শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫ | ২১ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

আত্মহত্যা

আত্মহনন নয়, জেগে উঠুন নতুন উদ্যমে

শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের একটি বিখ্যাত গান রয়েছে-
আলু বেচো, ছোলা বেচো, বেচো বাখরখানি
বেচোনা বেচোনা বন্ধু তোমার চোখের মনি।
ঝিঙে বেচো পাঁচ সিকেতে, হাজার টাকায় সোনা
বন্ধু তোমার লাল টুকটুকে স্বপ্ন বেচোনা।

অথচ আমাদের জগৎ জুড়ে স্বপ্ন বেচে দেওয়ার মেলা বসে রোজ। স্বপ্ন বেচে দেওয়ার কত শত গল্প আমাদের চারপাশে। বহু চেনা-অচেনা মানুষ রয়েছে যারা একটু একটু করে তাদের স্বপ্ন বেচে দিচ্ছে প্রতিটি দিন। বর্তমান বিশ্বে সম্পদ ও সফলতার অভাব নেই,যত অভাব কেবল শান্তির।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন-"মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে,মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।" অথচ এই সুন্দর ভুবন ছেড়ে চলে যাবার কত তাড়া অনেকের।

কেন বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতাঃ সারা বিশ্বে দিন দিন আত্মহত্যার পরিমাণ বেড়েই চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রিভেন্টিং সুইসাইড অ্যা সোর্স ফর মিডিয়া প্রফেশনালস ২০১৭ জরিপ বলছে, প্রতিবছর বিশ্বে ১০ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। প্রতি ৪০ সেকেন্ডে ১ জন।

এবার বলা যাক বাংলাদেশের কথা, ঢাকার মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) দেশের আত্মহত্যার ঘটনার তথ্য রাখে। সে তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ সালে দেশে আত্মহত্যা করে ১০ হাজার ৭৪৯ জন। অপরদিকে এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ২০১৮ সালে দেশে ১১ হাজারের বেশি আত্মহত্যা করে। সারা বিশ্বে আত্মহত্যায় বংলাদেশের অবস্থান দশম। যা ২০১১ তে ছিল ৩৪ তম।

নিশ্চিতভাবে প্রতি বছর বাড়ছে আত্মহত্যার পরিমাণ। আত্মহত্যার কারণ খুঁজতে গেলে প্রথমে সামনে আসে অধিক মানসিক অবসাদ, ব্যক্তি জীবনে অপ্রাপ্তি, অবহেলা, সম্পর্কের বিচ্ছেদ,  পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও শারীরিক অসুস্থতা, যৌন হয়রানি, দাম্পত্য কলহ, জটিল রোগের দুঃসহ যন্ত্রণা, পরকালীন শাস্তির ভয়হীনতা, নৈতিক অবক্ষয় কিংবা আত্মহত্যার প্ররোচনায় ব্যক্তি আত্মহত্যা করে। তাছাড়া মানসিকভাবে দুর্বল প্রকৃতির মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। আত্মহত্যার পেছনে ব্যাক্তির পারিপার্শ্বিক অবস্থা অনেকাংশে দায়ী। যারা আত্মহত্যা করে তাদের ৯০ ভাগের মধ্যেই কোনও না কোনো মানসিক রোগ দেখা যায়। অধিক প্রযুক্তির ব্যবহারে বিষন্নতা, যা মানসিক রোগের অন্যতম একটি কারণ বলে মনে করে স্বাস্থ্য সংস্থা। তাছাড়া নিজেকে নিয়ন্ত্রণের অক্ষমতা ও অধিক আবেগ তো রয়েছেই। বিষন্নতার একটি পর্যায়ে ব্যক্তি নিজেকে সম্পূর্ণ  অযোগ্য মনে করে। অধিক মানসিক অবসাদগ্রস্ত ব্যক্তিরা আত্মহত্যাকে ওয়েলকাম রিলিজ হিসেবে বিশ্বাস  করে।


মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতামতঃ বিশেষজ্ঞরা মনে করে আত্মহত্যা দুই ধরনের। ইম্পালসিভ সুইসাইড (হঠাৎ আত্মহত্যা) আরেকটি ডিসিসিভ সুইসাইড (পূর্বপরিকল্পিত আত্মহত্যা)। আত্মহত্যার অন্যতম কারণ "সিজোফ্রেনিয়া ",যাকে গুরুতর মানসিক সমস্যা বলা হয়। এরমধ্যে পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার, কনটাক্ট ডিসঅর্ডার, মাদকাসক্তি, ডিপ্রেশন, পারিবারিক কলহ, বেকারত্ব, প্রেমে ব্যর্থতা তো রয়েছেই। শিশুদের ক্ষেত্রে আত্মহত্যাটি অবজারভেশন লার্নিং বা দেখে দেখে শেখা হিসেবে কাজ করে। এক্ষেত্রে অনেক মুভি, কার্টুন সিস্টেম এবং ইন্টারনেটের বিভিন্ন ভিডিও কন্টেন্ট দায়ী। কারণ এগুলোতে অনেক সময় আত্মহত্যাকে খোলামেলা উপস্থাপন, সমস্যা সমাধান বা মুক্তির পথ হিসেবে দেখানো হয়। কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই দৃশ্যগুলো এমনভাবে মাথায় প্রবেশ করে থাকে যে, কেউ সামান্য বকা দিলে কিংবা সমস্যা সমাধানে সহজেই সে এই পন্থাগুলো বেছে নেয়। এ বিষয়টি কিশোর-কিশোরীদের ক্ষেত্রে বেশি ঘটে। টেলিভিশন ও পত্রিকাগুলোতে আত্মহত্যার খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে নীতিমালা মেনে না চলার বিষয়টিও রয়েছে।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে আত্মহত্যা করা যায় এমন উপাদানগুলোর সহজলভ্যতা। আত্মহত্যার উপকরণগুলো হাতের কাছে থাকলে কোনো কারণে অল্পতেই ব্যক্তি হুট করে আত্মহত্যা করে ফেলতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যক্তির মধ্যে আত্মহত্যার কোনো উপসর্গ আগে থেকে পরিলক্ষিত হয় না।


বিশ্ব বিখ্যাত সাহিত্যিকদের আত্মহত্যাঃ বলা হয়ে থাকে সৃজনশীলতা, বিষন্নতা ও আত্মহত্যা এই তিনের মধ্যে আন্তসম্পর্ক রয়েছে। সৃজনশীলতার একটি অন্যতম অন্ধকার দিক হলো আত্মহনন। কারণ সৃষ্টিশীল মানুষ অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে থাকে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে,অনেক শিল্পী, কবি, লেখকদের মনোজগতের অন্যতম একটি প্রবণতা হলো বিষন্নতা, অরাজক ও মানসিক ভারসাম্যহীনতায় আক্রান্ত হওয়া। যাকে বলা হয় 'বাইপোলার ডিসঅর্ডার। এক গবেষণায় দেখা গেছে লেখালেখি, গবেষণা ও বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে যারা লিপ্ত তারা সমাজের অন্য সকলের থেকে ৮ শতাংশ বেশি বিষন্নতা ও মানসিক ভারসাম্যহীনতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। তবে কবি-লেখকদের বেলায় এই ঝুঁকি অনেক বেশি। এবার আসা যাক আত্মহুতি দেওয়া বিশ্বখ্যাত সাহিত্যিকদের কথায়:

হান্টার এস থম্পসনঃ আমেরিকান বংশোদ্ভূত হান্টার এস থম্পসনকে বলা হয় বিশ্বখ্যাত অন্যতম সেরা ঔপন্যাসিক। তিনি নিজের শেষ লেখাটির নাম দিয়েছিলেন "ফুটফল খেলার মৌসুম শেষে। এটি তিনি লিখেছিলেন স্ত্রী অনিতাকে উদ্দেশ্য করে। তার লেখাটি ছিল এমন-"আর কোন খেলা নেই। আর কোন বোমা নেই। চলতে থাকা নেই। কোন মজা নেই। সাঁতার কাটা নেই। ৬৭,৫০ এর পরও ১৭ টি বছর। আমার চাওয়ার ও দরকারের চেয়েও ১৭ টি বাড়তি বছর, বিরক্তিকর। আমি সবসময়ই উদ্দাম। কারও জন্য কোনও আনন্দ নেই। ৬৭ তুমি লোভী হয়ে যাচ্ছো। বুড়োমী দেখাও। শান্ত হও এটা ব্যাথা দিবে না। এর চারদিন পরেই স্ত্রীর সাথে কথা বলতে বলতে গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি। অনেকদিন ধরে শারীরিক বিকলাঙ্গতায় ভুগছিলেন । তাঁর শেষ লেখাটিতে যেন লেখাই ছিল আত্মহত্যার কথা।

