শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

‘বইতে জ্ঞানটিকে সীমাবদ্ধ না রেখে, প্রয়োগ, উদ্ভাবনী কিছু করতে যেন পড়ে’

ড. সুগত আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। বিশ্ববিদ্যালয়ে একেবারেই নতুন ও চমকপ্রদ ভাবনা নিয়ে আগামীর জীবনের জন্য চালু হয়েছে। পড়ালেখা, গবেষণা, সাফল্য, আবিষ্কার, প্রতিযোগিতা, কর্মক্ষেত্র, ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ওমর শাহেদ 

এই বিভাগে কোন পর্যায় পযন্ত পড়ানো হয়?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে প্রতিটি বিভাগেই অন্তত মাস্টার্স পাশ করার সুবিধা থাকতে হবে। আমাদেরও আছে। এবারই প্রথম ব্যাচ পাশ করে বেরিয়েছে।

কোন বিভাগের ছাত্র ছিলেন?

আমি চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে পাশ করেছি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। তারপরে মাস্টাস, পিএইচডি দেশের বাইরে করেছি, মেকাট্রনিক্সের ওপর।

কোন ইউনির্ভাসিটি থেকে? 

মাস্টার্স উলসান ইউনির্ভাসিটি, দক্ষিণ কোরিয়ায়। পিএইচডি করেছি ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনির্ভাসিটি (আইইউটি), মালয়শিয়া থেকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শুরু কীভাবে, কেন হলো?

আমাদের বিভাগের শুরু হয়েছিল ‘মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং’ হিসেবে। একদম প্রথম, রোবোটিকস আমাদের বিভাগের সঙ্গে নামে যুক্ত ছিল না। বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসসি) বিভাগের অধ্যাপক, সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক উপ-উপাচার্য। এখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ডিন। তার মাধ্যমেই ‘মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং’র জন্ম। তখন ২০১৫-’১৬ শিক্ষাবর্ষ, ১৬ জন ছাত্র, ছাত্রী প্রথম ব্যাচে। এরপর তিনিই প্রস্তাব করলেন, বিভাগে আমরা ‘রোবোটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং’ শিক্ষাও যুক্ত করতে চাই। রোবোটিকস আসলে মেকাট্রনিক্সেরই একটি অংশ, কিন্তু আরো বিস্তারিতভাবে পড়ানো উচিত। কারণ বিশ্বে ধীরে, ধীরে সকল প্রযুক্তি রোবোটিকসের দিকে চলে যাচ্ছে। যদি ভবিষ্যতের পৃথিবীর দিকে তাকাই, তাহলে ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ক্ষেত্রটি অনেক বড় হয়ে যাবে। যেমন কম্পিউটার সায়েন্স যখন দেশে শুরু হলো, তখন এরকম ফিল্ড কিন্তু ছিল না। আস্তে, আস্তে কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিপুল চাহিদা তৈরি হয়েছে। যেহেতু ইনফরমেশন টেকনোলজি বিস্তৃত হয়ে গিয়েছে ব্যাপকভাবে, সেভাবে আমরা আশা ও ধারণা করছি, অতি শীঘ্রই রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ছেলে, মেয়েদেরও বিপুল চাহিদার ফলে সেই জায়গায় চলে যাবে। সেখানে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের বিভাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এসব দিক ভেবেই তিনি আসলে সেসময়  ভিসি স্যার ছিলেন, অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের অনুমোদন নিয়ে  আমাদের বিভাগটি চালু করার জন্য অনুমোদন লাভ করেছেন।   

মেকাট্রনিক্স বিভাগ হিসেবে কত সালে শুরু করেছিলেন? আর রোবোটিকস?

