বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

শিশুদের বিকাশে পথ দেখাবে ‘শৈশব’

‘শৈশব’ মানেই দুরন্তপনা। এই পাড়া, ওই পাড়া ঘুরে বেড়ানো। এই মহল্লা থেকে ওই মহল্লায় ছুটে চলা। বাড়ির পাশে খালি জমিনে বসে ঘুড়ি উড়ানো কিংবা হাতের কাছে যা পাই তা নিয়েই খেলাধুলা করা। কাদা-পানিতে মাখামাখি করা। নানা খেলায় মেতে উঠা। গ্রামাঞ্চলে এমন শৈশব এখনো দেখা যায়। কিন্তু শহরে ‘শৈশব’ বন্দি চার দেয়ালের মধ্যে।

খেলার মাঠ থাকলেও পরিবেশ নেই। খেলার সঙ্গী পাওয়া বেশ মুশকিল। বিদ্যালয়গুলোতেও মাঠের অভাব। পিতা-মাতারা ব্যস্ত চাকরি-সংসারসহ নিজস্ব কাজে। শিশু তখন একাকিত্বে ভুগে। তার উপর গত দুই বছরে কোভিড-১৯ নামের মহামারি এসে এই পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর মত বাংলদেশেও আঘাত করেছে সব শ্রেণির মানুষের উপর। শিশুরাও বাদ যায়নি। এমনিতেই চার দেয়ালে বন্দি শিশুদের শৈশব তখন আরও সংকীর্ণ হয়ে আসে। তাদের মধ্যেও বিষণ্নতা চলে আসে।

কিন্তু ব্যস্ত এই শহরে শিশুদের কথা কয়জনই বা ভাবেন, শিশুর মনোজগত নিয়ে কাজ করেন। শিশু কি চায়? কি করলে শিশুর মন চাঙ্গা থাকবে? শিশুদের শৈশব হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত।

শিশুদের কথা মাথায় নিয়েই কাজ করছেন একজন ফারহানা মান্নান। নিজের দুই শিশু কন্যা চিনি আর মধুর সঙ্গে খেলাধুলা করতে করতেই তাদের নানা প্রশ্ন আর কৌতুহল তার ভাবনায় ঢুকিয়ে দেয় শিশুদের মনোজগত। তাদের শৈশবকে কীভাবে আরও সুন্দর ও বর্ণিল করে তোলায় যায় তা নিয়ে নিজেই গবেষণা শুরু করেন। এরই এক পর্যায়ে তার মাথায় যায় শিশুদের শৈশব নিয়ে কাজ করার বিষয়টি। তখনই গড়ে তুলেন ‘শৈশব’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

প্রায় তিন বছর আগে একেবারেই ব্যক্তি উদ্যোগে ‘শৈশব’ গড়ে তুললেও এগুচ্ছিলেন একটু একটু করে। কিন্তু কোভিড এসে সেই উদ্যোগে একটা ধাক্কা দেয়। তাতে থেমে থাকেননি পেশায় শিশু বিষয়ক গবেষক ও লেখক উদ্যোক্তা ফারহানা। শুরু করেন ভার্চুয়ালি কার্যক্রম। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শৈশবকে তুলে ধরেছেন বিভিন্ন সময়ে। অতি সম্প্রতি তিনি তার সেই উদ্যোগকে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডের ই-ব্লকের একটি বাসায় শুরু করেছেন ‘শৈশব’ এর কার্যক্রম।

চলুন আমরা এখন ‘শৈশব’ এর কার্যক্রমের সঙ্গে একটু পরিচিত হয়ে আসি। জেনে আসি কীভাবে শিশুদের মনোজগত তৈরিতে ভূমিকা রাখবে শৈশব।

জাকির হোসেন রোডের যে ভবনটিতে ‘শৈশব’ এর কার্যক্রম চলছে সেই বাড়ির প্রথম তলা থেকে সিড়ি ধরে উঠতেই চোখে পড়বে শিশুদের দৃষ্টি আকর্ষণে অনেকগুলো চিত্র। কোনোটাতে খেলাধুলার সামগ্রি, কোনোটাতে বিজ্ঞান বিষয়ক নানা চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আছে রিকশার চেইন, বিয়ারিংয়ের ছবিও। দোতলায় শৈশবের রিসিপশন কক্ষে ঢুকলেই চোখ আটকে যাবে ঘুড়ি উড়ানো একটি স্থিরচিত্রে। আছে দোলনায় চড়ার চিত্রও। লাল-সবুজের পতাকাকে শিশুদের সামনে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে চমৎকারভাবে।

রিসিপশন থেকে হাতের বামের কক্ষের ভিতরে প্রবেশ করলেই দেখা মিলবে সব ধরনের খেলার সামগ্রির। বিশেষ করে বিজ্ঞান বিষয়ক সামগ্রিই বেশি। এটিকে মূলত বলা হচ্ছে স্ট্রিম রুম। একটি সুউচ্চ ভবন কীভাবে তৈরি হয়, তার ভিত্তিটা কীভাবে করতে হয়? এ সব শিশুরা শিখবে খেলতে খেলতে। বিজ্ঞানের আরও নানা বিষয় শিখতে পারবে শিশুরা। কম্পিউটার সম্পর্কে পাবে ধারণা।

এই কক্ষ থেকে বের হয়ে হাতের ডান দিকের কক্ষটিতে গেলে শিশুরা দেখতে পাবে অনেকগুলো বাঁধাই করা ছবি। যেগুলোতে তুলে আনা হয়েছে গ্রামবাংলার শৈশবের চিত্র। এই কক্ষে প্রাণভরে খেলাধুলাও করতে পারবে।

পাশের কক্ষে ঢুকার আগেই করিডোরের দেওয়ালে চোখে পড়বে বাঙালির সাত বীরশ্রেষ্ঠকে। ছবিতে বাঁধাই করে তাদেরকে আগামীর প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। আর সড়কের পাশের বারান্দা সাজানো হয়েছে শিশুদের খেলাধুলার জন্য।

শৈশব সম্পর্কে জানতে চাইলে এর উদ্যোক্তা ফারহানা মান্নান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, স্ট্রেম সম্পর্কে অনেকেই জানেন, যারা শিক্ষা নিয়ে গবেষণা করেন বা ভাবেন। আমি এটাকে স্ট্রিম বলছি। সায়েন্স, টেকনোলজি, আর্ট, ম্যাথমেটিকস। আমরা শিশুদের নিয়ে কাজ করি যাদের বয়স দুই থেকে আট বছর তাদের জন্য আর্টসটা খুব দরকার। আমরা স্ট্রিম অ্যাপ্রোচ নিয়ে কাজ করি। এটার মাধ্যমে বাচ্চারা খেলবে এবং শিখবে। এটাই হচ্ছে আমার মূল বিষয়।

আমরা স্কুলে স্কুলে গিয়েছি। স্কুলে দুই ঘণ্টার ওয়ার্কশপ করেছি। শিক্ষক, অভিভাবকদের সম্পৃক্ত করে আমরা ওয়ার্কশপ করেছি। আমরা বেশ সাড়া পেয়েছি।

ফারহানা মান্নান বলেন, শৈশবের পুরো পরিবেশটা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সাজানো। শিশুদের চাইল্ড এরিয়াগুলোকে ডেভলপ করার চেষ্টা করেছি। শিশুদের বিভিন্ন বিষয়ে মনোযোগ দিতে হয়। যেমন ল্যাঙ্গুয়েজ, ইমোশনাল, স্যোশাল এবং ফিজিক্যাল ডেভলপমেন্ট নিয়ে। আমরা সেন্টারটা সাজানোর ক্ষেত্রে এগুলো নিয়েও ভেবেছি।

আমরা দুটি প্রোগ্রাম করছি। একটি হচ্ছে শিশুদের ছয় মাসের একটা প্রোগ্রাম। তারা ভর্তি হবে ছয় মাসের জন্য। সপ্তাহে দুদিন দুই ঘণ্টা আমাদের সঙ্গে কাটাবে। ছয় মাসে মোট ৪৮টি ক্লাস পাবে। সেখানে আমরা তাদের গাইড করে খেলতে শিখাব। একদম সিলেবাস ধরে। সেখানে সায়েন্সের ১০টা, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ১০টা, আর্টসের আটটা,ম্যাথমেটিকসের ১০টা, টেকনোলজির ১০টা।

আরেকটা হচ্ছে মুক্তভাবে খেলার একটা সময়। অভিভাকরা তাদের সন্তান নিয়ে আসবেন। বাচ্চারা খেলবে, অভিভাকরাও তাদের সঙ্গে খেলবে। তাদের বাড়িতে হয়ত এতো খেলনার উপাদান নাই। আমরা চাই, তারা এখানে আসুক, সব রকমের খেলনা নিয়ে খেলুক। বিশেষ করে কোভিড সময়ে জন্ম নেওয়া শিশুরা বেড়ে উঠছে একাকীত্বে। তারা সহজে মিশতে পারছে না। তাদের বিকাশের জন্য শৈশব ভূমিকা রাখবে।

একটা বিষয় দেখা যায় শিশুদের মধ্যে। তারা কোনো খেলা শুরু করলে শেষ করতে চায় না। নাড়াছাড়া করে একটা ছেড়ে আরেকটায় চলে যায়। একটা অস্থিরতা দেখা যায়। এই বিষয়গুলোতে আমরা মনোযোগ দেব।

ফারহানা মান্নান জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই উদ্যোগ নিয়েছেন। এখানে সায়েন্স, আর্টস, টেকনোলজি, কম্পিউটার, ম্যাথমেটিকস, ইঞ্জিনিয়ারিং এ শিশুদের জন্য আলাদা আলাদা খেলনা থাকবে। শিশুদের জন্য বুকস কর্নার, ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি রুম, কমিউনিটি জোন, সেন্ট প্লে, ওয়াটার প্লে কর্নার থাকবে, তারা খেলাধুলা করবে। ‘শৈশব’ এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে যে, একটা শিশু ঢুকে দুই ঘণ্টা সময় অনায়াসে খেলতে পারবে।

দুই থেকে আট বছর বয়সের শিশুরা এখানে ভর্তি হতে পারবে। এখানে এই বয়সী শিশুদের জন্যে খেলনা আছে।

ব্যক্তি উদ্যোগে ‘শৈশব’ শিশু সেন্টার করতে গিয়ে নানামুখি প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হয়েছে। একটা বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অর্থ। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে এই সংকট কাটিয়ে শৈশবকে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে, যোগ করেন ফারহানা মান্নান।

এনএইচবি/আরএ/

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের

টিপরা মোথার প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যোৎ মাণিক্য। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, ত্রিপুরার এক রাজনীতিবিদ ‘বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার’ আহ্বান জানিয়েছেন। এই বিতর্কিত মন্তব্যটি করেছেন ত্রিপুরার দ্বিতীয় বৃহত্তম দল টিপরা মোথার প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যোৎ মাণিক্য।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মাণিক্য পরামর্শ দিয়েছেন, দিল্লি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ স্থাপন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘শত শত কোটি টাকা খরচ’ না করে বরং বাংলাদেশের সেই অংশগুলো দখল করে নিক, যা ‘সব সময়ই ভারতের অংশ হতে চেয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের জাতীয় স্বার্থ এবং তাদের মঙ্গলের জন্য এটি ব্যবহার করা উচিত।’ পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা যদি বাংলাদেশকে ভেঙে নিজেদের জন্য সমুদ্রপথ তৈরি করি, তাহলে সেটা হয়তো আরও সুবিধাজনক হবে। কারণ, এ ধরনের চ্যালেঞ্জিং এবং ব্যয়বহুল প্রকৌশল পরিকল্পনায় বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা খরচের প্রয়োজন পড়বে না।’

ত্রিপুরার এই নেতা দাবি করেন, চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চল আদিকাল থেকেই আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাসের স্থান ছিল এবং ১৯৪৭ সাল থেকেই তারা ভারতের অংশ হতে চেয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে লাখ লাখ ত্রিপুরি, গারো, খাসি ও চাকমা জনগোষ্ঠী রয়েছে, যারা তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী ভূমিতে অত্যন্ত দুরবস্থার মধ্যে জীবনযাপন করছে। তাদের স্বার্থ রক্ষা করেই ভারতের জাতীয় স্বার্থ নিশ্চিত করা উচিত।

প্রদ্যোৎ মাণিক্যের এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিলেও তিনি নিজের অবস্থানে অবিচল রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কখনোই আমাদের বন্ধু ছিল না... তাই আসুন আমরা বোকা না হই।’ তার মতে, ভারতে বাংলাদেশের একমাত্র ‘বন্ধু’ ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বাস করি এবং প্রতিদিন স্পষ্ট ও উপস্থিত বিপদ দেখতে পাই। আমি বুঝতে পারছি, আপনার বামপন্থী ঝোঁক এটিকে কঠিন করে তোলে... তবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিও উপলব্ধি করুন।’

প্রদ্যোৎ মাণিক্যের এই মন্তব্য মূলত আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বক্তব্যের সম্প্রসারণ। বিশ্বশর্মা ড. ইউনূসের মন্তব্যকে ‘আপত্তিজনক’ ও ‘তীব্র নিন্দনীয়’ বলে অভিহিত করেছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রেল ও সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

এর আগে, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছিলেন, ‘ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য সম্পূর্ণরূপে ল্যান্ডলকড (স্থলবেষ্টিত)। সমুদ্রের সঙ্গে তাদের যোগাযোগের কোনো উপায় নেই। আমরাই এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক।’

এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, ‘এই মন্তব্যটি ভারতের কৌশলগত চিকেনস নেক করিডরের সঙ্গে জড়িত দীর্ঘস্থায়ী দুর্বলতার ন্যারেটিভটিকেই তুলে ধরে।’ তিনি বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ নিশ্চিত করতে বিকল্প সড়ক ও রেলপথ তৈরির কাজ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

চট্টগ্রাম বন্দরের কৌশলগত গুরুত্ব সম্পর্কে বিশ্বশর্মা বলেন, এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম বন্দরই নয়, বরং দিল্লি এটিকে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় পণ্য পরিবহনের জন্য একটি ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হিসেবে বিবেচনা করছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতা বন্দর থেকে আগরতলায় পরিবহনের খরচ প্রতি টনে ৬,৩০০ থেকে ৭,০০০ টাকা। তবে চট্টগ্রাম থেকে ত্রিপুরায় পণ্য পরিবহন খরচ অনেক কম।

এই বিতর্কিত মন্তব্যের পর ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।

Header Ad
Header Ad

বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি নির্বাচন আগে না সংস্কার—এমন বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালিয়ে জনগণের মধ্যে ভুল ধারণা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি।

বুধবার (২ এপ্রিল) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিচারব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে হবে। তবে জনগণের মতামত উপেক্ষা করে কোনো সংস্কার হলে বিএনপি তা মেনে নেবে না।

তিনি আরও বলেন, দেশে কোনো সংঘাতের শঙ্কা নেই। প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত প্রকাশ করবে এবং জনগণের সামনে নিজেদের নীতিমালা উপস্থাপন করবে। পরে জনগণ তাদের উপযুক্ত নেতৃত্ব বেছে নেবে—এটাই গণতন্ত্রের প্রকৃত রূপ। তাই নির্বাচন জরুরি।

সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সংস্কার প্রস্তাবের মিল রয়েছে। তবে সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে বিএনপি তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, একটি দল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধরে রাখলে স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা কম থাকে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ডানপন্থি রাজনীতির উত্থান হচ্ছে এবং তারা বলছেন যে গণতন্ত্র এখন হুমকির মুখে। যদি কোনো দল স্বৈরাচারী হয়ে ওঠে, তাহলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে। তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সবচেয়ে কার্যকর সমাধান।

বিএনপির ভেতরে কিছু ব্যক্তি অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বহিষ্কারসহ কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে এসব ঘটনা অনেকটাই কমে এসেছে।

Header Ad
Header Ad

বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। চাঁদা না পেয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও ফলের গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক। জানা গেছে, উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর (চায়না অফিস) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন— ৭নং পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. সানোয়ার হোসেন (২৬), মো. শাহ আলম (৩৬), মো. আবু বক্কর সিদ্দিক (২৯), মো. মোস্তাফিজুর রহমান (২৬) ও মো. রতন রানা (২৫)। গত ৩০ মার্চ যৌথ বাহিনীর অভিযানে তাদের আটক করা হয়।

মামলার তথ্য অনুযায়ী, বিরামপুর পৌরশহরের ঘাটপাড় এলাকার অধ্যাপক ডা. মোখলেছুর রহমানের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা সানোয়ার হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ডা. মোখলেছুর রহমান তার জমির দেখাশোনার জন্য ফারুক হোসেন নামে একজনকে নিয়োগ দেন। ফারুক সেখানে একটি দোকান নির্মাণের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের গাছ লাগান। গাছগুলোতে পর্যাপ্ত ফল ধরার পর আসামিরা জমি দখলের পরিকল্পনা করে এবং চাঁদা দাবি করে।

গত রবিবার (৩০ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে সানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাগানে হামলা চালায়। তারা ১৫৭টি বড়ই গাছ, ৮৪টি কমলা গাছ ও ২৩টি আম গাছ কেটে ফেলে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

ফারুক হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। মারধরের একপর্যায়ে লোহার শাবল দিয়ে দেলোয়ার হোসেনকে গুরুতর জখম করা হয়। ফারুক হোসেন অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা তার বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে, প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি করে এবং ব্যবসার নগদ ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা লুট করে নেয়।

হামলার পর ফারুক হোসেন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলে প্রশাসন দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয়দের সহায়তায় পাঁচজনকে আটক করা হয়।

বিরামপুর থানার ওসি মমতাজুল হক জানান, ফারুক হোসেনের দায়ের করা মামলায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের
বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত