, চাইনিজ কুড়াল বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে অন্যায় ও অবৈধ ভাবে বাদীর শ্বশুর বাড়িতে প্রবেশ করে। এসময় অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকলে বাদীর শ্বশুর নিষেধ করলে আসামিগণ অতর্কিতভাবে বাদীর শ্বশুর মো. আব্দুল মান্নান এর বাড়ির সামনে গিয়ে ১নং আসামি মনোয়ার হোসেন আলম এর হুকুমে ২নং আসামি মিন্টু তার হাতে থাকা দোনালা বন্দুক দ্বারা বাদীর শ্বশুর বাড়ির একটি জানালা দিয়ে পরপর দুইটি গুলি করলে বাদীর ছোট দুই সন্তান ইহান পারভেজ ও আরিশা খাটের নিচে লুকায়। ফলে উক্ত গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
এজাহারে আও বলা হয়েছে, ৩নং আসামি মুঞ্জু তার হাতে থাকা বন্দুক দিয়ে বাদীর শ্বশুর বাড়ির অন্যান্য জানালায় পরপর কয়েকটি গুলি করলে জানালার কাঁচ ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসময় বাদীর শ্বশুর বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে পালালে ৫নং আসামি ওলি তাকে হত্যার করার উদ্দেশ্যে গুলি করে। কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বাদীর শ্বশুর প্রাণে বেঁচে যায়। ৪নং আসামি টিটু ও ৮নং আসামি আরিফ মেম্বার বাড়ির ড্রইং রুমের দরজা ভেঙ্গে ফেলেন। বাড়ির ড্রইং রুমের দরজা দিয়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে ১নং আসামি মনোয়ার হোসেন আলম ও ২নং আসামি মিন্টুদ্বয় বাদীর শাশুড়ি মোছা. জায়দা পারভীন এর মাথায় বন্দুক ঠেফকিয়ে আলমারির চাবি নিয়ে বাদীর স্ত্রী সোনিয়ার রুমের ভিতর ঢুকে আলমারি খুলে নগদ ১,২০,০০০/- (এক লক্ষ বিশ হাজার) টাকা ও ০৫ ভরি স্বর্ণালংকার যার মূল্য ৬,৭০,০০০/- টাকা লুট করে নেয়।
এরপর আসামি মঞ্জু, টিটু, ওলিগন বাদীর শ্বশুরের রুমের আলমারি খুলে নগদ ৮৫,০০০/- টাকা এবং শাশুড়ির ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও খালা শাশুড়ির ৭ ভরি স্বর্ণালংকার ২৯,৪৮,০০০/- টাকা লুট করে নেয়। পরবর্তীতে ১-৮ নং আসারা বাদীর শ্বাশুড়ীকে কিল ঘুষি লাথি মেরে জখম করে ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি ও ভয়ভীতি ফাঁকা গুলি করে পালিয়ে যায়।