২০১৫ সালে তো আমাদের এই বিভাগের যাত্রা। এক বছর পর ২০১৬ সালে রোবোটিকস নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেল। মেকাট্রনিক্স শব্দটি এসেছে দুটি আলাদা, আলাদা শব্দ থেকে। মেকানিজম এবং ইলেকট্রনিক্স মিলে। যদি খুব সংক্ষেপে বলি, আমরা ইলেকট্রনিক্সের মাধ্যমে বিভিন্ন মেকানিজম অর্থাৎ বিভিন্ন মেশিনকে যদি কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, তাহলে সেটি মেকাট্রনিক্স। কিন্তু এখন আসলে শুধু মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্সের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এখন এই শিক্ষার সঙ্গে কম্পিউটার সায়েন্স, ইনফরমেশন টেকনোলজি যুক্ত হয়েছে। আসলে যা করি-আমাদের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন টেকনোলজি ডিসিপ্লিনগুলোর মাধ্যমে কীভাবে প্রযুক্তিতে অটোমেশন করতে পারি অর্থাৎ একটি মেশিনকে কীভাবে অটোমেটিক্যালি রান করতে পারি, বিভাগে সেগুলোই হাতে-কলমে ও পড়ালেখার মাধ্যমে শেখাই।

প্রথম যখন শুরু করেন তখন ছাত্র, ছাত্রী কত জন ছিলেন? এখন কতজনকে প্রতি ব্যাচে ভর্তি করেন?

একদম প্রথম যখন  শুরু করলাম, তখন আমরা নিয়েছিলাম ১৫ জনকে। আসলে তখন আমাদের গবেষণাগার সুবিধা তেমন ছিল না। খুব বেশি না থাকা স্বাভাবিক, কেননা কেবল যাত্রা করলাম। আমরাও তখন এতটা নিশ্চিত ছিলাম না। আমাদেরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো পুঁথিগত বিদ্যার ভুবনে কতটা সাফল্য পাব-এই বিষয়ে সন্দেহ ছিল। ধীরে, ধীরে  দেখলাম যে, বিভাগ এবং ছাত্র, ছাত্রীদের আরো স্বক্ষমতা আছে। ধীরে, ধীরে আমাদের ল্যাবগুলোকেও উন্নত করতে থাকি। রিসোর্সগুলোকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে থাকি। এখন প্রতি ব্যাচে ২০ জন করে ছাত্র, ছাত্রী প্রথম বর্ষে ভতি করি। সামনের শিক্ষাবর্ষগুলোতে আমরা তাদের সংখ্যা আরো বাড়ানোর চিন্তা করছি। এবারের ভর্তি কাযক্রমেই সম্ভবত আমরা ছাত্র সংখ্যা আরো কিছু বেশি নিচ্ছি।

প্রথমে শিক্ষক কতজন ছিলেন আর এখন?

একদম প্রথমে আমাদের বিভাগে অধ্যাপক ছিলেন মোটে ৩ জন। তারা ছিলেন ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু, সাবেক চেয়ারম্যান ড. শামীম আহমেদ দেওয়ান ও বতমান চেয়ারম্যান ড. সেজুঁতি রহমান। পরে ড. লাফিফা জামান যোগ দিলেন। এর মধ্যে ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু স্যার চলে গেলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি হিসেবে। তিনি দায়িত্ব নিয়ে চলে যাবার পর ড. লাফিফা ম্যাডামকে এখানে আনা হলো ও চেয়ারম্যান করা হলো। কারণ তখন বাকি দুইজনই প্রভাষক। একজন সিনিয়র কারো হাতে বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে হয়েছিল। সে কারণে হয়তোবা ড. লাফিফা ম্যাডামকে চেয়ারম্যান করা হলো। এরপর তিনি এখানেই চলে এলেন ও থেকে গেলেন। অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল ডিজিটাল প্রযুক্তি ষষ্ঠ শ্রেণী নামের বাংলাদেশের সব মাধ্যমের সকল ছাত্র, ছাত্রীর পাঠ্যবই এবং শিক্ষক সহায়িকার অন্যতম প্রণেতা। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোড প্রকাশিত এই বইটির রচনা ও সম্পাদনা পরিষদের প্রধান আইইআর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের অত্যন্ত মেধাবী এবং কৃতি ছাত্র অধ্যাপক ড. তারিক আহসান। তিনি বিশেষ শিক্ষা বা স্পেশাল এডুকেশনের নামকরা অধ্যাপক। ড. লাফিফার পর ড. শামীম আহমেদ দেওয়ান স্যার চেয়ারম্যান হলেন। আমাদের এখন শিক্ষক আছেন আটজন। তাদের মধ্যে সাতজন এখানে আছেন। একজন দেশের বাইরে। তিনিও এই বছরের শেষের দিকে ফেরত আসবেন। ছাত্র বাড়ানো হলে আমাদের টিচার রিক্রুটমেন্টও বাড়াতে হবে। কারণ ছাত্র বাড়ানো হলে তো শিক্ষক এই আটজন দিয়ে বিভাগ চালানো কঠিন।