ভার্জিনিয়া উল্ফঃ ইংরেজি ভাষার প্রখ্যাত কবি ভার্জিনিয়া উল্ফ ঊনিশ শতকে মডার্নিজম চর্চাকারী ব্রিটিশ লেখকদের মধ্যে অন্যতম। তার বিখ্যাত উক্তি ‘নারী যখন ফিকশন লেখে তখন তার একটি কক্ষ আর কিছু অর্থ প্রয়োজন।’ এই কবি একদিন তার ওভারকোটের পকেটে নুড়ি পাথর বোঝাই করে হেঁটে নেমে গিয়েছিলেন খরস্রোতা পাথুরে নদীতে। আর কখনও ফিরে আসেন নি। শেষ বিদায়ের আগে তিনি তার স্বামীকে একটি চিঠি লিখেন। তার এই চিঠিটি সম্ভবত সবচেয়ে বেশি পড়া সুইসাইড নোটগুলোর মধ্যে একটি। তার এই চিঠিটি  এখনও পড়েন বিশ্বের সাহিত্যপ্রেমীরা।
তার চিঠির কিছু অংশ:
প্রিয়তম
আমি বুঝতে পারছি আমি আবারও পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমি বুঝতে পারছি এবার হয়তো এই কঠিন সময় অতিক্রান্ত হবে না। আমি নানা রকম স্বর শুনতে পাচ্ছি, কিছুতেই মনোসংযোগ করতে পারছি না। তাই যা সবচেয়ে ভালো মনে হচ্ছে সেটিই করতে যাচ্ছি।

ডেভিড ফস্টার ওয়ালেসঃ তিনি ছিলেন একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্প লেখক এবং ইংরেজির প্রভাষক। তার লেখা ‘ইনফিনিটি জাস্ট’ বইটি ইংরেজি ভাষার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ১০০ বইয়ের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। হঠাৎ করে তিনি মেরি নামক এক কবির প্রেমে পড়েন। কিন্ত কবি মেরি এতে কোনো সারা দেন নি। মেরির ভালোবাসা না পেয়ে তিনি মাদকসহ বিভিন্ন নেশায় জড়িয়ে যান। দীর্ঘদিন হতাশাগ্রস্ত ডেভিড ফস্টার ২০০৮ সালে ৪৬ বছর বয়সে, দুইপাতার সুইসাইড নোট লিখে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন।


আরও অনেক বিখ্যাত সাহিত্যিকরা রয়েছেন যেমন-সিলভিয়া প্লাথ, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, অ্যান সেক্সটন, এডগার অ্যালান পো,জন কেনেডি টুল।

আত্মাহুতি থেকে ফিরে আসা কিছু বিখ্যাত ব্যক্তিত্বঃ 

বিশ্ব বিখ্যাত ‘হ্যারি পটার’ মুভি এবং বইটির কথা আমরা কম বেশি সকলেই শুনেছি, দেখেছি। বিশ্বের বিখ্যাত বইগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম একটি বই। যে বইটি  পৃথিবীর ৬৫টি  ভাষায় অনুবাদ করে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। হ্যারি পটারের সফল এবং বিখ্যাত লেখক জে. কে রাউলিং। যিনি মানসিক অবসাদ এবং অর্থাভাবে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন। তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তার মনে হয়েছিল এ সমাজে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তিনি মনে করতেন তিনি চরমভাবে ব্যর্থ একজন মানুষ। নিজেকে প্রচণ্ড রকম ব্যর্থ মনে করা মানুষটিই আজ পৃথিবীর কাছে নিজেকে তুলে ধরেছেন অন্যতম একজন সফল মানুষ হিসেবে।


ওপার বাংলার কমেডি শো মিরাক্কেলের মীর আমাদের সকলের পরিচিত। যিনি কি-না ৪ বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। কিছু একটার পেছনে ছুটতে থাকা বা হতাশা তাকে গ্রাস করে ফেলেছিল পুরোপুরি। তবে সেই মৃত্যু থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। আজ সেই মানুষটিই অন্য সকল মানুষদের হাসিয়ে বেড়াচ্ছেন, মন ভালো করে দিচ্ছেন আনন্দের ফেরিওয়ালার মতো।


বিখ্যাত সিঙ্গার কৈলাশ খের হতাশার এক পর্যায় এসে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এক সময় তার মনে হলো সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল এবং জীবনের অর্থবহতা খুঁজে বের করতে হবে। তার হতাশাকেই তিনি বেঁচে থাকার অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করলেন। অনির্বচনীয় যন্ত্রণা এবং হতাশা থেকে নিজেকে নতুন করে পরিচালনা করেছেন।


