শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

গবেষণার তীর্থকেন্দ্র ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর’

বাংলাদেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ জাদুঘর হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর। আলাদা ভবন, বিশাল সংগ্রহশালা, নানা সেল দিয়েছে বিশিষ্টতা। জন্মের প্রথম দিনের প্রদর্শনী ও তারপর থেকে ক্রমাগতভাবে ছাত্র, ছাত্রী, অধ্যাপক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের দানে গড়া এই জাদুঘর নিয়ে লিখেছেন ও ছবি দিয়েছেন জুনায়েদ খান

আমাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সবুজের চাদর মোড়ানো এক ক্যাম্পাস। বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ও পুরোনো। সরকারী। শহর থেকে ২২ কিলোমিটার উত্তরে। হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদ গ্রামে। কোলাহল কেবল ছাত্র-ছাত্রী ও অধ্যাপকদের। বনবনানী ও পাখপাখির। বিরাট বড় বিশ্ববিদ্যালয়টি ২ হাজার ১শ একর। পাহাড় ও সমতল। আকাশের সঙ্গে মিতালী পাহাড় ছোঁয়া গাছগুলোর। পর্বতের বুক চিরে নেমেছে স্বচ্ছ ঝর্ণা। লেক, উদ্যান, হরেক জাতের স্থানীয় পাখি, বিলুপ্তপ্রায় নানা জীবজন্তু আছে। ফলে জ্ঞান ও প্রকৃতির দারুণ মেলবন্ধন আমাদের অনন্য করেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের গবেষণা তীর্থকেন্দ্র করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর’।

জন্ম প্রথম দিন-১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর। ২৪টি প্রত্নসম্পদের প্রদর্শনী হয়েছে। চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান-মিউজিয়াম অ্যাসোসিয়েশন অব পাকিস্তানের সভাপতি, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের এমডি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) মমতাজ হাসান তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ দান করলেন বিভাগের প্রথম ও প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই ২৪টি প্রত্নরাজি নিয়ে শুরু হলো প্রদশনী, জন্ম হলো অনন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও তার জাদুঘরের। বলাই হলো না, আমাদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চট্টগ্রামের পাকিস্তান আন্দোলনের অন্যতম নেতা, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, চুয়েট (চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি)’র জনক; সালাউদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী।

প্রথম উপাচার্য ছিলেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও অধ্যাপক ড. এ. আর. মল্লিক (আজিজুর রহমান মল্লিক)। তার পৃষ্ঠপোষকতায়, আরেক বিখ্যাত ছাত্র ও উপাচার্য ও ইতিহাস বিভাগের রিডার অধ্যাপক ড. আবদুল করিমের প্রচেষ্টায় শুরু হলো ঐতিহাসিক জাদুঘরের। তারা ইতিহাসের প্রথম বিভাগের ছাত্র, ছাত্রী ও নবীন অধ্যাপকদের ফিল্ড সার্ভে বা মাঠ জরিপ গবেষণার কাজে পাঠাতে শুরু করলেন। আস্তে, আস্তে এভাবে শুরু হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘর। সবই ছাত্র, ছাত্রী ও শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দান।

১৪ জুন ১৯৭৩ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘর বেশ প্রত্নসম্টদ ও ইতিহাসের মূল্যবান নির্দশন নিয়ে চালু হলো। আমরাই বাংলাদেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর। পরিচালনা করেন শিক্ষকরা। জাদুঘর দেশ-বিদেশে সুনাম কুড়িয়েছে। কথা বলে জেনেছি, তালিকাতে মোট দুই হাজারের বেশি অমূল্য ও অনন্য সংগ্রহ আছে এখন।

অ্যাকাডেমিক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজে সবই ব্যবহার করা হয়। মানবেতিহাস, শিল্প, সংস্কৃতি, শিক্ষা, গবেষণা, সংগ্রহ কার্যক্রমে শিক্ষার্থী, গবেষক, অধ্যাপকদের সাহায্য এবং উৎসাহ দিয়ে চলে অবিরত। আছে প্রত্নতত্ব, ইতিহাস, প্রাচীন শিল্পকলা। নানা জায়গা থেকে সংগ্রহ করে এখানে সংরক্ষণ প্রদর্শন ও গবেষণায় ব্যবহার করা হয়।