শিক্ষক নিয়োগ?

সামনে আমাদের রিক্রুটমেন্ট আছে, যদি আবেদন করেন এবং তাদেরকে যদি যোগ্য মনে হয়, তাহলে বোর্ড সেটি বিবেচনা করবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগগুলোর সঙ্গে লড়াই করে ছাত্র কীভাবে যোগাড় করেন? কারা এখানে পড়তে আসবেন?

আমাদের বিভাগটি ইঞ্জিনিয়ারিং ফাকাল্টির অধীনে। এই অনুষদে আছে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই), কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই), নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, আমাদের রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। তাদের সঙ্গেই ছাত্র, ছাত্রী নিতে হয়। যখন পরীক্ষা হয় ছাত্র, ছাত্রীরা এই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগগুলো থেকে একটি বেছে নেয়। সেদিক থেকে এখন বলব, স্টুডেন্ট কোয়ালিটি কিন্তু আমরা ভালো পাই। যারা একেবারে প্রথম দিকের নয়, তারা নিউক্লিয়ার বা রোবোটিকস ইঞ্জিনিয়ারিং-বিষয়গুলোই পছন্দ করে। একদম প্রথম দিকে যেহেতু সেগুলো খুবই পুরোনো বিভাগ, সেজন্য ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স, কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগগুলো তারা নেয়। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ও সুনাম তো রয়েছেই।

ছাত্র, ছাত্রীরা এই বিষয়টি কীভাবে দেখে?

তাদের একটি চয়েজ দিতে হয়। সেখানে আমরা দেখেছি, তারা রোবোটিকসকে বেশ প্রায়োরিটি দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের ভালো ছাত্ররাই আসে।

আপনি কাদেরকে পড়তে বলবেন?

আমি বলব যে, যারা অটোমেশনের ওপর খুব আগ্রহী, আগে যেটি হতো যারা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর খুব আগ্রহী, তারা শুধু মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফিল্ডেই কাজ করত, যারা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ালেখা করত, তারা শুরু ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফিল্ডেই কাজ করত। তবে এখন এই বিষয়টি যে পড়বে, সে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের যেকোনো ক্ষেত্রে বিচরণ করতে পারবে পাশ করার পর। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বাদ দিয়ে যদি বলি, মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল, কম্পিউটার যেকোনো ক্ষেত্রে কিন্তু সে চাকরি পেতে পারে। কারণ আমরা এখানে সবগুলো বিভাগই ইন্ট্রিগ্রেট করে থাকি।  যারা সবগুলোরই ফ্লেবার নিতে চায় ও ইমপ্লিমেন্টেশনে নিতে চায় মানে শুধুমাত্র বইতে জ্ঞানটিকে সীমাবদ্ধ না রেখে, তাকে প্রয়োগ করে, উদ্ভাবনী কিছু করতে চায় এবং অটোমেশন সংশ্লিষ্ট কাজ করতে চায়, তাদেরকে আমি অবশ্যই বলব, তারা যেন রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে।

যারা ভবিষ্যতে প্রযুক্তিবিদ হতে চায়, তাদের জন্য বিষয়টি কতটা ভালো?