এখন এরা অন্যদের অর্থবহ সার্থক জীবন যাপনে উদ্বুদ্ধ করেন। আমরা কেউ ব্যর্থ নই,কেবল সঠিক সময়ের অপেক্ষায়।


পরিবার প্রিয়জনের ভূমিকাঃ জীবনের সকল ক্ষেত্রে পরিবার বা প্রিয় মানুষটির ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। অন্য দেশগুলোতে বয়স্কদের আত্মহত্যার পরিমাণ বেশি। তবে আমদের দেশে কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। তাই পরিবারকে সন্তানের কাছে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সহজ হতে হবে। প্রায়ই দেখা যায় আমাদের দেশে যখন বড় ধরনের পাবলিক পরীক্ষাগুলোর ফলাফল দেওয়া হয়, তখন একসঙ্গে অনেকগুলো ছেলে-মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। কারণ, হয়তো বাবা-মা পরিবার ও তার পরিবেশ থেকে সহানুভূতিশীল আচরণ সে পায়নি। তার ফলাফলের কারণে তাকে তীব্রভাবে সমালোচিত করা হয়েছে। যা সে গ্রহণ করতে পারেনি ফলে ঝোঁকের বশে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে।

শিশুদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে তারা সফলতার সঙ্গে ব্যর্থতাকেও মেনে নিতে পারে। আত্মহত্যার উপকরণগুলোর সহজলভ্যতাও কমানো জরুরি। পাশাপাশি পরিবারকে বুঝতে হবে বয়ঃসন্ধিকালের ছেলে -মেয়েরা অনেক আবেগপ্রবণ ও সংবেদনশীল হয়ে থাকে। মাত্রা বজায় রেখে সন্তানকে শাসন করুন। পরিবারের ছোট থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত কারও সমস্যাকে ছোট করে না দেখে সতর্ক হতে হবে। পরিবারের পাশে থেকে পরিবারকে সময় দিন। সকল সম্পর্ককে প্রাধান্য দিন, আগলে রাখুন। প্রিয়জন এবং আপনার পাশের মানুষটিকে শুনুন ও তার মনের যত্ন নিন। কেউ বিষন্নতায় ভুগলে ‘মন খারাপ করো না’, ‘ভালো খাবার খাও’, ‘আনন্দ করো’, ‘বেড়াও’, ‘বই পড়’ এসব না বলে তাকে অবশ্যই একজন মনোচিকিৎসকের শরণাপন্ন করা উচিত। তার মাধ্যমে সাইকোথেরাপি দিন। অবহেলা নয়, প্রতিটি মানুষের সচেতনতাই বাঁচিয়ে দিতে পারে অনেকগুলো জীবন।


আত্মহত্যার সমাধানঃ
Sometimes you win, sometimes you learn. অর্থাৎ আপনার হেরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সুযোগ আছে-জিতে যাওয়ার নয়তো শিখে যাওয়ার। অথচ শিখতে পারার সুযোগটাকে আমরা ভুল করে হেরে যাওয়া বলি। জীবনের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে আত্মহনন কোনো সমাধান নয়। চিন্তা করুন, সবাইকে কি একইসময়ে-একইসাথে গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে? না, গন্তব্যে পৌঁছানোই আমাদের আসল উদ্দেশ্য। সবার সঙ্গে আপনি পৌঁছাতে পারছেন না তবে এটিকে বিরতি ভাবুন, বিশ্রাম নিন অতপর উঠে দাঁড়ান। হয়তো একদিন আপনিই হবেন অন্যতম একজন সফল ব্যক্তি।

বিশ্বখ্যাত মনোবিজ্ঞানী ও লেখক  জর্জ উইনবার্গের একটি বিখ্যাত উক্তি ‘আশা কখনও তোমাকে ছাড়ে না, বরং তুমিই তাকে ছেড়ে দাও।’ একটি আত্মহত্যার প্রভাব কেবল একজন ব্যক্তির জীবননাশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট পরিবার, ঘনিষ্ঠ জন, সমাজে এক ভয়াবহ বিপর্যয় বয়ে আনে।


আত্মহত্যা পুরোপুরি প্রতিরোধ করা না গেলেও অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এর প্রতিরোধ করার দায়িত্ব শুধু রাষ্ট্রের, চিকিৎসকের কিংবা মনোবিজ্ঞানীর নয়। সমাজ, পরিবার, আপনার এবং প্রত্যেকটি মানুষের দায়িত্ব এটি। বিকল্প ভাবুন। মৃত্যু নয়, জীবনই হতে পারে আপনার সমাধান। আত্মহত্যা নয়, আপনি জীবনের পথকে বেছে নিন। আপনার শক্তি সফলতার পথকে খুঁজে বের করুন। আত্মহত্যা কেবল দুর্বল মানসিকতার উদাহরণ, সমাধান নয়।

আমরা মনে করি, কেবল শরীরের যত্ন নেওয়া উচিত। কিন্তু শরীর এবং মন দুটোরই যত্ন সমান গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রবণতা কমিয়ে আনতে শিশুকাল থেকে মা- বাবার আন্তরিক আচরণ বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। মা-বাবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ সন্তানের আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

জীবনে আনন্দ, ব্যর্থতা থাকবেই। সকল ব্যর্থতার গল্পকে উঠে দাঁড়ানোর গল্পতে পরিণত করুন। আর একটিও আত্মহনন নয় বরং ধৈর্য ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি সুস্থ, সুন্দর পৃথিবী গড়াই আমাদের কাম্য। বেঁচে থাকলে একদিন আলো ও আনন্দের উৎসবে আমরা সকলে যুক্ত হতে পারবো।

Header Ad
Header Ad

সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের রাষ্ট্রপতি পদকে ভূষিত হলেন সেনাপ্রধান

পদক গ্রহণ করছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনালের ওয়াকার-উজ-জামান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট পদে ভূষিত করা হয়েছে। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের জনগণের সার্বিক উন্নয়নে, বিশেষ করে চিকিৎসা খাতে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে স্বীকৃতি প্রদান করেই তাকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় আইএসপিআর।

আইএসপিআর জানায়, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক সফর শেষে আজ বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেছেন সেনাবাহিনী প্রধান। সফরকালে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশি কন্টিনজেন্টসমূহ ও বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে সেনাবাহিনী প্রধানকে অবহিত করা হয়। এ সময় তিনি তাঁর মূল্যবান দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। সেনাবাহিনী প্রধান স্পেশাল রিপ্রেজেনটেটিভ অব দ্য সেক্রেটারি জেনারেল ভ্যালেন্টাইন রুগাবিজা এবং ফোর্স কমান্ডার লে. জেনারেল হামফ্রে নায়নির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।

ছবি: সংগৃহীত

সেনাবাহিনী প্রধান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক্যান ফোর্স (এফএসিএ) এর প্রধান জেনারেল মামাদু জেফিরিনের সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে সেনাবাহিনী প্রধান দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন। পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক এবং সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক শান্তিরক্ষী মিশনের অধীনে বেসামরিক লোকদের সহায়তার অংশ হিসেবে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক এ নির্মিত তোয়াদেরা কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্বোধন করেন। এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট ফসটিন আরচেঞ্জ তৌদেরার সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের জনগণের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিশেষ করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রেসিডেন্ট সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাবাহিনী প্রধানকে সম্মানসূচক রাষ্ট্রপতি পদকে ভূষিত করেন।

এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের বাংগি এলাকায় নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কন্টিনজেন্টসমূহ পরিদর্শন করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের এ সফর সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদারের পাশাপাশি সেখানে অবস্থিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে বলে আশা করা যায়।

উল্লেখ্য, সেনাবাহিনী প্রধান গত ৩ মার্চ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক সফরে যান।

Header Ad
Header Ad

তৃতীয় বিয়ে করলেন অভিনেতা মিলন, পাত্রী কে?

অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন ও তার স্ত্রী শিপা। ছবি: সংগৃহীত

আবারও বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন ছোট ও বড়পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন। প্রায় এক মাস আগেই ভালোবাসার মাস ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে সারেন এ অভিনেতা।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী। মিলন ও তার স্ত্রীকে দেখতে অভিনেতার বাড়ি থেকে ৫টি ছবি পোস্ট করেন তিনি।

পোস্ট করা ছবির ক্যাপশনে বিবাহিত জীবনের জন্য শুভকামনাও জানান চয়নিকা। শুধু যে চয়নিকা নব দম্পতিকে দেখতে গিয়েছিলেন এমন নয়। ছোট পর্দার অনেক অভিনয়শিল্পীই আজ মিলনের বাড়ি হাজির হন নতুন বউ দেখতে।

জানা যায়, মিলনের স্ত্রীর নাম শিপা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগামে দুই পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

