৪ সেকেন্ডে গ্রিল কেটে ৪ মিনিটে চুরি
রাজধানীর দুর্ধর্ষ দুই গ্রিল কাটা চোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ৪ সেকেন্ডে গ্রিল কেটে ৪ মিনিটেই দোকানের সব চুরি করে নিত চোর চক্রটি।
শুক্রবার (৩ মার্চ) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. জাকির হোসেন ওরফে জ্যাক (৪৪) ও মো. নূর জামাল ওরফে জামাল (২৬)।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহসিন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, তারা দুইজন জ্যাক- জামাল নামেই পরিচিত। তারা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তালা কেটে কয়েক মিনিটের মধ্যেই দোকান সাবাড় করে চলে যায়। চুরি করা এবং চুরির মালামাল বিক্রির সুবিধার্থে পিকআপ কেনে জ্যাক এবং সেই পিকআপে ঘুরে ঘুরেই তারা চুরি করে। সাত বছরে রাজধানীজুড়ে দেড় শতাধিক চুরি করে এই জ্যাক-জামাল জুটি। শুক্রবার দুপুরে মোহাম্মদপুর থানার জাফরাবাদ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে চুরির সরঞ্জাম এবং একটি পিকআপ উদ্ধার করা হয়।
ওসি বলেন, ছয় মাস আগে আসাদুজ্জামান নূরের নিউ মিউজিক এশিয়া নামের এক দোকান থেকে এক চুরির ঘটনার তদন্তে উঠে আসে জ্যাক-জামালের নাম। ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর মিরপুর বড়বাগ পলিভিটা বেকারি এলাকায় সংঘটিত সেই চুরিতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২৩টি মোবাইল সেট, একটি ল্যাপটপ, ২০টি মেমোরি কার্ড, ৫০০টি রিচার্জ কার্ড, নগদ অর্থসহ আনুমানিক ১ লাখ ৫২ হাজার ৭৭৫ টাকার মালামাল চুরি করে জ্যাক-জামাল। দুর্ধর্ষ সেই চুরির দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জ্যাক-জামালকে শনাক্ত করা হয় এবং আজ দুপুরে নগরীর মোহাম্মদপুর থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোহেল (৩৫) নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোহেল জ্যাক-জামালের কাছ থেকে চুরি করা মালামাল কেনে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, জ্যাক-জামাল চুরি করতে বের হয় রাত ২টায়। চুরি করে বাসায় ফেরে ভোর ৬টায়। এই চার ঘণ্টার মধ্যেই তারা সব চুরি করে। দুইজনের মধ্যে জ্যাক গ্রিল ও তালা কাটে। গ্রিল কিংবা তালা কাটতে তার সময় লাগে সর্বোচ্চ ৪ সেকেন্ড। কাটার পর দোকানে ঢুকে মালামাল চুরি করে জামাল। তার পুরো চুরি করতে সময় লাগে মাত্র ৪ মিনিট! এক রাতেই তারা কয়েকটি দোকান চুরি করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, এক রাতে তারা সর্বোচ্চ ৪টি পর্যন্ত চুরি করেছে।
তিনি আরও বলেন, জ্যাক-জামালের মূল টার্গেট ছোট ছোট দোকান। সাধারণত রাস্তার উপর থাকা ছোট ছোট পান-সিগারেটের, মোবাইল রিচার্জের, মুদির দোকানই টার্গেট করে তারা। কারণ এসব দোকানদার সাধারণত অপেক্ষাকৃত নিম্নআয়ের হয়। তাই চুরি করলেও তারা মামলা করে না। এ কারণেই দেড় শতাধিক চুরি করলেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা খুবই কম। জ্যাকের বিরুদ্ধে ৪টি এবং জামালের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে।
কেএম/এসজি