আমি মনে করি, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ও সরকারের এখনকার যে উদ্দেশ্য আছে, ডিজিটাইশন করা; তার সঙ্গে আমাদের বিভাগ খুব বেশি সংশ্লিষ্ট, অনেক বেশি মিল আছে। আমরা যদি প্রযুক্তির দিকে দেখি, প্রযুক্তিগত উন্নয়নে উদাহরণস্বরূপ এই প্রিন্টারটি আপনি দেখতে পাচ্ছেন বা এই মোবাইলটি দেখতে পারছেন, এগুলোর সবগুলোর মধ্যে যেমন মেকানিক্যালের অ্যাপলিকেশন আছে, ইলেকট্রিকালের অ্যাপলিকেশনও আছে। কম্পিউটার সায়েন্সের দিক থেকে আমরা যদি চিন্তা করি, প্রোগ্রামিং, সফটওয়্যার-এগুলোর অ্যাপলিকেশন আছে। এখনকার প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে যে নতুন প্রযুক্তিগুলোকে আমরা উদ্ভাবন করতে যাচ্ছি বা সেগুলোকে ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে যাচ্ছি, তখন আসলে এই সবগুলো ডিসিপ্লিনের জ্ঞান আমাদের দরকার। সুতরাং আমাদের জন্য এখন আরো বেশি করে বিভাগটিকে প্রচার করা দরকার। ছাত্র, ছাত্রীদের আরো বেশি করে উদ্ভুদ্ধ করা দরকার যেন তারা বিভাগটি পড়ে। যেন তারা বাংলাদেশের যে প্রযুক্তিখাতে কিছু উদ্ভাবনী কাজ করতে পারে।

আপনাদের কোর্স কারিকুলাম কীভাবে সাজানো হয়েছে? উল্লেখযোগ্য কী, কী আছে? বিষয়গুলো কী, কী শিখতে সাহায্য করবে?

আসলে এখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এসেছি। ফলে যখন কোর্স কারিকুলাম ডিজাইন করি, আমরা প্রযুক্তির সবগুলো বিষয়কেই লক্ষ্য রেখে কাজ করেছি। এখানে মেকানিক্যালের কোর্স আছে, ইলেকট্রিক্যালের, কম্পিউটারেরও আছে। আবার কিছু কোর্স পড়াই, যেখানে ইকেলট্রিক্যাল-মেকানিক্যাল (ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল) অ্যাপলিকেশন আছে। কম্পিউটার সায়েন্সের সঙ্গে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মিলিত অ্যাপলিকেশনের কোর্স আছে। যেমন মেকানিক্যাল ক্যাড মানে কম্পিউটার এইডের ডিজাইন আছে। আমরা কিভাবে কম্পিউটার দিয়ে মেকানিক্যাল কোনো বিষয়ের ডিজাইন করতে পারি, মেকানিক্যাল মেশিন দিয়ে ইলেকট্রো অনেক ইকুইপমেন্টকে কন্ট্রোল করতে পারি-এমন কোর্স আছে। এই ধরণের বিষয়গুলো বিভাগে পড়াই। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই আমরা পুরো কোর্স কারিকুলাম ডিজাইন করেছি।

ছাত্র, ছাত্রীদের কী, কী বিষয় শিখতে সাহায্য করে?

তাদেরকে প্রথমত কীভাবে অটোমেশন রিলেটেড কাজগুলো করতে হবে- এই বিভাগ শিখতে সাহায্য করবে। যেমন একটি মেশিনকে কীভাবে তারা অটোমেটেড করতে পারে। সেই সঙ্গে বিষয়ের মাধ্যমে এই খাতে গবেষণা করতে পারে তারা, গবেষণা কার্যক্রম কীভাবে পরিচালনা করতে পারে, সেজন্য ‘রিসার্চ মেথডোলজি’ কোর্স আছে। মাস্টার্সে আমাদের ‘প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট’ কোর্স আছে। সেখানে তারা যদি কোনো শিল্প-কারখানায় যায়, সেক্ষেত্রে এই ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্টগুলো ম্যানেজমেন্টে তারা কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারবে, সেখানে শিখিয়ে থাকি। এছাড়াও মাস্টার্স লেভেলে উচ্চতর শিক্ষা ‘ন্যানো রোবোটিকস’ কোর্স আছে। মানে রোবটকে ন্যানো লেভেলে নিয়ে গিয়ে তাকে কীভাবে কাজে লাগাতে পারি, শেখাই। এছাড়াও ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল লেভেলে তারা যেন অটোমেশনের কাজগুলো করতে পারে, সেজন্য ‘ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল অটোমেশন’ কোর্স আছে।

