সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

অভিমানী মুক্তিযোদ্ধা

অনেকক্ষন যাবৎ হাঁটছি। কোনো রিকশা পাচ্ছি না। হাঁটতে ভালই লাগে আমার কাছে, বিশেষ করে এ জায়গাটাতে। রাস্তার দু’পাশে প্রচুর গাছপালা, অনেকটা ঝোপঝাড়ের ন্যায়। বেশ কিছু তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। শান্তশিষ্ট, নির্জন, নিরিবিলি পরিবেশ। সন্ধ্যা নামতেই যেন ভূতুরে অন্ধকার জেঁকে বসে। রাইনাদি গ্রাম পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে শিমুলতলী বাজারে এসে উপস্থিত। আজ এ এলাকাতে কী রিকশা ধর্মঘট চলছে নাকি ? মনে মনে ভাবছি। সারাটা রাস্তা জুড়ে খালি রিকশা তো নাই-ই, যাত্রীসহ কোনো রিকশা ও চোখে পড়লনা ।


বেড়ানোর সূত্রে মাঝে মাঝে এ এলাকায় আসা হয়। খুব বেশি একটা পরিচিত এলাকা না। বাজারেও কোনো রিকশা নেই। হাঁটতে আর ভালো লাগছে না তাই রিকশার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি। বেলা বড়জোড় এগারোটা। বয়স্ক এক রিকশা ওয়ালা যাত্রীবিহীন রিকশা নিয়ে এ দিকেই আসছে।
“চাচা, যাবেন ?” জিজ্ঞেস করলাম। “যামু, তবে এক কাপ চা খাইয়া লই”। উত্তর দিলেন রিকশা চালক। “আচ্ছা, চলেন তাহলে আমিও খাই এক কাপ”।
এক চালা টিনের মাচাটাকে বাঁশ দিয়ে উঁচু করে রাখা দোকানের সামনে দুইটা কাঠের বেঞ্চি। দোকানে কোনো খরিদ্দার নাই। এই সময়ে বাজারের চায়ের দোকানে দু’চার জন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। বাজারটা নাকি নতুন পত্তন পাওয়া আর এ শিমুলতলী বাজারটা ও নিতান্তই ছোটখাট। আড়াআড়ি দু’ বেঞ্চে দু’জন বসলাম।
“চাচা, চায়ের আগে বিস্কুট বা কেক কিছু একটা খান”।“ না-না, আপনে খাইলে কিছু খান। আমি শুধু এক কাপ চা-ই খামু”। “আচ্ছা, ঠিক আছে। দুধ চা নাকি রং চা ?”

“চাচার অভিব্যক্তিতে বুঝা গেল, তিনি অপরিচিত ব্যক্তির আপ্যায়নে এক কাপ চা বিনা পয়সায় খেতে সম্মত না। অবশেষে আমার পীড়াপীড়িতে রাজি হলেন। দু’ জনেই রং চা নিলাম। জিজ্ঞেস করলাম- “চাচার নাম ?” “রমিজ আলী”। “বাড়ী ?” “টোডার বাগ”। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। “চাচার বয়স কত হবে আনুমানিক ?” চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিতে দিতে প্রশ্ন করলাম। “এই- কত- আর সত্তুর অইব হয়তো।” উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললেন রমিজ চাচা। “কই যাইবেন ?” বিল দিয়ে বললাম- “আপনার ইচ্ছা। ইলমদী বা তিলচন্দী। যেখানে আপনি রাজি হন”। “রিশকা যহন চালাই, যেনে কন হেনে-ই যামু”। রিকশার পেডেলে চাপ লাগালেন।

“কিছু মনে না করলে একটা প্রশ্ন করতাম, চাচা।” কী পরশন করবেন এই বুড়া বয়সেও ক্যান রিশকা চালাই- এইডাই তো ?” কথার মধ্যে কেমন যেন ক্ষোভ, ঘৃনা, অভিমান, লজ্জা জড়িয়ে আছে। আমি কৌতুহলী হয়ে উঠলাম। আজকালের অটো রিকশার জমানায় ও পায়ে চালানো রিকশা, তদুপরি বয়স্ক চালক। ফলে রিকশার গতি ও মন্থর। আমার হাতে অফুরন্ত সময়, আমি ও মনে মনে চাইছি আরো ধীরে চলুক রিকশা টা। লোকটার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাচ্ছে আমার। “উত্তরটা দিলেন না যে চাচা ?”

পিছন ফিরে এক ঝলক তাকালেন। মনে হলো চোখ দুটো যেন ঝাপসা। অস্ফুট স্বরে বললেন, “কপালের দোষ, বাজান।” “আপনার ছেলে সন্তান নাই ?” “হ” আছে- দুই পোলা এক মাইয়া। মাইয়া বিয়া দিয়া দিছি। পোলারা বিয়া শাদী কইরা নায় নাতি লইয়া যের যের সংসারে ব্যস্ত - আমগোরে দেহোনের সময় কই ? আমরা বুড়াবুড়ি ভালই আছি- মাশাল্লা। দোয়া কইরেন। পোলারা আর কী করব, দেশই কী কিছু করলনা”। তিলচন্দির রাস্তা পার হয়ে ইলমদীর রাস্তায় এসে পড়েছি। মনে সন্দেহ বাজল, উনি কী মুক্তিযোদ্ধা ?

“চাচা, কী মুক্তিযোদ্ধা ?” “এই কতা জিগাইয়া আর শরম দিয়েন না।” আমি অবাক স্বরে বললাম, এটা কেমন কথা বললেন চাচা, মুক্তিযোদ্ধা হওয়া তো গৌরবের কথা, সম্মানের বিষয়- এটা লজ্জার ব্যাপার হবে কেন ? “ততক্ষনে ইলমদী চলে এসেছি।” নামেন, আমার ভাড়া দেন।” কন্ঠস্বরটা বেশ কর্কষ মনে হলো। “চাচা কী আমার উপর রাগ করেছেন ?” “না-না, আফনে আমার কী হন যে আপনার উপর আমি রাগ করমু। আমার সময় নষ্ট কইরেন না। ভাড়া দিয়া নাইমা যান।” “আমি সামনের শান্তির বাজার যামু, চলেন।” “ভাড়া কত দিবেন ?” জিজ্ঞেস করলেন। “আপনি যা চান ?” নরম হয়ে আসে চাচা স্বর। আস্তে আস্তে রিকশার প্যাডেল চাপতে থাকেন। “মুক্তিযোদ্ধাদের তো সরকার অনেক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। আপনি পাচ্ছেন না ?” “মুক্তিযোদ্ধাদের লিষ্টে আমার নাম নাই।”
“কেন- কেন ?” “কেওরে ধন্না দইরা মুক্তিযোদ্ধার লিষ্টে নাম উঠানোর লাইগ্যা তো যুদ্ধ করি নাই। যুদ্ধ করছি দেশের লাইগ্যা, দেশের মানুষের লাইগ্যা।”

“চাচা, সামনের বটতলায় রিকশাটা থামাইয়া চলেন আরো এক কাপ চা খাইয়া নিই।” বুঝার বাকি রইল না- কঠিন এক মানুষ। সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা, খাঁটি দেশ প্রেমিক। চা খাওয়া উপলক্ষ্যে অনেকক্ষন কথা হলো। অনেক অজানা কথা, আবেগের কথা, ভাললাগার কথা, ভালোবাসার কথা, যুদ্ধকালীন নির্মম অনেক স্মৃতির কথা, নির্দয় পাকিস্থানীদের কথা, নির্ঘুম অনেক রাতের কথা, অনাহারে কিংবা অর্ধাহারে দিনানিপাতের কথা, স্বজনদের ছেড়ে দূরে থাকার কথা, এমন অনেক কথা যে কথা কখনো কাউকেই বলা হয়নি। যুদ্ধ পরবর্তী অবহেলার কথা, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম না উঠার কথা। এমন-ই অসংখ্য আলাপ। “জীবন বাজী রেখে দেশের জন্য যুদ্ধ করলেন। বিনিময়ে কিছুই পেলেন না। কষ্ট হয় না আপনার ?” জিজ্ঞেস করলাম, “না---হ’, নিশ্বাস ফেলে সহজ উত্তর। আবার চলা শুরু। এ বয়সে ও এত কষ্ট করছেন অথচ দেখার কেউ নেই। কাউকে বলছেন ও না কিছু। ভিতরে আমার কান্না চেপে রাখতে কষ্ট হচ্ছে।