উল্লেখ্য, অভিনেতার প্রথম স্ত্রীর নাম ছিল লুসি গোমেজ। ১৯৯৯ সালে তাদের বিয়ে হয়। ২০১৩ সালে তাদের দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনের সমাপ্তি ঘটে। এরপর দ্বিতীয় স্ত্রী পলির সঙ্গে মিলনের বিয়ে ও চার বছরের সংসার জীবনের গুঞ্জন শোনা গেলেও তা অস্বীকার করে আসছিলেন অভিনেতা।

তবে ২০১৩ সালের অক্টোবরে শ্রীলঙ্কায় স্ত্রী-পুত্র সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছবি প্রকাশ করেন আনিসুর রহমান মিলন। সেই ছবি থেকে জানা যায়, তার স্ত্রীর নাম পলি আহমেদ এবং সন্তানের নাম মিহ্রান।

এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী পলি আহমেদকে বিয়ে করেন। যিনি ২০২২ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

Header Ad
Header Ad

ইউপি চেয়ারম্যানের অ্যাকাউন্টে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা লেনদেন, দুদকের মামলা

ব্রাহ্মন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাক মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন ও প্রায় ৫৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাক মিয়া ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে দুদক কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে এদিন দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক সোহানুর রহমান বাদি হয়ে লাক মিয়ার নামে মামলা করেন।

মামলার এজহারে বলা হয়, লাক মিয়া চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক ঘুস ও দুর্নীতির মাধ্যমে তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫৫ কোটি ২৩ লক্ষ ৫২ হাজার ৯৫১ টাকা মূল্যের সম্পত্তির মালিকানা অর্জনপূর্বক দখলে রাখে।

তার নামে ৪৯টি ব্যাংক হিসাবে ১৪ হাজার ৩৭৬ কোটি ১৮ লক্ষ ৫২ হাজার ৫০১ টাকা অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করে। যার কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪(৩) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

এদিকে একই অভিযোগে লাক মিয়ার স্ত্রী মাহমুদা বেগমের বিরুদ্ধেও মামলা করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান।

মাহমুদা বেগমের বিরুদ্ধে করা মামলার এজহারে বলা হয়, স্বামীর সহায়তায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ ২৩ হাজার ১৯৭ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অসাধু উপায়ে অর্জনপূর্বক দখলে রেখে এবং ১৪টি ব্যাংক হিসাবে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৪৬১ কোটি ১৬ লক্ষ ৮৬ হাজার ১৪৬ টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রুপান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের রাষ্ট্রপতি পদকে ভূষিত হলেন সেনাপ্রধান
তৃতীয় বিয়ে করলেন অভিনেতা মিলন, পাত্রী কে?
ইউপি চেয়ারম্যানের অ্যাকাউন্টে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা লেনদেন, দুদকের মামলা
লাইফ সাপোর্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক
যশোর সীমান্ত থেকে ৫ কোটি ১২ লাখ টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ
অনেক কো-আর্টিস্ট, ডিরেক্টর তখন আমার সঙ্গে কাজ করতে চাইতেন না: প্রভা
ভয়াবহ দাবানলের কবলে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া, ২০ স্থানে ছড়িয়েছে আগুন (ভিডিও)
নাগরিক পার্টি ছাড়লেন আবু হানিফ, ফিরে গেলেন গণ অধিকার পরিষদে
প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরে চীন যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
রোজায় বেড়েছে আনারসের চাহিদা, দ্রুত পাকাতে রাসায়নিক ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকি
সন্তানের জন্য ‘ডন থ্রি’ সিনেমা থেকে সরে দাঁড়ালেন কিয়ারা
অস্থিরতার কারণে এ বছর নির্বাচন কঠিন হবে: রয়টার্সকে নাহিদ ইসলাম
চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরলেন মির্জা ফখরুল
বিয়ে বাড়িতে প্রবেশের আগমুহূর্তে বরের মৃত্যু
মুশফিক অযু ছাড়া ব্যাট-বল স্পর্শ করতেন না: মুশফিকের স্ত্রী
বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে ভারত, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও ভালো উন্নতি বাংলাদেশের
ছাত্র-জনতা কোথাও অভিযান চালাতে পারে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফ্রান্সে মুসলিম খেলোয়াড়দের রোজায় নিষেধাজ্ঞা
স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন আবরার ফাহাদসহ ৯ বিশিষ্ট ব্যক্তি
রাবিতে সভাপতি নিয়োগ নিয়ে দুই পক্ষের ধস্তাধস্তি