ঋণ পরিশোধ না করলে বিচার করা হবে: গভর্নর

কয়েকটা ইসলামী ব্যাংক থেকে অনেকে নামে বেনামে ঋণ নিয়ে ঠিকমতো পরিশোধ করছে না। এতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে।
কারও চাপে কি বাংলাদেশ ব্যাংক চুপ হয়ে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, ‘আমাদের উপর কোনো চাপ নেই। রুসল অবল অনুযায়ী কাজ করে থাকি। কার কি পরিচয়, তা দেখার বিষয় না।
নিয়মকানুন, আইন আছে। তা ভেঙে কেউ ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করলে তাদের বিচার হবে।
মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান। রবিবার (১৫ জানুয়ারি) মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন গভর্নর।
বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণের ব্যাপারে সমালোচলার ঝড় উঠলে গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে থাকে। এতে অতিরিক্ত তারল্য কমছে ব্যাপকহারে। তা স্বীকার করে গভর্নর বলেন, গত ২ মাস আগে ব্যাংকের ব্যাপারে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। বলা হয়েছে ব্যাংকে টাকা নেই।
তখনই টাকা তুলার হিড়িক পড়ে যায়। তাই ইসলামী ব্যাংককে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর যে কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ কাজ করে থাকে। আমরাও তাই করেছি।
আগে কেন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক চুপ থাকে না। ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকে পরামর্শক নিয়োগসহ বিভিন্ন মেজার্স আরোপ করা হয়েছে। তাই অতীতের মতো ঘটনা আর ঘটবে না।
টাকা পাচারের ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, জুলাই থেকে কাজ শুরু হয়েছে। তাতে দেখা গেছে কোনো কোনো পণ্যের যে দাম তার চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি দামে ব্যাংকে এলসি খোলা হয়েছে। দেখা যায় ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ওভারভয়েসিং হয়েছে। বিভিন্নভাবে তা বন্ধ করা হয়েছে। জুলাই মাসে লক্ষ্য ছিলো আমদানি কমানো। এ জন্য আমদানিও অনেকটা কমেছে। জুলাই থেকে ডিসেম্বরে আমদানি হয়েছে ৪১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। যা আগের অর্থবছরে হয়েছে ৮৯ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।
বেশি দামে ডলার বিক্রি করে ১২টি ব্যাংক এক হাজার ৩৪ কোটি টাকা লাভ করেছে। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জনগণের টাকা জনগণের কাজেই ব্যয় করতে হয়েছে। ৫১৭ কোটি টাকা সিএসআর হিসেবে কৃষিখাতে ব্যয় করতে বলা হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জুলাই থেকে নভেম্বর এই পাঁচ মাসে অতিরিক্ত তারল্য ২৬ হাজার ৮৭৬ কোটি থেকে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। কমেছে ২০ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা বা ৭৫ শতাংশ। ১০ থেকে ১২ শতাংশ টাকা মানুষের কাছে রয়েছে। এ ছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করায় এক লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে চলে এসেছে। তাই অতিরিক্ত তারল্য কমেছে।
জেডএ/এমএমএ/