স্থায়ী সংগ্রহ ১শর বেশি। আছে-প্রাগৈতিহাসিক নিদর্শন, কাঠের জীবাশ্ম, প্রত্নভাস্কর্য, ময়নামতি, মহাস্থানগড়, পাহাড়পুরের প্রত্নসম্পদ,প্রাচীন ও মধ্যযুগ, প্রাচীন, মধ্যযুগ, সুলতানী আমল ইত্যাদি, লোকশিল্প, ইসলাম, সমসাময়িক, ব্রিটিশসহ নানা আমলের মুদ্রা, নানা ঐতিহাসিক শিলালিপি, মূল্যবান ও দুর্লভ বই, পান্ডুলিপি, টেরাকোটা, পুরোনো, মূল্যবান ধাতব শিল্পকর্ম, চীনামাটির বাসন, গাত্রালঙ্কার, আদিবাসীদের অলংকারসহ ব্যবহার্য, কালুরঘাট ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের দলিলাদি; একাত্তরের পোস্টার, মূল্যবান পুস্তিকা, সংবাদের কাটিং, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবান প্রকাশনা, প্রশাসনিক দলিল ও নথি। আগ্রহীরা নিয়ম মেনে ও যত্নে ব্যবহার করতে পারেন। নাসিরাবাদ পাহাড় থেকে যোগাড় করা টারশিয়ারি আমলের মাছের কংকালটি আমাদের সবচেয়ে পুরোনো সম্পত্তি। এখন মোট ১২ হাজারের বেশি নানা ধরণের মূল্যবান সামগ্রী বেঁচে আছে এখানে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার’র পাশে ছোট্ট টিলার ওপর দোতলা একটি সাদা বিরাট ভবনই হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর। অসাধারণ সুন্দর বাগান আছে। দেখার আমন্ত্রণ রইলো। নীচতলায় গবেষণা কেন্দ্র, আলোকচিত্র সংগ্রহ, কনজারভেশন ল্যাবরেটরি, প্রদর্শন কক্ষ, সেমিনার, ডকুমেনটেশন সেল, স্টোর রুম, কটি অফিস রুম ও চট্টগ্রামের বরণ্যে সন্তান আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ গ্রন্থাগার আছে। তাতে সাহিত্য বিশারদের সংগ্রহ করা পুথি সাহিত্য স্বযত্নে রক্ষিত। আছে তার প্রাচীন বাংলার তালপাতা, তুলট কাগজে লেখা পুঁথিও।

গ্যালারিগুলো হলো-‘প্রাগৌতিহাসিক ও প্রত্নতাত্বিক’, ‘প্রাচীন ভাস্কর্য’, ‘ইসলামিক শিল্পকলা’, ‘লোকশিল্প ও সমকালীন শিল্পকলা’। সবগুলোই নীচতলায়। এগুলোতেই প্রদশনী হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ছাত্র, ছাত্রী, গবেষক ও উপাচার্যরা সবাই বিশেষভাবে জাদুঘরের যত্ন নিয়েছেন। তাদের অনেকের হাতে গড়া গাছের সারি, ফুলের সারিও আছে। ছাত্র, ছাত্রীদের বসার জন্য উন্মুক্ত মঞ্চটি দর্শক গ্যালারি হিসেবে জাদুঘরের সঙ্গে যুক্ত। অনেকে পার্ক মনে করেন।