ছাত্র, ছাত্রীদের হাতে-কলমে পড়ালেখার সুযোগ এবং সুবিধা এই বিভাগ কী, কী রেখেছে?

হাতে-কলমে শেখানো আসলে এই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। সব ধরণের ইঞ্জিনিয়ারিং ফিল্ডের জন্যই প্রয়োজনীয়। এখানে সরাসরি প্রযুক্তি এবং আধুনিক প্রযুক্তিগুলো নিয়ে কাজ করি। এজন্য এখানে বেশ কয়েকটি ল্যাব ডেভেলপ করেছি। তার মধ্যে আছে মেকাট্রনিক্স, রোবোটিকস, ইলেকট্রনিক্স, কম্পিউটার ল্যাব। ‘মেশিন শপ’ আছে। যেখানে কীভাবে একটি প্রডাক্টকে বিভিন্ন মেশিন ব্যবহার করে ম্যানুফ্যাকচার করতে পারি বিশেষত সিএনসি মেশিন দিয়ে, সিএনসি মানে হলো কম্পিউটারাইজ নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল মেশিন ব্যবহার, এই ধরণের ল্যাব আছে। ল্যাবগুলো ডেভেলপ করেছি মাথায় রেখেই যে, যেন তাদের বিভাগের জ্ঞান শুধু বইগুলোর পাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। তারা যেন হাতে-কলমে কাজ করতে পারে। এজন্য বিভিন্ন সময় তাদের বিভিন্ন ধরণের প্রজেক্ট অ্যাসাইন করি শিক্ষা-কার্যক্রমের মূল অংশ হিসেবে। প্রকল্পগুলো সম্পন্ন করার ওপর তাদের মার্কস নিভর করে।

তাদের ভবিষ্যতের কর্মবাজার কোথায়?

তারা দেশে ও বিদেশে সব জায়গাতেই ভূমিকা পালন করতে পারবে। তবে যদি বলি, আমাদের দেশে এখন যে শিল্পোন্নয়ন হচ্ছে ও বিভিন্ন ধরণের ইন্ড্রাস্ট্রিগুলো গড়ে উঠছে, সেগুলোতে তারা খুবই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবে। এখন যে পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো হচ্ছে, এমনকি নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট হচ্ছে, সেগুলোতেও অনেক ধরণের প্রসেস দেখা যাবে, সেগুলো অটোমেশনের মাধ্যমেই রান করা যাচ্ছে। সুতরাং মেশিননির্ভর ইন্ড্রাস্ট্রি, পাওয়ার প্ল্যান্ট-এইসব জায়গায় তাদের অনেক ধরণের কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এর কারণ হলো, এখনকার যে শিল্প-কারখানাগুলো হচ্ছে, সেগুলোর বেশিরভাগই অটোমেটেড হয়ে যাচ্ছে। মানে মানুষের ভূমিকা কমে যাচ্ছে, মেশিনের ভূমিকা বেড়ে যাচ্ছে। মেশিনগুলো অটোমেটেড রান করে। মেশিনগুলোকে তারা যখন মেনটেইনেন্স করবে, সেজন্যও কিন্তু তাদের এই বিভাগের জ্ঞান খুব দরকার।

যদি উদ্যোক্তা হতে চান বা কোনো কিছু তৈরি করতে চান বা নিজে কিছু করে খেতে চান তাহলে তাদের সেই সুবিধাগুলো কী লাভ করা যাবে?

অবশ্যই বিভাগে অনেক সুবিধা আছে। ফলে তারা নিজেরা উদ্যোক্তা হতে পারবে। আমরা কোনো একটি বড় শিল্প-কারখানাকে যদি দেখি, সেটি অনেকগুলো ছোট, ছোট শিল্পকারখানার ওপর নির্ভরশীল থাকে। দেখা যায় যে, হয়তোবা কোনো নির্দিষ্ট কাজের জন্য তারা ছোট কোন কম্পানিকে এই দায়িত্বটি দিয়ে দেয়। এই যে যুক্ততা, ছোট কম্পানিগুলো কিন্তু তারা নিজেরা যদি উদ্যোক্তা হতে চায়, কম্পানিগুলো তারা তৈরি ও পরিচালনা এবং তার মেশিনপত্রগুলো বানাতে পারে, সেগুলোকে পরিচালনা করতে পারে। এই বিভাগের জ্ঞানগুলো অবশ্যই তাদের তখন কাজে লাগবে।

অন্যান্য বিভাগগুলোর সঙ্গে কীভাবে সমন্বয় করা হবে? যেহেতু এখানে অনেকগুলো বিভাগ আছে ও সেগুলো ভালো।

অন্যান্য বিভাগগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য অনুষদের বর্তমান ডিন ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু ইতিমধ্যে একটি আম্ব্রেলা প্রকল্প নিয়েছেন। একটি কমিটি তিনি গঠন করেছেন ও আমাদের কথাবার্তা চলছে। এর অধীনে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে। ইইই, সিএসই, মেকাট্রনিক্স, নিউক্লিয়ার এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংকেও সমন্বয় পদ্ধতিতে নিয়ে আসা হবে। যেন আমাদের রিসোর্সগুলোকে একত্র করতে পারি। আমার কাছে কিছু রিসোর্স আছে, কিছু মেশিনপত্র আছে। আরেকজনের কাছে অন্য কিছু আছে। আমি যেন তার মেশিনগুলো ব্যবহার করতে পারি, তিনি যেন আমার গুলো ব্যবহার করে একত্রিত বা ইনট্রিগ্রেটেড উপায়ে সবাই মিলে কোনো একটি কাজ করতে পারি। এজন্য প্রকল্পটি ডিন মহোদয় নিয়েছেন। আশা করছি, তার কাযক্রমটি যখন সফল হবে, ইনটিগ্রেটেডভাবে প্রযুক্তিগত উন্নয়নে আমরা একত্রে কাজ করে যেতে পারব।

আপনি কোনো প্রকল্পে কাজ করছেন? 

আমি নিজে ইউজিসির একটি প্রকল্প পেয়েছি। সেটি হলো ‘আন্ডার ওয়াটার ভেহিকেল’। আমরা জানি যে, এখন বাংলাদেশ সরকারের সাবমেরিন আছে। এই যে আন্ডার ওয়াটার ভেহিকেল, এখানে বিভিন্ন ধরণের অটোমেশন সিস্টেম, বিভিন্ন ধরণের ডিটেকশন সিস্টেম-এসব নিয়ে কাজ করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

বিজ্ঞানের নবতম ক্ষেত্রে বিভাগের ব্যবহার?

অন্যান্য ক্ষেত্রেও আসলে ভূমিকা রাখতে পারি। সেটি পাশের সমুদ্র বিজ্ঞান হোক বা বিজ্ঞানের অন্যান্য ক্ষেত্রে। যেমন কৃষি ক্ষেত্রের কথা আমরা বলতে পারি, আমাদের অটোমেশন ব্যবস্থাকে ব্যবহার করতে পারি। বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রেও আমরা  নতুনভাবে অবদান রাখতে পারি।

আজকে পর্যন্ত সাফল্য?

এ পর্যন্ত আমাদের বিভাগের অসংখ্য সাফল্য আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসেবে বলি-ছাত্ররা এর মধ্যে বেশ কিছু ইন্টার ইউনির্ভাসিটি কম্পিটিশনে অংশগ্রহণ করেছে। কোনোটিতে রানার্সআপ হয়েছে, কোনোটিতে প্রথম হয়েছে। অধ্যাপক ড. লাফিফা জামালের তার উদ্যোগে আমাদের মাধ্যমে ‘রোবট অলিম্পিয়াড’ হয়। এই অলিম্পিয়াডের আয়োজক ও অন্যতম অংশগ্রহণকারী আমাদের বিভাগ। অলিম্পিয়াডে স্কুল ও কলেজের ছাত্র, ছাত্রীদেরকে উদ্বুদ্ধ করা হয়-কীভাবে তারা রোবোটিকস জ্ঞান অর্জন করতে পারে। তারা রোবট বানিয়ে ও রোবট নিয়ে জ্ঞান লাভ করে আমাদের অলিম্পিয়াডে। এই প্রতিযোগিতা কিন্তু শুধু দেশে সীমাবদ্ধ নেই, আমাদের ছাত্র, ছাত্রীরা পরে বিদেশেও অংশগ্রহণ করে। আমরা এই রোবট অলিম্পিয়াডে গোল্ড মেডেল পেয়েছি। সম্ভবত দুই থেকে তিন বছর ধরে এই রোবট অলিম্পিয়াডের আয়োজন করছি। প্রতিবারই গোল্ড মেডেল পেয়েছি। ফলে বিভাগটি কেবল আমাদের এই কয়জন ছাত্র, ছাত্রীকে নিয়ে নয়। বিভাগের জ্ঞানকে বাইরে বিশেষত: এখন যারা বিদ্যালয়, কলেজের ছাত্র, ছাত্রী আছে, তাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিচ্ছি।

রোবট অলিম্পিয়াডে আপনাদের স্পন্সর কারা?

বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও স্পন্সর করে।

সীমাবদ্ধতা কী, কী রয়েছে?

সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এই মুহূর্তে, যত ফান্ড দরকার, সে পরিমাণ ফান্ড আমাদের নেই। কেন টাকার দরকার-এই কথার জবাব হলো, বিজ্ঞানের এই নতুন বিভাগে যত গবেষণার ও গবেষণাগারের সুবিধা হিসেবে থাকা দরকার, যেগুলো তাদের হাতে-কলমে কাজ শেখাবে ও উদ্ভুদ্ধ করবে, এক্ষেত্রে আমাদের যে যন্ত্রপাতি কিনতে হবে, সেজন্য কিন্তু বিপুল পরিমাণ ফান্ডের দরকার। এখন পর্যন্ত যতটুকু ফান্ড পেয়েছি, সেগুলো ব্যবহার করে এর মধ্যে মেশিন কিনেছি কিন্তু আমাদের আসলে আর্থিকভাবে উন্নয়নের জন্য আরো বেশি ফান্ডের দরকার। যেন ছাত্র, ছাত্রীদের এটি বোঝাতে ও শেখাতে পারি যে, তাদের বিভাগের জ্ঞানকে কেবল বইয়ের পাতাতে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না এবং ও বর্তমান ও ভবিষ্যতের বিশ্বের জন্য হাতে-কলমে কাজ করতে হবে। এভাবে বিভাগের মাধ্যমে তাদের লাভ করা জ্ঞানের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন করতে হবে। 

ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী, কী আছে আর?

কেবল ছাত্র, ছাত্রী বাড়াতে চাই না, বিভাগের গুণগত মান আরো অনেক বাড়াতে চাই। কেবল  পড়ালাম ও তাদের পাশ হলো, তার বাইরেও তারা যে জ্ঞানগুলো বিভাগ থেকে লাভ করছে, তারা তাদের কর্মক্ষেত্রে আমাদের দেওয়া জ্ঞানকে আরো ভালোভাবে যেন ব্যবহার করতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করবো। সবাই চাই, এখানে যা শেখাব, তারা যেন তা তাদের প্রত্যেকের কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ ও ব্যবহার করতে পারে। ফলে নতুন বিভাগ হিসেবে এই ক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করতে হবে। সরকার, প্রতিষ্ঠান ও জনগণকে আমাদের বোঝাতে হবে যে, ভবিষ্যত পৃথিবী কিস্তু এই মেকাট্রনিক্স ও রোবটিকসের দিকে হাঁটছে। সুতরাং সরকার যদি এদিকে আরো বেশি পরিমাণে কর্মক্ষেত্র সৃষ্টির দিকে মনোযোগ দেন, তাহলে ছাত্র, ছাত্রীদের জ্ঞান সেখানে কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করতে পারব।

উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার?

এর মধ্যে অমরা ইউজিসির বেশ কটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। সেখানে বেশ ভালো আউটপুট দেখিয়েছি। বিদেশী ভালো গ্রহণযোগ্য জার্নালগুলোতেও কিন্তু আমাদের অনেক পাবলিকেশন আছে। সেখানে ফলাফলগুলো প্রকাশ করেছি। অধ্যাপকদের নিজস্ব পেটেন্ট আছে। আমাদের ড. শামীম আহমেদ দেওয়ানের পেটেন্ট আছে। এখনকার যে গবেষণা, সেখানে বিদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কাজের সঙ্গে আমরা অংশগ্রহণ করে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাই। অন্যরাও কিছু অংশগ্রহণ করেন। এখন আগের আবিস্কারের ধারণা বদলে গিয়েছে। আজকের বিশ্বে ইন্টিগ্রেটেড উপায়ে কাজ হয়ে থাকে। আমাদের ভূমিকা জার্নাল পেপারগুলোতেও লিপিবদ্ধ রয়েছে। আমরা খুবই ভালো মানের পেপারে প্রকাশ করেছি।

পেটেন্টের দিকে কতটুকু গুরুত্ব দিচ্ছেন?

অবশ্যই পেটেন্টের দিকে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছি। মাস্টার্সের যারা ছাত্র, ছাত্রী রয়েছে, তাদের কোর্স ওয়াকের একটি বড় অংশ হলো, প্রজেক্ট ওয়ার্ক বা থিসিস ওয়ার্ক। কাজ করে বা কিছু একটি বানিয়ে তাদেরকে দেখাতে হয়। তারা উদ্ভাবনের জন্য ফান্ড ও উৎসাহ লাভ করে।

তাদের কোনো আবিস্কার?

যেমন-আমার মাস্টার্সের একজন ছাত্র আছে। এখন কাজ করছে ফ্লেক্সিবল রোবট নিয়ে। মানে একটি রোবটের হাত ফ্লেক্সিবল হবে। মানে যেকোনো দিকে বাঁকানো যাবে। খুব সরু কোনো রাস্তা বা কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো বাড়িঘর যখন ধ্বসে পড়ে, তখন উদ্ধার কাজ করা জন্য যখন যেতে হবে, সেখানে হয়তো কোনো খুব সরু কোনো পথে ফায়ার ব্রিগেড বা অন্য কোনো মানব উদ্ধারকারী যেতে পারবেন না কিন্তু আমাদের এই রোবট যেতে পারবে। তাই ফ্লেক্সিবল রোবট নিয়ে কাজ করছি। তিনজন ছাত্র, ছাত্রী আমার সঙ্গে আন্ডার ওয়াটার ভেহিকেল নিয়ে কাজ করছে। ড. শামীম এগ্রিকালচারাল প্রকল্পগুলোতে কীভাবে মেকাট্রনিক্স নিয়ে কাজ করা যায়, কাজ করছেন। ই-ভেহিক্যাল বা ইলেকট্রনিক যানবাহন এবং হাইব্রিড ভেহিকেল নিয়ে কাজ করছি। এই বিষয়ে আমাদের একটি প্রকল্প আছে। আসলে বিভিন্নভাবে, নানা খাতে আমাদের বিভাগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি।

( ২২ জুন, ২০২২; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক ড. কাজী মোতাহার হোসেন ভবন, সায়েন্স-এনেক্স বিন্ডিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি