দেশের চিনি শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে আশা শিল্প সচিবের
বাংলাদেশের চিনি শিল্প শিগগিরই ঘুরে দাঁড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুয়ায়ী উৎপাদন বাড়ানো এবং আমদানি কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। উচ্চ ফলনশীল আখ উদ্ভাবন এবং আখচাষীদের প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করছি। এ ছাড়া আখের দাম বৃদ্ধি ও অন্যান্য প্রণোদনা প্রদান করছি, যাতে কৃষকরা পুনরায় আখ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়।’
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মানসম্পন্ন ও উচ্চ ফলনশীল আখ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)-এর আওতাধীন ঝিনাইদহ জেলার মোবারকগঞ্জ সুগারমিলে প্রদর্শনী ফিল্ড ও চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রদর্শনী ফিল্ড পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন শিল্প সচিব।
এ সময় বিএসএফআইসি’র চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান অপু, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো (বিএটি) বাংলাদেশের চেয়ারম্যান গোলাম মইন উদ্দিন, চিনিকলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং স্থানীয় আখচাষি উপস্থিত ছিলেন।
শিল্প সচিব বলেন, ‘আখের জাত প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে গুণগতমানসম্পন্ন আখ উৎপাদনে সহায়তা এবং উদ্বুদ্ধকরণে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এর সঙ্গে বিএটি বাংলাদেশ একযোগে কাজ করছে। সম্ভাবনাময় এই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে নেওয়া পদক্ষেপের মধ্যে বিএটির এই মডেল প্রকল্প অন্যতম। এ ধরনের উদ্যোগ দেশজুড়ে সম্প্রসারণ করা গেলে দেশের প্রান্তিক চাষি আখ চাষে উদবুদ্ধ হবে। এতে চিনি কলগুলোতে পুনরায় গতির সঞ্চার হবে বলে আমার বিশ্বাস।
জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘বন্ধু সেবা অ্যাপের সাহায্যে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এসএমএস এর মাধ্যমে প্রায় ৬৫ হাজার আখচাষীকে আখের পরিচর্যার জন্য কখন কি করণীয় ও আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্যাদি তাৎক্ষনিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিল্প মন্ত্রনালয় কর্তৃক হ্যালো চাষী অ্যাপে সংরক্ষিত ডাটাবেজে বিদ্যমান মোবাইল নম্বরে সারাসরি ফোন দিয়ে আখচাষিদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমস্যা অবহিত হওয়া এবং তাৎক্ষনিকভাবে তা সমাধানের জন্যে উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে। বিএটি বাংলাদেশ এর সঙ্গে বিএসএফআইসি যৌথভাবে আখচাষে উত্তম চর্চার মাধ্যমে আখের ফলন ৫০-৬০টনে উন্নীত করতে ৫ টি চিনিকলের খামার ও প্রগতিশীল আখচাষিদের ৩০ দশমিক ২৫ একর জমিতে বীজবর্ধন প্রদর্শনী আখক্ষেত স্থাপন করা হয়েছে। যার অগ্রগতি অত্যন্ত সন্তোষজনক।
বিএসএফআইসি'র চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান অপু বলেন, ‘চিনির উপর আমদানি নির্ভরতা কমাতে টেকসই কৃষি ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। বিএটি বাংলাদেশ এর মাধ্যমে করা এই প্রকল্পে আমরা যে সফলতা পেয়েছি তা কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। যাতে করে তারা সামনের দিনগুলোতে আখ চাষে আরো উদ্বুদ্ধ হন।’
বিএটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান গোলাম মইন উদ্দিন বলেন, ‘এই অঞ্চলে ১১২ বছর ধরে আমরা ব্যবসায় পরিচালনা করে আসছি। আমাদের উত্তম কৃষি পদ্ধতির ব্যবহারে আমরা উৎপাদন বাড়াতে সক্ষম হয়েছি যা অত্যন্ত গর্বের। শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিএসএফআইসি কে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের এরকম একটি সম্ভাবনাময় শিল্পে কাজের সুযোগ করে দেয়ার জন্য। আমরা আরো দুএক বছর এসহায়তা অব্যাহত রাখব।
পরে শিল্প সচিব চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু এ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড প্রাঙ্গণে ২০২২-২৩ মৌসুমের আখ রোপন কর্মসূচি উদ্বোধন করেন এবং কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর বিএমআরই কার্যক্রম, ডিস্টিলারী শাখা ইত্যাদি ঘুরে দেখেন।
এনএইচবি/এমএমএ/