প্রাগৌতিহাসিক ও প্রত্নতিাত্বিক গ্যালারিতে আছে মাছের ফসিলটি, উপহার পাওয়া। প্রাচীন চাঁটগার প্রাকৃতিক ইতিহাস ও গবেষণার সম্পদ। আছে ২০ হাজার বছরের পুরোনো কাষ্ঠখন্ড, কুমিল্লার কোটবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা ৭ম সতকের আলোর বাতি, সোমপুর বিহারের পোড়া মাটির ফলক, ধাতবচিত্র, কাদা মাটিতে গড়া মূর্তি প্রভৃতি।
প্রাচীন ভাস্কর্য গ্যালারির প্রধান আকষণ ব্রাক্ষণ রাজরাজা ও বৌদ্ধদের শাসনামলের মূর্তি।

এই সংগ্রহ সেই সময়কালগুলোর মানুষের বিশ্বাস, রীতিনীতি, সংস্কৃতির। আরো আছে অলংকার।

৩২০ থেকে ৫৫০ শতকের গুপ্ত সম্রাজ্যের আমলে গড়া একটি সূর্য মূতি এই জাদুঘরকে করেছে বিশিষ্ট। এছাড়াও মোট ৫২টি নানা সময়ের মূল্যবান কষ্টিপাথরে গড়া পূর্তি আছে। অত্যন্ত দুস্পাপ্য। আছে মোট ২৮টি ব্রোঞ্জ, ধাতব মূর্তি। বেশিরভাগ ৮ থেকে ১২ শতকের পাল রাজাদের আমলে গড়া। তাদের সময়ে মাটির মূর্তিও আছে বেশ। আছে হিন্দু বৈষ্ণব, দেবতা শিব, শাক্ত জনগোষ্ঠী ও গণপতি দেবতার মূর্তি। মিরসরাইয়ের ৯ শতকের পাথরের রাধাকৃষ্ণ মূর্তি আছে। কাঠের ভাস্কর্য আছে।

‘ইসলামিক শিল্পকলা’র মধ্যে আছে হাতে লেখা প্রাচীন কোরআন, উমাইয়া আমলের মুদ্রা, মসজিদে খোদাই কারুকার্য, সুলেমানি আমলের নকশা, মোঘল বাদশা আলমগীরের আলমগীর নামার দুর্লভ কপি, ১২২৯ থেকে ১২৩৬ সালের মধ্যে রচিত ফরাসি ভাষায় লেখা একটি বিয়ের কাবিননামা, ১০৬১ সালে লেখা মিফতাহুস সালাতের কপি, সম্রাট শাহজাহানের ব্যবহার করা যুদ্ধের কামানের ওপরের অংশ, তাদের মোঘল আমলের তলোয়ার ও ঢাল, সুলতানী আমলের স্বর্ণ, রৌপ্যমুদ্রা ইত্যাদি। মুদ্রা সংগ্রহ খুব ভালো ও সমৃদ্ধ। আছে মূর্তজা বশীরের মুসলিম ক্যালিওগ্রাফি। এই সংগ্রহগুলো বিভিন্ন সময়ের মুসলিম সভ্যতা, তৎকালীন জীবনধারা, রাজনীতি, অথনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতির সার্বিক চিত্র ফুটিয়ে তোলে।

লোকশিল্প গ্যালারিতে কালের গর্ভে বিলুপ্ত শিল্পীর তৈরি বাঘের মাথা, সিরামিক দ্রব্যাদি, রাজার দন্ড, নানা সময়ের অলংকার, গ্রামোফোন, শীতল পাটি, চরকা, তাঁত, পালকি ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যাবে। ১৭ থেকে ১৮ শতকের মূল্যবান কাদামাটির ভাস্কর্য, আদিবাসীদের নানা সামগ্রী ও অলংকার আছে। গ্যালারিটি বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্যের অনন্য সংগ্রহকেন্দ্র।

সমকালীন শিল্পকলা গ্যালারিতে আছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের অধ্যাপকদের কাজ। আছেন অধ্যাপক রশীদ চৌধুরী, মূর্তজা বশীর, সাবিহ-উল-আলম। তারা এনেছেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, এস. এম. সুলতান, কামরুল হাসান, নিতুন কুণ্ডু, হাশেম খানের কাজ। অপরাজেয় বাংলার ভাস্কর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালেদের ভাস্কর্য আছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর সংরক্ষণ করেছে প্রাচীন আমলের দুর্লভ সংস্কৃত, ফারসি, পালি, আরবি, বাংলা পান্ডুলিপি, নথি। দুস্প্রাপ্য বই, পুস্তিকা, পোস্টার, সাময়িকী, পত্রিকার মূল্যবান কাটিং । মরিচ গাছের পাতায়, পুরনো কাগজে লেখা প্রাচীন সংস্কৃত ও পালি পান্ডুলিপির ৯৮ টুকরোগুলো দক্ষ অনুবাদকের অভাবে এখনো পাঠোদ্ধার সম্ভব হয়নি। জেমস রনেলের লেখা ‘হিন্দুস্তান-মোঘল অ্যাম্পায়ার’ তার ‘বেঙ্গল ম্যাপ’টি আছে।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারে আছে যুদ্ধের দুর্লভ চিঠিগুলো, দলিলাদি, স্মারক, নথি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর স্বযত্নে তার মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সন্তানদের নিয়ে নানা স্মারক, তাদের সবাইকে নিয়ে প্রকাশিত লেখাগুলো সংরক্ষণ করে। জাদুঘরের সব সম্পত্তি বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষক, অধ্যাপক, ছাত্র, ছাত্রী, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা রচনা, গবেষণা ও জ্ঞানের জন্য ব্যবহার করেন। ছাত্র, ছাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার জন্য ফ্রি। খোলা থাকে অফিস সময়কালে। তাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যের গুরুত্ব জানানো ও ব্যবহারে অনন্য সংগ্রহশালাটি অ্যাকাডেমিক সব কাজে দারুণ সহায়ক।

নিয়মিতভাবে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, জাদুঘর দিবসে আলোচনা ও প্রদর্শনী, বিশেষ ব্যক্তিত্বদের আগমনে প্রদর্শন কাযক্রম পরিচালনা করেন তারা। আছে সব প্রদর্শনী সামগ্রীর তালিকা, লিফলেট, বই। ভাস্কর্যগুলো নিয়ে আলাদা একটি বই প্রকাশের উদ্যোগ ছাপাখানায় প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। জাদুঘরটি বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের ধারাবাহিক এক অনন্য, অনুপম কেন্দ্র।

ক্যাপশন : ১. চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর ভবন। ২. জাদুঘরের পথ নির্দেশক। ৩. ফোকলোর গ্যালারি। ৪. মহামূল্যবান প্রাচীন ভাষ্কর্য। ৫. অমূল্য ভাষ্করের গড়া ৫. দুর্লভ রাজকীয় সিংহাসন। ৬. সম্রাট শাহজাহানের কামান। ৮. সুলতানী আমলসহ নানা সময়ের মূল্যবান স্বর্ণ ও রৌপ্যমুদ্রা। ৭. জয়নুল আবেদিনের কাজ ও ৯. প্রত্নতাত্বিক সংরক্ষণ গবেষণাগার।

ওএস।

Header Ad
Header Ad

৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ছবি: সংগৃহীত

দেশের তৃণমূল পর্যায়ের ফুটবলকে জাগিয়ে তুলতে বড় পরিসরের একটি টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত “কুল বিএসপিএ স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ড ২০২৪”-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, খুব শিগগিরই দেশের ৬৪ জেলার অংশগ্রহণে একটি জাতীয় ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হবে। তৃণমূল থেকে প্রতিভাবান ফুটবলারদের তুলে আনতেই এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) একটি কাঠামো তৈরি করতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আসিফ মাহমুদ সজীব বলেন, “জেলা ফুটবল আয়োজনের জন্য আমরা বাফুফেকে একটি কাঠামো ডিজাইন করতে বলেছি। আশা করছি তারা খুব দ্রুতই আমাদের সেই পরিকল্পনা দেবে। আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যেই ৬৪ জেলার অংশগ্রহণে আমরা এই টুর্নামেন্ট শুরু করবো।”

ক্রীড়া উপদেষ্টা এ সময় সরকারের ক্রীড়া খাতে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “বিএসপিএকে ধন্যবাদ এমন একটি আয়োজনের জন্য। এটি খেলোয়াড়দের মধ্যে স্বপ্ন ও অনুপ্রেরণা জোগাবে। আমরা ক্রীড়াঙ্গনে কাঠামোগত সংস্কারে কাজ করছি। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকলেও আমরা বিশ্বাস করি, ক্রীড়াক্ষেত্রে বাজেট বৃদ্ধি ও প্রণোদনা নিশ্চিত করতে পারবো।”

উল্লেখ্য, দেশের তৃণমূল পর্যায়ের ফুটবলে দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর কোনো প্রতিযোগিতা না থাকায় নতুন প্রজন্মের প্রতিভা হারিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন ক্রীড়াবিদরা। ক্রীড়া উপদেষ্টার এই ঘোষণাকে অনেকেই ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

Header Ad
Header Ad

আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু

ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় অব্যাহত ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে “প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ”-এর উদ্যোগে রাজধানী ঢাকায় আয়োজন করা হয়েছে বৃহৎ সংহতি কর্মসূচি—“মার্চ ফর গাজা”।

শনিবার, ১২ এপ্রিল, বিকেল ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজমায়েতের মাধ্যমে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

এই কর্মসূচিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সকল রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক স্তরের মানুষ এক কাতারে এসে ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। গণজমায়েতে সভাপতিত্ব করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক।

বিকেল ৩টার জমায়েতের আগে রাজধানীর পাঁচটি স্থান থেকে দুপুর ২টায় শোভাযাত্রা শুরু হবে। শোভাযাত্রাগুলো নির্ধারিত গেট দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করবে। শুরুর স্থান ও প্রবেশপথগুলো হলো—

১. বাংলামোটর থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ হয়ে রমনা গেইটে প্রবেশ।
২. কাকরাইল মোড় থেকে শুরু হয়ে মৎস ভবন হয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট গেইটে প্রবেশ।
৩. জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে দোয়েল চত্বর হয়ে টি.এস.সি গেইটে প্রবেশ।
৪. বখশীবাজার মোড় থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনার হয়ে টি.এস.সি গেইটে প্রবেশ।
৫. নীলক্ষেত মোড় থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর হয়ে টি.এস.সি গেইটে প্রবেশ।

বিশেষ নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, দিনটিতে টিএসসি মেট্রো স্টেশন বন্ধ থাকবে। পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে সব রাস্তায় বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হবে এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সাধারণ দিকনির্দেশনায় অংশগ্রহণকারীদেরকে নিজ দায়িত্বে পানি, ছাতা, মাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা, শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।

তাছাড়া, রাজনৈতিক প্রতীকের পরিবর্তে শুধুমাত্র ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশের পতাকা ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিতে বলা হয়েছে।

এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আয়োজকরা আহ্বান জানিয়েছেন—মানবতার পক্ষে দাঁড়াতে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি জানাতে সবাই যেন পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।

Header Ad
Header Ad

অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত

মিসরের তারকা ফরোয়ার্ড মোহামেদ সালাহ। ছবি: সংগৃহীত

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে লিভারপুলের সঙ্গে নতুন চুক্তিতে সই করলেন মিসরের তারকা ফরোয়ার্ড মোহামেদ সালাহ। ফলে ২০২৭ সাল পর্যন্ত অ্যানফিল্ডেই দেখা যাবে তাকে।

৩২ বছর বয়সী এই তারকার আগের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি গ্রীষ্মে। তিনি নিজেও কয়েকবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, এটি হতে পারে তার লিভারপুল ক্যারিয়ারের শেষ মৌসুম। তবে শেষ পর্যন্ত ক্লাবের নতুন কোচ আর্নে স্লটের অধীনে খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

সালাহর নতুন চুক্তির আলোচনা দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল। ক্লাবের স্পোর্টিং ডিরেক্টর রিচার্ড হিউজেস এই আলোচনার নেতৃত্ব দেন এবং নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন সালাহর এজেন্ট রামি আব্বাস ইসার সঙ্গে। বিভিন্ন সূত্রে শোনা গেলেও, ইএসপিএন জানিয়েছে—বেতন কমানোর কোনো শর্ত ছিল না আলোচনায়।

নতুন চুক্তি সইয়ের পর সালাহ বলেন, “অবশ্যই আমি খুব রোমাঞ্চিত। আমাদের এখন দারুণ একটা দল আছে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা আরও ট্রফি জিততে পারব এবং আমি আমার ফুটবল উপভোগ করতে পারব।” তিনি আরও বলেন, “এখানে আমার সেরা সময় কেটেছে। আমি আট বছর খেলেছি, আশা করছি সেটা দশ বছরে পৌঁছাবে। এখানে জীবন ভালো কাটছে, ফুটবলও উপভোগ করছি।”

২০১৭ সালে ইতালির রোমা থেকে লিভারপুলে যোগ দেন সালাহ। এরপর থেকেই তিনি হয়ে উঠেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড। প্রায় ৪০০ ম্যাচে অংশ নিয়ে জিতেছেন সাতটি বড় ট্রফি, যার মধ্যে রয়েছে প্রিমিয়ার লিগ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৫ ম্যাচে তার গোল সংখ্যা ৩২টি, যার মধ্যে ২৭টি এসেছে প্রিমিয়ার লিগে।

লিভারপুলের ২০তম লিগ শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে এ মৌসুমে সবচেয়ে বড় ভরসা ছিলেন সালাহ। মার্চে সাউদাম্পটনের বিপক্ষে তার জোড়া গোল তাকে লিভারপুলের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনে বসিয়েছে।

চলতি গ্রীষ্মে চুক্তি শেষ হতে যাওয়া তিনজন খেলোয়াড়ের মধ্যে সালাহই প্রথম, যিনি নতুন করে চুক্তি করলেন। বাকি দুই তারকা ভার্জিল ভ্যান ডাইক এবং ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ডের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। তবে ভ্যান ডাইক জানিয়েছেন, নতুন চুক্তি নিয়ে আলোচনা এগিয়ে চলছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

৬৪ জেলা নিয়ে তৃণমূল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা ক্রীড়া উপদেষ্টার
আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে “মার্চ ফর গাজা”, পাঁচটি স্থান থেকে শোভাযাত্রা শুরু
অবশেষে নতুন চুক্তি সালাহর, লিভারপুলে থাকছেন ২০২৭ পর্যন্ত
পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রায় হাসিনার মুখাবয়ব
ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে মামলা করল ওপেনএআই
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৃদু ভূমিকম্প
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নাগরিক কমিটির নেত্রী দিলশাদ আফরিন আটক
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ডলারের বড় পতন, রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে ১৪৭ দেশ, বাড়ছে বিশ্বজনমত
মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে চীনের পাল্টা জবাব
নারায়ণগঞ্জে দুই নারী ও এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
ফুটবল মাঠ পেরিয়ে হলিউডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো
পুলিশের চাকরি পেতে সমন্বয়কদের পেছনে দৌড়ানো বন্ধ করুন: সারজিস
ড. ইউনূসের ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই: সেলিমা রহমান
সিটি কর্পোরেশন হচ্ছে বগুড়া, গণশুনানির প্রস্তুতি শুরু
বাংলাদেশ পুলিশের নতুন লোগো প্রকাশ
মঙ্গল শোভাযাত্রার নতুন নাম ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’
সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে ‘চোর’ বললেন সিদ্দিকী নাজমুল
গোপনে ঢাকামুখী হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, আবারও অস্থিরতার আশঙ্কা
ইসরায়েলের বর্বরতার প্রতিবাদে রাজধানীতে ‘রাইড ফর প্যালেস্টাইন’ র‌্যালি