ইউেক্রেন-তাইওয়ান নিয়ে আলোচনা করবেন পুতিন-শি
শি জিনপিং চলতি সপ্তাহে মধ্য এশিয়া সফরের জন্য দুই বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো চীন ছেড়ে যাবেন যেখানে তিনি রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন।
মাও সে তুংয়ের পর সবচেয়ে শক্তিশালী চীনা নেতা হিসেবে তার স্থান নির্ধারণের ঠিক এক মাস আগে শি জিনপিংয়ের এ সফর।
এ সফরে শি জিনপিং ইউেক্রেন ও তাইওয়ান বিষয়ে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর শির এটি প্রথম বিদেশ সফর। তিনি তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ক্ষমতার উপর তার দখল এবং নতুন করে বিশ্বনেতা হিসেবে তার ভূমিকা সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী।
ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার দ্বন্দ্ব, তাইওয়ানের সংকট এবং একটি সংকটময় বিশ্ব অর্থনীতির পটভূমিতেই শি বুধবার কাজাখস্তানে রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন।
চীনা নেতা শি জিনপিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ সপ্তাহে তাদের মধ্যে বৈঠকে ‘আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক বিষয়াবলী’ এজেন্ডার অধীনে ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করবেন।
উজবেকিস্তানে আগামিকাল যে এসসিও শীর্ষ বৈঠক শুরু হচ্ছে, সেখানে দুই নেতা এই যুদ্ধ নিয়ে কথা বলবেন এবং ক্রেমলিন বলছে পশ্চিমা দুনিয়ার বাইরে যে একটি ‘বিকল্প বিশ্ব ব্যবস্থা’ গড়ে তোলা সম্ভব, সেটা দেখিয়ে দেওয়া।
একদিকে, শি তৃতীয় মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ইতিহাস সৃষ্টি করতে চান। অন্যদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে পুতিনের সম্পর্ক এখন একেবারে তলানিতে।
শি তার তিনদিনের সফর শুরু করছেন কাজাখস্তান সফরের মধ্যে দিয়ে। তার সফরের প্রথম পর্যায়ে বুধবার তিনি রাজধানী নুর-সুলতান বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন।
আগামিকাল উজবেকিস্তানের সামারখন্দ শহরে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)এর শীর্ষ বৈঠকের সময় শি জিনপিং ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন। এই বৈঠক চলবে ১৫ ও ১৬ই সেপ্টেম্বর।
মি. পুতিন অন্যান্য নেতাদের সাথেও দেখা করবেন, যাদের মধ্যে থাকছেন ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক এবং ইরানের নেতারা। তবে ক্রেমলিনের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক মুখপাত্র ইউরি উশাকফ বলেছেন এর মধ্যে মি. শির সাথে মি. পুতিনের বৈঠকটি হবে "বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ"।
তিনি বলেছেন এই শীর্ষ বৈঠক হচ্ছে 'ব্যাপক ভিত্তিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পটভূমিতে’।
চীন এবং রাশিয়া, বহু বছর ধরেই চেষ্টা করছে সাংহাই কো-অপারেশন কাউন্সিলকে পশ্চিমা প্রভাব বলয়ের বাইরে একটি বিকল্প বিশ্বজোট হিসেবে দাঁড় করানো যায় কিনা। ২০০১ সালে এই সংস্থা গঠিত হয়।
এসসিও-র দুই সদস্য রাষ্ট্র কিরগিযস্তান এবং তাজিকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার মধ্যে এই বৈঠক হচ্ছে। খবরে বলা হচ্ছে এই সংঘর্ষে অন্তত একজন সীমান্ত রক্ষী নিহত এবং দুজন আহত হয়েছে- তবে তারা কোন দেশের নাগরিক তা জানা যায়নি। গত বছরও দুই দেশের মধ্যে পানি ও অন্যান্য ইস্যুতে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়েছে।
শি এই সফরে গেলেন এমন সময়ে যখন চীনে নতুন করে আবার কিছু কিছু এলাকায় লকডাউন দেওয়া হয়েছে এবং শি-র শূন্য কোভিড নীতি এখনো বলবৎ রয়েছে।
সর্বশেষ ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শি জিনপিং চীনের বাইরে শেষ ভ্রমণ করেছিলেন যখন তিনি মিয়ানমার সফরে যান। সেটা ছিল উহানে প্রথম লকডাউন জারি করার কয়েকদিন আগে। এরপর থেকে তিনি আর চীনের বাইরে বেরননি। শুধু একবার জুলাই মাসে গিয়েছিলেন হংকংএ।
এমএমএ/