বিড়বিড় করে বলছেন-“পোলাগো কাছেই কিছু আশা করি না আর দেশের কাছে কী আশা করমু।” দাসিরদিয়া ব্রিজ পার হওয়ার পরে বেশ নিরিবিলি একটা জায়গা। রাস্তার দু’পাশে বেশ গাছপালা। অনেক দূর পর্যন্ত কোনো গ্রাম নেই। রাস্তার ডানে বামে দু দিকেই সবুজ ফসলি মাঠ। বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত, বিশাল প্রান্তর। স্বাধীন দেশের মুক্ত প্রানের ছোঁয়ায় যেন গ্রাম বাংলার প্রকৃত রূপ। এ অপরূপ, মুক্ত স্বাধীন দেশটাকে আমার দেখার অসাধারণ সৌভাগ্য তো হয়েছে এ সাধারণ রিকশা চালক রমিজ আলীর জন্য। স্যালুট, তোমাকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী মুক্তিযোদ্ধা। বললাম- “চাচা, রিকশাটা থামান।” “কেন- বাজান ?” চাচা রিকশা থামালেন, “চাচা, কষ্ট করে রিকশা থেকে একটু নেমে আসবেন ?” আমি রিকশা থেকে নেমে বললাম। রিকশা থেকে নামলেন রিকশা চালক রমিজ আলী। “আমি আপনার পা ছুঁয়ে একটু সালাম করতে চাই।” পায়ে হাত লাগানোর আগেই জোড়ে বুকে জড়িয়ে নিলেন মুক্তিযোদ্ধা রমিজ আলী আর হাউ মাউ করে কেঁদে উঠলেন। চলতি পথে কোনো রিকশা বা অন্য কোন গাড়ীর যাত্রীর অথবা কোনো মেঠো পথচারীর চোখে এ দৃশ্য পড়ল কিনা জানি না তবে তার কান্নার দৃশ্য আমার চোখে এখনো সতেজ।

খুচরা দু’তিন শ’ টাকা বাদ দিলে পকেটে মাত্র এক হাজার টাকার একটা নোট। ভাড়া দিতে সাহসে কুলাচ্ছেনা। এক হাজার টাকার নোটটা হাতের মধ্যে গুঁজে দিয়ে বললাম- “চাচা, মাফ করবেন। আমার যদি এখন পাঁচ হাজার, দশ হাজার বা পঞ্চাশ হাজার টাকা দেয়ার সামর্থ্য থাকতো আমি তা-ই দিতাম। আপনার সন্তান মনে করে টাকাটা রাখবেন।” কিছুতেই রাজি হলেন না, চাচা। অগত্যা নির্ধারিত ভাড়া মিটিয়ে হাঁটা ধরলাম। চাচা বললেন-“হাঁইটা যাইতে কষ্ট অইব না, আপনের।” তার চাইতে কতগুন কষ্ট করেছেন আপনি আমাদের জন্য। মনে মনে বললাম- এ রিকশায় চড়ে আমি আর মহান মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করতে পারিনা। অন্তত পক্ষে বাকী রাস্তা টুকু পাঁয়ে হেঁটে তার প্রায়শ্চিত্ত করি। আমি রিকশা থেকে নেমে গেলে ও রিকশা হয়তো খালি থাকবে না। কোন না কোন যাত্রী এ রিকশায় চড়বেই। কিন্তু সবাই তো আর আমার মত এ প্রচার বিমুখ অভিমানী মুক্তিযোদ্ধার মনের গভীরের কথা জানবে না। কিছু দুর এগিয়ে পিছন ফিরে তাকাই। আবার চোখে চোখ পড়ে যায়। দেখি সে চোখে যেন বর্ষার বৃষ্টি ভর করে আছে।

ডিএসএস/

Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক (ভিডিও)

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র: রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে